Addicted_love Part:62

0
889

# Addicted_love
Part:62
Aarizona Ella
ইশফাক এভাবেই এলাকে টেক কেয়ার করেই চলেছে।।একটা মুহুর্ত ও সে তাকে একা ছাড়ে নি,,,প্রতি মিনিটে মিনিটে ইশফাক এলার পিছে ঘুর ঘুর করে,,নিজ হাতে খাইয়ে দেই,কোলে করে সিড়ি দিয়ে উঠিয়ে নামিয়ে দেয়।।এলার গোসল থেকে নিয়ে প্রত্যেকটা ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতম কাজ ও ইশফাক নিজেই করে।
এই নয় মাস এলাকে একা ছেড়ে কোথাও যায় নি ইশফাক।এলার যত্নে নিজেকে নিয়জিত রেখেছে।এর মধ্যে এলার মাকে ও এখানে আনিয়ে নিয়েছে ইশফাক যেনো কোন কিছুর কমতি না লাগে এলার কাছে।
একদিন রাতে এলার পা ফুলে গেছিলো আর তা দেখে ইশফাক বাচ্চাদের মতো গোটা রাত কেঁদেছে,,,আর ডাক্তারের লাইন লাগিয়ে দিয়েছিলো। এলার পা দুটো নিজের কোলে রেখে গোটা রাত পা মালিশ করেছিলো।।
ও টি এর সামনে পাগলের মতো এলোমেলো হয়ে এদিক ওদিক পয়রাচারী করছে ইশফাক।সাথে আন্টি আর এলার মা আছেন।।হাসপাতালে আনার আগে এলার পেইন উঠেছিলো ব্যাথায় ছটফট করছিলো সে,এলার কষ্ট দেখে ইশফাকও দিশেহারা হয়ে গেছিলো এখনো সে এলার জন্য পাগলের মতো ছটফট করছে,,।।
এই সময়ে এমনটা হয় বাবা,,আপনি রিল্যাক্স হোন আর আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন যেনো মা সন্তান দুজন সুস্থ থাকে। ইশফাক এর কাধে হাত দিয়ে শান্তনা দিয়ে বললেন আন্টি।
আন্টি আমার বউ এর কিছু হবে না তো???আপনি দেখেছেন আমার বউ কিভাবে ব্যাথায় ছটফট করছিলো ওর কিছু হলে আমি নিজেকে ডিসট্রয় করে দিবো আন্টি,,,কাঁদতে কাঁদতে বললো ইশফাক।
কিছু হবে না বাবা তুমি পেশেন্ট রাখো,শান্ত হও।। (এলার মা)
প্রায় ৪ ঘন্টা পর ডাক্তার ও টি থেকে বের হলেন।ডাক্তার কে বের হতে দেখে ইশফাক এর বুক ধরে গেলো (নো আইডিয়া এবাউট বাচ্চা কাচ্চা )
ডক্টর আমার বউ???দৌড়ে গেলো ইশফাক ডাক্তার এর কাছে সাথে আন্টি আর এলার মা ও।
congratulations Ishfak u are now a father of twin sons (ডাক্তার)
what???? ডাক্তার কে জড়িয়ে ধরলো ইশফাক,,খুশি তে আত্মহারা হয়ে যাচ্ছে আজ সে।
thank you sooo much doctor,,,i Don’t know how to express that how much happy i am today…..It’s a miracle to me,,i haven’t ever feel such a precious moment as much as i m feeling today,,,,,,(ইশফাক)
আমার বউ কেমন আছে ডক্টর?আমার বউ কে দেখবো আমি,,গত ৫ ঘন্টা যাবৎ আমার বউ কে দেখছিনা।। আমাকে আমার বউ এর কাছে নিয়ে যান প্লিজ।।আকুতি করে বললো ইশফাক।
উনি সিজারিয়ান অপরেটেড রোগী,, উনাকে আজকে নরমাল কেবিনে শিফট করা যাবে না,,আজকে উনি ও টি তেই থাকবেন,, আরও দু ঘন্টা পর দেখা করতে পারবেন তবে একসাথে না একজন একজন করে।বাচ্চারা সুস্থ আছে তাই তাদের আমি নরমাল কেবিনে শিফট করে দিচ্ছি।ততক্ষন আপনার বাচ্চাদের খেয়াল রাখুন।(ডাক্তার)
আর আমার বউ???চিন্তিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো ইশফাক।
জ্বী মিসেস চৌধুরী সুস্থ আছেন তবে একটু উইক।আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবেন।সো ডোন্ট ওয়ারি(ডাক্তার)
খুশিতে এলার মা আর আন্টিকে জড়িয়ে ধরলো ইশফাক।
মা বাবা হওয়ার অনুভূতি টা বুঝি সবচেয়ে আলাদা যা আমি আজকে অনুভব করছি।।।
হ্যাঁ বাবা তোমাদের জন্য অনেক খুশি আমি।ইশফাকের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন এলার মা।
আন্টিও মুচকি হাসছেন।।
বাচ্চাদের একসাথে কোলে নিয়ে বসে আছে ইশফাক।
বাবুরা আমি তোদের বাবা,,,তোরা রঙিন স্বপ্ন নিয়ে এসেছিস আমার জীবনে,, আমি বেঁচে থাকার নতুন অধ্যায় তোরা।।আজকে নিজেকে পৃথিবীর সবচাইতে সুখি মানুষ লাগছে আমার।তোদের মা,আর তোরা ই আমার পৃথিবী।।চোখ ভরে এসেছে ইশফাক এর,,দুজনের কপালে চুমু দিলো ইশফাক।
ইশফাক এর কথা শুনে কাঁদছে এলার মা আর আন্টিও।।।
প্রায় দু’ঘন্টা পর ইশফাক ওটি তে ঢুকেছে।।।এলার চোখ মুখ ফুলে গেছে।।দুহাতে স্যালাইন আর একটা পাইপ নাকে পুশ করা হয়েছে এলার।বেশ দুর্বল সে।।
এলার মাথায় হাত বুলাতেই চোখ মেললো এলা।ইশফাক কে দেখে মুচকি হাসলো সে।কথা বলতে পারছে না এলা,শুধু ইশারা করছে।
জান অনেক কষ্ট হয়েছে জানি আমি,,এমন কষ্ট হবে জানলে কখনো আমি তোমার পাশে ও আসতাম না।।সরি জান,,,অবেগি স্বরে বললো ইশফাক।
এলা মাথা নাড়ছে শুধু।।
তুমি জানো না জান আমাকে আজ তুমি কি দিয়েছো।তোমাকে ভালবাসার জন্য প্রত্যেকটা সীমা অতিক্রম করতে পারি আমি।।thank u soo much sweetheart আমার জীবনকে রাঙ্গিয়ে দেয়ার জন্য।।।আমার প্রত্যেক কিছুতে তুমি,অনুভবে তুমি,,তুমি আর আমার বাচ্চারা আমার দুনিয়া।। i love u sooo much jaan…এলার কপালে আলতো চুমু খেলো ইশফাক।
এলার চোখ বেয়ে পানি পড়ছে ইশফাকের কথাগুলা অনুভব করছে হয়তো কিছু বলতে চেয়েও পারছে না সে।
ইশফাক এর পর এলার মা আর আন্টি পর পর দুজন দেখা করে এসেছে এলার সাথে।
দুদিন পর এলাকে নরমাল কেবিনে শিফট করা হলো। এলার সাথে তো ইশফাক লেগেই আছে।
হঠাৎ আদিয়ান কে কেবিনে ঢুকতে দেখে চমকে উঠলো এলা।আদিয়ান কে দেখে ইশফাক উঠে গলা জড়ালো।
তুই কখন এসেছিস???(ইশফাক)
আরেহ ৩ দিন হলো,,তোর বাংলো তে গিয়েছি,,তারপর জানলাম তোর বেবিজ হয়েছে আর তাই চলে এলাম (আদিয়ান)
মুচকি হাসলো ইশফাক।
আদিয়ান একটা বাবুকে কোলে তুলে নিলো,,আরেকটা ইশফাক এর কোলে আছে।আদিয়ান পর পর দুজন কে কোলে নিয়ে আদর করলো।
তারপর সোফায় গিয়ে বসলো। এলার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো আদিয়ান।এলাও চাপা হাসার চেষ্টা করলো।
কেমন আছেন এলা ভাবী??(আদিয়ান)
জ্বী ভালো,, আপনি কেমন আছেন?(এলা)
জ্বী আলহামদুলিল্লাহ ভালো। (আদিয়ান)
এলার মাথায় কিছুই ঢুকছে না,,এলাকে এভাবে দেখার পর আদিয়ান কোন রিয়্যাক্ট করছে না দেখে খটকা লাগলো এলার বেশ অবাক ও হলো সে।
এলার চেহারার অবস্থা বুঝে ইশফাক আর আদিয়ান দুজন ই হো হো করে হেসে উঠলো।
এতো চিন্তা করার কিছু নেই ভাবী, আপনাকে কিডন্যাপ করার আগের রাতেই ইশফাক এর সাথে আমার কথা হয়েছে।।শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব বলেছে আমাকে সে,আপনার প্রতি আমার বন্ধুর মাতলামো দেখে আমি বাধ্য হয়েছি আপনাদের মিলিয়ে দেয়ার সুযোগ করে দিতে। তাই তো আপনাকে খুজতে আসি নি।।সে অনেক ভালবাসে আপনাকে যার কারনে সে নিজের জানের চিন্তাও করে নি,,ইশফাক এর দেব দাস এর মতো অবস্থা দেখে আমি চিন্তাও কিরেছিলাম কে সে সৌভাগ্যবতী যাকে ইশফাক চৌধুরী এতো পাগলের মতো ভালবাসে যার জন্য নিজেকে তিলে তিলে ধ্বংস করে দিতে একবার চিন্তা পর্যন্ত করে নি সে।ফাইনালি জানতে পারলাম সেটা আর কেউ না মিস ইশা বলেই হেসে উঠলো আদিয়ান।
আমি সরি আসলে আমার খারাপ কোন উদ্দেশ্য ছিল না মাথা নিচু করে বললো এলা।
আরেহ আরেহ পুরনো কথা বাদ,,নতুন জীবনের আনন্দকে বরন করে নিন।।আপনাদের জন্য অনেক হ্যাপি আমি সত্যিই অনেক হ্যাপি। (আদিয়ান)
ধন্যবাদ আদিয়ান,,আমার খারাপ সময়ে আমাকে আশ্রয় দিয়ে সামলে নেয়ার জন্য আপনি সবসময় আমার খুব ভালো একটা বন্ধু হয়ে থাকবেন।অনেক সম্মান করি আমি আপনাকে।(এলা)
as always (আদিয়ান)
এলা আর বাচ্চা দুটো কে একসাথে জড়িয়ে ধরলো ইশফাক।
আদিয়ান আনন্দের হাসি দিচ্ছে তাদের দিকে তাকিয়ে। ।
৬ বছর পর,,,,,,,
গোটা বাড়ি উল্টো পাল্টা হয়ে আছে,,খাবার,জিনিসপত্র,খেলনা সবখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।।এলা দৌড়ানি দিয়ে নিচে নামছে আর চিল্লাচ্ছে।
ইফতিয়ান,,,এহনান,,তোরা যদি আর এক পা ও নড়েছিস তো দেখবি তোদের পা ভেঙ্গে দিবো আমি,।।রেগে ফুসছে এলা।
হ্যাঁ তাদের দুজনের নাম ইশফাক আর এলার নামের অক্ষরের সাথে মিলিয়ে ইফতিয়ান আর এহনান রেখেছে।
তারা দুজন গোটা ঘরে এদিক ওদিক দৌড়াচ্ছে।
ইশফাক অফিস থেকে ফিরে ঘরে ঢুকা মাত্রই ইফতিয়ান আর এহনান ইশফাক এর উপর ঝাপিয়ে পড়লো।
ইশফাক ঝুকে তাদের দুজনকে কোলে তুলে নিলো।
কি তুমি আমার বাচ্চাদের এভাবে দৌড়াচ্ছো কেন হ্যাঁ?? (ইশফাক)
দেখেন গোটা ঘর কে মাথায় তুলেছে,,আর আলমারি খুলে ক্রেডিট কার্ড গুলো কে
কাচি দিয়ে টুকরো টুকরে করেছে
আমার বাচ্চারা শুধু ক্রেডিট কার্ড কেন আমার সবকিছু জলে ফেলে দিলেও আমার কলিজারাই আমার সম্পত্তি। (ইশফাক)
পাপ্পা,,মিথ্যে কতা বলে মাম্মাই,,আমলা তো কেলচিলাম আমাদেক্কে কালি কালি মাইল দেই (ইশফাক আর এলার ইবলিশ গুলো)
কখন মেরেছি তোদের হ্যাঁ????বাবার মতো ইবলিশ হয়েছিস মিথ্যুক কোথাকার।।
মাম্মাম ইজ ম্যাড বলেই বাপ ছেলে ৩ জন হেসে উঠলো।।
এলা নাক ফুলিয়ে রাগে ফুসছে।।তোদের পা আমি আজকে সত্যিই আমি ভেঙ্গে দিবো তাদের দিকে এগিয়ে গেলো এলা।
ইশফাক বাচ্চাদের নিয়ে উপরে দৌড় দিলো।।।
চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here