নেশাক্ত_ভালোবাসা #লেখিকাঃ Tamanna Islam #পর্বঃ ০৯

0
887

#নেশাক্ত_ভালোবাসা
#লেখিকাঃ Tamanna Islam
#পর্বঃ ০৯

আব্রাহাম উঠে বাইরে তো চলে গেছে তবে তাকে দেখা যাচ্ছে না। আইরাত তাকে দেখার জন্য টেবিলে বসে থেকেই বাইরের দিকে উঁকি ঝুঁকি দিচ্ছে। তার কয়েক সেকেন্ড পরই আব্রাহাম এসে পরে। তার সাথে তিনজন ছোট ছোট ছেলেমেয়ে আছে। আব্রাহাম তাদের সাথে কথা বলছে আর ভেতরে নিয়ে আসছে। আইরাত তাদের দেখে দাঁড়িয়ে পরে। আব্রাহাম বাচ্চাদের এনে টেবিলে বসিয়ে দেয় সাথে নিজেও বসে পরে।

আব্রাহাম;; তো বাচ্চারা কে কি কি খাবে জলদি বলে ফেলো।

আব্রাহাম যেন বাচ্চাদের সাথে নিজেও বাচ্চা হয়ে গিয়েছে। হাসছে কথা বলছে কিন্তু বাচ্চাগুলো একে ওপরের দিকে তাকাতাকি করছে। হয়তো তারা তাদের জড়তা টা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারছে না। আব্রাহাম ব্যাপার টা বুঝতে পারলো তাই সে মুখ টা লটকিয়ে বলে ওঠে…

আব্রাহাম;; ক্ষিদে তো খুব পেয়েছে আমার। আমি তো একাধারে খাওয়া শুরু করে দেবো। পরে খাবার বাকি থাকবে কিনা আমি তা জানি না। কারণ আমি প্রচুর খাই। এবার তোমরা ভেবে নাও যে কে কি খাবে। খাবে নাকি আমিই সব খেয়ে নিইইইইইই…..

আব্রাহামের এমন করে বলাতেই একটা বাচ্চা কিছুটা জোরে বলে ওঠে “” না না না আমি খাবো আমি খাবো””। আব্রাহাম মুচকি হাসে। আর সাথে আইরাতও হেসে দেয়। এটা চালাকি ছিলো। আইরাত হেসে বাচ্চাগুলোর দিকে তাকিয়ে ছিলো। আব্রাহাম আইরাতের দিকে তাকায়। আইরাত দ্রুত বলে ওঠে…..

আইরাত;; আব… জ্বি অর্ডার?

আব্রাহাম;; এক কাজ করো যা যা আছে সব নিয়ে আসো।

আইরাত;; হ্যাঁ??

আব্রাহাম;; হুমম যা যা আইটেম আছে সবগুলো নিয়ে আসো।

আইরাত;; আ.. আচ্ছা আনছি।

আইরাত কিছুটা অবাক হয়েই চলে গেলো। অবনি আর বাকি কিছু স্টাফদের বলে সব রকমের খাবার নিয়ে গেলো। সব নিয়ে টেবিলের ওপর রেখে দিলো।

আব্রাহাম;; এইতো এসে গেছে খাবার৷ বাচ্চাপার্টি, দেরি কিসের শুরু করো জলদি।

আব্রাহামের বলতে দেরি কিন্তু বচ্চাদের খাওয়া শুরু করতে দেরি না। বাচ্চাগুলো একদম পেট পুরে খাচ্ছে। আব্রাহাম টেবিলের ওপর এক হাত রেখে আরেক হাত গালে ঠেকিয়ে রেখে দিয়েছে। আইরাত কিছুটা দূর থেকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে আর ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে। বাচ্চাগুলো তুমুল গতিতে খাচ্ছে। দেখেই বুঝা যাচ্ছে কি ক্ষুদার্থ। আইরাতের খারাপ লাগে। তবুও সে হাসে। আব্রাহাম আইরাতের দিকে তাকিয়ে দুইহাত ভাজ করে বসে। আইরাত এক নজর তার দিকে তাকিয়ে সেখান থেকে চলে আসে।

কিচেনের ভেতরে গেতেই আইরাত দেখে অবনি হা করে তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আইরাত একবার অবনির দিকে তাকায় আর একবার বাচ্চাগুলোর দিকে। আইরাত ফিক করে হেসে দেয়।

আইরাত;; এভবে তাকিয়ে থাকিস না, মুখে মশা ঢুকবে। যা ভেতরে যা।

অবনি;; হ্যাঁ।

আইরাত আর অবনি ভেতরে চলে যায়। বর্তমানে কোন কাজ নেই। তার প্রায় ত্রিশ মিনিট পর তাদের খাবার খাওয়া শেষ হয়। আইরাত আবার তাদের কাছে এগিয়ে যায়।

আইরাত;; খাওয়া শেষ?

বাচ্চা গুলো এখনো কিছু বলছে না। একদম চুপ। তখন আব্রাহাম বলে ওঠে..

আব্রাহাম;; হ্যাঁ শেষ, বিল টা দাও।

আইরাত;; জ্বি না কোন বিল লাগবে না (হেসে)

আব্রাহাম;; কিন্তু

আইরাত;; বললাম তো লাগবে না। ঠিক আছে।

আব্রাহাম;; ওকে ফাইন।

এবার তাদের মধ্যে থেকে একজন মেয়ে বলে ওঠে….

মেয়ে;; ভাইয়া, আপনে না অনেক ভালা।

আব্রাহাম এক গাল হেসে দেয় তার কথা শুনে। তিনজনের মাঝে দুইজন ছেলে আর একজন মেয়ে। তারা ভাই-বোন।

আব্রাহাম;; হুমম, কিন্তু একটা কথাই তো জানা হলো না। তোমাদের নাম কি?

পরী;; আমার নাম পরী। ওরা আমার ভাই নাবিল আর হাসিব।

আব্রাহাম;; বাহ, সবার নাম তো অনেক সুন্দর। আর তুমিও পরীর মতোই অনেক সুন্দর।

আব্রাহাম তাদের সাথে কথা বলছিলো আইরাত তখন স্টাফ দের ডেকে এনে সব প্লেটস্ গুলো নিয়ে যায়। আব্রাহাম সেখানে থেকে বাচ্চাদের সাথে অনেক কথা বলে তারপর আইরাতকে বলে তাদের নিয়ে বাইরে বের হয়ে যায়।

আইরাত;; উনার সাথে আমার দেখা হয়েছে থেকে এই আজ প্রথম তাকে দেখলাম কোন ভালো কাজ করতে।

অবনি;; শোন উনি অনেক ভালো বুঝলি। শুধু তুই-ই এমন করিস।

আইরাত;; কচুর মাথা।

অবনি;; শোন একটা মানুষ কখনোই শুধু খারাপ বা শুধু ভালো হতে পারে না বুঝলি। একটা কয়েনের যেমন এপিঠ-ওপিঠ আছে ঠিক তেমনই একটা মানুষেরও এপিঠ-ওপিঠ আছে বুঝলি।

আইরাত;; তা অবশ্য ঠিক বলেছিস।

অবনি;; আমি ভুল বলি কবে। (ভাব নিয়ে)

অবনির ভাব দেখে আইরাত দেয় তাকে এক ধাক্কা। আর হিহিহি করে হেসে দেয়। এভাবেই সেইদিন কাজ করে আইরাত বাড়ি এসে পরে। বাড়ি এসেই দেখে তার চাচি চাচা সবাই বসে আছে। তবে আজ পরিস্থিতি শান্ত। আইরাত হলরুমে গিয়েই নিজের ব্যাগ টা রেখে দেয়। কি বলবে মাথায় আসছে না। তাই কিছু না বলেই সোজা নিজের রুমের দিকে যেতে ধরে আইরাত। আর তখনই আইরাতের চাচি কলির ডাক।

কলি;; আইরাত..!

আইরাত থেমে যায়। ঘুড়ে আবার তার চাচির কাছে আসে।

আইরাত;; জ্বি চাচি।

কলি;; তোর সাথে কিছু কথা ছিলো।

আইরাত;; হ্যাঁ বলো।

কলি;; ভাবলাম তোর পড়াশোনা তো চলছে তাই না। দিন দুনিয়া বেশি ভালো না তার ওপর বাইরে যাস কাজ করতে। পড়াশোনা আর করতে হবে না। ভাবলাম তোর বিয়ে টা ভালো কাউকে খুঁজে দিয়ে দিবো।

আইরাত অবাক হয়ে দ্রুত তার চাচির দিকে তাকায়। ব্যাস এই টুকু কথাই যেন যথেষ্ট ছিলো আইরাতের রাগ উঠানোর জন্য। আইরাত তার চাচার দিকে তাকায় দেখে উনি মুখ গোমড়া করে দুইহাত ভাজ করে দিয়ে বসে আছেন। তাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে তার চাচির সাথে হয়তো তার চাচার এই ব্যাপারে অনেক কথা কাটাকাটি হয়েছে।

কলি;; শোন একটা লোক কে দেখেছি। বেশ ভালো টাকা আছে। তুই সুখে থাকবি। পরিবার অনেক বড়ো আর ভালো। তুই ত……

আইরাত;; হয়েছে তোমার। থামো এবার। কে বলেছে যে এখনই আমি বিয়ের জন্য রেডি। চাচি শুনো মানলাম তোমাদের সাথে থাকি। হয়তো এই পরিবারের একজন হয়ে বা বোঝা হয়ে। কিন্তু শুনে রাখো আমার জীবনের কোন সিদ্ধান্ত আমার অনুমতি ছাড়া নিতে পারবে না। আমি বড়ো হয়েছি ভালো মন্দ বুঝার বয়স হয়েছে আমার। বাইরে যাই কাজ করি সেখানে সেইফ থাকি আমি। না জানি কতো শত মেয়ে কাজ করে বাইরে৷ আর কি বললে লোক অনেক টাকা ওয়ালা পরিবার বড়ো। অবশ্যই লোকটি আমার থেকে বয়সে অনেক বড়ো হবে। সেই পরিবারে কেমন লোক থাকবে আমার সাথে কেমন বিহেভ করবে আমি তা জানি না। আর তোমার তো আমার খুশির চিন্তা না তোমার চিন্তা টাকার। যাক, জীবনে যা বলি নি আজ তোমাকে তা বলে দিলাম। এর পর থেকে আমার লাইফে নাক গলাতে এসো না।

এই বলেই আইরাত সোজা তার রুমে চলে যায়। আর আইরাতের চাচি ফাটা চোখে তাকিয়ে আছে। সে কল্পনাতেও ভাবে নি যে আইরাত তাকে এই কথা গুলো বলবে। কলি ইকবালের দিকে তাকিয়ে তেড়ে গিয়ে বলে ওঠলো….

কলি;; দেখলে দেখলে তুমি মেয়ের কেমন চটাং চটাং কথা ফুটেছে। কীভাবে কথা গুলো বললো আমায়। তুমি শুনলে রনিতের বাবা।

ইকবাক সাহেব তার বউ এর কথা শুনে বসা থেকে দাঁড়িয়ে পরলেন।

ইকবাল;; একদম উচিত কথা গুলো বলে গেছে আইরাত। শুনো সময় থাকতে ভালো হও, ভালো হতে পয়সা লাগে না বুঝলে।

এই কথা বলে ইকবাল সাহেবও নিজের ঘরে চলে গেলেন। কলি শুধু রাগে ফুসছে। আর অন্যদিকে আইরাত নিজের রুমে গিয়ে ধিরিম করে দরজা লাগিয়ে দিলো। কেন জানি এই বিয়ের নাম শুনলেই আইরাতের মাথায় আগুন ধরে যায়। বিয়ে থেকে এলার্জি তার। ভালো লাগে না। আইরাত কাজ করছে আর একা একাই বকবক করে চলেছে।

আইরাত;; সবসময় বেশি। এখন আর চুপ করে থাকবো না। যখন যা ইচ্ছে তাই বলবে নাকি। অনেক চুপ থেকেছি আর অনেক সহ্য করেছি কিন্তু আর না। আজ কিনা আমার বিয়ে অব্দি চলে গিয়েছে। মেজাজ টাই পুরো খারাপ করে দিয়েছে। এতো শখ যখন তখন নিজেই একটা বিয়ে করে নিক না। আমাকে বলতে কেন আসে। দরকার হলে এই বাড়িতেই থাকবো না বের হয়ে যাবো। এখনো থাকতাম না থাকছি শুধু চাচার আর রনিতের জন্য।

আইরাত রাগের চোটে ওয়াসরুমে ঢুকে যায় ফ্রেশ হতে। অনেকক্ষন পর বের হয়ে রাতের খাবার না খেয়েই শুয়ে পরে।


পরেরদিন ফোনের এলার্মে ঘুম ভাংে আইরাতের। উঠে দেখে বালিশের ওপর নিজের মাথার বদলে পা রয়েছে। মানে পুরো উলটো। এলোমেলো হয়ে না ঘুমালে তার ঘুম ধরে না। রাতে ফ্রেশ হয়ে শুয়েছিলো তাই চুল গুলো ভেজা। ভেজা চুল আর বাধে নি ওভাবেই শুয়েছিলো। এখন কাকের বাসা হয়ে আছে। আইরাত আড়মোড়া ভেঙে উঠে পরে। আজ ভার্সিটি তে লেকচার আছে। দ্রুত যেতে হবে। আইরাত উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে আসে। প্রতিদিন কার মতো তার চাচি এখনো ঘুম থেকেই উঠে নি। আইরাত গিয়ে সকালের নাস্তা বানিয়ে ফেলে। ডাইনিং টেবিলের ওপর খাবার সব রেখে দিয়ে এসে পরে। নিজের খাবার টুকু খেয়ে সুন্দর ভাবে রেডি হয়ে ভার্সিটি চলে যায়। বাইরে এসেই রিকশা নিয়ে নেয় যা সোজা তার ভার্সিটির সামনে এসে থামে। আইরাত নেমেই দেখে দিয়া দাঁড়িয়ে আছে।

দিয়া;; এসেছিস?

আইরাত;; আসলাম।

দিয়া;; তাড়াতাড়ি চল ওই বুইড়া মনে হয় ক্লাসে চলে গেছে।

আইরাত;; বুইড়া?

দিয়া;; আরে আব্দুল স্যার। খবিশ ওইডা তো বুইড়াই। ওর ই লেকচার।

আইরাত;; হায়রে।

দিয়া;; এই চল না লেকচার বাংক করি।

আইরাত;; এই হপ না। কত্তোদিন পর লেকচার আজ। করতে হবে। অযথা বাহানা করিস না তো প্লিজ চল।

আইরাত এক প্রকার বকতে বকতেই দিয়া কে নিয়ে গেলো লেকচার রুমে।

আজ আব্রাহাম এসেছে কিছুটা দেরি করে ভার্সিটির সামনে। যার ফলে আইরাতকে প্রথমে দেখতে পারে নি। আব্রাহাম মাস্ক পরেই থাকে। তাকে বাধ্য হয়েই পরতে হয়। গাড়ি থেকে নেমে গাড়ির সাইডে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো৷ তখনই তার কানে কিছুটা চিল্লা-পাল্লার আওয়াজ আসে৷ কোন মেয়ের গলা। আব্রাহামের কেমন যেন খটকা লাগে। আওয়াজের ধারা ধরে আব্রাহাম সেদিকেই চলে যায়। আর ওদিকে প্রায় ৫০ মিনিট পর লেকচার ক্লাস শেষ হয়। আর নাকি কোন ক্লাস হবে না। দিয়ার বাবা ফোন করেছিলো দিয়া কে আজ জলদি বাসায় যেতে বলেছে তাই সে ক্লাস থেকে বের হয়েই আইরাতকে বলে বাসায় চলে গিয়েছে। ক্লাস যেহেতু অনেক তাড়াতাড়ি শেষ তাই আইরাত ভাবলো যে তাড়াতাড়ি ই হোটেলে চলে যাবে। এতে সে কাজের টাইমও বেশি পাবে আর বাড়িতেও জলদি যেতে পারবে। এস এ রেজাল্ট তার চাচির বকবকানি থেকে মুক্তি পাবে। এগুলো ভেবে ভেবেই আইরাত সামনে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়। তবে ক্যাম্পাসের সাইড থেকে জোরে সোরে আওয়াজ এলে আইরাত কপাল কুচকে সেদিকে তাকায়। কৌতুহলী মন সেদিকে চলে যায়। আর গেতেই যা দেখে তাতে আইরাত চরম লেভেলের অবাক হয়। আইরাত কখনো ভাবতেও পারে নি যে এখানে এসে সে এমন কিছুটা দেখবে।

আইরাত গিয়ে দেখে সেখানে একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আর তার কিছু দূরেই আব্রাহাম। আব্রাহামের হাতে মেয়েটার ওরনা রয়েছে৷ আর মেয়েটা কেদে কেটে দাঁড়িয়ে আছে। আইরাত সেখানে গেলেই আব্রাহাম আর মেয়ে টা তাকে দেখে। আইরাতের চোখ মুখ সব রাগে লাল হয়ে গিয়েছে। আব্রাহামের হাতে মেয়েটার ওরনা দেখে এখন মেজাজ টা যেন ৪৪০° তে চলে গেছে। আব্রাহাম কিছু একটা বলতে যাবে তার আগেই আইরাত গিয়ে আব্রাহামের গালে কষে একটা থাপ্পর মেরে দেয়। থাপ্পরে আব্রাহাম নড়তে পারে নি এক ফোটাও। আব্রাহাম আগের ন্যায়-ই দাঁড়িয়ে আছে। তবুও আইরাত রাগে ফুসছে। আইরাত এক নজর আব্রাহাম আর মেয়ে টার দিকে তাকিয়ে রেগে মেগে সেখান থেকে এসে পরে। আব্রাহাম আর আইরাতের দিকে তাকায় না। আব্রাহাম শুধু চোখ দুটো বন্ধ করে কয়েক সেকেন্ড চুপ থাকে। তারপর মেয়ে টার কাছে এগিয়ে তার ওরনা টা তাকে দিয়ে দেয়।

আব্রাহাম;; ঠিক আছো তুমি?

মেয়েটা;; জ্বি ভাইয়া ঠিক আছি। অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। আজ আপনি না থাকলে কি যে হতো আমার। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।

আব্রাহাম;; ইট”স ওকে। আর চিন্তা করো না ওরা তোমাকে আর জ্বালাবে না। বাড়ি যাও এখন।

মেয়ে টা সেখান থেকে মাথা নিচু করে এসে পরে৷ আসলে মেয়েটা ভার্সিটির জুনিয়র কেউ একজন। তবে কিছু বিখাটে ছেলে তাকে জ্বালাচ্ছিলো আর আজ তো একদম ঘেড়াও করে ধরেছিলো। যখন ছেলে গুলো মেয়েটার সাথে অসভ্যতামো করতে শুরু করে দিলো তখন মেয়ে টা চিল্লাছিলো। আব্রাহাম তা শুনে এদিকেই এগিয়ে আসে। এসেই বেধরক ভাবে পেটায় ছেলে গুলো কে। কেউ অনেক বেশি ক্ষত হয়েছে কেউ বা অল্প। তারা আব্রাহাম যে দেখে দৌড়ে পালায়। মেয়েটার গায়ের ওপর থেকে তারা ওরনা নিয়ে নিয়েছিলো। আব্রাহাম তাদের মেরে ওরনা তাদের হাত থেকে নিয়ে নেয়। মেয়ে টাকে তার ওরনা দিতে যাবে তখনই আইরাত চলে আসে। আর ভুল বুঝে আব্রাহাম কে। যার ফলে দেয় কষিয়ে এক থাপ্পর। আইরাত তো রাগে হোটেলে চলে গেছে। তবে আব্রাহামের মাথায় আগুন জ্বলছে৷ আইরাত তাকে থাপ্পর মেরেছে এটা যেন মেনে নিতেই পারছে না আব্রাহাম। আইরাত কে কি করবে ভেবে পায় না সে। রাগে আব্রাহামের ফর্সা মুখ টা মূহুর্তেই লাল বর্ণ ধারণ করেছে। আব্রাহাম সেখান থেকে নিজের বাসায় চলে যায়। আব্রাহামের দাদি ইলা হলরুমে বসে ছিলো কিন্তু আব্রাহাম কোন দিকেই না তাকিয়ে সোজা নিজের রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দেয়। তার দাদি শুধু অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। আব্রাহাম রুমে গিয়েই তার ওপর থেকে নিজের জেকেট টা খুলে বিছানাতে ছুড়ে ফেলে। শার্টের হাতা গুলো ফোল্ড করে নেয়। কয়েক মিনিট পরই ঠাস ঠাস করে একটার পর একটা আওয়াজ আসতে লাগে রুম থেকে। আব্রাহামের দাদি নিচেই বসে ছিলেন। আওয়াজ পেয়ে বুঝে গেলেন যে হয়তো বাইরে কিছু হয়েছে। আর রাগ গুলো এখন ঘরের জিনিসপত্রের ওপর তুলছে। আব্রাহাম তার রুমের সব জাচের জিনিস গুলো ভেঙে খানখান করে দিয়েছে। তবুও রাগ থামার নয়। সব ভাংচুর করার পর দুই হাত দিয়ে নিজের মাথা চেপে ধরে বসে থাকে। ফর্সা দুই হাতের রগ গুলো কেমন ভেসে উঠেছে। চোখ বন্ধ করে এক হাত দিয়ে নিজের কপাল স্লাইভ করছে আর আইরাতের সেই থাপ্পর দেবার দৃশ্য টাই ভাবছে। তখনই আব্রাহামের দাদি রুমে খুব সাবধানে এসে তার পাশে বসে।





চলবে~

{গল্পের হিরোও আব্রাহাম আর ভিলেনও আব্রাহাম। তার ক্যারেক্টার টাই এমন। সাইকো। আর এখানে এমন কিছুই হয় নি যার ফলে আব্রাহাম কে বিরক্তিকর লাগবে। গল্পের নাম যেমন কাজও তেমন। অন্যান্য সাইকো গল্প গুলো ঘেটে দেখতে পারেন। এটা কাল্পনিক গল্প মাত্র তাই এটার সাথে অতিমাত্রায় বাস্তবতা মিলাতে গিয়ে নিজেও বিভ্রান্ত হবেন না আর আশা করি লেখিকা কেও করবেন না 😊।}

.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here