Every Thing Is Fair In Love And War Writer – Nirjara Neera ………………… Part – 3

0
648

Story – Every Thing Is Fair In Love And War
Writer – Nirjara Neera
………………… Part – 3……………………….

——————– সাল ১৮৮০———————–
—————-ঈরানভা রাজপ্রাসাদ————–
.
অনেকটা ধুম ধাম করেই বিয়ের প্রস্তুতি চলতে লাগল।। যদিও বা বিয়ে এক সপ্তাহ পড়ে তথাপি পুরো রাজ্যে জুড়ে একমাত্র রাজকুমারীর বিয়ে উপলক্ষে অনেক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। পুরো রাজ্যে জুড়ে স্বর্ণ রোপ্য বিতরন করা হয়েছে। নাচ গান উৎসবে পুরো রাজ্যে মেতে চলল।। কিন্তু তাদের মাথার উপর কঠিন বিপদ নেমে আসছিল তা তারা বুঝতে পারে নি।।
সর্ব প্রথম ব্যাপরটা আচ হয় তিন দিন পরে। যখন রাজা মৈনাক এর গুপ্ত বাহিনী খবর দেয় যে সীমান্তরেখার পাশের পর্বতে অপর পাশে একদল ঘোড়া সওয়ার দেখা যাচ্ছে। রাজা মৈনাক চিন্তিত হয়ে পড়লেন।। ব্যাপারটা তিনি নজরে রাখলেন আর কাউকে জানালেন না।। এদিকে বিয়ের আয়োজন খুব আনন্দের সাথে চলতে লাগলো।। বর যাত্রী ক্রিস্টার রাজা কালক বর বেশে চলে এলো সদল বলে। চারদিকে হৈ চৈ পড়ে গেল।। রাজ রাজড়া দের বিয়ে বলে কথা!! এরই মধ্যে রাজা মৈনাক একটা দুঃসংবাদ পেলেন। তিনি খবর পেলেন সম্রাট অলোক সদল বলে তারই রাজ্যের দিকে আগমন করছে।। দুঃসংবাদটা পেয়েই উনি খুব চিন্তিত হয়ে উঠলেন।। তার একমাত্র কন্যার বিয়ে।। শুধু যে কন্যার জীবন নির্ভর করছে তা না। এখানে ঈরানভা রাজ্যের প্রত্যেকটা নাগরিকের জানের উপরও নির্ভর করছে।। মহাভাবনায় পড়ে গেল রাজা মৈনাক। এখন তিনি কি করবেন?? রাজা মৈনাক ভীতু ছিলেন না। তাই তিনি ঠিক করলেন তিনি লড়াই করবেন।। সেনাপতি আর মন্ত্রী কে হুকুম দিলেন তৈরি হওয়ার জন্য।। তিনি ঠিক করেছিলেন রাজা কালক কে জানাবেন না। কিন্তু পড়ে ভাবলেন এক সাথে লড়াই করলে সম্রাট অলোক কে হারানো সহজ হবে। যেই ভাবা সেই কাজ।। রাজা কালক কে জানানো হলে রাজা কালক সানন্দে রাজি হলেন। রাজা মৈনাক চেয়েছিলেন প্রথমে বিয়ে পড়ানো হয়ে যাক। কিন্তু ততক্ষণে বেশি দেরি হয়ে যাবে। শত্রুরা রাজ্যে প্রবেশ করবে। অগত্য সম্রাট অলোক কে দমন করার পর বিয়ের অনুষ্টান চলবে বলে ঠিক করলেন। এদিকে কথায় বলে দেয়ালের ও কান আছে।। তাই খবর টা পুরো রাজ্যময় ছড়াতে বেশি দেরী হল না।। মুখে মুখে সব খানে ছড়িয়ে পড়ল। আর সবখানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল।। রাজ প্রাসাদে বিয়ে থেমে গেল। বিয়ে করতে এসে বর বেশি রাজা কালক যোদ্ধা হয়ে গেলেন।। সব সৈন্যরা তৈরি।। রাজা কালক আর রাজা মৈনাক যুদ্ধের সব প্রস্তুতি নিলেন।। এদিকে রাজকুমারী মায়া একথা শুনে পাগল হয়ে গেলেন। বিভীষা কে অনুরোধ করতে লাগলেন একবারের জন্য যেন রাজা কালকের সাথে দেখা করিয়ে দেন।। বিভীষা অনেক ভেবে চিন্তে একটা উপায় বের করলেন। বাগানে মায়া কে রেখে কৌশলে সেখানে যাওয়ার আগে রাজা কালক কে উপস্থিত করালেন।। এরপর বিভীষা সেখান থেকে সরে গেলেন।। রাজা কালক কে দেখে মায়ার চোখের পানি উপচিয়ে পড়তে লাগল।। সেভাবেই রাজা কালক কে মাথা নিচু করে সম্মান জানালেন।। এরপর মায়া বলল
….. কালক আমার অনুরোধ রাখেন। দয়া করে আপনি কোথাও যাবেন না।
মায়ার কথা শুনে কালক অল্প হাসল। তারপর তার দু বাহু ধরে বলল
….. মায়া আমি আবার আসবো।। আমার জন্য অপেক্ষা করো।। আমাকে যেতে হবে, ওই পাষন্ড কে শাস্তি পেতে হবে।। যেভাবে হোক। ওর মৃত্যু ওকে এখানে নিয়ে এসেছে।।
….. কালক!!
মায়ার ঠোট জোড়া কেপে উঠল। কন্ঠ রোধ হয়ে এলো। কিছুই বলতে পারল না। শুধু নিরবে রাজা কালক কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল।। রাজা কালক ও মায়া কে সাবধানে ধরে রাখল। তারপর বলল
….. আমাদের কেউ আলাদা করতে পারবেনা।। সম্রাট অলোক ও না। তবে ওকে শাস্তি পেতে হবে অবশ্যই পেতে হবে।।
এই বলে রাজা কালক মায়ার কপালে একটা হালকা চুমু দিয়ে মায়ার বাধন থেকে জোর করে নিজেকে ছাড়িয়ে সেখান থেকে চলে গেল। মায়া ওখানেই কান্নায় ভেঙে পড়ল।। বিভীষা কাছেই ছিলো।।
মায়ার এরুপ ভগ্ন অবস্থা দেখে বিভীষা দৌড়ে চলে এলো।। মায়া কে টেনে তুলে বলতে লাগল
…. মায়া জান ওরা যুদ্ধে যাচ্ছে।। শেষ বারের মত এক বার দেখে আসেন!!
এই কথা শুনে মায়া উঠে দাড়ালো।। তারপর দৌড়ে প্রাসাদের ছাদে চলে গেল। সেখানে আরো অনেক দাসীরা অশ্রু সজলে আপন দের বিদায় দিচ্ছে।। মায়া কে দেখে সবাই পথ ছেড়ে দিলো। মায়া দেখলো বিরাট সৈন্যবহর নিয়ে তার পিতা ও রাজা কালক চলে যাচ্ছেন।
মায়া ও বিদায় জানালো।। কিন্তু সে জানত না যে এটা তাদের শেষ বিদায় ছিল।।।
পুরোদিন প্রাসাদে সবাই অস্থিরতার মধ্যে কাটলো।। মিনিটে মিনিটে যুদ্ধের খবর আসছে।। কিন্তু তাতে কারো অস্থিরতা কাটলো না। মায়া তার কক্ষে শুধু সবকিছু ঠিক হয়ে যাওয়ার জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রাথর্না করছিল। দিন ফুরিয়ে রাত নেমে এলো।। আর তার সাথেই যেন দূর্ভোগ নেমে এলো।। খবর এলো রাজা মৈনাক যুদ্ধের ময়দানে নিহত হয়েছেন।। এই খবরে পুরো প্রাসাদে ভয় ও শোকের ছায়া নেমে এলো।। রাণী অমরা বার বার মূর্ছা যেতে লাগলেন।। মায়া শুধু দেখতে লাগল তাদের হাসি খুশি রাজ্যে নরকে পরিণত হতে।। মনে মনে আগুনের উপর হাত রেখে কসম খেলো।। যে এর প্রতিশোধ সে অবশ্যই সম্রাট অলোকের কাছ থেকে।।
রাত পেরিয়ে ভোর হয়ে এলো।। এরি মধ্যে খবর এলো যে রাজা কালক ও ধরা পড়েছে।। আজকেই তাকে পুড়িয়ে মারা হবে।। শুনেই মায়ার হৃদয় কেপে উঠলো।। দু চোখের পানি আর বাধা মানল না।। ডুকরে কেদে উঠল।। রাজা কালক কি দোষে শাস্তি পাচ্ছে তা ভেবেই পেল না। হয়ত তাদের সাহায্য করার অপরাধে তাকে আজ মরতে হচ্ছে।। নিজেকে অপরাধী মনে হত লাগল মায়ার।। কাঁপা কাঁপা হাতে কোমর থেকে সোনালী খঞ্জর টা বের করল মায়া তারপর। হাতের উপর ধরল।। নিজেকে শেষ করে দিবে সে।। নিজের জন্য আর কারো প্রাণ যেন না যায়।। চোখ বন্ধ করে ফোস করে পোচ মারল হাতের শিরার উপর। অমনি রক্ত গলগলিয়ে পড়া আরম্ভ হয়ে গেল।। কিন্তু বেশি রক্ত ঝড়তে পারলো না।। তার আগেই বিভীষা এসে চিৎকার করে ধরে ফেলল।।
….. মায়া জান আপনি কি করছেন?? কেন এত বড় পাপ করছেন??
….. আমি আর বাচতে চাই না বিভীষা।। আমার জন্য এত মানুষের প্রান যাক আমি চাই না।।
….. এখানে আপনার কোনো দোষ নেই মায়া জান।। আপনি শান্ত হোন।।
….. কিভাবে শান্ত হই বল বিভীষা?? আর কিই বা আছে!!
….. রাণী অমরার জন্য।। রাণী অমরা আপনার মা আপনাকে দেখতে চাইছে।।
মায়া চোখ তুলে তাকালো বিভীষার দিকে।।
কিছুক্ষন পরেই রাজকুমারী মায়া আর বিভীষা রাণী অমরার কক্ষ পৌছলে মায়া দেখল তার মা উঠে বসছেন।। মুখ একদম ফ্যাকাসে হয়ে গেছে।। মায়া কক্ষে প্রবেশ করলে রাণী অমরা মায়া ডাকল
….. এদিকে আস মায়া।।
মায়া এসে রাণী অমরার পাশে বসল।
….. মা!!
…. মায়া!! আমার রাজকুমারী!! কেমন আছো??
উত্তর না দিয়ে মায়া তার মাকে জড়িয়ে ধরল।। তারপর রাণী অমরা মায়ার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলল
….. মায়া এখন কান্নার সময় নয়।। এখন শক্ত হওয়ার সময়।।
মায়া অশ্রু চোখে মায়ের দিকে তাকালো। তার মা কি বলতে চাইছে তা বোঝার চেষ্টা করল।। তার মা তাকে ডাকল
….. মায়া!!
এটা বলে রাণী অমরা কিছুক্ষন নিরব হলেন। তারপর একটা নিঃশ্বাস নিয়ে বললেন
….. মায়া আমি আর বিভীষা মিলে তোমার জন্য কিছু ঠিক করেছি!!
মায়া বিভীষা আর রাণী অমরার মুখের দিকে চাওয়া চাওয়ি করতে লাগল।। কারন সে বুঝতেছিল না তার মা কি বলছে??
.
(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here