#বিষ_করেছি_পান(৩৭)
(কপি করা নিষেধ)
রাত দুটো। বারান্দায় দু একটা ঝি ঝি পোকার আলো জ্বলছে। বাগানের লাইটের কিছুটা আলো বারান্দায় এসে পড়েছে। রেলিং এ মাথা ঠেকিয়ে পা মেলে বসে সোহাগ। তার বুকে মাথা রেখে বিভোরে ঘুমুচ্ছে রিতী। শরীরটা অর্ধেক সোহাগের উপর অর্ধেক ফ্লোরের উপর। কাঁদতে কাঁদতে এখানেই চোখ বুজে রিতী। সোহাগের ডাক কানে আসেনি। অনেক বার ডেকে সোহাগ রুমে চলে যায়। রিতীর জন্য অপেক্ষা করতে করতে কখন জানি চোখ লেগে আসে। হুট করে একটা আওয়াজে ঘুম ভেঙ্গে যায়। আওয়াজটা বারান্দা থেকেই আসে। রিতীর কথা মনে পড়তেই সোহাগ বিছানা ছেড়ে তাড়াহুড়ো করে বারান্দায় আসে। বারান্দার দরজা এখনো খুলা হয়নি। পর্দা সরিয়ে উকি দিতেই দেখে রিতী ফ্লোরে কোমড় বাঁকিয়ে ধনুকের মতো পড়ে পড়ে ঘুমুচ্ছে। মাঝে মাঝে আবার নড়ে চড়েও উঠছে। পাশেই দেখে একটা ফুলের টব নেই। সামান্য মাটি পড়ে আছে। রিতীর হাত লেগে নিশ্চয় টবটা পড়ে গেছে। রিতী আবার নড়ছে। মশার গুন গুন আওয়াজ হচ্ছে। সোহাগ ফোনের ফ্লাশ দিয়ে রিতীর উপর ধরে। নগ্ন ফর্সা হাতে টকটক করছে মশার কামড়ে লাল হয়ে যাওয়া অংশ। সোহাগ মশার স্পে টা ব্যান্টিলিটারের উপর দিয়ে বারান্দায় ফেলে। রিতীকে কয়েকবার ডাকে কিন্তু কোন সাড়া পায়না। অগত্যা সোহাগ রুম ছেড়ে বেরিয়ে আসে। বাসার ছাদে গিয়ে দেয়াল বেয়ে বারান্দায় আসে। রিতীকে আবার ডাকে। রিতী গভীর ঘুমে। হু হা কোনো সাড়াশব্দ নেই। সোজা করে বসিয়ে দিতেই আবার হেলে পড়ে। আবার সোজা করার চেষ্টা করতেই সোহাগের শার্ট চেপে ধরে বুকে হেলে পড়ে। সোহাগ উঠতে পারেনা। রেলিং এ পিঠ লাগিয়ে পা দুটো ছড়িয়ে দেয়। রিতী আরেকটু চেপে সোহাগের বুকের ভেতর ঢুকে পড়ে। সোহাগ রিতীকে দু হাতে আগলে নেয়। কিছু সময় রিতীর দিকে তাকিয়ে থেকে মুখটা সোজা করে আজলে তুলে নেয়। গালের উপর ঠোঁটের উপর বেবী হেয়ার গুলো একদম লেপ্টে গেছে। অভিমানী অভিমানটাও ঠিক ভাবে করতে পারেনা। যার উপর অভিমান করলো তাকে শাস্তি না দিয়ে নিজেকে এই ঠান্ডায় মশার শহরে শক্ত ফ্লোরে শুয়ে কষ্ট দিচ্ছে। কিন্তু মুখটা দেখো! কি সুন্দর নিশ্চিন্তে ঘুমুচ্ছে। সোহাগ বিরবির করে,
— কিন্তু তোমার কষ্ট আমাকে কেনো পোড়ায় পিরিতি? তুমি কি জানো সেকথা? তাই বুঝি সব সময় কাঁদো? যাতে আমারো কষ্ট হয়!
যে উত্তর দিবে সে এখন স্বামীর উম পেয়ে শান্তির ঘুমে রাজ্য পাড়ি দিচ্ছে। সোহাগের একটু অসুবিধা ই হচ্ছে। স্পে টা টেনে নিয়ে রিতীকে ধরে কমফোর্টেবল করে নেয় নিজেকে। সামান্য স্পে করে রিতীকে আরো ভালোভাবে বুকে টেনে নেয়। কপালে ছোঁয়ায় নিজের শুষ্ক ঠোট। মিনিট খানেক চেপে ধরে রাখে। যেনো কি শুষে নিচ্ছে। ঘুমন্ত রিতীকে মন ভরে দেখতে থাকে। সৌন্দর্যের মাঝে প্রত্যেকটা লোমকূপ যেনো একেকটা সৌন্দর্য। আঙুলের ডগায় ছুঁইয়ে কপাল থেকে গাল , গাল থেকে চিবুক, চিবুক থেকে গলা… আরেকটু নিচে নামতেই ঢুক গিলে। এতো কাছ থেকে দেখে যেনো তৃষ্ণা কমার পরিবর্তে আরো বেড়ে যায়। হুরহুর করে বাড়তে থাকে। বুকের খাঁজে কালো তিলটার উপর তাকিয়ে থাকতে থাকতেই সোহাগের গলা শুকিয়ে উঠে। চোখ সরিয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে হাঁসফাঁস করে। শিরশিরানি বাতাসে মুক্ত বারান্দায় মাঝরাতে সদ্য বিবাহিত বধু বুকের উপর লেপ্টে থেকে এভাবে দৃষ্টি টেনে নিলে কোন পুরুষ ই ঠিক থাকতে পারবেনা। তার উপর যদি হয় বউটা তার নেশা! শ্বাস প্রশ্বাসের অক্সিজেন! মরুভূমির মাঝে এক ফোঁটা জল! সোহাগ রিতী কানে ঠোঁট চেপে গভীরভাবে চুমু খায়। ফিসফিসিয়ে বলে, — একটুখানি দেবে তো জল!
বেচারা রিতী ঘুমের মাঝেই নড়েচড়ে উঠে।হালকা শীতে কাঁপছে সে। সোহাগ শরীরের নিচ থেকে শাড়ীর আঁচল টেনে কাঁধে তুলে পেঁচিয়ে নেয়। আটপৌরে করে পড়া শাড়ি অনেকটাই ছড়িয়ে গিয়েছে।পায় দুটো গুটিয়ে নেবার জন্য হাত দিতেই দেখে বামপাটা হাঁটু অব্দি বেরিয়ে আছে। শাড়ি ছায়া দুটোই একপাশ হয়ে উপরে উঠেছে। সেদিকে পাশের বড় গাছটার ছায়া পড়েছে। তবুও আবছা আলোয় দেখা যাচ্ছে। হাত বাড়িয়ে এই প্রথম রিতীর কোমল পা ছুঁয়ে দেয় সোহাগ। মুহুর্তেই নিজের চোখ দুটো বন্ধ করে নেয়। অদ্ভুত এক অনুভূতি। যা এযাবৎ কারো শরীরে হাত দিয়ে ফিল করেনি। হাত তুলে নিয়ে শাড়ী দিয়ে চটপট ঢেকে দেয় পা খানা। আকাশের দিকে তাকিয়ে জোরে শ্বাস ফেলে। নিজের সাথে প্রতিনিয়ত লড়াই করে যাচ্ছে। তার প্রবল আকাঙ্খা লোভ ছিলো রিতীর উপর। এমন ভাবতো একবার হাতের মুঠোয় পাক তৃপ্তি মিটিয়েই ছাড়বে। ছিন্ন ভিন্ন করে ফেলবে এই রুপ। যেনো দ্বিতীয় বার কোন আকর্ষন না জম্মে। অথচ মেয়েটা এখন তার বউ! আর দ্বিতীয় রাত মেয়েটার সাথে। অথচ তাকে আঘাত করতে পারছেনা। চেপে ধরতে পারছেনা নিজের সাথে। মনে হচ্ছে এ সেই চোখ জ্বালানো মোড়ের পাশ দিয়ে যাওয়া যুবতী পিরিতি নয়! এই পিরিতি সোহাগের রাজ্যের কোমল সাদা পায়রা খানি। যাকে ছুঁতে গেলেই হাত দুটো নরম হয়ে আসে। আজলা ভরে বুকে চেপে রাখতে ইচ্ছে করে। নরম আদরে ভরিয়ে দিতে ইচ্ছে করে। মুগ্ধ হয়ে দিনরাত তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে। সোহাগ চোখ ফেরায় না। এ চোখ ফেরাবারও না। সারারাত তাকিয়ে রইলেও এই তৃষ্ণা মিটবে না।
ভোরের আলোয় ঘুম ভেঙ্গে যায় রিতীর। পূর্বাকাশে লাল সূর্য উদয় চোখে পড়তেই চমকিত হয়। চোখ নামিয়ে নিতেই নিজের অবস্থান দেখে। ফর্সা লোমশ বুকের উপর মাথা দিয়ে শুয়ে আছে। একবার দুবার চোখের বল এদিক সেদিক ঘুরিয়েই মাথা তুলে। চোখাচোখি হয়ে যায় সোহাগের সাথে। সোহাগ হাসিমুখে তাকিয়ে আছে তার দিকে। সারারাত না ঘুমিয়ে পাহারা দিয়েছে নিজের বউকে। তাড়াহুড়ো করে উঠে দাঁড়ায় রিতী। সোহাগের দিকে একবার তাকিয়েই ঝটপট দরজা খুলে দৌড় দেয় অন্দরে। রিতীর এরকম হকচকানো ঝংকার তুলে সোহাগের ঠোঁটে। প্রাণ ভরে একচোট হেঁসে নেয়। যেনো মজার কোন ঘটনা ঘটেছে। সোহাগের জন্য ঘটনাটা বোধহয় মাজারই ছিলো!
ডাইনিং এ বসেছে বাড়িতে উপস্থিত সবলোক। নাস্তা রেডি করেছে হ্যাল্পিং হ্যান্ড। রিতীও হাত লাগাচ্ছে। এক কর্ণারে দাঁড়িয়ে পাউরুটিতে জ্যাম মাখিয়ে প্লেটে সাজিয়ে রাখছে। মাথায় বড় ঘোমটা টানা। আঁচলের নিচ দিয়ে চুল থেকে টুপ টুপ করে পানি পড়ছে। রমিজউদ্দিন রিতীকে দেখে প্রসস্ত হাসলেন। চেয়ার টেনে বসলেন। রিতীর উদ্দেশ্য বললেন,
— বাহ! আজ তাহলে আমার বউমার হাতের নাস্তা খেয়ে সকালটা শুরু করবো। খুব ভালো লাগলো।
রিতী সৌজন্য মূলক হাসলেন। সোহাগী বললেন,
— আম্মা! তোমার আব্বা বেরোবে। তার সামনে প্লেটটা দেও।
রিতী নাস্তা সাজিয়ে প্লেট সামনে দেয়। একে একে সবাইকে দেয়। ততক্ষনে কোথাথেকে এসে দাঁড়ায় সোহাগ। চেয়ারে টান দিয়ে বসে রিতীর দিকে তাকাতেই একহাতে বুক চেপে ধরে। সবার হাসি হাসি মুখ দেখে বিরবির করে,
— কিছুইতো করলাম না। এতো সকালে গোছল করেছে কেনো?
খাওয়া শেষে সোহাগ রিতীর হাত ধরে টেনে ঘরে নিয়ে আসে। মেয়েরা শিষ দিতেই সোহাগীর ধমকে চুপচাপ খাওয়া ছেড়ে উঠে। এভাবে রুমে আনায় রিতীর একটু একটু লজ্জা লাগছে। শিষটা কানে যেতেই বেশী বেশী লজ্জা পেতে লাগলো। শেষে সোহাগীর কথাটা কানে এলো,
— আমার পোলা আর পোলার বউ আলহামদুলিল্লাহ সব মান অভিমান শেষ করে সংসার শুরু করেছে। এবার আমার পোলা আর বাইরে থাকবোনা ইনশাআল্লাহ। বউয়ের জন্য ঘর সংসারে মন বসবো।
রিতী সোহাগের দিকে তাকালো। মনের ভেতর প্রশ্ন উঠলো। সে কি সত্যিই সংসার শুরু করলো? মান অভিমান ই বা কোথায় ছিলো? এই লোকটার সাথে কিভাবে সংসার সম্ভব? সব কিছুই বা কেনো রিতী মেনে নিচ্ছে? মানবে নাইবা কেনো? বিয়েতো ঝোঁকের মাথায় নিজেই করেছে। এ বাড়িতে আছে বলে নিজেকে নিয়ে ভয়টাও নেই। তার উপর সোহাগের আচরণে বিস্তর পরিবর্তন! সোহাগ তো নাটকীয় নয়। তাহলে কি সত্যিই পরিবর্তন দেখছে? রিতীর চোখদুটো জলজল করে উঠলো। সোহাগকে কিছুই বললোনা। বরং সোহাগ ঘরে নিয়ে গিয়ে রিতীকে মেঝেতে দাড় করিয়ে চেয়ারের উপর মেলে দেওয়া টাওয়েল টা নিয়ে এলো। একটানে ঘোমটা খুলে ভেজা চুলের উপর টাওয়েল পেঁচিয়ে ধরলো। নম্র সুরে বললো,
— ঠান্ডায় গোছল করে চুল না মুছেই এতোক্ষন আছো। ঠান্ডা লেগে যাবে তো।
রিতী উত্তর দিলো না। ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো। হুট করে অনুভব করলো পিঠের উপর ব্লাউজের হুক গুলো একটা একটা করে খুলে যাচ্ছে। রিতী দু হাতে চেপে ধরলো।
— ব্লাউজ তো ভিজিয়ে ফেলেছো। তাড়াতাড়ি খুলো।
রিতী সরে দাঁড়ায়। সোহাগের দিকে তাকিয়ে রাগি লুক দেয়। লোকটা যতই নরম হবার চেষ্টা করুক এর স্বভাব কখনো পাল্টাবেনা। আসলেই ব্লাউজটা ভিজে গেছে। রিতী ছোট্ট করে ভেংচি কেটে আরেকটা ব্লাউজ নিয়ে বাথরুমে চলে গেলো। সোহাগ হাসি হাসি মুখে আয়নার সামনে গিয়ে চুলে আঙুল চালিয়ে সেট করে নিলো। রিতী আশেপাশে থাকলেই মনটা ফুরফুরা লাগছে। বিড়াল বউয়ের ডাইনি লুক! বাড়িতে এখানে সেখানে দৌড়াদৌড়ি মুভমেন্ট গুলো যাস্ট পাগল করে দিচ্ছে!
আজ আবারো আত্ত্বীয় এসেছে। রিতীর সাথে কথা বলে তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছে। সবাই রিতীর প্রশংশায় পঞ্চমুখ। কেউ একবারো রিতীকে বাড়তি কোন প্রশ্ন করছে না। একবারো রিতীর পরিবারের কথা তুলছেনা। তাঁদের যেনো রিতীকেই প্রয়োজন ছিলো। রিতীকে পেয়ে গেছে। আর কিছুই লাগেনা। প্রত্যেকটা আত্ত্বীয় কি মিষ্ট!
রিতীকে সোফায় বসিয়ে দুই ননদে দুই হাতে মেহেদি লাগাচ্ছে। আর দুই ননদে দুই পায়ে মেহেদী লাগাচ্ছে। গতকাল রিতীকে মেহেদী পড়ানো হয়নি। আজ ভাইয়ের ট্রিটে শপিং করে আসার সময় এক বক্স মেহেদী নিয়ে আসছে। এখন রিতীকে চেপে ধরে হাত পা নিয়ে বসেছে। আর দুজন রিতীর কোথায় কি অসুবিধা হচ্ছে কোথায় চুলকাচ্ছে সেদিকে নজর রাখছে। এই মুহূর্তে নিজেকে বন্দীদশা এক রাণী মনে হচ্ছে। সবকিছুর মাঝেই এক প্রশান্তি খুঁজে পাচ্ছে। অস্থিরতার লেশ টুকু নেই। সব অনিশ্চয়তা অস্থিরতা ভুলে রিতী প্রাণ ভরে শ্বাস নিচ্ছে। সোহাগ নেই। কোথায় গেছে রিতী জানেনা। জানাতেও ইচ্ছা করছেনা। শুধু ইচ্ছা করছে এখান থেকে উঠতে। একঘন্টার বেশী হবে এক ভাবে বসে আছে। কোমড় লেগে গেছে। উঠতে হবে। কিন্তু এদের মেহেদী পড়ানো শেষ হয়নি।
— কি করছিস তোরা?
সোহাগ এসেছে। পেছনে শ্বশুরকেও দেখা যাচ্ছে। ননদিনীরা হেসে বলে,
— মেহেদী পড়াচ্ছি ভাইয়া। দেখো দুই হাতেই তোমার নাম লিখেছি কত সুন্দর করে।
সোহাগ এগিয়ে এলো। কিন্তু হাতে নিজের নামে মেহেদী টা দেখলো না। তাড়া দিয়ে বললো,
— যা রুমে গিয়ে মেহেদী পড়া। ড্রয়িং রুমে এভাবে বসছিস কেনো? যেখানে মানুষের আনাগোনা!
— আমরাতো…
— বুঝছি। আর যেনো না হয়। উঠ। রুমে গিয়ে পড়া।
রিতী সোহাগের কথায় অনেক খানি অবাক হয়। নিজের দিকে একবার দেখে নেয়। শাড়িটা পায়ের বেশ উপরেই উঠানো হয়েছে। মাথায় ঘোমটাও নেই। তবে সুশীল আছে যতটুকু থাকা যায়। এইটুকুতেই এতো তাড়া! এতো পসেসিভনেস! রিতী ঘোর সন্দেহে সোহাগের দিকে তাকায়। সোহাগকে বিশ্বাস করতে পারছেনা।করার কথাও না। যার মনে প্রত্যহ এতো এতো তাকে নিয়ে খারাপ ভাবনা সে লোকের ওভাব পসিসেভনেস মেনে নেবার কথাও না। হারামীটার প্রেম একেবারে উথলে পড়ছে। একবার ভোগ করবে তারপর প্রেম সাগরে গিয়ে পড়বে। চোখ দুটো ভরে আসে রিতীর। সেই চোখের জল আবার সোহাগ ই মুছে দেয় টিস্যু দিয়ে।
আজকেও ডিনারের পর আত্ত্বীয়রা চলে যায়। আজকের ডিনার রিতীই তৈরী করেছে। তার আনএক্সপার্ট হাতে পাঁচটি পদ রান্না করেছে। সব গুলো ঠিকঠাক হলেও গরু মাংসে একটু ঝাল বেশি দিয়ে ফেলেছে। গরু মাংসা কেউই খেতে পারেনি। শুধু খেয়েছে সোহাগ। সোহাগ যে একটা ঝালখোর রিতী আগে জানতো না। জানার কথাও না। সবাই প্রশংশা করলেও রমিজউদ্দিন মুখে কিছু না বলে হাতে তিনটা হাজারের নোট গুঁজে দেয়। সোহাগের খাওয়ার ধরন ই রিতীর নি:শ্বব্দে প্রসংশা করে গেছে। রান্নাঘরে থাকতে থাকতে রিতী ঘেমে গেছে। এখন ঘাম শুকিয়ে শরীর আঠা আঠা করছে। কাবার্ড থেকে শাড়ি নিয়ে রিতী হট সাওয়ার নিয়ে নেয়। রুমে এসে চুল মুছতে মুছতে গিয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। ফোনের টুন পেয়ে একদিন পর তার ফোনের কথা মনে পড়ে। দৌড়ে গিয়ে ব্যাগ থেকে ফোনটা বের করে। বাড়ি থেকে কল! ধরতে ধরতেই কেটে যায়। গতকাল সকালে হয়েছিলো বাড়িতে কথা। এখন রাত! এতোক্ষণ! একশত আটটা মিসকল! কলিজা শুকিয়ে যায় রিতীর। আবার দৌড়ে গিয়ে বারান্দায় দাঁড়ায়। আল্লাহ আল্লাহ বলতে বলতে বাড়ির নাম্বারে একহাতে বুক চেপে কল লাগায়।
চলবে,
লাবিবা তানহা এলিজা