নেশাক্ত_ভালোবাসা #লেখিকাঃ Tamanna Islam #পর্বঃ ১০

0
906

#নেশাক্ত_ভালোবাসা
#লেখিকাঃ Tamanna Islam
#পর্বঃ ১০

আব্রাহাম তো সব কিছু ভাংচুর করে দুই হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে রেখেছে। আব্রাহামের দাদি বেশ বুঝে যে কিছু তো একটা গোন্ডগোল আছেই। তিনি খুব সাবধানে রুমের ভেতরে চলে যান। গিয়েই আব্রাহামের পাশে বসে পরে। আব্রাহামের মাথায় হাত রাখলে আব্রাহাম বুঝে যে এটা তার দাদির স্পর্শ। এই একটা মানুষ যার ওপর আব্রাহাম কখনোই রাগ করে থাকতে পারে না। আব্রাহাম মাথা নিচু করে তার দাদি দিকে ঘুড়ে বসে।

ইলা;; কি হয়েছে?

আব্রাহাম;; কেউ কখনো আমার দিকে চোখ তুলেও তাকানোর সাহস পেতো না আর আজ কিনা…!

ইলা;; কি হয়েছে বলবি তো?

আব্রাহাম;; কিছু না দাদি। ভালো লাগছে না আমার।

তখনই আব্রাহামের দাদি খেয়াল করে যে আব্রাহামের হাতের খানিক অংশ কেটে গিয়েছে হয়তো কাচ দিয়েই। ইলা দ্রুত আব্রাহামের হাত টা চেপে ধরে।

ইলা;; হে আল্লাহ হাত তো কেটে গিয়েছে তোর আর রক্ত পড়ছে। আচ্ছা আয় দেখি ক্ষত স্থান টুকু বেধে দেই।

আব্রাহাম;; ইট'”স্ নট এ বিগ ডিল দাদি। ঠিক হয়ে যাবে।

ইলা;; চুপ কর তো।

ইলা জোর করেই আব্রাহামের হাতের কাটা স্থান টুকুতে মলম লাগিয়ে দেয়। আব্রাহাম আজ সারাদিন রুম থেকেই বের হয় নি। খায়ও নি ঠিক ঠাক ভাবে। খাবার যেন তার গলা দিয়ে নামছেই না। আইরাতের থাপ্পর দেবার কথা টাই বার বার মন – মস্তিষ্কে ঘুরপাক খাচ্ছে। আব্রাহামের কথা হচ্ছে যে আমরা সবসময় যা নিজের চোখে দেখি তা সবসময় সঠিক হয় না। আইরাত শুধু দেখলো আর এসেই ঠাস। একটা বার এক্সপ্লেইন করার সুযোগ তো দিতো। কিন্তু না আইরাত তা করে নি। আব্রাহামের হাতে এখন একটা গরম কফির মগ। করিডরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা গুলো ভাবছে আর গরম কফির মগে চুমুক দিচ্ছে। আইরাত কে সে কি যে করবে জানে না। মাথা প্রচন্ড রকমের খারাপ হয়ে রয়েছে। সেখানে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে আব্রাহাম এসে পরে।

আব্রাহাম;; আমি বিনা কারণে কিছু করি না। তবে একবার যদি আমার মেজাজ খারাপ হয়েছে তো আমি কাউকে ছাড়িও দেয় না। ভুল তো তুমি করেছো। তা বুঝেই হোক বা না বুঝে। ভুলের মাশুল দিতেই হবে আইরাত জান।

আব্রাহাম এখন দাঁড়িয়ে আছে ঠিক ১১ তালা ছাদের এক কিণারে। একধ্যানে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে আর এই কথা গুলো মনে মনে আওড়াচ্ছে। আব্রাহামের এটা পুরানা স্বভাব যখন রাগ উঠে আর তা কমানোর কোন উপায় পায় না তখন এই যে সুট করা, অযথা চাকু নিয়ে বসে থাকা, বা অনেক উচ্চতা থেকে নিচে তাকিয়ে থাকা। এগুলো করে যেন সে এক আলাদা শান্তি পায়। হ্যাঁ শুনতে অনেক অদ্ভুত কিন্তু এগুলোই সে করে থাকে। আব্রাহাম দাঁড়িয়ে ছিলো তখনই রাশেদ আব্রাহামের কাছে ফোন দেয় অর্থাৎ যে আব্রাহামের সাথে কাজ করে।

আব্রাহাম;; হ্যালো।

রাশেদ;; স্যার সাগরের লাশ টা পুলিশরা খুঁজে পেয়েছে।

আব্রাহাম;; কোথায় ফেলেছিলে ওইটাকে?

রাশেদ;; স্যার ব্রিজের ওপর থেকে ফেলে দিয়েছিলাম।

আব্রাহাম;; আহা, পুড়িয়ে দিলে বেশি ভালো হতো। এতে লাঠিও ভাঙতো না আর সাপও মরতো।

রাশেদ;; সরি স্যার ভুল করে ফেলেছি।

আব্রাহাম;; সিনিয়র ইন্সপেক্টর কে আমার সাথে কাল রাতের দিকে দেখা করতে বলো।

রাশেদ;; জ্বি স্যার।

আব্রাহাম;; আর হ্যাঁ মেক সিওর দ্যাট এই কেস নিয়ে যেন আর বেশি বারাবারি না হয়।

রাশেদ;; জ্বি স্যার। বেশি একটা প্রব্লেম এমনিতেও হবে না। আর আপনি যদি কাল অফিসারের সাথে দেখা করেন তাহলে তো আরো হবে না।

আব্রাহাম;; সামলাও সব, রাখি।

আব্রাহাম এই বলেই ফোন রেখে দেয়। ফোন টা একটা ছোট টেবিলের ওপর রেখে পেছন ঘুড়ে তাকায়। পেছন ঘুড়ে তাকাতেই ছাদের সব লাইট অফ হয়ে যায়। শুধু দুইটা লাইট জ্বলে ওঠে একটা আব্রাহামের ওপর আরেকটা আব্রাহামের থেকে বেশ কিছু দূরে। আব্রাহামের সামনে আসলে একটা গোল চেপ্টা বুলেট সুটার প্যালেট আছে। আব্রাহামের হাতে রয়েছে একটা গান। রিভলবার টা ওপরে তুলে রাগের চোটে ধাই ধাই করে সব গুলো গুলিই সুট করে দেয়। রাতের নিস্তব্ধ আঁধারে যেন গুলির আওয়াজ গুলো স্পষ্ট শোনা গেলো। সব গুলো গুলি সুট করে দেওয়ার সাথে সাথেই সেই বুলেট সুটার প্যালেট টা ঠাস করে নিচে পরে যায়। আব্রাহাম সিটি বাজাতে বাজতে নিজের রুমে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়। এখন শুধু কাল সকাল হবার পালা।


আইরাতের মেজাজ খুব খারাপ কাল কের ঘটনা টা নিয়ে। মানে আব্রাহামের হাতে ওই মেয়েটার ওরনা দেখে। আইরাত ভাবতেও পারে নি যে আব্রাহাম এতো নিচে নেমে যবে। মেজাজ খিটখিটে হয়ে আছে কোন মতেই ভালো হচ্ছে না। আজ আইরাতের ভার্সিটি নেই তাই সে ভেবেছে সকালের নাস্তা করে হোটেলে চলে যাবে সোজা। এখন আইনার সামনে ফ্রেশ হয়ে রেডি হচ্ছে আইরাত। তার চাচি চাচা সবায় হয়তো নিচে বসে ব্রেকফাস্ট করছে এখন। নিজের চুলগুলো আচড়াচ্ছিলো আইরাত কিন্তু তখনই নিচে হলরুম থেকে কিছু একটা চিল্লাচিল্লির আওয়াজ আইরাতের কানে আসে। আইরাত কপাল কুচকে নিচে চলে যায়। তবে নিচে যেতেই আইরাত অবাক, হা হয়ে গেছে সে। এই সাজ সকালে যে এমন কিছু হবে ভাবে নি। আইরাত সিড়ি বেয়ে আস্তে করে নিচে নেমে আসে। দেখে যে আব্রাহাম ডাইনিং টেবিলে এক পায়ের ওপর আরেক পা তুলে বসে বসে আপেল চিবুচ্ছে। আইরাত রাগ আর বিরক্তি নিয়ে আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু আব্রাহামের এমন অদ্ভুত আচরণ তো ইকবাল সাহেব কোন ক্রমেই মেনে নিতে পারছেন না। তাই তিনি চিল্লিয়ে বলে ওঠেন….

ইকবাল;; এই বেয়াদপ ছেলে। কে তুমি হ্যাঁ। আর এটা কি ধরণের অসভ্যতা। চেনা নেই জানা নেই একজনেই বাড়ির সোজা ভেতরে এসে এমন করে বসে আছো কে তুমি?

আব্রাহাম;; ওকে জিজ্ঞেস করুন কে আমি। সুন্দর করে বুঝিয়ে দিবে। (আইরাতের দিকে ইশারা করে)

ইকবাল সাহেব রাগ নিয়েই একবার আইরাতের দিকে তাকায় কিন্তু আবার আব্রাহাম কে বলে ওঠে..৷

ইকবাল;; আইরাত কে জিজ্ঞেস করবো মানে কি। ও কি করে তোমাকে চিনবে। এই উঠো, উঠো বলছি আর যাও এখান থেকে। এটা একটা ভদ্র পরিবার।

আব্রাহাম;; আহা, আস্তে চাচাজান আস্তে। বয়স্ক মানুষ আপনি চিল্লাপাল্লা কম করবেন বুঝলেন। নয়তো কে জানে কখন টপকে পরেন আবার।

এবার যেন আইরাত আর চুপ করে থাকতে পারলো না।

আইরাত;; এই আপনার সমস্যা কি হ্যাঁ। এখানে কেন এসেছেন। আর এগুলো কি করছেন?

আব্রাহাম;; আমি তোমার কোন কথা শুনতে চাইছি না আপাদত। তোমার হিসাব নিকাশ পরে করবো।

আইরাত, ইকবাল সাহেব, আর আব্রাহাম কথা কাটাকাটি করছে কিন্তু সবার মাঝেই আইরাতের চাচি কলি যেন মূর্তির ন্যায় বসে আছে চোখ পাকিয়ে দিয়ে। কেননা তিনি আব্রাহামের পরনে জেকেটের পাশে একটা গান দেখেছে৷ আর সেটা দেখেই আইরাতের চাচি ভয়ে জমে গেছেন, গলা দিয়ে কোন কিছু বের হচ্ছে না।

ইকবাল;; এই ছেলে বের হও এখান থেকে। নয়তো আমি বাধ্য হবো পুলিশ ডাকতে। আর আইরাত, তুমি আইরাত কে কীভাবে চেনো। কি হচ্ছে এগুলো?

আব্রাহাম;; আমরা দুইজন দুইজন কে কীভাবে চিনি জানি তা আপনার জানার দরকার নেই। এনিওয়েস, আমি এখানে আপনার সাথে নয় বরং আমার আইরাত জানের সাথে কথা বলতে এসেছি।

আইরাত;; মানে কি এইসবের। আমি আপনার সাথে কোন কথাই বলতে চাই না। কাল থেকে মেজাজ গরম হয়ে আছে। আমি দেখতেই চাই না আপনাকে।

ইকবাল সাহেবের কথায় তো আব্রাহামের মাথা গরম হয়েই ছিলো তবুও নিজেকে যথাসম্ভব ঠিক রেখেছিলো কিন্তু আইরাতের কথায় যেন এবার রাগের বাধ ভেঙে গেলো তার। আব্রাহাম তাকিয়ে দেখে ডাইনিং টেবিলের ঠিক মাঝখানে একটা ফলের ঝুড়ি রয়েছে। আর ফলগুলোর মাঝেই রয়েছে একটা ধারালো চাকু। আব্রাহাম রক্তচক্ষু নিয়ে দ্রুত উঠে ফলের ঝুড়ি থেকে চাকু টা হাতে নিয়ে নেয়। আর এক ঝটকায় আইরাতের বাহু ধরে নিজের কাছে আনে। হাত একদম চেপে ধরে তার। আইরাতের বাম হাত টা নিজের হাতের ভাজে নিয়ে রাগে লাল হয়ে বলে ওঠে…

আব্রাহাম;; এই হাত তাই না ঠিক এই বাম হাত টা দিয়েই কাল আমায় গালে থাপ্পর মেরেছিলে তাই না। খুব তেজ তোমার। কিছু না বুঝেই, না শুনেই রাগ ঝাড়ো। কিন্তু আসলে কি জানো আমার সামনে তুমি ঠুনকো কিছুই না। তোমার এই সাদা ধবধবে হাত খানা আর আমার ভালো লাগছে না। (আইরাতের হাত চেপে ধরে)

আইরাত কপাল কুচকে তাকিয়ে আছে। তখনই ইকবাল সাহেব এগিয়ে গিয়ে কিছু বলতে যাবেন। আব্রাহাম তখন কিছু না বলেই জেকেটের সাইডে থাকা গান টা তুলে টেবিলের ওপর রেখে দেয়। গান নিজের সামনে দেখেই আইরাতের চাচি কিছুটা চিল্লিয়ে দুই হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে আর ইকবাল সাহেব থেমে পরে।

আব্রাহাম;; যেই হাত টা আমায় আঘাত করেছে সেই হাত টাই আমি আর রাখবো না।

আব্রাহামের কথা না বুঝতে পেরে আইরাত কিছু একটা বলতে যাবে তার আগেই আব্রাহাম সেই ধারালো চাকু টা দিয়ে আইরাতের হাতে বসিয়ে দেয় এক ঘা। আইরাত অনেক জোরে চিল্লিয়ে ওঠে। হাতের তালুর মাঝ বরাবর কেটেছে একদম। গড়িয়ে রক্ত ঝড়ছে। তবে আব্রাহাম এক দৃষ্টিতে আইরাতের দিকে তাকিয়ে আছে। আর আইরাত ব্যাথায় কুকড়ে উঠছে।

আব্রাহাম;; ব্যাথা হচ্ছে তাই না জান, খুব খারাপ লাগছে। এই সেম খারাপ টা কাল আমারও লেগেছিলো।

ইকবাল সাহেব তেড়ে তাদের কাছে যাবে তার আগেই আব্রাহাম আইরাতের বাহু অনেক শক্ত করে ধরে সিড়ি বেয়ে সোজা ওপরে আইরাতের রুমে যাওয়া শুরু করে। আইরাত যেতে না চাইলে আব্রাহাম জোরে করেই তাকে টেনে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। আব্রাহাম আইরাতকে রুমে জোর করে নিয়ে গিয়েই বিছানাতে বসিয়ে দেয়। আর ঠাস করে রুমের দরজা টা লাগিয়ে দেয়। আর এদিকে ইকবাল সাহেবও দ্রুত সিড়ি বেয়ে ওপরে আইরাতের দরজার কাছে চলে যায়। এদিকে আইরাত ঘাবড়ে যায়। তার হাত দিয়ে এখনো তার অনেক রক্ত ঝড়ছে। তবে আব্রাহাম এক ঘোর লাগা নয়নে আইরাতের দিকে তাকিয়ে আছে। আব্রাহাম ধীর ধীর পায়ে আইরাতের দিকে এগোতে লাগে। আর আইরাত আব্রাহামের এমন ধীর পায়ে তার দিকে এগোতে দেখে আত্না শুকিয়ে যায়। আইরাত আস্তে আস্তে করে পেছাতে লাগে। আইরাত একবার পেছালে আব্রাহাম তার দিকে আরো কয়েকবার আগায়। এক সময় আব্রাহাম আইরাতের দুইপাশে হাত রেখে তাকে আটকিয়ে দেয়। আর আইরাতের দিকে অনেক ঝুকে পরে৷ আইরাত ভয়ে চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে নেয়। আইরাত ভেবেছিলো হয়তো আব্রাহাম এখন উল্টা পালটা কিছু একটা করবে কিন্তু আইরাতের ভাবনা কে ভুল প্রমাণ করে দিয়ে আব্রাহাম আইরাতের পেছনে থাকা ফাস্ট এইড বক্স টা হাতে নিয়ে আবার উঠে সোজা হয়ে দাঁড়ায়। আইরাতের রুমে সবসময় এটা থাকেই। আর আব্রাহাম যখন আইরাতকে টেনে টেনে রুমে আনছিলো তখনই আব্রাহাম তা লক্ষ্য করেছে। আব্রাহাম কিছু করছে না দেখে আইরাত পিটপিট করে চোখ মেলে তাকায়। সামনে তাকিয়ে দেখে যে আব্রাহামের হাতে ফাস্ট এইড বক্স রয়েছে। আইরাত তাকিয়ে থাকে। আব্রাহাম বক্স থেকে ব্যান্ডেজ আর সেভলন টা বের করে আইরাতের বাম হাতে দেয় এক টান। এতে আইরাত আরো বেশ ব্যাথা পায়। আব্রাহাম আলতো আলতো হাতে আইরাতের হাত টা ব্যান্ডেজ করে দিতে থাকে। প্রচুর জ্বালাপোড়া করছে হাতে, আইরাত চুপিসারে কান্না করেই যাচ্ছে। রাগের চোটে নিজের হাত টা আব্রাহামের হাতের ভাজ থেকে সরিয়ে আনতে চাইলে আব্রাহাম তা যেন আরো জোরে আকড়ে ধরে। আর এদিকে ইকবাল সাহেব আইরাতের রুমের দরজাতে এসে ইচ্ছে মতো ধাক্কাচ্ছেন কিন্তু খোলার নাম নেই। আইরাত বারবার রুমের দরজার দিকে আর আব্রাহামের দিকে তাকাচ্ছে। কিন্তু আব্রাহাম যেন অন্য কোন দিকে তোয়াক্কা না করে আইরাতের হাত ব্যান্ডেজ করতে খুবই ব্যাস্ত।

ইকবাল;; এই বেয়াদপ ছেলে। কি করছো তুমি ভেতরে৷ যদি কিছু উলটা পাল্টা কাজ করেছো আইরাতের সাথে তো একদম জান নিয়ে নেবো। ছেড়ে দাও বলছি আইরাতকে। কোন অসভ্যতা করবে না।

আইরাত দরজার দিকে তাকিয়ে আছে৷ আর এদিকে ইকবাল সাহেবের কথায় আব্রাহাম ফিক করে হেসে দেয়।

আব্রাহাম;; আমি এখানে তোমার হাতের ব্যান্ডেজ করে দিচ্ছি আর ওদিকে তোমার চাচ্চু আমাকে তোমার রেপ করার পারমিশন দিচ্ছে। লাইক সিরিয়াসলি..!

আব্রাহামের এমন কথায় আইরাত মাথা নিচু করে ফেলে। আর তখনই আইরাতের হাতের ব্যান্ডেজ করা শেষ হয়। আব্রাহাম এবার এক হাটু ভাজ করে আইরাতের সামনে বসে পরে।

আব্রাহাম;; ওই মেয়েটা তোমাদের কলেজের জুনিয়র ছিলো। কিছু বখাটে ছেলে ওকে জ্বালাচ্ছিলো। এক সময় গায়ের ওপর থেকে ওরনা টাও নিয়ে নেয়। চিল্লাচ্ছিলো আর আমি বাচিয়েছি। ওরনা টা তুলে ওকেই দিতাম কিন্তু তখন তুমি এসে পরলে আর ভুল বুঝলে আমায়। এতো টাই ভুল যে থাপ্পরও মেরেছো। যার পরিণাম সরুপ আজ তোমার এই হাত কাটা। নয়তো কাটতো না। তোমাকে আমি আঘাত করবো আর সেই আঘাতে মলম টাও আমিই লাগাবো। ঠিক যেমন টা করলাম এখন। বুঝলে। এবার থেকে, এরপর থেকে যাই করো না কেন একটু বুঝে শুনে করো নয়তো পরেরবার কি করবো নিজেও জানি না। তবে যাই করি না কেন তার ফল অতিমাত্রায় খারাপ হবে বুঝলে আইরাত বেইবি।

আব্রাহামের কথায় আইরাত শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিলো। অবশেষে আব্রাহাম দরজা খুলে। আইরাতের হাতটা নিজের এক হাত দিয়ে এখনো ধরেই রেখেছে। দরজা খুলেই দেখে ইকবাল সাহেব দাঁড়িয়ে আছেন।

আব্রাহাম;; এই যে চাচাজান সাইড প্লিজ।

ইকবাল সাহেবের পাশ কাটিয়ে আব্রাহাম আইরাতের হাত ধরে নিয়ে এসে পরে। কারো সাথে কোন কথা না বলে সোজা আইরাতের হাত ধরে বাইরে নিয়ে এসে পরে। বাইরে আসার সময় ডাইনিং টেবিলের ওপর থাকা গান টা ছু মেরে এনে পরে। তারপর কাউকে কিছু না বলেই আইরাতকে বাইরে নিয়ে এসে পরে। গাড়িতে বসিয়ে দেয়। এর মধ্যে আইরাত একটা কথাও বলছে না। মূলত সে ভয় পেয়ে আছে। আব্রাহাম এসে গাড়িতে আইরাতের পাশ দিয়ে বসে পরে। আব্রাহাম তাকে এখন কোথায় যে নিয়ে যাচ্ছে তা সে জানে না।





চলবে~

(আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত গল্প দেরি করে দেওয়ার জন্য। আসলে বাসায় কারেন্ট ছিলো না আর ফোনের চার্জও শেষ হয়ে গিয়েছিলো তাই গল্প লিখতে পারিনি। দুঃখিত ❤️)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here