ইস্ক,০৯,১০

0
525

#ইস্ক,০৯,১০
#সাদিয়া


তিতিল দরজা খুলতেই ইয়াদ দাঁত কিটে দুইপা এগিয়ে গেল। দ্রুত এগিয়ে আসায় তিতিল তাল সামলাতে না পেরে এক পা পিছনে ফেলল। ইয়াদ গিয়েই তিতিলের বাহু চেঁপে ধরেছে। ভয়ে মূর্ছে গেছে মেয়েটা। দাঁত কটমট করে ইয়াদ বলল,
“হাউ ডেয়ার ইউ। এত সাহস কোথা থেকে পাও তুমি?”

“….

“উত্তর দাও। আমাকে এড়িয়ে চলার সাহস আসে কোথা থেকে তোমার? আর এসবেরই বা কি মানে?”

“…

“কথা বলছো না কেন? জবাব দাও। মা তোমাকে কি বলে গিয়েছিল? আর তুমি..”

রাগে কি করবে না করবে ইয়াদ বুঝে উঠতে পারছে না। বাহু ধরে ঝাঁকাতেই তিতিল ব্যথায় মৃদু আর্তনাদ করল। ইয়াদ কপাল কুঁচকে তাকাল তিতিলের দিকে। চোখ মুখ বন্ধ করে আছে মেয়েটা। গাল আর নাক টাও লাল হয়ে এসেছে। খেয়াল করল মেয়েটার চোখের কিনারায় একবিন্দু পানির দেখা মিলেছে। ভেতর থেকে যেন সে ফুপাচ্ছে। ইয়াদ ধ্যান ধরা নয়নে তাকিয়ে আছে ওই মুখপানে। রাগের মাথায় বাহুতেও সে বেশ জোরেশোরে চেঁপে ধরেছিল বলে হাত ঢিলে করে আনল কিন্তু ছাড়ল না। তিতিলের ওমন মুখশ্রী তার মনে আঁচড় কাটছে। খুব ভালো লাগছে তাকিয়ে থেকে দেখতে। তিতিল আস্তেআস্তে চোখ খুলে তাকিয়ে যখন দেখল ইয়াদ তার দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তখন শুকনো ঢোক গিলল সে। কাঁপা ঠোঁট গুলি দিয়ে বলল,
“আ আমি ব্যথা পাচ্ছি।”
ইয়াদের কোনো ভাবান্তর হলো না। সে মোহভরা নয়নে দেখছে তিতিল কে। তিতিলের ওই কাজলবিহীন চোখ আর হাল্কা লাল আভা যুক্ত কাঁপা ঠোঁট গুলি তাকেই কাঁপন ধরিয়ে দিচ্ছে। ইয়াদ ঘোর লাগানো দৃষ্টি দিয়েছে তিতিলের দিকে। তিতিল ইয়াদের চোখের দিকে তাকাল এলোমেলো দৃষ্টি নিয়ে। বাস্তব দুনিয়ার কিছুই তার মাথায় আসছে না। ইয়াদ কি ভেবে হুট করে নিজের বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে তিতিলের ঠোঁট স্পর্শ করল। হঠাৎ সারা শরীর কেঁপে উঠল তিতিলের। ঝাটকা দিয়ে সরিয়ে নিল নিজেকে। ধাক্কা দেওয়ায় ইয়াদ এক পা পিছিয়ে গেল। কিন্তু তবুও সে তখনো নিজের ঘোর থেকে ফিরতে পারছিল না। নরম ঠোঁট গুলি তার শিহরণ জাগিয়ে দিয়েছে। এমন অনুভূতি কখনো সে অনুধাবন করেনি। কখনো কোনো মেয়ের ঠোঁট এতটা কাছ থেকে স্পর্শ করা হয়নি তার। নেশাক্ত চোখে তখনো সে তিতিলের দিকে তাকিয়ে ছিল। দেখতে পেল মেয়েটা খুব ঘাবড়ে গেছে। বিব্রত দেখাচ্ছে তাকে। নিশ্বাসের গতি বেড়ে গিয়েছে মেয়েটার। তিতিল তখনো থরথর করে কাঁপছিল। ইয়াদ তাকে শান্ত করতে একটু এগিয়ে যেতেই তিতিল দুই কদম পিছিয়ে গেল। ইয়াদ বলল,
“ডোন্ট ওরি তিতিল। এতটা ঘাবড়ানো কিছু নেই।”

“….

“ওকে ওকে আ’ম সরি। শান্ত হোও তুমি।”

তিতিল বিছানার এক কোণায় দাঁড়িয়ে কাঁপছে। ভয়ে না অন্যকিছুতে বুঝতে পারছে না। কিন্তু শরীর টা নিস্তেজ লাগছে। আড়চোখে ইয়াদের দিকে তাকিয়ে সামনের চুল গুলি কানে গুঁজে দিল। কিন্তু কোনো লাভ হলো না। তার রেশমি অবাধ্য চুল নিজের গন্ডি পেরিয়ে বাহিরে গেল। ইয়াদ দাঁড়িয়ে দেখছিল চুলের কান্ড।

“কি হয়েছে?”

দুজনেই চমকে উঠল। তাকিয়ে রেহেলা বেগম কে দেখতে পেয়ে ইয়াদকে খানিক ভীত দেখাল। দুজনেই চুপ করে আছে দেখে তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন,
“কি হয়েছে ইয়াদ?”

“মা আমি..”

ইয়াদের কথা না শুনে রেহেলা বেগম তিতিলের কাছে গেলেন। জিজ্ঞেস করলেন,
“কি হয়েছে তিতিল?”

“….

“কিরে তোকে এমন দেখাচ্ছে কেন?”

তিতিলের কাছ থেকে জবাব না পেয়ে রেহেলা বেগম ছেলেকে বললেন,
“তুই কিছু করেছিস ওকে?”

ইয়াদ খুব অবাক হলো মায়ের কথায়। বলল,
“মা তুমি এসব কি বলছো? আমি কিছু করিনি ওকে। জিজ্ঞেস করো।”

তিতিল একবার চোখ তুলে ইয়াদের দিকে তাকিয়ে নামিয়ে নিল। নিজেকে শান্ত করে বলল,
“আম্মা এমনিতেই আমার শরীরটা একটু খারাপ লাগছে।”

“ডাক দিবি না কাউকে?”

“….

“ইয়াদ তুই তোর রুমে যা। আজ আমি তিতিলের সাথেই থাকি। কাল থেকে না হয় দুজন এক সাথে থাকবি।”

কেউ কিছু বলল না। মুখ গোমড়া করে ইয়াদ বের হয়ে গেল। তিতিল দরজার দিকে ছলছল দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

“কিরে কি হয়েছে?”

“কি কিছু না আম্মা।”

“চল ঘুমাতে যাবি।”

“হুম” বলে হাসার চেষ্টা করল তিতিল।

—-
তিতিল তখন রান্না করছিল দুপুরের। একটু আগেই ইয়াদ বাদে সবাই ব্রেকফাস্ট করে গেল। তিতিল দ্রুত রান্নার কাজ করছে। এমনিতেও এত দেরি হয় না তার। কারণ ফরিদা আন্টি হাতে হাতে সব কাজ করে দেয়। রান্নার সময় সামান্য একটু কাজও যে কতটা সময় বাঁচিয়ে দেয় একজনের তা যে রান্না করে সে’ই বুঝে। সব একবারে তৈরি করে তিতিল রান্না বাসালে এতটাও দেরি হয় না তার। চুলায় তরকারি বসানো। নাড়াচাড়া করছিল যেন লেগে না যায়। হঠাৎ কারো কথায় একদম চমকে গেছে। পিছন ফিরে তাকিয়ে ইয়াদ কে এতটা কাছে দেখে আরো ভয় পেয়ে গেল তিতিল। পিছিয়ে যেতে চাইলে ইয়াদ দ্রুত তার পিঠে হাত রেখে নিজের দিকে এগিয়ে আনে।
“ওই মেয়ে এতটা কেয়ারলেস কেন কাজে? এখনি তো গায়ে আগুন লাগত।”

তিতিল হা করে তাকিয়ে দেখছে ইয়াদ কে। তিতিলের ওমন চাউনি দেখে ইয়াদ ঠোঁট টিপে হাসল। তিতিল থতমত খেয়ে খানিক দূরে সরল। ইয়াদ তিতিলের দিকে ছোটছোট চোখে তাকালো। কোমরে ওড়না পেছানোতে মেয়েটা কে ভয়ংকরী সুন্দরী লাগছিল। তিতিল কোমর থেকে ওড়না খুলে মাথা ঢেকে নিল। সাথে সাথে ওই অবাধ্য চুল গানের পাশ থেকে এসে মুখ ঢেকে দিল। এবার বিরক্ত হলো ইয়াদ।
“মেয়ে তোমার ওই দুষ্ট চুল গুলি কে মন চায় নিজ হাতে সরিয়ে দেই।”
মনে মনে আওড়ালো কথাটা ইয়াদ। হাত দিয়ে সরিয়ে দিতে মন চাইলেও সে তা করল না। তিতিল আবার কি ভেবে বসবে। কাল ঘোরে ঠোঁট স্পর্শ করতেই মেয়ের শরীরে কি কাঁপুনি! ইয়াদ এক পা এগিয়ে গিয়ে খানিক নুয়ে গেল। ফু দিয়ে তিতিলের মুখ থেকে চুল গুলি সরিয়ে দিল। তিতিল সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে ওড়না খামছে ধরল। থেমে থেমে হৃদপিন্ড শব্দ করছে। ভেতরে রুরু করা এক অনুভূতি হচ্ছে তার।

সাথেসাথে চোখে হাত দিল হিমা। আঙ্গুল ফাঁক করে আবার দেখল ইয়াদ আর তিতিল কে। মুখে হাসি ফুটে উঠেছে তার। রোমান্টিক সিন দেখলেই তার কেমন যেন লাগে। রোমান্টিক সব মুভি মনে হয় তার দেখা। হিমা ভাই আর ভাবির এমন সিন দেখে মিস করতে চাইছে না। সে আঙ্গুল আরেকটু ফাঁক করল সবটা দেখার সুবিধার্থে। হঠাৎ মাথায় চড় পরায় ভূত দেখার মতো চমকে উঠল মা কে দেখে। কিছু না বলে ভু করে দৌড় দিল। নিচে তাকিয়ে রান্না ঘরে ইয়াদ আর তিতিল কে এক সাথে দেখে মুচকি হেসে তিনিও চলে গেলেন। মনে মনে আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন ‘ইয়াদের মনে যেন তিতিলের জন্যে ভালোবাসা জন্ম হয়।’

—-
রাতের খাবারের সময় ইয়াদ ফোন দেখতে দেখতে নিচে এলো। খাবার দেখে বলল,
“মা আমি চিকেন স্যুপ আর লাচ্চি খাবো।”

পাশ থেকে ইনা বলে উঠল,
“কিন্তু ভাই ও গুলি তো..”

“আপু আমার খেতে ইচ্ছা লাগছে।”

অবশেষে তিতিল কে রান্নাঘরে যেতে হলো স্যুপ আর লাচ্চি বানাতে।

ইয়াদ তখন ফোনে মুখ রেখেই বলল,
“মা রান্না শেষ হলে ওগুলি আমার রুমে দিয়ে আসতে বলো। আমার কাজ আছে।

“ঠিক আছে তুই যা। তিতিল তোর রুমে দিয়ে আসবে।”

ইয়াদ চুপচাপ চলে গেল। সিঁড়ির শেষ মাথায় গিয়ে ইয়াদ ঘাড় ঘুরিয়ে নিচে তাকাল। তিতিল তখন গোসত সিদ্ধ করতে ব্যস্ত। ইয়াদ বাঁকা হাসল। মনে মনে বিড়বিড় করে বলল,
“আজ দেখব আমার থেকে কি করে পালাও তুমি তিতিল।”

চলবে♥

#ইস্ক
#সাদিয়া

১০
বিশাল চিন্তায় গুটিয়ে গেছে তিতিল। ফরিদা আন্টি তো রাতে বাসায় চলে যায় এখন কাকে দিয়ে পাঠবে এগুলি? চিন্তিত মুখে গরম স্যুপ আর লাচ্চি নিয়ে টেবিলে বসে আছে তিতিল। কেন যেন ইয়াদের বড্ড হাসি পাচ্ছে। উপরে এক কোণায় দাঁড়িয়ে উঁকি দিচ্ছিল সে। বাঁকা হেসে সে নিজের রুমে চলে গেল।

“কি হলো তিতিল আপু? এখনো বসে আছো যে?”

তিতিল পিছন ফিরে তাকিয়ে হিমা কে দেখতে পেল। সাথে মুখে হাসিও ফুটে উঠেছে তার।

“তুমি এখানে?”

“খিদে পেয়েছে। ফ্রিজে না সন্দেশ আর লাড্ডু আছে? ওগুলিই নিতে এলাম।”

“এসেছো যখন ভালো হয়েছে। নাও এইগুলি নিজের ভাইয়ের রুমে দিয়ে আসো।”

“….

“কি হলো নাও?”

“আল্লাহ মা যদি জানতে পারে তাহলে শেষ। আর এমনিতেও আমি ডাটা অন করে চলে এসেছি। বন্ধুরা হয়তো গ্রুপে কথা বলছে। আমি যাই আপু।”
হিমা তাড়াতাড়ি প্যাকেট নিয়ে দৌড়ে চলে গেল। না পেরে তাকে যেতে হবে ভেবে নিশ্বাস ছেড়ে দিয়ে রওনা হলো।

“আসব?”

“….

উত্তর না পেয়ে তিতিল চুপচাপ রুমে এলো। ইয়াদ তখন ল্যাপটপে মুখ গুঁজে আছে। আড়চোখে তাকিয়ে দেখতে পেল তিতিল মাথা নিচু করে খাবার গুলি রেখে চলে যেতে লাগল। তখন সে ডাক দিল,
“যাচ্ছো কোথায়?”

থমকে দাঁড়াল তিতিল। ঠোঁট উল্টে দিয়ে আবার পা বাড়াতেই শুনা গেল,
“তিতিল আমি তোমায় বলছি।”

তিতিল আগের মতোই উল্টোপিঠে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করল “আপনার আরো কিছু লাগবে?”

ইয়াদ জবাব দিল না। চুপচাপ হেটে তিতিলের সামনে গেল। দেখতে পেল বরাবরের মতো ওড়নার ফাঁক দিয়ে চুল বেড়িয়ে এসেছে মেয়ে। ইয়াদ তখনের মতো আবার মুখের উপর ফু দিতেই শিউড়ে উঠল সে। চোখ মুখ কুঁচকে বলল,
“আপনি এমন করবেন না।”

“তবে তোমার চুল গুলি কে বলো আমায় বিরক্ত না করতে।”

অবাক হলো তিতিল। ভ্রুকুটি করে জিজ্ঞেস করল,
“আমার চুল আপনায় কখন বিরক্ত করল?”

“সবসময় করে।”

“মানে?”

“মানে চোখ মুখ ঢেকে রাখে তোমার।”

“তাতে আপনার কি?”

“আমার অসুবিধা হয় যে।”

“অসুবিধা?”

“এত সব জানার দরকার নেই। ওখানে গিয়ে বসো।”

“কেন বসব?”

“মেয়ে এত কথা বলো না। যাও চুপচাপ।”

তিতিল চুপচাপ ফুচকি দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে গেল। হতবাক হয়েছে ইয়াদ। সে ভেবেছিল তিতিল তার কথামতো বসবে তা না করে..
“আচ্ছা বদমাইশ মেয়ে তো। তোমাকে পরে দেখছি মেয়ে।”

ইয়াদ তৃপ্তি নিয়ে স্যুপ খেলো। লাচ্চি টায় এক চুমুক দিয়ে রেখে বের হলো সে।
তিতিলের রুমে গিয়ে দেখে লাইট অফ। দরজায় ধাক্কা দিতে বুঝল লাগানো।
“দরজা টা ভালোয় ভালো খুলো তিতিল।”

“…..

“তিতিল তুমি কি কানে কম শুনতে পাও? যখনি কথা বলি শুনতে পাও না।”

ঠোঁট টিপে হাসল তিতিল। শুয়ে চুপচাপ আছে যেন অপর মানুষটা বুঝতে পারে সে ঘুমিয়ে গেছে।

ইয়াদ জোরসে ধাক্কা দিল বার কয়েক।
“কি ভেবেছো আমি কি জানি না তুমি ইচ্ছা করে এমন করছো? দরজা খুলো। না হলে দরজা ভেঙ্গে ফেলবো সত্যি।”

“….

“ও তুমি এভাবে শুনবে না তাই তো? মাকে কি ডাক দিব?”

রাগ হলো তিতিলের। ব্ল্যাকমেইল করছে তাকে। নিজে পারছে না বলে অন্য জনের ভয় দেখাচ্ছে। দাঁত কিটে তিতিল লাইট অন করে দরজা খুলল। মাথায় ওড়না টা টেনে এক পাশে গিয়ে দাঁড়াল কঠিন মুখে।

ইয়াদ ভ্রু উঁচু করে রুমের ভেতরে গেল। এদিক ওদিক তাকিয়ে তিতিলের বিছানায় গিয়ে আয়েশে বসল। তিতিল একপলক তাকিয়ে চোখ সরিয়ে আনল। মুখে হাসির ভাব তুলে ইয়াদ বলল,
“ঘুমের অভিনয় করছিলে বুঝি?”

“….

“আচ্ছা তিতিল তুমি কি কোনো ভাবে ভয় পাচ্ছো আমায়?”

“আপনাকে ভয় পেতে বয়েই গেছে আমার।”

“ও রেয়লি?”

“….

“তো কাল একটু ধরতেই তো থরথর করে কাঁপছিলে। সেটা কি ছিল ডেয়ার?”

তিতিল বেশ ইতস্তত বোধ করছে। লজ্জাকর এক অবস্থায় পৌঁছে গেছে। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে সে।”

“কি হলো তিতিল বেবি? মুখে তালা লেগে গেছে?”

“আ আপনি এখন যান।”

“না যাবো না ভাবছি।”

তিতিল ভ্রুকুঞ্চন করে তাকাল তার পানে। ইয়াদ হেসে জবাব দিল।
“তুমি তো আমার রুমে যাবে না। তাই আমি না হয় তোমার রুমে থাকলাম। এতে আর কি হবে।”

“দে দেখুন।”

“হ্যাঁ বলো কি দেখব?”

তিতিলের মেজাজ খারাপ হচ্ছে। দাঁতে দাঁত চেঁপে হাত কচলাচ্ছে। ইয়াদ মুচকি হাসল। বলল,
“পুরো টমেটো না স্ট্রবেরি হয়ে গেছো।”

তিতিলের রাগ আরো বাড়তে থাকে। গাল গুলি কেমন ফুটে উঠেছে।

“হ্যাঁ আরেকটু রাগো। কাম অন তিতিল। ইশশ গাল গুলি কে এইভাবে ছুঁয়ে দিতে মন চাইছে।”
দুই হাত তুলে ইয়াদ বিছানা থেকে তার দিকে এগিয়ে যেতেই তিতিল খানিক সরে গেল। শক্ত গলায় বলল,
“একদম আমার কাছে এসে আমাকে ছুঁয়ার চেষ্টা করবেন না। ভালো হবে না এতে।”

“তো হবে কি?”

“….

“কি হলো তিতিল? তোমায় ছুলে কি হবে? কারেন্ট লেগে যাবে নাকি?”

“….

“এই পিচ্চি শরীরে যে কারেন্ট। ধরলে আমিই শকড হয়ে যাই।”

“দেখুন,

“হ্যাঁ দেখছি তো তোমায়। বলো।”

ইয়াদের এই হেলাফেলা ভাব তিতিলের সহ্য হচ্ছে না। সে বলল,
“আপনার সাথে আমার কিছুদিন পর ডিভোর্স হয়ে যাবে। তাই আমাকে আপনি ছুঁয়ার চেষ্টা করবেন না।”

কিছুক্ষণ পাড় হয়ে গেল। কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখে তিতিল মাথা তুলে তাকাল। ইয়াদ তার দিকেই তাকিয়ে আছে চোখ গুলি ছোটছোট করে। ঠোঁটের একটা পাশ প্রসারিত হয়ে আছে তার। তিতিল ওই চোখের চাউনিতে স্থির থাকতে পারছিল না। চোখ নামিয়ে নিল সে। ইয়াদ তিতিল কে দেখে হুট করেই তার কোমর পেঁচিয়ে নিজের কাছে নিয়ে এলো। তিতিল বিস্ময় চোখে তাকাল ইয়াদের চোখের দিকে। ছাড়ানোর অল্প চেষ্টাও করছে সে। কিন্তু এতে ইয়াদ তাকে আরেক ধাপ কাছে নিয়ে এলো টেনে। তিতিলের শরীর হিম হতে শুরু করেছে। ইয়াদ তার কোমর শক্ত করে চেঁপে ধরে চোখের মাঝখানের হাল্কা কালো মনির দিকে তাকিয়ে সাপের মতো শিশ ভাজিয়ে বলল “সুহহহ।”
তিতিল নড়াচড়া বন্ধ করে দিয়েছে। শরীরে এক বিন্দু শক্তিই পাচ্ছে না সে।
“ডিভোর্স এখনো হয়নি তিতিল। হলে তারপর।”

তিতিল তখনো এলোমেলো চোখে তাকিয়ে আছে ইয়াদের চোখে। অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিল তারপস সে স্লান হেসে তিতিলের কানের কাছে মুখ নিল। ফিসফিসে আওয়াজে বলল,
“ভয় পেয়েছো বলে আজ ছেড়ে দিলাম। নয়তো কোলে করে আমার ঘরে নিয়ে যেতাম। তবে সময় হলে ঠিক করবে এটা ইয়াদ।”

ইয়াদ চুপচাপ চলে গেল। তিতিল এতক্ষণে যেন দম নিল। নিশ্বাস টা আটকে এসেছিল ওই ফিসফিসে কথায়। বুকটা এখনো ভার লাগছে। শরীর টা এখনো মৃদু কেঁপে চলছে। এ কি শিহরণের ঢেউ তুলানো মনোমুগ্ধকর আবেগ ভরানো অনুভূতি!

চলবে♥

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here