#হিংস্র_ভালোবাসা🌹
#Season_2
#Writter_Farhana_Chobi
#পর্ব-১৪
.
.
🍁
চোখ বন্ধ থাকায় ফারহা অনুভব করছে কেউ একজন ওর দিকে গভীর ভাবে চেয়ে আছে তার প্রত্যেকটা শ্বাস ওর মুখে উপচে পরছে ৷ ফারহা ধিরে ধিরে চোখ মেলে চেয়ে দেখে মেঘ ওর দিকে তাকিয়ে আছে ৷ ফারহা মেঘ কে দেখার পরই ছেলেটাকে মারা দৃশ্য ফারহার চোখের সামনে ভেশে উঠতেই থর থর করে কাপঁতে লাগল মেঘ ফারহা কে কাপঁতে দেখে ওকে ধরতে এলে ফারহা চোখ বন্ধ করে জোড়ে চিৎকার করে উঠলো ৷ ……………
— ” আয়য়য়য়য়য়য়য়য়য়া …(জোড়ে চিৎকার দিয়ে)
—” হুসসস কি হয়েছে প্রেয়শী এভাবে চিৎকার করছো কেনো..??”(ফারহার গালে হাত দিয়ে)
—” এ্যা এ্যা এ্যা আমাকে মারবেন না প্লিজ তাহলে আমার ফিউচার গুলু মুলু সোনারা এতিম হয়ে যাবে…(কথাটা বলে ফারহা আবার কাদতে লাগলো)
—” মাই গড ফিউচার গুলু মুলু সোনারা এতিম হয়ে যাবে মানে কি..?? এই গুলু মুলু কারা..??(মেঘ)
মেঘ ফারহার কথা বুজতে না পেরে ফারহা কে তুলে নিজের সাথে চেপে ধরে সাথে সাথে ফারহার কান্না বন্ধ হয়ে যায়….
— ” তো প্রেয়শী কি যেনো বলছিলে গুলু মুলু এতিম ঠিক করে বুঝিয়ে বলো তো..?”
ফারহা মেঘের কথা শুনে আবার ভ্যা ভ্যা করে কান্না জুরে দিলো তা দেখে মেঘ অবাক কারন ও ফারহা কে এমন কিছু জ্বিগাসা করেনি যেটা বলতে ও ভয় পাবে ৷ মেঘ এবার একটু রেগে ফারহার গলায় মুখ গুজে বলে….
— ” প্রেয়শী আর একবার ও যদি তোমাকে আমি কাদতে দেখি তাহলে এবার তোমার পালা….”(মেঘ)
প্রথমত মেঘ যেভাবে ফারহা কে আকড়ে ধরে গলায় মুখ গুজে আছে তাতে ফারহা ফ্রিজড তার উপর মেঘের থ্রেট মার্কা কথা আর কি চাই ফারহা এক লাফ দিয়ে বিছানা থেকে উঠে বাইরে দৌড় দেয়৷মেঘ তার প্রেয়শীর এমন বাচ্চামি দেখে হেসে দেয়৷
—” পাগলি একটা”
—” উফফ আর কতো দৌড়াবো ৷এটা বাড়ি না রাজপ্রাসাদ কোনটা ? আমিতো বের হবার রাস্তা খুজে পাচ্ছি না ৷ না ফারহা হাল ছাড়লে চলবে না তুই ফারহা ভুলে যাচ্ছিস কেনো ! তোকে এই গুহা থুক্কু রাজপ্রাসাদ থেকে বার হতেই হবে ৷”
ফারহা নিজের মনে বক বক করতে করতে এদিক ওদিক ছুটে চলছে বাইরে যাওয়ার জন্য কিন্তু ফারহা কোন ভাবেই মেঘে এতো বড় রাজপ্রাসাদের মতো বাড়িটা থেকে বের হতে পারলো না ক্লান্ত হয়ে বসে নেকা কান্না শুরু করলো…
— ” এ্যা এ্যা এ্যা এখন কি হবে আমার ওই রাজুর মতো আমার ও হাত কেটে নিবে রাক্ষস টা এ্যা এ্যা আমার গুলু মুলুর কি হবে ওরা তো আর মা পাবে না আরেহ শুধু ওদের কথা বলছি কেনো আমার ইয়ে মানে বর টা ও তো অন্য কোন শাকচুন্নির গলায় ঝুলে পরবে ৷ তাহলে আমার কি হবে এ্যা এ্যা এ্যা ..”
মেঘ এতোক্ষন ফারহার পিছুনে দারিয়ে ফারহা বলা কথা গুলো শুনছিলো কিন্তু লাস্ট কথা গুলো শুনে আর হাসি আটকে রাখতে পারলো না পুরো শরীল কাপিয়ে হাসতে লাগলো ৷ মেঘের হাসির শব্দ পেয়ে ফারহার কান্না বন্ধ হয়ে যায় এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখে মেঘ কে কিন্তু কোথায় না পেয়ে ভয়ে জড়সড় হয়ে বসে….
—” এমা এখানে তো কেউ নেই তাহলে হাসছে কে ..?? তারমানে কি এই রাক্ষসের সাথে ভুত পেতনি ও থাকে ৷ ”
ভাবতেই ফারহার পুরো শরীলে কাটা দিয়ে গেলো ৷ ফারহার পুরো গলা শুকিয়ে এলো ৷ মেঘ তখনি একগ্লাস পানি নিয়ে ফারহার সামনে ধরতে ফারহা পানির গ্লাস টা নিয়ে ঢকঢক করে পুরো পানি টা খেয়ে গ্লাস টা বারিয়ে দিতে দেখে মেঘ ৷ ফারহা কে আর পায় কে ভয়ের চটে দিলো বার এক চিৎকার কিন্তু মেঘ এবার ফারহা কে ধমক না দিয়ে সোজা ফারহার ঠোট জোড়ায় আক্রমন করে বসে ৷
— এরিক আমি যা দেখছি তুই ও কি তাই দেখছিস..??(আসলাম)
—” ইয়াহহ বস হাসছে আবার কিস ও আর বলতে পারলো না তার আগে আসলাম এরিকের মুখ চেপে ধরলো ”
— হুসসস চিৎকার করে বলছিস কেনো ধিরে বল ৷ নয় তো বস শুনে ফেলবে…(আসলাম)
— আসলাম আমাদের কি ঠিক হচ্ছে এখানে দারিয়ে বসের রোমান্স দেখা ..?? না মানে বস যদি কোন ভাবে জানতে পারে আমরা এভাবে দারিয়ে ওনার আর ম্যামের রোমান্স দেখছি তাহলে কি শাস্তি দিবে আমাদের এটা ভেবে ভয় লাগছে….(এরিক)
এরিকের কথায় এবার সত্যি আসলামের ভয় হতে লাগলো তাই এরিক কে নিয়ে ওখান থেকে সরে আসলো হাতে প্রান নিয়ে…….
পাচঁ মিনিট পর মেঘ ফারহার নরম ঠোট জোড়া ছেড়ে দিলো ৷ মেঘ ছেড়ে দিতেই ফারহা হাপাতে লাগলো ৷ মেঘ ফারহা কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ফারহা কে কোলে তুলে নিয়ে হাটতে লাগলো….
— ” এই রাক্ষস আমাকে কেনো কোলে তুললি নামা বলছি নামা তোর একদিন কি আমার দু দিন তোর এতো বড় সাহস তুই আমার ঠোট,,,,,,,বলতে যেয়ে ও আর বলতে পারলো না লজ্জায় মেঘ ফারহার তুই তুকারি শুনে বুজতে পারলো ফারহা রেগে আছে কিন্তু যখন ঠোটের কথা বলে উঠলো তখনি মেঘ ফারহার দিকে তাকিয়ে বাকা হেসে বলে উঠলো ….”থেমে গেলে কেন প্রেয়শী কথাটা কম্পিলিট করো তোমার ঠোট না জানি কি বলছিলে ..?? বলো বলো ??(দুষ্টুমি হাসি দিয়ে)
ফারহা বুজতে পারলো মেঘ ওকে লজ্জা দেওয়ার জন্য কথাটা বলছে ৷ ফারহা এবার রেগে তেতে উঠলো ….
—” দেখুন মিস্টার চৌধুরী আমি কোন খেলার পুতুল না যে আমাকে নিয়ে আপনি খেলবেন ৷ দেখুন আপনি একজন বড় ব্যাবসায়ি ইভেন পুরো বি ডির টপ বিজনেসম্যান শুনেছি শুধু বি ডি তে নয় অন্যান্য দেশে আপনি রাজ করেন তাহলে এই মিডেলক্লাস মেয়েটার পিছুনে কেনো লেগে আছেন ?? দেখুন আমি আপনার যোগ্য না আর না আপনি আমার যোগ্য ৷ বামুন হয়ে চাদেঁ হাত দেওয়ার কোন স্বপ্ন আমি দেখি না ৷ আমি আশা করবো এর পর থেকে আপনি আমাকে আর ডিসট্রাব করবেন না ৷ ওকে …..??”
— ” আর ইউ ডান ..??”(মেঘ)
— ” ওয়াট !!! আপনি কি আমার কথা বুজতে পারছেন না??”(ফারহা)
—” প্রেয়শী তুমি কি চাও ওই ছেলেটার মতো তোমার প্রিয় মানুষ গুলোর একি অবস্তা আমি করি..??”(মেঘ রেগে কথাটা বললো)
—” মা,,,মানে আ,,আপনি কি বলতে চান..??(ভয়ে ঘাবড়ে গিয়ে)
—” ইটস আ ভ্যারি সিমপিল প্রেয়শী তুমি যদি আমার কথা মতো না চলো তাহলে তোমার ফ্যামিলির তোমার বন্ধুদের আমি এমন অবস্তা করবো তা তোমার ধরনার বাইরে …”
ফারহা এবার সহ্য করতে পারলো না মেঘের কথা শুনে সত্যি ওর দুচোখ বেয়ে নোনা জলের রাশি বেয়ে পরতে লাগলো ৷ মেঘ আলতো করে চোখের পানি মুছে দিয়ে ফারহা কে বুকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে যেনো আলগা করে ধরে তার প্রেয়সী কোথাও হারিয়ে যাবে….
— ” প্রেয়শী তুমি কেনো বুজতে পারছো না আমার ভালোবাসা ..?? হয়তো আজ আমি তোমাকে আমার ভালোবাসি বুঝাতে অক্ষম কিন্তু কাল পরশু তোমাকে তো বুজতে হবে আমার ভালোবাসা ..”(কথা গুলো মেঘ মনে মনে বললো)
— ” গাড়ির চাবি..”(আসলাম)
আসলামের গাড়ির চাবি দেওয়াতে ফারহা বুজতে পারলো ওকে কোলে করে এখানে বাইরে আনার কারন মনে মনে বেশ খুশি হলো ফারহা…..
—” শালি রাক্ষস একবার বাড়িতে যেতে পারি তারপর যদি তুই আমাকে ধরতে পারিস তো আমার নাম ফারহা নি আলিয়া ,,,,,,আলিয়া এই নাম টা মুখে আসলো কেনো আগে কখনো তো এই নামটা শুনি নি তাহলে 🤔 যাক গে তাতে আমার কি ….
মেঘ ফারহা কে গাড়ির সামনের সিটে বসিয়ে দিয়ে ড্রাইবিং সিটে বসে পরলো মেঘ …..
— ” এই আপনি কোথায় যাচ্ছেন..?? আমি একা যেতে পারবো ৷ (রাক্ষস টাকে আমার বাড়ি চিনতে দেওয়া যাবে না🙄)
—” মাই লাভ তুমি যে কারনে আমাকে যেতে নিষেধ করছো সেটা তো আমি অলরেডি জেনে গেছি..” (বাকা হেসে)
— ” মা,,মানে আপনি আমার বা,, বাকিটা বলার আগে মেঘ বলে উঠলো ..হ্যা প্রেয়শী একজেকলি ঠিক ধরেছো ৷ তুমি তোমার সম্পর্কে যতো টা না জানো আমি তোমার থেকে হাজার গুন বেশি জানি তোমার সম্পর্কে ৷
মেঘের কথাটা ফারহার মাথার উপর থেকে গেলো ফারহা পাল্লা প্রশ্ন করতে যাবে তার আগে মেঘ বলে উঠলো …..
—” প্রেয়শী এখন যদি আর একটা প্রশ্ন করো তাহলে কিছুক্ষন আগের যে ঘটনা ঘটে ছিলো তার রিপেট টেলিক্যাস্ট হবে ..””
ফারহা কথা টা শোনা মাত্র হাত দিয়ে ঠোট চেপে ধরে কারন ফারহার বুজতে আর বাকি নেই মেঘ কি বলতে চাইছে ৷ ও যে ওর ঠোটের উপর আবার এট্যাক করতে পারে এটাই তার ক্লু…ফারহার কান্ড দেখে মেঘ হেসে গাড়ি স্ট্রাট দেয়………
গাড়ি চলাকালিন পুরো রাস্তায় ফারহা মুখ থেকে হাত সরায় নি ওভাবে বসেছিলো আর এদিকে মেঘ ফারহার দিকে বার বার আড় চোখে তাকিয়ে মুচকি হাসছে ৷ সালি পেকাটির বর , হনুমানের লেজ,, কান কাটা পেতনির নানি,, নীল টিকটিকির ডিম,,, ড্রাগোনের মামা,,, পচাঁ টমেটোর ক্ষেত,,, শুটকি মাছ ,,, ধলা কুমির ,,, রাক্ষসের দাদা নানা ভুল বললাম রাক্ষসের হেড কমান্ডার দেখিস সালা তোর কোন দিন বিয়ে হবে না ৷ আমার মতো নিশ্পাপ বাচ্চা মেয়ের অভিশাপ বিফলে যাবে না দেখিস…. (মনে মনে মেঘের দিকে তাকিয়ে বকা গুলো দিতে লাগলো )
—” প্রব্লেম নেই প্রেয়শী তুমি আমাকে বিয়ে করবে অন্য কাউকে করতে হবে না৷ ”
মেঘের কথা শুনে একটা টাস্কি খেলো ফারহা..””হায় হায় আমার মনের কথা শুনলো কি করে এই রাক্ষস টা..??””
— ভালোবাসা প্রেয়শী ভালোবাসা তার জন্য তোমার মনের সব কথা আমি শুনতে পাই….(মেঘ)
— ভালোবাসা না ছাই ৷ শালা এক চিপকু কলেজে জীবনডা তেনা তেনা করে দিছে ৷ আর এই রাক্ষস বাকি জীবনডা ভাজা ভাজা করে দেওয়ার জন্য আসছে ….(ফারহা মুখে একরাস বিরক্তি নিয়ে মনে মনে বলতে লাগলো)
—” প্রেয়শী বাড়ি এসে গেছে..”
ফারহা আসে পাশে তাকিয়ে দেখে সত্যি ও ওর বাড়ির সামনে ফারহা কে আর কে পায় দরজা খুলে নামতে যাবে তখনি মেঘ ফারহার হাত টা চেপে ধরে তা দেখে ফারহা ভয় পেয়ে যায়….
— ” হায় হায় এখন আবার কি করবে এই লুচু রাক্ষস টা ..””(ফারহা)
— ” তোমার এই লুচু রাক্ষস টা তোমার কপালে তার ভালোবাসার স্পর্শ দিবে ..”
মেঘের কথাটা শুনে ফারহা দু চোখ কটোর থেকে বেরিয়ে যাবার উপক্রম ….
মেঘ ফারহার কপালে আলতো করে ঠোটের স্পর্শ দিয়ে ছেড়ে দিলো ৷ ফারহা ছাড়া পেয়ে গাড়ি থেকে নামতে মেঘ প্রেয়শী বলে ডেকে বলে….” প্রেয়শী তোমার জীবন ভাজা ভাজা হোক বা তেনা তেনা তা একমাত্র এই মেঘ চৌধুরি করবে অন্য কেউ মাঝে আসলে তা সরিয়ে দিতে আমি দ্বিতীয় বার ভাববো না যাষ্ট মাইন্ড ইট …….
কথাটা বলে মেঘ গাড়ি স্ট্রাট দিয়ে চলে গেলো কিন্তু মেঘের কথা গুলো যেনো ফারহার কানে এখনো বাজছে ৷ ফারহা মেঘের বিহেব দেখে অবাক হচ্ছে কারন মেঘ যে ভাবে ওর সাথে কথা বলছে তা দেখে মনে হয় ও মেঘের কতো বছরের চেনা কাছের প্রিয় মানুষ ৷
ফারহা মেঘের কথা ভাবতে ভাবতে বাড়িতে ঢুকতে দেখে ………..
*
*
*
*
#চলবে…………………🍁🍁🍁
(যথেষ্ট বড় করে পার্ট টা দিলাম এর থেকে আর বড় করে পার্ট চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ৷ কারন ইহার থেকে বড় করিয়া পার্ট আমি দিতে পারতাম না🙄🙄)