হিংস্র_ভালোবাসা🌹 #Season_2 #Writter_Farhana_Chobi #পর্ব-৪৫

0
670

#হিংস্র_ভালোবাসা🌹
#Season_2
#Writter_Farhana_Chobi
#পর্ব-৪৫
.
🍂
.
—“” ফারহা মা আমাদের ছেড়ে দে ,,, দেখ তোর বাবার হাত পা মাথাটা কতোটা কেটে গেছে এই লোক গুলো কি রকম মেরেছে…ওকে এখুনি হসপিটালাইজ করতে হবে…ওর ট্রিটমেন্টের দরকার…”””(মোহনা)

—“”” হ্যা ট্রিটমেন্ট হবে তবে তা আমি করবো … আর তোমার স্বামীর হাত পা মাথা মেরে কে ফাটিয়েছে জানো !!!! আমি!!! হ্যা তোমার ভাইদের আর তোমার হাসবেন্টের এই কাটা ফারা চেহারা আমি বানিয়েছি ….. এখন তুমি বাকি আছো….তোমাকে দিয়ে শুরু করি …হাতে থাকা ইলেকট্রিক তার দেখিয়ে……”””

মোহনা ভয়ে এক শুকনো ঢোক গিয়ে করুন চোখে ফারহার দিকে তাকিয়ে আছে ,,,,মোহনা বুজতে পারলো ফারহা আগের পুরনো স্মৃতি ফিরে এসেছে…. তাই আর কিছু বলার সাহস পেল না…. এদিকে ফারহা হাতে ইলেকট্রিক তার নিয়ে মোহনার দিকে এগোতে নিলে মেঘ ফারহার হাত চেপে ধরে……………

—“” ওয়াট মেঘরাজ!!! আমাকে আটকালে কেন???”””(অবাক হয়ে বলল ফারহা)

—“”” প্রেয়শী আমি চাই না এই জানোয়ারদের রক্তে তোমার ওই দু-হাত রাঙা হোক … ওদের শাস্তি আমি দিবো … যে শাস্তি দেখে ওদের রুহ কেপে উঠবে….”””(মেঘ)

—“”” অলরাইট মেঘরাজ ,,, আমি আমার হাত এই জানোয়ারদের রক্তে রাঙাবো না তবে এদের শাস্তি দেখা থেকে আমাকে প্লিজ আটকাবে না… ওদের কষ্ট দেখে আমি একটু শান্তি পেতে চাই…”””(ফারহা)

মেঘ ফারহার হাত থেকে ইলেকট্রিক তার নিয়ে দুরে ছুড়ে ফেলে দিয়ে … গান টেবিলের উপর রেখে দু হাতে ছুড়ি নিয়ে ফাহিমের দু পায়ে গেথে দেয়… ফাহিম যন্ত্রণায় চিৎকার করে ওঠে…. বলে…

—“” মেঘ ছেড়ে দে আমায় দয়া কর ,,,আমি কথা দিচ্ছি ,,পুলিশের কাছে আমি সব শিকার করবো….””(ফাহিম)

—“”” অনেক দেরি করে ফেলেছিস তুই ,,,, আইনের শাস্তি পাওয়ার উর্ধে তোরা তোদের আইন শাস্তি দিবে না ,,,শাস্তি দিবে এই মেঘ চৌধুরী ….”””

—“”” মেঘ বাবা আমরা তোর আপনজন আমাদের ক্ষমা করে দে … শিকার করছি আমরা ভুল করেছি ,,,,আমাদের ক্ষমা করে দে প্রানে মারিস না….””(মোহনা)

মোহনার কথা শুনে মেঘ অট্টহাসিতে ফেটে পরলো …. হাসতে হাসতে মেঘ মোহনার গলা চেপে ধরে… দাতেঁ দাঁত চেপে বলে…..

—“””আপনজন কে তোর আপনজন আমি!!! আমি তোদের কেউ না ,,, তোদের যদি কেউ হতাম তাহলে এভাবে আমাকে তোরা এতিম করতি না আর না আমার প্রেয়শীকে এতিম করতি ,,, তোদের জন্য আমি আমার মম ড্যাডের আদর ভালোবাসা স্নেহ থেকে বন্চিত হয়েছি ,,, আর তোদের আমি ছেড়ে দিবো এতো সহজে!!! হ্যা!! …. প্রেয়শী এদের এখানে শাস্তি দিবো না এদের জন্য তো আমি স্পেশাল শাস্তি রেডি রেখেছি বহু বছর হলো ….সেখানে এদের শাস্তি দিবো….”””

—“”” গিভ মি ফাইভ মিনিট’স মেঘরাজ ,,, আমি সব কিছু ব্যাবস্তা করছি….”””(ফারহা)

– ফারহা পাঁচ মিনিটের মধ্যে ফাহাদ ফাহিম আশিকুর মোহনা কে হাত পা বেধে অজ্ঞান করে মাইক্রোতে বসিয়ে দেয়,,,,,,, মেঘের কথা মতো ওর দেওয়া এড্রেসে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ওদের…. আদঘন্টা পর … ফাহিম মোহনা আশিকুর ফাহাদ নিজেদের কে এক ভয়ঙ্কর রুমে আবিষ্কার করে ….ফাহাদ আর আশিকুর একটা লোহার খাচায় পুলের উপর ঝুলছে আর মোহনা ফাহিম চেয়ারে হাত পা বাধা অবস্তায় পরে আছে …আর সামনে খাচায় মধ্যে লকলকে জিপ নিয়ে তাকিয়ে আছে ইতু মিতু…মোহনা ফাহিম ভয়ে নরাচরা করতে যেন ভুলে গেল … এদিকে মেঘ ফারহা একরাশ ঘৃনা রাগ নিয়ে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে…. ফাহাদ আশিকুর লোহার খাচা খোলার চেষ্টা করে যাচ্ছে … ফারহা এটা দেখে ,,, মেঘের লোকদের চোখের ইশারা করতে তারা একটা সুইচ চেপে ধরতে খাচা টা ধিরে ধিরে পুলের দিকে নামতে থাকে … ফাহাদ পুলের দিকে তাকিয়ে আতকে ওঠে ,,, পুলে একটা কালো রংয়ের কুমির হা করে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে যেন ওদের নিচে নামার অপেক্ষা আছে….. ফাহার জোড়ে চিৎকার করতে থাকে …. মেঘ হাতে থাকা একটা রিমটের বাটন প্রেস করতে খাচার দরজা টা খুলে যায় …ফাহাদ খাচার দরজার কাছে থাকায় ফাহাদ পুলে পরে যেতে নেয় তখনি ব্লাকডাইমন্ড (কুমির) পানি থেকে লাফিয়ে ফাহাদের হাত কামড়ে ধরে পানিতে ফেলে দেয়…… কিছু মুহূর্তের মধ্যে পানির রং পালটে লাল রং ধারন করে…. মোহনা ফাহিম আশিকুর কারো মুখে কোন কথা নেই চোখের সামনে এভাবে একটা কুমির তাদের ভাই কে ছিড়ে খেল ,,তা দেখেও তাকে বাচাঁতে পারলো না …. মোহনা তার প্রান প্রিয় ভাই কে হারিয়ে যেন পাথর বনে গেল… আশিকুর ফাহিম এখন শক্টডে আছে চোখের সামনে এক মুহূর্তের ঘটনাটা যেন আরো আরো ভয় পাইয়ে দিলো ওদের ……

ফারহা ফাহিমের সামনে দারিয়ে স্ব জোড়ে এক থাপ্পোর মারলো ফাহিমের গালে … মেঘ এবার আর ফারহা কে আটকালো না…. মেঘ জানে ফারহা আর যাই করুক অস্র ধরা বা রক্ত হাতে লাগানো কোনটাই ফারহা করবে না… ….

—“”” কেমন লাগছে ফাহিম চৌধুরী ?? নিজের ভাইয়ের মৃত্যু চোখের সামনে দেখে কেমন ফিল করছিস..???”””(ফারহা)

ফারহার হাতে থাপ্পোর খেয়ে ফাহিম দাঁও কিড়মিড় করতে করতে বললো…

—“” আমার কোন ফিল হচ্ছে না ফারহা কারন তোরা ওকে না মারলেও আমি ওকে মেরে ফেলতাম… ও বেঁচে থাকলে সম্পত্তির তিন ভাগ হতো ….আর ও না থাকলে দুটো ভাগ হবে… তাই আমার পরিকল্পনা ছিলো ওকে শেষ করে দিয়ে সম্পত্তি ২ টা ভাগ করা ,,,কিন্তু তোরা আমার কাজ সহজ করে দিলি ওকে শেষ করে দিয়ে……”””(ফাহিম)

—“” ছিঃ ভাই ছিঃ তুই এতো নিচ আমি জানতাম না ,নিজের ভাই কে সম্পত্তির জন্য খুন করতে চাস…””(মোহনা)

—“” সমস্যা কোথায় মোহনা কারন ছয় বছর আগে তুই তোর স্বামী আমি ফাহাদ মিলে মেহবুব ভাই আর ভাবি কে খুন করতে পারলে আমি কেন তোদের খুন করতে পারবো না হুয়াই ইভেন আমার প্লান ছিলো ফাহাদের সাথে সাথে আশিকুর কেও খুন করার তারপর তোকে আর তোর ছেলে কে সময় বুজে শেষ করে দেওয়ার……”””(ফাহিম)

—“”” কিহ তুই এতো বড় ধোকাবাজ “”

—“” হ্যা ধোকা বাজ আর তাই তো আশিক যখন ফাহাদ কে মেঘের হাত থেকে উদ্ধার করার জন্য হসপিটালে গিয়ে ছিলো তখন আমি অন্য ফোন থেকে গলা নকল করে জ্যাক কে জানিয়ে দি যার ফলস্বরুপ আশিক মেঘের হাতে বন্দি হয়…..”””

ফাহিমের কথা গুলো শুনে আশিকুর আর মোহনার মাথা ঘুরতে থাকে…. তারা ভাবতে পারছে না নিজের ভাই ওদের সাথে এমন করতে পারে আর সেখানে মেহবুব ভাই ওদের সৎভাই হলেও কখন সৎ ভাই বোন মনে করতো না ,,,, বুজতে ও দিতো না তারা ওর আপন রক্তের ভাই বোন না…….

মেঘ ফারহা এতোক্ষন ওদের কথা শুনছিলো মন দিয়ে ,,, যখন ফাহিমের কথা শেষ হয় তখনি মেঘ হাতে ছুড়ি নিয়ে ফাহিমের মুখে হাতে বুকে পোচ দিতে থাকে ….. আর ফাহিম চিৎকার করছে …. ফাহিমের শার্ট মেঘ এক টানে ছিড়ে ফেলে লবন আর মরিচ ওই কাটা স্থানে লাগাতে থাকে …. ফাহিম ছটপট করে চিৎকার করতে লাগলো …. ফাহিমের চিৎকার শুনে মেঘ ফারহার ছয় বছর আগের সেই ঝড়ের রাতের কথা মনে পরে গেল……

** ফ্লাসব্যাক ছয় বছর আগে……………

মম আজ পার্টির সব এরেন্জমেন্ট আমি করবো ,,,

—“” ওকে বাট মেঘ আলিয়া যেন জানতে না পারে ওর জন্য এটা সার্রপ্রাইজ হবে…””(মেহরিমা)

—“” ইয়েস মম বাট আঙ্কেল আন্টি কিছু বলে দিবে না তো ওকে…?””(মেঘ)

—“” একদম না মেঘ ,,, ফারুক ভাই ,, আর আইরিন ভাবির সাথে কথা হয়েছে ,,,তারা কেউ আলিয়া কে কিছু জানাবে না ,,, আলিয়া স্কুল থেকে ফিরলে ওকে নিয়ে সোজা এ বাড়িতে চলে আসবে …. আর একটা কথা আলিয়া এখনো খুব ছোট ও তোর ফিলিংস টা বুজে বলে আমার মনে হয় না তবুও তোকে বলছি আজ কিন্তু কোন প্রকার বারা বারি করবি না যাতে ও তোকে আরো ভয় পায়??””(মেহরিমা)

—” ওকে মম” (মন খারাপ করে বললো মেঘ)

—“” মেঘ তোমাকে একটা কথা বলা হয়নি বিডি থেকে আজ তোমার চাচু আর ফুফি আসছে….আমি চাই তুমি ওদের এয়ারপোর্ট থেকে রিসিব করে নিয়ে আসো..”””(মেহবুব চৌধুরী)

—“” ওকে ড্যাড .. বাট তুমি ওদের কেন ইনভাইট করতে গেলে..??””(মেঘ)

—“”” কারন আমি ওদের সম্পত্তির ভাগ টা দিয়ে দিতে চাই … আমি চাই না এই সামান্য সম্পত্তির জন্য আমাদের ভাই বোনদের মধ্যে কোন প্রকার ঝামেলা হোক ,,,, “”(মেহবুব চৌধুরী)

মেঘ কোন প্রকার তর্ক ছাড়া রেডি হয়ে এয়ারপোর্টের যাওয়ার জন্যবেরিয়ে গেল……
.
.
.
—“”” না মাম্মাম আমি আর খাবো না ,,, পেট ফুলে একদম ঢোল হয়ে গেছে দেখছো না….”””(আলিয়া)

—“” শোন মেয়ের কথা একটু খেলে পেট কখনো ফুলে ঢোল হয় ??””(আইরিন খান)

—“”” হয় হয় তুমি জানো না ,,, আচ্ছা মাম্মাম আমরা আজ মেঘরাজদের বাড়ি কেন যাচ্ছি..??”””(আলিয়া)

—“”” উহু মেঘ তোমার বড় না আলিয়া মামুনি নাম ধরে ডাকতে নেই ,,,মেঘ ভাইয়া বলবে..””(আইরিন)

—“”” না না না আমি মেঘরাজ বলেই ডাকবো ,,, আমার ওই নামে ডাকতে ভালো লাগে……”””(আলিয়া)

আইরিন আলিয়ার সাথে গল্প করতে করতে পুরো খাবার টাই খাইয়ে দিলো … এরি মধ্যে আলিয়ার পাপা ফারুক খান এসে উপস্থিত হয়….আলিয়া হঠাৎ করে তার ড্যাডের হাতে শপিং ব্যাগ দেখতে পেয়ে ছুটে আসে ফারুক খানের কাছে……..

—“” পাপা তোমার হাতে ওটা কি..??”

—“”” বলবো তার আগে আমার সোনা মা টাকে আকটু আদর করে নি…””

ফারুক খান আলিয়া কে জরিয়ে ধরে কপালে চুমু দিয়ে শপিং ব্যাগ টা আলিয়ার হাতে দিলো ….আলিয়া শপিং ব্যাগ থেকে একটা ড্রেস বার করলো ,,,, ওয়াইট কালার গাউন ,,,, প্রচুর ঘের ,,সাথে গাউন টার নিচের অংশের পুরো টা জুরে ছোট ছোট ডাইমন্ড লাগানো …. আলোতে ঝলক দিচ্ছে ,,,,, চোখ ধাদানো সুন্দর গাউন টা …. আলিয়া গাউন টা পেয়ে লাফাতে লাফাতে টাইয়েল দিতে চলে যায় ,,,,,, আলিয়ার লাফানো দেখে আইরিন ফারুক দুজনে হেসে ফেলে…. আলিয়া রুমে যেতে ফারুক খান আইরিন কে পিছুন থেকে জরিয়ে ধরে…..

—“” এই করছো কি ছাড়ো আলিয়া দেখে ফেলবে তো…!!”(আইরিন)

—“” উহু আলিয়া এখন তার মাম্মাম পাপার রোমান্টিক মুহূর্তে আসবে না সে এখন তার নিউ ড্রেস টাইয়েল দিতে বিজি…””(ফারুক খান)

—“” ধ্যাত ছাড়ো না ও এসে পরবে তো…””

—“” ওকে ছাড়লাম ,, এই নেও…””

—“” এটা কি মিস্টার???”

—“” তোমার জন্য ড্রেস,, আজ ফারহার বার্থডে তে এটাই পরবে “””

—“” ফারহা না আলিয়া বলো ফারুক ,,, তোমার দেওয়া নাম স্কুল কলেজের জন্য আর আমার দেওয়া নাম টা হলো ডাক নাম .. সো এই নামে ডাকবে ওকে.. আর এটা কি ধরনের ড্রেস !!! আমি পরতে পারবো না…””

—“” কেন পরবে না !! এটা তো ওয়েসট্রান ড্রেস তোমাকে বেশ মানাবে… আর আজ তুমি এটাই পরবে দ্যাট’স ফাইনাল….”””
.
.
.
.
মেঘ দুঘন্টা যাবত এয়ারপোর্টের বাইরে দারিয়ে আছে .. কিন্তু মামা বা ফুফিদের কারো টিকিটি খুজে পাচ্ছে না…. হঠাৎ করে মেঘের কাধে কারো স্পর্শ পেয়ে মেঘ পিছুনে তাকিয়ে দেখে……………
.
.
.
.
#চলবে………….. 🍁🍁🍁
[বিঃদ্রঃ অতিত খুব একটা বড় হবে না .. দ্রুত শেষ করে দিবো … তবে হ্যা যাদের ভালো লাগবে না তারা প্লিজ ইগনোর করুন … ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here