নেশাক্ত_ভালোবাসা #লেখিকাঃ Tamanna Islam #পর্বঃ ৬১

0
550

#নেশাক্ত_ভালোবাসা
#লেখিকাঃ Tamanna Islam
#পর্বঃ ৬১

আইরাত দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সবার সাথেই হাসি মুখে কুশল বিনিময় করছিলো। তার ফাঁকে ফাঁকেই বাকা চোখে আবার আব্রাহামের দিকে নজর দিচ্ছে। অনেকে তাদের হাতে ড্রিংক্স নিয়ে আছে, কথার বলার মাঝে মাঝে তাতে চুমু দিচ্ছে। আবার কেউ কেউ সফট মিউজিকের তালে তালে নিজেদের পার্টনারের সাথে কপল ডান্স করছে। আইরাতের কথা বলা শেষ হলে সে আব্রাহামের দিকে তাকায়। দেখে যে সে বসে বসে ফোন ঘাটছে। আইরাত ধীর পায়ে তার দিকে এগিয়ে যায়।

আইরাত;; হেই জামাইজান!!

আব্রাহাম;; উফফ বিরক্তিকর…

আইরাত;; এখানে এতো ভালো পার্টি রেখে ফোনে কি করা হচ্ছে?

আব্রাহাম;; Mind your own business girl….

আইরাত;; Yes, i am… আমার কাজই তো আপনার পেছনে লাগা আর আপনার সাথে চিপকে থাকা। আপনি কি করছেন না করছেন সেদিকে খেয়াল রাখা। আর আমি তো তাই করছি তাই না।

আব্রাহাম;; হুমম।

আব্রাহাম এবার আইরাতের দিকে তকায়। আব্রাহামের চোখ গুলো আইরাতের সারা মুখে বিচরণ করে চলেছে।

আব্রাহাম;; কিছু একটা মিস্টেক আছে।

আইরাত;; কি?

আব্রাহাম;; তোমার কানের ঝুমকো তে একটা হুয়াইট স্টোন কম আছে মানে গায়েব আর কি।

আইরাত;; এত্তো ক্ষুদ্র একটা জিনিস এত্তো সুক্ষ্ম ভাবে লক্ষ্য করলেন? কেনো বলুন তো?

আব্রাহাম;; আমি মেয়েদেরই বেশি লক্ষ্য করি।

আইরাত;; চোখ দুটো যখন কাটা চামচ দিয়ে বের করে মার্বেল খেলবো তখন লক্ষ্য কইরেন বেশি করে 🙂৷

আব্রাহাম;; হাহ্

তখনই রোদেলা আইরাতের কাছে আসে। অফিসের পরবর্তী প্রজেক্ট যার সাথে সাইন করার কথা উনি এসেছেন। তাই সৌজন্যের খাতিরে দেখা তো করতেই হবে। আইরাত একবার আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে রোদেলার সাথে চলে যায়। তখনই একজন লোক আসে। তিনি আইরাতের সাথে কথা বলেন। এক সময় হ্যান্ডশেক করেন। তারপর আরো কিছুক্ষন সময় কথা বলে চলে আসেন। তারপরেই সেখানে আহসান যায় অর্থাৎ আইরাত যাকে ভাই বলে ডাকে সেই আর কি। আইরাত তো আহসানের সাথে বেশ ফ্রি। তারা দুইজন মিলে বেশ আড্ডা দিচ্ছে। কথা বলার এক সময় আইরাতের মাথার সাইডের কিছু ক্লিপ খুলে যায়। আহসান সেগুলো আইরাতকে ইশারা দিয়ে দেখিয়ে দেয়। আইরাত ঠিক করতে না পারলে আহসান আইরাতের মাথায় হাত দিয়ে ঠিক করে দেয়।

আহসান;; আরে এইদিকের ক্লিপ গুলো খুলে গেছে তো।

আইরাত;; আরে ধুরু ভেজাল।

আহসান;; নাও এবার ঠিক আছে।

আইরাত;; থাংকু ভাইয়া।

আহসান;; ওয়েলকাম বইনা।

আইরাত আর আহসান মিলে আবার কথা বলা শুরু করে দেয়। তবে এখানেই কেউ একজন তাদের দেখে রাগে ফেটে পরছে। তবে তা প্রকাশ করছে না। তার কয়েক মিনিট পরেই ঠাস করে কিছু একটা ভেঙে যাওয়ার শব্দ আসে৷ আইরাত সহ বাকি সবাই সেদিকে তাকায়। দেখে আব্রাহাম তার মাথা নিচু করে বসে আছে তবে তার হাতের অবস্থা খারাপ। আব্রাহামের হাতে একটা এলকোহলের গ্লাস ছিলো আব্রাহাম তা তার হাতের চাপেই ফাটিয়ে দিয়েছে। গ্লাস টা হাতের মাঝেই ভেঙে খানখান হয়ে গিয়েছে৷ মূহুর্তেই আব্রাহামের হাত থেকে রক্ত পরা শুরু করে দেয়। কাচের টুকরো গুলো নিচে পরে আছে। আইরাত তো এটা দেখেই কপাল কুচকে চিন্তা মাখা মুখ নিয়ে আব্রাহামের কাছে আসে। এসেই আব্রাহামের হাত ধরে ফেলে।

আইরাত;; আব্রাহাম!! কি করলেন এটা আপনি? এভাবে হাতের মাঝে রেখেই কেউ গ্লাস ভাঙে নাকি। আপনার ভাংচুর করতে মন চাচ্ছে আমাকে একবার বলে দিতেন। আমি হাজার হাজার জিনিস হাজির করে দিতাম কতো ভাংবেন আপনি। কিন্তু এভাবে??

আব্রাহাম ঝট করে আইরাতের কাছ থেকে নিজের হাত টা ছাড়িয়ে নেয়। সেখান থেকে উঠে চলে যেতে নেয় তবে আইরাত থমিয়ে দেয়। আব্রাহাম শুধু টিস্যু দিয়ে কো রকমে হাত টা পেচিয়ে নেয়। আইরাতও কিছু বলে না। আব্রাহাম এভাবে রেগে কেনো গেলো আইরাত তাই বুঝে উঠতে পারলো না। সময় এভাবেই কিছুক্ষন চলে যায়। তারপর আইরাত খেয়াল করে যে আব্রাহাম জমিয়ে একটা মেয়ের সাথে ফ্লার্ট করছে। আর ওই মেয়ে হেসে হেসে ফেটে পরছে। আইরাত এগুলো দেখে সরু চোখে তাদের দিকে তাকায়। কিন্তু আইরাতও তো কম না। আইরাত গিয়ে সফট মিউজিক বাদ দিয়ে ধুম ধারাক্কা গান বাজাতে বলে আসে। প্রথমে “mujhe to teri lat lag gayi” গান লাগিয়ে আসে আর তারপর
” Avi toh party shuru huyi hain ” আইরাত নিজেও গানের তালে তালে গা দুলাচ্ছে রোদেলা আর বাকি যারা ছিলো তাদের সাথে। মানে আব্রাহাম কে সে ইগ্নোর করেও করছে না। সে দেখাতে চাচ্ছে যে আব্রাহাম যা ইচ্ছে করুক গা আইরাত তো নিজের মতো করে আছেই। She Don’t give a damn about him…. আইরাতের এমন করাতে পুরো পার্টির হুলিয়া-নশকা সব পালটে গেছে। আইরাত আরো একটু বেপরোয়া ভাব ধরে, পার্টি তে অনেক ছেলে ছিলো তারাও তাদের মতো করে রয়েছে। যদিও তারা আইরাতের কাছে আসার চেষ্টা করেছে কিন্তু আইরাত কাউকে পাত্তাই দিচ্ছে না। আইরাত এমন করছে আর আড়চোখে আব্রাহাম কে দেখছে। কিন্তু আব্রাহাম আগে যেমন ছিলো এখনো সেইম। সে আরো উলটা অন্য দিকে ঘুড়ে ড্রিং করছে। এতে আইরাত নিজের মনে মনে আব্রাহাম কে একটা ভেংচি কেটে দেয়। তিবে প্রকৃতপক্ষে কিন্তু আব্রাহামের নজর আইরাতের দিকে আছেই। অর্থাৎ দুইজনই ছুপা রুস্তাম। দুজনেই দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে কিন্তু বুঝতে কেউই কাউকে দিচ্ছে না। কেউ কারো থেকে একবিন্দুও কম না। একসময় গান অফ হয়ে যায়। সবাই মিলে কিছুটা চিল্লিয়ে উঠে। আর একসাথে কড়তালি দেয়। এবার আব্রাহাম ঘুড়ে আইরাতের দিকে তাকায়। আইরাত নিজেও আব্রাহামের দিকে তাকায়। আইরাত হেটে আব্রাহামের কাছে আসে। এসে আব্রাহামের পাশে দাঁড়িয়ে পরে। দুজনই চুপ। হঠাৎ আব্রাহাম আইরাতের দিকে তাকায়। আইরাতের কেনো যেনো মনে হচ্ছে যে পাশ থেকে কেউ একজন তার দিকে তাকিয়ে আছে। আইরাত ফট করে মাথা ঘুড়িয়ে তার সাইডে তাকায় দেখে আব্রাহাম তার দিকে ঘোর লাগা নয়নে তাকিয়ে আছে। আইরাত তার চোখ গুলো নামিয়ে নিজের গলা কিছুটা খাকাড়ি দিয়ে ওঠে। কিন্তু আব্রাহাম হুট করেই আইরাতের দিকে এগোতে লাগে। আইরাত এটা বুঝতে পেরে পাশে তাকায়। আব্রাহাম ক্রমশ তার দিকে এগিয়ে আসছে। আব্রাহামের চোখ গুলো আইরাতের ঠোঁটের দিকে স্থীর। আইরাত কিছুটা হকচকিয়ে ওঠে। সে ভেবেছে হয়তো আব্রাহাম কিছু একটা করে বসবে এখানেই কিন্তু আইরাতের ধারনা কে ভুল প্রমাণ করে দিয়ে আব্রাহাম করে উল্টো কাজ। আইরাতের গলাতে একটা ব্লেক কালারের স্কাফ ছিলো। আব্রাহাম সেটা আস্তে করে টান দিয়ে নিয়ে নেয়। তার এমন কান্ডে আইরাত কপাল কুচকে তাকায়। আব্রাহাম কিছু না বলেই আইরাতের ওই স্কাফ টা নিয়ে নিজের হাতের ক্ষত স্থানে বেধে নেয়। আব্রাহামের এমন করাতে আইরাত বেশ অবাকই হয়। আব্রাহাম আইরাতের দিকে তাকিয়েই তার হাতে স্কাফ টা বেধে নেয়। আইরাত অবাক দৃষ্টিতে একবার আব্রাহামের দিকে আরেকবার তার হাতের দিকে তাকাচ্ছে। অবশেষে আব্রাহাম স্কাফের শেষ অংশ টা তার হাতে বেধে আইরাতের দিকে তাকিয়ে একটা ডোন্ট কেয়ার ওয়ালা ভাব নিয়ে চলে আসে। আইরাত আব্রাহামের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আবার সামনে তাকায়।

আব্রাহাম হেটে হেটে পার্কিং প্লেসে চলে যায় একা। সবসময় নিজের সাথে গার্ড নিয়ে ঘুরতে কার ভালো লগে। আর আব্রাহাম নিজেই এনাফ অবশ্যই তার অন্য কাউকে দরকার পরে না। আব্রাহাম নিজের গাড়ির কাছে চলে যায়। জেকেট টা গাড়ির ভেতরে সীটের ওপরে রেখে দেয়। আর এখানেই গোন্ডগোল টা পাকে। আব্রাহাম তার হাতে একটা সিগারেট নিয়ে নেয়। গাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে আছে সে। লাইটার দিয়ে সিগারেট টা জ্বালিয়ে নিলো। ব্যাসিক্যালি আব্রাহাম স্মোক করে না, খুবই কম। সিগারেটের কয়েক পাফ নিতেই আব্রাহামের কেনো জানি মনে হলো যে তার পেছনে কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে। আব্রাহামের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় তাকে তা পরিষ্কার জানান দিচ্ছে। আব্রাহামের কাছে ব্যাপার টা আরো বেশি ক্লিয়ার হয়ে যায় যখন আব্রাহাম তার সামনে থাকা আরেকটা গাড়ির সাইড গ্লাসে ঠিক তার পেছনেই একটা লোকের অবয়ব দেখতে পায়। লোকটি আব্রাহাম কে আঘাত করতে যাবে তার আগেই আব্রাহাম ঝট করে তার পেছন ঘুড়ে লোকটির হাত ধরে ফেলে। লোকটির হাতে শক্ত কিছুটা একটা ছিলো যা দিয়ে সে আব্রাহাম কে আঘাত করতে চেয়েছিলো। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠে নি। আব্রাহাম তার এক হাত দিয়ে লোকটার গলা পেচিয়ে ধরে। এতে লোকটার শ্বাস আটকে আসতে শুরু করলো। আব্রাহাম কিছুক্ষন বেশ শক্তি দিয়ে লোকটিকে চেপে রাখে। যখন লোকটির অবস্থা বেগতিক তখন আব্রাহাম তাকে ছেড়ে দূরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। লোকটি ভয়ার্ত চোখে আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে ছিলো। তখনই আব্রাহাম তার পকেট থেকে একটা রিভলবার বের করে। রিভলবার টা বের করে সোজা সেই লোকটির মাথা বরাবর তাক করে ধরে। সামনে থাকা লোকটি তো ভয়ে কাদো কাদো অবস্থা। আব্রাহাম হঠাৎ তার রিভলবার টা আস্তে আস্তে নিচে নামিয়ে এনে লোকটির পা বরাবর তাক করে ধরে। লোকটি কিছু বলতে যাবে তার আগেই আব্রাহাম শুট করে দেয় তার পায়ে। লোকটি অসহ্য ব্যাথায় চিল্লিয়ে উঠে। আব্রাহাম এবার তার এক পা ভাজ করে লোকটির সামনে বসে পরে। রিভলবার দিয়ে নিজের মাথার সাইডে কিছুটা স্লাইড করে আবার সরু দৃষ্টিতে লোকটির দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে…….

আব্রাহাম;; দেখ, না আমি তোকে চিনি আর না ই তুই আমাকে চিনিস। নাকি তুই আমাকে চিনিস আচ্ছা যাই হোক। তোর কোন ক্ষতি আমার জানা মতে আমি করি নি। তাহলে কেনো, কেনো আমাকে মারতে এখানে এসেছিস বলতো। মানে তোর সাথে আমার কোন রকম কোন শত্রুতা নেই তারপরেও তুই আমাকে মারতে এসেছিস। শখ জেগেছে তোর মরার। কেনো অযথা নিজের মৃত্যুর দিকে পা বাড়াচ্ছিস বল তো। আজ ছেড়ে দিলাম এরপর বিনা কথায় সোজা ওপরে বুঝলি। গার্ড…

আব্রাহামের একটা গার্ড এসে সেই লোকটিকে নিয়ে যায়। আব্রাহাম আবার তার পেছনের পকেটে রিভলবার টা তুলে রেখে দেয়। তারপর সে নিজেও চলে যায়। কিন্তু খানিক দূর থেকে কেউ খুটিয়ে খুটিয়ে আব্রাহাম কে আর তার কাজ কে দেখছে। আর তা হলো আইরাত নিজেই। আইরাতের সাথে রাশেদও রয়েছে। আইরাত আর রাশেদ মূলত একটা গাড়িতে। আর হ্যাঁ যেই লোকটিকে পাঠানো হয়েছিলো আব্রাহাম কে মারার জন্য সে আর কেউ না আইরাত নিজে ইচ্ছে করেই পাঠিয়েছিলো। যদিও সে জানতো যে এই লোকটা আব্রাহামের ধারে-কাছেও যেতে পারবে না তবুও কিছু জিনিস লক্ষ্য করার জন্য আইরাত এই কাজ টা করেছে। আব্রাহামের সেখান থেকে চলে যেতেই আইরাতের মুখে হাসি ফুটে ওঠে। সে যা ভেবেছিলো তাই হয়েছে। আব্রাহামের ব্যাপারে আইরাতের সন্দেহটা যেনো আরো গাঢ় হয়ে গেলো।

রাশেদ;; ম্যাম স্যার তো……

আইরাত;; তুমি খেয়াল করেছো কিছু?

রাশেদ;; জ্বি ম্যাম অর্নীল স্যার যেভাবে রিভলবার ধরেছিলো আব্রাহাম স্যারের রিভলবার ধরার স্টাইলও পুরোই এক। ইভেন স্যার যে শুট করলো মানে সব একই।

আইরাত;; সবচেয়ে বড়ো কথা হচ্ছে আব্রাহামের সব রিভলবার গুলোর ওপর একটা গোল্ডেন কালারের চ্যাক থাকতো। এবারও কিন্তু তার ব্যাতিক্রম নয়। ওর হাতে যে রিভলবার টা ছিলো তাতেও গোল্ডেন কালারের একটা চ্যাক রয়েছে।

রাশেদ;; হুমমম।

আইরাত;; ও আমার আব্রাহাম ই রাশেদ। ও যতোই না বলুন আমাকে। আমি ওকে চিনি।

তারকিছুক্ষণ পর আইরাত আর রাশেদও সেখান থেকে এসে পরে। আইরাত যখন তার বাসায় আসে তখন দেখে ইলা বসে আছে।

আইরাত;; কি করছো?

ইলা;; কিছু না।

আইরাত;; মুখ টা এমন শুকনো কেনো?

ইলা;; আজ টিভিতে একজন কে দেখি।

আইরাত;; কাকে? (কানের দুল খুলতে খুলতে)

ইলা;; নাম ছিলো আব্রাহাম চৌধুরী কি কি যেনো একটা!

আইরাত;; অর্নীল।

ইলা;; হ্যাঁ

আইরাত;; ও কোন অর্নীল টর্নীল না ও আব্রাহাম ই।

ইলা;; কি করে সম্ভব এটা? আমাদের হয়তো কোথাও ভুল হচ্ছে। চেহারাতে মিল থাকে না মানুষের।

আইরাত;; চেহারাতে মিল থাকে কিন্তু গলার স্বর, হাটা চলা, কথা বলা, রাগি ভাব, ভেশ-ভুষা, মানে এত্তো মিল কীভাবে। আর মিল দেখেই যে আমি বলছি আব্রাহাম তা না আমার মন বলে সে আব্রাহাম।

ইলা;; তা তাহলে এ এতোদিন আম আমাদের কাছে এলো না কেনো? (কেদে)

আইরাত;; জানি না। কেনো এমন করছে তাও জানি না। এতো উঁচু খাদ থেকে পরে কীভাবে কি হলো কোথায় ছিলো মানে কিচ্ছু জানি না। তবে আমি শুধু এই টুকুই জানি যে ও আব্রাহাম। আর হ্যাঁ তুমি দেখো আমি তো ওর মুখ দিয়ে এটা স্বীকার করিয়েই ছাড়বো যে ও আব্রাহাম।

ইলা;; তুই, তুই কি ওর সাথে দেখা করিস?

আইরাত;; হ্যাঁ।

ইলা;; কেমন আছে ও?

আইরাত;; হ্যাঁ বেশ ভালো, আমাকে খারাপ রেখে অনেক ভালোই আছে ও।

ইলা;; তুই যা ফ্রেশ হয়ে নে। খাবি আয়।

আইরাত;; খেতে ইচ্ছে করছে না দাদি। কাল আবার সকাল সকাল যেতে হবে তবে কাল অফিসে যাবো না। কাল বাইরে থাকবো।

ইলা;; কোথায় যাবি?

আইরাত;; আব্রাহামের কনসার্ট আছে,, কনসার্ট বলতে ওর একটা শো আছে। সেখানে বেশ কিছু মানুষ থাকবে তাই।

ইলা;; ওহহ আচ্ছা।

আইরাত ওপরে তার রুমে চলে গেলো। কাপড় চেঞ্জ না করেই বিছানাতে গা এলিয়ে দিলো। ভালো লাগছে না। আইরাত এক সময় আব্রাহাম কে ফোন দিলো। ফোন তিনবার কেটে অফ হয়ে যায় তবে ধরে না। আইরাতও হাল ছাড়ার পাত্রি না সে লাগাতার ফোন দিতেই থাকলো। এক সময় ফোন রিসিভ হয়।

আব্রাহাম;; হ্যালো… (ভারি গলায়)

আইরাত;; এই কোথায় আপনি এতো দেরি কেনো ফোন ধরতে??

আব্রাহাম;; দেরি করি বা ফোন না ই ধরি তাতে তোমার কি। মানুষকে বিরক্ত করা ছাড়া আর কি কোন কাজ নেই তোমার?

আইরাত;; আরে না না মানুষকে না শুধু আপনাকে।

আব্রাহাম;; কি বলবে জলদি বলো।

আইরাত;; না মানে আসলে ইয়ে মানে….

আব্রাহাম;; না মানে ইয়ে এগুলো বাদ দিয়ে বলো তো কি বললে।

আইরাত;; মিস ইউ 😒😒

আব্রাহাম;; ঘুমাও রাত হয়েছে।

আইরাত;; আপনি তো আগে এতো আনরোমান্টিক ছিলেন না আব্রাহাম। আপনি এমন হলেন কেনো বলুন তো। আয় হায় আমি শেষ,, আমি তো আমার এমন জামাই কে চাই নি। এত্তো আনরোমান্টিক কেনো আপনি ধুর।

আব্রাহাম;; আইরাত কিছু কি খেয়েছো?

আইরাত;; না তো।

আব্রাহাম;; তাহলে এগুলো কি আবোল তাবোল বকছো। চুপচাপ গিয়ে ঘুমাও যাও।

আইরাত কিছু একটা বলতে যাবে তার আগেই সে আব্রাহামের পাশ থেকে কিছুটা মেয়েলি আওয়াজ শুনতে পায়। আইরাত কিছু বলতে যাবে তার আগেই আব্রাহাম তাকে বায় বলে ফোন কেটে দেয়। আইরাত কপাল কুচকে হাতে থাকা ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকে। যাই হোক এইসব ভাবনা আইরাত তার মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে পরেরদিন সকালের কথা ভাবতে থাকে। আব্রাহাম কে আরো একটু ভালো ভাবে প্যাচে ফেলতে হবে তার।





চলবে~~

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here