😏 # মেঘের_আড়ালে_রোদের_লুকোচুরি ❤️
🌈💙🎨😏❤️🥳🐦💐🍫🏩💒
Part-09
হিয়া দাঁত মুখ খিচে সব রান্না শেষ করে টেবিলে সাজিয়ে রাখে একদম পরিপাটি করে,,বৃষ্টির রুনুঝুনু শব্দ,,সাথে মাতাল করা হিমেল বাতাস তার উপর হিয়ার হাতের খিচুড়ির সাথে গরম গরম বেগুন ভাজা,,আলু ভর্তা আর স্পেশালি রোস্ট,,পুরো ফ্লাট জুড়ে এখন মৌ মৌ করছে সব কিছুর গন্ধে,,
হিয়াঃ কখন বিকেল হবে কখন আমি বাড়ি ফিরবো,,অসহ্য লাগছে___কাল রাত জুড়ে আমার সেবা না করলে লোক টার মুখের উপর ভেংচি কেটে শ্রাবনকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যেতাম___শ্রাবণ____শ্রাবণ____উঠে আয় জলদি____আমার সব রান্না শেষ____শ্রাবণ____
উজান শ্রাবণকে পিঠে করে নিয়ে এসে টেবিলের উপর বসিয়ে দিয়ে
হিয়াঃ ওখানে বসালেন কেনো,,,,নিচে চেয়ারে বসিয়ে দিন
উজানঃ এইরকম কেনো তুমি
হিয়াঃ আমি এরকমই!!__দেখি শ্রাবণ নামো__নামো বলছি
শ্রাবণঃ বুবু আমি থাকি না এভাবে বসে
হিয়াঃ না,,এটা মানুষের টেবিল ভেঙে যাবে,,নামো তুমি
শ্রাবণঃ বুবুউউ
হিয়া চোখ রাঙ্গালে শ্রাবণ নিচে নেমে চেয়ারে গিয়ে বসে পড়ে,,হিয়া দুটো প্লেট সোজা করে শ্রাবণ আর উজানের জন্য খিচুড়ি পাতিয়ে দিলে শ্রাবণ আর উজান কসিয়ে কসিয়ে হাতে মুখে মেখে গল্প করতে করতে গপ গপ করে খেতে থাকে,,আজ অনেকদিন পর শ্রাবণকে এতো তৃপ্তি ভরে খেতে দেখে হিয়ার মনটা ভেতর থেকে ফাঁকা হয়ে আসে,,চোখ ভারি হয়ে আসলেও হিয়া নিজের চোখের জল টা খুব যত্ন করেই নিজের চোখের মধ্যে সংযত করে নিয়ে ডাইনিং থেকে সরে গিয়ে উজানের রুমে বড় ব্যালুকুনিতে গিয়ে রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে যায়
উজানের এই ফ্লাট টা যে রকম সাজানো গোছানো তেমনি উজানের রুমের এই ব্যালকুনি টাও দেখতে বেশ পরিপাটি,,যতোরকম ফুলের গাছ দিয়ে সাজানো তার অধিকাংশ গাছেরই নাম হিয়ার জানা নেই,,জানবেই বা কি করে জীবনের রুক্ষতাময় কলহ থেকে বেড়িয়ে জীবন টা উপভোগ করার সময় টাই বা হয়েছিল কবে তার!!
হিয়াঃ বাহ ভাইয়ার এই ব্যালকুনি থেকে শহর টা দেখতে কি সুন্দর লাগছে__মানুষ টাই এতো সুন্দর এই জন্য হয়তো বৃষ্টিভেজা এই শহর টাও আজ এতো সুন্দর লাগছে___ছেলে মানুষ এতো গোছালো হয় এই প্রথম দেখলাম__মানুষ টা এতো কেনো করছে আমার জন্য,,,,উনি কি আমাকে ভালোবাসেন??____(একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে) পাগল তুই হিয়া,,,কি সব ভাবছিস খেয়াল আছে কোনো তোর,,,,,ভালোবাসা মানে কি বুঝিস তুই,,,তোর মতো মেয়ে দের জন্য ভালোবাসা না বুঝলি
হিয়া চোখ বন্ধ করে একটা দীর্ঘ শ্বাস টানে,,আর চোখ খুলে না__চোখ বন্ধ করেই উপভোগ করতে থাকে বৃষ্টির গন্ধ,,ভেজা মাটির গন্ধ,,পিচঢালা রাস্তার গন্ধ,,ঝড়ো বাতাসের সাথে বৃষ্টির ছাট এসে ছুঁয়ে দেয় হিয়ার মুখ,,মেঘ সরিয়ে হালকা রোদ দেখা দিলেও পরিবেশ এখনো অন্ধকার
হিয়া চোখ বন্ধ করে প্রকৃতির সাথে নিজেকে মিশিয়ে দিতে ব্যস্ত,,এমন সময় উজান খুব সতর্কভাবে পেছন থেকে হিয়ার পিঠের কাছে এসে হিয়ার বাহু ধরতেই হিয়া আতঁকে উঠে,,ভয়ে চোখ খুলে পেছন ফিরতে যাবে ওমনি উজান হিয়াকে থামিয়ে দিয়ে পেছন করেই রেখে দিয়ে হিয়ার খোলা পিঠে একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেললে হিয়া নিমিষে এই বৃষ্টির শীতল পরিবেশে আরো কুঁকড়ে উঠে🙈🙈
উজানঃ দাঁড়াও শান্ত হয়ে
হিয়াঃ কি করেছেন আপনি,,শ্রাবণ কোথায়
উজানঃ আছে ওয়াশরুমে
হিয়া আর কিছু বলতে ধরেও হিয়ার মুখ দিয়ে কেনো জানি কিছু বের হচ্ছে না,,সব কথা গুলো গলার কাছে এসে দলা হয়ে যাচ্ছে
হিয়ার এই চুপসে যাওয়া টাকে আরো বহুগুণে বাড়িয়ে তোলে উজান,,আলতো করে হিয়ার খোলা পিঠে উজানের আঙ্গুলের পরশ মুহুর্তে হিয়ার শরীর কে পুরো কাপিয়ে তুলে,,হিয়া ঠিক বুঝতে পারে না উজান ঠিক কি করতে যাচ্ছে ওর সাথে,,খারাপ কিছু করার হলে তো উজান কালই করতে পারতো যখন হিয়া সেন্সলেস ছিলো তাহলে এখন কিসের জন্য,,হিয়া ওটুকু জায়গায়তেই কি রকম ছটফট করতে থাকে
হিয়াঃ কি কর__ছেন আপনি
উজানঃ চুপ
উজান আলতো করে হিয়ার ব্লাউজের ফিতা দুটো ধরে লাগিয়ে দিতে থাকে
উজানঃ কীভাবে জামাকাপড় পরো,,সব খুলে থাকে
উজানের কথায় হিয়া চোখ বড় করে তাকিয়ে আঁতকে উঠে,,সব খুলে আছে মানে,,কিসব বলছে এই লোক টা,,মাথা নষ্ট নাকি😕😕
হিয়াঃ কি কি বলতে চাইছেন আপনি
উজানঃ কিছু না
উজান ফিতে টা সুন্দর করে বেধে দিয়ে হিয়াকে আলতো করে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেয়,,হিয়া তখনো একদম লজ্জায় কুঁকড়ে গিয়ে মাথা নিচু করে থাকে
উজান হিয়ার দুপাশে রেলিঙের উপর হাত দিয়ে একটা বেষ্টন তৈরি করে হিয়ার নিচু করা মাথার সাথে নিজের মাথা টা আলতো করে ঠুকে দেয়,,মুহুর্তে হিয়ার বুক পুরো শূন্য হয়ে আসে,,এই বুঝি দম টা ওখানে আঁটকে যাবে যাবে,,
উজানঃ মানুষ কে এতো সহজে বিশ্বাস করো কেনো তুমি
হিয়াঃ বিশ্বাস করি বলতে__ঠিক বুঝলাম না
উজানঃ এই যে এখন তুমি আমাকে বিশ্বাস করে আমার সাথে আমার ফ্লাটে আছো,,আমি তো চাইলে অনেক খারাপ কিছু তোমার সাথে করতে পারি,,পারি না??
হিয়াঃ____!!
উজানঃ আমি তখন ইনিয়েবিনিয়ে কথা বললাম আর তুমি রাজি হয়ে গেলে এখানে থাকতে,,একবারো মাথায় আসে নি,,পুরো বাড়ি টা এখন ফাঁকা আমি যদি জোর করে তোমার সাথে কিছু করি তোমার কিছু করার থাকবে,,চিৎকার করে কারো কাছে সাহায্য পেতে তুমি তখন
হিয়াঃ (আচ্ছা লোক তো ইনি,,আমাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে ধমক দিয়ে আঁটকে রাখলো এখন উল্টে আমাকে প্রশ্ন করছে,,আমার কি দোষ উনিই তো)
উজানঃ আর কখনো মানুষ কে এতো ইজিলি বিশ্বাস করবা না,,এটা ঢাকা শহর হিয়া
হিয়াঃ আমি কি করবো আপনি তো আমাকে বললেন যে
উজানঃ কি বললাম
হিয়াঃ ঔ যে তখন,,,,আর
উজানঃ আর??
হিয়া এবার মুখ তুলে হাত পাকিয়ে পাকিয়ে কথা বলতে শুরু করে
হিয়াঃ আর আমি জানি আপনি হয়তো একটু রাগি,,ঔ হট টেম্পার একটুতে রেগে যান,,রাগের মাথায় কি থেকে কি করে বসেন নিজেরই হুঁশ থাকে না তখন কিন্তু
উজানঃ কিন্তু??
হিয়াঃ কিন্তু আমি জানি আপনি মানুষ টা খারাপ না
উজানঃ কিন্তু তুমি আমাকে যা সব বললে,, রাগি,,হট টেম্পার,,রাগে থাকলে আমার হুঁশ থাকে না,,এসব তো আমার জানা মতে কোনো ভালো মানুষের বৈশিষ্ট্য বা গুন না,,তাহলে আমি কি করে খারাপ মানুষ হলাম না বলো এবার
হিয়াঃ আরেএএএএ বোকাটা বোঝে না,,,খারাপ মানুষ বলতে তো আমি তা বলি নি,,মানে এসব খারাপ মানুষের বৈশিষ্ট্য ঠিক আছে কিন্তু আপনি তো খারাপ না,,মানে আপনার মাঝে এসব গুণ থাকলেও আপনি ভালো,,
উজানঃ এই এক মিনিট এক মিনিট এক মিনিট,,কিসব বলছো বলো তো তুমি হিয়া,,আমার মাঝে সব খারাপ গুন আছে কিন্তু আমি ভালো,,আমি ভালো কিন্তু খারাপ গুন আছে তাহলে তো আমি সে হিসাবে খারাপ,,কিন্তু তুমি বলছো আমি ভালো,,ভালো হলে খারাপ গুন আসবে কেনো,,আর খারাপ গুন আসলে আমি ভালো হলাম কি করে????
হিয়াঃ আরেএএএএ,,,,আমি বলছি যে আপনি ওদিক দিয়ে খারাপ মানে খারাপ না,,ওসব তো ছেলেদের এমনিতে মাথা গরম একটু থাকেই কিন্তু আপনি এদিক দিয়ে ভালো মানুষ
উজানঃ কোনদিক দিয়ে
হিয়াঃ ইয়ে মানে এসব দিক দিয়ে
উজানঃ কোন সব দিক দিয়ে
হিয়াঃ আপনি না
উজানঃ কি আমি
হিয়াঃ আপনি একটা খুব বাজে লোক
উজানঃ একটু আগে বললে আমি খারাপ না এখন আবার বলছো আমি বাজে
হিয়াঃ হ্যা বাজে লোক,,আমার কথার মানে সব বুঝছেন কিন্তু শুধু শুধু আমাকে কথার জালে ফাঁসিয়ে হ্যারাজ করছেন
উজানঃ আমি তোমাকে হ্যারাজ করছি,,আমি
হিয়াঃ করছেন না___সারুন তো সারুন__আপনাকে আমি সেদিন বলেছি না আপনি আমার থেকে দশ হাত দূরে দূরে থাকবেন তারপরো কেনো আপনি
উজানঃ কি আমি??
হিয়াঃ এই যে হুটহাট করে আমার কাছে চলে আসছেন__সারুনননন নাআআআআ
উজানঃ যদি না সরে যাই
হিয়াঃ দেখুন আমি এতোক্ষণ কিছু খেয়াল করি নি কিন্তু শ্রাবণ যখন তখন এসে গেলে কিন্তু খুব খারাপ হয়ে যাবে ব্যাপার টা,,ছোট বাচ্চা কি থেকে কি বুঝে ফেলবে,,,,তখন সমস্যা আমারই হবে
উজানঃ হুমমমম,,খাবে এখন আসো আমার সাথে
উজান হিয়াকে নিয়ে যেতে ধরলে হিয়া উজানকে থামিয়ে দিয়ে
হিয়াঃ না আমি খাবো না
উজানঃ কি বললা
হিয়াঃ বললাম আমি খাবো না
উজানঃ আর একবার বলো
হিয়াঃ আমি খাবো না
উজানঃ মজা করতিছো আমার সাথে
হিয়াঃ না,,আমি কোনো মজা করছি না আপনার সাথে,,আপনি কাল থেকে আমার জন্য অনেক করেছেন,,এই সব ডক্টর,,স্যালাইন,,ঔষধ কতো কতো ঋণ হয়ে থাকলো আপনার উপর আমার,,,আমি আর আপনার এখানে খেয়ে কিছুতেই এই ঋণ টা বাড়াতে চাই না
উজানঃ বলা শেষ
হিয়াঃ হ্যা
উজানঃ আসো এখন
হিয়াঃ কোথায় যাবো
উজানঃ আপাতত রুমে আসো,,আবহাওয়াটা ঠান্ডা,,জ্বর সর্দিকে বিনা দাওয়াতে আমন্ত্রণ জানানোর কোনো প্রয়োজন আছে কি??
হিয়াঃ না মানে
উজানঃ আসো
উজান হিয়াকে ঘরে নিয়ে এসে বসিয়ে দিলে শ্রাবণ দৌড়ে এসে বিছানার উপর উঠে হিয়ার গলা ধরে দুলতে থাকে,,এদিকে উজান ডাইনিং এ এসে হিয়ার জন্য একটা প্লেটে খাবার সাজাতে শুরু করে
শ্রাবণঃ বুবু ভালো ভাইয়ার বাড়ি টা দেখছিস,,কত্তো বড়___
হিয়াঃ হুম বড়
শ্রাবণঃ বুবু ভালো ভাইয়া বললো আজকে নাকি আমি আর তুই এখানে থাকবো,,রাতে এখানে ঘুমোবো সত্যি কি,,সত্যি কি তুই আজ বাড়ি যাবি না
হিয়াঃ আমি কি তোকে একবারো বলেছি আমি বাড়ি যাবো না___আজ বাড়ি যাই তারপর তো তোর বিচারো আছে আজ(কাঠ কাঠ কন্ঠে)
শুনেই আঁতকে উঠে শ্রাবণ,,বিচার আছে মানে,,কিসের বিচার,,কি করলো আবার সে,,তার বুবুনির বিচার মানে তো সাংঘাতিক জিনিস এখন কি হবে!!
শ্রাবণ কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই উজান রুমে এসে হিয়ার পাশে বসে হাত বাড়িয়ে হিয়ার মুখের দিকে এক লোকমা তুলে ধরে
উজানঃ দেখি মুখ খুলো,,
হিয়াঃ আপনাকে তো বললাম যে আমি
উজানঃ আর তোমাকেও তো আমি বললাম মুখ টা খুলতে
হিয়াঃ আমি যদি না খুলি
উজানঃ (রেগে গিয়ে)হিয়া প্লিজ জেদ করো না তো,,আমার এক জিনিসের জন্য বারবার এরকম রিকুয়েষ্ট করতে ইচ্ছে করে না
হিয়াঃ আপনি এরকম কেনো করছেন,,আমি সকালে খেলাম তো,,আপনি তো নিজে থেকে দাঁড়িয়ে আমাকে দুটো কি বড় বড় রুটি খাওয়ালেন,,এখন দুপুরে এসে আবার ভাত খাওয়া যায় আপনি বলুন___আমার পেট এখনো ভরে আছে বিশ্বাস করুন
উজানঃ কতো কি ভরে আছে সব আমি জানি,,আমি জাস্ট আর একবার বলবো হিয়া
হিয়াঃ প্লিজ ভাইয়া আমার এসব খাবার খাওয়ার কোনো অভ্যেস নেই আপনি আমাকে
উজানঃ খাবে না তুমি
হিয়াঃ না
উজানঃ ঠিক তো
হিয়াঃ হুম
উজান একটা দীর্ঘ শ্বাস টেনে হাতে থাকা প্লেট টা বিছানার এক পাশে ধাম করে ছুঁড়ে দিয়ে উঠে রাগে গটগট করতে করতে আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে শার্টের কলার ঠিক করে চুল আছড়াতে থাকে
উজানঃ ডক্টর আঙ্কেল ধরেই বললো,,মেয়ে টার শরীরে কোনো রক্ত নেই,,পেসার লো আর এনাকে দেখো___বেয়াদব একটা___মনে হয় যেনো আমি তোমার প্রেমিক তুমি আমার সাথে খাবো না,,থাকবো না এসব ন্যাকামি করে অভিমান প্রকাশ করছো___ভার্সিটির সিনিয়র ভাইয়া হিসাবে এতটুকু এতটুকু তো অনন্ত সম্মান দেবা আমাকে😠😠
হিয়াঃ আমি কোথায় আপনাকে অসম্মান করলাম
উজানঃ (ঝারি দিয়ে ধমকে)একদম মুখে মুখে তর্ক করবা না____সবসময় কথার পৃষ্ঠে কথা,,,,মকবুল স্যার ঠিকই বলে টিচার হয়ে জয়েন করে আসলে তখন দেখবো কি করে তুমি তোমার স্যারকে অমান্য করো___শ্রাবণ
শ্রাবণঃ জ্বী
উজানঃ উঠে রেডি হ,,আমি আর তুই বাহিরে যাবো,,কুইক
শ্রাবণঃ বাহিরে😍
হিয়াঃ শ্রাবণ কে নিয়ে আপনি কোথায় যাবেন
উজানঃ শ্রাবণ তোকে আমি উঠতে বলছি কি
হিয়াঃ হ্যা ও যাবে কিন্তু
উজানঃ শ্রাবণ
শ্রাবণঃ বুবু রাগ হবে
উজান এসে শ্রাবণকে দাঁড় করিয়ে শ্রাবণের চুল ঠিক করে আছড়ে দিয়ে
হিয়াঃ ভাইয়া আমার কথা টা শুনুন
উজানঃ শ্রাবণ তোর বুবুকে বলে দে সে যেনো ভাত টা পুরো শেষ করে ফেলে,,নাহলে আমি এসে দেখলে কিন্তু
শ্রাবণঃ বুবু তুই কিন্তু ভাত টা___
হিয়াঃ চুপ কর,,ভাইয়া বলছি কি
উজান হিয়াকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে শ্রাবণকে কোলে তুলে নিয়ে
উজানঃ আমার ফিরতে ঘন্টা খানেক সময় লাগবে,,আমি বাহির দিয়ে লক করে যাচ্ছি কেউ আসবে না__তুুমি তাও ভেতরে লাগিয়ে দেও ফর সেফটি,,,কোনো প্রয়োজন হলে তোমার টা সহ আমার আর একটা ফোন রেখে যাচ্ছি ফোন দিও,,,,,,,,আর হ্যা আমি যেন এসে পুরো প্লেট টা ফাঁকা দেখি
বলেই উজান ওর ফোন টা পকেটে ঢুকিয়ে বেড়িয়ে পড়ে,,আর এদিকে তো এখন হিয়ার মাথায় পুরো হাত এখন ও কি করবে একা একা এই এতো বড় ফাঁকা বাড়ি টাতে
______________
দুপুর তখন চারটার কাছাকাছি,,,,উজানের সেলফ থেকে একটা বই নিয়ে এসে পড়তে গিয়ে কখন যে হিয়া ঘুমিয়ে পড়ে হিয়ার সে হুঁশ নেই,,,বাহিরে তখন আবারো আকাশ কাপিয়ে ঝরা বৃষ্টি,,আকাশ পুরো অন্ধকার,,মাঝে মাঝে বজ্রপাতের চোখ রাঙানি তো আছেই,,এদিকে এক ঘন্টার কথা বললেও উজান আর শ্রাবণের ফিরতে ফিরতে প্রায় দু ঘন্টা হয়ে আসে,,এসেই উজান শ্রাবণকে বাহিরের ওয়াশরুমে হাত পা ধুতে পাঠিয়ে দিয়ে নিজের রুমে এসে হিয়াকে খুঁজতে গিয়েই ওর চোখ আঁটকে যায় হিয়ার উপর
ঘুমিয়ে গিয়ে কখন যে হিয়ার গা থেকে হিয়ার আঁচল টা সরে গিয়ে এক পাশে জড়ো পাকিয়ে যায় তার কোনো হুঁশ উজানের এই ঘুমন্ত পরী টার নেই,,থাকবেই বা কি করে কখনো কি হিয়া এভাবে বাড়িতে শাড়ি পড়েছিলো নাকি,,আর হিয়ার দিকে এগিয়ে আসতেই উজান পুরো বোল্ড আউট হয়ে যায় এবার,,ব্লাউজের অংশ টুকু বাদ দিয়ে হিয়ার পেট কোমড় সবকিছুই উজানের সামনে উন্মোচিত,,উজানের পুরুষ মন তো না চাইতেও বিভোর দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে হিয়ার দিকে!!
উজান গিয়ে আলতো করে হিয়ার পাশে বসে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে হিয়ার দিকে,,কিছুতেই সে তার চোখকে সংযত করতে পারতিছে না এই মুহুর্তে,,ভার্সিটিতে নীলিরা তো মাঝে মাঝেই ওরনা ছাড়া ক্লাস করতে আসে আর শুধু নীলি কেনো অধিকাংশ মেয়েই ওরনা ছাড়া জিংকস টপস পড়ে আসে কোথায় তখন তো কখনো উজান ভুলেও তাদের দিকে চোখ তুলে তাকায় নি,,তার সে রকম রুচিই হয় নি কখনো,,তাহলে আজ কেনো হিয়ার কাছে সে নিজের গাম্ভীর্য টাকে সর্পে দিচ্ছে
উজানঃ লোভ দেখাচ্ছ আমাকে!!___কি চাইছো কি আমাকে খারাপ ছেলে বানাতে,,,কি করবো তোমাকে নিয়ে আমি এতোটা কেনো কেয়ারলেস তুমি তোমার নিজেকে নিয়ে,,,আমাকে দেখে কিছু শিখতে পারো না,,যাওয়ার সময় বললাম গেট টা ভেতর দিয়ে লক করে দিতে সেটাও তো শুনলে না এখন কেউ যদি বাহিরের লক খুলে ঢুকে যেতো ফ্লাটে,,,ইডিয়ট একটা,,,,,বাহিরে তুমুল বৃষ্টি হচ্ছে ওয়েদার টাও তো কতো রোমান্টিক এখন তোমাকে এভাবে দেখে আমার ঠিক কি করতে ইচ্ছে করে তুমি বলবা একটু????????____ভাত টাও তো খাও নি মনে হয় এখন আমি এর বদলে তোমাকে ছুঁইয়ে দিলে খুব ভালো লাগবে তোমার,,পাগলি
এবার উজানের মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি ঘুরপাক খেতে শুরু করে🙈🙈
উজানঃ ইয়ে বলছি কি হিয়া পাখি একটা একটা ঔ একটা ঔ কালকের মতো ছোট্ট করে একটু আদর করে দিলে কি তুমি খুব বেশি রাগ করবে😋😋,,,,একটু দেই,,এই এতোটুকু🥰🥰
বলেই উজান জোরে জোরে শ্বাস টেনে হিয়ার খোলা পেটের উপর একটা প্রশ্বান্তির নিশ্বাস ফেলে হিয়ার নাভির উপর একটা ইয়াআআআআ বড় চুমু😘😘😘😘এঁকে দেয়🙈🙈🙈🙈🙈🙈
উজানঃ Sorryইইইইইইইইইইইই___আর কখনো তোমার পারমিশন ছাড়া এসব করবো না পাক্কা প্রমিস🙂🙂
উজান হালকা হেসে দিয়ে পাশে থাকা কম্বল টা হিয়ার গায়ে জড়িয়ে দিয়ে ওয়াশরুমে ফ্রেশ হতে ঢুকে পড়ে
_________
হিয়ার ঘুম থেকে উঠতে তখন পাঁচ টা,,হিয়া এবার জেদ ধরে ও বাড়ি ফিরবে,,রাতে উজানের এখানে এভাবে থাকা অসম্ভব,,উজানো আর হিয়াকে জোর করে না,,হিয়ার মতের বিরুদ্ধে গিয়ে সে যে কখনোই কিছু জোর করে হিয়ার উপর চাপিয়ে দেবে না,,
তাই বাধ্য হয়ে সে সন্ধ্যের আগে আগে হিয়া আর শ্রাবণকে তাদের নিজেদের বাড়ি বাইকে করে ড্রপ করে দিতে আসে
উজানঃ দেখি এদিকে আসো
হিয়াঃ কি
উজানঃ হেলমেট টা ধরো
হিয়াঃ ধরলাম
উজানঃ তাকাও এদিকে
হিয়াঃ তাকালাম
উজানঃ এটা শুধু একবেলা রাতে করে খাবা,,৬মাস কন্টিনিউ,,,,আর এটা দুই বেলা ১০দিন___আর এটা
হিয়াঃ এক সেকেন্ড,,ফাস্ট ওফ ওল প্রেসক্রিপশন পড়ে ঔষধ খাবার মতো বুঝ আমার আছে আর সেকেন্ডলি আমি এসব ঔষধ খাবো আপনাকে কে বলছে
উজানঃ কেউ না
হিয়াঃ তাহলে
উজানঃ আমি বলেছি তাই তুমি খেতে বাধ্য
হিয়াঃ কে আমি যে আপনার কথা শুনতে আমি বাধ্য,,আপনার বোন,গার্লফ্রেন্ড না ওয়াইফ কোনটা
উজানঃ কোনটাই না,,তুমি তো আমার শএু ভার্সিটিতে আসছোই তো আমাকে টেক্কা দিতে,,আমাকে হারিয়ে ডিবেটে জিততে,,আমার সব রেকর্ড ভাঙ্গতে,,আর তোমার মতো শএু কে আমি বানাবো আমার বউ
হিয়াঃ 😒😒
উজানঃ একবার গিয়ে আয়না দেখো পেত্নী একটা,,,আমার যে বউ হবে না সে হবে সবচাইতে সুন্দর এই ওয়াল্ডের সব গুলো মিষ্টি এক করলেও আমার মিষ্টি বউয়ের মতো কেউ মিষ্টি হতে পারবে না__আর তুমি তো কোন হু
হিয়াঃ হুমম___আচ্ছা আর কিছু বলবেন
উজানঃ এই ব্যাগে আপাতত একমাসের ঔষধ আছে আর এই ব্যাগে কিছু ফ্রুট ওগুলো নিয়মিত খাবা,,আর এটায় শ্রাবণের কিছু জিনিস,,ওগুলো ওকে গুছিয়ে দিও
হিয়াঃ আমাকে ক্ষমা করবেন আমি এগুলো নিতে পারবো না
উজানঃ নিবা না তুমি
হিয়াঃ না
উজানঃ সত্যি নিবা না
হিয়াঃ না
উজানঃ ঠিক আছে
উজান ব্যাগ গুলো রোডের পাশে হিয়ার পায়ের কাছে রেখে হিয়ার হাত থেকে হেলমেট টা নিয়ে মাথায় পড়ে নিয়ে বাইক স্টাট দেয়
হিয়াঃ ভাইয়া এটা কিন্তু ঠিক হচ্ছে না,,,দেখুন আপনি না নিলে কিন্তু এসব এভাবেই পড়ে থাকবে___এই যে শুনুন___আরে শুনুন,,ভাইয়াআআআ____যা চলে গেলো___কি করবো আমি এখন___আআআআ___এগুলো ফেলে রেখে যাবো বাহিরে,,,না না,,তাহলে এখন,,,,ধুর এতো দেখছি মহা জ্বালা
হিয়া ছটফট করতে করতে শ্রাবণকে নিয়ে বাড়িতে ঢুকে এসে ওগুলো রেখে নিজের বিছানা টা পরিষ্কার করে নিয়ে শ্রাবণ কে হাত মুখ ধুয়ে দিয়ে বিছানায় বসিয়ে দেয়,,এদিকে তো শ্রাবণের এখন ভয়ে বুক কু কু করে ডাকছে হিয়া যে তখন বললো তুই বাড়ি যা আগে তোর বিচার আছে,তাহলে কি হিয়া এখন,,
হিয়া ওর শাড়ির আঁচল টা কোমড়ে গুঁজে বড় একটা লাঠি নিয়ে এসে শ্রাবণের সামনে এসে দাঁড়িয়ে গিয়ে চোখ মুখ রাগ রাগ করে
হিয়াঃ উঠ,,,উঠ বলছি____এখন লাঠির পিটুনি না খাইতে চাইলে সোজাসুজি উওর দে ভাইয়া কে কিভাবে চিনিস তুই??কোথায় কখন কিভাবে দেখা সব এক এক করে শুরু কর😡😡