#হিংস্র_ভালোবাসা🌹
#Season_2
#Writter_Farhana_Chobi
#পর্ব-১৫
.
.
🍁
মেঘ ফারহার কপালে আলতো করে ঠোটের স্পর্শ দিয়ে ছেড়ে দিলো ৷ ফারহা ছাড়া পেয়ে গাড়ি থেকে নামতে মেঘ প্রেয়শী বলে ডেকে বলে….” প্রেয়শী তোমার জীবন ভাজা ভাজা হোক বা তেনা তেনা তা একমাত্র এই মেঘ চৌধুরি করবে অন্য কেউ মাঝে আসলে তা সরিয়ে দিতে আমি দ্বিতীয় বার ভাববো না যাষ্ট মাইন্ড ইট …….
কথাটা বলে মেঘ গাড়ি স্ট্রাট দিয়ে চলে গেলো কিন্তু মেঘের কথা গুলো যেনো ফারহার কানে এখনো বাজছে ৷ ফারহা মেঘের বিহেব দেখে অবাক হচ্ছে কারন মেঘ যে ভাবে ওর সাথে কথা বলছে তা দেখে মনে হয় ও মেঘের কতো বছরের চেনা কাছের প্রিয় মানুষ ৷
ফারহা মেঘের কথা ভাবতে ভাবতে বাড়িতে ঢুকতে দেখে মিসেস মোহনা একটা লোকের হাত ধরে কান্না কাটি করছে ৷ লোকটা অন্যদিকে ঘুরে বসে থাকার জন্য ফারহা মুখটা স্পষ্ট দেখতে পেলো না কিন্তু মিসেস মোহনা ফারহা কে দেখতে পেয়ে দ্রুত লোকটার হাত ছেড়ে দিয়ে চোখের পানি মুছে নিয়ে হাসি মুখে ফারহা কে বলে উঠলো …
—” আরে ফারহা আজ এতো লেট কেন করে ফিরলি দেখ কে এসেছে তোর ফাহিম মামা..””
মিসেস মোহনার কথা শেষ হতে ফাহিম মুখ ঘুড়িয়ে ফারহার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ৷ ফারহা ফাহিম কে দেখে যেন চমকে উঠলো ….
—” এই এই মুখ টা তো আমার খুব চেনা কিন্তু কোথায় যেন দেখেছি..!!!” (ফারহা)
ফারহা কে চুপ থাকতে দেখে ফাহিম বসা থেকে উঠে দারিয়ে ফারহার দিকে এগোতে ফারহা ছুটে নিজের রুমে চলে যায় তা দেখে ফাহিম মোহনা দুজনে স্তম্ভিত হয়ে যায়……
—” মোহনা ফারহা কি আমাকে চিনতে পেরেছে ..?? ওর কি স্মৃতি ফিরে এসেছে..??”(ফাহিম)
—” নাহ ভাই এটা কি করে সম্ভব ওর যাতে স্মৃতি না ফিরতে পারে তার জন্য আশিকের কথা মতো ওই ড্রাকস টা রেগুলার ফারহা কে দিচ্ছি…”(মোহনা)
—” তুই শিওর তো ওই ড্রাকস টাই দিচ্ছিস তো..??”(ফাহিম)
মোহনা আর ফাহিমের কথার মাঝে আদিল এসে দারায় ৷ আদিল কে দেখে ফাহিম মোহনা চুপ হয়ে যায়….
— ” তো মামা কি মনে করে এতো বছর পর বোনের বাড়ি এসে উপস্তিত হলেন..??”(আদিল)
—” আদিল এটা কোন ধরনের অভদ্রতা হা উনি তোমার মামা হন সন্মানের সাথে কথা বলো..”(মোহনা)
— ” সন্মান হা হা হা কাকে সন্মান করবো মামুনি এনাকে..?? নাকি তোমাকে..?? “(আদিল)
আদিলের কথা শুনে মোহনা রাগে রিতিমতো কাঁপতে লাগলো ৷ আর ফাহিম হা করে আদিলের কথা শুনছে ৷
— ” মাই গুড নেস এই টুকু ছেলের কি ঝাঝ ৷ একে ঘাটানো যাবে না৷ ঠান্ডা থাকতে হবে নয়তো হিতে বিপরিত হবে ৷”( ফাহিম)
—” আদিল এই মূহর্তে তুমি আমার সামনে থেকে চলে যাও ..””রাগে কটমট করতে করতে বললো মোহনা…
–” লিসেন মা…নাহ মামুনি না তোমাকে তো এখন আমার মামুনি বলে ডাকতে ও ঘৃনা হয় ৷ “”(আদিল)
আদিলের কথা শেষ হওয়ার আগে স্বজোড়ে এক থাপ্পোর পরলো আদিলের গালে ৷ আদিল মোহনার হাতের থাপ্পোর খেয়ে ও মুচকি হেসে বলে উঠলো …
–” দেখলে তো আজ কাল আর সত্যি কথার দাম নেই ৷ আমি সত্যি টা বললাম তার বিনিময়ে তুমি থাপ্পোড় দিলে ..”
আদিল এক ঝলক ফাহিমের মুখের দিকে তাকিয়ে নিজের রুমের দিকে চলে গেলো…….
.
.
🍁
.
.
—” কে এই লোকটা .! উনি কি সত্যি আমার মামা ..?? ধ্যাত আমি কি উতভট কথা চিন্তা করছি মামুনি তো বললো উনি আমাদের ফাহিম মামা ৷ তাহলে এতো বছর কোথায় ছিলো উনি..?? ”
ফারহা ফাহিমের কথা ভাবতে ভাবতে ওয়াসরুমে গিয়ে একটা লম্বা হট শাওয়ার নিয়ে বার হলো এলোমেলো ভেজা চুল পরনে লাল রংয়ের টাওয়াল এতোটুকু মেঘ ল্যাপটপে দেখে চোখ সরিয়ে নেয় …..
—” মেঘ কন্ট্রোল ইউর সেলফ ৷ প্রেয়শী তো তোর নিজের কিন্তু এভাবে লুকিয়ে দেখা ঠিক না ওকে ওর প্রাইভেসি দেওয়াটা প্রয়োজন…”
কারোর আসার শব্দ পেয়ে মেঘ ল্যাপটপ টা অফ করে দিলো……
— বসস …(আসলাম সাথে এরিক)
— কামিং , (মেঘ)
— বস একটা ইমপ্রটেন্ট নিউজ আছে…(আসলাম)
আসলামের কথাটা শোনা মাত্র মেঘ আসলামের দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বললো…” এতো বছর তোর এই এক কথা শুনছি আসলাম ৷”
আসলাম মেঘের এমন খাপ ছাড়া কথা শুনে মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলে উঠলো …” বস অর্থ মন্ত্রী আপনার দেওয়া প্রপোজালে রাজি হচ্ছে না ৷ ওনার নাকি দ্বিগুন টাকা চাই …”
— দ্বিগুন টাকা চাই ওর হা ৷ ভেবে ছিলাম ক্ষমতা প্রয়োগ না করে কাজ টা করবো কিন্তু দেশের এরকম মন্ত্রী থাকলে কি আর ক্ষমতা প্রয়োগ না করে থাকা যায়…!! এরিক মন্ত্রীর বউ ছেলে মেয়ে কে তুলে নিয়ে আয়..”(মেঘ)
— ” ওকে বস , বস আর একটা নিউজ আছে ৷”(এরিক)
— ” বস আশিকুর রহমান এখন আমাদের হাতের মুঠোয় ৷ জ্যাকের আন্ডারে এখন..”(আসলাম)
— ” ফাহাদ চৌধুরী আর আশিকুর রহমান কে খাতির জত্নে জেনো কোন ট্রুটি না হয় এরিক কথাটা জ্যাক কে জানিয়ে দিস..”(মেঘ)
এরিক রুম থেকে চলে যেতে আসলাম এসে মেঘের পাশে দারায় মেঘ বুজতে পারে আসলাম ওকে কিছু বলতে চায় ৷
— ” আসলাম যা বলতে চাইছিস ঝটপট বলে ফেলে বিদেয় হো..”(মেঘ)
— বসস আপনাকে আর কতো বছর এভাবে কষ্ট পেতে দেখবো আপনি দয়া করে ম্যামের আগের সৃত্বি ফিরিয়ে আনার ব্যাবস্তা করুন ৷(আসলাম)
— তোর কি মনে হয় আসলাম আমি হাত গুটিয়ে বসে আছি..?? নাহ আজ যখন প্রেয়শী ভয়ে জ্ঞান হারায় তখন ডক্টর কি বলে ছিলো মনে আছে……
** ফ্লাসব্যাক ……..
— বস ম্যাম তো রক্ত দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেললো এখন কি হবে..?(আসলাম)
—” ডক্টর নাহার কে এখুনি উইথ মেডিক্যাল টিম নিয়ে ১৫ মিনিটের মধ্যে এখনে দেখতে চাই আসলাম.!”(মেঘ)
— ওকে বস…
পনেরো মিনিটের মধ্যে ডক্টর নাহার সাথে মেডিক্যাল টিম নিজে হাজির মেঘের সামনে…….
— ডক্টর আমার ওয়াইফের স্মৃতিশক্তি কি করে ফেরানো যায়..???
— মিস্টার চৌধুরি ম্যামের কিছু ব্রেইনের স্কান করাতে হবে তাহলে বোঝা যাবে ওনার ম্যান্টাল স্টেটমেন্ট তার উপর ডিপেন্ট করছে ওনার আদো আগের স্মৃতি ফিরে আসবে কিনা!!!!”
মেঘের অনুমতি নিয়ে ফারহা কে হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয় সাথে সাথে মাথার স্কান করা হয় ৷
— স্যার ম্যামের সব রকম টেষ্ট করা হয়ে গেছে রিপোর্ট আসতে দু দিন সময় লাগবে …(ডক্টর)
— নো প্রব্লেম ডক্টর তাহলে কি আমার প্রেয়সী কে নিয়ে যেতে পারি ….??(মেঘ)
— ” হ্যা নিতে পারেন তবে একটু খেয়াল রাখবেন ম্যামের শরীল অত্যান্ত দূর্বল আই থিং ঠিক মতো খাওয়া করে না “(ডক্টর)
— ” ওকে ডক্টর আমি খেয়াল রাখবো..”
—” মিস্টার চৌধুরী আর একটা কথা এই ধরনের পেসেন্ট কে বেশি মানুষিক চাপ দিবেন না তাতে হিতে বিপরিত হতে পারে এবং কি ওনার মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে তাই বি কেয়ার ফুল..”(ডক্টর)
মেঘ নিজের রাগ দমন করে ফারহা কে নিয়ে ওর বাড়িতে চলে এলো .তারপর তো আপনারা জানেন……
***এখন……….
—” ইয়েস বস তাহলে আপনি এখন কি করতে চান..??”(আসলাম)
— সেটা সময় হলে জানতে পারবি…(কথা বলার সময় মেঘের মুখে এক অদ্ভুত হাসি ফুটে উঠলো আসলাম সেই হাসির মানে না বুঝে মাথা নেরে হা বলে)
.
.
🍁
.
.
ফারহা চেন্জ করে টেডিবিয়ার জরিয়ে ধরে বিছানার এক কোনে জড়সড় হয়ে বসে আছে ৷ জয়ের হাত কাটার দৃশ্য এখনো ফারহার দু চোখে ভেষে উঠছে ৷ কিছুতেই ফারহা তা ভুলতে পারছে না৷
— ” কি কি করে পারলো ছেলে টার হাত এভাবে কেটে ফেলতে .? আমি তো ছেলে টাকে সাহেস্তা করেছি তাহলে উনি এভাবে কেনো ছেলে টাকে শাস্তি দিল.?? শেষ করে দিলো ছেলে টাকে ওর ভবিষ্যৎ কে ৷ কেন করলো এমনটা..??
নিজের মনে মনে হাজার ও প্রশ্নের উওর হাতরে যাচ্ছে ফারহা কিন্তু কোন ভাবে কোন প্রশ্নের উওর ফারহা পেলো না বরং পুরো জট পাকিয়ে জগাখিচুড়ি হয়ে গেছে……
— ” উফফ আর ভাবতে পারছি না সব কেনো যেন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে ৷ মামুনি কে বললো ! নাহ থাক আব্বু এখনো ফিরেনি তাতে মামুনি আপসেট এখন আমার এই কথা গুলো বলে আর টেনশনে ফেলতে চাই না এই মেঘ না বৃষ্টি এর সাথে আমাকে ডিল করতে হবে ৷ ইন্সট্যাকশন তাই না চান্দু কাল দেখাবো তোমায় এই ফারহা কি জিনিস …..” (ফারহার ঠোটের কোনে এক পৌশাচিক হাসি )
মেঘ এতোক্ষন ফারহার বির বির করছে দেখছিলো কিন্তু ফারহার মুখের হাসিটা দেখে মেঘ কিছুটা আন্দাজ করতে পারলো ফারহা কাল কিছু একটা না একটা ঘটাবে …..
— ” প্রেয়শী তুমি মেঘ চৌধুরীর জান তোমার দিকে যে চোখ তুলে তাকাবে তার চোখ আমি তুলে নিবো যে হাত বারাবে তার হাত আমি কেটে নিবো আর যে তোমাকে আমার থেকে দুরে সরাতে চাইবে তার জান আমি কবচ করবো ৷ দেখা যাক কাল তুমি কি করো !!!
মেঘ ওয়াইন খেতে খেতে ল্যাপটপে ফারহার প্রতিবিম্ব তে চুমু খেলো মেঘ………
.
.
🍁
.
.
—মোহনা এই মেডেসিন টা নে ফারহার খাবারের সাথে বা পানির সাথে মিশিয়ে দিস…..”(ফাহিম)
—” এই কিসের মেডেসিন ভাই .??”(মোহনা)
— ” ফারহার যদি কোন ভাবে স্মৃতি ফিরে ও আসে তাহলে এই মেডেসিনের গুনে ফারহা সব টা ভুলে যাবে ৷”(ফাহিম)
—” ভাই ফারহার কোন ক্ষতি হবে না তো এই মেডেসিন দিলে..??”(মোহনা)
— বাহ ফারহার জন্য তোর এতো চিন্তা.?? আমার মনে হচ্ছে ফারহা ফারুকের মেয়ে না তোর মেয়ে ..!( চোখে মুখে বিরক্তি নিয়ে বললো ফাহিম)
— ” হ্যা কি বলছিস ফারহা আমার মেয়ে হতে যাবে কেন.?? ওকে আমি নিজের মেয়ে কখনো মনে করি না ওকে আমি ঘৃনা করি শুধু মাত্র ওর সম্পত্তির জন্য ওকে বাচিয়ে রেখেছি নয়তো কবে ওকে মেরে মাটিতে পুতে রাখতাম..(কথা গুলো বলতে চোখে মুখে রাগ ফুটে উঠলো মোহনার)
—” দ্যাটস লাইক এ্যা মাই লিটিল সিস্টার ৷ শোন আরতো মাত্র একবছর তারপর ফারহার চাপ্টার শেষ …”
মোহনা ফাহিম নিজেদের কথার এতোটাই মগ্ন যে আদিল পিছুনে দারিয়ে ওদের সব প্লানিং জেনে গেল তা মোহনা ফাহিম বুজতে ও পারলো না…………
*
.
*
.
#চলবে………………….🖤🖤🖤