হিংস্র_ভালোবাসা🌹 #Season_2 #Writter_Farhana_Chobi #পর্ব-৫৬ 🌿

0
654

#হিংস্র_ভালোবাসা🌹
#Season_2
#Writter_Farhana_Chobi
#পর্ব-৫৬
🌿
🌺
🌿

মোহনা কথা টা শোনা মাত্র ,,,তার মায়ের দিকে তাকিয়ে দেখে ,,,, তার মায়ের নিথর দেহ মাটিতে পরে আছে…. গলা থেকে গলগল করে রক্ত বের হচ্ছে … মোহনা যেন তার শরীলের সব যন্ত্রনা ভুলে তাকিয়ে আছে জেরিনের দিকে…. মেঘ জ্যাকের দিকে তাকাতে হুট করে মোহনা মেঘের হাত থেকে ছুড়ি টা ছো মেরে নিয়ে নেয়……………..

—“” এবার কি করবি মেঘ ?? আমি মরে যাচ্ছি কিন্তু মরার আগে তোকে শেষ করে দিয়ে আমি মরবো…””… হাসতে হাসতে মোহনা ছুড়িটা মেঘের বুকে গেথে দিতে গেলে ঠিক তখনি মেঘ মোহনার হাত ধরে ফেলে হাত উলটে দিয়ে মোহনার হাত দিয়ে মোহনার গলায় পোচ দিয়ে দেয় মেঘ……..

—“” হ্যাপি জার্নি মোহনা….””(মেঘ)

—“” কিং আপনি বাড়ি ফিরে যান আমি লাশ গুলোর ব্যাবস্তা করছি…””(জ্যাক)

—“” জ্যাক এদের কে ইতু মিতুর আর ব্লাকডাইমন্ডের পেটে দেওয়ার ব্যাবস্তা করে … দলের সবাই কে রেডি হতে বল রাতে একটা অপরেশনে বের হতে হবে..””” (মেঘ)

—“” ইয়েস কিং..””

মেঘ হাত ধুয়ে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পরে………

—“” ভাবি এখন কেমন ফিল করছো..??”( মিহু)

—“” ফিল বেটার ,,, আদিল কোথায়..?? “”

–“” তোমার ভাই মে বি এখন রেস্ট করছে….তা ভাবি ওই জানোয়ার গুলোর কি করেছো..??””(মিহু)

—“” ফাহাদ আশিকুর ফাহিম এরা শেষ এখন বাকি পরে রইল জেরিন আর তার মেয়ে মোহনা .. মেঘরাজ ওদের কি ব্যাবস্তা করলো এটা আমি এখন বলতে পারছি না….”””

—“” কিন্তু আমি বলতে পারবো প্রেয়শী …””(মেঘ)

– মেঘ রুমে ঢুকতে ঢুকতে মিহু আর ফারহার কথা গুলো শুনে মেঘ উওর দিলো….

—“” ভাইয়া তুই এসে পরেছিস ভালো হয়েছে যা ফ্রেস হয়ে আয় আমি কফি নিয়ে আসছি …””(মিহু)

—“” ইয়াহ ,, তার আগে আমার মিষ্টি বউ টাকে একটু আদর করে নি…”””

এ বলে মেঘ ফারহার দিকে এগোতে গেলে মিহু পিছুন থেকে চিৎকার করে ওঠে …. মিহুর চিৎকার শুনে মেঘ ঘাবড়ে গিয়ে পিছুনে ফিরে মিহুর দিকে করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে……

—“”” বোন এটা আমার বিয়ে করা বউ ,, আমি কি আমার বউ বিয়ে করা বউটাকে একটু আদর মানে রোমান্স করতে পারি না??? কেন এভাবে কাবাব মে হাড্ডি হচ্ছিস একা ছেড়ে দে না…””(মেঘ)

—“” শোন ভাই তোদের ভিতরে কাবাবমে হাড্ডি হওয়ার কোন ইচ্ছে নেই আমার কিন্তু তুই তো একটু সাবধানতা দেখাতে পারিস,,,,””

—“” মানে কি বলছিস আমি বুজতে পারছি না..!!””

—“” আহারে আমার গর্ধব ভাইয়া রে তুই সবে মাত্র বাইরে থেকে আসলি তোর হাতে পায়ে কতো জাম্স আছে তুই কি তা জানিস এখুনি তো ভাবিকে ছুয়ে দিচ্ছিলি ,,, যদি ভাবি বা বেবির কোন ক্ষতি হয় তখন ..??? বাবা হতে চলেছিস আর এখনো এতো ইরেসপন্সিবেল তুই হু….””

কথা গুলো বলে মিহু আর না দারিয়ে ভৌ দৌড় লাগায় কারন এখন এখানে দারিয়ে থাকলে মেঘ নির্ঘাত কান মলা দিতো এতো পাকা পাকা কথা বলার জন্য কিন্তু আর্শ্চয্য জনক মেঘ হু হা করে হাসতে লাগলো মিহুর কথা শুনে ….

—“” দেখলে প্রেয়সী তোমার ননোদিনীর কি চিন্তা তোমাকে নিয়ে … এতো দিনে মনে হচ্ছে বোনটা আমার বড় হয়ে গেছে … “””

—“” হুম বড় তো হতেই হবে ,,, মেঘরাজ ফ্রেস হয়ে আসো নয়তো তোমার বোন কফি নিয়ে এসে তোমাকে এভাবে দারিয়ে থাকতে দেখলে আরো জ্ঞান দিবে…””(ফারহা)

মেঘ ফারহা কাছে যেতে চেয়েও গেল না ,,, টাওয়াল নিয়ে সোজা ওয়াশরুমে ঢুকে গেল … …..
.
🌿
🌺
🌿
.
— “”বিয়ের শপিং করা শেষ বেবি এখন শুধু কবুল বলার অপেক্ষা …””(সামিরা)

—“” হ্যা জান আমিও তো সেই অপেক্ষায় আছি ৷ আজ আমরা বিয়ে করবো সূর্য কে সব এরেন্জমেন্ট করতে বলো….””

—“” সত্যি বেবি আজ আমরা বিয়ে করবো??””

—“” ইয়েস জানু.. আমি এখন একটা কাজে বের হচ্ছি তুমি বধু সেজে তৈরি থেকো… আজ দিলওয়ালি দুলহানিয়া লে যাইগে”” ,,,,কথা টা বলে আগুন সামিরা গালে চুমু দিয়ে বেরিয়ে গেল….. সামিরা আগুন কে বিয়ে করবে সে আনন্দে তিন্নির খবর নিতে ভুলে গেল…. সামিরা সূর্য কে বিয়ের সব এরেন্জমেন্ট করতে বলে পার্লারে চলে গেল সাজতে…. সূর্য সামিরার কথা মতো সব এরেন্জমেন্ট করে রেডি হয়ে বসে আছে আগুন আর সামিরার অপেক্ষা …….সামিরার আসতে দেরি হচ্ছে বিধায় সূর্য সামিরা কে কল করে …..সামিরা জানায় সে আর পনেরো মিনিটের মধ্যে বাড়িতে পৌছে যাবে…… সামিরা পার্লার থেকে বের হয়ে লাগাতার আগুন কে ফোন করতে থাকে .. কিন্তু আগুন সামিরার কল রিসিব করে না … সামিরার মনে মনে ভিষন ভয় হচ্ছে এটা ভেবে আগুন আবার পালিয়ে গেল না তো …?? এঙ্গেজমেন্টের দিনের মতো…??? ভাবতেই রাগে সারা শরীর জ্বলতে লাগলো …. সামিরা দ্রুত ড্রাইব করে বাড়িতে ফিরে দেখে সব এরেন্জমেন্ট ঠিক ঠাক কাজী সাহেব আছে বউ আছে কিন্ত বর নেই…. সামিরা সূর্য কে বলে আগুন কে খুজে আনতে কারন যে করে হোক আজ বিয়ে হবে আর তা আগুনের সাথে… নয় তো আজ সব কিছু ধংস করে ফেলবে সামিরা…….

-দুঘন্টা ধরে সামিরা বসে আছে বউ সেজে আগুনের জন্য কিন্তু আগুনের কোন খোজ নেই সূর্য তার নেটওয়ার্ক কাজে লাগিয়ে আগুন কে খুজে পাই নি … সামিরা আগুন কে না পেয়ে তিন্নির খোজ করে কিন্তু তিন্নি কেও সামিরার লোকজন খুজে পেল না … সামিরা রাগে নিজে নিজে ফোস ফোস করতে লাগলো….. হঠাৎ করে সামিরার বাড়ির গার্ড এসে বলে…..

—“” বস স্যার আসছে স্যার আসছে…””

কথাটা শোনা মাত্র সামিরার পুরো মুখে আলোর ঝিলিক দিয়ে উঠলো… সূর্য কে তারা দিলো আগুন কে পুরো রাজকীয় ভাবে আগুন কে ভিতরে আনতে কিন্তু তার আগেই আগুন ভিতরে ঢুকে পরে…… আগুন কে দেখে সামিরা যেন আরো একধফা ক্রাশ খেলো…. গোল্ডেন কালার পান্জাবি লাল খইড়ি রংয়ের জড়ি সুতো দিয়ে কাজ করা মাথায় পাগড়ি গলায় লাল ওড়না এক সাইডে পেচানো পায়ে নাগরা জুতো উফফ আগুন কে যেন কোন রাজ্যের রাজা মনে হচ্ছে … সামিরা সব রাগ ভুলে বলে…

—“” ওহ মাই লাভ , তুমি এতো দেরি করে কেন এসেছো বলো তো আমি তোমার জন্য সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছি …”””(সামিরা)

আগুন সামিরার কথায় কোন উওর না দিতে দেখে ..সামিরা দুপা এগিয়ে যায় আগুনের দিকে তখনি আগুনের পিছুন থেকে বধু বেশে এক অতি সুন্দরী নারী বেরিয়ে আসে যাকে দেখে সামিরার পায়ের নিচ থেকে যেন মাটি সরে গেল.. … সামিরা চার কদম পা পিছিয়ে গেল…. সামিরার মুখটা দেখে আগুনের এখন বেশ আনন্দ হচ্ছে ,,, ও যা চেয়েছিল ঠিক তাই তাই হচ্ছে সামিরার মুখ দেখেই আগুন বুজতে পারলো……..

🍂
🌺
🍂

—“”” মেঘরাজ আজ আমি তোমাকে সব টা বলতে চাই ,,, আমাকে কে কিডন্যাপ করেছিলো..!! তারপর ওতো গুলো দিন আমি কোথায় ছিলাম সবটা….””(ফারহা)

মেঘ কিছু বলছে না শুধু ফারহা কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখলো….মেঘের মুখে কোন রিয়েকশন না দেখে মিহু ফারহার মুখের দিকে তাকিয়ে রইল…. ফারহা মিহু কে ইশারা করলো বাকি টা বলতে তখন মিহু কফির মগ টা টেবিলের উপর রেখে মেঘের উদ্দ্যশ্যে বলে উঠলো ………

—“” ভাইয়া ভাবি কে হসপিটাল থেকে ফাইবস্টার গ্যাংয়ের বস SK তুলে নিয়ে গিয়েছিলো….”””

মিহুর মুখে ফাইভস্টার গ্যাংয়ের কথা শুনে মিহুর দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে পরে…..

—“” তুই কি করে জানলি প্রেয়শী কে ফাইবস্টার গ্যাং তুলে নিয়ে গিয়েছিলো…???””

মেঘের কথার প্রতি উওরে মিহু শুকনো ঢোগ গিলে মেঘ কে বলে….

—“”” কারন তখন আমি এদেশে ছিলাম ৷ আসলে আমি এসেছিলাম তোমার সাথে দেখা করতে কিন্তু এয়ারপোর্ট থেকে যখন আমি গাড়ি নিয়ে আসছিলাম তখন আমার গাড়ির পাশ দিয়ে আর একটা গাড়ি চলছিল ,,, কেন যেন না চাইতেই ওই গাড়ির দিকে বার বার নজর যাচ্ছিলো আমার তখনি খেয়াল করি একটি মেয়ে গাড়ির কাচ ভাঙ্গার ট্রায় করছে …তখনি আর পাশে বসা একটা মেয়ে ওই মেয়েটার মুখে রুমাল চেপে ধরে তখনি মেয়ে টি সেন্সলেস হয়ে যায়… আমি তখন ওই গাড়ি টা ফলো করতে থাকি .. কিছুক্ষণ পর গাড়িটা একটা বড় খোলা মাঠে নিয়ে গিয়ে থামায়….
আমি একটু দুরে আড়ালে গিয়ে লুকিয়ে ওদের সব টা দেখতে থাকি … তখনি গাড়ি থেকে কিছু লোক সেন্সলেস থাকা মেয়েটিকে মাঠের মধ্যে খানে ফেলে শুট করে দেয় ৷ আর ওখানে মেয়েটিকে ফেলে চলে যায়…. ওরা চলে যেতেই আমি মেয়েটার পালস চেক করে জানতে পারি মেয়েটি এখনো বেচে আছে …. আমি মেয়েটিকে নিয়ে বাড়িতে না এসে ওই এলাকার একটা ছোট্ট ক্লিনিকে নিয়ে যাই … ওখানে মেয়েটির ট্রিটমেন্ট করায় …. দুদিন পর মেয়েটির জ্ঞান ফিরলে জানতে পারি … মেয়েটির আসল পরিচয়…. যে সে আর কেউ নয় আমার ভাইয়ার প্রেয়শী …. আর তারপর থেকে….. বাকি টা বলতে না দিয়ে ফারহা বললো …. আর তারপর থেকে আমি মিহুর কাছে ছিলাম .. একটু সুস্থ হতেই আমি লন্ডন চলে যাই মিহুর সাহায্যে সেখানে আমার পাপার লইয়ার মিসেস লুসিফারের কাছে গিয়ে সব প্রপার্টি পেপারস নিয়ে নিই সাথে কিছু অংশ বিক্রি করে দিয়ে দেশে ফিরে আসি তারপর থেকে একটু একটু করে নিজেকে তৈরি করেছি মেঘরাজ শুধু মাত্র মাম্মা পাপার আর আঙ্কেল আন্টির খুনের বদলা নিতে তার পর একে একে মোহনা ফাহাদ ফাহিম আর আশিকুর কে যে তোমার কাছে বন্দি ছিল সবাই কে নিজের কব্জায় নিয়ে নি…… আর একটা কথা মেঘরাজ আমার কিন্তু সে দিন সব স্মৃতি মনে পরে গিয়েছিলো….. যেদিন প্রথম ফাইভস্টার গ্যাং আমার উপর এট্যাক …….আমাকে আহত করে ….

—“”” আর আগুনের বিষয়টা নিয়ে তুমি কি বলবে প্রেয়শী..???”””( শান্ত গলায় প্রশ্ন করলো মেঘ)

—” আগুন আমার কাছে এসে নিজের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়েছে মেঘরাজ ৷ আর কেউ যখন তার কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চায় তখন আমাদের উচিত তাকে ক্ষমা করে দেওয়া তবে তাদের নয় যারা জেনে শুনে ইচ্ছে করে একি ভুল করে… লোভ লাগসা নিজের মধ্যে লালন করতে থাকে …. কিন্তু এখানে আগুন মন থেকে ক্ষমা চেয়েছে আমার কাছে মেঘরাজ…”””

—“”” আর তাই তুমি ওকে সাথে নিয়ে আমেরিকা গিয়ে ছিলে জেরিন কে ধরতে…??””

ফারহা মাথা নেরে সম্মতি জানায়… ফারহার অকপটে সব টা সত্যি বলায় মেঘ আর রাগ করে থাকতে পারলো না কিন্তু ফাইবস্টার গ্যাংয়ের বস SK ওকে মেঘ শেষ করে দিবে বলে মনে মনে প্রমিস করলো…..

মিহু ফারহার কথা শেষ হতেই রুম থেকে বেরিয়ে গেল ,,, কারন তার ভাই ভাবি কে একান্তে টাইম স্পেন করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য…..
.
🌿
🌺
🌿

—“”” তি,,,তিন্নি তুই !!! তুই বিয়ের সাজে কেন?? আর আগুনের সাথে তুই কেন.???”””( রাগে কটমট করতে করতে বললো সামিরা)

—“” আর্শ্চয্য হাসবেন্টের সাথে ওয়াইফ থাকবে নাতো কি তুই থাকবি সামিরা..???””(তিন্নি)

—“” তিন্নি ভালো হচ্ছে না কিন্তু সত্যি করে বল তুই বিয়ের সাজে আগুনের সাথে কেন..??””

—“” উফফফ সামিরা বেবি তুমি এমন অবুজ বাচ্চার মতো কথা বলছো কেন ?? ওকে রিলাক্স আমি বলছি… আমি তিন্নিকে বিয়ে করেছি নাও সি ইজ মিসেস খান ,,, আর খান বাড়ির বউ……””

—“” ওয়াট !!! না না তুমি নিশ্চয় আমার সাথে মজা করছো তাই না বেবি ?? দেখো অনেক মজা করেছো এখন চলো আমরা বিয়ে করবো … আর তিন্নি তো তোমার স
শালী ওর সাথে তুমি এমন মজা করতে পারো আই ডোন্ট মাইন্ড…”””

—-“”” হা হা হা সামু তোর মাথাটা মনে হয় একে বাড়ে গেছে ..!! আমি আগুনের বউ লিগাল বউ আর তুই হচ্ছিস ওর শালী আমি নয় ,,, এখন এই সব তামাসা রেখে বউ সাজ টা খুলে ফেল কারন আজ তোর বিয়ে হচ্ছে না ……””(তিন্নি)

তিন্নির কথা শুনে সামিরার মাথায় যেন আগুন ধরে গেল ,,,সূর্যের কাছে গিয়ে সূর্যের কোমর থেকে গান টা নিয়ে আগুনের দিকে তাক করে বলে……..
.
🌿
😥
🍁
#চলবে………………………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here