#THE_BOOK
#পর্ব_৫
#Ishita_Rahman_Sanjida(Simran)
আকাশে গোলাকার থালার মতো বড় চাঁদ উঠেছে। চাঁদের স্নিগ্ধ আলো চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে যার কারণে দ্বীপটির সৌন্দর্য আরও বেড়ে গেছে। অভিনব বালুর উপর লম্বা লম্বা পা ফেলে সমুদ্রের তীরে পৌঁছালো। কতগুলো বাচ্চা পানিতে নেমে লাফালাফি করতেছে। অভিনব এগিয়ে এসে বলল,”এই তোমরা এতো রাতে পানিতে নেমেছো কেন?? তোমাদের কি কোন ভয় নেই??”
বাচ্চাগুলো কিছু বলার আগেই পানির নিচে থেকে বেরিয়ে এলো একটা মেয়ে। সাথে সাথে সব বাচ্চারা হাততালি দিতে লাগল। অভিনব স্তব্ধ চোখে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে রইল। চাঁদের আলোয় মেয়েটার সৌন্দর্য চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। চোখে মুখে লেগে থাকা পানি চিকচিক করছে চাঁদের আলোতে। হরিণীর মতো চোখগুলোর পাপড়ি ভিজে গেছে। বারবার চোখের পলক ফেলছে মেয়েটা। সোনালী রঙের চুলগুলো পানির ঢেউয়ে খেলা করছে। অজানা অচেনা রমনীর রূপে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে অভিনব। এই মুহূর্তে যদি প্রধানমন্ত্রী এসেও ওর সাথে কথা বলতে চায় তাহলেও অভিনব তা নিঃসন্দেহে নাকচ করে দিয়ে এই রমনীকে দেখায় মগ্ন হবে।
হঠাৎ মেয়েটার চোখ পড়লো অভিনবের চোখে। এই চাহনি অভিনবকে ভস্ম করে দিচ্ছে। মেয়েটার ঠোঁটের কোণে লেগে থাকা হাসি আর চোখের চাহনিতে নেশা ধরে যাচ্ছে অভিনবের। শুকনো ঢোক গিলে অভিনব বলল,”আপনি??আর এতো রাতে সমুদ্রে নেমেছেন কেন??”
অভিনবের কথা শুনে মেয়েটা হাসলো। সেই হাসিতে অভিনবের বুকে কাঁপন ধরে গেল। মেয়েটা বলল,”আমাদের সমুদ্র আমাদের যখন ইচ্ছা তখন আসবো তাতে আপনার কি??”
অভিনব প্রতুত্যরে কিছু বলল না। মেয়েটা আবার বলল,”আপনি এখানে কেনো এসেছেন??”
“আপনাকে দেখতে??”
“কি???”
নিজের বোকামোতে নিজকেই গালি দিলো অভিনব। তারপর কথা ঘোরাতে বলল,”আপনার চুলগুলো খুব সুন্দর।”
একথা শুনে মেয়েটা আবার সেই মন ভুলানো হাসি দিলো। অভিনবের ভেতরটা কেমন দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে। হঠাৎ ওর হলো কি??সেটা বুঝতে পারছে না। ইচ্ছে করছে এই রমনীর কাছে যেতে। নিজেকে সামলাতে অনেক চেষ্টা করতেছে। অভিনব বলল, “আপনার বাড়ি কি এখানেই??”
“কেন বিয়ের প্রস্তাব পাঠাবেন বুঝি??”
অভিনব মুচকি হেসে দুহাত পকেটে পুরে বলল, “পাঠাতেও পারি,এতো সুন্দর মেয়েকে বিয়ে করার ভাগ্য ক’জনের থাকে??”
“উহু আমাকে বিয়ে করা এতো সহজ নয়। কঠিন শর্ত আছে।”
অভিনব মাথা ঝুকে বলল,”আপনার সব শর্ত মঞ্জুর জলকন্যা।”
মেয়েটা হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল,”তাহলে আসুন আমার সাথে।”
অভিনব সবকিছু যেন ভুলে গেলো। কয়েক মূহুর্তের মধ্যেই যে এই মেয়েটার প্রেমে পড়ে গেছে অভিনব। হাত বাড়িয়ে মেয়েটার হাত স্পর্শ করতেই অদ্ভুত শিহরণ বয়ে গেল অনুভবের মধ্যে। মনে হচ্ছে এই মেয়েটাকে পাওয়ার জন্য সবকিছু করতে পারবে। মেয়েটার হাত ধরে অভিনব যেই না পানির মধ্যে পা দেবে তখনই পেছন থেকে কেউ একজন ওকে ডাকলো,”অনুভব,,,,,”
অনুভব চমকে মেয়েটার হাত ছেড়ে পিছনে তাকালো। দেখলো রা’দ ওকে ডাকতে ডাকতে এদিকেই আসছে। রা’দ অভিনবের কাছে এসে বললো,”এতো রাতে এখানে কেন এসেছিস??কি করছিলি এখানে??”
অভিনব ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাতেই দেখল মেয়েটা সহ বাচ্চাগুলো উধাও। অভিনব অবাক চোখে চারিদিকে তাকাতে লাগল। রা’দ বিরক্ত হয়ে বলল,”এই রাতের বেলা কি খুজছিস?? চল রুমে। তোকে খুঁজতে এসে আমার ঘুমটা নষ্ট হয়ে গেল।”
রা’দ অভিনবের হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো। অভিনব এখনও মেয়েটার রূপে মোহিত হয়ে আছে। তাই রা’দকে কিছু বলল না। রুমে এসে রা’দ আবার ঘুমিয়ে পড়লো। কিন্তু অভিনব ঘুমাতে পারলো না। ওর সবকিছু জুড়ে শুধু ওই মেয়েটাই। হঠাৎ অভিনবের মনে হলো মেয়েটার নামটাই তো জানা হলো না। আর ওইটুকু সময়ের মধ্যে মেয়েটা কোথায় গায়েব হয়ে গেল??
এসব ভাবতে ভাবতেই ভোর হয়ে গেছে।অভিনব চট করে বিছানা ছেড়ে উঠে পরল। সারারাত দুচোখের পাতা এক করতে পারেনি।মেয়েটা যেহেতু এখানেই থাকে তাহলে সমুদ্রের পাড়ে গেলে নিশ্চয়ই আবার দেখা পাওয়া যাবে। অভিনব দ্রুত ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পড়লো। সূর্য এখনও দেখা দেয়নি বিধায় সমস্ত পর্যটকরা ও ঘুমাচ্ছে। এখন খুব একটা পর্যটক নেই। অনুভব এদিকে ওদিকে খুঁজতে লাগলো। কিন্তু কোথাও খুঁজে পেলো না। হতাশ হয়ে গেল অভিনব।ঠিক তখনই কোথা থেকে আওয়াজ এলো,”আমাকে খুঁজছেন বুঝি??”
অভিনব চকিতে তাকালো। সমুদ্রের মধ্যে একটা পাথরের পিছনে দাঁড়িয়ে আছে সেই মেয়েটা। পাথরের আড়াল থেকে শুধু মাথাটা বের করে অভিনবের দিকে তাকিয়ে আছে। আবার সেই মন ভুলানো হাসি মেয়েটার মুখে।অভিনব হেসে বলল,”আপনি কি সারাদিন পানিতেই থাকেন নাকি??”
“আগে বলুন আমাকে খুঁজছিলেন??”
অভিনব ছোট করে বলল,”হুম।”
“প্রেমে পড়ে গিয়েছেন বুঝি।”
“আপনার মতো রমনীর প্রেমে পরতে যেকোন পুরুষ বাধ্য। সত্যি কথা বলতে কি কাল সারারাত শুধু আপনার কথা ভেবেছি। জানি না হঠাৎ করে আমার কি হলো??এটা কি আদৌ ভালোবাসা??এক রাতেই কি কারো মনে ভালোবাসা জন্মায়??”
অনুভবের কথায় মেয়েটা খিলখিল করে হেসে উঠলো। অভিনব বুকে হাত দিয়ে বলল, “ওভাবে হাসবেন না প্লিজ আমার বুকে ভিশন ব্যথা হয়।”
মেয়েটা হাসি থামিয়ে বললো,”তাই বুঝি?? তাহলে আমার কাছে আসুন ব্যাথা সারিয়ে দিচ্ছি।”
মেয়েটা আবারো ওকে ডাকছে। অভিনব আবারো এগোতে নিলেই পিছন থেকে পূর্ণাশা ডাকলো। মেয়েটা দ্রুত সরে গেল।পূর্ণাশা এসে বলল,”কি রে একা একা কার সাথে কথা বলছিস??”
“একটা মেয়ের সাথে।”
“এই সাত সকালে মেয়ে পেলি কোথায়??”
অভিনব ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাতেই দেখলো কেউ নেই।অবাক হয়ে বললো,”এখানেই তো ছিলো গেলো কোথায়??কাল রাতেও দেখেছি।”
“বাজে বকিস না তো!!চল ব্রেকফাস্ট করে ঘুরতে যাবো।”
পূর্ণাশা এক প্রকার জোর করেই অভিনবকে টেনে নিয়ে যায়। খেতে বসে সবাই অভিনব এর মধ্যে অদ্ভুত আচরণ খেয়াল করলো।কিসব ভেবে একা একাই হাসছে অভিনব।রা’দ অভিনবকে ধাক্কা মেরে বলল,”কি রে হাসছিস কেন??ভুতে ভর করলো নাকি??”
“না তো?? আমরা এখান থেকে ফিরছি কবে??”
“আজ সন্ধ্যায়।”
“সন্ধ্যায় কেন??কাল সকালে রওনা হই।দেখ আমরা তো রাতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারলাম না। আজকে না হয় থেকেই যাই।”
রা’দ এতে আপত্তি জানায় কিন্তু অভিনব শুনলো না অনেক জোরাজুরি করে রা’দকে রাজি করায়। অভিনবের হঠাৎ এরকম আচরণে সবাই একটু ঘাবড়ে গেল। হঠাৎ করে ছেলেটার হলো কি?? সবসময় তো এটা ওটা বলে সবার সাথে ঝগড়া বাঁধিয়ে দিতো। কিন্তু আজকে প্রয়োজন ছাড়া কোন কথাই বলছে না।
অতোসব ভাবনা বাদ দিয়ে সবাই খাওয়া শেষ করে বেরিয়ে পড়লো। পুরো দ্বীপে ঘুরে ছবি তুললো ভিডিও করলো। পানিতে গোসল করতে নেমে দুষ্টুমিতে মেতে উঠলো। চারজনেই মজা করে সারাদিন কাটালো।
কিন্তু অভিনব সারাদিন অন্যমনস্ক ছিল। কিছু খুঁজছিলো সারাদিন। কয়েকবার পূর্ণাশা আর লাবন্যর প্রশ্নের মুখে পড়েছিলো কিন্তু অভিনব তা সম্পূর্ণ এড়িয়ে গিয়েছে।
সন্ধ্যা নামার পর সবাই কিছু খেয়ে নিলো।রাতের সেন্টমার্টিন উপভোগ করার জন্য বেরিয়ে পড়লো। অভিনব নৌকায় চড়ার কথা বললো সবাই তাতে রাজি হয়ে গেল।
ছোট্ট একটা নৌকা ভাড়া করে চারজনেই চেপে বসলো। অনুভব আর রা’দ দাড় বাইছে লাবন্য আর পূর্ণাশা ভিডিও করতে ব্যস্ত। আজকেও চাঁদ উঠেছে। চাঁদের আলোয় চিকচিক করছে সমুদ্রের পানি। দৃশ্যটা চমৎকার তাই সবাই এই দৃশ্য উপভোগ করায় ব্যস্ত। স্বচ্ছ পানির মধ্যে দিয়ে নিচের সবকিছু দেখা যায়।পূর্ণাশা পানির নিচে একটা অক্টোপাস দেতেই লাবন্যকে দেখালো।রা’দ ও বৈঠা ফেলে সেদিকে উঁকি দিলো।
অভিনবের এবার খুব বিরক্ত লাগছে। ওই মেয়েটাকে না দেখা পর্যন্ত ওর কিছু ভালো লাগছে না। বিরক্ত হয়ে ওদের বিপরীত পাশে তাকাতেই দেখলো একটা হাত নৌকা ধরে আছে। উৎসুক দৃষ্টিতে সেদিকে তাকালো অভিনব। মুহূর্তেই অবাক হয়ে যায় সেই মেয়েটিকে দেখে। সবকিছু ভুলে সেদিকে এগিয়ে গিয়ে বলল,”তুমি এখানে?? তোমাকে কত খুঁজেছি??”
খুশিতে অভিনবের চোখগুলো চিকচিক করছে। মেয়েটা বলল,”যাবেন আমার সাথে??”বলতে বলতেই অভিনবের দিকে হাত বাড়িয়ে দিলো। অভিনব এই মূহুর্তে সবকিছু ভুলে গেছে। এই মেয়েটার হাসি আর চাহনি ওর মস্তিষ্কের ক্ষমতা কমিয়ে দিয়েছে যার কারণে এই মেয়েটাকে ছাড়া ও কিচ্ছু ভাবতে পারছে না। এই মুহূর্তে এই মেয়েটা যা বলছে তা ওর করতেই হবে তাই অভিনব দেরি না করেই হাত বাড়িয়ে দিলো।
হঠাৎ পানিতে একটা শব্দ হওয়াতেই রা’দ পূর্ণাশা লাবন্য সেদিকে ঘুরে তাকালো।দেখলো অভিনব নেই ওরা দ্রুত নৌকার পাশে এসে পানির দিকে তাকালো। পূর্ণাশা আর লাবন্য চিৎকার করে বলে উঠলো,”অভিনব,,,”
রা’দ এক মূহুর্ত দেরি না করে পানিতে লাফিয়ে পড়লো। স্বচ্ছ পানির মধ্যে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে মৎসকন্যার মাছের আকৃতির লেজটি।আর অভিনব তার হাত ধরা। পানির গভীরের দিকে যাচ্ছে দুজনে। অভিনব এই মুহূর্তে জ্ঞানশূন্য হয়ে গেছে। রা’দ সাঁতরে গিয়ে অভিনবের একহাত চেপে ধরতেই মৎসকন্যা রক্তচক্ষু নিয়ে রা’দের দিকে তাকালো। কিন্তু আশ্চর্য মৎসকন্য রা’দের উপর আক্রমণ না করে অভিনবকে টেনে নিয়ে যেতে ব্যস্ত। এই মৎসকন্যার শক্তির সাথে রা’দ পেরে উঠছে না। দুজনকেই গভীরে নিয়ে যাচ্ছে। নিঃশ্বাস আটকে আসছে দুজনের। রা’দ ভাবলো এভাবে তো দুজনেই শ্বাস আটকে মারা যাবে।রা’দ পকেটে থাকা ছোট ছুরিটা বের করে মৎসকন্যার গায়ে আঘাত করলো। সাথে সাথে রক্তে পানি লাল হয়ে গেল। মৎসকন্যা অভিনবের হাত ছাড়তেই রা’দ দ্রুত অভিনবকে নিয়ে উপরে উঠে এলো।পূর্ণাশা আর লাবন্য নৌকায় বসে কাদতেছে ওরা ভাবছে রা’দ আর অভিনব বুঝি মরেই যাবে।
কিন্তু ওদের ধারণা মিথ্যে করে দিয়ে রা’দ আর অভিনব ফিরে এসেছে। লাবন্য আর পূর্ণাশা মিলে অভিনবকে টেনে নৌকায় তুললো। ততক্ষনে অভিনব জ্ঞান হারিয়েছে। রা’দ নৌকায় উঠে এসে শুয়ে পড়লো। রা’দ হাপাচ্ছে ওর শরীরে এতটুকু শক্তি নেই।লাবন্য পূর্ণাশা বৈঠা হাতে নিয়ে নৌকা বাইতে লাগলো। পাড়ে এসে কয়েকজন লোকের সাহায্য নিয়ে অভিনবকে রুমে নিয়ে এলো।রা’দ ও অসুস্থ হয়ে পড়েছে তাই ওকেও রুমে নিয়ে গেলো।
লাবন্য পূর্ণাশা সারারাত ওদের পাশে বসে ছিল। দুজনে কোন কথাও বলেনি। কিন্তু দুজনের ভাবনা যে বইয়ে লেখা কথাগুলো সত্যি হলো কিভাবে?? সত্যি জলপরী আছে??অভিনব কি তাহলে এই জলপরীর মায়ায় পড়ে গেলো??এর পর কি হবে অভিনবের সাথে??
সকালে রা’দের আগে জ্ঞান ফিরলো।পূর্ণাশা রা’দের কাঁধে হাত রেখে বলল,”এখন কেমন ফিল করছিস??”
রা’দ এক হাতে মাথা চেপে ধরে বলল, “ভালো।”
লাবন্য বলল,”আমাদের সাথে এসব কি হচ্ছে রা’দ??ওই বইয়ের কথাগুলো সত্যি হয়ে গেল?? আমরাও কেন এখানে আসলাম?? কাজের তাড়নায় সব ভুলে গিয়েছিলাম উফফ,,,”
একহাতে মাথা চেপে ধরে বলল কথাগুলো।
“আমি কিছু বুঝতে পারছি না। বইয়ের কথাগুলো এভাবে ঠিক হলো??আর ওই মৎস্যকন্যা,,,,,”
পূর্ণাশা বলল,”আজ সকালে অভিনব বলেছিল একটা মেয়ের কথা। আমি তখন অতোটা ভেবে দেখিনি। আমরা এখন কি করবো রা’দ??না জানি অভিনবের জ্ঞান ফিরলে ও কিরকম রিয়্যাক্ট করবে??”
পূর্ণাশার কথার পরে আর কেউ কোন কথা বলল না। রুম জুড়ে পিনপতন নীরবতা।সবার মাথা বনবন করে ঘুরছে। এটা কোন গোলক ধাঁধায় পড়লো সবাই। এর থেকে বের হবেই বা কিভাবে??
অভিনবের জ্ঞান ফিরতেই আস্তে আস্তে উঠে বসলো।পূর্ণাশা দ্রুত গিয়ে অভিনবের পাশে বসলো অপরপাশে রা’দ বসলো। অভিনব চারিদিকে চোখ বুলিয়ে বলল,”আমি এখানে কেন??আর ওই মেয়েটা কোথায়??”
রা’দ বলল,”কোন মেয়েটা??”
“গতকাল রাতে দেখা হয়েছিলো। ইনফ্যাক্ট কাল সকালে দেখা হয়েছিলো। আমি তো ওই মেয়েটার সাথে যাচ্ছিলাম তাহলে এখানে কিভাবে এলাম?? আমাকে যেতে হবে ওই মেয়েটার কাছে।”
রা’দ একবার পূর্ণাশা আর লাবন্যর দিকে তাকালো তারপর বলল,”ওই মেয়েটা একটা মৎসকন্যা। আর ওই বইতে লেখা কথাগুলো সত্যি হয়েছে অভিনব। তোকে এখন ওই মেয়েটার থেকে দূরে থাকতে হবে। না হলে তোর প্রাণ সংশয়ে। প্লিজ বোঝার চেষ্টা কর।”
অভিনব রা’দের কথা শুনে রেগে বলল,”কিসব
আবোলতাবোল বলছিস??এসব মিথ্যা কথা তোদের মাথা ঠিক নেই। সর আমাকে যেতে দে মেয়েটা এখনও বোধহয় সমুদ্রের আশেপাশে আছে আমাকে খুঁজতে হবে।”
পূর্ণাশা বলল,”রা’দ ঠিক বলেছে। আমি কাল রাতে নিজের চোখে দেখেছি ওই জলপরীকে।ও তোকে মেরে ফেলবে অভিনব। তুই যাস না।”
লাবন্য বলল,”এরকম পাগলামি করিস না অভিনব। রা’দ চল আমরা আজকেই ফিরে যাই।”
অভিনব উঠে দাঁড়িয়ে বলল,”তোরা চাইলে যেতে পারিস কিন্তু আমি যাব না। ওই মেয়েটাকে নিয়ে তবেই ফিরব।”
লাবন্য রাগন্বিত স্বরে বলল,”তুই পাগল হয়ে গেছিস। জলপরী কখনোই ডাঙায় বসবাস করতে পারে না। তুই আমাদের সাথে যাবি ব্যাস।”
“আমি যাব না বললাম তো!!”
রা’দ অভিনবের হাত টেনে ধরে বলল,”ওই মৎসকন্যা তোকে পাগল করে দিয়েছে এরমধ্যেই না জানি এখানে থাকলে আরো কি কি হবে?? তুই চল আমাদের সাথে।”
অভিনবের হাত ধরে টান মারতেই রা’দকে জোরে ধাক্কা মেরে ফেলে দিলো। পূর্ণাশা এগিয়ে আসতেই সজোরে থাপ্পর মারলো পূর্ণাশার গালে। পূর্ণাশাসহ সবাই অবাক অভিনবকে দেখে। এই মুহূর্তে অভিনব একজন হিংস্র পশুর ন্যায় আচরণ করছে। দুদিনে এতটা পরিবর্তন!!অভিনব বাইরে যেতে নিলে রা’দ আবার ওকে টেনে ধরলো।অভিনব রা’দের গায়ে হাত তুলতে নিলে রা’দ ধরে ফেললো। পূর্ণাশা আর লাবন্য এসে অভিনবকে ধরে। পূর্ণাশা দ্রুত ব্যাগ থেকে নিজের দুটো ওড়না বের করে অভিনবের হাত পা বেঁধে ফেলে যাতে অভিনব বাইরে যেতে না পারে।
চলবে,,,,,,,,,,,