#কহিনুর,০৮,০৯
কলমে: লাবন্য ইয়াসমিন
পর্ব:৮
হন্তদন্ত হয়ে দৌড়ে কক্ষের দিকে ছুটে আসলো অধরা। হাপ পা ঠকঠক করে কাঁপছে। বাইরে থেকে যতটা সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে সবার মোকাবেলা করে আসলে ওর ভেতরটা ততটাই দুর্বল। মন মর্জি হঠাৎ হঠাৎ পরিবর্তন হচ্ছে। এই ভালো তো এই খারাপ। পেটের ডান সাইডে চিনচিন ব্যাথাটাও তীব্রতর হচ্ছে। বাইরে গিয়ে এতক্ষণ যে অঘটন ঘটিয়ে আসলো জুবায়ের জানলে না জানি কি হবে। এরা দুভাই দু’রকমের। একজন ঠান্ডা মাথার আরেকজন উন্মাদ। অধরা কক্ষে প্রবেশ করে হাপিয়ে উঠলো। ক্লান্ত শরীর নিয়ে বিছানায় বসতে গেলো কিন্তু পারলো না। জুনায়েদ যে ওর জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সেদিকে ওর লক্ষ্য ছিল না। জুবায়েরের চোখ মুখ শক্ত হয়ে আছে। এক টান দিয়ে অধরাকে শক্ত করে ধরে বলল,
> কোথায় গিয়েছিলে?
অধরা ঢোক গিলল। ভয়ে ভয়ে বলল,
> নিচে গিয়েছিলাম। আপনার ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়েছে।
কথাটা শুনে জুবায়ের ওকে ছেড়ে দিলো। তাল সামলাতে না পেরে অধরা বিছানার উপরে ঠাস করে পড়ে গেলো। জুবায়েরের চোখে মুখে বিস্ময়। কোনরকম নিজেকে সামলে নিয়ে বলল,
> ওর সঙ্গে কিভাবে কি? তুমি আমাদের পিছনে ষড়যন্ত্র করছো? এই বাড়ির রহস্য ঘাটতে উঠে পড়ে লেগেছো তাইনা? শুনো মেয়ে নিজের ভালো পাগলেও বুঝে। শান্তিতে খাও ঘুমাও বাচ্চা হোক আমি নিজেই তোমাকে ছেড়ে দিব। একবার যদি ঘরের বাইরে পা বাড়িয়েছো খু*ন করে ফেলবো।
> করে ফেলুন খু*ন, কে আটকে রেখেছে? জুবায়ের ফারুকী একটা স্বার্থপর মানুষের নাম। যে স্বার্থের জন্য নিজের বিবাহিত স্ত্রী আর অনাগত সন্তানের রক্ত দিয়ে কালো যাদু পিশাচ সাধনার জন্য বলি দিতে চলেছে।
জুবায়ের নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না। থাপ্পড় বসিয়ে দিলো অধরার গালে। দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
> আজেবাজে কথা বলে আমার রাগিয়ে দিতে তোমার ভালো লাগে তাইনা? কতবার বলেছি রাগিওনা আমার কথা শুনছো না।
অধরা এবার নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলো না। দ্রুত টেবিলের উপরে রাখা খঞ্জরটা উঠিয়ে নিজের হাতে একটা টান দিয়ে দিলো। ঝরঝর করে রক্ত পড়ছে। ও সেসব তোয়াক্কা করলো না। জুবায়েরের হাতের মুঠোয় খঞ্জরটা তুলে দিয়ে বলল,
> খু*ন করে ফেলুন এভাবে যন্ত্রণা দিয়ে না মেরে। আমি মারা যাচ্ছি বুঝতে পারছেন? আপনাদের স্বার্থের জন্য আমি কেনো যন্ত্রণা পাবো এতে আমার কি লাভ বলুন? খু*ন করে আমাকে মুক্তি দিন আর পারছিনা আমি। একদিকে আপনার বিশ্বাসঘাতকতা অন্যদিকে কহিনুর রহস্য। আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি।
জুবায়ের প্রতিবাদ করলো না। দ্রুত অধরার হাতটা মুঠোয় নিয়ে বসিয়ে দিলো। অধরা ধস্তাধস্তি করলো হাত ছাড়িয়ে নিতে কিন্তু পারলো না। জুবায়ের জোর করে ওর হাত ব্যান্ডেজ করে চুপচাপ ওর পাশে বসে পড়লো। দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বলল,
> আমি নিরুপায় অধরা। আমি চেয়েও পারছি না তোমাকে মুক্তি দিয়ে। আমি তোমাকে ছেড়ে দিলেও ওরা ছাড়বে না।
অধরা ফুপিয়ে চলেছে। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ অতিবাহিত হলো। হঠাৎ জুবায়েরের কাজে ওর ধ্যান ভাঙলো।ছেলেটা চুপচাপ ওর পায়ে সিঁকল দিয়ে আটকে দিচ্ছে। অধরা চমকে উঠে পা ছাড়িয়ে নিলো কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গেছে। জুবায়ের পাশে রাখা কাপড় ভিজিয়ে অধরার মুখ মুছিয়ে দিয়ে বলল,
> এটাই তোমার জন্য ঠিক আছে। ভেবেছিলাম তোমার থেকে দূরে থাকবো কিন্তু না তোমার তো সহ্য হলো না। স্বামীকে কাছে রাখতে যতসব আজেবাজে কাজকর্ম করছো। আমি আজ থেকে এখানেই থাকবো। আমার নজর তোমার উপরে থাকবে।
জুবায়ের শেষের কথাগুলো দাঁতে দাঁত চেপে বলল। মেজাজ ওর প্রচণ্ড খারাপ। এই মেয়েটা অতিরিক্ত ঝামেলা করছে। এরকম হলে সব উল্টাপাল্টা হয়ে যাবে। অধরার কান্না থেমে গেছে। নিজের উপরে নিজের প্রচণ্ড রাগ হচ্ছে। কিভাবে এরকম বোকামি করতে পারলো। জুবায়েরের যে এভাবে ওকে আটকে দিবে কখনও ভাবেনি। এতোটা উত্তেজিত হওয়া উচিত হয়নি। একদম ঠিক হলো না। জুবায়ের ওর মুখের দিকে তাঁকিয়ে ওষ্ঠে হাসি এনে বলল,
> বাঘীনি বিড়াল হয়ে গেলো? দম ফুরিয়ে গেলো? আহারে আমার বউ আমার মতোই হয়েছে। এতো মাথা গরম ভালো না বুঝলে। দেখলে তো কিভাবে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারলে?
অধরা জ্বলে উঠলো। যা হওয়ার তো হয়েই গেছে এখন আর চুপ থেকে কি হবে। ঝাঝালো কন্ঠে বলল,
> আপনিও যেমন আপনার ভাইও তেমন। ভেবেছিলাম আপনি উনার থেকে ভালো কিন্তু না। উনি ভাইয়ের বিধবা স্ত্রীকে বিয়ের স্বপ্নে আপনার মৃত্যুর দিন গুনছেন। কোন এক তুষারপাতের রাতে আমাকে সাহায্য করেছিলেন তাঁর শোধ তুলতে চাইছে। চরিত্রের দোষে দুজনেই দুষিত।
জুনায়েদের চোখ জ্বলে উঠলো অধরার কথা শুনে কিন্তু এবার আর প্রতিবাদ করলো না। চুপচাপ ওকে জোর করে শোয়ায়ে দিয়ে ওর পাশে নিজেও শুয়ে পড়লো। শুধু বলল,
> ঘুমাতে দাও আর নিজেও ঘুমাও।
জুবায়ের বালিশে মুখ ঢেকে নিলো। অধরা ভ্রু কুচকে আছে। লোকটার মতিগতি বোঝা মুশকিল। জীবনটা মেগা সিরিয়ালের মতো হয়ে গেছে। প্রতিদিন এক ঘটনা ঘটছে। অধরা বিরক্তি হলো। হাতে যন্ত্রণা করছে। এটা অতিরিক্ত ছিল। খামাখা হাতটা না কাটলেও চলতো। রাগের সময় মাথায় কাজ করছিল না। কথাগুলো ভাবতে ভাতেই ও গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলো। ভোরবেলায় চিল্লাচিল্লি আর হৈচৈ শুনে ওর ঘুম ভাঙলো। দ্রুত বসে পড়লো। জুবায়ের এখনো ঘুমিয়ে আছে। অধরা ওকে ধাক্কা দিয়ে বলল,
> শুনছেন বাইরে কিছু হচ্ছে?
জুবায়েরে ঘুমঘুম কন্ঠে চোখ বন্ধ করেই বলল,
> হতে দাও। বিরক্ত না করে ঘুমাও।
> কুম্ভকর্ণের মতো না ঘুমিয়ে বাইরে গিয়ে দেখে আসুন। চিৎকার চেচামেচিতে আপনাদের পাপের অট্টালিকা নড়ে উঠছে। ধবংস হলে ঘুমের বারোটা বেজে যাবে। ঘুমানো ঘুচে যাবে জন্মের মতো।
অধরা দাঁতে দাঁত চেপে কথাগুলো বলে থামলো। জুবায়ের বিরক্তি নিয়ে উঠে বসলো। এই মেয়েটা সব সময় কথা শোনানোর জন্য মুখিয়ে থাকে। সুযোগ পেলেই ঝাড়ি দিতে সময় নিবে না। কথাগুলো বিড়বিড় করে ও বেরিয়ে আসলো। বাইরে গিয়ে দেখলো বাড়ির দারোয়ান মালি আর কাজের ছেলেটা একটা ছেলের সঙ্গে ঝগড়া শুরু করেছে। বাড়িতে উচ্চ শব্দে চেচামেচি হচ্ছে। ও দ্রুত গিয়ে জিঞ্জাসা করলো,
> কি হচ্ছে এখানে?
জুবায়েরের কন্ঠ শুনে ছেলেটা এগিয়ে আসলো। জুবায়ের ভ্রু কুচকে গেলো ছেলেটার দিকে তাকিয়ে। গতকাল এই ছেলেটাকে ও দেখেছিল বোনের সঙ্গে ইউনিভার্সিটির গেটে দেখেছিল। কিন্তু এখানে কেনো এসেছে বুঝতে পারলো না। তাই বিরক্ত হয়ে জিঞ্জাসা করলো,
> বাসা পযর্ন্ত চলে এসেছো? বলেছিলাম না আমার বোন বন্ধুত্ব করবে না তোমার সঙ্গে। তবুও কেনো ঝামেলা করছো?
> দেখুন আমি জানতাম না এটা আপনাদের বাসা। আমি এসেছি অধরা আপুর কাছে। উনার বাবা ছিলেন আমার বাবার বন্ধু। আমি উনার কাছে এসেছি। এর আগেও আমি এসেছিলাম দেখা করতে দেওয়া হয়নি। এবার অনুমতি না দিলে আমি পুলিশ নিয়ে আসতে বাধ্য হবো।
জুবায়ের মোটেও ঘাবড়ালো না বরং হাসলো। এই মূহুর্তে ছেলেটার মুখে একা শক্তপক্ত ঘুষি দিতে মন চাইছে কিন্তু দেওয়া যাবে না। ঝামেলা বাড়িয়ে লাভ নেই। এমনিতেও রুমে অধরাকে আটকে রাখা হয়েছে। এই ছেলেটা যদি পুলিশ আনে ঘটনা বাজে দিকে মোড় নিবে। কিন্তু ছেলেটা ওকে হুমকি দিয়েছে যেটা ও মানতে পারছে না। জুবায়ের ভ্রু নাচিয়ে বলল,
> পুলিশ আনবে আচ্ছা আমি নিজেই ফোন করে বলছি আমার স্ত্রীর নিজের কোনো আত্মীয় নেই অথচ কে না কে আত্মীয় পরিচয় দিয়ে বারবার আমাদের সবাইকে বিরক্ত করছে। খারাপ উদ্দেশ্যও থাকতে পারে। মিস্টার…. কি জানি নাম ?
ছেলেটা ক্ষুব্ধ হয়ে বলল,
> আয়াত ইসলাম। দেখুন আমি কিন্তু আজ এমনি এমনি ফিরবো না। ডাকুন ওকে। এক বছর ওর সঙ্গে দেখা করতে দেননি। এই খুন টুন করে গুম করে দেননি তো? আমি সিউর এটাই করেছেন। পাক্কা শয়তানের হাড্ডি আপনারা। আঙ্কেলকে কতবার বলেছিলাম বিয়েটা ভেঙে দিতে।
আয়াত একদমে কথাগুলো বলে থামলো। জুবায়ের যেতে যেতে বলল,
> আসো দেখা করিয়ে দিচ্ছি।
বিড়বিড় করলো,ফালতু লোকজন। এই দুটোই এক। সামনে নির্বাচনে দাঁড় করিয়ে দিব।আর কিছু না পারলেও মুখ চালাতে পাররে।
জুবায়ের বিরক্ত হচ্ছে বোঝা যাচ্ছে আয়াত সেসবে পাত্তা দিচ্ছে না। বাড়ি থেকে আসার সময় বাবা মাকে কথা দিয়ে এসেছে মেয়েটাকে সঙ্গে নিয়ে ফিরবে। পাশাপাশি বাড়ি ছিল। ওরা এক সঙ্গে বড় হয়েছে। ভাইবোনের মতো মিলমিশ ছিল। হঠাৎ বিয়েটা সব তছনছ করে দিলো। জুবায়ের ওকে নিচে বসিয়ে রেখে উপরে আসলো। অধরা বিছানায় বসে আছে। পায়ে সিঁকলের জন্য ফ্রেস হতে পারছে না। জুবায়ের দ্রুত এসে ওর সিঁকল খুলে দিয়ে গম্ভীর মুখ নিয়ে বলল,
> মুখ খুঁললে কিন্তু খারাপ হবে। তোমাকে কিছু করতে না পারলেও ওকে কিন্তু ছাড়বো না। আমাকে চিনো? মাথা গরম হলে খবর আছে।
অধরা অবাক হলো। সাত সকালে জুবায়ের কাকে মারার হুমকি দিচ্ছে বুঝতে পারলো না। ভ্র কুচকে বলল,
> বুঝতে পারলাম না।
> আয়াত এসেছে তোমার সঙ্গে দেখা করতে। তুমি কয়েকটা ভালো মন্দ কথা বলে ওকে বিদায় করবে। আমি কিন্তু…
> জানি খু*ন করে দিবেন। ওটা ছাড়া তো আর ডাইলগ জানেন না। চলুন দেখা করে আসি।
বুকের মধ্যে চাপা উত্তেজনা চাপিয়ে রাখা মুশকিল। অধরা বেশ খুশী হয়েছে। মনের মধ্যে একটা পরিকল্পনা ঘুরপাক খাচ্ছে। এখন শুধু বুদ্ধি দিতে কাজ করতে হবে। আল্লাহর উপরে ভরসা করে নিজেকে শান্ত রেখে নিচে নেমে আসলো। আয়াত এতক্ষণ বসে ছিল হঠাৎ অধরাকে দেখে দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে বলল,
> আপু কেমন আছো তুমি? কতদিন দেখা হয়নি। আম্মু তোমার কথা ভেবে কাঁদেন প্রতিদিন। তুমি জানো আম্মু অসুস্থ? তোমাকে দেখতে চেয়েছে। তুমি যাবে না?
অধরার চোখে পানি চলে আসলো। রক্তের সম্পর্ক নেই তবুও ছেলেটা ওকে নিজের বোনের মতোই ভালোবাসে। অধরা ওর মাথায় হাত রেখে বসিয়ে দিয়ে বলল,
> যাবো আয়াত নিশ্চয়ই যাবো। আন্টি অসুস্থ আর আমি যাবোনা এমন হয়নাকি। অনেক ভুল হয়েছে আমার। তোদের খবর নেওয়া হয়নি। আসলে আমার তো ফোন নেই। তোর নাম্বার টাও রাখা হয়নি।
জুবায়ের এদের দুজনের কথোপকথনে বিরক্ত হচ্ছে। এই দুটো বাড়ি থেকে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। আটকাবে কিভাবে? না যেতে দিলে তো আবার কাহিনী করবে। ওর বাবা মা আজ বাড়িতে নেই। একজন অসুস্থ মানুষকে দেখতে যেতে মানা করাও যায়না। জুবায়ের পড়ে গেলো বিপদে। যেতে দিবে না বলেও শেষমেশ অধরাকে যেতে দিলো। তবে ওকে একা ছাড়বে না। সঙ্গে ও ছোট বোন আর কাজের মেয়েটাকে সঙ্গে নিলো। ফাঁকি দেওয়ার কোনো অবকাশ নেই। অধরা যেনো হাফ ছেড়ে বাঁচলো। এক বছরের বন্দিজীবনের সমাপ্তি ঘটতে চলেছে। ও দ্রুত গিয়ে লাগেজ গুছিয়ে নিলো। লুকিয়ে শাশুড়ির দেওয়া জিনিসপত্রগুলোও সঙ্গে নিয়েছে। ওখানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে হচ্ছে বাবা মায়ের ঘর তল্লাশি করা। সেখানে নিশ্চয়ই কোনো গুরুত্বপূর্ণ কিছু ক্লু থাকবে। কহিনুরের কাহিনী জেনে নিয়েছে। এবার জুবায়েরেদের পরিবারের কাহিনীটা জানতে পারলে মোটামুটি পালিয়ে গেলেও শান্তি।
☆☆☆☆☆☆☆
সুলতান আরমান ফারুকী ইচ্ছে মতো বাকবকি করছেন বাড়ির সকলের অপরে। উনি জুবায়েরের উপরে বিরক্ত। এই ছেলের জন্য যে উনার ধ্বংস অনিবার্য হতে চলেছে সেটা বুঝতে বাকি নেই। কিভাবে সে ভাইবোনদের ভবিষ্যতের কথা ভূলে গিয়ে বউকে নিয়ে শশুর বাড়িতে যেতে পারে এটা উনার মাথায় আসছে না। এই বাড়ির পাঁটা মেয়ে আর একটা ছেলের ভবিষ্যৎ জুবায়েরের উপরে নির্ভর করছে। এই একটা সুযোগ উনি কত চেয়ে পেয়েছেন সেটা শুধুমাত্র উনি জানেন। বড় ছেলেটা আধার রাতের জীব হয়ে গেছে। আলোতে আসতে পারেনা। মেয়েগুলোর বিয়ের কথা ভাবা যাবেনা। বিয়ে মানে কারো তরতাজা রক্তের গন্ধে সুলতান বাড়ি ভরিয়ে তোলা। এভাবে চললে এই বংশ বিলুপ্ত হতে সময় নিবে না। উনি বারবার জুবায়েরের কাছে ফোন দিচ্ছেন। কিন্তু ছেলেটা ধরছে না। আরমান ফারুকী ফোনটা আছাড় দিলেন। চোখমুখ শক্ত করে ভাবলেন, যাকে দিয়ে কাজ হবে না তাঁর উপরে মায়া রেখে কি হবে? এখন জুবায়ের না থাকলেও চলবে।
(চলবে )
#কহিনুর
কলমে: লাবণ্য ইয়াসমিন
পর্ব৯
নিস্তব্ধ নির্জন কক্ষ, দেয়াল ঘড়িটা খসখস আওয়াজ করে ঘুরছে। দুজন মানুষের ঘন নিঃশ্বাসের শব্দ ছাড়া পিনপতন নীরবতা বিরাজ করছে। জানালা ভেদ করে চাঁদের আলো ভেতরে প্রবেশ করে কক্ষের মধ্যে থাকা আধারটা আবছা আলোতে রূপান্তরিত করেছে। জানালার ওপাশে ঘন জঙ্গল। হঠাৎ খুট করে আওয়াজ হয়ে দরজাটা আস্তে করে খুঁলে গেলো। অধরা ঘুমিয়ে ছিল হঠাৎ আওয়াজ পেয়ে দ্রুত চোখ খুঁলে থাকালো। একটা ছায়া ধীরস্থির ভাবে পা ফেলে ভেতরে প্রবেশ করলো। হুডি চাপানো লোকটার হাতে ঝকঝকে খঞ্জর, আলোতে চকচক করছে। অধরার বুক ধুকপুক করছে। ভাবলো লোকটার উদ্দেশ্য কি? ওকে মারতে চাইছে! কিন্তু কেনো? পাশে জুবায়ের ঘুমিয়ে আছে। অধরা নিজেকে প্রস্তুত করে নিয়েছে। লোকটা যখনই ওর দিকে আক্রমণ করবে ও দ্রুত সরে গিয়ে লাইট জ্বালিয়ে দিবে। একে হাতেনাতে ধঁরা চাই। উত্তেজনাতে ওর হাত পা কাঁপছে। কিন্তু লোকটা ওর দিকে না গিয়ে সোজাসুজি বাম সাইডে জুবায়েরের দিকে এগিয়ে গেলো। এমনতো না যে আধারের জন্য ওকে চিনতে পারছে না। বেশ ভালো করে চেনা যাচ্ছে। টার্গেট ও নয় জুবায়ের।বিষয়টা খেয়াল হলো ততক্ষণে লোকটা খঞ্জর উঠিয়ে জুবায়েরের বুকে আঘাত করতে গেলো। অধরা তড়িৎ বেগে উঠে বসলো। লোকটার হাত সমেতো খঞ্জরটা ধরে ফেললো। প্রচণ্ড ধস্তাধস্তি শুরু হলো। অধরার কাটা হাত আরও কিছুটা কেটে গেলো। ব্যাথায় টনটন করছে কিন্তু ও হাত ছাড়লো না। পাশে জুবায়েরের গায়ে ধাক্কা দিয়ে চিৎকার করে বলল,
> জুবায়ের দ্রুত উঠুন।
জুবায়ের পিটপিট করে চোখ খুঁলে হতভম্ব হয়ে গেলো। ওর বুকের উপরে দুজন ছুরি নিয়ে কাড়াকাড়ি করছে। অধরা পারছে না লোকটার শক্তির কাছে। হিমশিম খাচ্ছে। জুবায়ের অপেক্ষা করলো না পা তুলে লোকটার বুক বরাবর লাথি বসিয়ে দিলো। অচেনা লোকটা ছিটকে গিয়ে মেঝেতে পড়লো। অধরা বিছানায় মুখ থুবড়ে পড়ে গেলো। জুবায়ের ওকে সরিয়ে দিয়ে বিছানা থেকে নামতে নামতে লোকটা হাওয়ার গতিতে বেরিয়ে গেলো। অধরা নিজের সামলে নিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে ওদের পিছু নিলো। বাড়ির বাইরের গেট খোঁলা। অগন্তুক যেভাবে এসেছিল সেভাবেই বেরিয়ে গেছে। লোকটা আসার সময় সব রাস্তা তৈরী করে এসেছিল। শীতের রাত কেউ একবার রুমে ঢুকলে বাইরে বের হবে না এই ভরসাতে লোকটা এভাবে ভেতরে এসেছে। জুবায়ের লোকটাকে ধরতে না পেরে ফিরে আসলো। গেটের কাছাকাছি অধরার সঙ্গে দেখা হলো। মেয়েটার চোখেমুখে ভয় নেই আছে বিরক্তি। জুবায়েরকে এভাবে তাঁকিয়ে থাকতে দেখে প্রশ্ন ছুড়লো,
> ধরতে পারলেন না,ফিরে আসলেন কেনো? শুনুন ওই কিলারকে আমার চাই। যেভাবেই হোক। বাইরে সিসি ক্যামেরা আছে। এখানকার প্রতিটা বাড়ির সামনে আপনি ক্যামেরা পাবেন। আমি সবগুলো ফুটেজ দেখতে চাই আপনি ব্যবস্তা করুন। ওকে কে পাঠিয়েছে জানা দরকার।
অধরা একদমে কথাগুলো বলে থামলো। জুবায়ের সেসব পাত্তা না দিয়ে অধরার হাতটা ধরে বিস্মিত হয়ে বলল,
> তোমার হাত কেটেছে? র*ক্ত বন্ধ করতে হবে। তুমি আগে কেনো ডাকলে না?
জুবায়ের হন্তদন্ত হয়ে ওর হাত ধরে ভেতরে ছুটলো। অধরা বিরক্ত হচ্ছে জুবায়েরের উপরে। লোকটা নিজে যখন কষ্ট দিবে তখন কিছু না। এইটুকু কেটেছে তাঁর জন্য উতলা হচ্ছে। কাজের কাজ নেই অকাজের গুণ বেশি। ও জুবায়েরকে মানা কারলো কিন্তু শুনলো না। সকালে আয়াতের সঙ্গে এসেছে ওরা। পাশাপাপাশি দুটো বাড়ি। অধরার ইচ্ছে হয়েছিল বাবা মায়ের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িতে রাতে ঘুমানোর তাই এই বাড়িতে আছে। বাকিরা আয়াতদের বাড়িতে । অধরা ওদেরকে আনতে চেয়েছিল কিন্তু বহুদিন বাড়িটা পড়েছিল তাই ধুলাবালিতে পূর্ণ হয়ে আছে। পরিস্কার করার সময় ছিল না। একপ্রকার বাধ্য হয়ে জুবায়ের ওকে নিয়ে এই বাড়িতে থাকতে এসেছে। জুবায়ের খুব যত্ন নিয়ে অধরার হাতটা ব্যান্ডেজ করে দিয়ে বলল,
> লোকটা কালো হুড়ি চাপিয়ে ছিল। মুখটা দেখতে পেলে ভালো হতো।
অধরা রাগে ফুলে উঠলো। নাকমুখ কুচকে বলল,
> সব আপনার দোষ। কে বলেছিল লাথি বসাতে?। চুপচাপ উঠে লোকটাকে ঝাপটে ধরা যেতো। শুধু আপনার জন্য। মাথায় কিছু নেই আপনার। পুষ্টিজনিত সমস্যা আছে। টুইন বেবি তো সব আপনার ভাইয়ের মাথায় চলে গেছে। এবার বলুন আপনার এমন কোনো শত্রু আছে যে আপনাকে হত্যা করতে চাইতে পারে?
জুবায়ের বিস্মিত হলো অধরার কথা শুনে। ওকে মারতে চাইবে এরকম লোক এখানে কে থাকবে। তাছাড়া ও যতই ঘাড় ত্যাড়া হোক বাইরের লোকদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে না। একটু জেদি কিন্তু খারাপ না। সবাই ওকে পছন্দ করে। ও এতক্ষণ ভেবেছিল লোকটা অধরাকে মারতে এসেছিল। কৌতূহলী হয়ে প্রশ্ন করলো,
> মানে কি আমাকে মারতে চাইবে কেনো?
> লোকটা আপনাকে মারতে চেয়েছিল। দেখুন রুমে সামান্য হলেও আলো ছিল। তাছাড়া আমাকে মারতে চাইলে ডান সাইডে এসে আঘাত করতো কিন্তু না। আমি দেখেছি লোকটা দরজা থেকে সোজা আপনার দিকে নজর করে এগিয়ে এসেছিল। প্রথমে ভেবেছিলাম আমাকে মারবে কিন্তু টোটালি মিথ্যা হলো। জুবায়ের আপনার অগোচরে বাজে একটা খেলা চলছে। আপনাকে ওই লোকটার পযর্ন্ত পৌঁছতে হবে।
জুবায়ের মলিন হাসলো ভয় পেলো না। অধরা না থাকলে এতক্ষণে প্রাণপাখি উড়াল দিতো সন্দেহ নেই। কিন্তু কে করতে পারে এসব?ডানে বামে সন্দেহ হয় কেউ নেই। নিজেকে নিয়ে ওর ভয় নেই। জুবায়ের সেসব পাত্তা দিলো না। খুব স্বাভাবিক ভাবে বলল,
> আমাকে মারতে চাইবে কেনো তোমার অনুমান ঠিক নেই। দেখো তোমার বাবার কোনো শত্রু ছিল ওরাই প্রতিশোধের জন্য এসেছিল। আমি মৃত্যু দেখে ভয় পাই না। মারতে চাইলে মারবে চলো ঘুমাবে। তোমার শরীর ঠিক থাকা দরকার।
অধরা জ্বলে উঠলো জুবায়েরের এরকম আজেবাজে যুক্তি শুনে। মেজাজ খারাপ হচ্ছে। ও ঝট করে জুবায়েরের কলার ধরে টেনে নিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
> ফালতু কথা বলবেন না। আমি আপনাকে একটুও পছন্দ করি না। রাগ হয় আপনাকে দেখলে। আমার রাগের পরিমাণটা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছেন। শুনুন আমি আমার ভবিষ্যৎ বুঝে গেছি। আমার জীবন সংকটে আছে। জানি সামনে আমার মৃত্যু অনিবার্য কিন্তু আপনাকে মরলে চলবে না। আমার বাচ্চাটাকে আপনাকে বাঁচাতে হবে। আমার সঙ্গে যে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন তার জন্য ক্ষমা পাবেন শুধু কহিনুর কে রক্ষা করলে। আমি মরে যায়, চলে যায়, যা ইচ্ছা তাই হয়ে যায় কিন্তু আপনাকে বাঁচতে হবে। আমি শপথ নিয়েছি শেষ দেখে ছাড়বো। আপনি আমাকে আটকে রাখতে পারবেন না।
অধরা একদমে কথাগুলো বলে ওকে ছেড়ে দিয়ে কক্ষের দিকে এগিয়ে গেলো। জুবায়ের হতভম্ব হয়ে ভাবছে ওর বলা কথাগুলো। বাবা মা ওকে শুধু উত্তরাধিকার দিতে বলেছিল। বলেছিল এই বাচ্চাটা আসলে বাড়ির সব বিপদ কেটে যাবে। ভাই আলোতে আসতে পারবে। বোনদের বিয়ে হবে কিন্তু বাচ্চাটার ক্ষতি করবে বলেনি। একটা ছোট্ট বাচ্চা তার ক্ষতি কেনো করবেন উনারা? কি রহস্য চলছে ওর অজান্তে? জুবায়ের অপেক্ষা করলো না দ্রুত কক্ষে ফিরে গিয়ে ফোন নিয়ে বেরিয়ে আসলো। কাকে একটা ফোন করলো। রাস্তার পাশের সব গুলো সিসি ক্যামেরা চেক করা জরুরি। লোকটার মুখ দেখতে না পারলেও কোথা থেকে এসেছে এটা জানা যাবে। গাড়ি করে আসলে গাড়ির রঙ বা নাম্বার পাওয়া যাবে। জুবায়ের লোক লাগিয়ে দিলো। যাওয়ার আগে পাশের বাসাতে খবর দিলো অধরাকে নিয়ে যেতে।
☆☆☆☆☆
অধরাকে সামনে নিয়ে বসে আছে বাড়ির বাকিরা। সকলের চোখেমুখে চিন্তার ছাপ। অয়াতের বাবা শেখর ইসলাম খুব ভয় পেয়েছেন। অধরা চোখ বন্ধ করে সোফায় হেলান দিয়ে ছিল। হঠাৎ কি একটা ভেবে বলল,
> আঙ্কেল বাবা মায়ের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এসেছিল ওটা দেখানো যাবে? দুর্ঘটনার সময় যে গাড়িতে বাবার গাড়িটা ধাক্কা দিয়েছিল ওটার মালিক কোথায় আঙ্কেল? এই শহরে গাড়ি দুর্ঘটনা হলো আর যে লোকটা দুই দুটো মানুষের প্রাণ নিয়ে নিলো তাঁকে ছেড়ে দিলো পুলিশ। তোমার সন্দেহ হলো না? তুমি কেস রিঅপেন করতে বলো। আমি এখানে যতদিন বা যতটা সময় আছি এর মধ্যে সবটা জানাতে চাই আপনি ব্যবস্থা করুণ। সন্দেহের উপরে না উপযুক্ত প্রমাণ নিয়ে শত্রুর সামনে দাঁড়িয়ে মোকাবেলা করতে চাই আমি।
শেখর ইসলাম কিছুই বুঝতে পারলেন না। পুলিশ বলেছে দুর্ঘটনার সময় গাড়িতে কোনো লোক ছিল না। এমনকি গাড়িটাও কারো নামে রেজিস্ট্রি ছিল না বিধায় আসল লোককে পাওয়া যায়নি। এর পেছনে কোনো ঘটনা আছে বলে উনার সন্দেহ হচ্ছে না। উনি ভ্রু কুচকে বললেন,
> মা এটা সাধারণ দুর্ঘটনা বৈকি কিছুই না। তুমি খামাখা টেনশন করছো।
অধরা উত্তেজিত হয়ে উঠলো। বলল,
> আঙ্কেল আমি সন্দেহ করছি না আমি সিউর এটা হত্যা। আপনি প্লিজ সাহায্য করুন। আমি শেষটা দেখতে চাই। চোখের দেখার মধ্যে মাঝেমাঝে ভূল থেকে যায়।
অধরা কথা শেষ করে কক্ষে ফিরে আসলো। মারিয়া ওর খেয়াল রাখছে। কাজের মেয়েটা খাবার নিয়ে ওদের পেছনে পেছনে ছুটছে। জুবায়ের গায়েব। অধরা জানে জুবায়ের রেগে গেছে। এই লোকটাকে একটু রাগিয়ে দিতে পারলে কাজ হার হামেশা হয়ে যাবে। মাথামোটা লোক বুদ্ধি জ্ঞান নেই। অধরা বিরক্ত হয়ে যাচ্ছে। কয়েকবার ফোন করেছে কিন্তু রিসিভ করছে না।। সারাদিন পার করে গভীর রাতে বাড়ি ফিরলো জুবায়ের। ক্লান্ত শরীর। কক্ষে প্রবেশ করতে লেট হলো কিন্তু বিছানায় শুয়ে পড়তে লেট হলো না। অধরা এতক্ষণ ওর জন্য অপেক্ষা করছিল। জুবায়ের সেসব পাত্তা দিলো না। অধরা দ্রুত গিয়ে জুবায়ের হাত টেনে বলল,
> অকর্মা, কুম্ভকর্ণ,খারাপ মানুষ আপনি। সারাদিন কোথায় ছিলেন? একটা কাজ দিয়েছি ঠিকঠাক পারেননি। আবার কথায় কথায় হুমকি ধামকি দিতে উস্তাদ। মানছি কাজটা কঠিন তাইবলে ফোন রিসিভ করলেন না কেনো? উত্তর দিন তাড়াতাড়ি।
জুবায়ের চোখ বন্ধ রেখেই মলিন হাসলো। ওর কথা পাত্তা না দিয়ে বলল,
> খেয়েছো তুমি? আসার সময় তোমার দরকারি জিনিসপত্র সব গুছিয়ে এনেছিলে?না আনলে লিস্ট করে রাখো আমি আগামীকাল নিয়ে আসবো। তোমার ড্যাডের বাড়িটা আমি আগামীকাল লোকজন দিয়ে পরিস্কার করে নিবো চিন্তা করো না।
অধরা হতবাক জুবায়েরের কথা শুনে। হঠাৎ পরিবর্তন কেনো বুঝতে পারছে না। ও চোখমুখ কুচকে বলল,
> কি হয়েছে আপনার? আমরাতো দুদিন পরেই ফিরে যাচ্ছি তাহলে এসব করে কি হবে?
> ও বাড়িতে আমরা আর ফিরছি না। প্রশ্ন করে আমাকে বিব্রত করোনা উত্তর দিতে পারবো না। তোমার বাবা মায়ের খুনি বা আমার উপরে আক্রমণকারীর ঠিকানা নিয়েও ঝামেলা করো না। আল্লাহর উপরে ছেড়ে দাও। সৃষ্টিকর্তার রহমত থাকলে আমি তোমাকে রক্ষা করতে যা যা দরকার হয় করবো। জানি আমি ভালো না। বিশ্বাসঘাতকতা করেছি। না ঠকলে সত্যিই বোঝা যায় না কতটা কষ্ট হয়। এখন ঘুমিয়ে যাও।
জুবায়ের বালিশে উপুর হয়ে শুয়ে পড়লো। কম্বলটা টেনে মাথা অবধি ঢেকে নিয়ে। অধরা ওর পাশে বসে আছে। যতটুকু জ্ঞান আছে বুঝে নিলো জুবায়ের সবটা জেনে গেছে কিন্তু বলছে না। হয়তো নিজের পরিবারের উপরে আঙুল উঠেছে তাই মানতে পারছে না। অধরা জানে আরমান ফারুকী সহজে ওদেরকে এভাবে ছাড়বে না। খুব তাড়াতাড়ি একটা উপাই বের করে অধরাকে নিয়ে যাবেন। সেদিন জুবায়ের ছিল বলে ও আসতে পেরেছিল নয়তো কখনও পারতো না। সব জায়গাই একটা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। লোকটা নিজের আপন ভাইকে মেরে সম্পত্তি দখল করেছিল। এবার কি নিজের ছেলেকে মারবেন? কি লাভ এতে?
চলবে