হিংস্র_ভালোবাসা🌹 #Season_2 #Writter_Farhana_Chobi #পর্ব-২৯ [ঈদ স্পেশাল] .

0
785

#হিংস্র_ভালোবাসা🌹
#Season_2
#Writter_Farhana_Chobi
#পর্ব-২৯ [ঈদ স্পেশাল]
.
🍁
.
—” লিসেন প্রেয়শী তোমার বাবা বর্তমানে বিদেশে তোমার মামুনি কে বাড়িতে খুজে পাওয়া যায় নি …আর..”বাকি টা বলতে না দিয়ে ফারহা বলে উঠলো ” আর আমার ভাই আদিল ও কোথায়…??”((ছলছল চোখে বললো ফারহা)

—” তোমার সামনে চোখ মেলে একবার তাকিয়ে দেখ প্রেয়শী কে দারিয়ে আছে……….”(মেঘ)

ফারহা মেঘের কথা মতো মাথা তুলে সামনে তাকিয়ে দেখে নীল পান্জাবি পরা চোখে কালো সানগ্লাস হাতে বেজলেট পায়ে নাগরা জুতো … এক মুহূর্তের জন্য ফারহা হা করে নিজের ভাইকে দেখছে …. আদিল কে দেখে মনে হচ্ছে বোনের বিয়েতে এসেছে একে বারে পার্ফেক্টলি রেডি হয়ে…..ফারহা কে এভাবে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে আদিল সবার সামনে ফারহার নাক টা টেনে দিয়ে বলে…….

—” কিরে পেতনি কবুল বলছিস না কেন ?? আমার জিজুকে এতোক্ষন অপেক্ষা করিয়ে রাখার মানে কি হুমমম…..”(আদিল)

ফারহা আদিলের কথা শুনে যেন আকাশ থেকে পরলো ,,, ফারহা ছল ছল চোখে স্টেজ থেকে নেমে দৌড়ে গিয়ে আদিল কে জরিয়ে ধরে কাঁদতে থাকে……

—” আরে আরে আপু কি করছিস কি তোর নাকের পানি চোখের পানি সব তো আমার নতুন পান্জাবিতে লেগে যাবে ছিচ কাদুনে মেয়ে একটা….” আদিল মজা করে কথা গুলো বললো ফারহা কে ….ফারহা আদিলের কথা শুনে দুম দুম করে দুটো কিল বসিয়ে দিলো আদিলে পিঠে ….আদিল ফারহার হাতের মার খেয়ে ছুটে গিয়ে মেঘের পিছুনে গিয়ে দারিয়ে পরে তা দেখে ফারহা নাক ফুলিয়ে কোমরে হাত দিয়ে দারিয়ে আছে ….

—” জিজু প্লিজ তোমার এই রাক্ষসি বউর হাত থেকে আমাকে বাচাও না হলে আমাকে মারতে মারতে মেরে ফেলবে…..”(আদিল)

—” কিহ আমি রাক্ষুসী দারা তোর আজ হচ্ছে ….”ফারহা রেগে মেগে আদিল কে ধরতে নিলে মেঘ ফারহার হাত ঘুড়িয়ে নিজের কোলে নিয়ে স্টেজে বসিয়ে দিয়ে বলে…

—” এখানে চুপ করে বস আর একবার এখান থেকে উঠতে নিলে ঠাং ভেঙ্গে বসিয়ে রাখবো…”(রেগে বললো মেঘ)

ফারহা মেঘের রাগ দেখে ভয়ে চুপ হয়ে যায় তা দেখে তিন্নি ইভা আফিফ হা হা করে জোড়ে হেসে ওঠে ,,,অন্যদিকে আদিল ফারহা কে রাগানোর জন্য চুল টেনে ধরে….

—” আহা আদিলের বাচ্চি ছাড় আমার ছাড় নয় এবার তোকে আর ছেড়ে দিবো না উষ্টা মেরে আফ্রিকার জঙ্গলে পাঠায় দিবো…”(ফারহা)

আদিল ফারহার ধমকে ভয় পেয়ে চুল ছেড়ে দিয়ে বলে….

—” তোর মতো রাক্ষুসী কে আমি এই আদিল ভয় পায় না বুজছিস ..এখন ঝটপট কবুল বলে জিজু কে উদ্ধার কর ..”(আদিল)

—” ওয়েট শালাবাবু ফার্স্ট অফ অল আমার প্রেয়শীকে রাক্ষসী বলা বন্ধ কর কজ আই ডোন্ট লাইট ইট কেউ আমার জান আমার প্রেয়শীকে উলটা পালটা নামে ডাকবে ওকে…?”(মেঘ)

—” ওকে জিজু ..”(মাথা নিচু করে)

মেঘ হেসে দিয়ে আদিল কে জরিয়ে ধরে ..আদিল ও মেঘ কে জরিয়ে ধরে…

—” তো জিজু এখন বিয়ে টা দ্রুত সেরে ফেলুন আমার বড্ড খিদে পেয়েছে আর খিদে সহ্য হচ্ছে না..”(অসহায় মুখ করে বললো আদিল)

আদিলের কথা শুনে মেঘ হু হা হা করে হাসতে লাগলো … শুধু মেঘ না বাড়িতে থাকা প্রত্যেকটা মানুষ আদিলের কথা শুনে হাসতে লাগলো… শুধু মাত্র ফারহা ছাড়া … ফারহা মেঘ আদিলের কথা আচরন দেখে সন্ধেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে ..কিছুতেই বুজতে পারছে না ওদের আচরন মনে হচ্ছে এরা অনেক আগে থেকেই নিজেরা পরিচিত ….মেঘ হাসতে হাসতে ফারহার দিকে তাকাতে দেখে ফারহা কেমন সন্ধেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ওর দিকে …. মেঘ হুট করে হাসি বন্ধ করে ফারহার পাশে বসে পরে …… আফিফ কাজী কে বিয়ে পড়ানোর জন্য তারা দিতে কাজী বিয়ে পড়ানো শুরু করে …. কাজী মেঘ কে কবুল বলতে বলায় মেঘ দ্রুত তিনবার কবুল বলে কিন্তু ফারহা কে কবুল বলতে বলায় ফারহা চুপ করে রইল…. ফারহা কে চুপ থাকতে দেখে মেঘ ফারহার হাত চেপে ধরে … .. মেঘ ফারহার হাত চেপে ধরায় ফারহা মুখ তুলে মেঘের দিকে তাকিয়ে দেখে মেঘ রক্ত চক্ষু নিয়ে তাকিয়ে আছে …ফারহা ভয়ে এক ঢোক গিলে ফারহা এক নিশ্বাসে তিন বার কবুল বলে …… ফারহার কবুল বলা শেষ হতে স্বাক্ষর করে ….

—-” জিজু বিয়েটা শেষ পর্যন্ত হয়ে গেল এখন কিন্তু ট্রিট দিতে হবে…”(তিন্নি)

—” ডোন্ট ওয়ারি তিনু বেবি ,, সময় মতো ট্রিট পেয়ে যাবে বুজলে…”(মেঘ)

বিয়ে শেষ হতে তিন্নি ইভা এসে সবাই কে মিষ্টি মুখ করিয়ে মেঘ কে মিষ্টি দিয়ে বলে ফারহা কে খাইয়ে দিতে … মেঘ নিয়ম মতো ফারহা কে মিষ্টি খাওয়াতে নিলে ফারহা মুখ ঘুড়িয়ে অন্য দিকে তাকায়… তা দেখে মেঘ ফারহার কানের কাছে মুখ এনে বলে……

—-” প্রেয়শী এখন যদি তুমি মিষ্টি টা না খাও দেন আমি ভুলে যাবো আমরা কোথায় কাদের সামনে আছি ..”

—“মানে..”

—” মানেটা হচ্ছে আমি তোমার ওই রসালো মিষ্টি টা সবার সামনে খাবো…”(ফারহার ঠোটের দিকে ইশারা করে)

ফারহা মেঘের কথা শুনে ঘাবড়ে যায় … মেঘ ফারহাকে মিষ্টি খাইয়ে দিতে নিলে ফারহা চুপ করে মিষ্টি টা খেয়ে নেয় ….

—” ফারু এবার তুই জিজুকে মিষ্টি খাইয়ে দে….”(ইভা)

—“ইসস এখন আমার ইচ্ছে করছে এই ইভা কে মেসির মতো ফুটবল শর্ট মেরে উগান্ডায় পাঠিয়ে দি … শালী এতো যখন জিজু কে মিষ্টি খাওয়ানোর শখ তো তুই খাওয়া না আমাকে বলছিস কেন..??”(মনে মনে)” হু দিচ্ছি” (দাঁত কিড়মিড় করে বললো ফারহা……

ফারহা মেঘ কে মিষ্টি খাইয়ে দেওয়ার পর ইভা তিন্নি ফারহা কে নিয়ে রুমে চলে যায় ….. আর এদিকে মেঘ আদিল কে হ্যাগ করে বলে….

—-” Thank You শালা বাবু তুমি এতোটা হেল্প না করলে হয়তো আমার কাজ টা করা এতোটা সহজ হতো না…”(মেঘ)

—-” নো নো জিজু আপনি কেন Thank you বলছেন Thank you তো আমার বলা উচিত … আপনি যদি না সময় মতো সব টা আমাকে না জানাতেন তাহলে হয়তো আমিও ওই বিশ্বাসঘাতকদের বিশ্বাস করে আপুর ক্ষতি করতাম … আমি সত্যি গ্রেটফুল আপনার কাছে…”

—” নো শালা বাবু তুমি যা করেছো তা করা সত্যি সবার পক্ষে সম্ভব ছিল না … নিজের পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে সত্যের পথে চলছো বেপার টা সত্যি খুব একটা সহজ ছিল না…”

—-” জিজু আপনার কাছে আমার একটাই চাওয়া আপনি প্লিজ আমার আপু টাকে কখন কষ্ট দিবেন না ওকে অনেক অনেক বেশি ভালোবাসবেন যাতে আমাদের ও ভুলে যায় … ও যখন নিজের আপন জনদের সত্যিটা জানতে পারবে তখন ওকে সামলানো সত্যি খুব কঠিন হয়ে পরবে…. তাই আমি চাই না আমার সহজ সরল বোনটার মন ভেঙ্গে যাক ….”(আদিল)

—” আই প্রমিস ইউ ,,,আমার জীবন থাকতে আমার প্রেয়শীকে কষ্ট পেতে দিবো না ,,,আমি ওর সোল মেট… ওকে নিজের জীবনের থেকে ও বেশি ভালোবাসি …. ওর সামান্য কষ্ট পেলে আমার কলিজায় লাগে…তাহলে ওকে কি করে কষ্ট পেতে দি বল?? ..”(মেঘ)

—“Thank you জিজু ,,,,আমি আপনাকে আমি চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করতে পারি বলে আজ আমি আপনার সামনে দারিয়ে…..ভালো থাকবেন আমি আসি ..”

—” না শালাবাবু তোমার কোথাও যাওয়া চলবে না ,,, তুমি আজ থেকে এখানে থাকবে আর হা আমি কোন এক্সকিউজ শুনতে চাই না……খেয়ে উপরে তোমার জন্য ঠিক করা রুমে রেস্ট করো আমি আসছি”(মেঘ )

মেঘ আদিল কে রেখে বাড়ির কোনে রাখা মিররের সামনে গিয়ে দাড়িয়ে মিররে হাত রেখে বাকা হেসে উঠল….

—” বস এখন কি করবো..?? “(আসলাম)

—” খেলা ,,,খেলা খেলবো আসলাম…”(মেঘ)

—” বস প্লিজ একটু বুঝিয়ে বলুন ..কিসের খেলার কথা বলছেন আপনি..??”(আসলাম)

—” আসলাম ইউকে থেকে জ্যাক কে দেশে আসতে বলো আজ … “(মেঘ)

—” বস জ্যাক কেন আমি তো আছি আপনার সব করে দেওয়ার জন্য..?”(আসলাম)

আসলামের কথা শুনে মেঘ রাগি চোখে আসলামের দিকে তাকিয়ে বলতে যাবে তখনি আসলাম বলে উঠলো ……

—” সরি সরি বস আমার ভুল হয়ে গেছে সেকেন্ড টাইম আর সেই ভুল হবে না আমি এখুনি জ্যাক কে ফোন করছি….”(আল্লাহ গো আজ মরতে মরতে বেচে গেলাম কি যে হয় আমার কেন যে বস কে এমন উলটা পালটা কথা বলি বুঝি না..)

আসলাম ফোন নিয়ে দুরে যেতেই মেঘ অন্য গার্ডদের বলে মিরর টা সরিয়ে নিতে …মেঘের কথা মতো মিরর সরিয়ে নেয় ……
.
🍁
.
— তো মিস্টার আগুন খান বিয়ে টা কেমন দেখলে..??(মেঘ)

—” আপনার কি মনে হয় ফারহা আপনি জোড় করে বিয়ে করতে বাধ্য করায় ফারহা সব টা মেনে নিবে কখনো না … ও আপনাকে মেনে নিবে না ..”(আগুন)

আগুনের কথা শুনে মেঘ গা কাপিয়ে হাসতে লাগলো….

—” লাইক সিরিয়াসলি ,,, তোর মুখেই এই সব কথা মানায় বার্স্টাড ….. “(মেঘ)

—” হেই ম্যান মাইন্ড ইউর ল্যাঙ্গুয়েজ আদারওয়াইজ.”..বলতে বলতে থেমে গেল আগুন…কিন্তু মেঘ থামলো না … মেঘের হাতের এক পান্চ খেল আগুন চেয়ার নিয়ে ছিটকে পরলো দুরে…

—” আসলাম….”(জোড়ে চিৎকার করে)

—” ই ইয়েস বস … ”

—” আরিয়ান খান কে কালকের ভিতর আমার সামনে দেখতে চাই ….আর বিয়ের ভিডিও টা ভালো করে এই রাসকেল টা কে দেখা … ওকে যা করার ওর প্রান প্রিয় বাবার সামনে করবো…..আমার আদেশ অমান্য করার শাস্তি তো পেতে হবে সুদ সমেদ ….”…..প্রচন্ড রেগে গিয়ে বললো মেঘ….. এদিকে নাক দিয়ে গলগল করে রক্ত বের হচ্ছে আগুনের … কিন্তু আগুনের সে দিকে কোন খেয়াল নেই … মেঘের মুখে আরিয়ান নাম টা শুনে আগুনের বুকটা ধক করে উঠল এটা ভেবে এমন ভয়ঙ্কর লোকের সাথে তার ড্যাড কি করে জরিয়ে আছে … কোন আদেশ মানেনি ড্যাড যার জন্য ওকে ও শাস্তি পেতে হবে…..???

আগুন তার প্রশ্নের ঝুলি নিয়ে মেঘ কে প্রশ্ন করতে গিয়ে ও পারলো না …

মেঘ আগুন কে খাচায় বন্ধ করে ব্লাক ডাইমন্ডের (কুমির) উপর ঝুলিয়ে রেখেছে…..
.
.
🍁
.
.
—-” ওয়াট এটা কি করে সম্ভব ফারহা ওই মেঘ কে বিয়ে করেছে..???”(মোহনা)

—” হ্যা যা শুনেছিস ঠিক শুনেছিস .. এখন আমাদের কাজ টা আরো কঠিন হয়ে গেল …”(ফাহিম)

—” তাহলে এখন কি করবো আমরা..??”(মোহনা)

—” কিছু তো একটা করতেই হবে কিন্তু তার আগে মেঘের থেকে ফারহাকে আলাদা করতে হবে তাহলে মেঘ কে কোন ভাবে আটকানো যাবে আর ততোদিনে ফারহার সব সম্পত্তি ওর নামে হয়ে যাবে….”(ফাহিম)

—” বাহ ভাই ভালো প্লান করেছিস বটে কিন্তু কি করে প্লান টা সাকসেস হবে .. এভাবে লুকিয়ে থেকে কোন প্লান সাকসেস হয় নাকি??”(মোহনা)

—” তোকে কে বললো আমরা লুকিয়ে থাকবো ..?? কাল আমরা আমার চৌধুরী ম্যানশনে যাবো কাল থেকে ওখানে থাকবো …”(ফাহিম)

—” কিন্তু ভাই আমার ছেলে আমার স্বামী ওদের কি হবে ..??”(মোহনা)

—” জানি না …..”

—” জানো না মানে ?? কি বলতে চাইছিস তুই ??”

—” কাল জানতে পারবি কি বলতে চাইছি আমি …”

—” ঠিক আছে ভাই আমি কাল পর্যন্ত অপেক্ষা করবো ….”(মোহনা)
.
🍁
.
—-” কিহ বলছেন কি আঙ্কেল আগুন বি ডি তে আপনার বসের কাছে বন্দি ..??”(সামিরা)

—” হ্যা সামিরা আমার মা মরা ছেলেটা বোধ হয় আমার জন্য শেষ হয়ে যাবে…”(কাদতে কাদতে বললো আরিয়ান খান )

—” প্লিজ আঙ্কেল কাদবেন না ,,আমি যাবো আপনার সাথে বিডি তে …. আগুন কে আপনার কাছে ফিরিয়ে আনবো …”(সামিরা)

—” মা সামিরা তুমি যে কথা টা বললে তাতে আমি খুশি কিন্তু তুমি কখন পারবে না আগুন কে কিং য়ের হাত থেকে বাচাতে … তিনি এক ভয়ঙ্কর মানুষ ..যার কাছে বাঘ শিংহ হায়না কুমির পোষ মানতে বাধ্য হয় আর মানুষ হা…”(আরিয়ান খান)

—” আঙ্কেল আমার উপর আপনি প্লিজ বিশ্বাস রাখুন আর সবটা প্রথম থেকে খুলে বলুন সবটা আমার জানা জরুরি…”(সামিরা)

—” ঠিক আছে মা তুমি যখন সব টা জানতে চাইছো তাহলে শোন………….
.
.
.
.
#চলবে……………….🍁🍁🍁

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here