জিদ_অনুভূতির_অন্য_এক_স্তর #পর্ব_৫

0
486

#জিদ_অনুভূতির_অন্য_এক_স্তর
#পর্ব_৫
#লেখিকা :#Kaynat_Ash

তার অতীতের গ্রন্থটিতে যেমন সুন্দরতম কিছু অধ্যায় আছে, তেমনি আছে খুব বিভীষিকাময় কিছু অধ্যায়। যা সে মনে করতে চায় না।

এরপরও তা দুঃস্বপ্ন হয়ে বারবার ফিরে আসে তার মস্তিষ্কে।

একটা সময় ছিল যখন তার জীবন ছিল একটি সুন্দর স্বপ্ন। এই কাহিনী তো কেবল তার ছিল, শুধুই তার। এর সাথে এতজন, এতকিছু কেন যুক্ত হলো!

.
.
.

খুব ছোটবেলায় আইজা আর আমান ছিল একে অপরের ছায়া। এতটা ভালো বন্ধু ছিল তারা, যে কিছু না বলেও একে অপরের মনের অবস্থা, চাওয়া পাওয়া সবকিছু বুঝে ফেলত।
হয়ত তারা কখনো ভাবে নি তাদের দুজনকে কখনো আলাদা হতে হবে।

তবে মানুষ যা কখনো আগে থেকে ভেবে রাখে না, কদাচিৎ তা-ই ঘটে থাকে তাদের সাথে। আর এমনটাই হয়েছিল আমান আর আইজার সাথে।

যখন আইজার মায়ের ট্রান্সফার অন্য একটি শহরে হয়ে যায়, আর এই ট্রান্সফারের জন্য অনেক দিন ধরে তিনিই চেষ্টা তদবির করছিলেন। কারণ সেখানে সব ফেসিলেটি অনেক ভালো।

যদিও লায়লা ফারুক একসাথে একই শহরে পোস্টিং নেয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন, তবে লায়লার পোস্টিং ঠিকই হয়ে যায়, কিন্তু ফারুকের পোস্টিং হতে আরো সময় লাগবে। তারা দুজন অনেক আলোচনা করার পর ঠিক করেন যে, ফারুক এখানেই থাকবে যতদিন না তার ট্রান্সফার হচ্ছে।

লায়লা আর আইজা চলে যাবে সেই শহরে যেখানে তার ট্রান্সফার হয়েছে। আর ছুটি পেলে এখানে এসে ফারুকের সাথে ছুটি কাটাবে।

সেই প্রথম, আইজা আর আমানের বিচ্ছেদ ঘটে। এমন দুজন বন্ধুর যারা এক মুহূর্তের জন্যও একে অপরকে ছাড়া থাকতে পারত না।

আমান খুব কেঁদেছিল আইজা তাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছিল বলে। সে তার পরিবারের কাছে বায়নাও ধরে আইজাকে তাদের বাসায় রেখে দিতে। তবে সেটা সম্ভব ছিল না, সুতরাং আইজারও চলে যেতে হয়েছিল এই শহর ছেড়ে, আমানকে ছেড়ে।

দুটি পবিত্র হৃদয়ের গভীর আবেগ অনুভব করে সবার যদিও খারাপ লাগছিল তবে সেই মুহূর্তে কারোর কিছুই করার ছিল না।

তবে সুযোগ পেলেই আইজা চলে আসত আমানের শহরে। সে প্রায় বেশির ভাগ সময় এখানে এসেই কাটিয়ে দিত।

তবে ততদিন, যতদিন না তার বাবার ট্রান্সফারও হয়ে যায় এখান থেকে।
এরপর থেকে খুব একটা আসা হয়ে উঠত না তার এই শহরে, যেখানে আমানের বাস। যদিও আসার সুযোগ হলে একটাও মিস করত না সে।

এভাবেই বড় হতে লাগল তারা দুজন। তবে যত সময় যাচ্ছিল, তাদের দুজনের মধ্যে শুধু স্থানের দূরত্ব বাড়ে নি, মনের দূরত্বও বেড়ে চলেছিল। যার আরম্ভ আমানই করে।

সে আইজাকে আর আগের মতো গুরুত্ব দিত না, তাকে সময় দিত না।

দিন দিন তো অবস্থার এত অবনতি ঘটে যে আইজার মনে হত আমান তাকে যথারীতি এড়িয়ে চলে, সব বিষয়ে তাকে উপেক্ষা করে।

এছাড়া তিথি আর তিথির অন্যান্য বোনেরা তো অযথা আমানের পিছু লেগেই থাকত সবসময়, যেখানে যেখানে সে যায়, তাদের কেউ না কেউ ঠিকই সেখানে পৌঁছে যাবে। আমানের সাথে তাদের ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে আর এরচে বেশি কমছে আইজার সাথে।

এক মুহূর্ত আমানের সাথে শান্তিমত কথা পর্যন্ত বলতে পারত না সে। এছাড়া আমানের নিজেরও তো কোন আগ্রহ ছিল না তার সাথে কথা বলার ব্যাপারে। এরপরও আইজা নিজ থেকেই একতরফা চেষ্টা করে যেত।

আমানের এসব আচরণে তার কষ্ট হত খুব বেশি, মাঝে মধ্যে বুক ফেটে কান্না আসত। অভিমানও হত খুব। এরপরও সে রাগ করতে পারত না প্রিয় বন্ধুটির সাথে।

সবসময় কারণ খুঁজত, যে এত ঘনিষ্ঠ একটি সম্পর্কে কীভাবে এতটা দূরত্বের সৃষ্টি হয়ে গেল।

দোষ কি তার ছিল নাকি আমানের? নাকি সময়ের ব্যবধান আর স্থানের দূরত্বের?

চলবে…

{ আজ ইচ্ছে করেই পর্বটি ছোট দিয়েছি, আপনাদের কিছু কথা বলার জন্য। তবে এত চিন্তার কিছু নেই, আজকেই আরো একটি পর্ব পাবেন যেহেতু এই পর্বটি এত ছোট দিয়েছি। কথাগুলো পড়ার জন্য অনুরোধ করা হলো:

রমযানে সবার ব্যস্ততা আরো বাড়বে স্বাভাবিক, আপনাদের মনে হয় না আমিও এই সবার মধ্যেই পড়ি?!
আগেই বলেছি, ফ্রিল্যান্সিং এ শখের বশে লিখালিখির কাজ করি। বর্তমানে কিছু কাজ হাতে আছে, সেখানে সময় দিতে গিয়ে অর্ধেক সময় অনলাইনে অতিবাহিত হয়ে যায়। আবার ফেসবুকের জন্যও গল্প লিখি। যদিও আমি একজন স্টুডেন্ট, তবে এই সময়টায় পড়াশোনার তেমন একটা চাপ না থাকায়, সেই দিক দিয়ে একটু relaxed. আমার family তে বাবা মা,ভাই বোন, তাদের সবাইকেও সময় দিতে হয়, সবসময় ফোন আর ল্যাপটপ নিয়ে বসে থাকা কি সম্ভব হয়! হোস্টেল বা ব্যাচলর লাইফে সম্ভব হলেও family life এ তো সম্ভব না। তারা কিছু না বললেও খারাপ তো তাদেরও লাগবে।
আমি এটা বলছি না, আপনাদের গল্প দিব না, কিন্তু দয়া করে,অযথা complain করবেন না যে গল্প ছোট হয়, বা এক দুইদিন মিস হয়ে গেলে আমি নাকি গল্প দেরি করে দেই।এত কষ্ট করে গল্প দেয়ার উদ্দেশ্য তো কেবলমাত্র আপনাদের মত আন্তরিক পাঠকদের ভালোবাসা। সুতরাং এসব complain শুনতে খারাপ লাগার-ই কথা।
যাই হোক, এই পর্ব ইচ্ছে করে ছোট দিয়েছি, এই লেখাটি দেয়ার জন্য। সেই কারণে আজই গল্পের আরেকটি পর্ব দিয়ে দিব।
ধন্যবাদ সবাইকে 💞
ভালোবাসা রইলো 💞

এছাড়া আমার মনে হয়, আপনাদের জন্য তাড়াহুড়ো করে লিখতে গেলে গল্পের সৌন্দর্যটা নষ্ট হয়ে যাবে }

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here