নেশাক্ত_ভালোবাসা #লেখিকাঃ Tamanna Islam #পর্বঃ ১৮

0
795

#নেশাক্ত_ভালোবাসা
#লেখিকাঃ Tamanna Islam
#পর্বঃ ১৮

আব্রাহাম বাইরে এসেই সোজা আইরাতের সম্মুখীন হয়। আব্রাহাম কিছুটা চিন্তায় পরে যায় যে আইরাত কিছু দেখে নি তো। আইরাত কপাল কুচকে দাঁড়িয়ে আছে। আব্রাহাম কিছু একটা বলতে যাবে তার আগেই আইরাত বলে ওঠে…

আইরাত;; আপনি এখানে..?

আব্রাহাম;; কাজ ছিলো কিছু।

আইরাত;; আপনাকে ভেতরে খুজছে সবাই।

আব্রাহাম;; কেন?

আইরাত;; ওইতো তখন যে ক্লাইন্ট গুলোর সাথে দেখা করার কথা ছিলো তারা।

আব্রাহাম;; ওহহ আচ্ছা। চলো।

আইরাত;; হুম।

আব্রাহাম মনে মনে এই ভেবে একটু স্বস্তি পায় যে আইরাত কিছু দেখে নি। আব্রাহাম আর আইরাত এসে পরে। তবে যাবার আগে আব্রাহাম আরেক বার চতুর চোখে তার পেছন ঘুড়ে দেখে তারপর চলে যায়। হোটেলের হলরুমে সবাই বসে আছে। কেউ কথা বলছে কেউ আড্ডা দিচ্ছে। আবার কেউ হাতে বিভিন্ন ড্রিংক নিয়ে বসে আছে। আব্রাহাম হোটেলে গিয়েই দেখে সবার সাথে সেখানে রায়হান নিজেও বসে আছে। আব্রাহাম তাকে টোটালি ইগ্নোর করে। আব্রাহাম কে দেখেই দুটো ভদ্র লোক এগিয়ে আসে। তারা কথা বলতে থাকে। আইরাতের তো এখানে কোন কাজ নেই তাই সে একটা সাইডে গিয়ে দাঁড়ায়। ওয়েটার কে বলে একটা কোল্ড ড্রিংকস অর্ডার দেয়। রায়হান এগুলো খুব সুক্ষ্ম ভাবে খায়েল করছিলো। আব্রাহাম তো লোক গুলোর সাথে কথা বলতে ব্যাস্ত। আর আইরাত ড্রিংকস-এর শপের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। রায়হান শেষ এক চুমুক মদ খেয়ে হাত থেকে গ্লাস টা রেখে আইরাতের দিকে এগিয়ে যায়।

রায়হান;; আহাম..আহাম… মিস.আইরাত।

আইরাত;; আরে আপনি!

রায়হান;; জ্বি আমি। আসলে একই হোটেলে আছি তো তাই বার বার দেখা হয়েই যায়।

আইরাত;; হুম।

রায়হান;; কাল সকালে একটা ফাংশন আছে এখানে।

আইরাত;; ওহহ আচ্ছা, আমি জানতাম না।

রায়হান;; এখন জানিয়ে দিলাম। আসলে ফরেইন কান্ট্রি থেকে বেশ কিছু মানুষ আসবে। তাদের সাথেই একটা গেট টু গেদার আছে।

আইরাত;; ওহহ আচ্ছা।

রায়হান;; আপনি কিন্তু অবশ্যই আসবেন।

আইরাত;; হুম।

আব্রাহাম এতোক্ষন কথা বলছিলো। আইরাতের কথা এবার হুট করেই তার মাথায় আসে। কপাল কুচকে আশে পাশে তাকিয়ে দেখে আইরাত রায়হানের সাথে কথা বলছে। আব্রাহাম একটু আগে একজন কে পরপারে পাঠিয়ে রেখে এসেছে মেজাজ এমনেই ভালো না। তবুও নিজেকে সংযোত রাখছে কিন্তু এখন এই রায়হান আবার আইরাতের পিছে। আব্রাহাম তাদের থেকে বিদায় নিয়ে জেকেটের হাতা গুটাতে গুটাতে আইরাতের কাছে আসে। এসেই রায়হানের দিকে একটা রাগি লুক নিক্ষেপ করে।

আব্রাহাম;; কি হচ্ছে এখানে?

আইরাত;; না মানে উনি বলছিলেন যে কাল একটা ফাংশন আছে তো তাই…

আব্রাহাম;; কখন কি আছে না আছে তা বলার জন্যে এনাফ স্টাফ এখানে রয়েছে। আলাদা ভাবে কাউকে বলার জন্য রাখা হয় নি এখানে (রায়হানের দিকে তাকিয়ে দাত কটমট করতে করতে)

আইরাত;; কিন্তু…

আব্রাহাম;; চলো।

আব্রাহাম আইরাতের বাহু শক্ত করে চেপে ধরে সেখান থেকে নিয়ে এসে পরে। আইরাতের বেশ ব্যাথা লাগছে জায়গা টায়। আইরাত ছাড়তে বললেও আব্রাহাম ছাড়ে না। আইরাতকে টেনে সোজা আব্রাহামের রুমে নিয়ে আসে। এসেই ধিরিম করে রুমের দরজা লাগিয়ে দেয়। আব্রাহাম আইরাতকে দেওয়ালের সাথে দুই হাত চেপে ধরে। রাগে লাল হয়ে তাকিয়ে আছে আব্রাহাম। আইরাত মাথা নিচু করে ফেলে।

আব্রাহাম;; একশ একবার বলেছি যে ওই রায়হানের সাথে কোন কথা বলবে না মানে বলবে না।

আইরাত;; আমি তো বলি নি উনিই এসেছিলেন।

আব্রাহাম;; সরে আসতে পারলে না তুমি। শুনো আমি বাদে তুমি অন্য কোন ছেলের সাথে কথা বলবে না বুঝতে পেরেছো। আজ শেষ বার বললাম। আবার যদি দেখেছি রায়হানের সাথে কথা বলতে তো সেদিন কি করে বসবো তোমার সাথে আমি তা নিজেও জানি না।

আইরাত;; 😒।

আব্রাহাম এখনো দেওয়ালের সাথে আইরাতকে চেপে ধরে আছে। আইরাত ভয়ে কিছু বলতেও পারছে না। আব্রাহাম কতোক্ষন রাগে ফুসে আইরাতের মাথার সাথে তার মাথা ঠেকিয়ে দেয়৷

আব্রাহাম;; আইরাত আমার ভালো লাগে না তুমি অন্য কারো সাথে কথা বললে। বলবে না আমি না করেছি। ক্লিয়ার?

আইরাত;; হুম হুম।

আব্রাহাম;; রুমে যাও।

আব্রাহাম আইরাতকে ছেড়ে দিতেই আইরাত যেন প্রাণে বাচে। হুমড়ি খেয়েই এক প্রকার রুমে চলে যায়।

রুমে গিয়েই দরজা লাগিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে আইরাত।

আইরাত;; বাপরে বাপ কি মানুষ। সবসময় শুধু এমন করেন।

আইরাত বসে ছিলো রুমে। তখনই দরজাতে কারো কড়া নাড়ার শব্দ হয়। আইরাত গিয়ে দরজা খুলে দিতেই দেখে রোদেলা দাঁড়িয়ে আছে।

আইরাত;; আরে তুমি এসো এসো।

রোদেলা;; তুমি এখানে আর আমি কতো করে খুঁজে বেড়াচ্ছি।

আইরাত;; কেন কি হয়েছে?

রোদেলা;; শুনো কাল ফাংশন আছে বুঝলে। এখন অনেকেই অনেক রকম ড্রেস পরবে। আর তুমি তো ওয়েস্টার্ন পরো না আমি জানি। তো ভাবলাম কিছু একটা আলাদা নিয়ে যাই তোমার জন্য৷

আইরাত;; কি?

রোদেলা;; শাড়ি। এই দেখো।

রোদেলা আইরাতের সামনে একটা নেভি ব্লু কালারের শাড়ি রেখে দেয়। শাড়ি অনেক অনেক সুন্দর। নেভি ব্লু তার ওপর সাদা স্টোনের কাজ করা।

রোদেলা;; কেমন?

আইরাত;; অনেক সুন্দর। কিন্তু পরা আর আমার হবে না মনে হয়।

রোদেলা;; ওমা কেন?

আইরাত;; আমি পরতে পারি না।

রোদেলা;; আরে আমিও শাড়িই পরবো আর আমি পরাতেও পারি। আমি পরিয়ে দিবো নি।

আইরাত;; আচ্ছা৷

আইরাত আর রোদেলা বেশ গল্প গুজব করে। এক সময় রোদেলা চলে যায়। রাত বেশি হলে আইরাত ঘুমিয়ে পরে।

আর অন্যদিকে আব্রাহাম রাশেদ কে ফোন দেয়। রুবেলের লাশ কোন ভাবেই যেন কারো হাতে না লাগে সেই ব্যাবস্থাই করছে। যেই রুমে রুবেল কে লক করে রাখা হয়েছিলো সেখানে রাশেদ সহ আর কয়েক জন গার্ড যায়। যেই বিশ্রী ভাবে মেরেছে আব্রাহাম। তা দেখে রাশেদেরই গা কেমন গুলিয়ে যায়। এটা একটা নামি দামি হোটেল যদি এখানে লাশ পাওয়া যায় তাহলে বড়ো ধরনের ঝামেলা পেকে যাবে। তাই এই লাশকে তার ঠিকানাতে পৌঁছাতে হবে।


রাত অনেক গভীর। আব্রাহামের চোখে নেই কোন ঘুম। ভালো লাগছে না। এতো কিছু বাদ দিয়ে আব্রাহাম সোজা আইরাতের রুমে চলে যায়। নিজের এবং নিজের পিএ এর রুমের ডুপ্লিকেট চাবির ব্যাবস্থা আব্রাহাম আগে থেকেই করে নিয়েছিলো। তাই কোন সমস্যা হলো না। আব্রাহাম খুব সাবধানে আইরাতের রুমে ঢুকে পরে। গিয়ে দেখে আইরাত ঘুমের ঘরে তলিয়ে আছে। রুমে জ্বলছে একটা ধূসর রঙের লাইট। থাই গ্লাস টা খোলা। কিন্তু বাইরে বড়ো বড়ো পর্দা আছে সেগুলো বাতাসে দুলছে। কি মায়াময় লাগছে দেখতে আইরাতকে। আব্রাহাম মুচকি হেসে আইরাতের দিকে এগিয়ে যায়। আইরাতের বিছানার পাশে বসে আইরাতের দিকে ঝুকে পরে। আইরাতের সারা মুখে নিজের চক্ষু দুটো বিচরন করে চলেছে। আব্রাহামের খুব করে ইচ্ছে করছে এই আইরাতের মাঝে এখনই ডুব দিতে। কিন্তু এখন না, এখন সঠিক সময় না। নিজের অজান্তেই অনেক ভালোবেসে ফেলেছে এই মেয়েটাকে আব্রাহাম। কখনো ভাবে নি যে এই এতো রাতে নিজের ঘুম ছেড়ে সে এক মেয়ের ঘুমন্ত চেহারা দেখার জন্য বেকুল হয়ে পরবে। কিন্তু যা আব্রাহাম কখনো ভাবেই নি তা আজ তার সাথে ঘটে যাচ্ছে। আব্রাহাম আর কিছুটা ঝুকে আইরাতের কপালে এক গভীর চুমু একে দেয়৷ ঘুমের মাঝেই আইরাত কিছুটা নড়ে চড়ে উঠে। আব্রাহাম আইরাতের এক হাত নিয়ে নিজের দুই হাতের ভাজে আকড়ে ধরে। আইরাতের দিকে এক স্থীর নয়নে তাকিতে আছে আর একটু পর পর তার হাতে চুমু আকছে।

আইরাতেরও মনে হচ্ছে যে কেউ একজন ঘুমের মাঝেই তাকে খুব করে পর্যবেক্ষণ করছে। কিন্তু চোখ মেলে তাকানোর মতো সাধ্য তার হচ্ছে না। ঘুম খুব তীব্র। আব্রাহাম সারা রাত আইরাতের হাত ধরে তার পাশেই বসে ছিলো। যখন ভোরের আলো আবছা আবছা ভাবে ফুটে ওঠতে শুরু করলো তখন আব্রাহাম আরেকবার আইরাতের কপালে চুমু দিয়ে নিজের ঘরে চলে আসে।

সকাল ৮ টা। আইরাতের ঘুম ভেঙে যায়। আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসে পরে বিছানাতে। তবে নিজের রুমে থাকা বড়ো আয়নার দিকে চোখ পরতেই আইরাত চমকে যায়। আয়নাতে সুন্দর করে লাল কালি দিয়ে লিখা “” Good morning my Babygirl “”। আইরাত কপাল কুচকে দুই হাত দিয়ে চোখ ভালো ভাবে ডলে নেয়। এই সাজ সকাল বেলা কে তার রুমে এসেছিলো। আর আয়নাতে লাল কালি দিয়ে এভাবে গুড মর্নিং উইস কে করে। আইরাত দ্রুত উঠে গিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়ায়। হাত দিয়ে ধরে দেখে এটা কালি না বরং লাল লিপস্টিক। আইরাত বেশ অবাক হয়। আইরাতের সন্দেহ যায় সোজা আব্রাহামের ওপর। কারণ এই বেবিগার্ল ডাক টা আব্রাহামের দেওয়া। কিন্তু এত্তো সকাল বেলা কখন কীভাবে উনি রুমে এলেন।

আইরাত;; এই ছেলে আমায় পাগল বানিয়ে দিবে। রুমে কখন এলো উনি? ধুর উনার পক্ষে কোন কিছুই অসম্ভব না। যাজ্ঞে যাই হোক। একটু পরেই রোদেলা আসবে।

আইরাত উঠে গিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেলো। এদিকে আব্রাহাম করিডরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গরম কফিতে চুমুক দিচ্ছে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে সকাল ৮ টা। আইরাত অবশ্যই এখন ঘুম থেকে উঠেছে। আইরাত ওয়াসরুমে শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গান গাচ্ছে আর ফ্রেশ হচ্ছে মানে বাথরুম সিংগার যাকে বলে আর কি।

আইরাত;; টিপ টিপ বারছা পানি, পানি ম্যা আগ লাগায়ি। আগ লাগি দিল ম্যা তো দিল কো তেরি ইয়াদ আয়ি। উলুলুলুলুলুলুলুলুলু। ইলু ইলু লালালালালালালা।

ফ্রেশ হওয়া শেষে আইরাত একটা টাওয়াল পেচিয়ে বাইরে আসে। মাথায় একটা টাওয়াল মানে চুল গুলো প্যাচানো আর শরীরে একটা টাওয়াল হাটু অব্দি। আইরাত গুনগুন করে গান গেতে গেতে বাইরে বের হয়ে আসে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের মাথা থেকে টাওয়াল টা খুলে ফেলে চুল গুলো ঝাড়তে ঝাড়তে আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। আইরাত তো মনের সুখে গান গাচ্ছে। আয়নাতে তাকাতেই দেখে আব্রাহাম বিছানাতে হেলান দিয়ে শুয়ে আছে।

আব্রাহাম;; হাই জানপাখি..!

আইরাত;; হাই। আয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া

আব্রাহাম এতোক্ষন সবকিছু দেখছিলো। আর আইরাত তো নিজের মন মতো। সে আব্রহাম কে এতোক্ষন খেয়ালই করে নি। তবে আইনাতে আব্রাহামকে দেখে আইরাতের প্রাণ পাখি যেন যায় যায়। নিজের হাত দিয়ে খামছে টাওয়াল ধরে ফেলে। টাওয়াল টা নিচের দিকে টানছে। এবার আব্রাহাম সোজা হয়ে বসে।

আব্রাহাম;; এতো টানাটানি করলে টাওয়াল টা সোজা খুলে নিচে নেমে পরবে।

আইরাত;; 😟☹️।

আব্রাহাম উঠে গিয়ে আইরাতের দিকে যেতে ধরে। আব্রাহাম তার দিকে এক পা এক পা করে এগোচ্ছে আর আইরাত পেছাচ্ছে। পেছাতে পেছতে দেওয়ালের সাথে এক সময় আইরাতের পিঠ ঠেকে যায়৷ আব্রাহাম কাছে গিয়ে তার এক হাত দিয়ে আইরাতের কোমড় আকড়ে ধরে নিজের দিকে দেয় এক টান। এতে আইরাত উলটো ঘুড়ে যায়। আব্রাহামের বুকের সাথে তার পিঠ ঠেকে আছে। আব্রাহাম দুই হাত দিয়ে আইরাত কে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে তারা। আব্রাহাম আইরাতের ঘাড়ে নিজের নাক ঘষতে থাকে। কিন্তু এদিকে আইরাতের হাল তো বেহাল। হাত দিয়ে টাওয়াল খামছে ধরে আছে। কেমন কেপে কেপে উঠছে। আর আব্রাহাম তো আইরাতের ঘ্রাণ নিতে মত্ত।

আব্রাহাম;; তুমি কেন এভাবে আমার সামনে আসো। প্লিজ এসো না। আমি পাগল হয়ে যাবো।

আইরাত;; ছ ছা ছাড়ুন।

আব্রাহাম কিছু না বলে আইরাতের ভেজা চুলে নিজের নাক ডুবায়। আইরাত এবার লাগাতার ভাবে কাপছে।

আব্রাহাম;; একটু পরে নিচে ফাংশন আছে আছে রেডি হয়ে নুচে এসো।

আব্রাহাম আইরাতকে ছেড়ে দিয়ে চলে আসতে নেয়। আইরাত একটু দম ছাড়ে। কিন্তু পরক্ষণেই আবার এসে আইরাতের ঠোঁটের কাছে একটা চুমু বসিয়ে দিয়ে যায়। তারপর চলে যায়। আর আইরাত তো ফাটা চোখে তাকিয়ে আছে।


তার কিছুক্ষন পর রোদেলা আসে রুমে শাড়ি নিয়ে। বেশ কিছু সময় নিয়ে আইরাতকে শাড়ি পরিয়ে দেয়। আইরাত অনেক ফর্সা। আর ফর্সার মাঝে শাড়ির কালার টা যেন ফুটে ওঠেছে। কানে ছোট ছোট দুটো সিলভার কালারের ঝুমকো পরে নেয়। আর চুল গুলো ছেড়ে দেয়।

রোদেলা;; অনেক সুন্দর লাগছে৷

আইরাত;; তাই!

রোদেলা;; হ্যাঁ। দেখো নিচে গেলে সবাই তাকিয়ে থাকবে। কারণ এটা একদম আনকোমন ড্রেসাপ।

আইরাত;; হয়েছে, তোমাকেও কিন্তু কম সুন্দর লাগছে না।

আইরাত আর রোদেলা নিচে চলে যায়। সেখানে আব্রাহাম আর বাকি সবাই আগে থেকেই ছিলো। আইরাতের আসতেই আব্রাহাম সরু দৃষ্টি তে তাকিয়ে থাকে। আইরাত যে এমন কিছু একটা পরে আসবে আব্রাহাম তা ভাবে নি। আইরাতকে দেখে আব্রাহাম তার বুকের বা পাশে হাত রেখে দেয়। ইন ফ্যাক্ট সবাই তাকিয়েই আছে। এমন একটা পরিবেশে শাড়ি। আইরাতকে আসতে দেখে আব্রাহাম তার দিকে এগিয়ে যায়। আব্রাহাম আইরাতের দিকে নিজের বাহু এগিয়ে দেয়। আইরাত কপাল কুচকে তাকায়।

আইরাত;; কি হয়েছে?

আব্রাহাম;; এখানে এমনই হয়। আমার বাহুতে হাত রেখে দাও। সবার কাপল আছে কিন্তু আমার নেই। আমার ভালো লাগছে না। হাত রাখো।

আইরাত;; তো এখানে কি? কতো শত মেয়েই তো আছে তাদের কাছে যান। আমি হাত দিবো না।

আব্রাহাম;; আইরাত বেবি হাত রাখতে বলেছি তোমাকে 🙂।

আইরাত;; এভাবে প্লিজ বলবেন না আমার ভয় লাগে কখন কি করে বসেন।

আব্রাহাম;; ভালোই ভালোই হাত রাখো।

আব্রাহামের এমন কথা শুনে আইরাত না পেরে হাত রেখেই দেয় তার বাহুতে।

এখন আব্রাহাম আর আইরাতকে একটা পারফেক্ট কাপলের মতো লাগছে৷ তবে আইরাতের দিকে আরেক টা নজর তাকিয়ে আছে। এই নজর লালসার। আইরাতের দিকে রায়হান তাকিয়ে আছে আর আব্রাহামের থেকে প্রচুর জ্বলছে। সফট একটা মিউজিক চলছে৷ সবাই পরিবেশ টা উপভোগ করছে। আর আব্রাহাম আইরাতকে জ্বালিয়ে মারছে। বেশ অনেক সময় পার হয়ে যায়। একটা ওয়েটার এসে আইরাত আর আব্রাহামের সামনে জুস রাখে। আইরাত একটা জুসের গ্লাস নিতে যাবে তখনই তার শাড়িতে জুস পরে যায়। আইরাত সাথে সাথে উঠে ঝেড়ে ফেলে। আব্রাহাম রেগে কিছু বলতে যাবে কিন্তু আইরাত থামিয়ে দেয়। আইরাত আব্রাহামকে বলে ওয়াসরুমের দিকে চলে যায়। ওয়াসরুম টাও অনেক বড়ো সড়ো। আইরাত বিরক্তি নিয়ে শাড়ি পরিষ্কার করছে। এতো পরিপাটি হয়ে রেডি হয়েছিলো গেলো এবার সব। শাড়ি ক্লিন করে আইরাত বাইরে এসে পরতে নিবে কিন্তু তখনই কেউ একজন আইরাতের হাত ধরে টেনে একটা অন্ধকার রুমে নিয়ে যায়। আইরাত চিৎকার করতে ধরলে সে তার মুখ চেপে ধরে।





চলবে~

আগের পর্বের লিংক 👇

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here