#কহিনুর_দ্বিতীয়_খণ্ড,পর্ব:১৩
কলমেঃইয়াসমিন
রহস্য ঘেরা এই পৃথিবীতে হাজারো রহস্য মানুষের দৃষ্টির অগোচরে ঘটে যায় সেগুলো বোঝা বা জানার সাধ্য মানুষের থাকে না। অজানাকে জানার ইচ্ছে মানুষকে আকৃষ্ট করে রহস্যের সন্ধানে ছুটিয়ে নিয়ে চলে প্রতিনিয়ত। তেমনিভাবে সুলতান বংশকে ঘিরে থাকা এই রহস্যের সমাধান করতে অধরা জুবায়ের যথেষ্ট চেষ্টা করেও ব্যার্থ হতে হয়েছে। তবে হাল ছাড়েনি।ওরা কিছু সময়ের জন্য রহস্য থেকে দূরে ছিল কিন্তু ঘটনার বাইরে ছিল না। সুলতান পরিবারের পা রাখতে না রাখতেই অধরা আবারও এই মায়াজালে জড়িয়ে পড়েছে। একদিকে জুবায়েরর দাদুর থমকে যাওয়া বয়স নিয়ে ওকে ভাবাচ্ছে অপরদিকে ওর প্রাণাধিক প্রিয় ননদের নিখোঁজ হওয়া।কিভাবে ওর সন্ধান পাবে এটাও ওকে ভাবাচ্ছে।পারপর দুটো খু*ন আর সেই ধাঁধা সব মিলিয়ে বিষয়টা খুব গোলমাল লাগছে। অধরা চোখ বন্ধ করে ঘটনাগুলোর সমীকরণ মিলানোর চেষ্টা করছিল। পাশে জুবায়ের ওর দিকে তাঁকিয়ে বসে আছে। অধরা ওর উপরে ভয়ানক চটে আছে কথা বলছে না। সকালের ঘটনা নিয়ে নিজেদের মধ্যে ছোটখাট তর্কাতর্কি হয়েছে। সেই থেকে অধরা চুপচাপ। জুবায়ের সুযোগ খুঁজছে কথা বলার জন্য কিন্তু অপর পক্ষ নীরব। পাত্তা পাচ্ছে না। নিজের উপরে এখন রাগ হচ্ছে ওর। কি দরকার ছিল মেয়েটার সঙ্গে তর্ক করার এখন আফসোস হচ্ছে। ক্ষণস্থায়ী জীবনের অনেকটা সময় নষ্ট হয়ে গেছে এখন যদি নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করে এই অল্প সময় থেকে আরও কিছু নষ্ট করা হয় তাহলে ভালোবাসা হবে কখন? কবরে গিয়েও শান্তি মিলবে না। জুবায়ের অধৈর্য হয়ে উঠছে। শেষমেশ অধরার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো। অধরা চমকে উঠে থমকে গেলো কিন্তু কিছু বললো না। পূর্বের ন্যায় সোফায় হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে নিলো। বেশ কিছুক্ষণ পর জুবায়ের উঠে বসলো। অধরার হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বলল,
> সরি তখন আমার তর্ক করা উচিৎ হয়নি। এবারের মতো খুব খুব সরি বউ।
জুবায়ের কথা শুনে অধরা কিছু একটা ভেবে বলল,
>আপনার যত ইচ্ছে তর্ক রাগারাগি করতে পারেন সমস্যা নেই আমি সামলে নিবো তবে শর্ত আছে।শর্ত মানতে পারলে বলুন নয়তো আজ থেকে আমি আলাদা ঘুমাবো।
জুবায়ের ভ্রু কুচকে ফেলল ওর শর্তের কথা শুনে। ভালো খারাপ যেমন যাইহোক আলাদা থাকার কথা মেয়েটা কিভাবে বলতে পারে ওর মাথায় আসছে না। জুবায়ের থমথমে মুখ করে বলল,
> শর্ত মেনে কি এখন তোমার সঙ্গে থাকতে হবে? আমার সঙ্গ তোমার খারাপ লাগে? তুমি এমনিতেই বলতে পারতে আমি শুনতাম।তোমার যেকোনো কাজে সমর্থন করি আর এবার করতে পারতাম না? আসলে তুমি আজও আমাকে ক্ষমা করতে পারোনি। আমার সঙ্গে জড়িয়ে তোমার জীবনটা নষ্ট হলো। আমি না থাকলেই ভালো হতো। তুমি নতুন করে জীবন শুরু করতে পারতে। আমি কি করলে এই অপরাধ থেকে মুক্তি পাবো বলতে পারো?
জুবায়ের একদমে কথাগুলো বলে থামলো। সামান্য কারণে অধরা ওর উপরে রাগ করেছে। এটা ওটা বলে ব্লেম করেছে। সারাদিন জুবায়েরের মন খারাপ ছিল। ভেবেছিল রাতে সব ঠিক করে নিবে কিন্তু এখন শর্তের কথা শুনে ও আর নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলো না। অধরা কিভাবে শর্ত দিতে পারলো ভেবেই ওর কষ্ট দ্বিগুণ হচ্ছে। শর্ত দেওয়ার পরে অধরা বুঝতে পারলো কথাটা বলা উচিৎ হয়নি। ও দ্রুত উঠে বসল। জুবায়ের হাতটা নিজের মুঠোয় নিয়ে বলল,
> শর্তের কথাটা আমি এমনি এমনি বলিনি কারণ আমি যেটা শুনতে চাই আপনি সেটা সহজে আমাকে বলতে চাইবেন না তাই। আপনাকে কষ্ট দিতে চাইনি একটু বুঝুন আমাকে প্লিজ। বাচ্চাদের মতো রাগ অভিমান করা কি আমাদের এখন চলে? চারদিকে কিসব হচ্ছে। ভালো লাগছে না একটুও।
জুবায়ের কিছুক্ষণ অধরার দিকে তাঁকিয়ে থেকে
দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বলল,
> আমি কোনো শর্ত মেনে তোমার সঙ্গে থাকতে চাইনা। থাকলে ভালোবেসে থাকবো নয়তো না। তুমি আমাকে মন থেকে মানতে পারোনি। আমি বোকার মতো ভেবেছি হয়তো তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছো। খুব সরি অধরা। আমি জানিনা কিভাবে ক্ষমা পাবো। উপাই থাকলে তোমার জীবনটা আগের মতো গুছিয়ে দিতাম। যাইহোক ঘুমিয়ে যাও আমি আসছি।
জুবায়ের একদমে কথাগুলো বলে থামলো। ওর চোখ দুটো ছলছল করছে পানিতে। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা হতেই পারে তাই বলে শর্ত মেনে এক সঙ্গে থাকতে হবে এটা ও মানতে পারছে না। অধরা কিছু বলার আগেই জুবায়ের উঠে হনহন করে বেরিয়ে গেলো। অধরা ছুটলো ওর পিছু পিছু। কি থেকে কি হয়ে গেলো মাথায় আসছে না। ভেবেছিল কৌশলে জুবায়ের থেকে একটা তথ্য জানবে কিন্তু এই ছেলেটা ওকে ভুল বুঝলো। অধরার যেতে যেতেই জুবায়ের গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলো। বেশ রাত হয়েছে সুলতান ভিলাকে অধরার কাছে দানবাকৃতির মনে হচ্ছে। নিজের উপরেই এখন ওর রাগ হচ্ছে। কি দরকার ছিল লোকটাকে এভাবে রাগিয়ে দেওয়ার। রাগে কষ্টে অধরার চোখে পানি চলে আসলো। লোকটাকে ফিরিয়ে আনবে কিভাবে বুঝতে পারছে না। সুলতান ভিলার ডাইনিং রুমের দরজায় অধরা ধুপকরে বসে পড়লো। ফুপিয়ে উঠলো জুবায়েরের বিরহে। লোকটা ছাড়া ওকে বোঝার মতো কে আছে তবুও আজ এরকম করতে পারলো। অধরা নিজেই নিজেকে দোষারোপ করলো। হঠাৎ ফিসফিস আওয়াজ শুনে ওর কান্না বন্ধ হয়ে গেলো। মনে হচ্ছে কেউ চুপিচুপি কথা বলছে। অধরা চোখের পানি মুছে ফেলল। থ্রি পিচের ওড়নার এক প্রান্ত দিয়ে মাথায় ঘোমটা টেনে উঠে দাঁড়ালো। রহস্যের গন্ধ ওকে কাছে টানছে। অধরা একপা দুপা করে এগিয়ে গেলো। চার কক্ষের মাঝামাঝিতে দোতলায় উঠার সিঁড়ি। মনে হচ্ছে সিঁড়ির ভেতর থেকে আওয়াজ আসছে। জার্মানির বাড়িটার কথা ভেবে ওর ভ্রু কুচকে গেলো।এই বাড়িতেও সিঁড়ির মধ্যে লুকানো কক্ষ আছে ভেবে ও দ্রুত পা চালালো। খুব সাবধানে সিঁড়ির নিচে গিয়ে চেক করলো। না সেখানে কোনো গুপ্ত দরজার হদিশ পাওয়া গেলো না। অধরা হাল ছাড়লো না। ফ্লোরে কান পেতে রাখলো। আওয়াজটা মূলত নিচ থেকে আসছে কিন্তু কিভাবে হতে পারে? যদি নিচে কোনো কক্ষ থেকে থাকে তবে সেই কক্ষ থেকে উপরে ফিসফিস আওয়াজ করে সাউন্ড কেনো হবে? শব্দ হলে চিৎকার চেচামেচি হবে। ফিসফিস কেনো হবে এটা ওকে বিপদ ফেলার কোনো উদ্দেশ্যে নয়তো? অধরা বোঝার জন্য হাতের তালু দিয়ে ফ্লোরে আঘাত করতেই সেই আওয়াজটা বন্ধ হয়ে গেলো।সারা বাড়িতে পিনপতন নীরবতা বিরাজ করছে। বাড়ির দরজা থেকে কুকুরের ডাক ভেসে আসছে।গা ছমছম করা পরিবেশ। অধরার কেমন ভয় করে উঠলো। ভয়ের সঙ্গে ওর পরিচয় নেই বললেই চলে। তাছাড়া সব সময় জুবায়ের ওর পাশে ছিল কথাটা ভেবেই ওর আবারও মন খারাপ লাগছে। অধরা এতোক্ষন ফ্লোরে কান পেতেই কথাগুলো ভাবছিল। হঠাৎ পেছনে থেকে বলিষ্ঠ দুটো হাত ওকে ঝাপটে ধরলো। অধরা চিৎকার করতে চাইলো কিন্তু হলো না। ওর মুখ শক্ত হাতের থাবায় বন্ধী তবে অধরা এবার আর ছোটাছুটি করলো না। পেছনে থাকা লোকটার গায়ের গন্ধ ওর চেনা। অধরা কিছু বলার পূর্বেই জুবায়ের ওকে উঠিয়ে দিলো। গম্ভীর মুখে বলল,
> এখানে কি? রাতে না ঘুমিয়ে ঘরময় দাপিয়ে বেড়াচ্ছো। ভূত প্রেত পিশাচ তোমার যন্ত্রণায় দেখি আত্ম*হ*ত্যা করে বসবে।
অধরা সময় নষ্ট করলো না জুবায়েরকে দুহাতে ঝাপটে ধরে কেঁদে ফেলল। ভেজা কণ্ঠ জড়িয়ে যাচ্ছে ওর কথা তবুও বলল,
> এই ভূতের বাড়িতে আপনি আমাকে ফেলে চলে যেতে পারলেন? আপনি খুব খারাপ। সকাল হলেই আমার মেয়েকে নিয়ে আমি চলে যাবো। আর আসবো না।
জুবায়ের ওর কথা শুনে হেসে ফেলল। উত্তর না দিয়ে অধরাকে কোলে তুলে নিয়ে দোতলায় নিজেদের কক্ষের দিকে হাটা ধরলো। অধরা ওর মুখের দিকে তাঁকিয়ে আছে। লোকটা রেগে আছে কি বোঝা যাচ্ছে না। ডাইনিং রুমের ঘটনাটা না বলতে পারলে শান্তি লাগছে না কিন্তু এই মূহুর্তে বলা ঠিক হবে কি সিদ্ধান্ত নিতে পারলো না। ওর যখন ধ্যান ভাঙলো ততক্ষণে জুবায়ের ওকে বিছানায় রেখে দরজা বন্ধ করতে গেছে। অধরা কৌতূহলী হলো, জুবায়ের কোথায় গিয়েছিল জানার জন্য জিঞ্জাসা করলো কিন্তু জুবায়ের ওকে উত্তর দিলো না বরং লাইট বন্ধ করে অধরা গলাই মুখে ডুবিয়ে বলল,
> ঘুমাও সব কথা সকালে হবে।
********************
হিন্দি গানের সঙ্গে গলা মিলিয়ে গুনগুন করে মনের সুখে গান গাইছে সামির তালুকদার। মোটামুটি ছেলের উপরে উনি বেশ সন্তুষ্ট। যেভাবে ব্যবসার হাল ধরেছে তাঁতে চারদিকে শুধুমাত্র নিজের প্রতিপত্তি আর অর্থনৈতিক উন্নতি উনার চোখে পড়ছে। গর্ব, অহংকারের বুক ফুলে উঠেছে। বহু কষ্টের এই ধন সম্পত্তি। যখন জার্মানিতে পা রেখেছিল তখন কি ছিল নিজের বলতে? কিছু ছিল না। এই কোম্পানির একজন সাধারণ কর্মচারি যার বেতন ছিল মাসে পঁচিশ হাজার টাকা মাত্র। পড়াশোনার সঙ্গে এই কাজটা করতে উনার যথেষ্ট পরিশ্রম করতে হয়েছিল। ক্রমগত মালিকের সু নজর ওর উপরে পতিত হলো। চৌদ্দ গোষ্ঠীর ভাগ্য ভালো ছিল নয়তো কি আর প্রজা হয়ে রাজার সঙ্গে জামাই শশুরের সম্পর্ক হয়? সামির তালুকদার মেধাবী ছিলেন কাজকর্মে ছিল গভীর মনোযোগ আর বসের বিশ্বাসী একজন কর্মী। কপাল খুঁলতে সময় লাগেনি তাছাড়া ইচ্ছে পূরণের জন্য একটা উপাই উনার জানা ছিল যেটা চমৎকার ভাবে কাজে দিয়েছিল বিনিময়ে সন্তান প্রসবকারে স্ত্রীকে হারাতে হয়েছে কিন্তু তাতে কি হলো? ছেলেটা তো বেঁচে আছে। তাছাড়া স্ত্রীর মৃত্যুর পর তাঁর সুন্দরী বোনটা এখন উনার বর্তমান স্ত্রী। কোম্পানিটা উনার স্ত্রীর নামে ছিল সেই হিসেবে এটার মালিক হচ্ছে পাথর। সামির তালুকদারের ধ্যান ভাঙলো উনার ম্যানেজারের কথা শুনে। লোকটা একটা ফাইল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সামির তালুকদার ভ্রু নাচিয়ে বললেন,
> এসো হে বেলাল। কি খবর, সব ঠিকঠাক তো?
সকাল সকাল মালিকের এমন ছন্দে ছন্দে বাক্যলাপ শুনে বেলাল নামের লোকটার মনে লাড্ডু ফুটলো। সাধারণত বসের মুখ খুব একটা আলোকিত থাকে না। আধার নেমে থাকে বদনে। বেলায় ওষ্ঠে হাসি এনে বলল,
> দারুণ খবর স্যার আমাদের প্রডাক্ট বেশ চলছে। উৎপাদন যা হচ্ছে এ বছরে আমরা সুলতানদের থেকে ছাপিয়ে যাবো কিন্তু পণ্য রপ্তানির সঙ্গে বাংলাদেশ যাওয়াটা জরুরী। আপনি যাবেন স্যার?
সামির তালুকদার পায়ের উপরে পা তুলে আয়েশ করে বসলেন। কলমের অপর প্রান্ত দাঁতের অগ্রভাগ দিয়ে ক্ষতচিহ্ন আঁকতে আঁকতে বললেন,
> এ বছরে সব দায়িত্ব পাথরের উপরে তাঁকে বলো রেডি হতে। মেজাজ দেখিয়ে লাভ হবে না। শর্ত না মানলে বুঝোই তো? শুনো তুমিও যাচ্ছো। ওকে নজরদারিতে রাখবে। টাইম টু টাইম আমাকে খবর পাঠাবে বুঝলে?
বেলাল দ্রুত মাথা নাড়ালো। বাংলাদেশের যেতে পারবে শুনেই বুকের মধ্যে হার্ট লাফিয়ে উঠলো। কতদিন দেশে যাওয়া হয়নি। নতুন বউ বাড়িতে ফেলে এখানে টাকার জন্য পড়ে আছে। বাবা মা ভাই বোন সবাইকে বড্ড বেশি মনে পড়ে। বেলালের ইচ্ছা হলো এখানেই শব্দ ছাড়া ডিজে গানে ডান্স করতে। কিন্তু ওর খুশী মুখটা বেশিক্ষণ থাকলো না। পাথর হন্তদন্ত হয়ে ভেতরে প্রবেশ করে সামির তালুকদারের সামনে ফাইল ছুড়ে দিয়ে বলল,
> পারবো না বাংলাদেশ যেতে। তুমি যাও নিষেধ করছি না। একদম আমাকে রাগানোর চেষ্টা করবে না। শর্তের মধ্যে এটা ছিল না।
সামির তালুকদার ছেলের ব্যবহারে খুশী হতে পারলেন না। ছেলেটা শান্ত তবে আজ এর কি হলো বুঝতে পারলেননা। ভ্রু কুটি করে বললেন,
> এটা তোমার দায়িত্বে ছিল পাথর। শর্ত অনুসারে আমি তোমাকে কোনো কাজেই সাহায্য করতে পারবো না আগেই বলেছিলাম। অভদ্রের মতো আচরণ করছো এটা তোমাকে মানাচ্ছেনা। যাও রেডি হয়ে নাও। প্রজেক্ট শেষ হতে সময় লাগবে না। বেলাল ওখানকার ছেলে ও তোমাকে সাহায্য করবে।
পাথরের রাগটা এবার আরও দ্বিগুণ হলো। যে দেশের কিছুই ওর চেনা নেই সেখানে গিয়ে ও কিভাবে কাজ করবে ভাবতে পারছে না । রাস্তাঘাট চেনা নেই সেই সঙ্গে ওদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার একটা বিষয় আছে। হুট করে সিদ্ধান্ত নিয়ে ঝামেলায় পড়তে ও নারাজ। কথাগুলো ভেবে ও দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
> আমি ওখানকার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবো না। মানছি ওখানকার লোকদের সঙ্গে আমি কাজ করেছি কিন্তু সেটা এখানে বসে। আশাকরি একটু ভেবে তবে সিদ্ধান্ত নিবে।
> মানিয়ে নিতে না পারলে কিসের পুরুষ মানুষ তুমি? সামান্য ব্যাপারে তুমি ভয় পাচ্ছো আমি অবাক হচ্ছি। এই নিয়ে তুমি ব্যবসা করবে?
সামির তালুকদারের কটাক্ষপূর্ণ বাক্য শুনে পাথরের গা জ্বলে উঠলো। অপমানে চোখ দিয়ে আগুন ছুটছে। ইচ্ছে হলো সামনে থাকা সবকিছু ভেঙে চুরমার করে দিতে কিন্তু পারলোনা। হাতের মুঠো শক্ত করে ঘনঘন নিশ্বাস নিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করে গম্ভীর কন্ঠে বলল,
> বেলাল ফ্লাইটের জন্য রেডি হয়ে নাও। আমরা বাংলাদেশ যাচ্ছি।
চলবে
ভুলত্রুটি মার্জনা করবেন।