Addicted_love Part:50

0
1028

#Addicted_love
Part:50
Aarizona Ella
এলা নিচে নেমে হাঁপাচ্ছে,,সিড়ি দিয়ে কেউ নিচে নামার আওয়াজ শুনে সোজা নিজের রুমে চলে এসছে।।খুব কাঁদছে এলা,,কখনো ভাবে নি ইশফাক তাকে এভাবে পাগলের মতো খুজবে😞
ইশফাক নিচে নেমে এদিক ওদিক পাগলের মতো ছুটছে,,।।
কিছু তো আছে যা আমার সামনে থেকে আমার সাথেই লুকোচুরি খেলছে।কি হচ্ছে?কেন আমার মনে হচ্ছে এলা আমার আশেপাশেই আছে,,যদি থাকে তাহলে কেনই বা আমার সামনে নিজেকে উপস্থিত করছে না,,কিছুই বুঝতে পারছি না,,এলায়াআয়া কই তুমি😢😢নিজে নিজে কথা গুলো বলতে বলতে সিড়ির একটি থাকে এসে দুহাতে মাথা ধরে বসে পরলো ইশফাক।
বেশ কয়েকদিন কাটলো,,,
আজ ইশফাক আদিয়ানকে সাথে নিয়ে তার বি ডি এর বাংলো তে গেছে।
কিরে আজ তুই আমাকে এখানে নিয়ে এলি যে?(আদিয়ান)
কাল একটা বিশেষ দিন আমার জন্য তুই থাক আমি আসছি।(ইশফাক)বলেই উপরে চলে গেলো।
আরেহ ইশফাক তুই কি করিস মাথায় কিছু ঢুকে না।।(আদিয়ান)চিৎকার দিয়ে।
ইশফাক দৌড়ে নিচে নেমে এলো।।।একটি শপিং ব্যাগ হাতে নিয়ে।
কি এটা?ব্যাগ দেখে তো লেডিস মনে হচ্ছে,এটা আমার দিকে এগিয়ে আনছিস কেন তুই?ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে জিজ্ঞেস করলো আদিয়ান।
আজকে রাত ১২ টার পর আমার কলিজার জন্মদিন আর এটা তার পছন্দের একটা পোশাক,, তার জন্য আবার নতুন করে অর্ডার দিয়ে বানিয়ে আনিয়েছি।। (ইশফাক)
আবার মানে কি?আগেও বানিয়েছিলি নাকি?(আদিয়ান)
না প্রায় একবছর আগে একটা মলে সে এটি খুব পছন্দ করেছিলো,,কিন্তু পরিস্থিতির কারনে আর নেয়া হয় নি।দোস টা আমার ই।(ইশফাক)মন খারাপ করে।
😯😕কেমন পরিস্থিতি আর আন্তাইজ্জা কি বলিস এগুলা?মাথার স্ক্রু কি লুজ হয়ে গেছে?কি করিস,,কি বলিস নিজেই জানিস না😤তুই আসলে পাগল হয়ে গেছিস।(আদিয়ান)।।
হুম আমি পাগল,,তার জন্য,,, পাগলের মতো পাগল হয়ে গেছি আমি,,তাকে না পেলে আমি মরে যাবো। (ইশফাক)
কিরে হয়েছে টা কি তোর?আর কখন থেকে সে সে লাগিয়েছিস?সে টা কে এটা ই তো বলছিস না😤(আদিয়ান)
আমার মায়াবিনি,,,যার মায়ায় আমি নিজেকে লুটিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছি,,যার মায়া আমাকে ভালবাসতে শিখিয়েছে,যার মায়া আমাকে পরওয়া করতে শিখিয়েছে,,সে আমাকে এমন মায়ায় ডুবিয়েছে যেখান থেকে কখনো চেয়েও আমি উঠে আসতে পারবো না,তার মায়ায় আমি ডুবে যেতে চাই তার মধ্যে যদি আমি মরেও যায় তবে তার মাঝেই আমার শান্তি।।ইশফাক কাঁদছে আর পরম আবেগে কথা গুলো বলছে।
আদিয়ান আবারও ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে তাকিয়ে আছে ইশফাকের দিকে।😳
তোর বাল্য কাল থেকে তোর সাথে আমার বন্ধুত্ব,শেষ বারের মতো তোর মায়ের জন্য কাঁদতে দেখেছিলাম তোকে,,, আর আজ ঠিক সেই একি জখমান্তে আবারও তোকে কাঁদতে দেখছি।তুই আমার খুব কাছের আর খুব প্রিয় একটা মানুষ,, তোকে যতটুকু জানি কষ্ট সীমা অতিক্রম না করা পর্যন্ত তুই কখনো এভাবে কাঁদিস না,,কি হয়েছে বল?তুই তাকে ভালবাসিস তো বিয়ে কর।।
সে আমাকে ছেড়ে চলে গেছে,আমি চেয়েও তাকে খুজে বের করতে পারছি না,,তাকে আমি আমার মাঝেই অনুভব করি সবসময় কিন্তু সে বার বার আড়াল হয়ে যায়,বাস্তব নাকি ভ্রম তা আমি জানি না।(ইশফাক)
কেন সে তোকে ভালবাসতো না?(আদিয়ান)
খুব বাসতো,নিজের চেয়ে বেশি সে আমার পরোয়া করতো। (ইশফাক)
তাহলে সমস্যা কোথায়?(আদিয়ান)
তারপর আদিয়ানকে ইশফাক শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব কথা খুলে বললো।
আদিয়ান তো পুরা টাস্কি খেয়ে গেছে,,
তোর জীবনে এতকিছুর ঘটে গেছে আর তুই আমাকে এখন বলছিস?কি ভাবিস নিজেকে?অনেক বড় নামি দামি বিজনেসম্যান তুই তাই যা ইচ্ছা তা করতে পারবি?একটা মেয়ের জীবন নিয়ে এভাবে খেলেছিস তা কি আদৌ উচিত ছিলো তোর? এতো নিকৃষ্ট তো তুই ছিলিস না তাহলে তোর ইগো তোকে এতটা নিচে কিভাবে নামালো?(আদিয়ান)
আর লজ্জা দিস না আমাকে,শুধু একটি বার আমি তাকে বুকের সাথে জড়িয়ে নিতে চাই,,আর গোটা দুনিয়ার সামনে বলতে চাই আমি তাকে অন্নেক বেশি ভালবাসি,,শুধু একটা সুযোগ চাইবো নিজের ভুল শোধ্রাবার,আর যদি সে আমায় ক্ষমা না করে তবে খুশি খুশি তার নামে আমি নিজেই কুরবান হয়ে যাবো। তাকে ছাড়া থাকা আমার পক্ষে অসম্ভব,যদি তাকে ছাড়া বাঁচতে হয় তবে আমার জন্য মৃত্যু টা ই শ্রেয়।(ইশফাক)
কোথায় সে?কিছু জানিস?(আদিয়ান)
না,,,(ইশফাক)
তার কোন ছবি আছে তোর কাছে?(আদিয়ান)
এখানে নেই,আমেরিকার বাংলো তে আছে,আমাদের বিয়ের এলবামে।(ইশফাক)
ঠিক আছে আমি চেস্টা করবো তাকে খুজে দেয়ার।তুই শান্ত হো।(আদিয়ান)
চল রাত অনেক হয়েছে,,ফিরে যায়।(আদিয়ান)
না অনেকদিন থেকেছি আর না,তুই যা আমি এখানেই আছি।
পাগলামো করিস বা একা থাকলে মন মেজাজ আরো বিগড়ে যাবে,চল।(আদিয়ান)
ইশফাক কে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে আদিয়ান।
এলা তার রুমে বসে আছে,,,ভাবছে এই অবস্থার ইতি কোথায়? কি করবে কিছুই মাথায় ঢুকছে না।
আজ এলার জন্মদিন আর এইদিনে মা তার জন্য তার প্রিয় প্রিয় খাবার গুলো তৈরী করতো,,বিগত বছরেও তার ব্যাতিক্রম কিছু হয় নি,ইশফাক ও তার জন্মদিন টি কে আরও স্পেশাল করে দিয়েছিলো,কিন্তু কে জানতো সেটা ই তার জীবনের শেষ রঙিন জন্মদিন ছিলো।
একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে তাচ্ছিল্যের হাসি দিলো এলা।
সকাল সকাল ইশফাকের রুমের দিকে একবার উকি দিয়ে দেখে আসলো এলা,দরজা ভিতর থেকে লক করা তার মানে ইশফাক গুমুচ্ছে।
তাই নিশ্চিন্তে নিচে নামলো।আদিয়ান একা ই নাস্তা করছে।
কি হলো আজ একাই নাস্তা করছেন যে?অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো এলা।
হুম আজ আমার বন্ধু রোজা রেখেছে,,সারা রাত নামাজ পড়েছে ফজরের নামাজের পর ঘুমিয়েছে।(আদিয়ান)
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,অবাক দৃষ্টি তে তাকিয়ে আছে এলা।
অবাক হওয়ার কিছু নেই,আজ নাকি তার খুব প্রিয় মানুষ টার জন্মদিন তাকে ফিরে পাওয়ার মানত করেছে।(আদিয়ান)
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,কেন তার প্রিয় মানুষ টা কি তার কাছে নেই?কিছুক্ষণ চুপ থেকে ফরমালিটি বজানোর জন্য জিজ্ঞেস করলো এলা।
আছে হয়তো অভিমান করে কোথাও লুকিয়ে গিয়েছে।(আদিয়ান)
এলা তার চোখের পানি আড়াল করে নিজেকে সামলে নিয়ে সেখান থেকে সড়ে যেতে গেল,,,
এসেছেন যেহেতু নাস্তা করে যান(আদিয়ান)
আসছি,,,আর বেশিক্ষন থাকলে ধরা পড়ে যাব তাই সেখান থেকে নিজের রুমে চলে এলাম।
গোটা দিনটি ইশফাক এর ইবাদতে কেটেছে😂
রাতে এলা ফোনে কারও সাথে কথা বলছে,আর ইশফাক যাচ্ছিলো আদিয়ান এর রুমের দিকে,,এলার রুম ক্রস করার সময় আওয়াজ শুনে থেমে গেলো ইশফাক।
খটাকা লাগ্লো তার কারন আওয়াজ টা তার কাছের মানুষ এর।এলার রুমের দরজা আধখোলা।
আর এটা তো ওই রুম যেদিন আমি মাতাল অবস্থায় এই রুম টাতে আমার এলা কে দেখেছিলাম।আর এই কন্ঠটা ও এলার।
আলগা আলগা পায়ে ইশফাক এলার রুমে প্রবেশ করলো।এলা কথা বলছে অফিসের ব্যাপারে।
ইশফাক এলার পিছনের অংশ দেখছে,আর আস্তে আস্তে তার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
ফোন রেখে এলা পিছনে ফিরতেই ইশফাক কে দেখে যেনো ভুত দেখার উপক্রম।চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে ইশফাকের দিকে।
আর ইশফাক অসহায় চাহনি দিয়ে তাকিয়ে আছে এলার দিকে।
চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here