হিংস্র_ভালোবাসা🌹 #Season_2 #Writter_Farhana_Chobi #পর্ব-৩২ .

0
730

#হিংস্র_ভালোবাসা🌹
#Season_2
#Writter_Farhana_Chobi
#পর্ব-৩২
.
🍁
.
আগের দিনের মতো তিন্নি ইভা আফিফ আদিল মেঘ ফারহা ডাইনিংয়ে বসে ব্রেকফাস্ট করছে ..মেঘ ফারহা কে কোলে বসিয়ে ফারহা কে খাওয়াচ্ছে আর নিজে ও খেয়ে নিচ্ছে …. ফারহার প্রতি মেঘের এতো ভালোবাসা দেখে আদিল এক সস্থির শ্বাস ফেললো… … অনেকক্ষণ যাবত তিন্নির ফোনে একটা নাম্বার থেকে লাগাতার ফোন আসছে আর তিন্নি কলটা রিসিব না করে কেটে দিচ্ছে … যতবার কল টা আসছে ঠিক ততোবার তিন্নি নার্ভাস হয়ে পরছে …

মেঘ পুরো বিষয় টা আড়চোখে খেয়াল করছে তা তিন্নি বুজতে ও পারলো না…হঠাৎ করে মেঘ তিন্নি কে বলে ওঠে…..

—” তিনু বেবি ,, তুমি কল টা রিসিব করছো না কেন..?? বার বার কল আসছে তুমি রিসিব করছো না ..এটা তো কোন আর্জেন্ট কল হতে পারে..?? রিসিব করে কথা বলো “(মেঘ)

মেঘের কথা শুনে তিন্নি প্রচন্ড ভয়ে ঘামতে লাগলো … হাত পা থর থর করে কাপছে তিন্নির …. তিন্নির এমন অবস্তা দেখে মেঘের ঠোটের কোনে বাকা হাসি ফুটে উঠলো…

—” তিন্নি কি হয়েছে তোর?? এভাবে ঘামছিস কেন…??(ফারহা)

—” আই থিং ওর শরীল খারাপ লাগছে…”(ইভা)

—“আ .. গাইস আমার শরীল খারাপ লাগছে আমি রুমে গিয়ে রেস্ট নি তোরা প্লিজ কন্টিনিউ কর…”

তিন্নি আর কাউ কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ডাইনিং টেবিল ছেড়ে উপরের গেস্ট রুমে চলে গেল…এদিকে মেঘের কোন হেলদোল নেই মেঘ সেই ঠোটের কোনে বাকা হাসি রেখেই ফারহা কে খাওয়াতে লাগলো…….
.
.
.
—” ওয়াট’স হেপেন্ড সামু এতোবার করে কল দিচ্ছিস কেন কি হয়েছে ?? তুই জানিস আর একটু হলে জিজুর কাছে ধরা পরে যাচ্ছিলাম …”(প্রচন্ড রেগে বললো তিন্নি)

—” কাম ডাউন জানু ,,ধরা পরতে যাচ্ছিলি বাট ধরা তো পরে যাসনি ,,তাহলে যাষ্ট চিল…”(সামিরা)

—” কি চাস তুই আমার কাছে ..?? ক্লিয়ার করে বল সামু..??”(তিন্নি)

—” ইউ নো ভেরি ওয়েল তিন্নি ,,ওয়াট আই’এম ওয়ান্ট… নাও লিসেন টু মি ভেরি কেয়ারফুলি …আই ওয়ান্ট আগুন সেটা যেভাবেই হোক ,,এন্ড ওকে মেঘ চৌধুরীর হাত থেকে মুক্ত করতে তুই আমাকে হেল্প করবি…”(সামিরা)

—” আর ইউ এ্যাভগন ম্যাড সামু,?? ইউ এক্সপেক্ট মি ,,আমি ওই অসভ্য লোকটাকে মুক্ত করতে তোকে হেল্প করবো …হা হা হা ভেরি ফানি..”(তিন্নি)

তিন্নির কথা শুনে সামিরা প্রচন্ড রেগে যায়…. কান থেকে ফোন সরিয়ে স্বজোড়ে ফ্লোরে আচাড় মারে……..এদিকে কল টা কেটে যেতেই তিন্নি এক স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে ..বিছানায় শুয়ে পরে ….

—” ওর সাহস কি করে হয় আমাকে না বলার হাউ ,,হাউ ডেয়ার সি ,,, ও জানে না আমি কে !! এই সামিরা খান্না কে না বলে ঠিক করলি না তিন্নি এর ফল তোকে ভুকতে হবে মাইন্ড ইট ….”(সামিরা)
.
🍁
.
—-” বস জ্যাক যে ফ্লাইটে আসছে সেটা মাত্র ল্যান্ড করেছে … আমি লোক পাঠিয়েছি ওকে রিসিব করার জন্য…”(আসলাম)

ফারহা মেঘের মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে জ্বিগাসা করে…..” এই জ্যাক টা কে ..?? আপনার না মানে তোমার রিলেটিভ নাকি..??”

ফারহার মুখে একবার আপনি একবার তুমি বলতে দেখে আসলামের প্রচুর হাসি পাচ্ছে কিন্তু হাসতে পারছে মেঘের ভয়ে ,,আর মেঘ সে তো ফারহার মুখের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে …..

—” এভাবে হ্যা করে তাকিয়ে আছো কেন ? আর কি জ্বিগাসা করলাম তোমার কাছে হুমম..??…… চোখ রাঙ্গিয়ে বললো ফারহা ,,,ফারহার চোখ রাঙ্গানি দেখে আসলামের চোখ বেরিয়ে আসতে নেয় …. ভাবা যায় আন্ডারওয়ার্ল্ডের কিং কে কেউ চোখ রাঙ্গানি দিচ্ছে ,,, এখানে ফারহা ম্যামের জায়গায় অন্য কেউ হলে এতোক্ষনে তার লাস ব্লাকডাইমন্ডের পেটে হজম হয়ে যেত ,,,, সেখানে মেঘের কোন রিয়াকশন আসলাম দেখতে পাচ্ছে না ………

—” প্রেয়শী জ্যাক আমার বিদেশের বিজনেস সামলায় বলতে পারো আমার বা হাত…”(মেঘ)

—” ওহ তাহলে এই বেইকুফ লোকটা (আসলাম কে দেখিয়ে) আপনার ডান হাত তাই তো..??”(ফারহা)

ফারহার কথায় মেঘের হাসি পেলে ও আসলামের বেশ রাগ হচ্ছে … দ্বিতীয় বার কিডন্যাপ করার পর আসলাম ফারহার স্বভাব কিছুটা হলে ও বুজতে পারে তাই আর রাগ করে না কিন্তু আজ আসলামের প্রচুর রাগ হচ্ছে ….. ফারহা হঠাৎ করে আসলামের হাত ধরে পাশের চেয়ারে বসিয়ে দেয় আংশিক ঘটনায় মেঘ আসলাম অবাক হয়ে যায়……

—” সরি ভাইয়া ,,আপনাকে মেবি হার্ড করে ফেললাম বেইকুফ বলে … কিছু মনে করবেন না ,,ছোট বোন ভেবে মাফ করে দিবেন…??”(ফারহা)

আসলাম চেয়ার ছেড়ে দিয়ে উঠতে যাবে ঠিক তখনি মেঘ চোখের ইশারা করে বসতে বললো….আসলাম উঠলো না ……

—” ভাইয়া মাফ করেছেন তো..?? এই ছোট বোন টা কে..??”….বাচ্চাদের মতো ঠোট উল্টিয়ে বললো ফারহা….. আসলাম ফারহার বাচ্চামো দেখে হেসে ফেললো …..

—” না বনু আমি কষ্ট পাইনি .. আর তুমি তো আমাকে ভাইয়া ডেকেছো তাহলে কষ্ট কেন পাবো … ভাই বোনের মাঝে এরকম অনেক দুষ্টুমি চলে…”(আসলাম)

—” তাহলে আমাদের সবার সাথে আজ থেকে খাবার খাবেন আলাদা না মনে থাকবে…??”(ফারহা)

—” একদম ,,তবে বনু এখন আমাকে উঠতে হবে অনেক কাজ পরে আছে ..আর হ্যা আমি নাস্তা করেছি তাই এখন কিছুই আর এই ছোট পেট টায় ঢুকবে না…”(আসলাম)

মেঘ এতোক্ষন আসলাম আর ফারহার কথা শুনছিল … মেঘ ভেবে পাচ্ছে না ফারহা কি করে অচেনা অজানা লোক কে এক মিনিশে আপন করে নিতে পারে..?? প্রত্যেকটা বার প্রত্যেক টা মুহূর্তে ফারহার উপর মুগ্ধ হয় মেঘ…..ভালোবাসা যেন দিন কে দিন বেড়েই চলেছে…….

—” আহা কি সিন মাইরি …”(ইভা)

—” ওয়াট ,,মাইরি টাইরি এগুলো কি সব ল্যাঙ্গুয়েজ ইউস করছিস ইভা…?”(আফিফ)

—” শোন আমি এরকম ভাষা ব্যাবহার করবো তোর ইচ্ছে হলে শুনবি নাহলে কানে আঙ্গুল দিয়ে রাখবি….”(ইভা)

এতোক্ষন আদিল চুপ করে সবার কথা শুনছিলো কিন্তু যখন ফারহা আসলাম কে ভাইয়া বলে ডেকে বড় ভাই বানালো তখনি আদিলের মন টা খারাপ হয়ে যায়….. আদিল সাবধানে সেখান থেকে উঠে চলে আসে……

—” প্রেয়শী আই এ্যাভ টু গো নাও .. তুমি নিজের দিকে খেয়াল রাখবে আর কোন কিছুর প্রয়োজন হলে নীলা, তাইমুন ,(সারবেন্ট) কে বলবে ,,ওকে ..(ফারহার কপালে চুমু দিয়ে )

—” আচ্ছা,,, “,,,,,ফারহা মেঘের কোল থেকে উঠতে নিলে মেঘ ফারহার কোমর চেপে ধরে ,,, আসলাম আর না দারিয়ে দ্রুত সেখান থেকে কেটে পরে ,,,ফারহা যেহেতু বড় ভাই বলে ডেকেছে সেহেতু ওখানে দারিয়ে বোন আর তার বরের রোমান্স দেখতে পারি না ,,,, ,, আফিফ ইভা কে নিয়ে ডাইনিং প্লেস থেকে সরে পরে অবশ্য ইভা যেতে চাই নি আফিফ জোর করে নিয়ে যায়…..

—” এই যে মিসেস চৌধুরী ,, যাওয়ার আগে যে গুড বাই কিসি দিতে হয় হাসবেন্ট কে তা কি আপনি জানেন না..???”(মেঘ)

—” ইয়ে মানে গুড বাই কিসি তো তুমি দিলে তাহলে এখন আবার আমাকে দিতে হবে কেন..??”(ফারহা)

—” ওহ গড তুমি জানো না এটাই নিয়ম বর যে কোন কাজে বাহিরে গেলে তার আগে বর কে গুড বাই কিসি দিতে হয় ..”(মেঘ)

—” এক মিনিট তাহলে মামুনি কে বাবাই কে কোথাও যাওয়ার আগে গুড বাই কিসি দেয় না কেন..??”(ফারহা)

ফারহার প্রশ্ন শুনে মেঘের যেন মাথাটাই ঘুড়ে গেল …বলে কি এই মেয়ে ..বাবা মাকে গুড বাই কিসি দেবে তাও তাদের ছেলে মেয়েদের সামনে ভাবা যায়….

—” এতো কথা তো আমি শুনতে চাইনি প্রেয়শী ,,আমি এখন বাহিরে যাবো আসতে লেট হবে ,,,তাই ঝটপট কিসি টা দিয়ে দেও….”(একটু রাগি গলায় বললো মেঘ)

—” রাক্ষস বর টা মেবি রেগে যাচ্ছে .. ফারু সামান্য তো একটা কিসি দিয়েই দে চোখ বন্ধ করে তাতে কি বর টা তো তোরই.(মনেমনে)” আচ্ছা আচ্ছা দিচ্ছি তো তার আগে চোখ বন্ধ করেন.. !”

—” কেন চোখ বন্ধ করতে হবে হুম ..”(মেঘ)

—” কজ আমার লজ্জা করে তাই..”(মুখ নামিয়ে বললো ফারহা)

—” ওরে আমার লজ্জাবতী বউ রে কাল রাতে তো সব টাই দেখে ফেলেছি ,,আর এখনো লজ্জা পাচ্ছো…”(মেঘ)

মেঘের কথায় ফারহার যেন দ্বিগুন লজ্জা পেল ,,,চোখ মেলে মেঘের দিকে তাকাতে পারছে না……

—” ছিঃ কি লজ্জা … লোকটার মুখে কোন লাগাম নেই লাগামহীন লোক একটা…”(ফারহা)

— ” কি ভাবছো প্রেয়শী ,, আ’ম গেটিং লেট ,,,দেখো চোখ বন্ধ করেছি ,, এখন দ্রুত দেও…”(চোখ বন্ধ করে বললো মেঘ)

মেঘ কে চোখ বন্ধ করতে দেখে ফারহা মেঘের কপালে আলতো করে ঠোট ছুইয়ে দিল …..কিন্তু মেঘ চোখ মেলে তাকালো না তা দেখে ফারহা বলে উঠলো …….

—” এই যে আমার রাক্ষস বর চোখ মেলে তাকান গুড বাই কিসি দিয়েছি তো…”(ফারহা)

মেঘ চোখ মেলে ফারহার দিকে তাকিয়ে বলে “এটা তোমার গুড বাই কিসি .??”

মেঘের কথায় ফারহা মাথা নেরে হ্যা বলে … মেঘের কেন যেন খুব রাগ হলো একহাত দিয়ে ফারহার কোমর চেপে ধরে অন্য হাত দিয়ে ফারহার চুলে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে ফারহার উষ্ণ ঠোট জোড়া নিজের ঠোটের আয়ত্তে নিয়ে নেয়…………..

দশমিনিট পর মেঘ ফারহা কে ছেড়ে দেয়….

— ” এটা হলো গুড বাই কিসি মনে থাকবে .??রোজ সকালে আমার বের হবার সময় এই কিসি দিবে নাহলে তোমার যা অবস্তা করবো তা তুমি ভাবতেও পারবে না……আর একটা কথা আমি না ফেরা পর্যন্ত তুমি বাড়ি থেকে বের হবে না”(মেঘ)

ফারহা মেঘের ভয়ে মাথা নারে মানে হ্যা কিসি দিবে আর বাড়ি থেকে বের হবে না …. মেঘ ফারহা কে কোলে করে রুমে বেডের উপর বসিয়ে দিয়ে কিছু ফাইল নিয়ে বেরিয়ে যায়…. মেঘ বেরিয়ে যাওয়ার পনেরো মিনিট পর তিন্নি আসে ফারহার রুমে………

—” কি রে তুই তোর শরীল এখন সুস্থ তো ..??”(ফারহা)

—“হ্যা রে ফারু কিন্তু মনে হচ্ছে মাইগ্রেনের ব্যাথাটা আসতে আসতে বাড়ছে ,,,”(তিন্নি)

—” তাহলে দেরি না করে দ্রুত মেডেসিন টা নিয়ে নে…তাহলে আর ব্যাথা করবে না ..”( ফারহা)

—“কি করে নিবো সাথে করে তো কোন মেডেসিন নিয়ে আসি নি .. এখন বাইরে যেয়ে নিয়ে আসতে হবে….আর তাই তোর কাছে আসা দোস্ত আমার সাথে একটু বাইরে যাবি মেডিকেল শপে..?? “(তিন্নি)

—” আসলে তোর জিজু তো আমাকে বাড়ি থেকে বার হতে নিষেধ করেছে…ওকে না বলে কি করে যাই তার চেয়ে বরং তুই আফিফ কে বল নয়তো ইভাকে নিয়ে যা…”(ফারহা)

—” ওরা কেউ বাড়িতে নেই দেখে তোকে বললাম ফারু ,,,ঠিক আছে তুই যখন যেতে চাস না তখন থাক এই ব্যাথা নিয়ে আমার পক্ষে একা বাইরে যাওয়া সম্ভব না তারপর ও যেতে হবে….”(তিন্নি কথা টা বলে রুম থেকে বের হতে নিলে ফারহা পিছু ডাক দেয়)

—” দারা তিন্নি আমি যাবো …”(ফারহা)

ফারহা তিন্নি গাড়ি ছাড়াই বেরিয়ে পরে …কাউ কে কিছু না বলে … বাড়ি থেকে বেশ খানিকটা দুরে যেতেই হঠাৎ করে ফারহা তিন্নির সামনে একটা মাইক্রো থেমে বেশ কিছু মুখোশ পরা লোক হাতে বড় বড় ছুড়ি গান নিয়ে বেরিয়ে আসে …..লোক গুলো ফারহার দিকে এগোতে নিলে ফারহা তিন্নি ভয় পেয়ে দৌড়ে পালাতে নিলে রাস্তায় হোচট খেয়ে পরে যায় ফারহা…..হুট করে ফায়ারিংয়ের শব্দ পেয়ে ফারহা অতি কষ্টে মাথা তুলে পিছুনে তাকিয়ে দেখে মেঘ …হ্যা ওর মেঘ হাতে ইয়া বড় ধারালো ছুড়ি ,,,,ছুড়িটা ঘেষে রক্ত বেয়ে পরছে আর ঠিক তার সামনে পাচঁ জন মুখোশ পরা লোক গুলোর নিথর গলা কাটা লাস পরে আছে…… ফারহা আর কিছু দেখতে পেল না তার আগে জ্ঞান হারালো……….
.
.
.
#চলবে………… 🍁🍁🍁

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here