Every Thing Is Fair In Love And War Writer – Nirjara Neera ………………… Part – 4

0
603

Story – Every Thing Is Fair In Love And War
Writer – Nirjara Neera
………………… Part – 4………………………..

——————— সাল ১৮৮০————————
——ঈরানভা নগরীর ফটকের বাইরে যুদ্ধ শিবির—–
.
.
মায়া…… মায়া…… মায়া!!
পরম আবেশে এই নাম উচ্চারন করতে করতে চোখ মুদল অলোক।
.
সম্রাটের শিবিরে প্রবেশ করল একজন সৈন্য।। অবনত হয়ে সম্মান জানালো!!
….. কি খবর??
….. রাজা কালক ধরা পড়েছেন!!
হাসি ফুটে উঠল অলোকের চেহেরায়!! যেন বহুদিনের পালানো শিকার ধরা পড়েছে।।
….. অতিথির খেয়াল রাখো!! আমি আসছি!!
এই বলে আবার চোখ মুদল সম্রাট অলোক!! সম্রাট অলোক কুঞ্জ!! একজন নিষ্টুর, অত্যাচারী, দোর্দণ্ড, প্রভাবশালী সম্রাট!! আর সেই সম্রাটের নজর কাড়লো মায়া।। রাজকুমারী মায়া!!
মায়ার স্বপ্নে বিভোর সম্রাট!! ওর হাসিটা, ওর মায়া ভরা চেহেরাটা, ওর ঘন কালো কেশরাজি, সবচেয়ে সুন্দর যে জিনিস সেটা হল চোখ!! মায়ার চোখ দুটো অসম্ভব সুন্দর!! মায়ার সবুজাভ চোখ সোজা ছুরি মেরেছে সম্রাট অলোকের অন্তরে আর এই সেই অাঘাত শুকায় নি বিন্দু মাত্র।। মনে হচ্ছে তা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। অলোক এখনো অনুভব করে মায়ার কোমল হাতখানার কথা।। যেই হাতে স্পর্শ সে আজও ভুলতে পারে নি!!
আরেক সৈন্য প্রবেশ করল সম্রাট অলোকের শিবিরে।। কুর্নিশ করতে ভাবনায় ছেদ পড়ল অলোকের।। বিরক্ত হল সে!! যখন কেউ তার আর মায়ার মাঝে দাড়ায় তখন তার তাকে খুন করতে ইচ্ছা হয়!! গর্জে উঠল সে
….. বাচার ইচ্ছা নাই তোমার??
সৈন্য টি কেপে উঠল!!
…. দয়া করুন সম্রাট!! একটা গুরুত্ব পূর্ণ সংবাদ নিয়ে এসেছি!!
…. কি সংবাদ??
…. আমাদের সৈন্য সিংহদ্বার এ পৌছে গেছে। এখন শুধু আপনার অনুমতির অপেক্ষা করছে। অনুমতি পেলে আমরা হামলা চালাবো।।
এই কথা শুনে অলোকের মুখে হাসি ফুটে উঠল।।
….. দ্বার ভেঙে ফেলতে বলো!!
…. আপনার আজ্ঞা সম্রাট!!
সৈন্য বেড়িয়ে গেলো!! আর সম্রাট অলোক আপন মনেই বলে উঠল
….. তোমাকে আমার কাছ থেকে কেউ নিয়ে যেতে পারবেনা!! আমি আসছি।। অপেক্ষা কর আমার জন্য!!
.
.
সম্রাট অলোক কুঞ্জ। কয়েকটা রাজ্যের সম্রাট সে। রাজারা তাকে দেখে ভয়ে থরথর করে কাঁপতে থাকে। যেই রাজ্যের দিকে অলোকের নজর গেছে সেই রাজ্যে অলোকের পদানত হয়েছে।। তার বিজিত সব রাজ্যে বার্বান রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করায় আজ বার্বান রাজ্যে বিশাল আকার ধারন করেছে। খুব অল্প বয়সে সম্রাট হয়ে যাওয়াই তার সমসাময়িক সব রাজারা অলোকের প্রতি ঈর্ষানিত হয়ে যুদ্ধ করতে আসলে লাশ নিয়ে আর ফিরে যেতে পারেনা।
বার্বান রাজ্যের মাটিতে লাখো নিষ্পাপ মানুষের রক্তে আর লাখো মানুষের চোখের পানিতে ধৌত করা। যুদ্ধের নেশা ভয়াবহ!! কারো চোখের পানি, বুকের তাজা রক্ত যুদ্ধ থামাতে পারে না। বরং যুদ্ধের নেশা বাড়িয়ে দেয়।
আর যুদ্ধ অলোকের সেই নেশা।
ধীরে ধীরে এগুতে থাকে অলোক বন্দি শিবিরের দিকে। চোখে এক প্রকার লোলুপতা আর ঘৃনা মিশ্রিত হয়ে আছে।। প্রহরী আর সৈন্যরা তাকে কূর্নিশ করতে লাগল। অলোক কে এগিয়ে আসতে দেখে তার প্রধান সেনাপতি শেরা এগিয়ে কুর্নিশ জানাতে লাগলো। তারপর বন্দি সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে লাগলো।। বন্দি শিবিরে অলোক ঢুকতেই সুনসান নিরবতা বিরাজ করতে লাগল। আহত বন্দিরা পর্যন্ত চুপ হয়ে গেল।। সম্রাট অলোক এগিয়ে গেল রাজা কালকের বন্দি খানায়। গিয়ে দেখল রাজা কালক কে মেরে রক্তাক্ত করে ফেলা হয়েছে।। টপ টপ করে মুখ বেয়ে রক্ত পড়ছে। একটা পা সোজা করতে পারছিল না। মনে হল ভেঙে গেছে। সেটা দেখে অলোক তৃপ্তির ক্রুর হাসি হাসল। তারপর একটা লাথি দিয়ে দেখার চেষ্টা করল হুশ আছে কিনা।। তারপর সে দেখল রাজা কালক চোখ খোলার চেষ্টা করছে।। মানে এখনো হুশ রয়েছে।। রাজা কালক নিশ্চয় বির বির করে কিছু বলছিল।। সম্রাট অলোক পায়ের পাতার ওপর ভর করে রাজা কালকের সামনে বসল। তারপর বলতে লাগল
…… আমার মায়ার দিকে যে নজর দিবে তাকে মৃত্যুর চাইতেও ভয়ঙ্কর শাস্তি দিব।। আমার কাছ থেকে কেড়ে নিতে চেয়েছিলে না??? পেরেছো??? পারোনি!! আর কখনো পারবেও না।।
এই কথায় চোখ মেলে তাকালো রাজা কালক। সে অবশ্যই ভীরু নয়।। তারপর সম্রাট অলোকের দিকে তাকিয়ে উপহাসের হাসি হেসে অস্পষ্ট স্বরে ধীরে ধীরে বলল
….. তোমার জন্য অাফসোস হয়।। তোমার শাস্তি যে কি হবে তা ভেবেই পাই না। ভেবেছো এত কিছু করবে আর তোমার কিছুই হবেনা?? ভুল ধারনা।। পাপ করলে তার শাস্তি পেতে হবে।। আর শুনে রাখো।। হয়তো তুমি মায়াকে জোর করে অধিকার করতে পারো কিন্তু কখনোই তার ভালোবাসা পাবে না।। ভালোবাসা হীন অভাগা থাকবে সারা জীবন!! দেখে নিয়ো!!
এই কথায় সম্রাট অলোকের রক্ত টগবগ করে ফুটতে লাগলো।। রাগে তার হাত পা কাপতে লাগলো।।। তারপর অনেক কষ্টে নিজেকে নিয়ন্ত্রনে এনে বলল
…… যুদ্ধ আর প্রেমে কোন পাপ নেই।। সব জায়েজ!! সব জায়েজ প্রেম এবং যুদ্ধে।।। মায়া কে আমি পাবো, মায়ার ভালোবাসা কেও পাবো।।। কিন্তু অামার অাফসোস সেটা দেখার জন্য তুমি থাকবেনা।।।
এটা বলে অলোক উঠে দাড়ালো।। তারপর শেরার দিকে তাকিয়ে বলল শিবিরের বাইরে রাজা কালক কে জ্যান্ত পোড়াও। ততক্ষণ পোড়াও যতক্ষণ সবকিছু ছাই হয়ে না যায়।। এই বলে অলোক চলে গেল।। আর আদেশ শুনে সেনাপতি শেরার মত নিষ্টুর মানুষের প্রাণও কেপে উঠল।।।
.
সময় মত রাজা কালক কে বন্দি শিবিরের সামনে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হল। তার আর্তনাদ অতি পাষান জল্লাদের বুকে দয়ার উদ্রেক করলেও সামান্য তম করুনা হল না অলোকের। বরঞ্চ তৃপ্তিতে বুক ভরে গেল তার এই ভেবে যে আর কেউ মায়া কে নিয়ে ভাববে না।। একমাত্র সেই যে মায়া কে নিয়ে ভাবনা ভাবার, ভালোবাসার অধিকার রয়েছে।।
.
(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here