মেঘলা আকাশে রুদ্রই ভরসা উম্মে হাবিবা তনু পার্ট:৩১

0
334

মেঘলা আকাশে রুদ্রই ভরসা
উম্মে হাবিবা তনু
পার্ট:৩১

সাবিবা মেঘলার সামনে ঢাল হয়ে দাড়িয়ে আছে,যাতে মেঘলা অবধি সীমান্ত পৌঁছাতে না পারে।
কিন্তু সেতো বৃথাই চেষ্টা।
মাতাল সীমান্তর মাথায় এখন একটাই জিনিসই ঘুরছে,তার এখন মেঘলাকে নিয়ে যেতে হবে।আর সে তাই করছে।
সাবিবাকে সরিয়ে দিয়ে মেঘলার হাত ধরে টানতে টানতে সামনে এগুতে শুরু করলো।
বার বার চেষ্টা করেও সাবিবা পারছে না আটকাতে।
মেঘলা বারবার আপু,আপু বলে কাদঁছে।

সীমান্ত ওর রুমে এনে মেঘলাকে ছিটকে ফেলে দিল।
ততক্ষনে রিনা সীমান্তর ঘরে বসে সব দেখছে আর মজা নিচ্ছে।কিন্তু সে অভিনয়টা বেশ ভালো পারে।সীমান্তর উপস্থিতি বুঝে ঠিক আবার কাদো কাদো মুখ করে নেকামি আরম্ভ করলো।
সাবিবা যেনো এবার বেশ ভালো করেই বুঝতে পারছে ঘটনার সূত্রপাত কোথায়।তাই সে নিরব হয়ে বুঝার চেষ্টা করছে অমানুষটা কি করতে চাইছে…..তারপর কিছু একটা আজ করবেই করবে,যা রাখছে আল্লাহ কপালে তাই হবে।মনে মনে ঠিক করে নিল সাবিবা।

টলতে টলতে পরে যাচ্ছে তবু শক্ত করে ধরে আছে মেঘলার হাতটা।এতটাই শক্ত করে চেপে ধরেছে যে ওর হাতে আঙ্গুলের দাগগুলো বসে যাচ্ছে।
অনবরত কেঁদেই চলেছে মেয়েটা।

ক্ষমা চা ওর কাছে।
……
ক্ষমা চা….
আমি কোনো রাস্তার মেয়ের কাছে ক্ষমা চাবো না।
দেখেছো তো বেবী আবার আমাকে অপমান করছে।
ক্ষমা চা এখনই….
এক সেকেন্ড….আমার বোন কেন ঐরকম একটা মেয়ের কাছে ক্ষমা চাইবে???
এক জনের নাটক শেষ হচ্ছে না আবার আরেকজনের এন্ট্রি….হুঃ।তিরস্কারের ভঙ্গিতে রিনা কথাটা বললো।
কিন্তু সাবিবা তা গায়ে না লাগিয়ে মেঘলাকে সীমান্তর থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো।
কিন্তু না পারছে না সীমান্তর সাথে।

সীমান্ত এখন আর কিছু বলছে না।শুধু মেঘলার দিকে নেশা ভরা চোখে তাকিয়ে আছে।বহুদিন পর ওর চোখে মেঘলাকে মোহময়ী মনে হতে লাগলো।অশ্রুসিক্ত ভেজা চোখ দেখে ইচ্ছে করছে সে চোখের অতল গহ্বরে ডুব দিতে।ভয়েসিক্ত কাপা কাপা ঠোট যেনো বারবার কাছে টানছে।নিজের অজান্তেই মেঘলার ঠোঁটের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো।
কিন্তু না তাতে বাদ সাদলো সাবিবা।
এই জানোয়ার একদম ছুবিনা আমার বোনকে।বলেই মেঘলাকে টেনে ওর থেকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করল।
তবে কাজের কাজ কিছুই হলো না।উল্টো সীমান্তর সাথে একপ্রকার দস্তাদস্তি শুরু হয়ে গেল।
সীমান্তের এখন মেঘলার নেশা পেয়ে বসেছে।তার এখন মেঘলাকেই চাই যেভাবেই হোক।রিনার প্রয়োজনও নেই।
সাবিবাকে জোরে এক ধাক্কা দিলো।
এত জোরেই ধাক্কা দিলো যে দরজার পাশে গিয়ে ছিটে পড়লো।সাবিবা কোনরকমে উঠে আবার চেষ্টা করলো ছাড়ানোর।কিন্তু এবার সীমান্ত প্রচন্ড জোড়ে ধাক্কা দিলো।ঠিক ধাক্কা না মনে হলো ছুড়ে ফেলে দিল।

দরজার সাথে প্রচন্ড জোড়ে ধাক্কা খেয়ে মাথা ফেটে গেলো সাবিবার।উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলো এবং পরক্ষণেই সেন্স হারালো।
মেঘলা চিৎকার করে কাদছে।বারবার সীমান্তর থেকে ছুটতে চাইছে কিন্তু পারছে না।অঝোরেই কেঁদে চলেছে মেঘলা।ওর জন্য আজ আপুর এই অবস্থা।

সীমান্ত এইবার রিনার দিকে তাকিয়ে প্রচন্ড এক ধমক দিয়ে সাবিবাকে দেখিয়ে বললো,একে নিয়ে এক্ষুনি এই রুম থেকে বের হ।
রিনা ধমকের শব্দে কেপে উঠলো।একদ স্তব্ধ হয়ে গেছে সে নিজেও।
ওভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে সীমান্ত আবার ধমক দিল।
রিনা আর দাড়িয়ে না থেকে সাবিবাকে প্রায় টেনে হিচড়ে রুম থেকে বের করলো।

রিনা নিজেও বুঝতে পারেনি এই লোকটা এত ভয়ংকর।ও ভেবেছিল হয়তো ওর বউরা ওকে সুখ দিতে পারেনা তাই হয়তো এমন।ভেবেছিল ওদের দুইজনের সাথে মজা নিবে।কিন্তু তার ফল যে এত ভয়ংকর হবে বুঝতে পারেনি।মানুষটা এত খারাপ বলেই বাহিরের সুখ খুঁজে।রিনার জ্ঞানহীন সাবিবার জন্য মায়া হলো।তাই তার সেন্স ফেরানোর চেষ্টা করছে।তবে ওর ঐ মেয়েটার জন্য খুব বেশি মায়া হচ্ছে।যাকে কিনা তার নিজের স্বামীই ধর্ষন করছে,বৈধ ধর্ষণ।ওদের সম্পর্ক হালাল হলেও জোরপূর্বক স্ত্রীর সাথে…খুব কষ্ট হচ্ছে,মেয়েটার চিৎকার যেনো এসে একদম বুকে লাগছে।

মেঘলার বুকটা ফেটে যাচ্ছে।এইসব ও আর নিতে পারছে না।রিনা বেরিয়ে যেতেই সীমান্তর হাতে কামড় বসিয়ে দিল।কিন্তু সীমান্ত এতটুকু টল্লো না পর্যন্ত।মেঘলাকে ওভাবে ধরেই রুমের দরজা আটকে দিল।
মেঘলা বৃথাই চেষ্টা করছে ছুটার।কিন্তু বিশেষ লাভ হলো না।
মেঘলাকে বিছানার ওপর ছুড়ে ফেলে দিয়ে ওর উপর চড়াও হলো সীমান্ত।
মেঘলার দম ফাটানো চিৎকার ছাড়া আর কিছুই শুনা যাচ্ছে না এই মুহূর্তে।মেয়েটার যেনো প্রাণটাই বেড়িয়ে যাচ্ছে।কিন্তু অমানুষটার সেদিকে খেয়াল নেই।সে মেতে উঠেছে আদিম অকৃত্তিম খেলায়।যেনো কতজনমের পিপাসা মিটিয়ে নিচ্ছে আজ।

চলবে…….

(প্রিয় পাঠক পাঠিকা বৃন্দ, আস্সালামুআলাইকুম।একটি গল্প লিখা হয় আপনাদের ভালো লাগার জন্য।সে গল্প পরে যখন আপনাদের সাড়া পাওয়া যায় না তখন লিখার উৎসাহটাই নষ্ট হয়ে যায়।আপনারা যত উৎসাহ দিবেন গল্প লিখায় তত আগ্রহ বাড়বে এবং গল্প তত সুন্দর হবে।তাই গল্প যদি আপনাদের ভাল লাগে এবং পরবর্তী পর্ব পেতে চান তবে অবশ্যই গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার অনুরোধ রইলো।ধন্যবাদ।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here