Story – Every Thing Is Fair In Love And War
Writer – Nirjara Neera
………………… Part – 5……………………….
★
——————— সাল ১৮৮০————————
——ঈরানভা নগরীর ফটকের বাইরে যুদ্ধ শিবির—–
.
ঈরানভা নগরীর সিংহদ্বার ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করল বার্বান সৈন্যরা। নেতৃত্বে স্বয়ং সম্রাট অলোক।। চারদিকে রক্তের বন্যায় ভেসে যেতে লাগল।। নিরপরাধ জনগনের প্রাণের চিৎকার ঈরানভা নগরীকে নরক পুরিতে পরিণত করেছে।। এ যেন এক ঘৃণ্য ধ্বংসলীলা।। যেখানে কেউ রেহাই পেল না।।
প্রাসাদের তোরন ভেঙে হুরমুর করে ভেতরে প্রবেশ করল সৈন্যরা!! প্রাসাদের ভিতর হইচই পড়ে গেল।। যে যেদিক পারলো দৌড়ে পালালো।। কিন্তু বেশি দূর যেতে পারলো না। সবাই মারা যেতে লাগলো।। সম্রাট অলোক নির্দেশ দিলেন কাউকে না মেরে যেন বন্দি করে নিয়ে আসা হয়!!! সবাই তাই পালন করল।। একে একে প্রাসাদের সমস্ত লোকদের ধরে আনা হল। কেউ বাধ গেল না।। এমনকি দু মাসের শিশুও বাধ গেল না। সবাই কে নিয়ে আসা হল। সবাই কে লাইন ধরে দাড় করানো হল।। কান্নার মৃদু গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে মহিলা দাসী দের কাছে থেকে।। ব্যতিক্রমী শুধু রাণী অমরা।। সে নিশ্চুপ দাড়িয়ে আছে।। সম্রাট অলোক উঠে দাড়ালো। তারপর সব বন্দিদের সামনে গিয়ে দাড়াতে লাগলো।। আর একজন সৈন্য ঘোমটা তুলে দেখাতে লাগল।। কিছুক্ষন পর রাণী অমরার দেখা পেল অলোক।। দেখা পেয়েই ক্রুর হাসি হাসল সে।। আর তাতে রাণী অমরার চোখে জ্বল মিশ্রিত ঘৃণা বই আর কিছু দেখা গেল না।। নজর ফিরিয়ে ফেলল রাণী অমরা।। আরো এগুতে লাগল অলোক।। মায়ার সাথে সাক্ষাত হওয়ার প্রত্যাশায় ব্যাকুল হয়ে উঠেছে।। ওই তো রাজকুমারী মায়া। রাজকীয় ভঙ্গিতে ঘোমটা মাথায় দাড়িয়ে আছে।। তার মুকুট টা মাথায় শোভা পাচ্ছে। খুশিতে হাত পা কাপতে লাগল অলোকের। প্রায় পাঁচ বছর আগে দেখেছিল মায়া কে।। যে আগুন লেগেছিল তা এখন পর্যন্ত দাউ দাউ করে জ্বলছে।। আজও এক মুহুর্তের জন্য সেই নিষ্পাপ ভয় পাওয়া চেহেরা ভুলেনি সে। বরঞ্চ মায়াকে দেখার লোভ দিন দিন বেরেই চলেছিল । সৈন্য কে সেদিক থেকে সরে যেতে বলল।। ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে লাগল সে। কিন্তু মায়া নিশ্চুপ ভঙ্গিতে দাড়িয়ে আছে।। মায়ার সামনে গিয়ে দাড়ালো সে। তারপর ধীরে ধীরে ঘোমটা উঠিয়ে দিল।। কিন্তু সাথে সাথে অলোকের হাস্যোজ্জল চেহেরা পাথরের মত কঠিন রুপ ধারন করল।। তার সামনে রাজকুমারী মায়া নয় বিভীষা দাড়িয়ে।। সাথে সাথে তলোয়ার বের করে বিভীষার শরীর থেকে ধড় আলাদা করে দিল।। নিচে পড়ে বিভীষার মুন্ডু বিহীন শরীরটা তড়পাতে লাগল।। এই অবস্থায় সবাই ভয়ে কাপতে লাগল।। অলোক এসে রাণী অমরার গলা চেপে ধরল।। তারপর দাতে দাত চেপে অলোক জিজ্ঞেস করল
…… মায়া কোথায়???
জবাবে রাণী অমরা কিছু বলল না। শুধু একটু বিদ্রুপের হাসি হাসল। সেটা দেখে মাথায় রক্ত চড়ে গেল অলোকের।। সে আবার বলল
…. মায়া কে কোথায় লুকিয়ে রেখেছো বলো।
চিৎকার দিয়ে উঠল অলোক। রাণী অমরার চোখ কোটরাগত হয়ে এসেছে। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তারপরও অনেক কষ্টে বলল
….. জান যাবে কিন্তু আমার মেয়ে কে তোর মত পাষন্ডের হাতে কখনোই তুলে দিবো না।।
এই কথা শুনে অলোকের হাসি পেল।।
….. সত্যিই তাই?? দেখা যাক তাহলে আমি নিজেই খুজে নিতে পারি কিনা???
…… কখনোই না!! পাষন্ড তুমি কখনোই মায়ার নাগাল পাবেনা।।
অলোক কিছু বলল না।।
শেরার দিকে তাকিয়ে নির্দেশ দিল
…… রাণী অমরা কে বন্দি খানায় নিয়ে যাও আর বাকি কেউ যেন জীবিত না থাকে।।।
এই কথাই সকলে হাউ মাউ করে কান্না শুরু করে দিল।। মুহুর্তে কান্নার শব্দে প্রাসাদের দেয়াল ভারী হয়ে এলো। তবে তা কিছুক্ষন এর জন্য। এরপর সব নিস্তেজ হয়ে গেল।। চারদিকে শুধু রক্তের বন্যা বয়ে যেতে লাগল।।
অলোকের ভীষন মূর্তি দেখে তার নিজের সৈন্যরা পর্যন্ত ভয়ে তটস্থ হয়ে রইল কখন কার গর্দান যায়।। ইতোমধ্যেই রাজ্যের বাইরে যাওয়ার সমস্ত পথ বন্ধ করার ঘোষনা দেওয়া হয়েছে। প্রাসাদে কোন গুপ্ত পথ আছে কিনা দেখা হচ্ছে।। কিন্তু অলোকের তর সইছিল না। সেই নিজেই ঘোড়া নিয়ে বেড়িয়ে গেল। প্রাসাদের কোনা কোনা ভালো করে খুজে শেষ পর্যন্ত পাওয়া গেল গুপ্ত পথ। আর সাথে সাথে খবর দেওয়া হল অলোক কে।। অলোক সব খানে লোক লাগিয়ে দিল মায়া কে খুজে আনার জন্য। যে মায়ার সন্ধান দিতে পারবে তাকে লোভনীয় পুরষ্কার দেওয়া হবে।। পুরষ্কারের লোভে অনেকেই খুজতে বেরিয়ে গেল।। এরই কিছুক্ষন পর খবর আসল। একটা লোক কে অলোকের সৈন্যরা ধরে নিয়ে আসল।। সেটা দেখে অলোক জিজ্ঞেস করল
…. কি সমস্যা???
…. সম্রাট এই লোকটি দাবি করছে যে এ রাজকুমারী মায়া কে দেখেছে।।
এই কথায় লাফিয়ে উঠল অলোক।।
….. কোথায়??
….. সম্রাট আমি রাজকুমারী মায়া কে দাসী কাপড়ে উত্তর বৃন্দার দিকে এগুতে দেখেছি।।
….. যদি তোমার কথা সত্যি হয় তাহলে কথা অনুযায়ী তোমাকে পুরষ্কৃত করা হবে।।
….. সম্রাটের দয়া অসীম!!
তড়িঘড়ি করে অলোক বেড়িয়ে এলো।। গন্তব্য উত্তর বৃ্ন্দা।।
.
(চলবে)