হিংস্র_ভালোবাসা🌹 #Season_2 #Writter_Farhana_Chobi #পর্ব-১৩

0
830

#হিংস্র_ভালোবাসা🌹
#Season_2
#Writter_Farhana_Chobi
#পর্ব-১৩
.
.
🍁
মেঘ হাসি থামিয়ে পাশ থেকে একটা লাল গোলাপের তোরা নিয়ে ফারহার সামনে হাটু গেরে মেঘ বসে পরে মেঘ বলে উঠলো ” প্রেয়শী আমার মনের সাধ মিটিয়ে ভালোবাসতে চাই তোমায়৷ খুব কাছে থেকে তোমায় দেখবো বলে কতো পূর্নিমা অমাবস্যা পার করে দিয়ে নির্ঘুম কাটিয়েছি কতো অস্তির দিন রাত ৷ কতোদিন আমি মনে মনে ভেবেছি তোমায় কতো কথা বলেছি অবিরাম ৷ কতো দিন আমার ভাবনায় আমার স্বপ্ন গুলি ছুয়ে দিয়েছে তোমায় ৷ তোমার দিকে অপলক তাকিয়ে থেকেছি আমি দেখেছি তোমার দুই চোখ জুড়ে কোনও এক স্বপ্নের গাঢ় ছায়া ৷ আমি সেই স্বপ্নময় চোখের দিকে বিভোর হয়ে তাকিয়ে থেকেছি কতো ৷ ভালোবাসতে চাই আমি তোমায় , আমার সব টা জুড়ে ভালোবাসতে চাই ৷ ছুয়ে দিতে চাই তোমায় আমার ভালোবাসার স্পর্শে ৷ হবে কি আমার হৃদস্পন্দন যেখানে তোমার অজান্তে তোমার বসবাস………..

— ” ওয়েট ওয়েট আপনি কি আমাকে প্রপোজ করছেন নাকি ভালোবাসার রচনা শুনাচ্ছেন ..!!!(কনফিউজড হয়ে জানতে চাইলো ফারহা)

–” এই মেয়েটা কি আমার মনের ফিলিংস টা বুজতে পারছে না নাকি বুজতে চায়ছে না দিলো তো মুডের তেরোটা বাজিয়ে ..”

মেঘ রাগের ভঙ্গিতে উঠে দারিয়ে ফারহার কোমর ধরে একটানে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয় ফারহা মেঘের এমন আচরন দেখে হা হয়ে যায় তখনি মেঘ টুপ করে ফারহার গালে চুমু দিলো ৷ ফারহা যেনো ওখানে ফ্রিজড হয়ে দারিয়ে রইল নরাচরা করার কোন শক্তি যেনো অবশিষ্ট নেই ফারহার মাঝে……..

—” প্রেয়শী শুধু মাত্র একটা কিসি তে এই অবস্তা বাসর রাতে তাহলে কি করবে ..??”(মেঘ)

— ” এই লোকটা পাগল নাকি অন্য কিছু কি বলছে এইসব প্রেয়শী ভালোবাসা বাসর ছিঃ লোকটার মুখে কি কিছুই আটকায় না ৷ আর আমি এই লোকটার উপর ক্রাশ খেয়ে বসে আছি ভাবা যায় এগুলা..!!! না না না এই লোকটার থেকে আমাকে দুরে দুরে থাকতে হবে নয় তো যখন তখন আমাকে এর বাচ্চার মা বানিয়ে দিতে পারে…”

— ” হ্যা পারি তো যখন তখন পারি যদি তুমি চাও (চোখ মেরে)”(মেঘ)

—” এ্যা আ,,আপনি শুনলেন কি করে আমার মনের কথা..??”

—” তুমি এতো জোড়ে জোড়ে মনে মনে বলছো যে আমি শুনতে পাচ্ছি ..”

— ” আমি সত্যি এবার পাগল হয়ে যাবো এই লোকটার কথা শুনে..??”( মনে মনে)

—” ভূল বললে প্রেয়শী ওটা পাগল হবে না পাগলি হবে …”

কথাটা বলে মেঘ এক ভূবন কাঁপানো হাসি দিয়ে উঠল ফারহা মেঘের হাসির দিকে তাকিয়ে আর একদফা ক্রাশ ৷ ফারহার তাকানো দেখে মেঘ বলে উঠলো ,,” উফফ প্রেয়শী এভাবে তাকিয়ে ও না এখানে লাগে (বুকের বা পাশ দেখিয়ে) নিজে কে কন্ট্রোল করতে বড্ডো কষ্ট হয় ….”

ওহ মাই খাট লোক বলে কি ..?? আর এভাবে কিছুক্ষণ জড়িয়ে রাখলে আমি এবার শ্বাস আটকে মরে যাবো ..

ফারহা মেঘ কে ধাক্কা দিয়ে সরাতে যেয়ে ও পারে না ৷ তা দেখে মেঘ মুচকি হেসে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ফারহা কে ৷ফারহা এবার বেশ ক্ষেপে যায় মেঘের উপর আর ফারহা ক্ষেপে গেলে কি বলে তা ফারহা নিজেও জানে না……

—” ওই মিয়া ছাড় আমাকে তোর সাহস তো কম না আমাকে এভাবে জড়িয়ে ধরে আছিস জানিস আমি তোকে কি করতে পারি হু পচাঁ ঢেরষ , কুমিরের ডিম,, হাতির শুর,,, শিয়ালের নাক,, গন্ডারের মাথা,,হলুদ তিমি,, ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চা,,, ডেঙ্গু মশার বয়ফ্রেন্ড ,,, পাগলির বর,,, তোর উপর টাটকা ঠাডা পরবো হু

একদমে বলে উঠলো ফারহা ৷আর ফারহার বকা গুলো শুনে মেঘ কিছুক্ষনের জন্য হ্যাং হয়ে গেলো ….

—” কি ছিল এই সব কি বললে প্রেয়শী তুমি .???”

মেঘ এবার হাসিতে ফেটে পরলো ৷ ফারহা মেঘের এই হাসি দেখে ক্রাশ না খেয়ে এবার বেশ বিরক্ত হচ্ছে কনুই দিয়ে মেঘের পেটে গুতো দিতে মেঘ ফারহা কে ছেড়ে দিতে ফারহা দুরে সরে দারায়…..

— ” ওয়াও এ না হলে আমার প্রেয়সী ৷ ঠিক বুঝে গেছো নিজেকে কি করে ছাড়িয়ে নিতে হয়..!!”(হাসি মুখে)

— লিসেন মিস্টার আমি আপনার কোন কথাই বুজতে পারছি না ৷ প্লিজ আমাকে আর আজকের পর থেকে ডিসট্রাব করবেন না ৷ আর একটা কথা আপনার এই যে মুখপোড়া হনুমান (আসলাম) আপনাকে যদি আমি আর আমার কলেজের সামনে দেখি তাহলে আমার বন্ধুদের দিয়ে আপনার মাথায় হালচাষ করাবো যাষ্ট মাইন্ড ইট …আর আপনি (মেঘ) আপনার ওই তার ছেড়া কথা গুলো আমাকে আর দ্বিতীয় বার শুনাতে আসবেন না তাহলে কিন্তু আপনার অবস্তা ওই চিপকুর মতো করে দিবো ….

ফারহা কথা শেষ করে চলে যেতে নিলে খেয়াল করে ফারহা একচুল ও নরতে পারছে না ৷

— “””এ্যা এ্যা কি হলো আমি নরতে পারছি না কেনো ..??”

—” কারন আমি তোমাকে ধরে রেখেছি..”( টেডি স্মাইল )

–পিছুনে ঘুরে দেখি লোকটা আমার ওড়না টা নিজের হাতের সাথে পেচিয়ে রেখেছে আর তাই আমি নরতে পারছি না…” কি করছেন কি ছাড়ুন আমার ওড়না টা আমি বাড়ি যাবো…”(কাদো কাদো মুখ করে)

— ” যাবে তো প্রেয়শী তার আগে আমার কিছু ইন্সট্যাকশন শুনে নেও ..”

মেঘের মুখে ইন্সট্যাকশনের কথা শুনে ফারহা কপাল কুচকে তাকিয়ে বললো..”” ইন্সট্যাকশন কিসের ইন্সট্যাকশন শুনবো আমি হ্যা আমি কোন কথাই শুনতে চাই না ৷ আল্লাহ সেদিন যদি আপনাকে আহত অবস্তায় হাসপাতালে না নিতাম তাহলে আজ এই ঝামেলায় পরতে হতো না ৷ মনে হচ্ছে বড় একটা ভূল করেছি আমি ৷”
রাগের মাথায় বলে ফেললো ফারহা কিন্তু মেঘ তার প্রেয়শীর কথায় রাগ না করে উঠলো বাকা হাসলো মেঘ…

—” ভূল যখন করেছো তার মাশুল তো তোমাকে দিতে হবে না প্রেয়শী ৷ এনিওয়েস ইন্সট্যাকশন গুলো শুনে নেও … কাল থেকে তোমায় কলেজে আমি ছেড়ে আসবো আবার আমি নিতে যাবো অন্য কারোর গাড়িতে তোমার যাওয়া চলবে না ৷ কোন ছেলে ফ্রেন্ড থাকবে না আর যদি থেকে ও থাকে এই মূহর্ত থেকে তাদের সাথে তোমার সব বন্ধুত্ব শেষ হলো৷ কোন ছেলের সাথে কথা বলতে পারবে না ৷ কলেজে সব সময় বোরকা হিজাব পরে যেতে হবে ৷ যখন তখন হুট হাট করে বাড়ি থেকে বের হবে না ৷ কোথাও যেতে হলে আমার পার্মিশন নিবে ৷ যখন আমি কল করবো তখনি কল রিসিব করবে যদি কল না ধরো তো তার শাস্তি স্বরুপ এক হাজার কিস দিবো তোমাকে ৷ বুজতে পেরেছো ..”

মেঘ ফারহার দিকে তাকাতে দেখে ফারহা কোমরে হাত দিয়ে রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ওর দিকে ….

— ” ওই মিয়া তুই কি আমার জামাই লাগো নাকি ভাই নাকি গার্ডিয়ান কোন টা ..?? কোনটাই না তাহলে আমি কেনো তোর কথা শুনবো হ্যা আমাকে কি দেখে পাগল মনে হয় হ্যা যে যা বলবে আমি তাই করবো ..?? করবো না যা বলেছিস তার উলটো টা করবো আমি দেখিস …”

ফারহা কথা বলার সময় মেঘ কে খেয়াল করলে বুজতে পারতো মেঘ কতো টা রেগে আছে কিন্তু ফারহা তা খেয়াল না করে যেতে নিলে মেঘ ফারহা কে কোলে নিয়ে বাগানের সুন্দর একটা দোলনায় বসিয়ে দিলো ৷ ফারহা মুখ তুলে কিছু বলতে যাবে কিন্তু মেঘের অগ্নিরুপ দেখে আর কিছু বলতে পারলো না ৷

— ” বস ছেলেটাকে এনেছি..”(এরিক)
— ” কোথায় ছেলেটি..??”(মেঘ)

এরিক হাতের ইশারায় করতে ফারহা ও সেদিকে তাকিয়ে আতকে ওঠে কারন যে ছেলেটিকে লোকটা ধরে এনেছে সেই ছেলেটি আজ কলেজে সবার সামনে ওর হাত টেনে ধরে তার বিনিময়ে ফারহা ছেলেটাকে কলেজে সবার সামনে ক্যালানি দিয়ে ছেড়ে দেয় ৷ কিন্তু এই ছেলে টা এখানে কেনো….??

— ” প্রেয়শী এই ছেলেটা তো তোমার হাত ধরেছিলো তাই না ওয়েট …”

মেঘ হাত বাড়াতে এরিক এক বড় এক ধারালো চাপাতি মেঘের হাতে দিলো ৷ মেঘ ছুড়িটা নিয়ে ছেলেটার দিকে এগুতে ছেলেটা চিৎকার করে আকুতি মিনতি করে ক্ষমা চাইতে থাকে৷ মেঘ ছেলেটার আকুতি না শুনে এক কোপে ছেলেটির ডান হাত কেটে ফেলে সাথে সাথে ছেলে টি নিচে গড়িয়ে ছটপট করতে তাকে ফারহা সহ্য করতে না পেরে ছুটে যায় মেঘ কে আটকাতে …..

— ” প্লিজ ছেলেটাকে ছেড়ে দিন ওকে যা শাস্তি দেওয়ার আমি দিয়েছি আপনি ওর আর কোন ক্ষতি করবেন না …”

মেঘের কেনো যে আরো রাগ হলো হয়তো ছেলেটার হয়ে ফারহা কথা বলায় ৷ মেঘ রাগে ছেলের টার অন্য হাত টাও কেটে ফেললো ফারহা আর সহ্য করতে না পেরে ওখানে জ্ঞান হারায় ………..
*
*
*
*
— ” ড্যাড আমরা কোথায় যাচ্ছি ..?? আর আমার কি হয়েছে মাথায় এতো পেইন হচ্ছে কেনো ..??”(আগুন)

—” মাই সান তোমার একটা এক্সিডেন্ট হয়েছিলো আর তার তাই তোমার বেটার ট্রিটমেণ্টের জন্য তোমাকে নিয়ে বিদেশে যাচ্ছি……” Sorry মাই স্যান তোমাকে মিথ্যে বলে নিয়ে যাওয়ার জন্য এখানে যে তোমার লাইফ রিক্সে আছে ৷ আর আমি তোমার বাবা হয়ে তোমার বিপদ হতে দিতে পারি না..(আরিয়ান খান)

–” ড্যাড তাহলে ফারহার বাড়িতে যাওয়া হবে না তোমার..?”

— ” মাই স্যান তুমি আগে সুস্থ হয়ে ওঠো তারপর আমরা এই সব নিয়ে ভাববো ৷ ”

আগুন আরিয়ান খানের কথা গুলো সত্যি ভেবে নিশ্চিন্তে আবার চোখ বন্ধ করে ফেললো ৷
*
*
*
— ” আদিল তোর বাবা কে সেই তখন থেকে ফোন করে যাচ্ছি কিন্তু তোর বাবা ফোন টাই রিসিব করছে না ৷ মানুষটার কোন বিপদ হলো না তো..???”(মিসেস মোহনা)

— ” মামুনি তুমি অযথাই টেনশন করছো ৷ তুমি ভালো করেই জানো আব্বু কে আর কি কি করতে পারে ৷ তাহলে এতো টেনশন নিচ্ছো কেন..??”(আদিল)

আদিলের কথা শুনে মিসেস মোহনা কিছুক্ষনের জন্য যেনো স্তব্ধ হয়ে গেলো ৷

–” আ,,,আদিল কি কিছু আন্দাজ করেছে ..?? আর তা থেকে এই কথাটা বললো..??? নাকি সবটা জেনে গেছে ও আশিক আর ফারহার লুকানো সব সত্যি টা ..??”

মিসেস মোহনা আর ভাবতে পারছে না ৷ তিনি মাথায় হাত দিয়ে সোফায় বসে পরলেন ৷ তখন আদিল ধিরে ধিরে মিসেস মোহনার মাথার কাছে এসে দারিয়ে মিসেস মোহনার কানের কাছে এসে বলে….” হ্যা মামুনি তুমি ঠিক ধরেছো তোমাদের প্রত্যেকের মুখোশের আড়ালের হিংস্র চেহারাটা আমি দেখে ফেলেছি ৷ কিন্তু ভয় নেই আপু কে তোমাদের সত্যিটা জানাবো না বেচারি হয়তো সহ্য করতে পারবে না এটা ভেবে যাদের ও মা বাবা ভেবে আসছে এতো বছর ধরে তারা আদোও ওর কেউ আপনজন না ইভেন আমি ও না…..”

আদিল আর একমুহূর্ত না দারিয়ে দ্রুত নিজের রুমে চলে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো ৷ এদিকে মোহনা ভয়ে ফোন হাতে নিয়ে লাগাতার আশিকুর কে কল করে যাচ্ছে কিন্তু আগে রিং হলেও এখন বন্ধ বলছে ৷ এটা শুনে মোহনার ভয় চিন্তা যেন আরো পেয়ে বসলো ……..
*
*
*
*
চোখ বন্ধ থাকায় ফারহা অনুভব করছে কেউ একজন ওর দিকে গভীর ভাবে চেয়ে আছে তার প্রত্যেকটা শ্বাস ওর মুখে উপচে পরছে ৷ ফারহা ধিরে ধিরে চোখ মেলে চেয়ে দেখে মেঘ ওর দিকে তাকিয়ে আছে ৷ ফারহা মেঘ কে দেখার পরই ছেলেটাকে মারা দৃশ্য ফারহার চোখের সামনে ভেশে উঠতেই থর থর করে কাপঁতে লাগল মেঘ ফারহা কে কাপঁতে দেখে ওকে ধরতে এলে ফারহা চোখ বন্ধ করে জোড়ে চিৎকার করে উঠলো ……………
^
/
\
/
#চলবে……………..🍁🍁🍁

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here