রোদেলা লেখা: মাহাবুবা মিতু পর্ব: ২২

0
810

রোদেলা
লেখা: মাহাবুবা মিতু
পর্ব: ২২

শোভন যখন দড়জা আটকে দিচ্ছিলো ওর ভীষণ ভয় হচ্ছিল। না জানি কোন অজানা দুঃখ ধেয়ে আসছে নতুন করে। এক হাত দিয়ে কাঁধে ধরে ওকে যে দেয়ালের গায়ে ধাক্কা দিলো
তখন মনে হচ্ছিল সব শেষ হয়তো, এখান থেকে আর ফিরতে পারবেনা ও। শোভন ওকে গুম করে ফেলবে অন্য কোন পৃথিবীতে। রোদেলা নামের মানুষটি উবে যাবে কর্পূরের মতো।

রোদেলার তাচ্ছিল্যের সুরে বলা ঐ কথাটা যদিও এ ঘটনার কারন, সত্যি বলতে রোদেলা পরিস্থিতিটাকে স্বাভাবিক করতে কথাগুলো বলেছিলো। আর শোভন এটাকে পার্সোনাল এট্যাক ভেবে নিয়েছে। ছেলেদের শক্তি নিয়ে তাচ্ছিল্য, তাদের সবচেয়ে প্র্যাস্টিজিয়াস ইস্যু। রোদেলা না বুঝে সেখানেই আঘাত করেছে।

বেশ কিছু সময় পর রোদেলা নাতাশার ডাক শুনতে পায়। এতেই যেন হুশ ফিরে ওর। দ্রুত পায়ে শোভনের ঘর থেকে বের হয়ে ড্রাইং রুমে যায় রোদেলা। সেখান থেকে বের হওয়ার পথে দেখতে পায় শোভন চোখ বন্ধ করে দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ঠিক যেখানটায় রোদেলা তার বিপরীতে। হয়তো ও অনুভব করছিলো দেয়াল ভেঙে রোদেলার অস্তিত্ব। রোদেলা এক মুহূর্তের জন্য থেমে আবার দ্রুত পা চালায়। এসবের শেষ হওয়া উচিত। এভাবে চললে হয়তো কষ্টটা বাড়বেই দুজনের। দুজনের না ঠিক, শোভনের একার কষ্টের । রোদেলার কোন কষ্ট নেই। নিয়তি ওকে এত কষ্ট দিয়েছে যে এসব কষ্ট খুবই তুচ্ছ মনে হয় ওর। তাছাড়া শুরু থেকেই কঠোর পাহারা বসিয়েছিলো রোদেলা মনের দ্বারে। রোদেলা ভাবে শোভনকে স্ট্রেট ভাবে কিছু বলবে। না হলে বেচারা শুধু শুধু অপেক্ষায় থেকে কষ্টই পাবে।

সেখান থেকে ফিরে রোদেলা নিজেকে ব্যাস্ত রাখার চেষ্টা করে। কারন মাথা থেকে ঐ মুহুর্তটা নড়ছেই না। যখন মনে পরছে তখন সারা শরীরে একটা ঝাঁকুনি দিয়ে উঠছে ঠিক সেই সময়কার মতো। কেমন যেন একটা অনুভূতি। তবে তা ভয়ংকর ছিলো ওর জন্য। কারন মনে তখন ভয় ছিলো, কেও ওকে খুঁজবে না তো…?

শোভনকে যতটা ফালতু ও ভেবেছিলো ততটাও না সে, তা আজ বুঝলো রোদেলা। অনেক কিছুই ঘটতে পারতো আজ। ও যাকে ভালোবাসে সে বাসে না, অথচ কত কাছে তিনি। নিজেকে কতটুকু শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে এমন সময়েও ধীর থাকা যায় তা আজ ওকে না দেখলে বুঝতেই পারতো না ও। আজকের এই ব্যাপারটা ওর আচরণ বিরুদ্ধ। উল্টো পাল্টা কিছু হলেও তা স্বাভাবিকই হতো ওর আচরণের প্রেক্ষিতে। সেদিকে রোদেলার গ্লানি থাকতো, কেন গেলো ঐ ঘরে। কিন্তু এমন কিছু না হওয়াটাই ওর গাঢ় ব্যাক্তিত্বের প্রমাণ দিয়েছে। বাসায় ফিরে এসবই কেবল ভাবছে রোদেলা।

খাবার খেয়ে বিছানা গা এলিয়ে দিয়ে ঘুমাতে চেষ্টা করলো ও। কিন্তু ঐ যে মাথায় সেই ঘটনাই ঘুরপাক খাচ্ছে। কি কি করতে পারতো শোভন তা ভেবে গা শিউরে ওঠে ওর। শোভন যেই ছটফটে স্বভাবের ও ইচ্ছে করলেই পারতো ওর সাথে রাগ দেখাতে কেন ভালোবাসা যায় না ওকে, কিসের এত অহংকার ওর। কিংবা পারতো ভালোবাসার মানুষকে এত কাছে পেয়ে জড়িয়ে ধরতে, অথবা দিতে পারতো ওর ঠোঁটের ছোঁয়া একে দিতে কোথাও …..

নিজের করে পেতে হয়তো এটা একটা প্রভাবক হতো….
তা না করে সংযমী শোভন মুখের সামনের চুলগুলো সরিয়ে দিয়েছিলো শুধু । তারপরের কথাগুলো……!
উফ্ আর ভাবতে পারে না রোদেলা। কেমন একটা শিরশিরে স্রোত যেন ঢেউ খেলে ওর শরীর-মনে….

এই ধীর শোভনকে চিনে না রোদেলা। ও কেবল ছটফটে, বাকপটু, সদা উচ্ছ্বাসিত শোভনকে চেনে। এ কোন শোভনকে দেখলো ও….! ও কিন্তু বলেছিলো যে ওর বাইরের যেটা সেটা আবরণ মাত্র, ভেতরে রয়েছে অন্য এক শোভন। সেই শোভনই কি দেখা দিয়েছিলো আজ…
ধীর, কোমল, আহত, বেদনা কাতর….
রাতটা যেন খুব কষ্টে কাটে ওর। এত বড় হয়েছে তবুও এর আগে কখনো এমন অনুভূতি তাড়না করেনি ওকে। যতটা আজ করছে। আঁকিবের সাথে প্রেমের দিনগুলোতে রোদেলা ছিলো ছোট্ট এক মেয়ে। যে প্রেম বলতে কেবলই বুঝতো একটু দেখা হওয়া, কথা হওয়া, একসাথে ঘুরতে যাওয়া, ঘুরে ঘুরে এদিক সেদিকের খাবার খাওয়া, আনন্দ করা আর খুব বেশী হলে হাতটা ধরা।

মানুষের যে বিপরীতে এক আদিম প্রবৃত্তি যা শুরু হয়েছে সেই সৃষ্টির শুরুতে তা আজ প্রথমবারের মতো জানান দিলো রোদেলাতে। আজ ও অনুধাবন করলো ও আর ছোট্টটি নেই, কৈশোর পেরিয়ে ও এখন তরুণী। যাকে প্রকৃতি তৈরী করেছেন অনেক যত্নে আর অসীম রহস্য দিয়ে।

ঠিক কখন রোদেলা ঘুমিয়ে পরলো জানে না। রাতে স্বপ্নে আজও এসেছিলো সে।
সে…!
যে ওর কষ্ট ছুঁয়েছে, ওকে ভালোবাসেছে পরম মমতায়, যে কথা দিয়েছে ওকে আগলে রাখবে দুনিয়ায় সকল কষ্ট থেকে। পাশে থেকে যে বদলে দিবে ওর জীবনটাকে। সেই সে….!

স্বপ্নে রোদেলা ব্যাস্ত চা-নাশতার তৈরীতে। শাড়ি পরা, হাতে চুড়িও আছে কয়েক গাছি, চুলগুলো খোঁপা করা চেহারায় পুরোদস্তুর গিন্নীপনা। নাকে পাথর বসানো নাক ফুলটি দ্যুতি ছড়াচ্ছে। যেন সেটি ওর বর্তমান জীবণের সুখের প্রতিচ্ছবি। আরো অবাক ব্যাপার হচ্ছে যে বাসাটা স্বপ্নে দেখা যাচ্ছে এটা অন্য একটা বাসা। এটা কার বাসা ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। কি একটা বিষয়ে যেন কথা হচ্ছে সবার সাথে। ঘর ভরতি মানুষে। অথচ অনেককেই চিনতে পারছে না রোদেলা। একটু ফুরসত পেয়ে ও যোগ দিলো তাদের সাথে।

সবার সামনে কথা বলতে থাকা রোদেলাকে এলোমেলো ভাবে ছুঁয়ে দিচ্ছে সে। অপ্রস্তুত রোদেলা লজ্জা পাচ্ছে ভীষণ। মামা, মামী, মা সবাই বসে কথা বলছে। কি ভাববে তারা। কপট রাগ দেখাচ্ছে ও। কিন্তু ওর দেখানো রাগ যেন ওর এই বিচলতাকে আরে বাড়িয়ে দিচ্ছে। ইশারায় প্রকাশ পাচ্ছে এই এখনই কিছু একটা পাওয়ার আকুতি। অবাক বিষয়ে হচ্ছে এতগুলো মানুষের সামনে ছেলেটা এমন করছে কিন্তু কেও লক্ষই করছে না।

রোদেলা সোফার পাশে দাঁড়ানো, পিছন থেকে এলোমেলো হাত ঘুরছে ওর পিঠময়। ঘুরে রোদেলা একটা মূদু চড় দিলো হাতটায়। অন্য পাশে সরে গেলো ও। বেহায়া ছেলেটা পিছু পিছু গেলো ওর।

আবারও পিছনে দাঁড়িয়ে রইলো ওর।
ফুঁ দিচ্ছে ওর ঘাড় বরাবর, রোদেলা কোন কথাই শুনতে পারছে না, মনোযোগ ও দিতে পারছে না। ছেলেটা তো মহা যন্ত্রণা দিচ্ছে। ঘুরে চোখ পাকায় রোদেলা, সে তৎক্ষনাৎ অন্য দিকে তাকিয়ে বাঁচলো ওর দৃষ্টি থেকে। একে কিছু বলে লাভ নেই, আবার সরে দাঁড়ালো বড় মামার কাছে। যেখানটায় এখন দাঁড়ালো রোদেলা সেখান থেকে মামা ঠিক বিপরীতে। এবার বাছাধন দেখি তোমার দৌড় কতদূর। কর এবার বেহায়াপনা বড় মামার সামনে।

কিছু সময় পর অদ্ভুত একটা অনুভূতি খেয়াল করে ও। কিছু একটা শাড়ির আঁচল ভেদ করে পিঠ থেকে ক্রমশ এগিয়ে আসছে পেটের কাছটায়। একটা লোমশ স্পর্শ আলতো চাপে কাছে টেনে নিলো ওকে। কেমন একটা শিহরণ সারা শরীরের ছড়িয়ে গেলো দ্রুত।
কি যন্ত্রণা…!
মধুর এক যন্ত্রণা ….!

রোদেলা ওর কনুই দিয়ে একটা গুতো দিলো নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে। আকষ্মিক ভাবে হাতটা স্থানচ্যুত হওয়ায় হালকা আঁচড় লাগলো রোদেলার পেটে…

ঠিক এ সময়ই ঘুম ভেঙে গেলো রোদেলার। কি দেখলো ও এসব…! ঘামে ওর শরীর জবজবে হয়ে আছে মাথার উপরে ফ্যানটা বন্ধ। এত রাতে লোডশেডিং….! এদিকে বাসার আইপিএসটাও বন্ধ গত তিনদিন ধরে। এক গ্লাস পানি শেষ করলো ও নিশ্বাসে। কি দেখলো ও…?
এসব কি ওর বিয়ের পরের জীবনের…….
ধূর এসব ফালতু স্বপ্নের কথা ভেবে লাভ নেই শোভনের ঐ ঘটনাটাই এই স্বপ্নের কারন। নিজেকে বোঝায় ও।

সকালে কলেজের জন্য তৈরি হতে গোসলে গেলো ও। সকাল সকাল ঘুম ভাঙায় একটু সময় নিয়ে গোসল করেতে লাগলো ও। শরীরে সাবান দিয়ে ঘষতেই সামান্য জ্বলে উঠে পেটের কাছটায়। পানি দিয়ে দ্রুত সাবান পরিষ্কার করে ও। হঠাৎ কি ভেবে যে জামাটা সরিয়ে দেখে দ্রুত । সেখানটায় দেখে আৎকে উঠে ও। হাতে থাকা পানি ভর্তি মগ দুম করে পরে ভেঙে যায়। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারে না ও।
এটা কিভাবে সম্ভব……!

রুমে দ্রুত এসে দড়জা আটকে দেয় ও। ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে জামাটা উঁচু করে ধরে, চোখ দুটো তখন আয়নায় নিবদ্ধ….। ধবধবে সাদা জায়গাটায় লাল রঙের গাঢ় এক রেখা। যেন গভীর কোন ক্ষত।
এটা কিভাবে সম্ভব….!

এরপর মাথায় কেবল এই ভাবনা। কাওকে যে বলবে তাও পারছে না। ওর বন্ধুরা ওকে পাগল ভাববে। তাও সিমিকে ফোনে বললো ব্যাপারটা। সিমি এখনো ওর ভালো বন্ধু। যদিও ওরা এখন ওদের বাড়ি করে সেখানে চলে গিয়েছিল।
সিমি বললো দেখ মনে হয় তোর হাত লেগেই আঁচড়টা হয়েছে। সেটাই অবচেতন মন তোকে স্বপ্ন আকারে দেখিয়েছে। এমন অনেক ঘটনা আছে পৃথিবীতে। এটাই প্রথম না। তোর সাথে প্রথম হয়োছে তাই তুই এত ভীত। ব্যাখাটা মেনে নেয়া ছাড়া ওর কোন উপায় ছিলো না।
এরপর কিছু দিন ওর নিয়মিত কাজ ছিলো ঘরের দরজা আটকে ঐ দাগটাকে দেখা।

সেকেন্ড, মিনিট, ঘন্টা, কাটে নিজের হিসেবে। পেরিয়ে যায় দিন, সপ্তাহ, মাস… আস্তে আস্তে সব ভুলে যায় মানুষ। বিশেষ কিছু ঘটনা মনে দাগ কেটে যায়। যেগুলোকে কখনো হারাতে দেয় না মানুষ নানান ঘটনার ভীড়ে। শোভনকে মনে থাকবে রোদেলার। আর ঐ দাগটার কথাও….

এরপর আর কোন যোগাযোগ হয়নি শোভনের সাথে। দু’জনের কেওই চেষ্টা করেনি যোগাযোগ করায়। রোদেলা ভাবলো শক্ত করে কিছু বলার হয়তো দরকার নেই। ও এম্নিতেই বুঝছে তা না হলে এতদিনে অবশ্যই যোগাযোগ হতো।

এদিকে নাতাশা ব্যাস্ত ওর পাসপোর্ট তৈরী নিয়ে। কল্লোল ভাই খুব দ্রুতই চলে যাবেন। বাড়ির সবাই না বলছিলো অবশ্য। দেশে বাবার ব্যাবসা দেখে অন্য লোক। আর ও কি না বিদেশে যাবে। কল্লোলের এক কথা, বাবা দেখি না চেষ্টা করে নিজে করতে পারি কি না কিছু, না যদি পারি কিছু করতে আসবো নি ফিরে। তাই আর কেও জোড়াজুড়ি করে নি। নাতাশাকে নিতে কাগজপত্রও তৈরী করতে হবে। সেজন্য যাওয়ার দেরি। তা না হলে একাই চলে যেতো ও আরো আগেই।

দেখতে দেখতে চলে এলো সেই দিন….
রোদেলাদের বাড়ি ছাড়ার দিন…
সকাল থেকে কতগুলো ছেলে মালপত্র নিয়ে যাচ্ছে, রোদেলার মা এদের কোত্থেকে জোগাড় করেছেন ও তা জানে না। ওদের আসবাব বলতে পুরাতন আমালের এক পালংক, বিশাল বড় ড্রেসিং টেবিল আর একটা স্টিলের আলমারী টুমটাম যা আছে তা নেয়া হয়ে গেলো দুপুরের আগেই। রোদেলার বিশ্বাস হলো না ওরা সত্যিই চলে যাচ্ছে। প্রিসিলাকে দেখা গেলো নিরুৎসাহিত এ ব্যাপারে। ওর বইখাতা যত্ন করে তুলে দিচ্ছে। মামীরা কেও ঘর থেকে বের হয় নি আজ। তারা হয়তো তাদের পার্মানেন্ট রান্নার মানুষটাকে হারিয়ে শোকাহত…

আর মামা দুজন….?
তারা দুজন দুই জেলা শহরে রয়েছে এখন। ব্যাবসার কাজে এতই ব্যাস্ত যে এ সময় বাড়ি থাকতে পারলেন না তারা। ওদের মা সকাল থেকে খুবই শক্ত ভাবে চলাফেরা করছেন। তাকে দেখে মনে হচ্ছে না তিনি একটুও ঘাবড়ে আছেন, বা কষ্টে আছেন। কিন্তু তার ভিতরে যে কি প্রলয় চলছে তা রোদেলার চেয়ে বেশী কে জানে….!

সবকিছু নেয়া শেষ হলে ওরা বিদায় নিতে গেলো বড় মামীর ঘরে। তিনি তখন ফোনে কথা বলছিলেন। ওদের ঢুকতে দেখে ফোনটা রেখে দিলেন। রোদেলার মা বললো-
: যাই ভাবী, বাসায় আসবেন …
মামী স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন..
রোদেলার মা বললো
: ভাইকে বলবেন আমরা চলে গেছি, তাকে তো আর বলা হলো না…
ওরা দু-বোন মামীকে সালাম করে বিদায় নিলো। মামী দুবোনকে বুকে জড়িয়ে রেখে আদর করলো।
ছোট মামীর থেকে বিদায় নেয়া আরো সংক্ষিপ্ত। তিনি বললেন-
সাবধানে থাকতে…

নানুর কাছে বিদায় নেয়া আগেই হয়ে গেছে। ওরা বেরিয়ে একটা রিকশা ঠিক করলো। রোদেলা গেলো একা রিকশায়, আর ওর মা গেলেন প্রিসিলাকে সাথে নিয়ে। সারাটা পথ তিনি ডুকরে ডুকরে কেঁদেছেন। রিকশা যখন থামলো তখনো তিনি কাঁদছেন….

রোদেলা ভাড়া মিটিয়ে নেমে পরলো। এই প্রথম দেখলো বাসাটা। পুরোনো দিনের বাড়ি। দেয়াল শেওলা পড়া। ওরা ভাড়া করেছে একটা রুম রুমটা বিশাল বড়। সামনে ড্রাইং রুমের মতো অল্প জায়গা। একপাশে রান্নাঘর একপাশে বাথরুম। রুমের সাথে বড় বারান্দাও রয়েছে। মোটামুটি ভালোই তিনজনের জন্য।

ভাড়া সাত হাজার টাকা। একটু বেশী যদিও। সাবলেটে গেলে হয়ত ভাড়া কিছু কম পরতো। তবুও কিছু করার নেই।
তারা তিনজনই মেয়ে মানুষ তাই কারো সাথে সাবলেটে বাসা নেয় নি।

ওরা সারাদিন লাগিয়ে বাসাটাকে ঠিক করে গুছগাছ করলো। আসবাবপত্র কম হওয়া সত্ত্বেও খুব সুন্দর করে গুছালো ওরা। ওর মায়ের এসবে মন নেই। তিনি পাটি পেতে এই গরমের মধ্যে বারান্দায় শুয়ে আছেন। তিনি শোকে কাতর। তাকে ঘেঁটে লাভ নেই। থাকুক তিনি তার মতো।

রাতে রোদেলা বাইরে থেকে খাবার কিনে আনবে বললো, কাল থেকে বাসায় রান্না হবে। আজ এত খাটুনি খেটে রান্নার এনার্জি নেই করোরই….

রাতে খেয়ে তাড়াতাড়ি শুয়ে পরে ওরা কাল থেকে ওদের নতুন জীবণ শুরু হতে যাচ্ছে…
চলবে….

( “রোদেলা” যারা পড়ছেন প্লিজ লাইক কমেন্ট করে সাড়া দিবেন। অনেক কষ্ট করে সময় বের করে লিখি।
এদিকে পেইজের রিচও কম। আপনাদের সাড়া না পেলে কষ্ট বৃথা মনে হয়। আর কমেন্ট করলে উৎসাহ লাগে, পেইজ রিচও বাড়বে)

Previous :
https://www.facebook.com/659404701187391/posts/1505388026589050/
Next :
https://www.facebook.com/659404701187391/posts/1508285879632598/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here