#হিংস্র_ভালোবাসা🌹
#Season_2
#Writter_Farhana_Chobi
#পর্ব-৩৫
.
🍁
.
ডক্টরের কথা শেষ হতেই মেঘের গান থেকে একটা বুলেট সোজা গার্ডের পায়ে গিয়ে ছুলো….গার্ড ব্যাথায় চিৎকার করে উঠলো …… ডক্টর গার্ডের কাছে যাবার সাহস পাচ্ছে না এদিকে গার্ড ব্যাথায় কুকড়ে যাচ্ছে ….
মেঘের চোখ মুখ থেকে যেন আগুন ঝরছে … ভিষন অস্বাভাবিক লাগছে মেঘ কে … জ্যাক আসলাম মেঘের সামনে দারিয়ে কথা বলার সাহস পাচ্ছে না….. রক্ত জবার মতো চোখ ,,, নাক কান মুখ লাল হয়ে আছে … এলোমেলো চুল পুরো বিদ্ধোস্ত লাগছে মেঘ কে …. হঠাৎ করে আসলামের ফোন টা বেজে ওঠে … আসলাম কল টা রিসিব করে ….
—“হ্যালো..”(আসলাম)
—“……..”
—” ওয়াট আমরা এখুনি আসছি..”(আসলাম)
কল কেটে সাহস করে মেঘের সামনে দারিয়ে আসলাম বলে…..
—” ব,,,বস আ,,আগুন আর তিন্নি পালিয়েছে….”….কথা টা বলে আসলাম দ্রুত মেঘের সামনে থেকে সরে গেল … মেঘের রাগ আর মেঘ কন্ট্রোলে রাখতে পারলো না হসপিটালের সিকিউরিটি গার্ডের বুকে মেঘের গানের সব বুলেট ঢুকিয়ে দিলো….ডক্টর নার্স মেঘের ভয়ে চোখ মুখ চুপষে গেছে ভয়ে হাত পা কাঁপছে সবার…. মেঘ দ্রুত হসপিটাল থেকে বের হয়ে গেল …মেঘের পিছু পিছু মেঘের আসলাম জ্যাক যেতে লাগলো…..
.
.
.
—“আসলাম দশ মিনিটের মধ্যে আরিয়ান খান কে আমার চোখের সামনে দেখতে চাই…”( চোখ বন্ধ করে সোফায় হেলান দিয়ে বললো মেঘ)
—” ইয়েস বস ….”(আসলাম)
মেঘের নির্দেশ মতো আসলাম আরিয়ান কে ঠিক দশ মিনিটের মাথায় মেঘের সামনে দার করায়…… আরিয়ান খান প্রথম বার কিং কে সামনে থেকে দেখে ভয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে…. মেঘ হাত দিয়ে ইশারা করতে আসলাম মেঘের সামনে থেকে আরিয়ান কে সরিয়ে নিয়ে যায়….
—” বস আগুন আর ম্যামের ফ্রেন্ড কে ফাইব স্টার গ্রপের বস SK তুলে নিয়ে গেছে….”(জ্যাক)
মেঘের হাতে রেড ওয়াইনের গ্লাসে চুমুক দিয়ে ,,,শান্ত দৃষ্টিতে জ্যাকের দিকে তাকিয়ে বলে…….
—“জ্যার SK এর ফুল মিনিং জানিস ??”(মেঘ)
—” নো বস “(জ্যাক)
কথাটা শুনে মেঘ বাকা হেসে জ্যাক কে বলে……
—” এক ঢিলে দুই পাখি মারা ওয়াও আ’ম ইমপ্রেস ,, বাট প্লানে একটা ভুল থেকে গেল আর এই ভুলের মারাত্মক সুযোগ নিবো আমি হা হা হা “(মেঘ)
মেঘের কথা শুনে জ্যাক বোকার মতো হা করে তাকিয়ে আছে …. মেঘের সব কথা যেন জ্যাকের মাথার উপর দিয়ে চলে গেল….
মেঘের হঠাৎ করে বিহেবিয়ার চেন্জ হয়ে গেল …. রুমের সব জিনিস মেঘ ভাঙচুর শুরু করল…. কেউ সাহস করে মেঘ কে আটকানোর চেষ্টা করল না .. এদিকে মেঘের লোক জন পাগল কুকুরের মতো ফারহা কে পুরো শহর খুজতে লাগলো… কিন্তু ফারহার কোন খোজ পেল না… মেঘ পাগলের মতো ফুল স্পিডে গাড়ি চালিয়ে খুজতে লাগলো …
—” হয়ার আর ইউ প্রেয়শী ,, কোথায় তুমি আমি আর পারছি না ,, তুমি বিহিন আমার অস্তিত্বহীন … আমার কোন অস্তিত্ব নেই তুমি ছাড়া…. আমার বুকের স্পন্দন তুমি ,,, তোমাকে ছাড়া একমুহূর্তের জন্য আমার শ্বাস আটকে আসে …. এতোগুলো বছর তোমাকে ছাড়া জীবন্ত লাস হয়ে বেচে ছিলাম তোমাকে পেয়ে নতুন করে জীবন ফিরে পেলাম আর তোমায় আবার হারিয়ে ফেললাম আমি…..পারবো না পারবো না আমি তোমাকে ছাড়া বাচঁতে ,,,পারবো না আমি তুমি বিহিন অস্তিত্বহীন হয়ে থাকতে…. ফিরে এসো ,,ফিরে এসো এ বুকে প্লিজ প্রেয়শী প্লিজ…. মেঘের দু-চোখে তার প্রেয়শী কে হারানোর কষ্টে যেন পানি শুকিয়ে গেল…. মেঘ নিয়ন্ত্রণ হীন হয়ে গাড়ি চালাতে লাগলো …. মেঘ গাড়ি ব্রেক করার চেষ্টা করলে ব্রেক কাজ করলো না… মেঘের বুজতে বাকি নেই মেঘের গাড়ির ব্রেকফেল করানো হয়েছে…. মেঘ গাড়ি নিয়ে শহরের শেষের দিকে ঘন জঙ্গল ভেদ করে পাহাড়ের খাদের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো ….. মেঘ গাড়ির দরজা খোলার ট্রাই করে ও ব্যার্থ হয়ে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো…..মেঘ নিজের সামনে মৃত্যু দেখে চোখ বন্ধ করে মৃত বাবা মা আর মিহু ফারহার মুখটা ভেষে উঠল…..দশ গজ দুরে খাদ মেঘের গাড়িটা কিছু সেকেন্ডের ভিতর অতল খাদে তলিয়ে যাবে … ঠিক সেই সময় একটা গাড়ি এসে মেঘের গাড়ির সামনে এসে থামে … মেঘের গাড়ি সার্পোট পেয়ে থেমে যায় …. গাড়ি হঠাৎ করে থামতে দেখে মেঘ চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে ….. একটা ব্লাক কার ওর গাড়িটার সামনে … মেঘ গাড়ির দরজায় লাথি মারতে দরজাটা খুলে যায় ..মেঘ গাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে ..যে তার প্রান বাঁচালো তাকে থ্যাংক্স দেওয়ার জন্য গাড়ির কাছে যেতে দেখে গাড়ি ফাঁকা ড্রাইবিং সিটে একটা চিরকুট রাখা … মেঘ চিরকুট টা তুলে মেলে দেখে……..
*** মেঘরাজ নিজের ইমোশন গুলো কে নিজের কন্ট্রোলে রাখো … এমন না হয় তোমার ইমোশন গুলো কে কাজে লাগিয়ে তোমার শত্রপক্ষ তোমাকে হারিয়ে দিক …. এই গাড়িটা নিয়ে চলে যাও … আর হ্যা তোমার প্রেয়শী কে নিয়ে বেশি চিন্তা করো না তার সময় হলে সে তোমার সামনে এসে ধরা দিবে…………..
ইতি তোমার
শুভাকাঙ্ক্ষী ….
মেঘ চিরকুটে মেঘরাজ নাম টা দেখে চমকে যায়…. পরক্ষনে মেঘের ঠোটের কোনে এক রহস্যময় হাসি ফুটে উঠল …….মেঘ সেই অজানা শুভাকাঙ্ক্ষীর গাড়ি নিয়ে ব্যাক করে………
.
.
.
.
.
.
.
—” হাই তিন্নি কেমন আছিস এখন আর এখানে তোর কেমন লাগছে…??”(সামিরা)
— ” তু,,,তুই সামু ?? তুই আমাকে অজ্ঞান করে এখানে তুলে নিয়ে এসেছিস?? কিন্তু কেন..???”(তিন্নি)
—” ওহ যাষ্ট স্যাট আপ তিন্নি তোর কি মনে হয় সামিরা খান্নার কাজিন নাজমিন খান্না তিন্নি কে কেউ বিনা দোষে আটকে রাখবে আর আমি তা মেনে নিবো ..??”(সামিরা)
—” কাজিন হা হা হা হাসালি সামু তুই আমাকে তোর কাজিন তোর বোন মনে করিস??? যদি সত্যি তাই মনে করতি তাহলে তোর বাবার সাথে মিলে আমাদের সব সম্পত্তি কেড়ে নিয়ে রাস্তায় দার করাতি না …”(তিন্নি)
—” লিসেন তিন্নি তোকে আমি দয়া করে ওই মেঘ চৌধুরীর হাত থেকে বাচিয়েছি বলে এটা ভাবিস না তোকে আবার সেখানে ফেরত পাঠাতে পারবো না…আর বাকি রইল তোদের পথে দার করানো …আমি চাইলে এখুনি চাচুর ব্যাংকের চাকরি টা খেয়ে নিতে পারি….”(সামিরা)
সামিরার কথা শুনে তিন্নি এবার দমে গেল … কিন্তু আগুনের কথা মনে আসতে তিন্নি সামিরা কে প্রশ্ন করে……
—” সামু স্যার কেন তুলে এনেছিস স্যার কি অপরাধ করেছে ..??”(তিন্নি)
তিন্নির প্রশ্ন টা প্রথমে সামিরা বুজতে না পারলেও পরে বুজতে পারে আিলে তিন্নি স্যার বলে কাকে মিন করছে…..
—” তোর স্যার মানে আগুন খান আমাকে আর আমার ড্যাড মম কে ভরা পার্টিতে অপমান করেছে তার সাস্তি তো তাকে পেতেই হবে তাই না…”(রেগে বললো সামিরা)
—“ম,,,মানে স্যার কবে তোকে অপমান করল আর স্যার কে বা তুই পেলি কোথায়…”(তিন্নির খুব ঘৃন্না করছে সামিরার সাথে কথা বলতে কিন্তু তাও বলতে হচ্ছে ওর পেট থেকে সব কথা শোনার জন্য)
—” তুই তো জানিস ড্যাড নাম করা বিজনেস ম্যানদের একজন দেশে বিদেশের আমার কম্পানি অগনিত … তোর স্যারের ড্যাড আরিয়ান খান হলেন আমার ড্যাডের বিজনেস পাটনার … তারা দুজনে ঠিক করেছে তাদের বিজনেস পাটনারের সম্পর্ক টা আত্মীয়তায় রুপ নিক তাই আমাদের বিয়ে ঠিক করে প্যারিসে আমাদের এঙ্গেজমেন্ট টা হবে বলে ঠিক করা হয় কিন্তু ,,,কিন্তু এই আগুন এঙ্গেজমেন্ট পার্টিতে অভিনব কায়দায় এঙ্গেজমেন্ট না করে পালিয়ে বি ডি তে আসে …. “(সামিরা)
—” ওহ তার মানে তুই প্রতিশোধ নিতে এসেছিস…??”(তিন্নি)
—” হ্যা ঠিক ধরেছিস কিন্তু ঠিক প্রতিশোধ বললে ভুল এটাকে ভয়ঙ্কর প্রতিশোধ নিবো আমি ওকে বিয়ে করে..হা হা হা …”(সামিরা)
—” হা হা হা লাইক সিরিয়াসলি সামু তুই এই সামান্য কারনে তুই বি ডি তে এসেছিস এটা সত্যি বিশ্বাস যোগ্য বলে তোর মনে হয় …”(তিন্নি)
—” বাহ এই না হলে আমার বোন ,, আমি যে এই সামান্য কারনে বিডির মতো দেশে এই সামিরা খান্না পা ফেলবে না তুই ভালো করেই জানিস.. তুই আসলে আমার বোন হওয়ার যোগ্য …”(সামিরা)
—” তোর বোন হওয়ার কোন ইচ্ছা বা রুচি আমার নেই সামু ,, স্যার কোথায় আমি স্যারের সাথে দেখা করতে চাই ..”(তিন্নি)
—” ওকে আয় আমার সাথে তবে সাবধান এখান থেকে পালানোর চেষ্টা করবি না ..”(সামিরা)
—” জানি আমাকে বলতে হবে না..””
সামিরার পিছু তিন্নি রুম থেকে বেরিয়ে গেল……..
.
.
.
.
.
.
—” বস আর ইউ ওকে..?? আপনাকে এরকম লাগছে কেন?? এভরি থিং ইজ ওকে…”(জ্যাক)
মেঘ আগুন দৃষ্টিতে জ্যাকের দিকে তাকাতে জ্যাক ভয়ে পিছু সরে যায় মেঘ সোজা নিজের রুমে এসে ওয়াশরুমে ঢুকে শাওয়ার অন করে শাওয়ারের নিচে দারিয়ে আছে চোখ বন্ধ করে……
মেঘ অদ্ভুত ভাবে তার বা পায়ের আঙ্গুল দিয়ে ফ্লোর খুটে যাচ্ছে ……..একঘন্টা শাওয়ারের নিচে দারিয়ে থাকার পর মেঘের ঠোটের কোনে এক রহস্যময় হাসি ফুটে উঠল … .. মেঘ টাওয়েল পেচিয়ে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে রুমে এসে চেন্জ করে সবুজ রংয়ের গেবাডিং পরে কানে ব্লুটুথ লাগিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে ডিভানে বসে পরলো মেঘ……. কিছুক্ষন পর আসলাম জ্যাক এসে মেঘ পিছুনে দারিয়ে রইল ……
—” আসলাম কিং এতো শান্ত কি করে বসে আছে ??”(জ্যাক)
—” চুপ থাকো জ্যাক এটা ঝড় আসার পূর্বাভাস ..জানি না কি হতে চলেছে….”(আসলাম)
আসলামের কথা শেষ হতে না হতে জ্যাকের ফোন টা বেজে ওঠে …জ্যাক ফোন টা কানে দিতে জ্যাকের হাত মাথায় উঠে যায় … একবার আসলামের মুখের দিকে তাকাচ্ছে অবার মেঘের মুখের দিকে তাকাচ্ছে ………….
.
.
.
.
#চলবে………………….