#হিংস্র_ভালোবাসা🌹
#Season_2
#Writter_Farhana_Chobi
#পর্ব-১৬
.
.
🍁
— ” হ্যা কি বলছিস ফারহা আমার মেয়ে হতে যাবে কেন.?? ওকে আমি নিজের মেয়ে কখনো মনে করি না ওকে আমি ঘৃনা করি শুধু মাত্র ওর সম্পত্তির জন্য ওকে বাচিয়ে রেখেছি নয়তো কবে ওকে মেরে মাটিতে পুতে রাখতাম..(কথা গুলো বলতে চোখে মুখে রাগ ফুটে উঠলো মোহনার)
—” দ্যাটস লাইক এ্যা মাই লিটিল সিস্টার ৷ শোন আরতো মাত্র একবছর তারপর ফারহার চাপ্টার শেষ …”
মোহনা ফাহিম নিজেদের কথার এতোটাই মগ্ন যে আদিল পিছুনে দারিয়ে ওদের সব প্লানিং জেনে গেল তা মোহনা ফাহিম বুজতে ও পারলো না…………
—” নাহ মামুনি তোমাদের প্লান আমি কোন মতে সাকসেসফুল হতে দিবো না হোক না আপু অন্য কারোর মেয়ে কিন্ত বোন ও আমার , আমার আপু আমি বেচেঁ থাকতে ওর কোন ক্ষতি আমি হতে দিবো না ৷ যাষ্ট ওয়েট এন্ড সি কি করে তোমাদের পাতা ফাদেঁ তোমাদের আটকে দি …..”(আদিল)
আদিল খুব সাবধানে পিছুন থেকে সরে গেলো যাতে ওর উপস্থিতি ওর মামা বা মামুনি টের না পায়……..
— ” তোমাকে বারন করার পর ও তুমি একি ভুল করেছো ৷ এতো সাজগোজ কার জন্য হা ওই তোমার বন্ধুদের জন্য তাই না তাদের দেখাতে এই সাজগোজ ৷ আজ আমি ওদের তোমার সামনে শেষ করে দিবো ৷ …..কথা শেষ হতেই মেঘ ইশারা দিতে কয়েকজন এসে রাব্বি , হাসান , আফিফ এদের একসাথে দেহ থেকে মাথা টা আলাদা করে দিলো ….ফারহা তা দেখে সহ্য করতে না পেরে চিৎকার করে উঠলো……
—- ” নায়য়য়য়য়য়য়য়য়য়য়া …(জোড়ে চিৎকার করে উঠে বসে ফারহা)
না না এটা হতে পারে না কি নিষ্ঠুর উনি কিভাবে মারতে পারলো ওদের …কথা গুলো ভাবতে ভাবতে ফারহা চারিদিক খেয়াল করে দেখে ও ওর নিজের রুমের বিছানায় শুয়ে আছে……ফারহার চিৎকার শুনে আদিল ছুটে আসে ফারহার রুমে……
— ” আপু কি হয়েতে তোর এভাবে চিৎকার করে উঠলে কেনো..?? একমিনিট একমিনিট তুই এভাবে ঘামছিস কেনো ..??”
— পা,,পানি খাবো ৷ ….(আল্লাহ কি ভয়ঙ্কর লোক স্বপ্নে ও আমাকে রেহাই দেয় না )
আদিল পানির বোতল টা খুলে ফারহা হাতে দিতে ফারহা পানিটা খেয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে…
—” আপু রাত তো অনেক হলো চল খেয়ে নিবি তারপর না হয় তোর স্বপ্নের কথা শুনবো..”
—” তুই যা আমি ফ্রেস হয়ে আসছি..”
— ” মহারানি ফ্রেস হতে গিয়ে আবার ওখানে ঘুমিয়ে পরেন না ওকে ..”
আদিল রুম থেকে বেরিয়ে নিজের রুমে গিয়ে ফোন টা হতে নিতে একটা মেসেজ আসলো আদিল মেসেজ টা দেখে বেশ ঘাবড়ে গেলো …..
— মামুনি আজ এতো সব আয়োজন নিশ্চয় মামুর জন্য …(ফারহা)
— “আরে আপু বুজতে পারছিস না কেনো ভাই এসেছে এখন তার খাতির জত্ন না করলে হয় বলা তো যায় না এটাই হয়তো শেষ ভালো মন্দ খাওয়া মামুর…..”( আদিল)
আদিলের কথাটা শোনা মাত্র ফাহিমের কাশি উঠলো তখনি মোহনা আদিল কে ধমক দিয়ে উঠলেন…
— আদিল এই সব কি কথা বলছো তুমি হ্যা লাগাম ছাড়া কথা ভুলে যেয়ো না সামনে বসা মানুষ টা তোমার মামা …(মোহনা)
— ” ওহ মামুনি আমি তো যাষ্ট মজা করলাম এতোটা সিরিয়াস হওয়ার কি আছে…”(আদিল)
মোহনা কিছু বলতে যাবে কিন্তু ফাহিম চোখের ইশারায় বারন করায় আর কিছু বললো না মোহনা ৷
— ফারহা মামুনি আজ আমি তোর জন্য বিরয়ানি রেধেছি টেষ্ট করে দেখতো কেমন হয়েছে..??(মোহনা)
— ওয়াও মামুনি বিরয়ানি আমার সব থেকে ফেবারিট ডিস ৷ দেরি করছো কেনো দেও …..
মোহনা ফারহার প্লেটে বিরয়ানি সার্ব করে দিতেই আদিল টেবিলের নিচে তাকিয়ে ইদুর ইদুর বলে চেচাতে থাকে ৷ ইদুরের কথা শুনে ফাহিম মোহনা টেবিলের নিচে তাকাতে আদিল ফারহার প্লেটের সাথে ফাহিমের প্লেট পরিবর্তন করে দেয় ৷
— ” কোথায় ইদুর আদিল দেখছি না তো..??”(ফাহিম)
— ” মামা মনে হয় আমার চিৎকার শুনে ইদুর টা পালিয়ে গেছে…!!”(আদিল)
আদিলের কথা সবাই বিশ্বাস করলেও ফারহা করলো না ৷ কঠিন দৃষ্টি দিয়ে আদিলের দিকে তাকিয়ে আছে ফারহা ৷ আদিল ফারহার দিকে তাকিয়ে ইশারায় খেতে বলে নিজে রাক্ষসের মতো খেতে লাগলো ৷ ফারহার মাথায় মেঘে আজকের করা কান্ড ঘুরপাক খাচ্ছে সে চিন্তায় ফারহা কোন রকম একটু খেয়ে উঠে পরলো তার পরপর আদিল ও উঠে গেলো……
—” মোহনা ড্রাকস টা ফারহার খাবারে মিশিয়ে দিয়েছিস তো..???”(ফাহিম)
—” হ্যা ভাই তোর কথা মতো ওর বিরয়ানির সাথে ভালো করে মিশিয়ে দিয়েছি .”(মোহনা)
— ” গুড আশা করি কাল সকালের মধ্যে ড্রাকসটার একটা রিজাল্ট পাবো…”(ফাহিম)
— ” হ্যা সে অপেক্ষায় আছি ..”
.
.
.
— ” হ্যা তিন্নি বল..??
—” ফারু কি হয়েছে তোর আর আজ তোকে কতোবার কল করেছি তোর কোন ধারনা আছে বল???(রেগে)
— থাপ্পোর খেতে না চাইলে কি বলবি বলে ফেল নয় তো ফোন রাখ…(ফারহা)
— ” রেগে যাচ্ছিস কেনো .? যেখানে রেগে যাওয়ার কথা আমার সেখানে তুই রাগছিস বাহ ৷ এখন শোন আজ তুই কোথায় গিয়েছিলে ..???”( তিন্নি)
তিন্নির প্রশ্নটা শুনে ফারহার বুক টা ধক করে উঠলো ,কি বলবে তিন্নি কে সত্যি টা নাকি ..!!!
— ” তি তিন্নি আমি কাল তোকে সব টা বলবো প্লিজ আজ আর কোন প্রশ্ন করিস না !”(ফারহা)
—” ঠিক তো কাল সব টা বলবি আমাকে..??”
— হ্যা বলবো …
কথা শেষ করে ফারহা একগ্লাস পানি ঢকঢক করে খেয়ে নিলো…..
এদিকে ফাহিম রাতের খাবার খাওয়া শেষ করে বিছানায় শরীল এলিয়ে দিতে ঘুমিয়ে গেলো ৷ সে সুযোগে আদিল ফাহিমের রুমে এসে ফাহিমের সুটকেস খুলে কিছু ফাইল পেলো ৷ আদিল খুব সাবধানে ফাইল গুলো নিয়ে সুইটকেস ঠিক জায়গায় রেখে নিজের রপমে ব্যাক করলো……..
.
.
🍁
.
.
ফারহা সকালে ঘুম থেকে উঠে কালকের সব ঘটনা ভুলে যায় ৷ প্রতিদিনের মতো রেডি হয় তবে আজ একটু বেশি সাজগোজ করে ফারহা .. জাম কালার লং ত্রিপিস পরে সাথে চোখে হালকা কাজল ঠোটে লিপস্টিক হালকা মেকয়াপ এক হাতে ঘড়ি কানে ঝুমকা সিল্কি চুল গুলো ছেড়ে দেওয়া ….ব্যাস রেডি ….
— ” হ্যালো কোথায় তোরা ..??(ফারহা)
— ” ফারু আমরা বট গাছটার নিচে বসে তুই এখানে চলে আয়…”(তিন্নি)
—” ওকে আসছি..”
ফারহা কলেজ গেটে দারাতে দেখে আসে পাশের সব ছেলেরা ওর দিকে হা করে তাকিয়ে আছে …..
—” এই ছাগল গুলো আমার দিকে এভাবে হা করে তাকিয়ে আছে কেনো..?? খুব কি বাজে দেখতে লাগছে আমাকে..?? ওড়না টা ভালো করে ঠিক করে নিলাম কে জানি কি দেখ দেখছে এভাবে হা করে ৷ ধুর ভাল্লাগে না …..
ফারহা হেটে কলেজের ভিতর ঢুকতে ভিতরে ও একি অবস্তা ফারহা আর অন্য দিকে না তাকিয়ে সোজা বট গাছটার দিকে চলে যায়…….
— ” রাব্বি আমি যা দেখছি তুই ও কি তাই দেখছিস ..??”(আফিফ)
—” হ্যা ইয়ার এটা কি আমাদের ফারু নাকি কোন হুর পরী..??”(রাব্বি)
—” নাহ ইয়ার এটা আমাদের দোস্ত কোন হুর পরী টরি না ..”(হাসান)
—” এই তোরা কি নিয়ে কথা বলছিস আমাদের ও বল..??(ইভা)
—” কথা না বলে সামনে তাকিয়ে দেখ কে আসছে..”( রাব্বি)
রাব্বির কথা শুনে ইভা তিন্নি সামনে তাকিয়ে দেখে ফারহা ……
— ওয়াও ফারু কে তো আজ পুরাই জাম পরী লাগছে রে …(ইভা)
— হ্যা আসে পাশে তাকিয়ে দেখ সব ছেলেরা কি ভাবে ওর দিকে তাকিয়ে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে…..(তিন্নি)
— খাবে তো এরকম পরীর মতো কোন মেয়ে কে দেখলে ছোড়া থেকে বুড়ো পর্যন্ত তাকিয়ে থাকতে বাধ্য….(ইভা)
— কি ফাজিলের দল সব এখানে কি করিস ..?? ক্লাস নাই..?(ফারহা)
— আছে তো কিন্তু মনে হয় আজ ওই খোচ্চোর স্যার পড়াতে ভুলে যাবে ..(ইভা)
— কেনো..??
— সামনে যদি কোন পরী না থুক্কু রাব্বির ভাষ্যমতে হুর পরী থাকলে কি আর স্যারের পড়াতে ইচ্ছে করবে…(ইভা)
— বদমাস …বলে ইভাকে মারতে লাগলো আর ইভা পুরো ক্যামপাস জুরে ছুটছে সাথে সাথে ফারহা ও…..
— ওই হারামি দারা আজ তোর খবর আছে ..(ফারহা)
—” দোস্ত এই বারের মতো ক্ষেমা দে আর কখনো এমন দুষ্টুমি করবো না…(ইভা)
ইভা দারিয়ে হাপাতে লাগলো ৷ ফারহা ইভার পিঠে একটা কিল মেরে ও হাপাতে লাগলো….
—” শালীর ঘরের শালী আর এরকম স্যারদের নিয়ে ফাজলামি করলে তোর খবর আছে ৷ ”
—” আচ্ছা চল ওদের কাছে …”
— ” হুম ”
ফারহা ইভা হাটতে হাটতে তিন্নিদের দিকে এগিয়ে যেতে খেয়াল করে ৷ সিনিয়র এক ভাইয়া কতো গুলো লাল গোলাপ ফুল নিয়ে ওর সামনে দারিয়ে পরে ….
— ” হেই মিস আই লাভ ইউ..”(সিনিয়র)
ফারহা এদিক ওদিক তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে উনি কাকে প্রপোজ করলো ৷
—” হেই আ’ম মিলন তোমার সিনিয়র ৷ আমি তোমাকে প্রপোজ করেছি তুমি অন্য কোথায় কি খুজছো..??”(মিলন)
—” ওই মিয়া আন্নে কি কহনো কানের নিচে চটকানি খাইছেননি..??”(ফারহা)
ফারহার মুখে উতভট ভাষা শুনে মিলন হতবম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে….
— ” ইয়ে মানে কি বলছো তুমি কি ভাষায় কথা বলছো আমি বুজতে পারছি না..??( মিলন)
—” হের আগে আন্নে মোরে কোন দেহি আন্নে কি আনার নাম হানেন..??”(ফারহা)
মিলন ফারহার ভাষা বুজতে না পেরে অসহায় মুখ নিয়ে ইভার দিকে তাকাতে ইভা শয়তানি হাসি দিয়ে বললো…
— ” মিলন ভাইয়া ও জানতে চাইছে আপনি কি ওর নাম জানেন..??”(ইভা)
— ” ওহ নাহ মানে আমি তো এই পরীর নাম জানি না “(মিলন)
—” হেতি কয় কি ওহ মোর খোদা ইভা হেতি দেহি মোর নাম না জাইন্না পিরিত করবার কথা কয় হায় হায় এরে তো দেহি ঝুলাই পিঠানো উচিত..”(ফারহা)
মিলন ফারহা সব কথা বুজতে না পারলে ও ওকে যে ঝুলিয়ে পিটানো কথা বলছে এটা ঠিক বুজতে পারছে ৷ মিলন কোন রিক্স নিতে চায় না কারন ফারহার নাম ঠিক করে না জানলেও ওর সমন্ধে যা শুনেছে তাতে এই টুকু শিওর এই মেয়ে ভিষন ডেন্জারাস ৷ মিলন ফুল ওখানে ফেলে রেখে জান হাতে নিয়ে দৌড় দিলো ৷ ফারহা ইভা মিলনের দৌড় দেখে এক সাথে হেসে উঠলো …..
—” ফারু তুই এই উতভট ভাষা কোথা থেকে শিখলি রে…??”(ইভা)
—” উহু বলা যাবে না ইটস মাই সিগরেট নাও “(হাসতে হাসতে বললো ফারহা)
—” কি সিনিয়র মিলন ভাইয়া ফুল হাতে কি করছিল..??(হাসান)
—” আমার পূজা করছিল ডাফার..”(ফারহা)
—” হাসান আর বলিস না ৷ মিলন ভাই এসেছিল ফারহা কে প্রপোজ করতে..”(ইভা)
—” ভালো কথা কিন্তু ওভাবে দৌড়ে চলে গেলো কেনো..??”(রাব্বি)
—” কথাটা কি আগ আমাকে শেষ করতে দিবি ??”(রেগে বললো ইভা)
—” সরি সরি বইন প্লিজ কন্টিনিউ কর “(হাসান)
— “প্রপোজ করতে এসে ফারহার সেই উতভট কথা শুনে মিলন ভাই ভয় পেয়ে পালিয়েছে ..হা হা হা” (ইভা)
ইভার কথা শুনে সবাই হাসতে লাগলো কিন্তু ফারহা চোখ কলেজ গেটের দিকে ….
— ইভু ওই ব্লাক কার টা কার কে আসলো কলেজে…??”(ফারহা)
ইভা গেটের দিকে তাকিয়ে থেকে বলে উঠলো …” ফারু আগুন স্যার আসলো না তো !! তুই তো ওনার একটা গাড়ি খারাপ করে দিসিস মে বি উনি হয়তো রিচ ফ্যামিলিতে বিলং করে তাই আজ নিউ কার নিয়ে এসেছে…….”
ইভার কথা শেষ হতে না হতে ফারহার দিকে তাকিয়ে দেখে ফারহা থর থর করে কাপছেঁ ইভা ফারহা কে টার্চ করতে ফারহা ওখান থেকে ছুটে ক্লাসে চলে আসে ৷ ফারহার পিছু পিছু রাব্বি হাসান আফিফ ইভা তিন্নি দৌড়ে যায় ৷
ফারহা ক্লাসে ঢুকে শেষ ব্যান্চের পিছুনে গিয়ে লুকিয়ে পরে……….
.
.
.
.
#চলবে…………….🙄🙄