পর্বঃ ৪+৫ #অবৈধ_বিয়ে #Sabriha_Sadi

0
620

#পর্বঃ ৪+৫
#অবৈধ_বিয়ে
#Sabriha_Sadi
পর্ব : ৪

সে কি করবে এখন?

মানুষ নিজের ক্ষতি এই ভাবে কি করে করতে পারে? লোকটাকে বুঝা মুশকিল। এতটা রাগ কেন উনার আল্লাহ জানে।

রানি তো এই বাসার কিছু জানে না। কোথায় কি আছে তা তো শুধুমাত্র রাজ জানে। আর তাকে যে এখন ডেকে কিছু জিজ্ঞাস করবে সেই পরিস্থিতি তে এখন নেই রাজ। রানি কোথায় খুঁজবে ঔষধের বক্স? তারপরেও সে খুঁজতে লাগল। খুঁজতে খুঁজতে পেয়েও গেল। বক্স নিয়ে দৌড়ে সে রাজের কাছে গেল।

হাতটা সুন্দর করে ব্যান্ডেস করে দিল।

একটা লোককে এই ভাবে ছেড়ে সে কি করে চলে যাবে?

কোনো রকম ভাবে, রাজ কে ধরে ধরে বিছানায় নিয়ে এলো। শরীরে তো জ্বর আস্তে আস্তে বাড়ছে। বাড়বে না? এই রকম করলে কি আর শরীর ঠিক থাকে? হাতটার যা অবস্থা করেছে শরীরে জ্বর না এসে কি পারে?

রাজের মাথাশ সে জলপট্টি দিতে শুরু করল। কিন্তু জ্বর তো কমছেই না। কি করবে এখন?

না পেরে সে রাজের ফোন নিল। কিন্তু ফোনে যে লক দেওয়া। পাসওয়ার্ড তো সে আর জানে না। আর এত কোন ডাক্তারের নাম্বার সে জানে না।
রানি উল্টাপাল্টা অনেক কিছু লিখছে। যেমন:
* Raj
* Rani
* I love you Rani
* I lv u R
* I love you ammu

কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। আর এই দিকে রাজের জ্বর তো বেড়েই চলছে। না পরে রানি আবার চেষ্টা করল।
* Raj Rani

এই হয়েছে। লক খুলে গেছে।
একি তার ছবি রাজ পেলো কোথায়? হোম স্ক্রিনে তো রানির ছবি। কিন্তু রাজ ছবি পোল কোথায়? লোকটা পারেও এত পাগলামি করতে। তবে রানির এইটা তে অমত আছে। রাগও হলো তার।

ফোন ঘেটে ডক্টর আঙ্কেল দেওয়া একটা সেইভ নাম্বার পেল। তাকেই ফোন করল।

– হ্যালো। আসসালামু আলাইকুম।
– ওলাইকুম আসসালাম।
– ডক্টর আঙ্কেল বলছেন?
– জ্বি। কিন্তু তুমি কে?
– আমি। আমি ওর ফ্রেন্ড।
– ও। তা রাজ বন্ধুর কি হয়েছে?
– উনার খুব জ্বর।
– সে কি?
– জ্বি আপনি কি একটু আসবেন?
– হ্যাঁ অবশ্যই। তোমরা কোথায়? বাড়িতে নাকি ফ্ল্যাটে?

রানি ভাবতে লাগল, বাড়ি কোনটা আর ফ্ল্যাটই বা কোন? এখানে তো উনার মা বাবা কেউ থাকে না। তার মানে..

– কি হলো বলছো না কেন?
– না, ফ্ল্যাটে।
– ঠিক আছে। তুমি বন্ধুর কাছে থাকো আমি একটু পরেই আসছি।
– ঠিক আছে। রাখছি।

রানি ফোনটা কেটে দিল। রাজের পাশে গিয়ে বসল। শরীরে জ্বরটা বেড়ে চলছে। রানির এই অবস্থায় নিজেকে কেমন যেন অসহায় লাগছে। রাজ কে ছেড়ে যেতে পারছে না। তার বাবার কাছেও যেতে পারছে না।

কিছুক্ষণ পর ডক্টর আঙ্কেল এসে গেল।
রাজে কে দেখে বলল,
– রাজ বন্ধুর তো শরীরে অনেক বেশি জ্বর। আর হাতে কি হয়েছে?
– আসলে,,,
– ব্যথা পেয়েছে?
– জ্বি।
– হুম বুঝতেই পারছি বিষয়টা। আমি রাজ বন্ধুর ফ্রেন্ডের মতো মানে তোমারও।
-….. ( রানি মুচকি একটা হাসি দিল)
– আমি ঔষধ লেখে দিচ্ছি। দারোয়ান কে বলে যাবো তোমার কাছে সে ঔষধ দিয়ে যাবে। রাজ বন্ধু কে কিছু খায়িয়ে দিয়ে ঔষধ গুলি খায়িয়ে দিও।
– ঠিক আছে। কিন্তু উনি তো ঘুমে আপনার…
– টাকার হিসাব করতে হবে না তোমার। সেটা পরে হবে। তুমি আগে বন্ধু কে সুস্থ করো।
– ঠিক আছে।
– আসছি। খেয়াল রেখো ও।
– হুম।

ডক্টর চলে গেল। রানি রাজের কাছে গিয়ে ওর মাথার পাশে গিয়ে বসল।

চলবে….

(

* হ্যাপি রিডিং।

#অবৈধ_বিয়ে
#Sabriha_Sadi
পর্ব : ৫

– কি করব এখন আমি? আল্লাহ কোন পরীক্ষায় ফেলল তিনিই ভালো জানেন। কিন্তু আমার সাথেই বা কেন এমন হচ্ছে? কি দোষের ফল ভুগছি জানি না। এক দিকে তো অসুস্থ মানুষ। অন্য দিকে বাবা। আল্লাহ পথ দেখাও আমায়। আর যে ভালো লাগছে না আমার।

একটু পর দারোয়ান এলো।
– আসসালামু আলাইকুম ভাবি।

ভাবি ডাক শুনে দারোয়ানের প্রতি রাগ দেখাবে নাকি বকবে সে জানে না। অতঃপর,,

– ঔষধ এনেছেন?
– জ্বি ভাবি। এই নিন।
– হুম। ধন্যবাদ।
– ভাবি আমি আসি। কোন সমস্যা হলে আমাকে জানাবেন।
– ঠিক আছে।

দারোয়ান চলে গেল। রানি দরজা বন্ধ করে দিয়ে রাজের কাছে গেল।
রাজ তো কিছু খায়নি। ঔষধ তো খাওয়াতে হবে।

রানি রান্নাঘরে গেল। রাজের জন্য, দুধ গরম করল। একটু করে স্যুপ রান্না করে নিল।

তারপর রাজের কাছে গিয়ে, রাজ কে অনেক কষ্ট করে বিছানায় হেলান দিয়ে শোয়িয়ে দিল।

রাজে কে অনেকক্ষণ ডাকল। রাজ চোখ মিটমিট করে রানির দিকে তাকাল। তার ভালোবাসার মানুষটা যত্ন সহকারে তাকে খাবার খায়িয়ে দিচ্ছে। আহ এটা তো রাজের স্বপ্ন। রানি কে নিয়ে তো সে প্রতিদিন স্বপ্নের সংসার করত। স্বপ্নে রানি কে নিয়ে কতই না কল্পনা জল্পনা করছে সে। কিন্তু সেখানে রানির আচরণ থাকত অন্য রকম। রানি রাজ কে আর রাজ রানি কে অনেক ভালোবাসত স্বপ্নের সংসারে। দুজন দুজনকে নিয়ে কতই না সুখে থাকত তারা। কতটা খেয়াল রাখত দুজ দুজনের। সেখানে রানি এটা বলত না, যে বিয়েটা তাদের #অবৈধ_বিয়ে।
স্বপ্নের সংসারে তো রাজ রানি অনেক ভালো থাকত।

– তুমি খেয়েছো?
– না আপনি খেয়ে ঔষধটা খেয়ে নিন। আর আপনি এটা কেন করতে গেলেন? হাতটা কতটা ডেমেজ হয়েছে দেখেচেন একবার?
– না।
– কেন করলেন এমনটা?
– এই হাত দিয়ে যে তোমাকে আমি মেরেছে। এই হাত দিয়েই তো তোমাকে কষ্ট দিয়েছে। আর সে হাতের জন্যে তুমি কষ্ট পেয়েছ, তাকে তো আর ঠিক রাখা যায় না। একটু শাস্তি তো তার কাম্য বলো।

রানি রাজের উত্তরে আর কিছু বলল না। চুপ করে রাজ কে স্যুপ খাওয়াতে ব্যস্ত হয়ে পরল। আর রাজ তার রানি কে দেখতে।
রানি খায়িয়ে দিচ্ছে আর রাজ রানির দিকে চেয়ে আছে। মনে হয় কত বছরের পিপাসা মিটাচ্ছে। দৃষ্টি পিপাসা।
রানি কে দেখছে তো দেখছেই।

আনমনে খাবার খাওয়ার কারণে ঘটল এক ঘঠনা।

– কি করলেন? আপনি আমার আঙ্গুলে কামোর দিলেন কেন?
– ইয়ে মানে,
– আরে কি ইয়ে মানে মানে করছেন। রাক্ষস হলেন নাকি? মানুষ কামরান।
– আরে আমি বুঝতে পারি নি। আসলে,,
– কি বুঝতে পারেন নি আপনি? মন কই থাকে?
– তোমার কাছে।
– কি?
– হুম। তোমারই দোষ। আবার আমায় বলছো।
– কি বললেন? আমার দোষ বাহ্ ভালোই বলতে পারেন।
– আমাকে দেখতে দেখতেই তো এটা হয়ে গেল।

রানি আর জবাব দিল না। রাজের মুখে ঔষধ গুঁজে দিয়ে মুখের সামনে পানি ধরল।

রাজ ঔষধ খেয়ে শুয়ে পড়ল। শরীরটা যে বড্ড ক্রান্ত লাগছে তার। তাই রানির সাথে আর কথা না বলে শুয়ে পড়ল সে।

দুপুরে রানি রান্নাঘরে রাজের জন্যে রান্না করছে। রান্না শেষ করে রাজের কাছে যাবে।

কি অদ্ভুত ব্যাপার। রানি না চাওয়া সর্তেও রাজের জন্যে এই সব করছে। আর যাই হোক সে তো একটা মানুষ।।অন্য একটা মানুষ কে এই অবস্থায় রেখে যাবে কি করে সে??

রান্না শেষ করে রানি গেল রাজের কাছে।

রাজের শরীরে হাত দিয়ে দেখল রাজের জ্বরটা অনেক কম। শরীর ঘাম দিচ্ছে।
রানি আর দেরি না করে রাজের জন্যে খাবার আর ঔষধ হাতের কাছে রেখে দিয়ে বেড়িয়ে এলো।

রাজ প্রায় বিকেলে ঘুম থেকে উঠল। উঠে রানি কে হন্নহারা হয়ে খুঁজতে লাগল। কিন্তু রানি যে নেই। না রানি কোথাও নেই। রাজ দৌড়ে বাহিরে গেল।

– রহিম রানি কে দেখলি?
– ভাই ভাবি কোথায় যেন বেড় হলো। যাওয়ার আগে বলল, আপনাকে দেখে রাখতে।
– আর কিছু বলেছে?
– নাই ভাইজান, কিন্তু আপনি…..

রহিমের কথা না শুনে রাজ আবার ঘরে গেল।
ঘর থেকে গাড়ির চাবিটা এনে আবার বাহিরে গেল ছুটে।

– ভাইজান কোথায় যাচ্ছেন।
– পরে বলব রহিম।

রাজ আর কথা না বাড়িয়ে বের হয়ে গেল গাড়ি নিয়ে।

এ দিকে রানি বাসার সামনে দাঁড়িয়ে কলিংবেল বাজাতে লাগল।

একটু পর তার বাবা দরজা খুলে দিল। তাকে দেখে বাবা খুশি নাকি ভেজার বুঝতে পারছে না রানি। হা করে তাকিয়ে আছে নিজের মেয়ের দিকে।

– কি হয়েছে বাবা? এই ভাবে তাকিয়ে আছো কেন?
– কোথায় ছিলি তুই কাল থেকে?
– বাবা আসলে আমি….

কিছু বলার আগেই রানির বাবা রানিকে একটা ঠাসসস করে চড় বসিয়ে দিল।

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here