প্রেমরোগ-৮,০৯

0
715

#প্রেমরোগ-৮,০৯
#তাসনিম_তামান্না
০৮

আহমেদ ভিলায় এসে পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাত হয়ে গেলো বেশি দূরত্ব নয় তবুও সব গুছিয়ে আসতে আসতে দেরি হয়ে গেলো। এবাড়ি এসে কুয়াশা আর মেঘাকে একরুমে থাকতে দেওয়া হলো মেঘা আগে ফ্রেশ হয়ে এসে চুপচাপ বিছানায় শুয়ে পড়লো কুয়াশা সেটা দেখেও কিছু না বলে ফ্রেশ হতে চলে গেলো। ফ্রেশ হয়ে এসে তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে বলল
” মেঘা উঠ খাবি চল ”
মেঘা ভা’ঙা গলায় বলল
” ক্ষুদা নেই খাবো না ”
” এভাবে চললে কিভাবে হবে মেঘা? তুই তাকে ভালোবাসিস সে তো তোকে ভালোবাসে না। তাহলে কেনো তার জন্য শুধু শুধু নিজেকে কষ্ট দিচ্ছিস?চল
ওঠ খাবি দুপুরেও ঠিক মতো খাস নি। আন্টি তখন ডেকে গেছিলো ”
” তুই আমার মনের অবস্থা বুঝতেছিস না? আমার কিছু ভালো লাগতেছে না ”
” তুই এভাবে কেনো থাকবি? মুভ ওন কর। রিদ ভাইয়া তো ভালো আছে। তাহলে তুই কেনো খারাপ থাকবি? ”
মেঘা কিছু বলল না চুপচাপ শুয়ে রইলো। তখন আবারও দরজায় কড়াঘাত পড়লো। কুয়াশা দরজা খুলে দিয়ে দেখলো তুষারের মা তিশা বলল
” কি রে চল খাবি তো রাত হয়েছে অনেক ”
” মামনি শুনো না আসলে না আজ রাতে খেতে ইচ্ছে করছে না দুপুরে বেশি খাওয়া হয়ে গেছে এখন খেলে বমি হয়ে যাবে ”
” সে কি রে শরীর বেশি খারাপ লাগছে না-কি? ডক্টর ডাকবো? ”
” ওহ মামনি এতোটাও কিছু হয় নি তুমি বরং লেবু পানি দাও ”
” ওটার কি হইছে ঘুমিয়ে গেলো নাকি? ”
” হ্যাঁ ওর ও আমার মতো হচ্ছে তুমি লেবু পানি দাও দুই গ্লাস খেলে সকালে উঠে ফিট হয়ে যাবো ”
” আচ্ছা আমি এখনি পাঠিয়ে দিচ্ছে আর বেশি খারাপ লাগলে জানাস ”
” আচ্ছা ”
তিশা চলে গেলো কুয়াশা আর দরজা লাগালো না ভেজিয়ে দিয়ে বেডে এসে বসে মেসেঞ্জারে ফ্রেন্ড গ্রুপে এসএমএস দিলো লিখলো ” তোরা ঠিক মতো খেয়েছিস তো আজ আমি বা মেঘা কেউ ই খেয়াল রাখতে পারি নি ”
অনু সাথে সাথে সিন করে লিখলো ” হ্যাঁ সে সব ঠিক আছে। কিন্তু মেঘা কে আজ আমার ঠিক লাগে নি চোখ মুখ শুকনা লাগছে কি হয়েছে রে ওর? ”
কুয়াশা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে লিখলো ” ওর আবার কি হবে? কাল এতোক্ষণ পানিতে থাকায় একটু ঠান্ডা লাগছে তাই ওমন হয়েছে ”
লিখে সেন্ড করে অনলাইন থেকে বেরিয়ে আসলো। নাহলে ওরা একটার পর একটা প্রশ্ন করে মাথা খারাপ করে ফেলতো পরে বাদ্ধ্য হয়ে সবটা বলতে হতো। এই হলো এক সমস্যা একবাড়িতে সমবয়সী কাজিন থাকলে একজন বকা খেলে ওপর জন ও খাবে। একজনের ভালো রেজাল্ট হলে অপর জনের জনের খারাপ হলে আরেক সমস্যা। আবার ফ্রেন্ড সার্কেলের মধ্যে একসাথে থাকলে এমন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়।
শরবত নিয়ে দরজা ঠেলে প্রবেশ করলো বাড়ির মেড কুলসুম হাসি হাসি মুখে বলল
” নতুন বউ কেমন আছো? আমারে তো ভুইলায়ই গেছো ”
‘ নতুন বউ’ ডাক শুনলেই কুয়াশার কেমন জানি লাগে। এটা খারাপ ও না ভালো ও না কেমন মিশ্র অনুভূতি। কুয়াশা হেসে বলল
” তোমারে কি ভুলা যায় কুলসুম আপা ”
” তুমি আবার আমারে নকল করতাছো? ”
” তোমারে কবে নকল করলাম? হুম? হুম? ”
” সে যাগে তা কেমন আছো কইলা না তো? ”
” মেলা ভালা আছি গো তুমি কেমন আছো? ”
” আমি ও তোমাগো দেইখা মেলা ভালো হইয়া গেছি। তুমি কবে আসবে গো এ বাড়িতে? ”
কুয়াশা চুপ হয়ে গেলো। এ প্রশ্নের উত্তর তার কাছে নেই। এ প্রশ্নের উত্তর তার বাবা জানে। কুয়াশা হেসে বলল ” এই যে আসলাম ”
” আমি এই আসোনের কথা কইতাছি না পারমালেন্টলি করবে আসবে ”
কুলসুমের মুখে উল্টো পাল্টা ইংরেজি শুনে কুয়াশা হেসে বলল ” আসবো কোনো একদিন ”
” আইচ্ছা তোমাগো লগে পরে গল্প করুম এখন যায় মেলা কাম পইড়া রইছে ”
কুলসুম বিয়ে সকল অনুষ্ঠানে থাকলেও তেমন কথা হয় নি কুয়াশার সাথে। কুয়াশা লেবুর পানি খেয়ে মেঘাকে ডেকে জোর করে তুলে বলল
” নে লেবু পানি খা আর কিছু না খাস ”
মেঘার অনিচ্ছায় শর্তেও খেতে হলো। রাতে ক্লান্ত থাকায় মেঘা আর আজ রাত জেগে কান্নাকাটি করতে পারলো না ঘুমিয়ে গেলো সাথে কুয়াশাও।

কুয়াশা সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলো মেঘা এখনো ঘুমাচ্ছে। মেঘাকে ডাকলো না। ঘুমাক মেয়েটা ঘুম থেকে উঠলেই রিদের ভুত মাথায় চাপপে। কেঁদে কেটে ভাসিয়ে দিবে সব। কুয়াশা ফ্রেশ হয়ে রুমে বাইরে আসলো এখন সকাল ৮ বাজে তিশা নিজের মনে কাজ করে যাচ্ছে। কুয়াশা গিয়ে বলল
” কি করছো মামনি? ”
তিশা রুটি বেলতে বেলতে বলল
” কাজ করছি রে। ঘুম ভাঙ্গলো তোদের? চা দিবো খাবি ”
” ইচ্ছে করছে না একে বারে নাস্তা করবো ”
” সেই জন্য তোর আর মেঘার গায়ে কিছু লাগে না শুধু হাড় ছাড়া ”
” এভাবে বলো না কষ্ট লাগে তো ”
” তো কিভাবে বলবো? যা বলছি সত্যি ই তো বলছি। তোদের পি’টি’য়ে খাওয়ানো উচিত। না খেয়ে এক এক জনের কি অবস্থা ”
” আচ্ছা হইছে ওসব বাদ দাও। বলো কি করে দিবো ”
তিশা অবাক হয়ে কুয়াশার দিকে তাকিয়ে বলল
” তুই আবার কি করে দিবি? বাসায় একটা কাজ ও করিস আবার আমাকে হেল্প করতে আসছিস ”
” তাতে কি? ”
” তাতে কি মানে? চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাক না হলে রুমে গিয়ে শুয়ে রেস্ট নে। নিজে কিছু পারে না আবার আমাকে হেল্প করতে আসছে ”
কুলসুম তরকারি কাটতে কাটতে বলল
” আম্মা। নতুন বউ রে কবে আনবেন ”
কুয়াশা অস্বস্তিতে পড়ে গেলো। তিশা কুয়াশার দিকে তাকিয়ে নিজের কাজে মন দিয়ে বলল
” সময় হলেই আনবো ”
” আপনাগো সময়ডা হবে কবে কন তো আমারে একটু ”
” সময় হলে দেখতে পাবি এখন চুপচাপ কাজ কর ”
কুলসুম মন খারাপ করে কাজ করতে লাগলো। কুয়াশা চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো। তিশা কুয়াশার হাতে আচমকা কফির মগ দিয়ে বলল
” তুষার কে দিয়ে আয় ”
কুয়াশা চমকে বলল ” আমি কেনো? ”
” তুই না কেনো? আমাদের হাত বন্ধ কাজ করছি দেখছিস না? এতক্ষণ তো কাজ করবি বলছিলি এই কাজটা করে দে ”
কুয়াশা অসহায় চাহনি দিয়ে তাকিয়ে থাকলেও তিশা সেটাতে পাত্তা না দিয়ে কুয়াশাকে ওপরে পাঠিয়ে দিলো। কুলসুম মিটমিট করে হেসে যাচ্ছে।
কুয়াশা তুষারের রুমের সামনে দাড়িয়ে নিজেকে সাহস জুগিয়ে দরজায় ঠকঠক করে নক করলো ওপাশ থেকে কোনো আওয়াজ না পেয়ে দরজা ঠেলে উঁকি দিয়ে দেখলো রুমে নেয়। ওয়াসরুম থেকে পানির আওয়াজ ভেসে আসছে। মনে মনে ভেবে নিলো মগটা রেখেই দৌড় দিবে। টি-টেবিলের ওপর মগটা রেখে পিছনে ফিরতেই দেখলো তুষার দরজা লাগিয়ে দিলো। কুয়াশা আতংকিত চোখে তাকিয়ে রইলো বলল
” দরজা লাগাছেন কেনো? আমি যাবো তো ”
” তোমার সাথে বোঝা পড়া আছে ”
কুয়াশা ভয়ার্ত চোখে নিচের দিকে তাকিয়ে রইলো। তুষার কি করতে চাইছে কিছু বুঝতে পারছে না। তুষারের পা চোখের সামনে এসে দাঁড়ালো কুয়াশা মাথা উঁচু করে দেখলো তুষার কাছে চলে এসেছে কুয়াশা পিছনে যেতে নিলে তুষার কুয়াশার বাহু চেপে ধরলো বলল
” সাহস বেড়ে গেছে দেখছি ”
কুয়াশা ভ্রু কুঁচকে বলল ” মানে? ”
” তোমার আমি ওয়ার্নিং দিচ্ছি লাম না ছেলেদের থেকে ডিসটেন্স রেখে চলবা ”
” ঈশান আমার ফেন্ড এর থেকে বেশি কিছু নয় ”
” তার ফেন্ডের সাথে রাতের বেলা কি এতো কথা? ”
” আজব বিহেভ করছেন কেনো? হাত ছাড়ুন লাগছে ”
” লাগুক ”
কুয়াশা চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো তুষার কুয়াার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে কুয়াশার হাত ছেড়ে দিলো কুয়াশা একপ্রকার দৌড়ে বেড়িয়ে এলো। খাবার টেবিলে সকলে বসে টুকটাক কথা বলছে। কুয়াশা তুষার মুখোমুখি বসেছে। কুয়াশা খেতে খেতে পায়ে কারোর পায়ের স্পর্শ পেলো। কুয়াশা প্রথমে ভাবলো হয়ত ভুল করে হয়েছে হতেই পারে কিন্তু স্পর্শটা তীব্র হতে থাকলে সকলের দিকে সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকালো তুষারের বাঁকা হাসি দেখে বুঝলো এটা তুষারের কাজ কুয়াশার মাথায় চট করে রাগ উঠে গেলো। পায়ের নক তুষারের পায়ে বসিয়ে দিলো। তুষার থমকে কুয়াশার দিকে তাকালো কুয়াশা যে এমন কিছু করবে ভাবতে পারে নি। কুয়াশা মেকি হাসি দিয়ে পা সরিয়ে নিলো। তুষার তীক্ষ দৃষ্টিতে তাকিয়ে কিছু বলল না।

চলবে ইনশাআল্লাহ

#প্রেমরোগ-৯
#তাসনিম_তামান্না

সন্ধ্যা বেলা ড্রাইংরুম বসে সকলে গল্প করছে। মেঘা মন খারাপ নিয়ে ও বসে আছে কোনো কথা বলছে না শুধু হুম, আর না ছাড়া। কুয়াশার এ বাড়িতে থাকতে মন চাইছে না। এটা নিয়ে ও নিজের ওপরে মহা বিরক্ত তাও সকলের সাথে হাসি মুখে কথা বলছে। তুতুল বলল
” কি হয়েছে মেঘা মন খারাপ ”
মেঘা সাথে কুয়াশাও চমকে উঠে মেঘা বলল
” কি বলো ভাবিপু আমার আবার কি হবে? ”
” উহুম বলে ফেলো সত্যি করে কি হয়েছে? ”
” কিছু হয় নি আচ্ছা কবে বাসায় যাবো? ”
” কেনো বাসার জন্য মিস করছো? ”
” তা বলতে পারো ”
” বিয়ের পর কি করবে? ”
মেঘা হাসলো। কুয়াশা বলল
” ভাবিপু তুষার ভাইয়া কবে চলে যাবে ”
” বলল তো ৩ মাসের ছুটি নিয়ে আসছে মাত্র তো একমাস হলো এখনো দু’মাস বাকি ”
” ওহ ”
” কেনো কিছু হয়েছে? ”
” না কি হবে? শুনছিলাম উল্টো পাল্টা শুনিয়ে দিলো ”
” আমার ভাইটা ওমনই জানিস ই তো একটু ঘাড় ত্যাড়া। এই দুই মাস চুটিয়ে প্রেম করে নে ”
কুয়াশার খুব বলতে ইচ্ছে হলো ” তোমার ভাই যা আস্ত একটা শ’য়তা’ন প্রেম দূরের কথা স্বাভাবিক কথা বলতে গেলে ধমকের ওপর রাখে আর কিভাবে আমাকে অপমান করা যায় সেই সুযোগে থাকে ” তুতুলের কথায় ভাবনার সুতা ছিঁ’ড়ে বেড়িয়ে আসলো কুয়াশা তুতুল হেঁসে বলল
” কুয়াশা আমার ভাইটা কি রোমান্টিক নাকি রে ”
কুয়াশা সাথে সাথে ভিতরের লজ্জারা ভির জমায় সেদিন রাতের দৃশ্য পট চোখের সামনে ভেসে উঠলো গলায় ফাস্ট চু!মু দিয়ে ছিলো। কুয়াশা তুষারের সম্পর্কটা বৈধ হওয়ার শর্তেও সেই প্রথম তুষার কুয়াশার প্রতি ওমন ফিলিংস প্রকাশ করে। কুয়াশার মনে প্রশ্ন জাগে তুষার কি সত্যি রোমান্টিক?
কুয়াশার মুখে রক্তিম আভা ফুটে উঠে। সেটা দেখে তুতুলের সাথে মেঘা ও না হেসে পারে না। কুয়াশা অস্বস্তিতে পড়ে বলল
” কি সব আজেবাজে কথা বলো ভাবিপু ”
” হুম হুম আমরা বুঝতে ও পারছি আবার দেখতেও পারছি ”
কুয়াশা আমতাআমতা করে বলল
” তেমন কিছু নয় আপু ”
তিশা এসে বলল ” কি রে তোরা কি গল্প করছিস ”
” তেমন কিছু না আম্মু ”
” কি খেতে চাস বল ”
” কিছু করতে হবে না তুমি বসো তো একটু গল্প করি
” কিছু বানিয়ে আনি খেতে খেতে গল্প করার মজায় আলাদা ”
তিশা শুনলেন না রান্নাঘরে চলে গেলো। ঝটপট পিঁয়াজু, বেগুনি বানাতে লাগলো। ততক্ষণে মেঘ আর তুষার ও চলে এসেছে। তুতুল বলল
” শুনেছ কুয়াশা মেঘা বাসার জন্য মিস করছে ”
মেঘ হেসে বলল
” ওরা তো কখনো বাবা-মা কে ছাড়া একা কোথাও যায় নি এটাই প্রথম তাই এমন হচ্ছে ”
তিশা শুনতে পেলো কথাটা তুষার কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলো না। তিশা টি-টেবিলে খাবার গুলো রাখতে রাখতে বলল
” আমি আরও ভাবলাম তুতুল চলে গেলো ও তোদের দুইটাকে রেখে দিবো। তা না একরাত থেকে তোরা কান্না কাঠি লাগিয়ে দিলি? ”
মেঘা বলল
” মামনি ভাবিপু তুষার ভাইয়া চলে গেলে আর আংকেল তো সারাদিন অফিসে থাকে তাই বলছিলাম যে আমাদের ওখানে কয়দিন থেকে এসো চল ”
” সে পরে দেখা যাবেক্ষণ নে খেয়ে নে তোরা ”

সন্ধ্যায় ভাজাপোড়া নাশতা খাওয়ায় রাতে কেউ খেতে পারলো না। রাতে আবারও রিদ নামক পোকা মেঘার মাথায় কুটকুট করে কামড়াতে লাগলো। রিদের ছবি বুকে জড়িয়ে কান্না করে দিলো কুয়াশা প্রথম প্রথম মেঘাকে বোঝাতে চাইলেও মেঘা বুঝলো না। কুয়াশা এসব সহ্য করতে না পেরে ছাদে চলে গেলো। মেঘা বিড়বিড় করে বলতে লাগলো
” এখনি আমার রিদের সাথে কথা বলা লাগবে না হলে দম আঁটকে মা’রা যাবো। কিন্তু নম্বর কোথায় পাবো? মেঘ ভাইয়া? না না ভাইয়া সন্দেহ করতে পারে। তাহলে কার কাছ থেকে নিবো? তুষার ভাইয়া? হ্যাঁ হ্যাঁ তুষার ভাইয়া দিতে পারবে ”
মেঘা চোখমুখ মুছে তুষারের রুমে নক করলো তুষার দরজা খুলে মেঘাকে দেখে ভ্রু কুঁচকে বলল
” তুমি এখানে? এতো রাতে কোনো দরকার? ”
মেঘার আবারও কান্না ঠেলে আসতে চাইলো। তবুও ঠোঁট চেপে কান্না সংবরণ করে উপর নিচ মাথা নাড়িয়ে বলল ” হ্যাঁ দরকার ”
তুষার বলল ” হ্যাঁ বলো কি লাগবে? ”
” ভাইয়া রিদ ভাইয়ার নম্বর টা দিবেন প্লিজ ”
তুষারের ভ্রু কুঁচকে গেলো বলল
” রিদের নম্বর নিয়ে তুমি কি করবে? ”
” একটু দরকার ভাইয়ার সাথে ”
তুষারের সন্দেহ হলেও কিছু বলল না নম্বর টা দিয়ে দিলো। রিদের নম্বর পেয়ে মেঘা মন খুশিতে ঝলমলে করে উঠলো। রুমে এসেই রিদ কে ফোন দিলো প্রথম বার না ধরলেও দ্বিতীয় বার ধরলো রিদ হ্যালো বলতেই মেঘার মন ঠান্ডা হয়ে গেলো।
” কেমন আছেন? ”
রিদ চট করে রেগে গেলো মেঘার গলার আওয়াজ শুনে বলল
” তুমি? আমার নম্বর কোথায় পেলে? আর আমাকেই বা ফোন দিয়েছ কেনো? ”
” আমি ফোন দিতে পারি না আপনাকে? ”
” অবশ্যই না ”
মেঘা কেঁদে দিয়ে বলল ” ভালোবাসি আপনাকে। বুঝেন না কেনো? কেনো আমাকে এতো কষ্ট দিচ্ছেন? ”
রিদ কিছুক্ষণ নিরব থেকে বলল ” আমার যা বলার সেদিন রাতেই বলে দিয়েছি আর কিছু বলার নাই তুমি আমাকে আর ফোন দিবে না ”
” আপনি যদি এখন ফোন কাটেন। আমি কিন্তু যা খুশি করে ফেলবো ”
রিদ থমকায় ফোন না কাটলো না শান্ত কন্ঠে বলল
” কি চাচ্ছোটা কি তুমি? ”
” আপনাকে চাই ”
” আচ্ছা। আমার মধ্যে কি আছে যে তোমার আমাকেই লাগবে? ”
” আপনার একটা সুন্দর মন আছে ”
” মেঘা পাগলামি করো না। মন দিয়ে কিছু হয় না। আমি এতিম পুলিশের চাকরিটা করে নিজেকে চালায়। তোমার বাবা-মা তোমাকে নিয়ে স্বপ্ন আছে তাদের স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব তোমার। তাই এসব পাগলামো ছেড়ে দাও। পড়াশোনায় কনসানটেশন করো। ”
” আপনি সবার দিকটা দেখতেছেন আমার দিকটা দেখতেছেন না? ”
” মেঘা এভাবে অবুঝের মতো কথা বলছ কেনো? মেঘ জানলে ব্যপারটা আরো খারাপ হবে। তুমি নিজে একটা বার ঠান্ডা মাথায় ভাবো। তোমার আর আমার সম্পর্ক হওয়ার নয় আর যা হওয়ার নয় তা নিয়ে কথা বা সম্পর্ক বাড়ানোর কোনো মানেই হয় না ”
” আপনি একটা বার মেনে নেন আমি নিজে সবাইকে মানিয়ে দিবো ”
” মেঘা তোমার সাথে আমার কথা বলতে ইচ্ছে করছে না রাখছি। আর ফোন দিও না ”
রিদ ফোন কেটে দিতেই মেঘা কাদলো না ফোনের দিকে তাকিয়ে রিদের সবটা কথা প্রথম থেকে ভাবলো।।
চলবে ইনশাআল্লাহ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here