মেঘের_আড়ালে_রোদের_লুকোচুরি ❤️ 🌈💙🎨😏❤️🥳🐦💐🍫🏩💒 Part-16

0
819

😏 #মেঘের_আড়ালে_রোদের_লুকোচুরি ❤️
🌈💙🎨😏❤️🥳🐦💐🍫🏩💒

Part-16

সবাই সবার ডান্স পার্টনার নিয়ে কি ডান্স করবে তাই নিয়ে কথা বলতে শুরু করে,,এদিকে হিয়া এখন কি করবে সে তো না পারছে এদিকে যেতে না পারছে ওদিকে,,কিন্তু উজানকে জ্বালানোর এই মোখখম সুযোগ টাও বা সে হাত ছাড়া করে কি করে,

হিয়া মুখ টিপে হেঁসে দিয়ে উজানের কাছে এসে খুকখুক করে কাশতে কাশতে,

হিয়াঃ আমি না কি যেনো একটা পোড়া পোড়া গন্ধ পাচ্ছি,,কোথাও কি কিছু পুড়ছে ভাইয়া

উজানঃ জাস্ট মুখ টা বন্ধ করো নয়তো এখানেই খুন করে দেবো আমি তোমাকে

হিয়াঃ আরে আপনি এতো রেগে যাচ্ছেন কেনো বলুন তো,,আমি কি আপনার কিছু জ্বলে পুড়ে যাবার কথা বললাম নাকি আমি তো

উজানঃ হিয়া আমি কিন্তু তোমাকে

হিয়াঃ আপনি আমাকে

উজান কিছু না বলে একটা দীর্ঘ শ্বাস টানে,,এই নাচের ব্যাপারটা তার প্রথম থেকেই একদম পছন্দ হয়নি,,তাও যদি হিয়া ওর পার্টনার হতো তাও একটা কথা ছিলো,,কিন্তু সে যে কিছুতেই হিয়ার ভাগ অন্য কারো সাথে ভাগ করতে পারবে না

উজানঃ তোমাকে আমার অন্য কারো সাথে সহ্য হয় না এতটুকু জিনিসও কি তুমি বুঝো না হিয়া,,আমার খারাপ লাগা টা সত্যি কি তোমাকে এতো আনন্দ দেয়??__যদি তাই হয় তাহলে তুমি গিয়ে সিফাতকে জড়িয়ে ধরে সারাক্ষণ নাচো আমি আর তোমাকে কিছু বলবো না,,কিচ্ছু না,,

বলেই উজান হিয়ার উপর একটা মন খারাপ করে ওখান থেকে বেড়িয়ে আসে,,এদিকে হিয়া এখন কি করবে উজান কে কেস খাওয়াতে গিয়ে সে তো এখন উল্টে নিজে কেস খেয়ে বসলো,,
___________________
হিয়াঃ (হালকা কাশি দিয়ে) সিফাত ভাইয়া

সিফাতঃ কে___ওহ হিয়া,,রাইট

হিয়াঃ জ্বী___ভাইয়া আমার কিছু কথা ছিলো

সিফাতঃ আমার সাথে নাচতে পারবে না তাই তো

হিয়াঃ হ্যা মানে,,আমার না পায়ে ঔ একটু কেটে গিয়ে

সিফাতঃ থাক আর বলতে হবে না___উজান কি খুব রাগ করছে নাকি চিরকুটে আমার নাম তুলেছো বলে

হিয়াঃ হ্যা মানে__আপনি

সিফাতঃ কোন ডিপার্টমেন্টে পড়ো??

হিয়াঃ জ্বী কেমিস্ট্রি ডিপার্টমেন্টে

সিফাতঃ ফাস্ট ইয়ার না??

হিয়াঃ জ্বী

সিফাতঃ হলে তো থাকো না মনে হয়,,বাসা কোথায়

হিয়াঃ জ্বী ঔ নীলক্ষেতের পেছনে

সিফাতঃ শ্রাবণ কি নিজের ভাই তোমার

হিয়াঃ জ্বী

সিফাতঃ তোমার ভাই টা অনেক কিউট,,অনেক সুন্দর করে কথা বলে,,শুনতে ভালোই লাগে

হিয়াঃ হুম

সিফাতঃ আচ্ছা চিন্তার কিছু নেই,,তোমাকে আমার সাথে কিছু করতে হবে না,,নিশ্চিন্ত থাকতে পারো তুমি

হিয়াঃ ধন্যবাদ ভাইয়া

সিফাতঃ উজানের রাগ কিন্তু প্রচুর একটু সামলে নিয়ো কেমন

হিয়াঃ জ্বী__আসি আমি

সিফাতঃ হুম

হিয়া চলে গেলে সিফাত একটা নীরব শয়তানি হাসি দিয়ে উঠলে পাশ থেকে সিফাতের এক ফ্রেন্ড রাহাত সিফাতের কাঁধে হাত রেখে

রাহাতঃ কি মামা,,এতো বড় সুযোগ টা মিস করলা

সিফাতঃ উজানের weak point এই হিয়া মুনতাসীর তাই তো!!

রাহাতঃ সেটা আবার তুমি আমাকে জিজ্ঞেস করছো,,কাল দেখলে না উজান কি রকম এই মেয়েটার জন্য নীলি কে অবধি জুতা খুলে মারতে চাইলো

সিফাতঃ হুম___এবার উজান শাহরিয়ার তুমি শুধু দেখবে এই সিফাত ওবরয় কি জিনিস___
_______________________

হিয়াঃ ইসস ভাইয়া টা কত্তো ভালো,,আমাকে কিছু বলতেও হলো না তার আগে উনি কি সুন্দর সব বুঝে গিয়ে আমাকে মানা করে দিলো,,আর এনাকে দেখো শুধু শুধু আমার উপর রাগ করে কোথায় যে চলে গেলো__কোথায় গেলো উনি??

হিয়া সবদিকে উজানকে খুঁজতে শুরু করে,,কিন্তু উজানকে খুঁজে পায় না__সাব্বির এসে বলে উজান ওদের বাস ঠিক করে নিয়ে আসতে মিলন স্যারের সাথে বাহিরে গেছে হ্যা যাওয়ার আগে অবশ্য ঔ লুঙ্গি খুলে নরমাল ড্রেস পড়ে নিয়ে তবেই বের হয়েছে,

উজান আর মিলন স্যার আসে প্রায় ঘন্টা দু এক পর,,তখন রান্না প্রায় শেষের দিকে আর একটু পর হয়তো সবাই খেতে বসবে,,উজান আসলে সন্ধি আর ঝিনুক মিলে উজানকে খোঁচা দিয়ে বলে উঠে সিফাত আর হিয়া নাকি একটা রোমান্টিক গানে হেব্বি করে নেচেছে,,শুনেই উজানের রাগ যেনো আরো চটচট করে বেড়ে উঠে,,উজান কিছু না বলে দাঁত মুখ খিঁচে সোজা নিজের রুমে চলে যায়,

উজান আসার দু মিনিট পর হিয়া আসে উজানের পিছেপিছে,,উজান গেট খুলে দিতেই হিয়া এপাশ ওপাশ তাকিয়ে টুক করে উজানের রুমে ঢুকে পড়ে গেট লাগিয়ে দেয়,,উজান এতোক্ষণ দাঁড়িয়ে ওর লাগেজ প্যাক করছিলো

হিয়াঃ কোথায় যাচ্ছেন আপনি?

উজানঃ____

হিয়াঃ আরে কোথায় যাচ্ছেন আপনি?

উজানঃ____

হিয়াঃ বাড়ি যাবেন??কাল যে বললেন আমাদের বাসে তুলে দিয়ে আপনি তারপর ফিরবেন।

উজানঃ____

উজান হিয়ার প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে না দেখে হিয়ার এবার ভীষণ রাগ ধরে,,হিয়া গিয়ে উজানের ব্যাগ টা হাত দিয়ে চাপা দিয়ে উজানের সামনে দাঁড়িয়ে যায়

হিয়াঃ কি হলো কি কথার উওর দিচ্ছেন না কেনো আমার

উজানঃ কি চাই তোমার এখানে,,কিসের জন্য আসছো আমার কাছে তুমি

হিয়াঃ আপনি আমার সাথে এরকম করে রাগ কেনো করছেন,,আমার কথা টা একটু শুনুন

উজানঃ আমি কে যে তোমার সাথে রাগ করবো,,কেউ হই কি আমি তোমার??

হিয়াঃ আচ্ছা লোক তো আপনি

উজানঃ হিয়া আমার সামন থেকে সারো,,আমার এমনিতে অনেক লেট হচ্ছে

হিয়াঃ হ্যা সে বুঝলাম কিন্তু আপনি কেনো এখন,,আপনি যে কাল বললেন

উজানঃ আমি তো অনেক কিছুই বলি কিন্তু তুমি শুনো কোনটা

হিয়াঃ হ্যা আমি,,আমি শুনি না আপনার কথা?

উজানঃ রিয়েলি,,আমার কথা শুনলে আমার, ফিলিংস টা বুঝলে তুমি ঔ সিফাতের সাথে গিয়ে জোড়াজোড়ি করে নাচতে পারতে না অন্তত

হিয়াঃ কি!!আমি আমি কখন গিয়ে আবার সিফাত ভাইয়ায় সাথে নাচলাম,,কে কে দিয়েছে আপনাকে এসব ভুল ভাল ইনফরমেশন হ্যা কে দিয়েছে

উজানঃ ঝিনুক আর সন্ধি যে বললো তুমি আর সিফাত

হিয়াঃ ওরা বললো আর আপনি ওমনি বিশ্বাস করে নিলেন

উজানঃ তারমানে তুমি সিফাতের সাথে

হিয়াঃ না নাচই নি,,,খুশি,,এখন তো মনে হচ্ছে কেনো নাচলাম না,,নাচতাম,,তখন ভাইয়া আমার কোমড় ধরতো,,হাত ধরতো,,নাচতে নাচতে আমার ওড়না সরে গিয়ে আমার তিল টা দেখে নিতো খুব ভালো হতো তখন,,খুব খুব

হিয়ার কথায় উজান রেগে গিয়ে হিয়ার মাথার পেছন থেকে হিয়ার চুল ধরে টেনে এনে হিয়ার কপালের সাথে নিজের কপাল ঠেকে দেয়❤️

উজানঃ বড্ড বেশি কথা বলতে শিখে গেছো তুমি

হিয়াঃ আমার চুলে কিন্তু লাগছে হ্যা

উজানঃ লাগুক,,এরকম মিষ্টি মেয়ে হয়ে থাকবা সারাজীবন বুঝলা আমি ছাড়া অন্য ছেলেকে ভুলেও ওসব দিক দিয়ে দেখবা না

হিয়াঃ ঠেকা আমার,,আমার যাকে ভালো লাগবে তার দিকে আমি তাকাবো আপনার কি

উজানঃ আমার অনেক কিছু

হিয়াঃ কি অনেক কিছু,,ভালোবাসি জিজ্ঞেস করলে তো বলেন আমি নাকি আপনার টাইপ না তাহলে কিসের জন্য আমি আপনার কথা শুনবো শুনি

উজানঃ তুমি কেনো ভাবো সবসময় যে আমি তোমাকে ভালোবাসি,,কি বুঝো তুমি ভালোবাসার ছোট্ট একটা মেয়ে কেবলই ফাস্ট ইয়ার তার আবার মুখে ওলয়েজ প্রেম ভালোবাসার কথা,,তুমি কি ছোট থেকে এতো পাকা ছিলা না ভার্সিটিতে উঠে আমাকে দেখার পর

হিয়াঃ বালাইষাট,,আপনি কি সিনেমার হিরো নাকি যে আমার আপনাকে দেখলে প্রেম ভালোবাসা নামক পাখা গোঁজাবে

উজানঃ হুমম,,তা কি বলে সিফাত কে না করলে

হিয়াঃ বলতে গিয়েছিলাম পায়ে চোট পেয়েছি নাচতে পারবো না তখন উনিই বললো নাচতে হবে না

উজানঃ সিফাত নিজে থেকে নাচবে না বলেছে

হিয়াঃ হুম

উজানঃ স্ট্রেন্জ!!___আচ্ছা যাই হোক তুমি কিন্তু সিফাতের থেকে দূরে থাকবা

হিয়াঃ কেনো দূরে থাকবো,,ভাইয়াটা কতো ভালো আপনি জানেন

উজানঃ আমার জানতে হবে না,,তোমাকে যেটা করতে বলছি তুমি সেটা করবা

হিয়াঃ ঠেকা আমার,,সিফাত ভাইয়া না অনেক শান্ত আপনার মতো এই এতো কথায় কথায় রেগে যায় না বুঝলেন

উজান হিয়ার চুল আরো মুঠ করে কাছে টেনে এনে হিয়ার কোমড়ের কাছে রাখা হাতটা আরো শক্ত করে চিপে ধরে❤️

উজানঃ কি বললা আরেকবার বলো

হিয়াঃ কিছু বলি নি তো,,

উজানঃ কে ভালো??

হিয়াঃ আপনি আপনি

উজানঃ হ্যা,,কথা টা যেনো মাথায় থাকে____দেখি ফোন টা কোথায় তোমার

হিয়াঃ যেটা তখন কুইজে পেলাম

উজানঃ হুম

হিয়াঃ ওটা তো শ্রাবণের কাছে

উজানঃ ওটা নিয়ে শ্রাবণকে একবার পাঠিয়ে দেও তো আমার এখানে,,কুইক

হিয়াঃ হ্যা কিন্তু আপনি এতো তাড়াতাড়ি

উজানঃ আড়াইটার ফ্লাইট আমার ওলরেডি দেড় টা পাড় হচ্ছে,,,,পরের ফ্লাইট নেই আর তাই যেতে হচ্ছে

হিয়াঃ আচ্ছা ঠিক আছে,,কিন্তু কিছু না খেয়ে চলে যাবেন

উজানঃ সময় নেই হিয়া,,যাও গিয়ে শ্রাবণকে ডেকে নিয়ে আসো

হিয়াঃ আচ্ছা আপনি গোছাতে থাকেন আমি আসছি

হিয়া দৌড়ে গিয়ে একটা প্লেটে পোলাও রোস্ট আর বুটের ডাল নিয়ে শ্রাবণ সহ উজানের কাছে আসে,,উজানের ব্যাগ গোছানো শেষ এখন সে রেডি হয়ে হাতে ঘড়ি টা পড়ছিলো

হিয়াঃ দেখি আগে একটু খেয়ে নিন তো

উজানঃ সময় নেই হিয়া আমার ফ্লাইটের আর,,শ্রাবণ এদিকে এসে বস

হিয়াঃ আপনি আগে খাবেন কি

উজানঃ কি বাংলা সিনেমার নায়িকা দের মতো ঢং শুরু করলে,,আমি আনতে বলেছিলাম আমার জন্য খাবার

হিয়াঃ এই আপনি একটুতে এরকম বাঘের মতো রেগে যান কেনো বলুন তো,,অসহ্য লাগে এই জিনিস টা আমার

উজানঃ সাথে তো তুমিও রাগ করো তার বেলা

হিয়াঃ দেখি হা করুন আমি খাওয়ায় দিলে তো আর দেড়ী হবে না আপনার

উজানঃ তুমি আমাকে খাইয়ে দিবে হিয়া পাখি,,

হিয়াঃ এখন ঢং কে শুরু করলো

উজানঃ না না দেও আর করবো না

উজান ফোন নিয়ে শ্রাবণকে হোয়াটসআপ ইমো খুলে দিয়ে কিভাবে ভিডিও কলে কথা বলতে হয় সব শিখিয়ে দিতে থাকে,,শ্রাবণের ছোট তুখোড় মস্তিষ্ক খুব সহজে সেগুলো রপ্ত করে নেয়,,আর এদিকে হিয়া একবার উজানকে খাইয়ে দিচ্ছে তো কখনো শ্রাবণকে,,,শ্রাবণকে বুঝিয়ে দিতে গিয়ে হঠাৎই উজানের চোখ যায় হিয়ার উপর,,হিয়া একদম বাসবি মানে তার মায়ের মতো করে সেভাবেই খাইয়ে দিচ্ছে যেভাবে বাড়ি গেলে উজানের মা উজানকে খাইয়ে দেয় আর উজান ফোনে গেম খেলতে থাকে,,উজান একটা শান্তির শ্বাস টেনে এবার উঠে পড়ে

হিয়াঃ দেখি পানি টা নিন,,আর অল্পইকটু আছে দেই

উজানঃ না ওটা তুমি খাও,,,,,,,,শ্রাবণ দেখি আয় এদিকে

উজান ওর কাঁধে ব্যাগটা ঝুলিয়ে আয়নায় একবার নিজেকে দেখে নিয়ে ওর ওয়ালেট থেকে কিছু টাকা বের করে শ্রাবণের হাতে দিতে ধরলে শ্রাবণ হাত গুটিয়ে নেয়,,হিয়ার দিকে তাকাতেই হিয়া চোখের ইশারায় মাথা নাড়িয়ে বলে তুই টাকা টা নিবে না,,উজান পেছন ফিরে হিয়াকে মাথা নাড়াতে দেখেই রেগে উঠে

উজানঃ এমন কেনো তুমি হিয়া

হিয়াঃ আপনি যান আপনার ফ্লাইটের দেড়ি হচ্ছে না এখন

উজানঃ তুমি না জাস্ট একটা

উজান আবার ওয়ালেটে টাকা গুলো ঢুকে নিয়ে শ্রাবণের দু গালে পরপর দুটো চুমু এঁকে দেয়,,

উজানঃ মন তো চাইছে না তোমাদের ছেড়ে যেতে,,বেশি পাকনামো না করে সবসময় সন্ধি আর ঝিনুকের সাথে সাথে থাকবা ইনফেক্ট শ্রাবণকেও আমি যাওয়ার পর আর একা ছাড়বা না___ঢুকছে কথা মাথাতে

হিয়াঃ হুম

উজানঃ আসছি আমি

উজান যেতে ধরবে ওমনি হিয়া বলে উঠে

হিয়াঃ পৌঁছে আমাকে একটা ফোন দিয়েন,,চিন্তায় থাকবো

কথা টা বলেই হিয়া লজ্জায় পুরো লাল হয়ে মাথা নামিয়ে নেয়,,হিয়ার এই বউ বউ টাইপ কথা শুনে আর লজ্জা পাওয়া মুখ দেখে উজান একটা হাসি দিয়ে দেয়

হিয়াঃ না মানে,,আমাকে না হোক আপুকে যদি

উজানঃ হুম দেবো,,আসছি

উজান হিয়ার থেকে বিদায় নিয়ে চলে যায়,,যাওয়ার আগে সাব্বির তুষার সবাইকে বলে যায় হিয়ার দিকে একদম কড়া নজর রাখতে,,এদিকে হিয়া শ্রাবণকে নিয়ে নিজেদের রুমে এসে ভাতের প্লেট টা হাতে নিয়ে উজানের কথা ভাবতে থাকে,এখন এই বাকি এঠো ভাত টা হিয়া কি করবে,হিয়া তো খাবার নষ্ট করার মতো মেয়ে না হিয়া জানে এই এক একটা ভাতের গুরুত্ব কি,

তার উপর এই ভাত টা আবার উজানের এঠো করা হিয়ার মন তো না চাইতেও সেগুলো খেয়ে বসে গপগপ করে,,এই প্রথম হিয়া শ্রাবণ ছাড়া উজানের এঠো খেলো অনেক অনেক অনেক পরিতৃপ্তি করেই খেলো❤️

উজানের আদেশে হিয়া আর শ্রাবণ ঢাকা ফেরা অবধি সন্ধি আর ঝিনুকের সাথে সাথেই থাকে,,সেদিন উজান রংপুর চলে আসার পর হিয়ারাও বাসে করে ঢাকা ফিরে আসে,,সেদিন আর কারো সাথে সেরকম কারো কথা হয় না।

পরেরদিন আবার সেই ক্লান্ত শরীর নিয়ে হিয়া টিউশন পড়াতে যায়,,ভাগ্যিস ট্যুর জন্য ভার্সিটি টা একদিন বন্ধ,,টিউশন পড়ে এসে ফ্রেশ হয়ে একটু রেস্ট নিয়ে নয়টার দিকে হিয়া রাতের খাবারের জন্য ভাত বসিয়ে আলু কুটতে থাকে,,আর এমন সময় উজান হিয়ার নতুন ফোনে ফোন করে,,উজানের ফোন আসতেই শ্রাবণ লাফিয়ে বই খাতা গুছিয়ে কানে হেডফোন গুঁজে দিয়ে বকবক করতে শুরু করে,,ফোন টা পাবার পর থেকে একবারো হিয়া শখ করে ফোন টা নাড়াচাড়া করে দেখে নি,,ঔ শ্রাবণই উজানের ফোন আসলে রিসিভ করে আর কথা বলে

শ্রাবণঃ আজকে সারাদিনে তুমি এই এখন ফোন দিলে

উজানঃ ব্যস্ত ছিলাম খুবব এখানে,,অনেকদিন পর বাড়িতে ফিরলাম বুঝিসই তো

শ্রাবণঃ হুম,,কি করো কবে আসবা তুমি,,কবে দেখা করবা আমার সাথে আবার

উজানঃ কাল না গেলে পরশু আসবো সিউর

শ্রাবণঃ পরশুউউউউ,,আরো একটা দিন

উজানঃ হুম,,তোর বুবু কোথায় রে,,কি করে হাঁস পাখি টা আমার

শ্রাবণঃ বুবু আলু কাটে

উজানঃ আলু

শ্রাবণঃ হুমম আলুভাজি করবে রাতে গরম গরম ভাত দিয়ে আলু ভাজি খাবো

উজানঃ শুধু আলু ভাজি আর কিছু নেই সাথে

শ্রাবণঃ না আর কি থাকবে,,বুবু তো বর্তা(ভর্তা) করতো বলে বর্তা করলে তেল কম লাগে ওজন্য ভাজি করে না সবসময়,,কিন্তু আমার বর্তা(ভর্তা)ভালো লাগে না তাই আজকে বলেছি বলে ভাজি করছে

উজানঃ দুপুরে কি দিয়ে ভাত খাইছিস

শ্রাবণঃ দুপুরে আজকে লাউশাক আর ভাত খাইছি,,কি মজা করে লাউ শাক টা রাধছিলো বুবু ইসস জানো,,আমি গপ-গপ করে এতো গুলা খাইছি

শ্রাবণের মুখে কথা গুলো শুনেই উজানের বুক টা ফাঁকা হয়ে আসে,,সে বাড়ি আসার পর থেকে তার মা তার জন্য যা পারছে রান্না করছে,,পোলাও কোড়মা থেকে শুরু করে খাসি রোস্ট সহ বাহারি ধরনের মিষ্টি,,ঘন্টায় ঘন্টায় উজানের জন্য রুমে দিয়ে পাঠাচ্ছে কতো নামি দামি খাবারের আইটেম,,,আর হিয়া কি না এখানে তেল বাঁচাতে গিয়ে ভর্তা দিয়ে!!!!____কয়েক সেকেন্ড কোনো কথা আর উজানের মুখ দিয়ে বের হয় না___এদিকে তার বাবাও এখন অনেকটা সুস্থ,,আর বাসবি জোর করে তাকে এ বাড়িতে কয়দিন নিয়ে এসে রেখেছে,,সমরেশের ইচ্ছে হয়েছে আজ সে তার বাসবির হাতে খিচুড়ি খাবে তাই জন্য আবার বাসবি রান্না ঘরে গিয়ে হাড়ি ভর্তি মাংস থেকে শুরু করে বেগুন ভাজা বেগুনের চপ টিকিয়া আরো কতো কি রাধতে শুরু করে,,বাসবির মায়ের মন তো আজ এতোদিন পর সন্তান স্বামী পেয়ে খুশিতে কি থেকে কি করবে বুঝে উঠতে পারছে না,,এসব চিন্তা করতে গিয়েই উজান থমকে যায়

শ্রাবণঃ ভাইয়া___ভালো ভাইয়া শুনছো__ভাইয়া

হিয়াঃ শ্রাবণ তোমার হাতে আবার ফোন কেনো,,

হিয়ার কথা শুনে শ্রাবণের বুক টা কুক করে উঠে,,

শ্রাবণঃ ঔ ভালো ভাইয়া ফোন দিয়ে

হিয়াঃ ভালো ভাইয়া কে বলো ফোন রাখতে,,তুমি এখন পড়তে বসবা

শ্রাবণঃ আর একটু বলি না বুবু,,এখনি ভাইয়া ফোন দিলো

হিয়াঃ আমি যেনো রান্না ঘর থেকে এসে দেখি তুমি ফোন রাখছো

হিয়া চলে গেলে শ্রাবণ আবার উজানের সাথে কথা বলতে শুরু করে

উজানঃ শ্রাবণ,,তোর বুবু ঔষধ গুলো খায় নিয়মিত

শ্রাবণঃ আমি তো মনে করে করে খাইয়ে দেই,,কিন্তু বুবু রাগ হয়

উজানঃ রাগ হোক,,তোর বুবু ঔষধ না খেলে তুই উল্টে তোর বুবুর উপর রাগ করবি

শ্রাবণঃ হুম

উজানঃ তোর বুবু আর কিছু খায় নি সারাদিনে

শ্রাবণঃ না তুমি যেই ফল গুলো কিনে দিয়েছিলে ওগুলো তো আমি খেয়েই শেষ করলাম,,সকালে একটা আপেল কাটলো বুবু কেটে একটা পিচ খেয়ে ওমনি থুইয়ে দিয়ে দৌড়ে টিউশন পড়াতে চলে গেলো

উজানঃ (একটা দীর্ঘ শ্বাস টেনে) তোর বুবু আসলে বুবুকে ফোন টা ধরিয়ে দিবি তো ওকে একবার দেখবো❤️

উজানের কথা শেষ না হতেই হিয়া রুমে আসে আর তখনি শ্রাবণ হাত বাড়িয়ে ফোন টা হিয়ার দিকে তাক করে

শ্রাবণঃ বুবু বুবু ভালো ভাইয়া কথা বলবে,,একটু তাকা না এদিকে

শ্রাবণের কথায় হিয়া শ্রাবণের দিকে তাকিয়ে ফোন টা শ্রাবণের হাত থেকে কেঁড়ে নেয়

হিয়াঃ আপনার কি খেয়ে দেয়ে আর কাজ নেই,,কি কথা শ্রাবণের সাথে এতো আপনার

উজানঃ ওসব সিক্রেট কথা তোমাকে বলা যাবে না🥰

হিয়াঃ শুনুন কাল থেকে এরকম করে যখন তখন ফোন দিবেন না,,আজকে রিমা আপু নেই কাল হয়তো চলে আসবে,,আর উনি হয়তো ব্যাপারটা ভালো চোখে নাও দেখতে পারে

উজানঃ আরে রিমা কোনো ব্যাপার হলো রিমা কে তো আমি

হিয়াঃ রিমা কে আপনি!!

উজানঃ না না কিছু না,,বাহ গোলাপি জামা টায় তো তোমাকে অনেক কিউট লাগছে দেখতে,,তোমার এরকম গোলাপি জামা ছিলো আগে পড়ো নি কেনো কখনো হিয়াপাখি

হিয়াঃ নতুন কিনেছি খুশি

উজানঃ একটা কথা বলি

হিয়াঃ তাড়াতাড়ি বলেন

উজানঃ বলবো

হিয়াঃ ন্যাকামো না করে বলেন কালকে ক্লাস পরীক্ষা আছে আমি পড়তে বসবো

উজানঃ তোমার তি———-ল টা একটুউউউ দেখাবা হিয়া

হিয়াঃ কি!!

হিয়া উজানকে ঝারি দিতে ধরবে তার আগেই উজান সাথে সাথে ফোন কেটে একটা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ে,,আর এদিকে তো হিয়া উজানকে অসভ্য বেয়াদব আরো কি কি বলে যে গালি দিতে শুরু করে ঔ ভালো জানে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here