নেশাক্ত_ভালোবাসা #লেখিকাঃ Tamanna Islam #পর্বঃ ০৮

0
935

#নেশাক্ত_ভালোবাসা
#লেখিকাঃ Tamanna Islam
#পর্বঃ ০৮

আইরাত অতিমাত্রায় ভড়কে গেছে। তার কারণ সৌরভ, আইরাত সামনে তাকিয়ে দেখে সৌরভ একটা চেয়ারে হাত-পা বাধা অবস্থায় রয়েছে। আব্রাহাম তাকে এভাবে বেধে রেখেছে। আইরাত এগুলোর আগা-মাথা কিছুই বুঝতে পারছে না। সে চোখ গুলো বড়ো বড়ো করে একবার আব্রাহামের দিকে আরেকবার সৌরভের দিকে তাকাচ্ছে। এখানে এভাবে কেনোই বা সৌরভ কে বেধে রাখা হয়েছে তাই বুঝে ওঠতে পারছে না। পরক্ষণেই আইরাতের মনে হয় যে গেস্ট হাউজ থেকে যখন পালিয়েছে তাহলে হয়তো ক্যামেরা তে তাদের ধরা পরেছে। আব্রাহাম সেগুলোই দেখে ক্ষেপে যায় নি তো। আইরাত এটা ভেবেই কিছু শুকনো ঢোক গিলে। তখনই আব্রাহাম কয়েক কদম ফেলে তার দিকে এগিয়ে আসে।

আব্রাহাম;; বেইব, কি অবাক লাগছে?

আইরাত;; অবশ্যই লাগার কথা, সৌরভ এখানে কি করছে তাও এই অবস্থায়?

আব্রাহাম;; আরে আমি এনেছি, ভাবলাম একটু খাতির-যত্ন করি।

আইরাত;; দেখুন ওকে ছেড়ে দিন।

আব্রাহাম;; এতো কষ্ট করে বেটা কে ধরে আনলাম এতো সহজেই ছেড়ে দেবো। ন্যাহ, কিছু তো একটা করতেই হবে।

আইরাত;; কি?

আব্রাহাম;; আমরা হকি খেলবো।

আইরাত;; মানে, এই সময়ে আপনি এখানে হকি খেলবেন?

আব্রাহাম;; হ্যাঁ, আর বল কোথায় জানো? ওইতো আমাদের সামনেই।

আইরাত;; কিহ?

আব্রাহাম;; হ্যাঁ, আর ইন্টারেস্টিং ব্যাপার কি জানো বেইবি। হকি আমি না তুমি খেলবে। এই নাও…

আব্রাহাম এই বলেই আইরাতের দিকে হকি স্টিক টা এগিয়ে দেয়। আইরাত কপাল কুচকে তাকিয়ে আছে। তা দেখে আব্রাহাম দেয় এক ধমক আর আইরাত বেশ চমকে ওঠে। তারপর সেটা হাতে নিয়ে নেয়।

আব্রাহাম;; বেইবি শুনো আমি জানি তুমি হকি খেলতে পারো না। কিন্তু তবুও তোমাকে খেলতেই হবে।

আইরাত;; আপনি এই সব কি বলছেন?

আব্রাহাম;; হকি দিয়ে সৌরভ কে হিট করতে হবে। বারবার, যতোক্ষণ না পর্যন্ত তার মুখ দিয়ে রক্ত বের না হচ্ছে তুমি ওকে আঘাত করতেই থাকবে। (গাড়ির ডিকির ওপর এক পা তুলে বসে)

আইরাত;; কি সব উলটা পালটা কথা বলছেন? আমি পারবো না এটা করতে। সৌরভ অনেক ভালো একজন ছেলে। আমি ওকে কীভাবে আঘাত করবো। আমি পারবো না।

আব্রাহাম;; পারবে না?

আইরাত;; না

আব্রাহাম;; ওকে দ্যান আমি এক কাজ করি গাড়িতে ওঠে গাড়ি টা সোজা সৌরভের ওপর দিয়ে চালিয়ে দি কি বলো…!

আইরাত;; কিইই না না এই না একদম না।

আব্রাহাম;; তাহলে যাও হকি খেলো।

আইরাত;; কিন্তু আপনি কেন এমন করছেন? এখানে তো সৌরভের কোন দোষ নেই।

আব্রাহাম;; আছে কেননা সে তোমাকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। আমার থেকে দূরে যেতে সাহায্য করেছে।

আইরাত;; হ্যাঁ করেছে। কেননা এভাবে একটা মেয়ে কে আটকিয়ে রাখার কোন মানেই হয় না। আপনি জানেন একটা মেয়ের জন্য নিজের বাড়ি থেকে একদিন বাইরে থাকার মানে কি। কি প্রভাব পরে এতে মেয়ের ওপর আপনি বুঝেন। তো সেই সময়ে সৌরভ আমায় হেল্প করতো না তো কি করতো।

আব্রাহাম;; শেষ মানে সব বকবকানি শেষ। জানি বাড়িতে সবাই চিন্তা করছিলো। কিন্তু তার পরেরদিন আমি এমনিতেও তোমাকে তোমার বাড়ি পৌছেই দিতাম। এইটুকু সেন্স আছে আমার।

আইরাত;; তাহলে একদিন এভাবে আটকিয়ে রাখার মানে কি?

আব্রাহাম;; আমার ইচ্ছে।

আইরাত;; এই শুনুন আপনার ইচ্ছে মানে। সব কিছু আপনার মন-মরজি তে হবে নাকি আজব।

আব্রাহাম;; আমি গেলাম।

আইরাত;; কোথায়?

আব্রাহাম;; গাড়িতে বসবো আর সোজা সৌরভের ওপর দিয়ে চালিয়ে দেবো।

আইরাত;; এই না না কি করছেন আপনি?

আব্রাহাম;; তো যা বলেছি তাই করো চুপচাপ। যাও।

আইরাত এক দোটানার মাঝে পরে গেলো। একবার সৌরভের দিকে তাকাচ্ছে আরেকবার হকির দিকে। তখন সৌরভ বলে ওঠে…

সৌরভ;; আইরাত, তুমি প্লিজ মারো।

আইরাত;; কিন্তু

সৌরভ;; আইরাত, প্লিজ মারো।

আব্রাহাম;; আইরাত, তুমি যদি ওকে না মারো তাহলে আমি এখন এই মূহুর্তে তোমায় কি করে ফেলবো তা নিজেও জানি না।

সৌরভ;; আইরাত প্লিজ মারতে বলছি না, মারো।

আইরাতের দুই পাশ দিয়ে এই দুইজনের কথা শুনতে শুনতে বিরক্তি হয়ে গেলো। আর না পেরে আইরাত খিচে চোখ বন্ধ করে হকি স্টিক দিয়ে দিলো সৌরভের গায়ে একটা বারি। সৌরভ কিছুটা শব্দ করে ওঠে ব্যাথায়। আর আইরাত ভয় পেয়ে যায়। সাথে সাথে তার হাত থেকে হকি স্টিক টা পরে যায়। সৌরভ কিছুটা কাতরিয়ে ওঠে।

আব্রাহাম;; কি হলো থামলে কেন, এই এক বারি তেই শেষ। আরে এখনো তো ব্লাড-ই বের হলো না। কাম অন আইরু বেইবি, জাস্ট হিট হিম।

আইরাত;; ___________________

সৌরভ;; আইরাত মারো আমায়।

আইরাত ইতোমধ্যে কান্না করে দিয়েছে। কাপা কাপা হাতে আবার হকি স্টিক টা হাতে নেয়৷ চোখ বন্ধ করে সৌরভ কে আঘাত করতে থাকে। সৌরভ চোখ বন্ধ করে আবার মিটমিট করে তাকাচ্ছে। বেশ লেগেছে তার। বেশ কয়েকবার হিট করে আইরাত এবার আব্রাহামের দিকে তাকায়।

আইরাত;; আমি আর পারবো না। প্লিজ এবার তো ছাড়ুন ওকে৷

আব্রাহাম;; ব্লাড বের হয়েছে, হয় নি তো তাই না?! তো আবার মারো।

আইরাত;; প্লিজ আর না।

আব্রাহাম;; তুমি কি চাও আমি ওকে একেবারে মেরে ফেলি।

আইরাত;; না না আমি মারছি।

আইরাত সৌরভের দিকে তাকায়। সৌরভের চোখের সাইডে, হাতে বেশ যখম হয়ে গেছে। আইরাত এবার তার চোখ বন্ধ করে বেশ জোরে শেষ একটা আঘাত করে। আর সাথে সাথে সৌরভের নাক দিয়ে রক্ত বের হয়ে পরে। সৌরভ অজ্ঞান হয়ে যায়। রক্ত বের হতে দেখে আইরাত তার হাত থেকে স্টিক টা ছুড়ে ফেলে দেয়। জীবনে এই প্রথম এভাবে কাউকে মারলো সে। এখন মন চাইছে আইরাত নিজেই মরে যাক। মশা পর্যন্ত মারতে পারতো না আর আজ কিনা মানুষ কে আধা মরা করে দিলো। আইরাতের হাত পা সব লাগাতার ভাবে কাপছে। তখন আইরাতের পেছন থেকে আব্রাহাম বলে ওঠে।

আব্রাহাম;; আরে ওয়াহহ, দেখো রক্ত বের হয়ে পরেছে। গুড।

আব্রাহাম গাড়ির ডিকির ওপর থেকে নেমে পরে। তারপর আইরাতের কাছে চলে যায়।

আব্রাহাম;; গার্ডস,

আব্রাহামের বলার সাথে সাথেই দুইজন বিশাল দেহি মানুষ আসে। মনে হচ্ছে কুস্তির পাঠা। কালো পোশাক পরা দুজনেই।

আব্রাহাম;; একে নিয়ে হস্পিটালে যাও যা যা লাগে সব এনে দাও। দুই দিনের ভেতরে ভালো হওয়া চাই এর।

গার্ডস;; জ্বি স্যার।

এই কথা বলেই গার্ড দুটো সৌরভ কে নিয়ে চলে যায়। আর আইরাত ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে। আব্রাহাম পকেটে দুই হাত রেখে আইরাতের দিকে তাকায়। দেখে গার্ডস রা যে সৌরভ কে নিয়ে যাচ্ছে আইরাত সেদিকেই তাকিয়ে আছে৷ আর আব্রাহাম আইরাতের দিকে এক ভ্রু উঁচু করে তাকিয়ে আছে।

আব্রাহাম;; ইট”স ওভার। শেষ, তাকিয়ে থেকে লাভ নেই।

আইরাত;; __________________

আব্রাহাম আইরাতের হাত ধরে গাড়ির দিকে নিয়ে যেতে যেতে বলে ওঠে…

আব্রাহাম;; আমার থেকে তোমাকে দূরে যাবার জন্য হেল্প করেছিলো ও আর এর জন্য তার এই হাল। এটা ওর প্রাপ্ত ছিলো। আজকের পর থেকে ছেলেদের সাথে কথা বলা বন্ধ তোমার। ছেলেদের থেকে একশ হাত দূরে থাকবে। আর আমিও দেখবো যে এর পর থেকে কোন ছেলে তোমার সাথে কথা বলে বা তোমার কাছে আসে। আজকের টা শুধু নমুনা ছিলো মাত্র এর পর মনে হয় না জীবন নিয়ে কেউ বাড়ি ফিরতে পারবে। সো বি কেয়ারফুল হাহ্।

আব্রাহাম আইরাতকে নিয়ে গাড়ির ভেতরে বসে পরে। আইরাতকে নিজের পাশের সিটেই বসে পরে।

আব্রাহাম;; তোমার যতো কথা সব আমার সাথে বলবে ওকে। (আইরাতের দিকে তাকিয়ে)

আইরাত হা হয়ে তাকিয়ে আছে। মানে কি যে হচ্ছে সব তার মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে। আব্রাহাম গাড়ি ড্রাইভ করছে মাঝে মাঝে আইরাতের দিকে তাকাচ্ছে। তবে আইরাত কোন দিকে না তাকিয়ে সোজা বসে আছে। এখন যে কোথায় যাচ্ছে তাও জানে না। প্রায় ত্রিশ মিনিট পর আব্রাহাম গাড়ির ব্রেক কষে। আইরাতের এবার হোশ আসে। গাড়ির উইন্ড দিয়ে বাইরে তাকাতেই আইরাতের মাথায় আরেক চিন্তা এসে ভর করে বসে। সে কপালে চিন্তার ভাজ নিয়ে বসে। নিজের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আব্রাহাম কীভাবে আইরাতের বাড়ির ঠিকানা জানলো তাই আইরাত বুঝে ওঠতে পারছে না। পরক্ষণেই মনে পরে যে যেই ব্যাক্তি এতো কিছু করতে পারে তার পক্ষে আইরাতের বাড়ির এড্রেস টা জানা টা তেমন কোন ব্যাপার না। আইরাতকে এভাবে অবাক হয়ে বসে থাকতে দেখে আব্রাহাম নিজেই গাড়ি থেকে নেমে পরে৷ ওপর পাশ দিয়ে ঘুড়ে গিয়ে আইরাতের সামনের দরজা খুলে দেয়। আইরাত সিট বেল্ট টা খুলে নেমে পরে গাড়ি থেকে। আইরাত কয়েক সেকেন্ড অন্যদিকে তাকিয়ে থেকে নিজের বাড়ির দিকে হাটা ধরে। কিন্তু কিছু একটা মনে করে আইরাত আবার থেমে যায়। আইরাত পেছন ঘুড়ে তাকিয়ে দেখে আব্রাহাম তার গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দুই হাত ভাজ করে সরু দৃষ্টিতে তার দিকেই তাকিয়ে আছে। আইরাতের বেশ রাগ লাগছে এখন।

আইরাত;; আপনি পুরো দমে একটা সাইকো।

আব্রাহাম;; Thanks for the complement…

আইরাত বুঝলো এর সাথে কথা বলে কোন লাভই নেই। আব্রাহামের কথার সাথে সে পারবে না। তাই আইরাত এক প্রকার এক ঝটকানা মেরেই সোজা বাড়ির ভেতরে চলে যায়। আইরাত কে যতোক্ষণ দেখা যাচ্ছিলো আব্রাহাম সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিলো। আইরাতের চলে যেতেই চোখে গ্লাসেস পরে আব্রাহাম সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে চলে আসে।


সেইদিন কার মতো আইরাত চলে যায়। সবকিছু আগের মতো চলতে থাকে। আইরাতের যেদিন ভার্সিটি ছিলো তাই প্রথমে ভার্সিটি যায় তারপর হোটেলে। এভাবেই চলছে। তবে মাঝে মাঝে নিজের পরিচয় লুকিয়ে আইরাতের ভার্সিটির বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা,, আইরাতকে প্রায়ই ফলো করা যেন আব্রাহামের নিত্যদিনের অভ্যাস হয়ে গেছে। ছেলেদের সব জায়গায়ই যেন এক প্রকার থ্রেইট দিয়ে রেখেছে আব্রাহাম। আইরাতের সাথে কথা বলাই যাবে না। ধারে কাছেও যাওয়া যাবে না নয়তো কপালে শনি, রবি, সোম, মঙ্গল সব আছে৷ আজ আইরাতের ভার্সিটি নেই। তাই সে সকাল সকাল উঠেই হোটেল চলে এসেছে।

অবনি;; এই কেকের মধ্যে কনফ্লাওয়ার পাউডার কতো টুকু দেবো রে?

আইরাত;; দুই চামচ। কেকের সাইজ অনুযায়ী দিতে হবে৷ আচ্ছা সর দেখি আমি করছি।

ফাইভ স্টার হোটেল গুলোতে যদিও রান্নাবান্নার জন্য আলাদা আলাদা সেফরা থাকে কিন্তু ছোট খাটো রেসিপি যেমন বারগার, পিজ্জা, বা কেক এগুলো বাকি স্টাফ র’ করে ফেলে। চকোলেট কেকের অর্ডার এসেছে তাই এখন বানানো। আইরাত কেক বানাচ্ছে আর অবনি আইরাতের পাশেই পিজ্জা খেতে খেতে বলে ওঠে…

অবনি;; কিছু কি খেয়াল করেছিস?

আইরাত;; কি খেয়াল করবো আবার? (কাজ করতে করতে)

অবনি;; একটু ভিআইপি টাইপ ভাবে দেখা হচ্ছে না তোকে এই হোটেলে এখন!!

আইরাত;; আমি একটা সাধারণ স্টাফ ছাড়া আর কিছুই না বুঝলে সোনা। (অবনির দিকে তাকিয়ে)

অবনি;; হুম হুম বুঝলাম। তবে কেন যেন মনে হয় কিছু তো আছে মানে সামথিং সামথিং।

অবনির কথা শুনে আইরাত হেসে দেয়।

আইরাত;; নাথিং, এবার তুই এই পিজ্জা রাখ। দে ছাড় বলছি। পেটুক কোথা কার। এগুলো খাওয়া অফ কর আর বাইরে গিয়ে দেখ।

অবনি বাইরে যায় গিয়েই হিহিহি করে হেসে ওঠে। আব্রাহাম এসেছে। অবনি একদম আব্রাহামের পা থেকে মাথা অব্দি দেখছে৷ একটা সামার সিজনের গেটাপে এসেছে। ব্লেক রিপ পেন্ট আর ওপরে এশ কালারের শার্ট৷ শার্টের হাতা ফোল্ড করা আর বাটন গুলো খোলা। হাতে ব্লেক কালারের ওয়াচ, চোখে ব্লেক গ্লাসেস। আব্রাহাম কে দেখে এখন একটা ভার্সিটি পড়ুয়া স্টুডেন্ট মনে হচ্ছে পুরো। আব্রাহাম কে ভেতরে আসতে দেখে অবনি দৌড়ে আবার আইরাতের কাছে চলে যায়। আইরাত কেকের ওপর ক্রিম লাগাচ্ছিলো অবনির এভাবে ছুটে আসতে দেখে আইরাত রাগ করে ফেলে। কেননা অল্পের জন্য কেক টা নষ্ট হয় নি।

আইরাত;; একটা উসঠা যে মারমু না তোকে। কি হয়েছে, আর একটু হলেই কেক টা খারাপ হয়ে যেতো।

অবনি;; আরে এসে গেছে এসে গেছে এসে গেছে রেএএএ।

আইরাত;; কে এসেছে?

অবনি;; আব্রাহাম চৌধুরী।

আইরাত;; হ্যাঁ তো..!

অবনি;; আরে….

আইরাত;; কিইইইই, আরে ভাই প্লিজ আবার ওই সাইকো না।

অবনি;; কি, না মানে কি আবার না?

আইরাত;; আব..না কিছু না মানে কিছুই না। যা তুই কাজ কর।

অবনি হাতে একটা মেনু কার্ড নিয়ে খুশিতে গদগদ হয়ে আব্রাহামের কাছে চলে যায়। আব্রাহাম একটা টেবিলের ওপর বসে ফোন ঘাটছে।

অবনি;; আহাম আহাম,, স্যার।

আব্রাহাম;; ইয়াপ।

অবনি;; স্যার আপনি এসেছেন কি যে ভালো লাগছে। কেমন যেন লাগছে?

আব্রাহাম;; ওহহ আচ্ছা তাই কেমন লাগছে?

অবনি;; ক্রাশ ক্রাশ 😇।

আব্রাহাম;; এতো ক্রাশ খেলে পেট খারাপ করবে।

আব্রাহামের কথায় অবনি ভেবাচেকা খেয়ে যায়।

অবনি;; আব..স্যার আপনি কি নিতে পছন্দ করবেন?

আব্রাহাম কিছু একটা বলতে যাবে তখনই আইরাত ভেতর থেকে বাইরে আসে হাতে একটা চকোলেট কেক নিয়ে। আব্রাহাম আইরাতকে দেখে বাকা হাসে। হাত আইরাতের দিকে তুলে বলে ওঠে।

আব্রাহাম;; ওকে চাই আমার। (আইরাতের দিকে তাকিয়ে)

অবনি কপাল কুচকে আব্রাহামের হাতকে ফলো করে সেদিকে তাকায় দেখে যে আব্রাহামের হাত টা আইরাতের দিকেই। আইরাতের চুল গুলো এলোমেলো হয়ে গেছে। সেগুলো এক হাত দিয়ে কোন রকমে ঠিক করতে করতে সে সামনে তাকায় দেখে যে অবনি তার দিকে তাকিয়ে আছে। আর সাথে আব্রাহামও তার দিকে আঙুল তুলে আছে৷ আইরাত তার পেছনে তাকাতাকি করে দেখে যে এখানে সে ছাড়া আর কেউ নেই। আইরাত বুঝে যে তাকেই ইশারা করা হচ্ছে। তবে অবনি তো কিছু না বুঝে আবার আব্রাহামের দিকে তাকায়৷

অবনি;; জ্বি স্যার??

আব্রাহাম;; I mean chocolate cake… I would like to have some chocolate cake…

অবনি;; সিওর স্যার।

অবনি এই বলেই চলে যায় আইরাতের দিকে৷ আইরাত এখনো হাতে চকোলেট কেক নিয়ে কিচেনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। অবনি আইরাতের কাছে গিয়ে কিছুটা ফিসফিস করে বলে ওঠে…

অবনি;; আইরুউউউউ উনি না চকোলেট কেক খাবেন বুঝলি৷ এখন যা আর উনাকে সুন্দর করে চকোলেট কেক টা দিয়ে আয় যা।

আইরাত;; এহহহ পারবো না আমি। তুই অর্ডার নিয়েছিস তাই তুই ই যা৷ এই যে কেক নে ধর।

অবনি;; এই রে আরেকটু হলেই কেক টা গেতো। শোন তুই যা না। একই তো হলো৷ যা যা দ্রুত যা।

এই বলেই অবনি চলে গেলো। আর আইরাত কোন উপায় না পেয়ে আব্রাহামের টেবিলের কাছে গিয়ে তার সামনে চকোলেট কেক টা রাখে। আইরাত ঘুড়ে চলে আসতে নিলেই আব্রাহাম আইরাতের হাত ধরে টেনে টেবিলের পাশে বসিয়ে দেয়। আব্রাহাম আইরাতকে কিছু একটা বলতে যাবে তার আগেই পাশে তাকিয়ে দেখে হোটেলের বাইরে কাচের জানালা ধরে কিছু ছোট ছোট বাচ্চারা এইদিকেই তাকিয়ে আছে। দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে তারা খুব ক্ষুদার্থ। আব্রাহাম তাদের দিকে তাকিয়ে আছে৷ আইরাত আব্রাহামের চাহনি খেয়াল করে বাইরে তাকায়। বাচ্চাগুলো অসহায় ভাবে তাকিয়ে আছে৷ আইরাতের বেশ খারাপ লাগে তাদের দেখে৷ আব্রাহাম টেবিল থেকে উঠে সোজা বাইরে চলে যায়। আইরাত তাকিয়ে তাকিয়ে শুধু দেখছে।





চলবে~

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here