প্রেমরোগ-৬,০৭

0
656

#প্রেমরোগ-৬,০৭
#তাসনিম_তামান্না
০৬

চারিদিকে আঁধার ঘনিয়ে আসছে নিকষ কালো অম্বরিতে চাঁদের দেখা নেই। আঁধার ঘুচিয়ে কৃত্রিম রং বেরংয়ের আলোয়ই চারিদিকে চোখ ধাঁধিয়ে গেলো। সুইমিংপুলের পানিতে এখনো সবাই লাফালাফি ঝাপাঝাপি করছে। তুতুল বলল. ” অনেক তো হলো চলো বাসায় যাওয়া যাক সবাই নিশ্চয়ই টেনশন করছে ফোনটাও কাছে নেই দেখ গিয়ে কতবার ফোন দিয়েছে ”
মেঘও সায় দিয়ে বলল ” আসলে আমাদের এখন যাওয়া উচিত ”
রিদ বলল
” তবুও এখনো অনেক কিছু ঘুরাঘুরি বাকি রয়ে গেলো ”
মেঘের আরেক ফেন্ড বলল ” এখন যাওয়া ক এমনিতেই অনেকক্ষন পানিতে থাকার দরুন জ্বর চলে আসবে ”
কুয়াশা স্থির হয়ে জমে দাঁড়িয়ে আছে কোনো কথা বলছে না। তুষার পানির তলা থেকে কুয়াশার কোমড় চেপে ধরে দাঁড়িয়ে আছে। তাতেই কুয়াশার নড়াচড়া বন্ধ হয়ে আছে।
মেঘা পুলের পানি গালে নিয়েছিল মেঘ বলল
” মেঘা ছিঃ এটা কি করছিস। জানিস এখানে মানুষ ইয়ে করে ”
সকলে জিজ্ঞাসাসূচক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো মেঘের দিকে মেঘা মুখ থেকে পানি বের করে বলল
” ইয়েটা কি ভাইয়া ”
” ইয়েটা হলো হিসু করে ”
সকলে নাক মুখ কুচকে গেলো।
মেঘার কথাটা কর্নপাত হতেই মেঘা কুয়াশা একসাথে বলল
” ইয়াক। ছিঃ ”
মেঘা দু বার গলা টানলো। সকলে মেঘের কথা শুনে পুলের পানিতে একদণ্ড দাড়ালো না। সকলে নিজের ড্রেসটা আবার পড়ে নিলো। ঈশান বলল
” আমি বাসায় চলে যাচ্ছি যথাসময়ে কাল রিসিভশনে পৌঁছে যাবো ”
রাহুল ও বলল
” আমি অনুকে পৌঁছে দিয়ে বাসায় যাচ্ছি আপনারা সকলে চলে যান ”
ঈশানের চলে যাওয়া কথা ওঠতেই কুয়াশার টনক নড়ে। উমার বলা কথাটা তো বলায় হলো না। কুয়াশা মন খারাপ করে বলল ” আচ্ছা সাবধানে যাস তোরা বাসায় গিয়ে ফোন দিস ”
ওরা সম্মতিসূচক মাথা নেড়ে রওনা দিলো। তুষার ও বাইক নিয়ে চলে গেলো। কুয়াশারা মাইক্রোতে করে বাসায় ফিরলো। ইতি মধ্যে বাসা থেকে অনেক গুলো ফোন চলে আসছে।
বাসায় ঢুকতে যাবে তখন মেঘা রিদের হাত চেপে ধরলো ওরা সবার পিছনে থাকায় কেউ খেয়াল করে নি। রিদ ভ্রুকুঞ্চিনত কর মেঘার ধরে রাখা হাতের দিকে তাকিয়ে আছে। রিদের তাকানো তে মেঘা কিছুটা ভয় পেয়ে হাত ছেড়ে দিলো। শুকনো ঢোক গিলে বলল ” আজ রাত ১১ টার সময় ছাদে আসবেন প্লিজ। আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে। ”
” আমার সাথে তোমার কি কথা থাকতে পারে মেঘা? ”
” কোনো কথা থাকতে পারে না বুঝি? ”
” অবশ্যই না ”
মেঘার মুখটা একটুখানি হয়ে গেলো। রিদ সেটা দেখে বলল ” আসবো। রুমে যাও ”
নিমিষেই মেঘার মুখে হাসি ফুটলো। পুলকিত মন নিয়ে বাড়ির মধ্যে ডুকলো। রিদ ও মেঘার পিছনে পিছনে ভিতরে ঢুকলো। মেঘা ভিতরে ডুকতেই মায়ের অগ্নি দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে তার দেহখানো ছিন্নবিন্ন হয়ে যাবে। মেঘার মনে ভয় হলো। মাথা নিচু করে দৌড়ে রুমে চলে গেলো।
রিদ যেতে নিলে মুন্নি বলল
” রিদ তোমার সাথে আমার কিছু কথা ছিল ”
” জ্বি আন্টি বলুন ”
” তুমি রুমে যাও আমি আসছি ”
” আচ্ছা ”
___________

কুয়াশা রুমে এসে আরেকবার শাওয়ার নিলো। মেঘের কথাটা শোনার পর থেকে কুয়াশার শরীরে পোকার মতো কিছু যেনো গায়ে কুটকুট করছিলো। কয়েকবার হাঁচি দিলো। প্যারাসিটম খেয়ে ফোন নিয়ে শুয়ে পড়লো। ঈশানের কাছে ফোন দিবে বলে ঈশানকে সামনা-সামনি কথাগুলো বলতে পারলে শান্তি পেত কিন্তু আজ এতো ঝামেলার মধ্যে কথাটা কুয়াশার মাথার থেকে একেবারের জন্য বেরিয়ে গেলিয়ে ছিল । কুয়াশা ঈশানকে ফোন দিলো ঈশান ফোন ধরে বলল
” হ্যাঁ বল ”
” বাসায় কখন গেছিস? ”
” তোকে টেক্সট করলাম না তখন ”
” ওহ এখন কি তুই ফ্রি আছিস? ”
” হ্যাঁ কেনো? ”
” তোর সাথে ইনপটেন কিছু কথা ছিল। সিরিয়াসলি নিবি ”
” ওকে বাপ বল ”
” ঈশান তোর কিছু করা উচিত এভাবে আর কত বসে থাকবি ”
” তুই ও উমার মতো প্যানপ্যাম শুরু করলি। তোকে এসব উমা বলছে তাই না? ”
” উমার বাসা থেকে বিয়ের চাপ দিচ্ছে। আর তুই গুরুত্ব দিচ্ছিস না। উমাকে হারিয়ে ফেলার পর তখন কাঁদিস ”
ঈশান থমকে গেলো নিজেকে সামলাতে একটু সময় নিলো। কুয়াশাও ঈশানকে সময় দিলো ঈশান বলল
” কি বলছিস এসব? উমা আমাকে তো এসব কিছু বলে নি। ব্লক দিয়ে রাখছে ”
” উমা তোকে কি বলবে তুই উমাকে গুরুত্ব দিস? আমার তো এখন ডাউট হচ্ছে তুই আদেও উমা কে ভালোবাসিস তো? ”
ঈশান রেগে গেলো বলল
” কুয়াশা তুই উলটোপালটা বলছিস কেনো? ”
” তো কি উলটোপালটা বললাম। ভালোবাসলে তার মনের অবস্থাটা অনন্ত বোঝার চেষ্টা করতি কিন্তু না তুই সারাটাক্ষন চিল মুডে থাকিস মানে তোর কারোর কোনো কিছুতেই যায় আসে না? এটলিস্ট চাকরি টা খোঁজার ট্রায় করতি ”
ঈশান রেগে চিৎকার দিয়ে বলল
” তুই কি পাগল তোকে কে বলল আমি জব খুঁজছি না? তোদের কে দেখিয়ে দেখিয়ে জব খুঁজতে হবে? ”
” আজব অভদ্র মতো চিৎকার চেচামেচি করছিস কেনো? ”

ঈশান জোরে জোরে শ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করার প্রয়াস চালালো। কুয়াশা চুপ থেকে বলল
” আমার কথাগুলো মন দিয়ে শোন। যেহেতু আংকেল একটা স্কুলের প্রধান শিক্ষক আর সে তো তার বেকার ছেলেকে একটা মেয়ের সাথে বিয়ে দিতে রাজি হবে না? মেয়ের বাবা-মা ও তো মেনে নিবে না তারা তো আর কেনো বেকার ছেলের হাতে মেয়ে তুলে দিতে না তাদের ও তো তাদের মেয়েকে নিয়ে আশা ভরসা আছে। তাই তোর কিছু করা উচিত। জব খোজার পাশাপাশি একটা ব্যবসা শুরু কর ”

” ব্যবসার যে পুঁজি লাগে সেটা কে দিবে? এমনিতেই বাবার টাকায় সংসার টেনেটুনে চলে। উঠতে বসতে বাসা থেকে চাপ দেয় কিছু করতে বলে আমি কি করবো আমার দিকটা তোরা কেউ কখনো ভেবে দেখেছিস? কখনো বোঝার চেষ্টা করেছিস এতো হাসিমজার মধ্যে এই ছেলে কষ্ট নিয়ে ঘুড়ে বেড়ায়। তোরা শুধু মুখে বলেই খালাশ। আর কি বলছিলি চাকরি এখন চাকরি করতে গেলেও না টাকা লাগে ঘু’ষ লাগে এসব সার্টিফিকেটে ভালো রেজাল্টেও কাজ হচ্ছে না বুঝলি। বাসায় বোন আছে মেডিকেল এডমিশন দিবে ক’দিন পর তার জন্য তো টাকা লাগবে না-কি? বড় বোনটা প্রেগন্যান্ট তার জন্য টাকা লাগবে দুলাভাই আর কত দিবে? ”

কুয়াশা থমকায় সে সত্যি ঈশানের দিকটা ভাবে নি সত্যি তো ঈশান ই বা কি করবে? কুয়াশা চুপ থেকে বলল ” তুই ব্যবসা শুরু কর টাকা আমি ম্যানেজ করে দিবা নি তুই… ”
” নো নিড কারোর দয়া আমার চাই না ”
” তুই আমার পুরো কথা না শুনে হাসের মতো প্যাকপ্যাক করছিস কেন? একদম চুপ আমি যেটা বলছি সেটা কর। কুশান ভাইয়া কে বলে টাকা ম্যানেজ করে দিবানি তুই না হয় এটা ধার হিসেবে নে তোর সুবিধা মতো দিয়ে দিস ”

সকল কথা শেষ করে ফোন রাখতেই আবার ফোন আসলো। কুয়াশার ভ্রু কুঁচকে গেলো দেখলো আননোন নম্বর রিসিভ করে সালাম দিতেই ওপাশ থেকে কর্কশ গলায় বলল
” এতোক্ষণ কার সাথে প্রেম করছিলি? ”
তুষারের তুইতোকারি তে কুয়াশা ভরকে গেলো ভড়কানো গলায় বলল
” মানে? ”
” মানে বুঝিস না? কার সাথে কথা বলছিলি? ”
কুয়াশা ভয়ে ভয়ে বলল ” ঈশানের সাথে ”
” ঈশানের সাথে তোর এতো কিসের কথা? ”
” একটু কথা ছিল ”
” বাহ তা কি কথা ছিল শুনি? ”
” আপনি শুনে কি করবেন? ”
” হ্যাঁ সেটাই তো আমি শুনে কি করবো? তুই ঈশানের সাথে ঢলাঢলি করে নাচবি আবার ফোনে ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলবি। ”
” আর্শ্চয এমন ভাবে কথা বলছেন কেনো? ”
” কি ভাবে কথা বললাম? ভেবেছিলাম তোর সাথে খারাপ ব্যবহার করবো না কিন্তু তুই তো শুনলি না তুই আসলে আমার কাছ থেকে ভালো ব্যবহার ডিজাভ করিস না ”
তুষার ফোন কেটে দিলো কুয়াশা একটা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো।
চলবে ইনশাআল্লাহ

#প্রেমরোগ-৭
#তাসনিম_তামান্না

আঁধার রাতে মরিচবাতি গুলোই সুন্দর্য্য বাড়িয়ে দিয়েছে। শীতল হওয়া ফুলের সুবাসে মুখরিত চারিদিকে। মেঘা ছাদে এসে দেখলো রিদ রেলিং ধরে চাঁদহীন আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। মেঘা গলা ঝেড়ে নিজের উপস্থিতি জানান দিলো। রিদ ঘুরে তাকলো না পিছনে না ফিরেই বলল ” কি বলবে তারাতাড়ি বলো আমি ঘুম পাশে। আর বন্ধুর বোনের সাথে আলাদা কথা বলা শোভনিয় দেখায় না। লোকে খারাপ ভাববে ”
” আপনার গলা টা এমন লাগছে কেনো? ”
” একটু ঠান্ডা লাগছে। ”
” আপনার জন্য চা নিয়ে আসবো খেলে ভালো লাগবে ”
” লাগবে না আপাততঃ কি বলার তারাতাড়ি বলো ”
” এতো তাড়া কিসের? সবার বেলায় সময় হয় আমার বেলায় আপনার সময় হয় না ”
” কি বলছ তোমার খেয়াল আছে মেঘা এ কথার মর্মার্থ বুঝো। ঠিক ভাবে কথা বলো ”
মেঘা সময় না নিয়ে রিদ কে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো। বলল
” আমি আপনাকে ভালোবাসি… খুব বেশি ভালোবাসি ”
রিদ চমকে নিজের থেকে মেঘাকে সরিয়ে একটা চ’ড় মে’রে দিলো। মেঘা হতভম্ব, হতবিহ্বল হয়ে গালে হাত দিয়ে রিদের দিকে ছলছল নয়নে তাকালো। রিদের রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে
” কি সমস্যা তোমার মাথার ঠিক আছে? একটা মেয়ে হয়ে কিভাবে একটা ছেলেকে জড়িয়ে ধরতে পারো? নির্ল’জ্জ হয়ে গেছো? ”
মেঘা কাজটা আবেগে ভেসে করে ফেলেছে। মেঘা রিদের ব্যবহারে কষ্ট পেয়ে ডুকরে কেঁদে উঠে বলল
” আমি আপনাকে ভালোবাসি রিদ ”
রিদ জোরে জোরে বার কয়েক শ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করার প্রয়াস চালিয়ে বলল
” মেঘা এটা তোমার আবেগ ভালো লাগা এসব ভুলে যাও মেঘা সেটা হওয়ার নয় সেটা নিয়ে ভাবার কোনো মানে হয় না ”
” অর্নাস ফাইনালে ইয়ারে পড়া মেয়েকে বলছেন আবেগ নিয়ে চলি? এটা আবেগ বা ভালোলাগা নয় এটা ভালোবাসা ”
রিদ মেঘার কান্নারত মুখশ্রীর দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারলো না অন্যর্ত দৃষ্টি স্থির রেখে বলল
” কিন্তু আমি তোমাকে ভালোবাসি না ”
মেঘার চোখ দিয়ে অনর্গল অশ্রু ঝরতে লাগলো ভা’ঙা গলায় বলল
” আমি কি দেখতে এতোটাই খারাপ ? আমাকে ভালোবাসা যায় না? ”
রিদ নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। মেঘা চোখের পানি মুছে দৃঢ় কন্ঠে বলল ” আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলুন। এভাবে অন্য দিকে তাকিয়ে আছেন কেনো? ”
রিদ শান্ত কন্ঠে বলল
” মেঘা নিচে যা-ও। এভাবে কেউ দেখলে খারাপ ভাববে ”
” ভাবুক আপনার কি যায় আসে? ”
” ওকে তোমাকে যেতে হবে না আমি ই যাচ্ছি ”
রিদ যেতে নিলে মেঘা রিদের হাত ধরে কাতর কন্ঠে বলল ” একটিবার ভালোবেসে দেখুন আমি কথা দিচ্ছি আপনি যা বলবেন তাই করবো ”
রিদ ঝাড়ি দিয়ে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলল
” যদি আমাকে এতোই ভালোবেসে থাকো আমার থেকে দূরে থাকবে ”
” আমাকে কেনো ভালোবাসা যায় না? আমার দোষটা কোথায়? ”
” তুমি আমার বন্ধুর বোন তার সাথে আমি বে’ই’মা’নি করতে পারি না ”
মেঘা নাছোড় বান্দা হয়ে বলল
” কিন্তু আমি আপনাকে ভালোবাসি ”
” আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি ”
মেঘা থমকে গেলো। ছোট হৃদয়খানা খন্ড দিখন্ড হয়ে গেলো। রিদ চলে গেলো মেঘা রিদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে অশ্রু বিসর্জন দিতে লাগলো। অন্তস্থল জ্বলছে। জ্বলে পুড়ে ছাড়খার হয়ে যাচ্ছে। অদৃশ্য অসহনীয় যন্ত্রণা নিয়ে ছাদের মাঝখানে বসে পড়লো। ফেলে চলে যাওয়া মানুষটা কি একটি বারও বুঝলো মেঘার বুক ফাটা চিৎকার তার মন অব্দি পৌঁছালো না? তার হৃদয় স্পর্শ করতে পারলো না মেঘার কান্নারত মুখশ্রী?
চোখ মুখ ফুলিয়ে রুমে আসলো মেঘা। কুয়াশা মেঘার জন্য অপেক্ষা করছিলো। মেঘা আসলেই ঘুমিয়ে পড়বে বলে। কিন্তু মেঘাকে বিদ্ধস্ত অবস্থা কক্ষে প্রবেশ করতে দেখে থমকায় কুয়াশা। বিছানা থেকে নেমে রুমের দরজা লাগিয়ে আতংকিত কন্ঠে বলল ” কি হয়েছে তোর? এমন অবস্থা কেনো? কান্না করেছিস? ”
মেঘা কুয়াশাকে জড়িয়ে ধরে হু হু করে কেঁদে উঠলো। কুয়াশা মেঘাকে শান্ত করার চেষ্টা করে বলল ” বল আমায় কি হয়েছে? ”
মেঘা ধীরে ধীরে কুয়াশা কে সব বলল। কুয়াশা সব শুনে এলোমেলো শব্দে বলল ” পাগল তুই? এভাবে কেউ কিভাবে তুই? আমার মাথা কাজ করছে না। তুই আগে শিওর হয়ে নিতি ভাইয়া আগে থেকে অন্য কাউকে ভালোবাসে ”
” না ও মিথ্যা বলছে আমি জানি ”
” মেঘা পাগলামি ছাড় এটা জানাজানি হলে কি হবে ভাবতে পারছিস? রিদ ভাইয়া ঠিকি বলছে মেঘ ভাইয়া জানলে ওদের ফেন্ডশিপটা নষ্ট হবে। তুই নিশ্চয়ই সেটা চাস না। ”
মেঘা মাথা নাড়ালো সে চাই না এটা।
” ঘুমিয়ে পড় রাত হয়েছে। ”
মেঘা ভাঙাচোরা মন নিয়ে শুয়ে পড়লো। কিন্তু ঘুম আসলো না নির্ঘুম রাত কাটিয়ে দিলো রিদের কথা ভাবতে ভাবতে নিশ্চুপ বোবা কান্না করলো। কুয়াশা মেঘার পাশে শুয়ে মেঘার উসখুস দেখেও কিছু বলল না। নিজেকে নিজে সামলাতে না পারলে অন্য দেওয়ার যুক্তি জ্ঞান ও কাজে আসে না। কেমন তিক্ততা আসে রাগ লাগে।
কুয়াশারও রাতে ঘুম হলো না। মেঘার পাশে শুয়ে একবার ভাবলো তুষার কে ফোন দিয়ে তুষারের রাগ ভাঙিয়ে সব টা বুঝিয়ে বলবে। পর মুহূর্তে সে ভাবনা মুছে ফেলে মনে মনে বলল ” আমার ঠেকা পড়েছে নাকি? হুহ্ আমার রাগ কখনো ভাঙিয়েছে নাকি বুঝেছে। বুঝলেও নিজে রাগ দেখিয়েছে আমি কেনো রাগ ভাঙাবো? পারবো না। “,
রিসিভশন হলো বাগানে সেখানে স্ট্রেজ, প্যান্ডেল করা হয়েছে। কুয়াশা, মেঘাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে নিচে নিয়ে এসেছে। সকলে ততক্ষণে চলে এসেছে খাওয়া দাওয়া পাটচুকিয়ে কেউ কেউ চলে যাচ্ছে। মেঘা সদ্য ভাঙা হৃদয় নিয়ে সকলের সাথে ভালো ভাবে কথা বলার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। রিদ নাকি সকালে চলে গেছে কি নাকি কাজ পড়ে গেছে। মেঘা কথাটা শোনা মাত্র বুঝে ফেলেছে তার থেকে পালিয়ে গেছে রিদ। কুয়াশা আর তুষারের বেশ কয়েকবার চোখাচোখি হয়েছে। কেউ ই কারোর সাথে কথা বলে নি। সকল আত্নীয় স্বজন চলে যেতেই। তুষারে মা বলল ” আপা আমি তুতুল মেঘার সাথে কুয়াশা আর মেঘা কেউ ও বাড়িতে নিয়ে যেতে চাই ”
সকলে সহ মত পোষণ করলো। কিন্তু কুয়াশা আর মেঘা যেতে নারাজ তারা অসহায় চোখে তাকিয়ে রইলো। কিছু বলার সাহস ও পাচ্ছে না কি ভেবে বসবেন কে জানে। অগততা শেষ মেষ কুয়াশা আর মেঘাকেও অনিচ্ছার শর্তেও যেতে হলো।

চলবে ইনশাআল্লাহ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here