😏 # মেঘের_আড়ালে_রোদের_লুকোচুরি ❤️
🌈💙🎨😏❤️🥳🐦💐🍫🏩💒
Part-15
পাহাড়ি মেয়েদের পোশাক গুলো আমাদের মতো সাধারণ না,,তাদের কথাবার্তা থেকে শুরু করে ড্রেসআপ সবকিছু থাকে ভিন্ন ধরনের,,ঝিনুকরা পাহাড়ি দোকান গুলো থেকে পাহাড়ি মেয়ে দের যেই পোশাক গুলো কিনেছিলো সেগুলো ছিলো গ্রামীণচেকের প্রিন্ট করা মেজেন্ডা রঙের মাঝে ডোরাকাটা হলুদ কমলা কালো রঙের সমাহারে ভরপুর,,নিচের স্কার্টটা দু ধরনের ছিলো একটা ধরন খুব টাইট করে নিচ অবধি মোড়ানো আরেক ধরন ছিলো একদম খুব ঘেড় দেওয়া টাইপ,,কিছু কিছু মেয়ে প্রথম ধরনের স্কার্টটা কিনলেও ঝিনুক হিয়া সন্ধিসহ অনেকে খুব ঘেড় দেওয়া স্কার্ট টা কিনে,,স্কার্টের উপরের টপস টা ছিলো আবার সীলিভলেস টাইপ,,অল্প করে হাতা দেওয়া আর গলা টা ছিলো বেশ বড়ই,,সন্ধিরা তাই দেখে বুদ্ধি করে ড্রেস গুলোর সাথে এক্সট্রা করে ওড়না কিনে নেয় যাতে খারাপ দেখতে না লাগে।
তিন জনে ড্রেস পড়ে সাজতে বসবে,,হিয়ার তো আবার নেই কোনো সাজের ঝামেলা কারণ সে তো জানেই না সাজতে হয় কীভাবে বা সাজতে কি কি লাগে,,কাজল টিপ আর লিপস্টিক ছাড়া অন্য কিছুর কঠিন কঠিন নামো সে হয়তো শুনে নি কখনো এরকম….
চিরুনি টা হাতে নিয়ে হিয়া যেই মাথার চুলের খোঁপা টা খুলে চুল গুলো আছড়াতে শুরু করবে ওমনি শ্রাবণ এসে হিয়ার জামা ধরে হিয়াকে টানতে শুরু করে
শ্রাবণঃ বুবু বুবুনি বুবুউউ
হিয়াঃ কি চাই কি আবার তোর,,জামা ছাড় আমার
শ্রাবণঃ কি পড়ছিস বুবু তুই এটা,,এই এতোওও বড় জামা দিয়ে তো আমাদের সবার লুঙ্গি হয়ে যাবে
শ্রাবণের কথায় ঝিনুক আর সন্ধি হে হে করে হেঁসে উঠে
ঝিনুকঃ হ্যা হ্যা,,তোদের ছোট লুঙ্গি আর আমাদের দেখ কি বিশাল বড় লুঙ্গি
শ্রাবণঃ বুবু চল না ভালো ভাইয়া তোকে ডাকছে খুব জরুরি কথা আছে নাকি তোর সাথে ভাইয়ার
হিয়াঃ জরুরি কথা আমার সাথে!!
সন্ধিঃ হুমম এখন তো উজানের সব জরুরি কথা হিয়াকেই বলবে এখন কি আর আমরা তার কেউ হই,,,কি ঝিনুক ভুল বললাম কিছু
হিয়াঃ আপু তুমিওও আবার শুরু করলে
শ্রাবণঃ আয় না বুবু,,ভাইয়া খুব করে বললো তোকে এখনি ডেকে নিয়ে আসতে পিলইজ(প্লিজ)আয়
হিয়াঃ যাচ্ছি আগে আমার জামা টা তো ছাড়
হিয়া কোনোরকম পাশে থাকা ওড়না টা গায়ে দিয়ে উজানের রুমের কাছে গিয়ে নক করতে থাকলে ফয়সাল এসে টানতে টানতে শ্রাবণকে ওর সাথে নিচে নিয়ে যায়,,এদিকে হিয়া এখন কি করবে,,এদিকে উজান গেট খুলে হিয়াকে দেখা মাএই টপ করে হিয়াকে এক টানে রুমে নিয়ে এসে টুক করে গেট লাগিয়ে দেয়।
হিয়াঃ আরে আরে আরে কি করছেন কি আপনি
উজানঃ এতোক্ষণ লাগে এই রুম থেকে এই রুমে আসতে,,কখন থেকে এটা ধরে বসে আছি আমি,,
হিয়াঃ হ্যা তো আপনাকে কে এটা ধরে বসে থাকতে বলেছে,,যান গিয়ে পড়ে আসুন
উজানঃ পড়তে পারলে কি তোমাকে ডাকতাম,,ইডিয়ট___ধরো এখন এটা,,শ্রাবণকে যেভাবে পড়িয়ে দিয়েছো আমাকেও এখন সেভাবে এটা পড়িয়ে দাও,,কুইক
হিয়াঃ কিইই!! মাথা ঠিক আছে তো আপনার,,আমি আমি আপনাকে লুঙ্গি পড়িয়ে দেবো,,কিসব পাগলের মতো কথা আপনার ভাইয়া
হিয়ার মুখে আবার সেই ভাইয়া ডাক শুনে উজান সোজা গিয়ে রাগের চোটে হিয়ার গলা এবার ইচ্ছে মতো চিপে ধরে।
উজানঃ বলছি নাআআ ভাইয়াআআআ বলবা নাআআ
হিয়াঃ উমমম,,উমমম
উজানঃ আর একবার যদি দেখছি না ভাইয়া বলে ডাকা তাহলে কিন্তু তোমাকে আমি ওখানেই পুরো পুঁতে রেখে দেবো,ভাইয়া ভাইয়া ভাইয়া অসহ্য একদম
হিয়াঃ ছাড়ুনননন নাআআ
উজানঃ (ছেড়ে দিয়ে) নেও এখন তাড়াতাড়ি আমাকে লুঙ্গি টা পড়িয়ে দাও ফাস্ট
হিয়াঃ আপনি কি মানুষ,,এরকম করে কেউ কারো গলা চিপে ধরে,ওহহ আমার গলা,
উজানঃ আর একবার ভাইয়া ডাকলে এর চাইতেও বেশি জোরে তোমার গলা আমি চিপে তোমার টনসিল ইসোফোগাস সব বের করে দেবো,,ইডিয়ট একটা
হিয়াঃ আর আপনি কি কুমড়োপটাশ একটা
উজানঃ মুখ টা একটু বন্ধ করো তো,,অহেতুক বেশি বকবক করো তুমি___নেও ধরো পড়াও এখন
হিয়াঃ আমি পারবো নাআআ
উজানঃ হিয়া প্লিজ মকবুল স্যার দশ বারের উপর ফোন দিছে আর আমি এখনো তৈরি না হয়ে এভাবে,,,আমাকে আবার ওদিকে বাড়িও যেতে হবে একটু বুঝো
হিয়াঃ আমি পারবো না,,ছেলে মানুষ হয়ে লুঙ্গি পড়তে পারেন না আপনি,,আপনি তো ছেলে নামে একটা
উজানঃ প্লিজ হিয়া,,আমি হাত জোর করে তোমাকে রিকুয়েষ্ট করছি শ্রাবণকে যেরকম টাইট করে লুঙ্গি পড়িয়ে দিলে আমাকেও সেভাবে একটু ফিট করে দেও না,,প্লিজ প্লিজ প্লিজ
হিয়াঃ আমি পারবো না মানে আমি পারবো না
উজানঃ আমি তোমার জন্য কাল এতো কিছু করলাম তুমি জাস্ট আমাকে এই লুঙ্গি টা পড়িয়ে দিতে পারছো না হিয়া,,কি অকৃতজ্ঞ তুমি হিয়া
হিয়াঃ আমি মোটেও অকৃতজ্ঞ নই
উজানঃ নও তা পড়িয়ে দাও আমাকে
হিয়াঃ আপনি কিন্তু আমাকে ইমোশনালি ব্লাকমেইল করছেন
উজানঃ করলে করছি,,এখন এতো ভাব না নিয়ে দেবা কি পড়িয়ে,,ঢংগী একটা
হিয়াঃ আআআআ,,যান গিয়ে প্যান্ট টা খুলে আগে একটা হাফপ্যান্ট পড়ে আসুন
উজানঃ হাফ প্যান্ট কেনো হিয়াপাখি
হিয়াঃ জিংকসের উপর লুঙ্গি পড়বেন আপনি
উজানঃ ও হ্যা তাও কথা,,একটু বসো আমি জাস্ট ওয়াশরুমে যাচ্ছি আর বের হচ্ছি ওয়েট
উজান ওয়াশরুম থেকে ওর ঘিয়ে রঙের হাফ প্যান্টটা পড়ে হিয়ার সামনে আসতেই হিয়ার চোখ একবারে ঠিকরে বেড়িয়ে আসে,,এই প্যান্ট টা ছাড়া উজানের গায়ে এই মুহুর্তে আর একটা কোনো সুতা নেই,,শরীরের মাঝের প্লট টুকু বাদ দিয়ে উজানের প্রত্যেকটা লোমকূপ হিয়ার সামনে উন্মোচিত করে রাখা এখন,,হিয়ার বুক শুকিয়ে আসে,,হাত পা না চাইতেও ভয়ে কেমন কুঁকড়ে উঠে,,এই প্রথম হিয়া কোনো ছেলেকে এভাবে দেখছে,,উজানের বলিষ্ঠ শরীরের প্রত্যেকটা ভাঁজ হিয়ার নারী মন কে আকর্ষন করতে পুরো সক্ষম হয়❤️
হিয়াঃ লোক টা এভাবে কিছু না পড়ে কেনো বেড়িয়ে এলো,,ওনার কি লজ্জা পাচ্ছে না আমাকে দেখে,,,,আচ্ছা সব ছেলে মানুষ কি ওনার মতোই এরকম সুন্দর হয়,,উনি এতো সুন্দর কেনো,,,,ইসস পুরো আমার শ্রাবণ টার মতো,,উনি কি সত্যি এরকম ফর্সা___বুকের কাছের লোমগুলো এখনো কি রকম ভিজে আছে দেখো একটু তো মুছবে ঠিক করে নাকি,, ঠান্ডা লাগলে কি হবে তখন____আমাকে বলে কেয়ারলেস আর নিজে কি____ঠোঁট গুলো এতো গোলাপি কেনো ওনার আমি সিউর উনি নিশ্চয়ই ঠোঁটে কিছু লিপস্টিক টাইপ ইউস করে নাহলে এতো তো ঠোঁট পিংক পিংক হবার কথা না____বাহ কানের কাছে একটা ছোট তিল ও আছে দেখছি,,শ্রাবণ থাকলে ঠিক বলতো চল বুবু ভাইয়ার কান টা কামড়ে দিয়ে আসি,,হে হে,,তবে চুল দেখে মনে হচ্ছে বুড়ো বয়সে এনার মাথায় টাক নামক জিনিস টার উদ্ভব ঘটবে সামনের চুল গুলো কিন্তু হালকা হয়ে কপাল টা বেশ চওড়াই লাগছে___চুল পড়বে না এতো এতো পড়াশোনা করলে তো চুল পড়েই যাবে কে বলেছিলো সবসময় ফাস্ট হতে,,শুধু কি ফাস্ট সবকিছুতেই ওনাকে টপে থাকতে হবে আরে এতটুকু একটা মাথা এতো কিছু সহ্য করতে পারে নাকি____কিন্তু তবুও এই মানুষ টাকে যে পাবে তার তো অর্ধেক জীবনই এই মানুষ টার সুন্দর্য্য দেখতে চলে যাবে
উজানঃ আমাকে স্ক্যান করা শেষ হিয়াপাখি!! আমাকে নিয়ে গবেষণা করা শেষ হলে এবার কি জলদি তোমার কাজ টা শেষ করবা তুমি,,,,
হিয়াঃ হুম আসুন
হিয়া উজানকে মাঝে দাঁড় করিয়ে দিয়ে ঘুরে ঘুরে লুঙ্গি টা উজানের প্যান্টের ভাঁজে গুঁজে দিতে থাকে,,হিয়ার হাতের স্পর্শ উজানকে কতো টা কাবু করছে হিয়ার জানা নেই কিন্তু উজানকে স্পর্শ করতে গিয়েই হিয়া পুরো কেঁপে উঠছে❤️
উজানঃ একদম টাইট করে দেবা হ্যা,,সবার সামনে একবার খুলে গেলে মানসম্মান সব শেষ
হিয়াঃ ভেতরে তো প্যান্ট পড়াই আছে মানসম্মান শেষ হবার কি আছে তাহলে,,,দেখি হাত টা উঁচু করুন
উজানঃ আরে হাফ প্যান্ট পড়া থাকলেও ব্যাপারটা কি রকম হয়ে যায় না একটা তখন
হিয়াঃ তাই নাকি,,এতো বুঝেন আপনি____যখন মাঠে খালি গায়ে ফুটবল খেলে বের হোন তখন বুঝি ওটাকে ব্যাপার বলে মনে হয় না,,____আ হা হাত টা উচু করে মেলে ধরুন____মেয়ে গুলো তো চোখ দিয়ে গিলে খায় আপনাকে,,পারলে তো বুঝি ওখানেই আপনার সাথে
উজানঃ Are you jealous হাঁসপাখি??
হিয়াঃ বালাইষাট কে হোন আপনি আমার যে আমি জ্বলে যাবো হু
উজানঃ সত্যি তুমি জ্বলে যাও না
হিয়াঃ না
উজানঃ তাই,,আচ্ছা আজকে মেয়ে গুলোর সাথে একটু বেশি মেলামেশা করবো তারপর দেখবো কেউ জ্বলে না পুড়ে
হিয়াঃ কেউ জ্বলবেও না কেউ পুড়বেও না,,আপনার মতো এতো এক্সট্রা সময় কারো নেই কি না
উজানঃ হ্যা দেখা যাবে সেটা কিন্তু তুমি….
উজান কিছু বলতে গিয়েও আর বলতে পারে না,,এতোক্ষণ সে হুযুগে থাকায় হিয়াকে সেভাবে খেয়াল করার সময় পাই নি কিন্তু হঠাৎ হিয়া লুঙ্গি প্যান্টে গুঁজতে গুঁজতে সামনে এসে দাঁড়াতেই উজানের চোখ আঁটকে যায় হিয়ার উপর,,লুঙ্গি পড়াতে পড়াতে হিয়ার এক পাশের ওরনা টা নেমে গিয়ে নিচে গড়াগড়ি খাচ্ছে,,হিয়া এক হাতে লুঙ্গি ধরে আরেক হাতে বারবার চেষ্টা করছে এ পাশের ওরনা টা যেনো তার গা থেকে না খুলে আসে,,আর হিয়াকে মাথা থেকে পা অবধি পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে উজানের এখন পুরো যায় যায় অবস্থা,,কি যে সুন্দর লাগছে হিয়াকে এই পাহাড়ি ড্রেসে সেটা শুধু উজান আর উজানের চোখই ভালো বর্ননা করে বলতে পারবে,,যেনো মনে হচ্ছে পাহাড়ি কোনো পরী,,হিয়াকে চোখ দিয়ে গিলতে গিলতে হিয়ার বুকের কাছের তিল টার মাঝে আঁটকে গিয়ে উজান নিজের পুরো পৃথিবীটা ওখানে দিয়ে বসে,,এই বুঝি হার্ট টা বুক থেকে খুলে হাতে চলে আসে আসে এমন অবস্থা
হিয়াঃ নিন,,,গুঁজে দিছি এখন মোড়া করে গিট্টু দিয়ে দিন
উজান হিয়ার হাত থেকে লুঙ্গি টা নিয়ে মোড়া করে গিট্টু দিয়ে আবার সেটা প্যান্টের ভেতর ঢুকিয়ে দেয় ফর সেফটি
হিয়াঃ একটা সোজা জিনিস কে কি করে বাঁকা করে জটিল করতে হয় আজ আপনাকে না দেখলে আমি জানতাম না সত্যি,,মানে একটা সামান্য লুঙ্গি পড়বো সেটার জন্যেও এতো কাহিনি,,আর কেউ ছিলো না যে এই ঘুরেফিরে আমাকেই আপনার
হিয়া আর কিছু বলার আগে উজান ওর সেন্ডো গেঞ্জি টা গায়ে দিয়েই হিয়াকে এক টানে নিজের কাছে নিয়ে আসলে হিয়ার বকবকানি ওখানেই স্টপ হয়ে যায় মুহুর্তে
উজানঃ কতোবার বলছি বুকের কাছের এই তিল টা আমাকে দেখাবা না তুমি তারপরো,, মানে আমাকে দিয়ে কি করাতে চাও তুমি,,খারাপ কিছু,,কি মনে হয় আমাকে লোভ দেখাবা আর আমি লোভে পড়ে তোমার সাথে
হিয়াঃ কি ব__লছেন আ__পনি এসব!!
উজানঃ কি বলছি সত্যি বুঝো না,,,আমাকে দেখাচ্ছ ঠিক আছে কিন্তু খবরদার বলছি আমি ছাড়া এটা যেনো অন্য কারো চোখে না পড়ে, ক্লিয়ার
হিয়াঃ আপনারই বা চোখে পড়তে কেনো দেবো আমি,,কে আপনি,,আর অন্য ছেলে দেখলে সমস্যা কোথায় আপনার??
উজানঃ (গম্ভীরভাবে কাঠকাঠ কন্ঠে) হিয়া আমি না আমার নিজের জিনিসের প্রতি খুবই পজেসিভ আর সেনসিটিভ সো প্লিজ আমি যেটা বলবো তুমি সে ভাবেই কাজ করবা আন্ডারস্ট্যান্ড
হিয়াঃ কচু আন্ডারস্ট্যান্ড,,,,আমার তিল আমি যাকে খুশি দেখাবো তাতে আপনার কি
উজানঃ হিয়া আমি কিন্তু এক কথা দুই বার বলা পছন্দ করি না
হিয়াঃ আমিও না শ্রাবণ ছাড়া অন্য কারো কথা শুনি না,,আমার মন যা বলে আমি সেভাবেই চলতে পছন্দ করি বুঝলেন
উজানঃ (হিয়াকে আরো নিজের সাথে লেপ্টে ধরে) তুমি এখনো আমার সাথে তর্ক করছো,,এতো ওডাসিটি হ্যা তোমার,,আমি বলছি না যে ওটা আমার জিনিস আর এই উজান শাহরিয়ার কিন্তু নিজের জিনিস অন্য কারো সাথে ভাগ করে না হ্যা
হিয়াঃ আমার শরীরে কোথাও লিখা আছে যে এই তিল টা আপনার ঔ হাত টা আপনার ঔ মাথা টা আপনার
উজানঃ হ্যা তোমার সব আমার,,তুমি গোটা হিয়া টাই আমার❤️
হিয়াঃ কি আপনার হ্যা কি আপনার,,ওমনি আপনার হয়ে গেলো__কে হোন আপনি আমার,,কে হই আমি আপনার__ভালোবাসেন আপনি আমাকে তাহলে এতো অধিকার দেখান কিসের জন্য হু??
উজানঃ(হেঁসে দিয়ে) ভালোবাসবো আর তোমাকে হু__ভীতুর ডিম একটা আমার যে বউ হবে সে আমার মতোই সাহসী হবে বুঝলা___আমার চয়েস হবা তুমি পেত্নী একটা
হিয়াঃ আপনি কি কুমড়োপটাশ
উজানঃ হ্যা ঔ একটা নামই তো জানো,,আর কি শিখছো__
হিয়াঃ ছাড়ুন তো আপনি আমাকে,,আমার দম বন্ধ লাগছে এবার
উজানঃ ছাড়বো তার আগে
হিয়াঃ কি তার আগে
উজান হিয়াকে নিয়েই বেডের পাশের টেবিল টার কাছে গিয়ে এক হাতে কোনোরকম ফোনের চার্জারের পিন খুলে সন্ধিকে ফোন দিয়ে কয়েকটা সেফটিপিন আর কিছু মুখে দেওয়া মেকআপ এলিমেন্ট দিয়ে আসতে বলে ওদের রুমে,,
উজানঃ ঔ তোর মনে আছে রাসেলের বার্থডে তে নীলি কি জানি একটা মুখে দিলো সাথে সাথে ব্রণের কালো দাগ টা মুছে গেলো আমরা কি মজা করলাম ওটা নিয়ে
সন্ধিঃ হ্যা হ্যা বুঝেছি বুঝেছি BB cream এর কথা বলছিস তো__আনছি ওয়েট___রাখ এখন ফোন
উজানঃ হুমম
হিয়াঃ আপনি এখন এই সেফটিপিন আর ওসব ক্রিম দিয়ে কি করবেন
উজানঃ তোমার মাথা করবো,,শুনো একটা কথা তো বলি নি আমি তোমাকে
হিয়াঃ কি কথা
উজানঃ নিচে একটা কুইজের অনুষ্ঠান আছে,,ওখানে কিছু প্রশ্ন লিখতে দেওয়া হবে__যে ফাস্ট হবে তার জন্য একটা ট্যাব যে সেকেন্ড হবে তার জন্য একটা স্মার্ট ফোন আর যে থার্ড হবে তার জন্য একটা রীচ ওয়াচ দেওয়া হবে
হিয়াঃ তারপর
উজানঃ(হিয়ার চুল গুলো কানের এক পাশে গুঁজে দিয়ে) তারপর আর কি তুমি ওটাতে পার্টিসিপেট করবা__আমি ফো–ন কিনে দিলে তো তু–মি নেবা না সে–আমি খুব ভালো করে জানি___তাই তুমি কুইজে পার্টিসিপেট করে ট্রাই করবা সেকেন্ড হবার
হিয়াঃ যদি ফাস্ট হই,,(খুশিতে)
উজানঃ ফাস্ট আমি হবো হু
উজানঃ ফাস্ট হয়ে ট্যাব পাবা ট্যাব যেখানে সেখানে নিয়ে বেড়ানো মুশকিল,,ফোন টা ইউস করতে সুবিধে হবে তাই ট্রাই করবা সেকেন্ড হবার
হিয়াঃ যদি থার্ড হই
উজানঃ থার্ড হলে আর কি পুরো টাকা টাই ওয়েস্ট হবে আমার
হিয়াঃ কিছু বললেন আপনি
উজানঃ না কিছু বলি নি
হিয়াঃ বলেন নি তো ছাড়ুন এখন আমাকে,,আমি সন্ধি আপুর কাছে যাবো
উজানঃ এতো সন্ধি সন্ধি ঝিনুক ঝিনুক করো কেনো সারাক্ষণ,,উজান উজান করতে পারো না একটু
হিয়াঃ আমার ঠেকা
উজানঃ তোমার ঠেকা হবে কেনো শুধু শুধু ঠেকা তো শুধু আমার,,মাথায় বুদ্ধি থাকলে না বুঝবা ঠেকা টা কার কতো টা
হিয়াঃ ধুরো আপনি ছাড়ুন তো আমাকে,,কি সব বলেন মাঝে মাঝে কিছুই বুঝতে পারি না আমি,,অহেতুক কথা
হিয়া উজানের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে বের হতে ধরলে সন্ধি আসে,,সন্ধির থেকে ওসব জিনিস নিয়ে উজান আবার গেট লাগিয়ে হিয়াকে নিয়ে রুমে আসে
হিয়াঃ এখন আবার কি চাই কি আপনার.?
উজান প্রথমে BB cream টা থেকে ক্রীম বের করে হিয়ার তিলের উপর ইচ্ছে মতো ঘষে দেয় যাতে কোনোভাবে এই ওরনা সরে গেলেও হিয়ার যে এখানে একটা তিল আছে সেটা বুঝা না যায়,,তারপর হিয়ার গা থেকে ওরনা টা খুলে নেয় অকপটে,,মনে হয় যেনো হিয়া তার কতোদিনের বিয়ে করা বউ সে কি অধিকার তার,,ভয়ে হিয়ার অন্তরাত্মা কেঁপে ওঠে নিমিষে কি করতে কি চাইছে উজান এটা ওর সাথে,,উজান হিয়াকে একটা ডোন্ট কেয়ার ভাব দেখিয়ে ওরনা টা হিয়ার গায়ে পেঁচিয়ে জায়গায় জায়গায় ভেতর দিক দিয়ে সেফটিপিন বসিয়ে দেয়,,এখন হিয়া ৩৬০°এ্যাঙ্গেলে ঘুরে ঘুরে নাচলেও হিয়ার গা থেকে ওরনা তো খুলবে না তো নাই তার উপর সন্ধির BB cream অর্ধেক শেষ করে তিল দেখারো রিস্ক আর থাকলো না,,,,
উজানঃ নিজের জিনিস কে যত্ন করে আগলে রাখতে হয় হিয়া পাখি,,,বুঝলা
হিয়াঃ তাই বলে এভাবে!!
উজানঃ আমি এরকমই,,একটু বেশি খুঁত খুঁতে
হিয়াঃ আপনি খুঁত খুঁতে না আপনি একটা পাগল__আপনাকে যে বিয়ে করবে তাকে আগে থেকে পাবনাতে একটা সীট বুক করে রাখতে হবে আপনার জন্য,,বুঝাতে পারছি
উজানঃ যাও এখন অনেক দেড়ি করায় দিলা তুমি আমার
উজানঃ চোখ পাকিয়ে লাভ নেই,,গেট আউট
হিয়াঃ হু,,,কেই বা থাকতে চায় আপনার সাথে হু
___________________
লনের মাঝে ছায়নামা টাঙ্গিয়ে কিছু টেবিল বসিয়ে কুইজ খেলার প্রতিযোগিতা শুরু হয়,,হিয়ার পাশে বসে সন্ধি আর ঝিনুক আর পেছনে বসে তুষার সাব্বির আর উজান
তুষারঃ ব্যাটা তুই নিজে কুইজের আয়োজন করে নিজে কেনো পার্টিসিপেট করছিস
উজানঃ আরে আমি তো জাস্ট
সাব্বিরঃ কি আমি তো জাস্ট হ্যা,,আজ আমার খাতায় তুই লিখে দিয়ে আমাকে ফাস্ট করে দিবি ঝিনুকের সামনে একটা ইমপ্রেশনের ব্যাপার আছে না বল
উজানঃ যদি ফাস্ট করে দিতে পারি তো ট্যাব আমার আর সবার হাততালি তোর রাজি
সাব্বিরঃ যা Done
তুষারঃ ও আর আমি,,আমি কি ফাউ
সাব্বিরঃ তুই মুড়ি খা যা
সন্ধিঃ ঝিনুক আমরা কিন্তু খাতায় লিখবো না কিছু ঠিক আছে উজানের কিন্তু কড়া আদেশ আছে
ঝিনুকঃ আরে সে না হয় লিখলাম না,,কিন্তু ভাইয়া হিয়ার জন্য যা পাগলামি শুরু করছে মানে হিয়াকে ফোন দেবে দেখে কুইজের আয়োজন সত্যি!!হিয়া যদি বুঝতে পারে না ওখানেই ভাইয়ার সব চুল ছিড়ে থুইয়ে দিবে
সন্ধিঃ সামনে আরো কতো পাগলামো দেখা বাকি ওর কে জানে
হিয়াঃ তোরা কি গল্প করছিস আমাকে রেখে রেখে,,
ঝিনুকঃ কই আর কি,,বলছি যে ভাইয়া যা তোকে নিয়ে পজেসিভ দেখছি,,ইসস সামান্য একটা সীলভলেস হাতা ওয়ালা জামা পড়েছিস বলে যেভাবে ওরনা টা পেচিয়ে দিলো বিয়ের পর তো তোকে প্যাকেটে করে নিয়ে ঘুরে বের হবে রে হিয়া,,তখন
হিয়াঃ কিসের বিয়ে হ্যা কিসের বিয়ে,,উনি কি তোদের একবারো বলেছে উনি আমাকে বিয়ে করবে,,,আর এই পৃথিবীতে কি আমার ছেলের অভাব নাকি যে আমি ওনার মতো একটা কুমড়োপটাশ কে বিয়ে করবো,,আর সারাজীবন কুমড়ো খাবো
সন্ধিঃ তবে তুমি যাই বলো হিয়া উজান কিন্তু তোমার ব্যাপারে যেমন পজেসিভ তেমনি সেনসেটিভ
হিয়াঃ হ্যা বেশি পজেসিভ হলেই সমস্যা স্বাধীনতা ফুরিয়ে যায় তখন
ঝিনুকঃ ধুর পাগলি,,ভাইয়া না আর সব ছেলের মতো এতো চিপ মাইন্ডের না বুঝলি___কিন্তু তোকে এভাবে ওড়না টা পেচিয়ে কেনো দিলো সেটাই না বুঝে উঠতে পারলাম না আমি
হিয়াঃ কেনো আবার আমার এই বুকের তিল,,এটাই তো যতো সমস্যার মূল
ঝিনুকঃ কিছু বললি তুই
হিয়াঃ না কি আর বলবো
ঝিনুকঃ তবে আজকে তুই আর ভাইয়া থাকতে কি আমরা ফাস্ট হতে পারবো বল
হিয়াঃ আগে কেনো কনফিডেন্স হারিয়ে ফেলিস তুই সবসময়,,এমনতো হতে পারে আমি কিছুই পারলাম না কিন্তু তুই ফাস্ট হয়ে বসে গেলি
ঝিনুকঃ হুমম সেই তো,,
কুইজ শুরু হয়,,আর হিয়া খুব মন দিয়েই প্রত্যেকটা প্রশ্নের উত্তর করতে থাকে,,মাঝে মাঝে পেছন থেকে উজান হিয়াকে ইচ্ছে মতো বিরক্ত করতে থাকে,,হিয়া প্রচন্ড ক্ষেপে উঠে কিন্তু কিছু না বলে চুপ করে সব সহ্য করে নেয়,,
১ঘন্টার কুইজ অনুষ্ঠান শেষে মকবুল স্যার বিজয়ী প্রতিযোগিতাদের নাম ঘোষণা করে,,আর যথারীতি ফাস্ট হয় উজান মানে সাব্বির আর কথা অনুযায়ী একটা হাইফাই গেট আপ নিয়ে সাব্বির ট্রফি আর ট্যাব নিয়ে এসে ঝিনুককের সামনে ইচ্ছে মতো ভাব নিতে শুরু করে,,আর তখনি উজান গপ করে এসে ছো মেরে সাব্বিরের থেকে ট্যাব টা নিয়ে নেয়
হিয়াঃ আপনি ভাইয়ার থেকে ট্যাব টা কেনো কেড়ে নিলেন___নিজে তো তখন কতো বড় মুখ করে বললেন ফাস্ট হবো ফাস্ট হবো এখন কি হলো পারলেন হতে ফাস্ট___ভাইয়ার ট্যাব ভাইয়াকে দিন দিন বলছি
সাব্বিরঃ ইয়ে হিয়া বলছি কি আমি না ট্যাব টা উজান কে গিফট করলাম,,আসলে কি বলো তো উজান তো ওলয়েজ ফোনে ঔ পাবজি ফ্রি ফায়ায় এসব গেম খেলে তাই আমি ওকে
হিয়াঃ তাই বলে আপনি,,,,দেখুন সাব্বির ভাইয়াকে দেখে কিছু শিখুন হু
সাব্বিরঃ 🙂🙂
এবার মকবুল স্যার দ্বিতীয় বিজয়ী ঘোষণা করে হিয়াকে,,সবাই মিটে মিটে হেঁসে দিলেও শ্রাবণ খুশি হয়ে হিয়াকে একবারে জড়িয়ে ধরে লাফিয়ে উঠে,,হিয়া সরল মনে গিয়ে ফোন টা নিয়ে এসে সবার সামনে একটা মাছুম মাছুম মুখ করে উজানকে একটা ভেংচি কেটে দেয়
সন্ধিঃ ইসস হিয়া টা আসার পর থেকে ভার্সিটির ক্রাশবয় তো পুরো নাজেহাল হয়ে গেছে,,কিছুতেই আর কোনো কিছু তে টপ করতে পারে না দেখছি
ঝিনুকঃ হয় হয় আপু প্রেম ভালোবাসা এরকম হাজার হাজার মহাপুরুষ কে তাদের প্রেয়সীর সামনে নত করে দেয় বুঝলা
হিয়াঃ ঝিনুক কি হচ্ছে টা কি
সবাই খিলখিল করে হেঁসে উঠে,,এদিকে মকবুল স্যার ৩য় বিজয়ী হিসেবে অন্য একটা ছেলের নাম ঘোষণা করে সবাই কে শান্তনা পুরুষ্কার হিসাবে চকলেট বিতরণ করে কুইজ খেলার সমাপ্তি ঘোষণা করে____
এদিকে কিছুক্ষণ বিরতি শুরু হয়,,,চলে সবার সাথে এক হয়ে পাহাড়ি ড্রেসের ফটোশুট,,স্যার ম্যাডমরাও এসে এক হয়ে এক ক্যামেরাতে বন্দি হয় সবার সাথে,,ছবি তোলার পর্ব শেষ হলে মেয়ে গুলো উজানের সাথে ছবি তুলবে কি যে ঢং শুরু করে দেখেই হিয়ার গা পিওি সব জ্বলে যায় একবারে,,আর হিয়াকে জ্বালানোর এই সুযোগ উজান করবে হাত ছাড়া,,কখনোই না।
হিয়াঃ আমাকে একশোএকটা সেফটিপিন দিয়ে ঢেকেঢুকে দিয়ে উনি এখন মেয়ে গুলোর সাথে ফষ্টি নষ্টি করছে___মেয়েগুলোকে দেখো ছিঃ কি বেহায়া এক একটা,,এরকম করে কেউ অচেনা অজানা একটা ছেলের বাহু ধরে ছবি তুলে,,,,ইসসস ছিঃ গায়ের সাথে গা একদম লেপ্টে দিয়ে জড়িয়ে ধরছে কি রকম দেখো,,___আর এনাকে দেখো এনার তো বেশ মজা লাগছে মনে হচ্ছে,,,হাসছে আবার কি রকম দেখো,,মনে তো হচ্ছে মাথা টা ফাটিয়ে দিয়ে আসি,,চুল গুলো স্যারদের চুলা থেকে আগুন এনে সব পুড়িয়ে দেই,,অসহ্য লোক একটা
উজান মেয়ে গুলোর থেকে ঢং করে বিদায় বলে হিয়ার কাছে এসে গা চাড়া দিয়ে একটা হাই তুলে।
উজানঃ কি রকম জানি একটা পুড়ে যাবার গন্ধ পাচ্ছি,,,কোথাও কি কিছু পুড়ছে হাঁস পাখি
এতো বিশ্রী ভাবে পুড়ছে মনে হচ্ছে একজনের ঘরে খুব ভয়ানক ভাবেই আগুন ধরছে
হিয়াঃ ধরলে ধরছে তাতে আপনার কি,,যান না যান আরেকটু গিয়ে সেই আগুনে ঘি ঢেলে আসুন,,যান
উজানঃ আরে তুমি এতো রাগ হচ্ছ কেনো হিয়া,,আমি কি তোমার কিছু পুড়ে যাবার কথা বললাম নাকি এখানে
হিয়া রাগে আরো কিছু বলতে যাবে তার আগেই উপস্থিত সবার মাঝে একজন ঘোষণা দিয়ে বসে এখন কাপল ড্যান্স করবে সবাই,,একটা বোলে থাকবে সবার নাম,,সবাই চিরকুট তুলবে যার নামের সাথে যার নাম উঠে আসবে সে হবে তার পার্টনার সে ছেলে হোক কিংবা মেয়ে মেয়ে,,আর যদি ড্যান্স করতে ইচ্ছুক না হয় তাহলে তাকে অন্য কিছু গান অভিনয় এসব করে দেখাতে হবে।
কথা অনুযায়ী সবাই বোল থেকে নাম তুললে সাব্বিরের ভাগ্যে ঝিনুকেই এসে জুটে,,এটাও উজানের মতো প্রি প্লানড না কাকতালীয় ভাবে মিলে যাওয়া কে জানে,,তুষারের সাথে অন্য একটা মেয়ে পড়লে তুষার অনেক কষ্টে তার পার্টনার কে বুঝিয়ে সন্ধির সাথে জোড় বাধতে সক্ষম হয়,,,,কিন্তু এই বার যেই হিয়া বোল থেকে চিরকুট উঠাতে যাবে ওমনি সেখানে উজানের নাম না এসে আসে সিফাত নামের একটা ছেলের নাম,,আর এই সিফাত আবার ভার্সিটিতে উজানের টেক্কাদার,,যদিও সে আজ অবধি কিছুতেই উজানকে হারাবে হারাবে করেও হারাতে পারে নি,,হিয়া এখন কি করবে চিরকুট থেকে মুখ তুলে উজানের চোখের দিকে তাকাতে চোখের সেই আগুন দেখে মুহুর্তেই হিয়ার অন্তরাত্মা কেঁপে ওঠে_____