সীমাহীন_ভালোবাসার_নীড় #লেখিকাঃনওশিন আদ্রিতা #পার্টঃ১১ ,

0
400

#সীমাহীন_ভালোবাসার_নীড়
#লেখিকাঃনওশিন আদ্রিতা
#পার্টঃ১১
,
,
,
,

সেকেন্ড মিনিট ঘন্টা দিন পেরুতে সময় নেয় না তাই তো দেখতে দেখতে পুরো তিনটা মাস কেটে গেলো। সেদিন কার পর থেকে আদ্রির মনে নির এর জন্য রেসপেক্ট বেরে গেছে।মেহের এর সাথে সম্পর্কটাও অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে তারা এখন বেস্ট ফ্রেন্ডস।এই ৩ টা মাসে নির অনেক ট্রাই করেছে নিজের রাগ কমানোর কিন্তু বলেনা সিংহ তার গর্জন করা থামাতে পারে না তেমনি নির ও পারেনা মাঝেমধ্যে রাগ কন্ট্রোল করতে এই তো কিছু দিন আগের কথা। নতুন কিছু স্টাফ নেওয়া হয়েছিলো অফিসে। তার মধ্যে একজন ছিলো আবির নামের।প্রথম দেখায় আদ্রিকে তার ভালো লেগে যায় সব সময় ওর কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করে যা নির এর মেজাজ বিগরে দিতে সক্ষম ছিলো কিন্তু তবুও আদ্রির কথা ভেবে নিজের রাগ কে যথাসম্ভব দাবানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু আবির ঘুমন্ত সিংহ কে জাগানোর জন্য কথার ছোলে আদ্রির হাত ধরে ব্যাস আর কি লাগে সবার সামনে যে হাত দিয়ে আদ্রির হাত ধরেছিলো সে হাত ভেংগে ফেলেছে আর মারতে মারতে প্রায় আধমরা করে ফেলেছে বেচারা এখন সিটি হস্পিটালে ভর্তি।

আদ্রিয়ান আর নওমির ফ্রেন্ডশিপ টাও অনেক গভির হয়ে গেছে।আদ্রিয়ান নওমির বাচ্চামোকে ভালোবেসে ফেলেছে। নওমি এখন অনেকটাই সুস্থ কিন্তু পুরোপুরি সুস্থ হয় নি এখনো।
আদৌ হবে কি না সেটার ও ভরসা নায় তার।

আদ্রি আর আদ্রিয়ান দুইজনে এখন একসাথে থাকে আদ্রিয়ান সে বাড়ি ছেড়ে দিয়েছে।মিসেস খান অনেক চেষ্টা করেছিলেন ছেলেকে মানানোর কিন্তু মানে নি। এদিকে মিথিলা নির এর কাছে অপমানিত হয়েও তার লজ্জা হয়নি তাই তো সিলেটে যেয়ে সেখানকার একটা বড়লোক ছেলেকে বিয়ে করেছে ছেলে বলা চলেনা দুইটা ছেলে আছে তার তাদের ও বিয়ে হয়ে গেছে।

_______

পুরো রেজওয়ান মেনসান খুব সুন্দর করে ডেকোরেট করা হয়েছে।নির এর গ্রুপ অনেক বড় একটা ডিল ক্রেক করে সেটা কম্পিলিট ও করা হয়েছে যার ফলে চৌধুরী গ্রুপ ওফ ইন্ডাস্ট্রি এখন ঢাকার টোপ 3 ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের আসন লাভ করেছে। সে খুশি তে আজকে গ্রেন্ড সেলিব্রেশান হচ্ছে। ঢাকার সকল বিজনেস ম্যান এই পার্টিতে ইনভাইট।

আদ্রি সকালে চলে এসেছে নির এর বলাতে হাজার হোক পার্সোনাল এসিস্ট্যান্ট। আদ্রি সকাল থেকে সকল ব্যবস্থাপনা দেখছে আর নির তার আদর পাখিকে। নির এর দুই চোখ আদ্রিতেও সীমাবদ্ধ।

নিহারিকা রেজওয়ানঃআদ্রি মা (আদ্রির কাধে হাত দিয়ে)
আদ্রিঃজ্বি নানি(মুচকি হেসে)
নিহারিকাঃঅনেক কাজ করেছো বাকি কাজ এরা সামলে নিবে তুমি গোসল৷ সেরে তৈরি হয়ে নেও কেমন। (থুতনি তে হাত দিয়ে)
আদ্রিঃঠিক আছে নানি। কিন্তু আমি তো কোন রুমের কিছু জানিনা।
(মাথা নিচু করে)

নানি হেসে দিলো আদ্রির বলার ধরন দেখে। তিনি নওমিকে ডেকে ওকে নিয়ে নিজের রুমে যেতে বললো।ওদের যাওয়ার কিছুক্ষন পরেই নির নিচে এলো উপর থেকে আদ্রিকে না দেখে নিচে নেমে এসেছিলো সে।

নিহারিকাঃকি নানুভাই কাকে খুজা হচ্ছে আমার সতিন কে বুঝি(দুষ্টু হেসে)

নির মাথা চুলকে নিহারিকা বেগমের কোলে শুয়ে পরলো
নিরঃকি আর করবো বলো তো সুইটহার্ট। তোমার সতিন কে না দেখলে যে থাকা যায় না
(দুষ্টু হেসে)
নিহারিকাঃতবে রে দুষ্টু(গালে হালকা চাপড় দিয়ে)
মেয়েটার গুন আছে বলতে হবে নাহলে আমার গুমরো মুখো নাতভাইকে হাসানো কি ছোট বিষয়
নিরঃপছন্দ হয়েছে সতিন
নিহারিকাঃআমার নাতির পছন্দ খারাপ হবে নাকি যে অপছন্দ করবো অনেক মিষ্টি একদম তোর মায়ের মতো। তোর আব্বুও তোর মতোই ছিলো রাগী থমথমে স্বভাবের কিন্তু বিয়ের কয়েক মাসে পরেই আমার গুমরো মুখো ছেলেটা হালকা পাল্টাতে শুরু করলো আর তোর হওয়ার কথা শুনেই তো একদম পালটে গেলো খুব ভালোবাসতো তোদের তোরা জান ছিলি ওর

কথা গুলো বলতে বলতে চোখ বেয়ে পানি পরতে লাগলো মিসেস নিহারিকা রেজওয়ান এর।নির এর চোয়াল ও শক্ত হয়ে আসলো তার এখন ও মনে আছে সে ভয়াবহ সময়। সে তার নানা আর নানুমনির সাথে থাকলেও ফোনে সে নওমির সাথে কথা বলছিলো। হুট করে গাড়ি থামায় ফোন টা পরে যায় নওমির হাত থেকে আর সেটা গরিয়ে পরে সামনের সিটে তখনি ওর কানে আসে ওর আব্বু আর আম্মুর গলা

আব্বু বার বার আম্মু কে বলছিলো যে নওমিকে নিয়ে পালাতে নওমিকে নিয়ে পালাতে কিন্তু মিসেস চৌধুরী কোন মতেই যাবে না স্বামিকে ছাড়া

মিস্টার চৌধুরীঃএরা আমাদের না মেরে দম নিবেনা বুঝার চেষ্টা করো তুমি প্লিজ যাও আমি এদের শত্রূ তুমি না আমাকে পেলে এরা আর তোমাদের কাছে যাবে যাও।

কিন্তু মিসেস চৌধুরী যায় না মিস্টার চৌধুরী আর কোন উপায় না পেয়ে গাড়ি চালানো শুরু করে যদি ফ্যামিলিকে বাচাতে পারে কিন্তু সেটাই তার কাল হয়ে দাঁড়ায় পর পর দুইটা গুলি এসে লাগে গাড়িতে মিস্টার চৌধুরী মিসেস চৌধুরী কে বলে নওমিকে গাড়ি থেকে বের করে দিতে মিসেস চৌধুরীও তাই করে আর আদ্রিকে গাড়ি থেকে ফেলে দেয় কিন্তু এদিকে আদ্রি অনেক আগেই প্যানিক করে অজ্ঞান হয়ে গেছে ওর ছোট মস্তিষ্ক এতো চাপ নিতে পারেনি তার উপরে চলন্ত গাড়ি থেকে ফেলে দেওয়াই একটা পাথরের সাথে বাড়ি খায়।

এদিকে ছেলে আর ছেলে বউকে বাচাতে নির এর দাদা দাদী এগিয়ে আসায় ওরা গুলি মেরে দেয়। মেহের এর বাবা মা কেও নেরে ফেলে যাতে তারা কিছু বলতে না পারে কাউকে কিন্তু আড়াল থেকে মেহের এর ড্রাইভার সব দেখে নেই সে আগেই পালিয়ে লুকায় ছিলো ঝোপের আড়ালে।

তারাই ইনফোর্ম করে নির এর নানা নানিকে ওইদিকে ছোট নির এর অবস্থাও খারাপ হয়ে যায় ছোট মস্তিষ্কে এতো চাপ নিতে পারেনা নিজের কানে বাবা মায়ের আন্ত্য চিৎকার ছোট নির কে অনেক আঘাত করে। প্রায় বছর পেরিয়ে যায় নির ওরকুম নিশ্চুপ থাকে। কারো সাথে একটা টু শব্দ করে না।

_______

আয়নার সামনে দাঁড়ায়ে রেডি হচ্ছে নওমি কিন্তু কিছুই তার ভালো লাগছেনা। সব ড্রেস একবার করে নিজের উপর ট্রাই করছে আর বিছানায় ফেলছে।

আদ্রি বের হয়ে নওমির এই সব দেখে নিজের ব্যাগ থেকে একটা শপিং ব্যাগ বের করে নওমির সামনে ধরে নওমি প্রশ্নবোধক চিহ্নে আদ্রির দিকে তাকায়

আদ্রিঃআপনার ডাক্তার ফ্রেন্ড পাঠায়েছে আপনার জন্য
নওমিঃকিন্তু ভাইয়াতো আমাকে নিউ ড্রেস কিনে দিয়েছে কিন্তু ওইটা আমার পছন্দ হয়নি কিন্তু না পরলে ভাইয়ার যদি খারাপ লাগে।
আদ্রিঃআমি তোমার ভাইয়াকে বুঝাবোনি তুমি এখন এটা দেখো তো পছন্দ হয়েছে কি না আমার ভাইয়ার পছন্দ কিন্তু অনেক সুন্দর
নওমিঃদেখি(ব্যাগ থেকে ড্রেস টা বের করলো)

নওমিঃওয়াও আপু এটা খুব সুন্দর শাড়ি টাইপ আমার খুব ভালো লেগেছে এতোগুলা থ্যাংক ইউ
(আদ্রিকে জরায়ে ধরে)
আদ্রিঃআমাকে না আমার ভাইকে বলো আমি না ড্রেস টা সে দিয়েছে
(নওমিকে ছাড়ায়ে)

নওমি খানিকটা লজ্জা পেলো। তারপর নিজেই অবাক হলো যে সে লজ্জা পাচ্ছে কই আগে তো এমন অনুভূতি হতোনা এখন কেন হচ্ছে এমন।

আদ্রি নওমিকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই একটা সার্ভেন্ট এসে ডাক দেয় আদ্রিকে

সার্ভেন্টঃম্যাম নির স্যার আপনাকে ডাকছেন
আদ্রিঃআচ্ছা কিন্তু উনার রুম কোন দিকে
সার্ভেন্টঃআমার সাথে আসুন ম্যাম

আদ্রি সম্মতি জানিয়ে সার্ভেন্ট এর পিছনে হাটা ধরে
আদ্রিকে রুম দেখিয়ে সার্ভেন্ট নিচে চলে যায়।
আদ্রি দুইবার নক করে কিন্তু সারা শব্দ পায়না পুনোরায় নক করতেই দরজা খুলে যায়। হঠাৎ এই ভাবে খুলে যায় হচকচিয়ে যায় আদ্রি।

আদ্রিকে ওইখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে এক বলিষ্ঠ হাত এসে আদ্রিকে ভিতরে ঢুকিয়ে ডোর লোক করে দেয়। পুরো রুম অন্ধকার হয়ে আছে চাঁদের আলোয় যেইটুকু আলো আসছে তাতে আদ্রি শুধু নির এর লাল চোখ জোরা দেখতে পেলো যে চোখে সে শুধু নিজের সর্বনাশ ছাড়া কিছুই দেখতে সক্ষম হলোনা।হঠাৎ করে ঘাড়ে কারো ঠোঁটের উষ্ণ প্রশ্ন আদ্রির অন্তর কাপাতে সফল হলো।।

চলবে!!!!!
একটু ব্যস্ত থাকায় রি চেক করা হয়নি ভুল ত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি!!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here