16-20
#প্রেমঘোর#১৬#
💜💜
Writer:Nargis Sultana Ripa.
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
…প্রাপ্তি দৌঁড়ে আসে…
…”এই এই…পিক নেন আমাদের”(ফটোগ্রাফারকে উদ্দশ্যকে করে)(প্রাপ্তি)(সাদাদ আর নৌশিনের মাঝখানে দাঁড়িয়ে)
….তাই হলো…ফটোগ্রাফার ওদের কিছু পিক তুলে নিলো…
“ওকে..তোমরা বসো.. আমি যাই…সবার সাথে পিক হয়ে গিয়েছিলো তোমাদের সাথেই বাকী ছিলো…তাই তুলে নিলাম”
“হুম…তা তোমায় তো দেখায় যাচ্ছে না…কোথায় কি করছো??”(নৌশিন)
…”আমি একটু ঐ দিক টায় ছিলাম ভাবী তাই হয়তো দেখতে পাও নি…আমি যাই হ্যাঁ??খুব খুদা পেয়েছো-এসে যাবত খাই নু কিছু..”(প্রাপ্তি)
“বলিস কি!এক ঘন্টা হয়ে গেলো তুই না খেয়েই আছিস!!”(সাদাদ)
“ওহ..ভাইয়া…জোক করো না…সত্যিই খাই নি”
“আচ্ছা বাবা..তুমি যাও”(নৌশিন)
“এর যে কত খাবার পেটে ডুকে আল্লাহ ই জানে…”(সাদাদ)
“আরে।।।কত খাবার মানে.. খুদা লাগলে খাবে না! আর ও তো একবারে অনেক টা খায় না…এখন খেয়ে খুব বেশি একটু জোস…পরে আবার”(নৌশিন)
“হুম..এজন্যই বেশি মোটা হচ্ছে না…খাবার পরিমাণ বেশি হলে ফুলতো সিউর”(সাদাদ)
..”এই…”(নৌশিন)।।।।
আবার দাগের কথাটা বলতে চাইলো…বাট পারলো না…..সাদাদের এক বন্ধু এসে জড়িয়ে ধরলো সাদাদকে”আরে দোস্ত….কি অবস্থা তোর??অবশেষে আমাদের ছোট্ট বোন টাকে??”(সাদাদের ফ্রেন্ড)(সুমন)
“আরে….কি আর করার… “(সাদাদ)
“কবে আসলি??..আমি তে ভেবেছি তুই আসতে পারবি না”(সাদাদ)
“আর বলিস না…প্রথমে আমিও ভেবেছিলাম তোর মতো।।।বাট পরে ভাবলাম কাজের জন্য বিয়ে টা মিস করলাম এখন এটাও যদি মিস করি তাহলে ঠিক জমবে না…আফটার অল বন্ধুর বিয়ে বলে কথা…তাই সব কাজ ফেলে চলে এলাম-আবার পরশু গোয়িং টু কলকাতা”(সুমন)
“আপনি কলকাতা থেকে আসলেন ভাইয়া??”(নৌশিন)
“হ্যাঁ রে পুচকি…আর শোন বন্ধর বউ বলে আমি কিন্তু তোকে ভাবী বলে ডাকছি না…আগে যেমন তুই তোকারি করতাম তেমন টাই থাকবে”(সুমন)
….নৌশিন মুচকি হেঁসে…”হুম…আপনি আমায় সেভাবে ডাকলেই আমি বেশি খুশি হবো…ভাই-বোন তো আমরা তাই না??”(নৌশিন)
“রাইট…এই নে এটা তোর ভাইয়ের পক্ষ থেকে তোর”(সুমন)
“এ মা…আবার গহনা…আমি এতো গহনা কোথায় রাখবো ভাবছি☺”(নৌশিন)
“রাখিস মাটির হাড়িতে ভরে মাটির নিচে…😃😃😃”(সুমন)
“আপনিও না ভাইয়া☺☺!”(নৌশিন)
…সাদাদের আরও অনেক ফ্রেন্ড রাও এসে যায়…অনেক দিন পরে দেখা হওয়ায় সবাই সবার সাথে আগের মতো মেতে উঠেছে…আসলে পুরোনো বন্ধুদের একসাথে কাছে পেলে যা হয় আর কি…নৌশিন শুধু ভাবছে দাগ টার কথা….কি করবে এখন সাদাকে কে তো আর ডাকা যাবে না এখন….আশে পাশে তাঁকাতে থাকে-বলার মতো কাউকে যদি পাওয়া যায়!!…..
নাহ্ আশে পাশে না আছে সাদাদের আপু…না আছে ভাবী..নৌশিনের ভাবী টাও নেই-থাকলে বলা যেতো,হেল্প করতো ওরা নিশ্চয়…বাট এখন কি হবে সেটা ভেবে নৌশিন অস্থির……………………
“না আশে পাশে কথাটা বলার মতো কাউকে ই দেখছি…একটু পরেই সাদাদের সব বন্ধুরা আমার সাথে কথা বলতে তো আসবেই দাগ টা যদি ভেসে ওঠে!আল্লাহ্,বাবার দাওয়াত দেওয়া গেস্টদেরও আসার সময় হয়ে যাচ্ছে…কি হবে??”(মনে মনে ভাবতে লাগলো নৌশিন)
…ভাবতে ভাবতে চোখ পড়ে যায় ওর মায়ের দিকে….ওর মা অনেকক্ষণ ধরে লক্ষ্য করছে-মেয়ে যেন একটু চিন্তিত কিন্তু বুঝতে পারে নি কেন’তিনি ভেবেছেন এতো লোকের মাঝে এই সাজে একটু হয়তো আনইজি ফিল করছে ওনার মেয়ে সেজন্য এমন দেখাচ্ছে’তাই কাছে যায় নি….কিন্তু নৌশিন মাকে দেখা মাত্র ই আর কিছু ভাবলো না ইশারা করে নিজের কাছে আসতে বললো……”যাই হোক..মাকে তো বলা যাবে….যতই লজ্জা লাগুক মা কেই বলতে হবে-তা না হলে সবার সামনে সামনে লজ্জায় মাথা কাটা যাবে…বিশেষ করে ওর বাবার গেস্ট রা কি ভাববেন’ছিঃ ছিঃ…তার চেয়ে মায়ের কাছেই হেল্প চাওয়াটাই বেটার…মা তো আর ভাবী বা আপুর মতো মজা করবে না এটা নিয়ে…হুম!!মা কে বলাই বেটার হবে..”(মনে মনে ভাবতে লাগলো নৌশিন)
…নৌশিনের মা এসে গেলো…নৌশিনের পাশে গিয়ে আস্তে করে বলে”কি রে কি হয়েছে??”(আস্তে করে বলেন কারণ ওনি জানেন কোনো সমস্যা ছাড়া ওনার মেয়ে এতটা ছটফট করবে না কোনোদিন আর এভাবে ইশারা করেও ডাকবে না…..)
…নৌশিন মাকে উপস্থিত পেয়ে-চিন্তা থেকে মুক্তি পেয়ে মুচকি হাঁসে…..
“মা একটা প্রবলেম হয়েছে আমার”(নৌশিনও কথা টা এতো আস্তে বললো যেন ওর মা ছাড়া আর কেউ শোনতে না পারে)…নৌশিনের মা নৌশিনের আরও কাছে যায়…”কি হয়েছে.???বল..”
…নৌশিন ওঠে দাঁড়িয়ে মায়ের হাতটা ধরে অন্য দিকে হাঁটা শুরু করে…পাশ থেকে কেউ বলে ওঠে”কোথায় যাচ্ছেন ভাবী??”
….নৌশিন চিনে না মেয়ে টা কে…তবুও বলে”একটু…জাস্ট দু মিনিট আসছি”….সাদাদও এই কথা টা শোনতে পায় নৌশিনের…নৌশিনের দিকে তাঁকায় সাদাদ…ভ্রু কুঁচকে জানতে চায় কি হয়েছে??….নৌশিন আঙুল দিয়ে ইশারা করে দু মিনিটে আসছে আর তেমন কিছু হয় নি….
….নৌশিন ওর মাকে নিয়ে ওয়াশ রোমের দিকে চলে যায়…..”কি হয়েছে…ওয়াশরোমে যাবি??”(নৌশিনের মা)
“না..মা”(নৌশিন মাথা নিচু করে রাখে)
..”তাহলে…?আর মুখ টা এমন করে রেখেছিস কেন???”
…নৌশিন মাথা তুলে ওর মায়ের দিকে তাঁকায়-কথা টা কিভাবে বলবে বুঝতে পারছে না…মা হোক তবু তো কেমন লজ্জার কথা….ভাবতেই কেমন একটা লাগছে মেয়েটার….
…নৌশিন কিছু না বলে গলার যে জায়গা টায় দাগ সে জায়গা টায় হাত দেয়….”মা….লোক এট মি…”
….নৌশিনের মা খেয়াল করে জায়গা টাই নৌশিন আলাদা কিছু লাগিয়েছে আর সেটা ওঠে গেছে অনেকটা…তাই ওনি হাত থাকা রোমাল টা দিয়ে জায়গাটা একটু মুছে দেন…মুছে দিতেই দাগটা আবার কালো স্শপ্ট বুজা গেলো….নৌশিনের মায়ের আর বুঝতে বাকী রইলো না-কিসের দাগ এটা,আর ওনার মেয়ে কেন এতো চিন্তা করছিলো…..মেয়ের কান্ড দেখে মুচকি হেঁসে ফেললেন রেহানা বেগম….
“মা……”(নৌশন মায়ের হাঁসি দেখে লজ্জায় পেয়ে যায়-ও বুজতে পারে ওর মা সব বুজে গেছে)……রেহানা বেগম হাঁসি থামায়…
“বোকা মেয়ে….ঠিক করে আসবি না??এভাবে কেউ অনুষ্ঠানে আসে”(রেহানা বেগম)
…”মা,আমি যেটা জানি সেটা করেছি….বাট জানতাম এটা ঘন্টা খানেক থাকবে তাই তোমাকে ডাকলাম…”(মাথা নিচু করে মাকে কথাগুলো বলে নৌশিন)
“হয়েছে বোকা মেয়ে আর বড় হবি না তুই….আর একটা গহনা পড়ে আসলেই তো ডেকে যতো স্পট টা”….বলে নিজের গলার হার টা খুলে নৌশিনের গলায় একটু উপরের দিকে পড়িয়ে দেয়”দেখি ঠিক করে লাগাতে দে….”
“ওহ্ আবার আরেক টা গয়না…এমনি ই তো দাঁড়াতে পারছি না এতো কিছু নিয়ে…তুমি আবার কি পরাচ্ছো…”(নৌশিন)
“চুপ কর…গাঁধি…কমন সেন্স থাকলে নিজে থেকেই পড়ে আসতি হাবি-জাবি লাগতে যেতিস না…”…..হার টা ভালো ভাবে সেট করে দেন…এবার দাগ টা আর দেখা যাচ্ছে না….
“নে…এবার ঠিক আছে…☺☺”
“মা…এখন আবার হাঁসছো তো তুমি??”
“ওকে…হাঁসবো না…যা এখন-না হলে সবাই অন্য কিছু ভাববে”
“হুম…চলো..”
…রেহানা বেগম মেয়ের কপালে আলতো করে চুমু আঁকেন”দোয়া করি সারা জীবন এমন ভাবেই স্বামী সোহাগী হয়ে থাকুক আমার মেয়েটা”…নৌশিন আরও লজ্জায় পড়ে যায়….”মা…”(জড়িয়ে ধরে নৌশিন ওর মাকে)
…”আচ্ছা চল চল..”
“চলো☺☺”….
নৌশিনকে নিজের জায়গায় বসেই দিয়ে রেহানা বেগম নৌশিনের শাশুড়ির কাছে গিয়ে গল্পগুজব করতে থাকে………..এদিকে সব গেস্ট রা আসতে শুরু করে……সাদাদ অনেকক্ষণ হয়ো গেলো ব্যস্ত হয়ে পড়েছে সবার সাথে কথা বলতে বলতে…নৌশিনের একটু বোর ফিল হচ্ছে সাদাদকে ছাড়া….সাদাদের বাবার ডাকে সাদাদ আবার নৌশিনের পাশে এসে বসে-আর ওর ফেন্ডরা সেন্কস নিতে থাকে…..এবার নৌশিন একটু শান্তি পায়।।।।সাদাদের বাবা ওনার বন্ধুদের নিজের ছোট ছেলে আর বউকো পরিচয় করিয়ে দেয়…..
রাত নয় টা বেজে গেছে প্রায়….
সবাইকে ডিনারের জন্য এনাউন্স করেন সাদাদের কাকা(প্রাপ্তির বাবা)…………….
#প্রেমঘোর#১৭#
💜💜
Writer:Nargis Sultana Ripa
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
….সবাই ডিনার করতে বসে…নৌশিনের ফ্রেন্ডরাও ডিনার করছে……আর নিজেদের মধ্যে গল্প করতে থাকে….
“যাই বলিস সাদাদ ভাই আর নৌশিনকে কিন্তু হেব্বি মানিয়েছে……”(আশা)(
“ঠিক তাই…এমনি ই তো আমাদের নৌশিন টা একদম ডলের মতো আর আজ যেমন সেজেছে সাদাদ ভাইয়া তো আবারও প্রেমে পড়ে যাবে….”(রিয়া)
“আচ্ছা,আমি সব বুঝলাম..বাট একটা জিনিস বুজলাম না…”(মুগ্ধ)
“কি বুজলে না তুমি??”(তাহ্না)(মুগ্ধের জি এফ)
“নৌশিনেরর রিশেপশন,ঠিক আছে ও এভাবে সেজেছে!গুড!বাট তোরা সাজলি কেন??তোদের কি বিয়ে টিয়ে নাকি…..আচ্ছা এটাও মানলাম তোদের ফ্রেন্ডের বিয়ে তোরা সাজলি…বাট এই যে এত এত সাদা মেয়ে আসচ্ছে এখানে ওরা কেন সাজছে???এই তোদের সাদা সাদা মেয়েদের ব্যাপার টা আমার মাথায় ডুকে না….”(মুগ্ধ)
“এই…তুমি কি সাদা সাদা করছো…আর নেই পচ্ছন্দ করার মতো মেয়ে তুমি কি করে জানলে???তার মানে তুমি এখানে এসে মেয়ে দেখছো??😡😡”(তাহ্না)(মুগ্ধর জিএফ)
“তাহ্না তুই এখন বুঝলি??আমি তো সেই কখন থেকে দেখছি এই মুগ্ধের নজর টা তোর থেকে অন্য মেয়েদের উপর বেশি..☺☺”(অনামিকা)
“কিহ্…দেখ তোর যত মেয়ে দেখার ইচ্ছা দেখ…আমার সাথে কোনো দিন কোনো কথা বললে তোর মাথা ফাটিয়ে দিবো আমি”(রাগে গিজ গিজ করে তাহ্না ওঠে চলে যায়)
“ঐ তাহ্না দাড়াও…..”(মুগ্ধও পেছনে ছোটতে থাকে)
“দিলি তো খেপিয়ে মেয়েটাকে….বেচারা মুগ্ধ এখন বিপদে পড়বে…”(রিয়া)
“আরে যেখানে রাগ বেশি সেখানে রোমান্স বেশি রে বুদ্ধু…রাগ উঠিয়ে দিয়ে ভালোই করেছি”(অনামিকা)
“খাবি তোরা নাকি বক বক করে যাবি??”(হৃদয়)
“আরে…দাড়া মুগ্ধ আসুক তাহ্না কে নিয়ে…পড়ে শুরু করি…”(অনামিকা)
“হুম সেটাই বেটার….ওয়েট করি…..তাহ্নার রাগ ভাঙাতে মুগ্ধর দশ মিনিটও লাগবে না…ততক্ষণ ওয়েট করাই যায়..”(রিয়া)
“আমি এই সময় টাতে তখন যে পিক গুলো আপ করলাম দেখতে সেগুলো দেখি….”(আশা)
….আশা পিক দেখছে….আর ঐ দিকে তাহ্না রাগে সেন্টারের বাইরে চলে যায়….পেছন পেছন মুগ্ধও…..
“কি হলো…দাঁড়াতে বলছি না তোমায়…..”(মুগ্ধ)
…তাহ্না হেঁটেই চলছে কোনো কথা শুনছে না..মুগ্ধ দৌঁড়ে গিয়ে তাহ্নার হাতটা ধরে ফেলে……
“ছাড় আমায়…যা তোর সব সাদা সাদা মেয়েদের দেখ…রিশেপশনে কত মেয়ে আছে তো…আমার কাছে কেন আছসিস??”(তাহ্না)
“একটা থাপ্পর দিয়ে না….বেশি বুজো নাকি??”(মুগ্ধ)
“আমি কি করলাম…তুমিই তো বললে😭😭😭”(তাহ্না)
“এই যে…এতক্ষণ রাগে ফুলে বেলুন হয়ে গিয়েছিলা…আর এখন একটু ধমক দিলাম কি দিলাম না বেলুন ফেঁটে জল বের হচ্ছে”(মুগ্ধ)
“তুমি মেয়ে দের দেখো😭😭😭”(তাহ্না)
“কান্না বন্ধ করো……”(মুগ্ধ)
“শয়তান,কুত্তা হারামি,তোর জন্য আমি সারা দিন কত কষ্ট করে কত্ত কত্ত ফ্যাসপেক নিলাম….আর তারপর আসার সময় কত কি করে সাজলাম…তবু তুই অন্য মেয়েদের দেখলি এইভাবে”(তাহ্না)(কান্না করতে করতে)
“ওরে….আমি তো দেখি ই নি…আসলে কি বলো তো!! সাদাদ ভাইয়ের আপুটা কে দেখে না বেশ ভালোবাসতে ইচ্ছা করছিলো…দেখে তো বুজা যাচ্চিলো না বিয়ে হয়ে গেছে…..তারপর আরও কয়েকটা দেখলাম বেশ সুন্দর বাট যাদেরই ভালো লাগলো আমার ওদের সবার হয় বিএফ না হয় বর সাথে এসেছিলো….তোমাকে মে বি সেই সব মেয়েদের চেয়ে কম সুন্দর লাগছিলো-তাই চোখে পড়ো নি”(মুদ্ধ সারা টা ক্ষণ তাহ্না কেই দেখেছে…তবুও ক্ষেপানো জন্য বলছে এইসব)
“এতো খারাপ তুমি…আমাকে এতোই খারাপ লাগছে এখন যে চোখেই পড়ি না আমি….!!ছাড়ো যেতে দাও….তবে তোমার কোনো দিন ভালো হবে না…তোমার ঘরের বউ আস্ত সাতচুন্নি হবে এই বলে দিলাম”(তাহ্না)
“হলে হবে তাকেই মন প্রাণ দিয়ে ভালবাসবো…আদর করবো…আর যাই হোক আমার বাচ্চার মা হবে মেয়েটা ওকে তো ভালবাসতেই হবে….”
“😰😰😰😰😰😰ছাড় তুই হারামি…এই যখন মনে ছিলো আমায় কেন প্রেমঘোরে আটকে দিলি..বল????তুই তো অন্য মেয়েকে নিয়ে সুখে সংসার করবি-বাচ্চা হওয়াবি??আমার পেট খালি থাকবে কেন বল????আমার এতো বড় সর্বনাশ করতে পারলি তুই???”
“এই আমি কবে তোমার সর্বনাশ করলাম???আমি তো কোনোদিন তোমাকে তেমন কিছু করি নি…”
“করিস নি মানে???তুই আমার কত রাতের ঘুম হারাম করেছিস…আমি তোর জন্য কত স্বপ্ন বুনে রেখেছিলাম…কত আশা করেছিলাম আমার এখানে(পেটে হাত দিয়ে)তোর বাচ্চা থাকবে…আর তুই কিনা তোর বউয়ের কথা বলছিস….??ওকে আদর করবি???আমার কপালে এটা ছিলো?😭😲😲নৌশিন কত ভাগ্যবান যাকে ভালবেসেছে ওর বাচ্চার মা হবে…আর আমি যাকে সবটা দিয়ে ভালোবাসলাম তার বাচ্চার মা হওয়া হবে কিনা অন্য মেয়ে….আমি সারাটা জীবন কি করে একা একা বাঁচবো???এটা কি করলি তুই আমার সাথে??কি অপরাধ ছিলো আমার???একটু শ্যামা?কিন্তু ভালো তো বেসেছিলাম অনেক😭😭😭”(তাহ্না)
“আল্লাহ্…রাগে কান্না করলে এত্ত কিউট লাগে…ইশ!!!!”………..হাতটা টান দিয়ে তাহ্নাকে আলো থেকে সরিয়ে নেন মুগ্ধ…তাহ্না কিছু বলার আগেই হাতটা ছেড়ে দিয়ে কমড়ে হাত দিয়ে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নেন….ঘাড়ে হাত দিয়ে মুখটা কাছে আনে ঠোঁট ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়…..তাহ্না ছটফট করতে থাকে…মুগ্ধ থামলো তো….পাগলের মতো কিস করে করতে থাকে তাহ্নার ঠোঁটে-কামড়ে ব্লাশিং করতে থাকে-তাহ্নার দম বন্ধ হয়ে আসছে প্রায়-মুগ্ধ তাহ্নার লেহেঙ্গার উপরের পার্ট টা আরও উপরে তুলে নেন-যেন পেটে হাত দিয়ে পারে…তাহ্না তখনও ছটফট করতে থাকে…মুগ্ধ কমড় থেকে পেটের দিকে ব্লাশিং করতে থাকে….নাভীতে আলতো করে ছুয়ে দিচ্ছে….ঠোঁট চুষে নিচ্ছে-তাহ্নার ছটফটনী কমে গেছে একদম এতক্ষণ মুগ্ধকে সরানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়…মুগ্ধের আদরে হারিয়ে গেছে একমুহুর্তে-শিউরে ওঠে মুগ্ধের ছোঁয়ায়…আকড়ে ধরে মুগ্ধের শার্ট….মুগ্ধ ঠোঁট সরিয়ে নেয়-গালে গলায় কিস করতে থাকে…তাহ্নার শ্বাস এতটাই দ্রুত হয়ে গেছে মুগ্ধ আরও উত্তেজিত হয়ে যায়…তাহ্নার ঘাড়ে নাক ডুবিয়ে দেয়-ইচ্ছে করেই তাহ্নার ঘারে নিজের খোচা খোচা দাড়ি জোরে জোরে ঘসতে থাকে….তাহ্নার সব রাগ কোথায় উবে গেলো….হারিয়ে গেলো কোথায় সে নিজেই….মুগ্ধ তাহ্নার ঘারে আরও খোচা দিতে থাকে…….”উহু……লাগছে”(অস্ফট স্বরে বলে উঠে তাহ্না)
মুগ্ধ এবার তাহ্নার গালে দাড়ি ঘসে দেয়…..”উহু….”(আবারও তাহ্নার অস্পট স্বর)……তাহ্না আর পারছে না….শক্ত করে জড়িয়ে ধরে মুগ্ধকে…মুগ্ধও জড়িয়ে নেয় খুব শক্ত করে…এতটাই কাছে দুজন একসুতা পরিমাণ ফাঁকা নেই….দুজনের বুকের স্পন্দন দুজনে অনুভব করতে পারছে…..এতক্ষণ হয়ে যাচ্ছে দুজন একইভাবে জড়িয়ে আছে….আরও গাড়ি পার্কিং এর শব্দে ঘোর কাটে তাহ্নার…মুগ্ধকে ছেড়ে দিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াতে চায় বাট পারলো না কারণ মুগ্ধ এখনো তাহ্নাতেই ডুবে আছে….তাহ্না হালকা করে ধাক্কা দেয় মুগ্ধকে সরে যাওয়ার জন্য-তাহ্নারও যে সরে যেতে ইচ্ছা করছে না-সারাজীবন এভাবে আটকে থাকতে ইচ্ছা করছে ওর-কিন্তু ওরা যে অন্য কারও রিশেপশনে এসেছে…..”কি হলো…ছাড়ো…”(তাহ্না)
“না….”(মুগ্ধ আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে-চুলের গন্ধ নিতে শুরু করে)….কিভাবে ছাড়ানো যায় ওকে…একটু পরেই তো গেস্ট রা বেরুতে শুরু করবে…উপায় না পেয়ে চিমটি কাটে মুগ্ধের হাতে….”সরো….ছড়ো এবার…”(তাহ্না)
….মেয়ে মানুষের নখ-চিমটি কি কম জোড়ে লাগছে নাকি”!!আর তাহ্না ইচ্ছে করেও আরও জোড়ে দিয়েছে…..মুগ্ধর এবার ছাড়তে বাদ্ধ হয়……”ইশ…..কি হলো এট??”
“যা হওয়ার তাই হলো…কখন থেকে ছাড়তে বলছি…কথা কানে যায় না?”(তাহ্না)
“না যায় না…পেট নাকি খালি থাকবে.???দিবো পেটে কিছু….(চোখ টিপ দিয়ে)(কমড়ে হাত দিয়ে আবারও কাছে নেয়)
…এক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে তাহ্নার মুখের দিকে…তাহ্না মুগ্ধের চোখে আর চোখ রাখতে পারছে না-লজ্জায় রাঙা হয়ে গেছে একদম…নিচের দিকে তাঁকিয়ে”ইশ!!কি হচ্ছে??ছাড়ো….কেউ এসে যাবে….”
“এদিকে কেউ আসবে না…করবো কিছু?পেট খালি থাকবে বলে তো অনেক কান্না কাটি করলে একটু আগে….আমার কোনো প্রবলেম নেই দিয়ে দিতে পারি আমি….পেট মে বি আর খালি থাকবে না….রাজি??”(মুচকি হেঁসে)
….তাহ্না লজ্জায় মাটির সাথে মিশে যাচ্ছে যেন….”প্লিজ ছাড়ো….”
“কেন??যাকে ভালোবেসেছো তার বাচ্চা চাই তো তোমার…আমিও তো ভালোবাসি-ভালোবেসে করে দিই শুভ কাজটা???”(তাহ্না কে লজ্জায় ফেলবেই ছেলেটা-রাগ কিভাবে থাকে সেটাই দেখবে)
“ছিঃ মুগ্ধ…কি বলছো এসব…”(তাহ্না চোখ বন্ধ করে ফেলেছে অনেক আগেই-খুলতে পারছে না লজ্জায়…কি সব বলে চলছে মুগ্ধ)……..
“ও…আমি বলেই ছিঃ,তাই না??আর তুমি যে বলছিলে??”(মুগ্ধ)
“আমি তো আমার স্বপ্নগুলোর কথা বলেছি শুধু….”
“আমি তো স্বপ্ন পূরণ করার কথাই বললাম….”
“এখন তো না….বিয়ের পরের স্বপ্ন এটা….তুমি তো….”
“আমি তো…কি??”
“অন্য মেয়ে পেটে বাচ্চা দেওয়ার কথা বললা…তোমার বউকে আদর করবে,ভালোবাসবে-তোমার বাচ্চাও নাকি ওর পেটেই থাকবে…”
“হুম…যা সত্যি তাই বলেছি…”
“কিহ্……”(কাঁদো গলায়)
“এখন কাঁদলে না এই হোটেলের কোনো একটা রোমে তালা দিয়ে রেখে যাবো-সারা রাত আটকে থাকবা”
“তো কি বলো তুমি??”
“তো তোমার কি এখনি বাচ্চার মা হওয়ার শখ নাকি??”
“এখন কি করে হবো??”
“আমি করে দিবো…”
“এই না…বিয়ের পর…..”
“তো বিয়ের পর পর যে করছো খালি???তাহলে আমি বউয়ের পেটে বাচ্চা দিবো বললাম তাতে রাগ আর কান্নার কোনো মানে আছে নাকি???বিয়ের পর তো আপনি আমার বউ ই হবেন….তো আমি আমার বউকে বাচ্চা দিবো তখন….”
…নৌশিন চোখ খুলে অট্ট হাঁসি দেয়….মুগ্ধর দিকে তাকিয়ে “এই তার মানে তুমি আমার কথায় বলছিলে???☺☺”
“এটা বুজতে এতো সময় লাগে!!! আল্লাহ সারা জীবন সব কিছু এভাবে বুজাতে হবে!!!আগেই রাগা রাগি না করে মাথা খাটানো শিখবা কবে তুমি???”
“সারা জীবনেও শিখবো না…আর আমি কিন্তু প্রথমে এই কথার জন্য রাগ করি নি-তুমি অন্য মেয়ে দেখছো তাই রাগ করেছিলাম বাট পরে এই কথায় আরও বেশি…”
“অন্য মেয়ে দেখছি ই তো…বলছি ই তো সামনে থাকলে দেখবো না….চোখ বন্ধ করে রাখবো নাকি…আর আমি ইচ্ছা করেই জোড়া জোড়া দের দেখছি…কেমন করে বউকে কি করে একটু দেখছিলাম বাট একা কোনো মেয়ের দিকে ইচ্ছা করে দিই নি…কারণ আমার তাহ্না বুড়ি যে আমার নয়ন আটকে রেখেছিলো….যাদের দেখছি ওরা জাস্টট চোখে পড়েছিলো কারণ আমি তো চোখ বন্ধ করে রাখতে পারবো না…কিন্তু তোমার দিকে শুধু চোখ পড়ে নি-অনুভবে আটকে নিয়েছিলাম তোমায়…”
“তাহলে কেন শুধু শুধু রাগও আমায়???”
“আমি কোথায় রাগালাম…নিজেই তো অনামিকার কথা শোনে রেগে গেলো…পরে কান্না শুরু…জোশ লাগে আমার তোমার রাগী চোখে কান্না দেখলে…খুব আদর করে ভুলিয়ে দিতে ইচ্ছে হয়-তাই আমি আরও বেশি রাগিয়ে দিলাম যেন সেই লুক টা দেখে পাগল হয়ে যাই আর আদর করতে পারি….”
“ও….এই কথা….চালাক খুব তাই না…”
“হুম চালাক-তুমি তো বোকা তাই”
“হয়েছে হয়েছে…চলো এবার…ক্ষুদা লাগছে”(তাহ্না)
“কত কিছু দিলাম তবুও খাবা এখন??”(মুগ্ধ)
“হুম….এগুলোতে পেট ভরে নি… মন ভরেছে এখন বন্ধুর রিশেপশনে খেয়ে পেট ভরাবো আমি সিউর সব কয়টা ওয়েট করছে আমাদের জন্য”
“ওকে…ম্যাম চলুন…..”
“দাড়াও…একটু ঠিক ঠাক হও…কি করলাম এতক্ষণ এমন লাল হয়ে ভেতরে গেলে লজ্জায় পরে যাবে…লেহেঙ্গাটা ঠিক করো একটু উঠে আছে একটু…মুখটা মুছো ওয়াটার প্যাক দেখছিলাম তো ব্যাগে-মুখটা তো লাল একদম…”(মুগ্ধ)
…”ইইইই…”(তাড়াতাড়ি করে সব ঠিক ঠাক করে নেয় তাহ্না)
….”বাঁচালে….”(তাহ্না)
“হুম…বাঁচাতে তো হবেই…আমি ই যে মারবো😎😎”
“ধ্যাত চলো তো….”
…..দুজনে ভেতরে চলে যায়….
!
“আরে…শেষ হলো রাগ অভিমান তোদের….”(রিয়া)
“কি বলে মেয়ে??রাগ নয় বলো রোমান্স….”(অনামিকা)
…সব ফ্রেন্ডরা হেঁসে উড়িয়ে দিচ্ছে একদম…
“এই অনেক হয়েছে…চল প্লিজ খাই এখন… আর সহ্য হচ্ছে না এতো ভালো খাবার সামনে নিয়ে আর বসে থাকতে পারছি না”(আশা)
…….সবাই ডিনার শুরু করে……
….আর অপর দিকে সাদাদ আর নৌশিন বসে থেকে ক্লান্ত… বিশেষ করে নৌশিন………………………….
#প্রেমঘোর#১৮#
💜💜
Writer:Nargis Sultana Ripa.
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
“মা নৌশিনের মুখ টা দেখো শুকিয়ে গেছে একদম….ওর খারাপ লাগছে খুব মে বি,বাট বলছে না…আমি ওদেরকে ডিনার করে নিতে বলি??গেস্টরা তো সব চলে যাচ্ছে…বাবা,তুমি,কাকা তো আছো বাকীদের বিদায় জানাও…”(সাদাদের ভাবী)
“হুম…শুকিবে না মুখ….সেই কখন থেকে বসে আছে এখন প্রায় এগারো টা বাজে আমারি তো খারাপ লাগছে……তুমি যাও,নীলয়,নীলা আর জামাইকে সাথে নিয়ে ডিনার করে নাও সাদাদ আর নৌশিনেরর সাথে…”(সাদাদের মা)
“ওকে…মা,অরূপ কিন্তু ছোট কাকাইয়ের সাথে দেখো ওকে…আমি যাচ্ছি”
“হুম…যাও…..আর ওদের ডিনার শেষে কি সরাসরি নৌশিনের বাড়িতে পাঠাবে না কি বাসায় গিয়ে ফ্রেস হয়ে তারপর??আমি তো চেয়েছিলাম যপন কাল সকালে পাঠাতে…নৌশিনের বাবা এত করে বললো তাই আজি রাজি হলাম…মেয়েকে বিয়ে দিয়ে নৌশিনের বাবা একদম দিশেহারা হওয়ার মতো-একমাত্র মেয়ে বলে কথা…”
“ঠিক বলছো ভদ্রলোক মেয়েকে এখানে এসে না দেখতে পেয়ে মুখ টা কালো করে ফেলেছিলো-পরে মেয়েকে আসতে দেখে যা খুশি হলো!….আর এখান থেকেই যাবে….এখন ডিনার করে বাসায় গিয়ে ফ্রেস হয়ে-নৌশিনের বাসায় পৌঁছাতে একটার মতো বাজবে….”
“আচ্ছা যা ভালো মনে করে তুমি…”
…….সাদাদের মায়ের খুব ভরসা নিজের বড় বউয়ের উপর…তাই তোতো সব দায়িত্ব বড় বউয়েরর নির্বিঘ্নে দিতে পারেন…বড় বউও কম যায় না……..সব কিছু ঠল সামলে নেয়…..
“সাদাদ…নৌশিনকে নিয়ে ডিনার করবি চল…এখানে আর বসার দরকার নেই…”(ভাবী)
“হুম….আমার পেটে চুচু দৌঁড়াচ্ছে….এগারোটা বাজে প্রায়….নৌশিন চলো”(সাদাদ)
“এখন আবার ডিনারও করতে হবে???বাট আমার তো ক্ষুদা লাগে নি…”(নৌশিন)
“তিন দিন না খেয়ে রইলেও তোমার ক্ষুদা লাগবে না..সেজন্য তো আর না খেয়ে থাকবে না…সো চল এখন”(সাদাদ)
…নৌশিনকে এক রকম জোড় করেই সাদাদ আর ওর ভাবী ডিনার করতে নিয়ে যায়…..সাদাদ,নৌশিন,নীলা,নীলার বর,সাদাদের বড় ভাই আর ভাবী একসাথে বসেছেন ডিনার করার জন্য…ওয়েটার খাবার সার্ভ করে দিচ্ছে……
“কি ব্যাপার নৌশিন…তোমাকে তো খুব ক্লান্ত লাগছে”(নীলার হাজবেন্ড)
“ভাইয়া তুমিও বলছো এই কথা…তবে আমি একটা সত্যি কথা বলি??”(নৌশিন)
“সিউর…”(নীলার হাজবেন্ড)
“আমার এতক্ষণ বসে থাকতে থাকতে কমড় তো ব্যাথা হয়েছে তার সাথে মেরুদন্ডও ব্যাথা করছে..”
“হা হা হা…..”(সাদাদের বড় ভাই)
“দাদাভাই তুমি হাঁসছো???সাদাদ তো দাঁড়িয়ে তো এদিক ওদিক যাচ্ছিলো-গল্প করছিলো…আর আমি সেই কখন থেকে বসে…কান্না এসে গিয়েছিলো প্রায়….”(নৌশিন)
“সেটাই কি স্বাভাবিক না।।।এতক্ষণ ধরে রিশেপশন হয় নাকি….বাবা আর কাকা যে কি না….এতো লোক দাওয়াত করে মানুষ…অফিসের পিয়নের মেয়ে আর মেয়ে জামাইও আসছে….আর ব্যবসার সব লোক তো আছেই…”(নীলা)
“আরে…আমারি তো বিরক্ত লাগছে।।।আর নৌশিন যে ভারী ভারী গয়না আর শাড়ি পড়ে ঠাঁই বসে ছিলো কান্না আসাটাই নরমাল”(ভাবী)
“হুম…আসলেই নৌশিনের আজ প্যারা টা বেশি হয়ে গেলো”(দাদাভাই)
“নো টেনশন…সব যে ভালোই ভালোই শেষ হলো তাতেই আলহামদুলিল্লাহ… এরপর তো আর প্যারায় পরতে হবে না…”(ভাবী)
“হুম…ডিনার টা করেই ওদের পাঠিয়ে দিচ্ছি ঔ বাড়িতে…সেখানে গিয়ে ফ্রেস হয়ে লম্বা একটা ঘুম দিলে সব ঠিক হয়ে যাবা…বুঝলে নৌশিন??”(নীলার বর)
“হ্যাঁ তাই করা হবে..ডিনারের পরেই রওনা দিবি…গাড়ী রেডি আছে তোদের টা…কাকী বাসায় গেলো আবার ড্রাইভার দিয়ে গেছে গাড়ি…আমি ড্রাইভারকে ডিনার করিয়ে বিদায় দিয়েছি…যেহেতু সাদাদ ই ড্রাইভ করে”(ভাবী)
“এখান থেকে যাবো নাকি??”(সাদাদ)
“হুম….আর বাসায় গিয়ে কি করবি…লেট হবে বাসায় গেলে…তার চেয়ে সরাসরি ঔ বাড়িতে চলে যাবি”(ভাবী)
“বাট আমি তো দরকারী কিছুই আনি নি……ঐ বাড়ীতে ব্যবহার করবো কি??”(সাদাদ)
“তোর সে চিন্তা করতে হবে না….আমি ব্যাগ রেডি করে রেখেছি-তোর যা যা লাগে সব দেওয়া আছে…তোর গাড়িতেই ব্যাগ রাখা…”(ভাবী)
“ভাবী তুমি আসলেই পারো…এতো কিছুর মাঝেও সাদাদের ব্যাগ গুছিয়ে আনতে ভুলো নি…”(নীলা)
“আমি তো জানতাম…বাবা কোনো অনষ্ঠান কি কম লোকে করছে নাকি???জানা ছিলো আমার যে এত লোক আসবে তাই সময় টাও বেশি লাগবে…তাই আগে থেকেই সব রেডি করে রেখেছি”(ভাবী)
…..সবার সামনে খাবার দেওয়া হয়ে গেছে এতক্ষনে…
“এ এরপর আমার বাসায় যাবো☺☺….তাহলে বাসায় গিয়ে খেয়ে নিবো…তাহলেই তো হয়…তাই না??”(নৌশিন)
“কিহ্????পাগল তুই…এখান থেকে না খেয়ে যাবি নাকি???এখন খা পরে বাসায় গিয়ে আবার খেয়ে নিস…”(ভাবী)
“এখানে খেয় আবার বাসায়….কিভাবে সম্ভব!!আসলেই আমার না এই হাই ফুড খেতে একদম ভালো লাগে না…তাই বললাম…যদি বাসায় গিয়ে একটু সাদা ভাত খেয়ে নেই তবে খুব ভালো লাগবে আমার…..”(নৌশিন)
“কি বলিসস তুই??নিজের রিশেপশেনের খাবার না খেয়ে বাসায় গিয়ে সাদা ভাত খাবি???এটা যদি মা শোনে রাগ করবে….তাছাড়া আমরা সবাই তোর সাথে খেতে বসলাম অত্যন্ত আমাদের জন্য খা…..”(ভাবী)
“চুপচাপ খাবার টা খাও….”(সাদাদ)
…..সবার কথা শোনে নৌশিন এক প্রকার অনিচ্ছা সত্বেও এক চামচ জর্দা মুখে তুলে…..আর সবাই খাওয়া শুরু করেছে….এক চামচ মুখে দিয়েছে নৌশিন বাট পাশে সাদাদ বসেছে বিফ নিয়ে সেটার ঘার্ণ যেন নৌশিনের ভেতরে ডুকে গেছে…..তাই তো এক চামচ জর্দা মুখে নিয়েই বিষম খায়……..জোর করে খেলে যা হয় আর কি……………..
নৌশিন কাঁসতে শুরু করে…
“এই কি হলো???সাদাদ পানি দে ওকে…”(নীলা)
…সাদাদ হাতে গ্লাস দিলে পানি দিয়ে কোনো রকম জর্দা গিলে ফেলে…..
“আমি পারবো না আর….সাদাদ বিফ খাচ্ছে.. কেমন একটা গন্ধ আসছে…সেই গন্ধ আমার খাবারের সাথে মিশে গেছে…সে জন্য আমি বিষম খেলাম-এখন আর ডুকবে না খাবার আমার ভেতরে”(নৌশিন)
“আল্লাহ্…সাদাদের প্লেটের গরুর গন্ধ ওর খাবারে গেছে কি কথা!!এর চেয়ে ভালো করে তো অরূপ খেতে পারে…”(নীলা)
“সাদাদ এতো কথার কি দরকার আছে???”(নীলার বর)(চোখ দিয়ে কিছু মিন করেন-সাদাদ বুঝতে পারে সেটা)
“আরে ঠিক বলেছো দোলাভাই কোনো কথার দরকার নাই…..”!!!কথাটা বলেই বাম হাতে নৌশিনের মুখ চেপে ধরে নিজের চামচ টা সাইডে রাখে…আর ইচ্ছা করেই ওর প্লেট থেকে পোলাও আর গরুর তেহরী নিয়ে নৌশিনকে খাইয়ে দেয়….নৌশিন ফেলে দেওয়ার চেষ্ঠা করেও পারে না সাদাদ যে ভাবে গাল চেপে ধরছে খাবার গেলা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই…তাই বাধ্য হয়েই খাবার টা গিলে নেয় নৌশিন…এখানেই শেষ নয়-সাদাদ মুখ চেপে ধরে রেখে একি ভাবে সাত আট বার নৌশিনের মুখে খাবার দেয়…গিলতে বাধ্য নৌশিন..নৌশিনের চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে গেছে-গায়ে কাটা দিয়েছে….যেই সাদাদ আবার খাবার দিতে যাবে…হাত দিয়ে পানি ইশারা করে….”আরে সাদাদ থাম…আটকে যাবে খাবার পানি দে ওকে….”(ভাবী)
সাদাদ মুখটা ছেড়ে দিয়ে পানি এগিয়ে দেয়…নৌশিন গ্লাস হাতে নিয়ে এক ডুকে পুরো পানি খেয়ে নেয়…আবর আরেক গ্লাস নিয়ে গবগব করে পানি খায়…বেচারীর বমি আসছে তাই এভাবে পানি খাচ্ছে-একবার ওর বাবা কোরবানী ঈদে এমন জোড় করে গুরুর গোসত খাইয়ে দিয়েছিলো,তারপর বমি করতে করতে বিফ তো বের হয়েই গেছে সাথে পেটের বাকী খাবারও…বাট এখানে বমি করে দিলে সবার ডিনার টা নষ্ট হয়ে যাবে তাই পানি খেয়ে কনট্রোল করার চেষ্ঠা করছে….আড়াই গ্লাস পানি খেয়ে থামে নৌশিন….পাশে বসে সবাই সাদাদের খাওয়ানোর স্টাইল আর নৌশিনের অবস্থা দেখে হাঁসতে হাঁসতে শেষ…..
নৌশিন সাদাদের দিকে তাঁকায়-সাদাদ কিছু হয় নি এমন একটা ভাব নিয়ে হাতে চামচ তুলে নিয়ে আবার খেতে শুরু করে…
“সাদাদ…তুমি এতো খারাপ… আর কোনো দিন তোমার পাশে খেতে বসবো না আমি…আমার চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে গেছে একদম….গায়ে কাটা দিচ্ছে….তুমি জানো না বিফ খাই না আমি?দিলেই যখন পাশে তো মাটান আর চিকেনও ছিলো…বিফ টাই দিলে??তোমার সাথে আমি আর কোনো খেতে বসবো না আমি…..জীবনেও না…আস্ত খারাপ তুমি…”(নৌশিন)
…সবাই হাঁসতে হাঁসতে শেষ পুরো..পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ওয়েটারও না হেঁসে পারছে না….
“তোমার বসার দরকার নেই,আমি বসে যাবো..”(সাদাদ)
“আল্লাহ্…এভাবে মানুষকে গালে চেপে ধরে কেউ খাওয়ায়…গাল ব্যথ্যা করতেছে…এভাবে মুখে পুরে গরুর বাচ্চা-বাছুরকে মেডিসিন খাওয়ানো হয়…কোনো মানুষ আরেক টা মানুষকে এভাবে খাওয়ায় না”(নৌশিন)
“তার মানে???তুমি কি??? সেটা বললে আবার খারাপ দেখায়…শুশুরকে বলা হয়ে যাবে তাই বললাম না….এখন চুপ চাপ বসে আমার খাওয়া দেখো..কথা বলো না…আমার খেতে প্রবলেম হবে কথা বললে”(সাদাদ)
“খাও খাও…রাক্ষস একটা…” কথাটা বলেই নৌশিন পাশে থাকা এক বাটি মাটান সাদাদের প্লেটে ঢেলে দেয়..”নাও এটাও খাও…বিফ ওইথ মাটান..খুব টেস্টি”(অট্ট হাঁসিতে মেতে উঠে নৌশিন…এই মেয়ে টার রাগ নাই একদম-অন্য কাউকে এভাবে জোড় করে খাওয়ালে রাগে ফুলে যেতো বাট ও হাঁসতে হাঁসতে সাদাদের প্লেটে মাটান টা দিয়ে দেয়।।।সাদাদ কম যায় না…..সব একটা একটা করে খেতে থাকে….)
“আহ্।।।দারুণ খেতে….মাটান টা তুলে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ…”(সাদাদ)
“হুম…রাক্ষস খাও তুমি..☺☺”(নৌশিন)
…নৌশিনেরর মুখের সামনে এক চামচ পোলাও তুলে নিয়ে যায় আবার সাদাদ…”আর একটু খেয়ে দেখো এবার মাটান দেওয়া…”
“উম……সাদাদ”(মুখ টা সরিয়ে নেয় নৌশিন)
“এমন করলে উঠে যাব কিন্তু আমি…”(নৌশিন)
“সাদাদ থাম এবার….তাড়াতাড়ি শেষ কর ….তুই বস এখানেই কোথায় যেতে হবে না তোর”(ভাবী)
“ওকে।।।আমিই খাই…”(সাদাদ)
“আমি উঠলাম…আমার হয়ে গেছে”(সাদাদের বড় ভাই)
“হুম…এই ঐ দিকে অরূপকে একটু খেয়াল করো.. ছোট কাকাইয়ের কাছে আছে মনে হয়…”(ভাবী)
“ঠিক আছে…দেখে যাবো….তারপর আমাকে ভেতরে পাবে না-আমি পার্কিং এর দিকে যাচ্ছি….পরে আসছি আবার ভেতরে”
“কেন???পার্কিং এ কেন??গাড়ি তে সব গুলোই রাখা… ড্রাইভারও তো আছে আমি তো শুধু সাদাদের ড্রাইভারকে ছেড়ে দিলাম….”(ভাবী)
“না…সবগুলো নাই।।।একটা প্রাপ্তি নিয়ে গেলো বাসায়…..দেখি ড্রাইভার আনলো কিনা সেটা…..আনলে তুমি আর অরূপ চলে যাও বাসায়…তাই দেখে আসি”
“ও…মা সে কি.??প্রাপ্তি বাসায় চলে গেলো,কেন??দেখাও করলো না আমার সাথে যাওয়ার সময়??”(নৌশিন)
“আমি বাইরের দিকে গেলাম…তো দেখি গাড়িতে একা একা বসে আছে…মুখটা শুকনো লাগছে…জানতে চাইলে বলে’দাদা ভাই আমার মাথা ব্যথা করছে তাই বাইরে এসে বসেছি ভেতরে তো অনেক লোক সাউন্ড অনেক’…তাই পরে ড্রাইভারকে বললাম ওকে ছেড়ে দিয়ে আসতে”
“ওহ্…হঠাৎ মাথা ব্যথা কেন হলো আবার…..”(নৌশিন)
“হবে না কেন…কাল ও গ্লাস পড়ে নি আজও পড়ে আসে নি…কাকী কত করে বললো চশমা পড় বাট ও শোনলে তো..তাই নিশ্চয় মাথা ব্যথা হয়েছে…..কবে যে বড় হবে গাধী টা……”(নীলা)
……সবাই খাওয়া শেষ করে বাসায় যাওয়ার জন্য বের হয়..গেস্টরা সব চলে গেছে….নৌশিন আর সাদাদকে গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে তারপর সবাই অন্য দুই গাড়িতে উঠে যায়….”সাদাদ,সাবধানে চালাস গাড়ী….”(সাদাদের মা)
“বাই বাই টেডি বেয়ার….”(অরূপ…নৌশিনকে)
“বাই সোনা☺☺☺”(নৌশিন)
……”আচ্ছা…আমি ছাড়লাম গাড়ি তাহলে নাকি???”(সাদাদ)…..
“হুম…রাওনা দে তুই…”(সাদাদের বাবা)
….”মা আসছি…ভাবী..আপু…আসছি…”(নৌশিন)….
সাদাদ শশুড় বাড়ির উদ্দেশ্য বেরিয়ে পড়ে…ঘড়ির কাটায় তখন রাত সাড়ে এগারো টা,সাদাদের বাবা ফোন করে নৌশিনের বাবা কে ওদের রওনা দেওয়ার খবর জানায়…আর নিজেরাও বাসার উদ্দশ্যে বের হয়…..
দশ মিনিটের মধ্যেই সাদাদের বাসার সবাই বাড়িতে ডুকে যায়…সেন্টার টা বাসা থেকে কাছেই ছিলো একদম..সবাই খুব ট্রায়াড তাই যে যার রোমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ে…আর প্রাপ্তি অনেক আগে এসেছে অথচ ফ্রেস হয়ি নি আর জামা টাও চেন্স করে নি…ওমনি শুয়ে ঘুমাচ্ছে……ওর মা রোমে গিয়ে ঘুমাচ্ছে দেখে আর ডাকে নি লাইট টা বন্ধ করে দিয়ে নিজের রোমে শুয়ে পড়েন তিনি…আর পাশের রোমে মহারানী রিদি নৌশিনের বিয়ের একটা ছবিতে কলম দিয়ে ইচ্ছামতো দাগাচ্ছে-এমন ভাবে শ্বাস নিচ্ছে রেগে কেউ দেখলে ভাববে বিষাক্ত সাপ ফনা তুলছে……কিন্তু সাদাদ আর নৌশিন এখনো রাস্তায়…শ্যামলী টু উত্তরা পৌঁছাতে প্রায় এক ঘন্টা তো লাগবেই এমন সময়……আরও বিশ মিনিটের মতো লাগবে প্রায় ওদের পৌঁছাতে….সাদাদের ভাবী ফোন করে অবশ্য খবর নিয়েছে ওদের………….
“তুমি আজকে কি করলে সাদাদ এটা???”(নৌশিন)
“কোথায়??কি করলাম…..??”(সাদাদ)
“কি খারাপ তুমি…আমার তো এখনো পেটে উল্টা পাল্টা করতেছে এই বাজে খাবার গুলো…আমি লাইফে সেকেন্ড বার বিফ মুখে দিলাম বাট খেলাম প্রথম বার…কারণ প্রথম যেদিন বাবা জোড় করে মুখে পুরে দিয়েছিলো তোমার মতো সে দিন খেতে পারি নি বমি হয়ে গেছে সব..বাট আজ সবার সামনে কোনো মতো পানি দিয়ে সামলে নিলাম…”(নৌশিন)
“আরও দিতাম মুখে…বাট আটকে যাওয়ার ভয়ে দিই নি…”(সাদাদ)
“রাক্ষস কোথাকার…”
“রাক্ষসী.. ☺☺”
“এটা কি বললে…আমি মোটেই তোমার মতে এত খাই না…তাই আমি রাক্ষসী নই”
“আরে…খাও আর না খাও আমি রাক্ষস হলে আমার বউ তো রাক্ষসী ই হবে…তাই আমি রাক্ষস হলে সিমপ্লি তুমিও রাক্ষসী……
“তোমার সাথে আমি পাড়বো না কোনো দিনও..তাই কথা না বাড়ানোই বেটার হবে…”(নৌশিন)
…”যাই বলো তোমার মুখটা দেখারর মতে হয়ে গিয়েছিলো লাস্টের দিকে….”(সাদাদ)
“তুমি তো বলবেই…আমার খুব খারাপ লাগতেছিলো লাস্টের দিকে)
“আর একটু ওয়েট করো এসে গেছি প্রায়-রেস্ট নিলেই সব ঠওক হয়ে যাবে…তবে আমি রেস্ট নিতে দিই কি না সন্দেহ আছে☺☺”(সাদাদ)
“সাদাদ…..থাম তুমি…চুপচাপ সামনে তাঁকিয়ে ড্রাইভ করো…”(নৌশিন)
……..সাদাদ আর নৌশিন পৌঁছে যায় নৌশিনের এপারমেন্টের সামনে…..নৌশিনের বাবা আগে থেকেই নিচে দাঁড়িয়ে ছিলো….ওদের দেখা মাত্রই নিয়ে চলে আসে নিজেদের ফ্যাল্টে….নৌশিন রা আবার থাকে বারো তুলার উপরে….তাই লিফ্টেই শেষ এন্ত ভরসা……………………….
নৌশিনের বাসার তো সবাই তো মেয়ে আর মেয়ে জামাইকে দেখে আনন্দে আত্মহারা…..বিশেষ করে নৌশিনের বাবার খুশি যেন আর ধরে না মেয়েকে বাসায় এনে……..
.
#প্রেমঘোর#১৯#
💜💜
Writer:Nargis Sultana Ripa.
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
নৌশিনের বাড়িতে এতো রাতেও মেয়ে আর জামাই কে নিয়ে নানা আয়োজন চলছে’…………..প্রায় সাড়ে বারো টার দিকে ওরা বাসায় পৌছায়……….সাদাদ সবার সাথে কথা বলে….নৌশিন বাসায় ঢুকে সবার সাথে দেখা করে সোজা নিজের রোমে ছুটে যায়-সাদাদকে ড্রয়িং রোমে রেখে একাই চলে যায় রোমে…সাদাদ কিছুটা ইস্ততবোধ করে..কারণ আজ দ্বিতীয় বার সে এ বাড়িতে এসেছে…..এনগেজমেন্টের দিন আর আজকে….নৌশিনের এভাবে ওকে রেখে যাওয়া ঠিক হয় নি……সাদাদকে নৌশিনের বড় ভাই বসতে বলে…..টুকটাক কথা বলতে থাকে….নৌশিনের বিয়েটা ওদের গ্রামের বাড়ি ভালুকা থেকে হয় তাই এই বাড়িতে মেহমান নেই বললেই চলে…সবাই ভালুকাতেই জয়েন করেছিলো বিয়ের দু-তিন আগে থেকেই…নৌশিনের বাবাও একমাত্র মেয়ের বিয়েতে সব লোক জড়ে করেছিলো….শুধু নৌশিনের মামা মামী আছে এই বাড়িতে আর প্রাপ্তির বয়সী একটা মামাতো ভাই…বোন নিজের রোমে একা ঢুকে পড়েছে তাই নৌশিনের ভাই সাদাদের সাথে কথা বলে কোনো রকম সৌজন্য বোধ বজায় রাখছে আর কি-সে তো আর শালা নয় যে মজা করবে সমন্ধি সর্ম্পকে তাই যত টা সম্ভব কথা বলা যায়…নৌশিনের ভাবী,মা,কাজের মেয়ে,মামী সবাই সাদাদের জন্য ব্যস্ত হয়ে রান্না ঘরে ঢুকে কাজ চালায়…..নৌশিনের ভাবী ড্রয়িং রোমে আসলে ওর ভাই ইশারা করে নৌশিনকে ডেকে দেওয়ার জন্য……
নৌশিনের ভাবী সাথে সাথে নৌশিনের রোমে যায়……..
নৌশিন আয়নার সামনে বসে চুল খুলছে-ওর ভাবী মাথায় টুকা মেরে বলে….”কি রে গাধী,সাদাদকে একা রেখে এভাবে রোমে পড়লি কেন??ওকে নিয়ে আসবি তো নাকি??”
“ও মা….সাদাদ একা আসতে পারবে না নাকি??যে আমি নিয়ে আসবো..”
“আরে..প্রথম বার শশুড় বাড়িতে এসে কি একা একা কেউ বউয়ের রোমে ডুকে??তুই আনবি তো….বেচারা সবার সামনে আনইজি ফিল করছে বোধহয়……”
“ও কি মেয়ে যে আনইজি লাগবে সবার সামনে…..”
“পাগলী শুধু মেয়েদেরি আনইজি লাগে না ছেলেদেরও লাগে….চল ওকে নিয়ে রোমে আয়…তারপর ফ্রেস হতে বল ওকে..”
“আচ্ছা,দাঁড়াও চুল টা আগে খুলে নিই…কালকেও স্প্রে করা হয়েছিলো আর আজকেও…চুল শেষ আমার এই দুই দিনে……ভাবী একটু হেল্প করো কত ক্লিপ খুলতে পাচ্ছি না..”
“তোর যা চুল নষ্ট হলেও এক গাদা রয়ে যাবে…তাই চিন্তার কোনো কারণ নেই”
…..দুজনে মিলে চুল টা খুলে…..তবুও দশ মিনিটের মতো লেগে যায়….চুল খোলার পর নৌশিনের চুল গুলো একদম হাঁটুর কাছে পড়ে যায়…..
“নে এবার যা…সাদাদকে নিয়ে আয়…”
…নৌশিন তাড়াতাড়ি করে ড্রয়িং রোমে যায়….নৌশিনকে এভাবে দেখে সাদাদ ‘থ’ হয়ে গেছে…চুলে আগে স্প্রে করার জন্য চুল গুলো ফুলে আছে…আর অনেলক্ষণ বাধাঁ ছিলো খুলে ফেলায় এলোমেলো হয়ে আছে…এভাবে কোনো দিন দেখা হয় নি নৌশিনকে সাদাদের…..দেখে মনে হচ্ছে কোনো হুর নেমে এসেছে জান্নাত থেকে…..সাদাদের চোখ আটকে যায় নৌশিনের এই রূপে…..
সাদাদ ভাবছে ‘এতটা অসাধারণ রূপ হতে পারে একটা মেয়ের……কি রে!!’
…সাদাদের ভাবনার অবসান ঘটে নৌশিনের বাবার কথা শোনে…….
“মা যাও জামাই কে নিয়ে তোমার রোমে যাও…..”
“বাবা সাদাদ,অনেক রাত হয়েছে যাও ফ্রেস হয়ে নাও…তারপর হালকা কিছু খেয়ে রেস্ট নাও”
“কি বলছো বাবা??সাদাদ যে পরিমাণ খেয়ে আসলো একটু আগেই তিন দিন না খেলেও চলবে ওর…”
…..সাদাদ আবার বড়দের সামনে ইতস্ত বোধ করলো নৌশিনের কথায়-যতই হোক নতুন শশুড় বাড়ি…আগে এক বার এসেছিলো তখন তো আর বিয়ে টা হয় নি,তাই শশুড় বাড়ি আসাও বলা চলে না সেটাকে……..
“এই থাম….কি বলছিস এই সব”(নৌশিনের বড় ভাই)
“ভাইয়া।।।নৌশিন ঠিকি বলছে আমি প্রচুর খেতে ভালোবাসি আর আজকে প্রচুর পরিমাণ খেয়ে আসলাম…এক ঘন্টাও হয় নি খেয়ে এসেছি….আজ আর কিচ্ছু খেতে পারবো না আমি”(সাদাদ)
“আচ্ছা…খাবে কি খাবে না সেটা পরে দেখা যাবে আগে ফ্রেস হও…. প্রায় একটা বেজে যাচ্ছে….”(নৌশিনের ভাবী)
“কি হলো নৌশিন!সাদাদকে নিয়ে যা,তুই ও ফ্রেস হয়ে নে……..”
….নৌশিন সাদাদ কে নিয়ে রোমে যায়…..যতক্ষণ যায় সাদাদ ততক্ষণ ই নৌশিনের একটু পেছনে থাকে…নৌশিন আগে যেতে বললেও যায় নি…কারণ সামনে থাকলে নৌশিনের এমন চুলগুলো ওর নজর এরিয়ে যাবে…রোমে ঢুকেই সাদাদ দরজা লক করে দেয়….রোম কেমন বা রোমে কি আছে সেটার দিকে একবারও চোখ যায় নি সাদাদের….দরজা লক করেই পেছন থেকে নৌশিনের হাত টা ধরে ফেলে হাঁটু গেরে বসে পড়ে ফ্লোরে….সাদাদ হঠাৎ পেছন থেকে হাত ধরে ফেলায় নৌশিন সাদাদের দিক ফিরে…ঘোরার সময় নৌশিনের চুলগুলো সাদাদের মুখে বারি খায়…শুধু বারি খাওয়ার সময়টাতেই সাদাদ প্রাণ ভরে চুলের গন্ধ নেয় নেশা লাগে যায় সেই গন্ধে…নৌশিন পেছন ফিরে দেখে সাদাদ হাটু গেরে বসে…
“এ মা…কি হলো???”(নৌশিন)
“জানি না কি হলো……”(সাদাদ)
…নৌশিন দ্বিতীয় কোনো প্রশ্ন করার আগেই সাদাদ ওর হাতে আলতো করে কিস করে……নৌশিনের কেন জানি এই ছোঁয়া তে অন্য রকম এক ভালো লাগা কাজ করে….সাদাদ নৌশিনের মুখের দিকে তাঁকায়…….”আমি কোনো দিন হুর দেখি নি…শুধু জানি জান্নাতবাসী পুরুষরা নাকি হুরের অধিকারী হবে….আমার পরকালে আমি জান্নাত পাবো কি না জানি না তবে আমার এই জীবন টাকে একটা জান্নাতের মতোই মনে হয়…শুধু মনে হয় না আমার ইহকালে আল্লাহ সত্যিই আমাকে জান্নাতের সুখ দিচ্ছেন…আর এই জান্নাতে তুমি আমার প্রাপ্ত হুর…..ইহকাল পরকাল দু কালেই এই হুর চাই আমার……”…….কথা শেষ করে আবারও চুমু আঁকে দেয় হাতে…নৌশিন নির্বাক একদম শুধু সাদাদকে দেখে যাচ্ছে……
“থাকবে তো সারা জীবন আমার হুর হয়ে???নিজের সবটা দিয়ে আগলে রাখবো,ভালোবাসবো হ্যাঁ সাথে একটু জ্বালাবোও…..থাকবে???”(সাদাদ)
…..নৌশিনের এই মুহুর্তে পৃথিবীর সব চেয়ে সুখী মানুষ মনে হচ্ছে…এতটাই সুখ যার ভাষা স্বরূপ চোখে জল এসে যায়…ঠোঁটের কোণে হাঁসি আর চোখে জলরেখা নিয়ে মাথা নেড়ে সম্মতি জানায় থাকবে……সাদাদ উঠে দাঁড়িয়ে এমন ভাবে নৌশিনকে জড়িয়ে ধরে যেন হাজার বছরের পুরনো প্রেম আবার ফিরে পেয়েছে-নৌশিনও জড়িয়ে নেয় সাদাদকে……..নৌশিন এতসুখ আর ধরে রাখতে পারছে না-উপচে পড়ছে চোখের পানি হয়ে…………সাদাদের কোর্ট ভিজে যাচ্ছে…..সাদাদ নৌশিনকে সোজা করে নেয়…দুগালে হাত রাখে নৌশিনের চোখের পানি বাঁধ মানছে না……..সাদাদ আঙুল দিয়ে আলতো করে চোখের পানি মুছে দেয়………”কাঁদছো কেন??”(সাদাদ)
“জানি না….এসে গেছে…..”(নৌশিন)
….নৌশিনের চোখে আবার পানি এসে যায়…সাদাদ আলতো করে নৌশিনের কপালে ভালবাসার পরশ দেয়….”অনেক আগেই কিন্তু আমি কথা দিয়েছিলাম…”
“আমি জানি তো…..”
“তাহলে আজকে আবার কেন জানতে চাইলে???”
“আজকে যে নতুন রূপে দেখলাম……আমার হুর কে প্রত্যক্ষ করলাম……আগে তো সাধারণ নারীর প্রেমে পেরেছিলাম আজ তো এক হুুরের প্রেমে পড়েছি”
….আবারও আকড়ে নেয় দু জন দুজনকে…..সব সুখেরাও আজ মনে হয় হিংস্বে করছে সাদাদ আর নৌশিনের সুখ দেখে………………………………..
#প্রেমঘোর#২০#
💜💜
Writer:Nargis Sultana Ripa.
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
“নৌশিন আপা,………নৌশিন আপা…”(দরজার বাইরে)
“আপা…..”(দরজার বাইরে)
…..সাদাদ আর নৌশিন এখনও একে অপরে জড়িয়ে ধরে আছে…….নীরব ভালোবাসায় আচ্ছন্ন দুজনেই……………..
“নৌশিন আপা…দোলাবাইয়ের ব্যাগটা আনছি….”(দরজায় নক করে)
….নৌশিনের ইন্দ্রিয় শক্তি সবসময় যেন সাদাদের আগে কাজ করে…এই মুহুর্তেও তার ব্যতিক্রম হয় নি……….
“সাদাদ ছাড়ো….কেউ নক করছে মনে হয়”(নৌশিন)
…….সাদাদ নিশ্চুপ হয়ে তখনও নৌশিনকে শক্ত করে ধরে আছে…….নৌশিন আবার ডাকে সাদাদকে…….”সাদাদ…….”(নৌশিন)
“হুম….”(অস্ফটস্বরে)(সাদাদ)
“ছাড়ো…দরজায় কেউ নক করছে”(নৌশিন)
……সাদাদ আরও শক্ত করে আকড়ে ধরে নৌশিন….
“কি হলো…….?”(নৌশিন)
…..সাদাদ এবারও নিশ্চুপ…..
“ছাড়ো একটু…..দরজায় কেউ নক করছে…..আছি তো আমি নাহয় পরে আবার……..”(নৌশিন)
“ছাড়ো প্লিজ……”(নৌশিন)
…….দরজায় আবার নকের আওয়াজ হয়…সাদাদও শোনতে পায় এবার….তাই অনিচ্ছা সত্বেও নৌশিনকে ছেড়ে দিয়ে স্বাভাবিক হয়………সাদাদ ছাড়া মাত্রই নৌশিন তাড়াহুড়ো করে দরজা খুলে………….
“ও…সালাম…..কিছু বলবি???”(নৌশিন)
“আপা…দোলাভাইয়ের ব্যাগ টা বসার ঘরে আছিলো….ভাবী পাডাইলো”(সালাম)
“ওহ্…..আচ্ছা দে আমায়….”
……সালাম ব্যাগ নৌশিনের হাতে দেয়……
“ভর্তি হয়েছিস তুই???”(নৌশিন)
“হ আপা…খালুজান(নৌশিনের বাবা)টেহা দিছিল কালকা ভর্তি হয়ছি”(সালাম)
“আচ্ছা….আবার কিন্তু এমন ভালো রেজাল্ট করতে হবে তোকে…আর যে কোনো কিছু লাগলে বলবি তোর মাকে যেন আমাদের বাসায় জানায়…”
“আইচ্ছা আপা”(সালাম মুচকি হাঁসে)
“আচ্ছা….আয় তাহলে!”(নৌশিন)
….সালাম চলে গেলে নৌশিন আবার দরজা লাগিয়ে দেয়….যদিও লাগানোর দরকার ছিলো না এখন তবুও ‘সাবধানের মার নেই’ বলে কথা-সাদাদ কখন কি করে বসে………….দরজা বন্ধ না করলে আবার লজ্জায় পড়তে হবে কারও সামনে……..এইসব ভেবেই নৌশিন দরজাটা লক করে ভেতরে আসে…….সাদাদ ততক্ষণে সোফায় বসে নৌশিনের রোম টা ভালো করে দেখে নেয়…বেশ পরিপাটি একটা রোম-নন্দনিকও বটে….কিন্তু আনকমন…….সাদাদ একটু অবাক হয়েও হয় না কারন এই মেয়েটার কোনো কিছুই যে কারও সাথে মিলে না,সেটা ও এতোদিনে অনেকটাই বুজে গেছে……..বারান্দার দিকে দেয়াল টা দেখে মনে হয় না এটা কোনো রোম….পুরোটাই গ্লাস আর বারান্দায় এতো সবুজ ঘাস আর লতিকা বাহার গাছ উপর থেকে বেয়ে আছে রোমে হঠাৎ করে কেউ রোমে ঢুকে সেদিকে চোখ রাখলে মনে হবে কোনো খোলা মাঠের সামনে দাঁড়িয়ে আছে…..আর সেই কাঁচের দেয়ালের পাশেই বিশাল বুক স্লেভ-অনেক বইয়ের সমাহার…পাশেই একটা বড় পড়ার টেবিল সেখানেও বই….তার পাশে আবার ছোট একটা পড়ার টেবিল….এসব থেকে একটু দূরে একটা মাঝারি সাইজের বেড…….তারপাশেই একটা আলমারি…..আর বেডের ঠিক সামনা সামনি ড্রেসিং টেবিল-বেড থেকে উঠে প্রথমে ড্রসিং এ নিজের মুখটাই দেখতে হবে,এমন করেই রাখা সেটা………..নাহ্ আর কিছু নেই……….অন্য রকম একটা রোম সাধাড়ণত এমন রোম কম হয় এই বয়সী মেয়েদের…….স্টাডি রোম টা আলাদা থাকে আর ঘরে ড্রসিং এর পাশে সাজগুজুের জিনিসে ভরপুর-যেটা নৌশিনের রোমে নেই………………..
“সাদাদ ফ্রেস হয়ে নাও….”(নৌশিন)
……সাদাদ রোম ছেড়ে নৌশিনের দিকে খেলায় করে…..
“কি হলো????আমি ব্যাগ থেকে জিনিস গুলো নামিয়ে রাখছি তুমি ফ্রেস হয়ে এসো….”(নৌশিন)
“ওহ্….ব্যাগ তো আমি গাড়ি থেকে নামাতেই ভূলে গেছি….কে নামালো??”(সাদাদ)
“তুমি নেমে যখন বাবার সাথে কথা বলছিলে আমিই নামিয়েছিলাম……পরে সালাম কে হাত থেকে নিয়েছে আমিও খেয়াল করি নি….এখন সালাম দিয়ে গেলো……”(নৌশিন)
“এই মেয়ে…গাড়ি থেকে নামালে আর কে তোমার হাত থেকে নিলো টের পেলে না???আমার ব্যাগটা হারালে কি হতো???”(সাদাদ)
“আহা রে….এমন একটা ভাব করছো-যেন কি দামী জিনিস আছে তোমার এখানে????আছে তো ঐ কিছু শার্ট আর পেন্ট……আর সেখানে তো বাবা,দাড়োয়ানই ছিলো পরে তো ভাইয়া আসলো…বাবা তো নেয় নি কারণ আমি বাবাকে জড়িয়ে ধরলাম তো তখন ব্যাগটা হয় ভাইয়া না হয় দারোয়ান নিয়েছে হাত থেকে আমি বুঝতে পেরেছি যে কেউ ব্যাগটা নিলো বাট কে নিলো সেটা দেখি নি…..”(নৌশিন)
“তাহলে তো হলোই….আর দামী জিনিস নেই মানে….বহুত দামী জিনিস আছে……”(সাদাদ)
“আচ্ছা…..কি এমন দামী জিনিস,শুনি??”(নৌশিন)
…..সাদাদ নৌশিনের কাছে এসে…কানের কাছে মুখ নিয়ে…..”আন্ডার ওয়্যার”(দুষ্টুমিষ্টি হেঁসে)
“সা……দাদ….”(ধাক্কা দিয়ে সাদাদকে সরিয়ো)
“এতো লজ্জার কি আছে….আমি যেখানেই যাই,ব্যাগ তো ভাবীই গুছায় বাট এটা দিতে ভুলে না….আর তুমি আমার মিসেস হয়ে এটা শুনেই লজ্জা পাও……..নট এক্সপেক্টড…….”(সাদাদ)
“আমি জানি না কিছু…..লজ্জা লাগলে আমার কি দোষ???”(নৌশিন)
“নেক্স টাইম আমার সব ব্যাগ তো তুমি গুছাবে,ভাবী তো আজ লাস্ট দিনের মতো গুছিয়ে দিলো এখন থেকে তো আর দিবে না নিশ্চয় কজ আমার মিসেস এসে গেছে জীবনে….সো ব্যাগ গুছানোর সময় কাইন্ডলি এটা দিতে ভুলো না…..ভুলে গেলে আবার আমারি প্রব…….”(সাদাদ)
“পারবো না আমি…..তুমি যাও এখন ওয়াশরোমে…”(সাদাদকে ওয়াশরোমে দিকে ঘুরিয়ে দিয়ে)
…..সাদাদ আবার নৌশিনের দিকে ঘুরে….
“আগে এগুলো তো চেন্স করতে দাও……..”(সাদাদ)
“হুম তাড়াতাড়ি করো সাদাদ না হলে আজ রাত টা কখন সকাল হয়ে যাবে-বুঝতে পারবে না তুমি”(নৌশিন)
“এমনিও বুঝবো না…..”(সাদাদ)(দুষ্টু হেঁসে)
“সাদাদ…..তুমি না বেশি বেশি”(ব্লাশিং হয়ে)
…..ওকে।।।।কোর্ট টা খুলে নৌশিনের মুখে ছুড়ে দেয়……..”উম……হু…..খোলার কি ধরণ…..”
“আমি এভাবেই খুলি…….”(আয়নার সামনে গিয়ে ঘড়ি টা খুলতে খুলতে)
….”তাই বলে মুখের উপর….পারোও তুমি”(নৌশিন)
“আরে মিসেস আপনার তো আমার ছোঁয়া পেতে খুব ভালো লাগে….তাই দিলাম….”(সাদাদ)
…..নৌশিন আবারও ব্লাশিং হয়….সাদাদের কোর্ট ছুড়ে দেওয়ায় নৌশিন আসলেই মনে মনে অনেক খুশি হয়-সাদাদ সেটা নৌশিনের মুখ দেখে ভালো করে উপলদ্ধি করতে পারে…….
“আচ্ছা ঠিক আছে…মানলাম সব…..তুমি আমার ওয়াশরোম টা ব্যবহার করো আমি ভাবীর টা করছি…আর তোমার সব কিছু আমার কার্বাডে রাখলাম ”
…..নৌশিন কার্বাড বন্ধ করতে গিয়ে কথাটা বলে তখন সাদাদ ঘড়ি খুলে পকেট থেকে ওয়ালেট বের করতে নিয়ে চমকে যায়…..
“এই মেয়ে!!!!!”(চেঁচিয়ে)
….নৌশিনও চমকে যায় সাদাদের এমন করে ডাকায়….তড়িঘড়ি করে সাদাদের দিকে তাঁকায়….
“কি হয়েছে?????”(নৌশিন)
……সাদাদ নৌশিনের কাছে গিয়ে-পকেটে হাত দিয়ে মাফলার টা বের করে ওকে দেখায়………….নৌশিন বুঝতে পারে সাদাদ কেন ওভাবে তাকে ডাকলো…..
তাই মুচকি হেঁসে জানতে চায়….”কি????”
“কি মানে….আমার তো মনে ছিলো না…..তুমি তো বলেছিলে এক….”(সাদাদ)
….সাদাদ কথাটা সর্ম্পূণ করার আগেই নোশিন ওর এলোমেললো চুল গুলো সরিয়ে সাদাদ কে গলার দিকে ইশারা করে….সাদাদ খেয়াল করে গলায় আলাদা একটা হার দেখতে পায় যেটা নৌশিন বাসা থেকে পড়ে আসে নি আর গলার দাগ টাও দেখা যাচ্ছে না………………
সাদাদ বিষ্ময় হয়ে জানতে চায়”কেস টা কি হলো???”
নৌশিন মুচকি হেঁসে জবাব দেয়”কেস টা হলো ‘মা এই গয়না টা পড়িয়ে দিয়েছে যাতে করে দাগ টা দেখা না যায়'”
“ম মানে…..কোন মা???”(সাদাদ)
“তোমার শাশুড়ি মা☺”(নৌশিন)
“এই কি বলো???মা কে বলছো তুমি??আর কি বললা??”
“তো না বলে কি করতাম তুমি তো বন্ধুদের সাথে গল্প করছিলে,আর আমার দাগ টা ভেসে উঠছিলো ভেবে আমি মাকে ইশারা করে ডেকে আনি,সেখানে মা ছাড়া কথাটা বলার মতো আর কাউকে পায় নি…..”
“তার মানে তখন যে মা কে নিয়ে ওয়াশ রোমের দিকে গেলে????”
“হুম…..”
“কি বলছো তুমি???”
“কি আর বলবো…মা এমনিতেই সব বুঝে গেছে…তাই মায়ের গলার এই হার খুলে পড়িয়ে দিয়েছে….আর বলছে আমি নাকি গাধী”
“বুজে গেছে মানে কি?”
“কি মানে কি,মানে কি করছো…..মাকে আমি ডেকে নিয়ে জাস্ট গলা টা দেখালাম,মা রুমাল দিয়ে একটু মুছেই হেঁসে দিলো আমি আর কিছু বলার আগেই মা আমায় বলে”গাঁধী মেয়ে,ঠিক করে আসবি তো”আর হার টা খুলে গলায় ঝুলিয়ে দিলো…..আসলেই কত কি ভাবলাম দুজনে বাট আর একটা হার পড়ার কথা মাথায় আসলো না,মায়ের সামনে কি যে লজ্জা লাগছিলো….”
“তোমার আর কি মায়ের সামনে গেলে আমার এখন কেমন লাগবে তা তো তুমি বুঝবে না…..ভাববে ওনার মেয়েকে আমি কত কি না করি…..”
“ইশ…..সাদাদ…..তুমি না আসলেই….মা এসব কিছু ভাববে না….”
“হুম হতে পারে….আর ভাবারও তো তেমন কিছু নেই….যেহেতু মা একবার দেখেই কেস টা বুজে গেলো তারমানে মায়েরও এইসব বিষয়ে অনেক অভিঙ্গতা রয়েছে…..এট লিস্ট তোমার চেয়ে বেশি আছে তা না হলে এতো সহজে এতো দূরন্ত সমাধান দিতে পারতেন না…..”(মুচকি হেঁসে){যেটাকে শয়তানী হাঁসি বলা যায়}
“সাদাদ(চেঁচিয়ে)…..তোমার মাথা ঠিক আছে???কাকে নিয়ে কি বলছো???”
“ভুল কি বললাম……???তাছাড়া আমার শশুড়কে কিন্তু দেখেই বুজা যায় যুবক বয়সে তিনি আমার চেয়েও ডেসিং প্লাস হেন্ডসাম ছিলো…..সো এটা নরমাল…….”
“সাদাদ……”(আবারও চেঁচিয়ে ওঠে)
“হা হা হা হা……যাহা সত্যি তাহাই বলিয়াছি সোনা…..”
“কি বাজে তুমি….ছিঃ…..শশুড় শাশুরির কথাও বলো…..লজ্জা নাই তোমার একফোঁটা…”(নৌশিন)
“হা হা হা”(সাদাদ)
“আবার হাসছো?????”(নৌশিন)
“না না…..তুমি একদম বলছিলে না,’বাবা-মা য়ের যখন বিয়ে হয়,মা খুব ছোট ছিলো’?”
“হ্যাঁ…..ক্লাস নাইনে পড়তো….তো??”
“তার মানে…একটা কথা ভেবে দেখো…..(নৌশিনের ঘাড়ের পেছনে দু হাত বেধেঁ দাঁড়িয়ে)….মিনিমাম চার পাঁচ বছর পর ভাইয়া হেয়েছিলো কারণ আমার শশুড় মশাই যথেষ্ঠ সচেতন ছিলেন তাই নিশ্চয় এতো আগে আমার শাশুড়ি মাকে এতো কষ্ট দেন নি….তো সেখানে ধরো ফাইভ ইয়ারস…দেন ভাইয়া আর তারও নয় বছর পর আমার জান টা এসেছে….তার মানে বিয়ের পনেরো ষোল বছর পর তোমার আগমান……ভাবতে পারছো বিষয় টা……শশুড়ের বিয়ের সময় তিনি নাকি বি.এ কমল্পিট করেছিলেন তার মানে ২৩/২৪,বছর আগের দিনে তো এমন সময়ই লাগতো….তো ২৪+১৫…. আ আ আ তো মোটমাট ৩৯ বছর বয়সে তিনি আমার শাশুড়ি মায়ের সাথে সামথিং সামথিং করেছেন….যার ফলস্বরূপ তুমি আমার মিসেস আজকে…..কি পরিমাণ একটিভ ছিলো আমার শশুড়….চিন্তা করতে পারছো তুমি???”…..আাবার সেই শয়তানী হাঁসি শুরু হয় সাদাদের……নৌশিন হা করে সাদাদের কথা গিলছে……
“আল্লাহ…..সাদাদ কি চিন্তা করবো….বাবা আমার তিনি……তুমি নিজের শশুড় শাশুড়ি কে নিয়ে কি বলছো…..ধ্যাত….এটা ঠিক না…”(মন খারাপ করে উত্তর দিলো নৌশিন)
“ছাড়ো….আর যাও ওয়াশরোমে…একটা বেজে গেলো….”(নৌশিন)
“এই তুমি মুখ টা এমন করেছো কেন???আমি কি এমন বললাম…….(আরও দুষ্টামির সাদ হচ্ছে সাদাদের)….ঊনচল্লিশ বছরে তোমার আগমনের কারণ হয়ে চল্লিশ বছর বয়সে তিনি তোমার মতো পরীর মুখ দেখেন এটা তো ওনার সৌভাগ্য….”(সাদাদ)
“এই তুমি কি ঊনচল্লিশ-চল্লিশ করছো।।।।এই সময়েও ছেলেরা অনেক একটিভ থাকে….এটা কোনে ব্যাপার না…… সো বেবি হতেই পারে…….পঁয়তাল্লিশ পঞ্চাশ বছরেও অনেক পুরুষ বাচ্চা প্রদাণ কারণ হয়…..ইভেন আমাদের ধর্মমন্ত্রী সিক্সটি আপ হয়েও দু দুটো ছেলের বাবা হলেন….আর তুমি নিজের শশুড়কে নিয়ে কি বলছো….”(নৌশিন)
“বাহ্….বউ আমার অনেক কিছু জানে দেখছি…তার মানে আমি আরও ত্রিশ বছরের মতো তোমাকে ব্যাথাতে সুখ দিতো পারবো….”(অট্ট হেঁসে)
……নৌশিন ভ্যাঁবাচোকা খেয়ে যায়……কথাটা প্রথমে মাথার উপর দিয়ে গেলেও বুজতে বেশি দেরি লাগে নি….তাই লজ্জায় পরে যায়…….”সাদাদ…….শয়তান….)(বলেই সাদাদের হাতের নিচ দিয়ে পালিয়ে অন্য পাশে চলে যায়)
……সাদাদ হাঁসতে থাকে……
“পালালে কি হবে মেরি জান,ধরা তো দিতেই হবে????(নৌশিনের দিকে তাঁকিয়ে)
“সাদাদ প্লিজ…..ফ্রেস হও…….”(সাদাদের দিকে না ফিরেই কথা বলে নৌশিন…..ফিরবেই বা করে সাদাদ যা বলছে)
….সাদাদ শুধু শার্টের বোতাম গুলো খুলছে…….নৌশিনের সামনে গিয়ে শার্ট খুলে কোর্টের মতো সেটাও ওর মুখে ছুড়ে দেয়……………..
“উম…….সাদাদ…এটাও…???”(নৌশিন)
শার্ট মুখ থেকে সরিয়ে হাতে নেয় নৌশিন….মুখে ছুড়ে মারায় নকে শার্টের গন্ধ লেগেছে….আর ছেলেদের শার্টের গন্ধ যে একবার পেয়েছে বিশেষ করে এপ্রিল মাসে তার নিশ্চয় ছেলেদের শার্ট ধরতে ইচ্ছে করবে না……তার উপর সেই বিকেল থেকে রাত একটা পর্যন্ত সাদাদ একটা শার্ট পড়ে ছিলো…যতই এসিতে থাকুক আর পারফিউম লাগাক একটু হলেও গন্ধ হবেই………..
“উননননননহু……ছিঃ…..কি বাজে গন্ধ……. “…..সহ্য করতে না পেরে নৌশিনও শার্ট টাকে খাটে ছুড়ে মারে…
“এইটুকু সহ্য হয় না….এবার গেন্জি ছুড়ে দিলে কেমন হয়।।।তার পর পেন্ট তার পর……”….নৌশিনের দিকে এগিয়ে যায় সাদাদ আর নৌশিন পিছনে যেতে থাকে…
“এই পেন্টের পর আবার কি!একদম নির্লজ্জের মতো কথা বলবে না..আর আগাবে না বলছি আগে ফ্রেস নাও…তারপর কাছে আসবে…..”(নৌশিন)
“তারপর তারপর……..”সাদাদ নৌশিনকে ধাক্কা দিয়ে খাটে ফেলে দেয়….শার্ট টার পাশেই…….আর সাদাদও নৌশিনের উপর….এমন ভাবে সাদাদ শুয়েছে-ওর বগল টা নৌশিনের মুখের কাছে একদম…..সাদাদ অবশ্য ইচ্ছে করে এটা করছে নৌশিনকে ঘামের গন্ধ দেওয়ার জন্য আর পাশে তো শার্টের গন্ধ আছেই…….সাদাদ নৌশিনের আরও কাছে যায়…….নৌশিন নিতে পারছে না-কোনো ছেলের ঘামের গন্ধ জীবনে প্রথম এতটা কাছ থেকে পেলে যা হয় আর কি………………
“সাদাদ প্লিজ……উঠো….তোমার ঘাম…..প্লিজ প্লিজ…..”
……নৌশিন নিতে পারছে না আর,চোখ বন্ধ করে ফেলেছে মুখ সরাতে চাইছে কিন্তু সাদাদ সরাতে দিলে তো!………”যদি সারা রাত এভাবে রাখি????”(সাদাদ)
নৌশিন চোখ খুলে”একদম না”।।।।।উঠার জন্য জোড়াজোড়ি করে ব্যর্থ হয়…….
“আরে বাপ….জোড়াজোড়ি করে কি লাভ….আমার বডির দিকে একটু দেখো….রোজ সকালে কি জিম করি তোমার মতো চড়ই পাখির ধাক্কায় পড়ে যাওয়ার জন্য???আচ্ছা বাদ দাও,গন্ধটা কেমন লাগছে?”
“বিশ্বাস করো বমি আসছে আমার…..উঠো প্লিজ।।।।”
…….সাদাদ জানে ওর ঘাম সবসময় বেশি হয় আর নৌশিন প্রথম বারের মতো কোনো ছেলের গন্ধ এভাবে পাচ্ছে বলে সেটা ওর সহ্য করতে খারাপ লাগছে এটাও ভালোভাবে বুজতে পারছে………….তবুও সব বিষয়ে নৌশিনকে জ্বালানো ওর চার বছরের অভ্যাস……
“কি???আমার শরীরের ঘাম তুমি নিতে পারছো না….ওকে আমি ফ্রেস হচ্ছি না…এভাবেই শুরু করবো।।।।”{গলার দিকে মুখ এগিয়ে নিয়ে যায়}
{আর নৌশিন পাশে থাকা শার্ট নিয়ে সাদাদের মুখে চেপে ধরে}….নৌশিন খুব ভালো করে জানে সাদাদ চাইলে শার্ট সরাতে ওর এক মিনিটও লাগবে না-তাই এক রকম বাঁচার জন্য বলে উঠে “প্লিজ জান….এখন না-ফ্রেস হয়ে আসো…তারপর যা করার করো”………..
……নৌশিনের এমন কথায় সাদাদ হেঁসে ফেলে কারণ সাদাদ বুজেছে যে নৌশিন ঘামের গন্ধ থেকে বাঁচার জন্য কথাটা বলে ফেলেছে….যাক সাদাদে তাতে সুবিধাই হবে……….
সাদাদ শার্ট টা নৌশিনের হাত থেকে নিয়ে”সত্যি তো???যা করতে চাইবো তাই পাবো??”
“হুম…..এখন উঠো”
“মনে থাকে যেন নাহলে কাল কিন্তু সারাদিন গোসল না-করে সারা রাত…………”
“বললাম তো দিবো…..যা চাও তাই……..”
“বাহ্……”
“এখন উঠো না…..পারছি না আর এতো ঘাম….”
সাদাদ সরে গিয়ে বিছানায় শুয়ে পরে আর নৌশিন দৌঁড়ে গিয়ে দরজা খুলে…..আর দরজার একটু সামনে ওর ভাবী আর একটা সার্ভেন্টকে খাবার নিয়ে আসতে দেখে দাঁড়িয়ে যায়…….”কি ব্যাপার এখন চেন্স করিস নি???”(ভাবী)
…………………………………