#হিংস্র_ভালোবাসা🌹
#Season_2
#Writter_Farhana_Chobi
#পর্ব-৪৬
.
🍂
.
মেঘ দুঘন্টা যাবত এয়ারপোর্টের বাইরে দারিয়ে আছে .. কিন্তু মামা বা ফুফিদের কারো টিকিটি খুজে পাচ্ছে না…. হঠাৎ করে মেঘের কাধে কারো স্পর্শ পেয়ে মেঘ পিছুনে তাকিয়ে দেখে……. অতি সুন্দরি এক মধ্যে বয়সি মহিলা… চোখে সানগ্লাস পরা পরনে জিন্স শার্ট হুট করে কেউ বয়স টা আন্দাজ করতে পারবে না….
—“” মেঘ..!!!””
–“” ইয়েস ,,বাট হু আর ইউ??””(মেঘ)
—“” মোহনা!! তুমি তো মেহবুব ভাইজানের ছেলে তাই না..?””(মোহনা)
—“” ফুফি!!”
–“” ইয়েস ইয়াংম্যান , পরিচয় হও ,,আশিক এই আমার বড় ভাইয়ের ছেলে মেঘ আর মেঘ ও হচ্ছে তোমার ফুফা…আশিকুর রহমান…. আর এই হচ্ছে আমার ছেলে আদিল “””
—“” নাইস টু মিট ইউ ,,,(হ্যান্ড শেক করে বললো মেঘ)”
–“” সেম টু ইউ…..””(আশিকুর)
—“” ফুফি বাকিরা কোথায়??””(মেঘ)
–“” কার কথা বলছো ! ওহ ফাহাদ ভাই আর ফাহিম ভাইয়ের ফ্লাইট ডিলে হয়েছে তাই এখন আসতে পারে নি…..””(মোহনা)
—“” ওহ !!! ওকে তাহলে চলুন যাওয়া যাক…””(এরা আমার ফুফা ফুফি?? কখনো তো দেখেনি ?? এদের কে কেন যেন আমার সন্ধেহ হচ্ছে )
—“” কি হলো মেঘ চলো !! এভাবে দারিয়ে আছো কেন??””(মোহনা)
—“” ওহ হ্যা চলুন…”””(মেঘ)
মেঘ মোহনা আশিকুর আর আদিল কে নিয়ে সোজা বাড়িতে নিয়ে আসে… মেঘ বাড়িতে এসে সোজা রুমে গিয়ে ড্রেস চেন্জ করে আলিয়া কে ফোন করল….
—“” হ্যালো পিচ্চি কখন আসবি তুই??””(মেঘ)
—“”” মেঘরাজ আমি আগেও বলেছি আমাকে পিচ্চি বলে ডাকবে না ,আমি মটে ও পিচ্চি না,,,(গাল ফুলিয়ে)
—“” পিচ্চি কে পিচ্চি বলবো না তো কি বলবো হুম..(আমি তো খুব করে চাই তুই খুব তারাতারি বড় হয়ে যাস ,,, তাহলে তোকে আমার করতে পারবো…)
—“”” মেঘরাজজজ আমি কিন্তু খুব রেগে যাচ্ছি ,,, “””
—“”” (উফফ নিশ্চয় তুই এখন গাল ফুলিয়ে আছিস ,,আমার ইচ্ছে করছে তোর ওই গাল দুটোয় চুমু খেতে) বললে হলো শোন পিচ্চি আগামি একঘন্টার মধ্যে তোকে আমার সামনে দেখতে চাই ,,, এটাই শেষ কথা…”””(মেঘ)
—“”” রাক্ষস একটা খালি ভয় দেখায় ,,দেখিস একদিন অনেক দুরে চলে যাবো তখন কাকে এমন ধমক দিস দেখবো…”””(আলিয়া রেগে মেগে কল কেটে দিল,,,কিন্তু পাঁচ মিনিট পর আলিয়া রেডি হয়ে চলে গেল কারন আলিয়া খুব ভালো করেই জানে একঘন্টার মধ্যে যদি ও মেঘের সামনে না দারায় তাহলে ওর গাল দুটো আর আস্ত থাকবে না কামড়ে খেয়ে ফেলবে….)
আলিয়া ফোন কেটে দেওয়ায় মেঘ প্রচন্ড রেগে যায় মনে মনে ঠিক করে ফেলে আলিয়া কে আজ একটা শিক্ষা দিবে… মেঘ গাড়ির চাবি নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে মেহবুবের রুমের সামনে থেকে যেতে নিলে মেঘ চেচামেচি শুনতে পায় আড়াল থেকে দারিয়ে মেঘ কিছু শোনার চেষ্টা করে ….
—“”” ভাইজান তুমি কি বলতে চাইছো বাবা আমাদের কিছুই দিয়ে যায়নি সব সম্পত্তি তোমাকে দিয়ে গেছে…??””(মোহনা)
—“” আহা মোহনা শান্ত হোও বড় ভাইয়ের সাথে এভাবে কথা বলতে হয় হুম..””(আশিকুর)
—“”” মোহনা আমি কখনো বলি নি বাবা আমাকে সব সম্পত্তি দিয়েছে… বাবা আমাদের সব ভাই বোনদের সমান ভাগ করে সম্পত্তি দিয়ে গেছে ,,, আর আমার যা দেখছিস এগুলো আমার শ্রমের ফল ,,,, এগুলো আমার এতো বছরের তৈরি করা সম্রাজ্য…..””
—“”” এটা তোমার শ্রমের ফল নাকি আমাদের সম্পত্তির অংশ ভাইজান??? দেখ ভাইজান আমি আমার ভাগ চাই শুধু ওই টুকু সম্পদ নয় তোমার তৈরি সম্রাজ্যের থেকে ভাগ চাই আমার….”””(মোহনা)
—“”” মোহনা তোকে আগেই বলেছি এগুলো আমার ভাগের সম্পত্তি তাই এখান থেকে ভাগ নেওয়ার আশা ভুলে যা আর তোদের সম্পত্তি তোরা বুঝে নে,,,, তোদের ইতালি তে ডেকেছি শুধু মাত্র এই কারনে… আজ আমার বন্ধুর মেয়ে আলিয়ার বার্থডে আর ওর বার্থডে উপলক্ষে একটা পার্টির এরেন্জমেন্ট করেছি তোরা রেডি হয়ে আয় গেস্টরা অলরেডি আসতে শুরু করেছে . আমাকে নিচে যেতে হবে…”””
মেহবুব কে বাইরে যেতে দেখে মোহনার ঠোটের কোনে এক শয়তানি হাসি ফুটে উঠল ,,,,মোহনা ফোন টা বেজে উঠতে মোহনা কল টা রিসিব করে …….
মেহবুব কে বাইরে আসতে দেখে মেঘ ওখান থেকে সরে যায় ,,,, মেঘ গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে শপিং মলে আসে তার পিচ্চির জন্য গিফট কিনতে .. তখনি মেঘের সাথে আসলামের দেখা হয় …. আসলাম মেঘের দু ব্যাচ জুনিয়র … মেঘ কে আসলাম নিজের আইডল মনে করে … মেঘ ডাক্তারি পড়ার সাথে সাথে জুনিয়রদের পড়া শুনায় হেল্প করে….. সে থেকে আসলামের সাথে পরিচয় মেঘের…….মেঘ আসলাম কে ছোট ভাইয়ের মতো স্নেহ করে…..
—“”” হাই ব্রো হোয়াট’স আপ…??”””(আসলাম)
—“”” গুড বাট তুই এখানে..??””(মেঘ)
—“” ব্রো ভুলে গেলে আজ তোমার পিচ্চি মানে আমার ভাবির বার্থডে আর তুমি আমাকে সকালে ইনভাইট করেছো … আর আমি ভাবির জন্য গিফ্ট কেনার জন্য এখানে এসেছি…”””(আসলাম)
—“” সো সরি আসলাম আমি ভুলে গেয়েছিলাম….চল গিফ্ট টা নিয়ে নি…””(মেঘ)
—“” হুম চলুন””
মেঘ আসলাম আলিয়ার জন্য গিফ্ট কিনে শপিংমল থেকে বের হতে নিলে দেখে বাইরে ঝড় শুরু হয়ে গেছে মেঘ আসলাম শপিং মলে আটকে গেল……
.
.
.
আলিয়া চমৎকার গাউনটা পরে ,,,আইরিনের দেওয়া চিকন ডাইমন্ডের নেকলেস পরে নিলো,,, চোখে কাজল,,, হাতে বেজলেট কানে ডাইমন্ডের টপ ইয়ারিং পরে হালকা গোলাপি লিপষ্টিক পরে নিয়ে আলিয়া তার মাম্মাম কে তারা দিতে থাকে…..
—“” মাম্মাম আমাদের লেট হয়ে যাচ্ছে তো চলো না … “””
—“”” হ্যা সোনা মা আমি রেডি ,,,””বলতে বলতে আইরিন বেরিয়ে আসতে আলিয়া হা করে তার মাম্মাম কে দেখছে ,,, সেম ডিজাইনের গাউন তার মাম্মাম পরে আছে …. সেম নেকলেস সেম বেজলেট একি রকম হেয়ার স্টাইল সাজ উফফ মনে হচ্ছে কপি ক্যাট….আলিয়া তার মাম্মাম কে জরিয়ে ধরে….
—“” উফফ মাম্মাম ইউ লুকিং সো বিউটিফুল আজ পাপ্পার হার্ডএট্যাক করবে তোমাকে দেখে….হি হি হি ,,মাম্মাম পাপ্পা নিচে গাড়ি নিয়ে ওয়েট করছে…. “(আলিয়া)
—“” ফাজিল মেয়ে মাম্মাম কে নিয়ে ও দুষ্টুমি তাই না…””(আইরিন)
আইরিন আলিয়ার কপালে চুমু দিয়ে হাত ধরে নিচে চলে আসে ….ফারুক খান আইরিন কে দেখে চোখ মেরে ফ্লাইং কিস ছুড়ে দেয়…আলিয়া তা দেখে বলে…..
—“”” পাপ্পা ইট’স নট ফেয়ার তুমি মাম্মাম কে ফ্লাইং কিস দিয়েছো আমাকে দেও নি কেন হু…””(গাল ফুলিয়ে…)
মেয়ের কথা শুনে আইরিন ফারুক দুজনে লজ্জা পেয়ে যায়… পরক্ষনে ফারুক এসে আলিয়ার কপালে চুমু দিয়ে বলে…..
—“” মাশাআল্লাহ আমার প্রিন্সেস কে কতো সুন্দর লাগছে ….”””
—“”” হয়েছে হয়েছে এখন দ্রুত মেঘরাজের বাড়িতে চলো ,,,দেরি হলে আবার আমার গাল দুটো নিয়ে টানাটানি পরবে….””
মেয়ের কথা শুনে ফারুক হেসে দিলো……কারন মেঘ যে তার মেয়ে কে কতো টা ভালোবাসে তা তিনি নিজেও জানেন তাই তো মেয়ের ১৮ বছর পূর্ন হওয়া পযর্ন্ত অপেক্ষা করছে ফারুক খান ……
—“” আচ্ছা যাচ্ছি কিন্তু বাইরে তো ঝড় বৃষ্টি হচ্ছে মাম্মাম যাবো কি করে..???””(ফারুক)
—“” কিহ ঝড় ,,,ঝড় শুরু হওয়ার আর সময় পেলো না পাপ্পা,,,যাই হোক এই ঝড়ে মধ্যে দিয়েই যাবো আমি …”” গট গট করে গাড়িতে উঠে বসলো আলিয়া অগ্রতা ফারুক আর আইরিন কেও উঠতে হলো মেয়ের জেদের তাদের কথা খাটবে না তা তারা বেশ ভালো করেই জানে…….
.
.
.
ঝড় বৃষ্টির জন্য পথে বার বার আটকে গিয়েও ফারুক সময় মতো মেহবুবের বাড়ি পৌছে যায় ….. বাড়িতে ঢুকতে দেখে বাড়ির সব বাতি অফ ঘুট্ঘুটে অন্ধকার ,,,,, ফারুক আইরিন আলিয়া ভিতরে প্রবেশ করতে হুট করে মেইন দরজা বন্ধ হয়ে যায়… ফারুক ফোনের ফ্লাস জ্বালাতে নেয় তখনি সব লাইট জ্বলে ওঠে …. ফারুক আইরিন আলিয়া সামনে তাকিয়ে শক্টড হয়ে গেলো তাদের পা যেন নরছে না…. তাদের চোখের সামনে তারি বন্ধু মেহবুব আর ভাবি মেহরিমার রক্তাক্ত নিথর দেহ পরে আছে…. ফারুক আর স্থির হয়ে দারাতে পারলো না আইরিন ফারুক ছুটে গেল মেহবুব র মেহরিমার কাছে………
—“”” মেহবুব দোস্ত কি করে এসব হলো ,,??? কে করলো এই সব বল আমাকে….??””(ফারুক)
—-“”” ভাবি কথা বলুন কি হলো আপনার দেখুন আমরা এসেছি… চোখ মেলুন??””(আইরিন)
ফারুক খান মেহবুব আর মেহরিমার হাতের পাল’স চেক করে দেখে পালস খুব ধিরে ধিরে চলছে …
—“””আইরিন মেহবুব আর ভাবির পালস চলছে … এদের এক্ষুনি হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে তুমি ভাবি কে তোলার চেষ্টা করো আমি মেহবুব কে তুলছি……””””
আলিয়া যেন পাথর হয়ে দারিয়ে সব দেখছে ,,, জীবনে প্রথম এমন রক্তাক্ত অবস্তায় কাউকে দেখছে ও…. কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে… কিন্তু মুহূর্তে আলিয়া চমকে ওঠে … ফারুক মেহবুব কে যেই তুলতে যায় তখনি একটা লোক লোহার রড দিয়ে তার পাপ্পার মাথায় আঘাত করে ,,,,
ফারুক মেহবুব কে ছেড়ে দুরে ছিটকে পরে … আইরিন মেহরিমা কে ছেড়ে দিয়ে তার স্বামি কে ধরতে যায় তখনি পিছুন থেকে আইরিনের চুলের মুঠি ধরে বসে….. ফারুক মাথায় হাত দিয়ে তাকিয়ে দেখে তিন জন লোক একজন মহিলা দারিয়ে আছে… ফারুক একটু ভালো করে তাকিয়ে দেখে মহিলাটি আর কেউ নয় মেহবুবের বোন আর তার পাশে দারিয়ে আছে তার হাসবেন্ট গতকাল মেহবুব তার ভাই বোনদের ছবি দেখিয়েছিল তাই তাদের চিনতে ফারুকের বেশি বেগ পেতে হয়নি…..
—“”” উপসস খুব লাগলো মি. খান কি করবো বলুন হাতে তো আর কোন অপশন’স ছিলো না তাই আপনাকে আঘাত করতে হলো….”””(মোহনা)
—“” আপনি মেহবুবের বোন হয়ে কি করে নিজের ভাই কে মারতে পারেন…?? এক বার ও কি হাত কাপলো না???”””মোহনার হাতে রক্ত লেগে আছে তাই ফারুক ধারনা করে নিলো ও মেরেছে তার বন্ধু কে…
ফারুকের কথা শেষ হওয়ার আগে ফাহাদ এসে আবার ও লোহার রড দিয়ে ফারুকের মাথায় বাড়ি মেরে বলে…………..
.
.
.
#চলবে…………………
[বিঃদ্রঃ ভালো না লাগলে প্লিজ ইগনোর করুন]