তৃপ্তিতে_আসক্ত_নিদ্র🧡 #DcD_দীপ্ত #পর্ব__________59

0
97

#তৃপ্তিতে_আসক্ত_নিদ্র🧡
#DcD_দীপ্ত
#পর্ব__________59

সকাল সারে ৭টা বাজে…..……
তৃপ্তি কফির কাপ হাতে নিয়ে নিজ রুমের বারান্দায় রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছে । চার পাসে তাকিয়ে দেখবার মতো তেমন কিছু নেই । বড় বড় দালান বাড়ি আর নিচে গাড়ির ফো ফা শব্দ । থেকে থেকে কিছু চড়ুই পাখি কিচিরমিচির শব্দ করে এদিক থেকে ওদিক ছুটে বেরাচ্ছে । তারা তাদের নিজ খাবার খুজতে বেস্থ । নভেম্বর মাস শেষ হতে চলছে । সকালের দিক’টা কুয়াশায় ভরে উঠে । তৃপ্তি কফির কাপ হাতে নিয়ে দাড়িয়ে আছে । গরম কফির কাপ থেকে ধোঁয়া উরছে । এই সময়’টায় অন্যরকম ফিলিংস হচ্ছে তৃপ্তির । হঠাৎ কোমড়ে ঠান্ডা হাতের স্পর্শ লাগতে থম-থমি খেয়ে কেপে উঠলো সে । ঘাড়ে ঠান্ডা শীতল এক জোরা ঠোঁট এসে ঠেকলো । তৃপ্তি ঘার মুচড়ে ঠোঁট জোরা নিজের ঘার থেকে ছারিয়ে নিলো । এরপর পিছনে ঘুরে লোকটির দিকে তাকিয়ে । নিদ্র মুচকি হেসে তৃপ্তিকে আবার সামনের দিকে ঘুরিয়ে পিছন থেকে নিজের সাথে মিসিয়ে নিলো । তৃপ্তি ঠোঁট টিপে হেসে বলে উঠলো ।

:+এতো সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে গেলে যে আজ ।(তৃপ্তি)

:+একা একা এই শীতে আর ঘুমতে ভালো লাগছে না । তাই উঠে গেছি । কেন তোর কোনো সমস্যা ।(নিদ্র)

তৃপ্তির কথা শুনে, নিদ্র এই বলে নিজের হাত দু’টো ধিরে ধিরে তৃপ্তির পেটের উপর নিয়ে এলো । তৃপ্তি মোচড় দিয়ে চোখ মুখ খিচে বলে উঠলো ।

:+ঊহ,,,ভাইয়া । তোমার হাত দু’টো ভিষণ ঠান্ডা,, সরাও,, ঠান্ডা লাগছে আমার ।(তৃপ্তি)

নিদ্র তৃপ্তির কাধে থুতনি ঠেকিয়ে আদুরে গলায় বললো ।

:+ঠান্ডা হাত দু’টো গরম করতেই তো এখানে আসা । আমার হাত দু’টো গরম না হওয়া প্রজন্ত আমি তোকে ছারছি না ।(নিদ্র)

নিদ্রর কথা শুনে, তৃপ্তির মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি নাড়া দিলো । তবে এমন’টা করলে যে নিদ্র বেথ্য পাবে । কিন্তু এখন কিছু করার নেই তৃপ্তির । এই হাত দু’টোর অত্যাচার থেকে বাচার এটাই এখন এক মাত্র উপায় । তৃপ্তি গরম কাপের নিচ’টা নিদ্রর হাতে ছুয়িয়ে দিলো । নিদ্র ‘ঊহহ’ করে,,, তৃপ্তির থেকে ছিটকে সরে এলো । তৃপ্তি খিলখিলিয়ে হেসে উঠলো । নিদ্র চোখ গরম করে তাকালো তৃপ্তির দিকে । তৃপ্তি সেদিকে পাত্তা না দিয়ে বললো ।

:+আমার সাথে এখন থেকে আর এসব করতে পারবে না । আমার পারমিশন ছারা এখন থেকে আর আমাকে ছুতে পারবে না । ছুলে আজকের মতো এমন গরম ছেঁকা দিবো । তখন আমাকে দোষ দিতে পারবে না । আমি কিন্তু আগেই বলে দিচ্ছি ।(তৃপ্তি)

নিদ্র তৃপ্তির কথা শুনে হাবলার মতো তাকিয়ে আছে । এই মেয়ে বড়দের মতো কথা বলতে শিখলো কবে । তার মানে এখন থেকে একে ছুতেও পারমিশন লাগবে । নিদ্র মাথা চুলকে রিনরিনিয়ে বললো ।

:+আজ একটু জরিয়ে ধরি । ঠান্ডা লাগছে ।(নিদ্র)

:+এটা এখন সম্ভব না । কারন তোমার মতো ঠান্ডা পানি?? আমার মতো গরম আগুনের কাছে আসতে পারে না । আসলে আমার আগুন নিভে যাবে ।(তৃপ্তি)

নিদ্রর রিনরিনিয়ের কথা গুলো শুনে তৃপ্তি এগুলো বললো । নিদ্র চোখ বড় বড় করে তৃপ্তির দিকে তাকালো । তৃপ্তিকে যত দেখছে তত অবাক হচ্ছে নিদ্র । এই কি সেই মেয়ে?? যাকে গ্রাম থেকে হাবা গোবা এনেছে । নিদ্র মুচকি হেসে তৃপ্তি দিকে পা বারিয়ে বললো ।

:+তাহলে তো আগুন নিভাবে হয় ।(নিদ্র)

কথা’টা শুনে, তৃপ্তি শুকনো ঢোক গিললো । নিদ্রর বরফের মতো ঠান্ডা শরীরকে তৃপ্তি এখন কোনো ভাবেই সহ্য করতে পারবে না । তৃপ্তি ফ্লোরে কফির কাপ’টা রেখে রুমের দিকে যেই দৌড় যাবে?? ওমনি নিদ্র তৃপ্তির হাত ধরে হেচকা টান মেরে নিজের সাথে মিসিয়ে নিলো । তৃপ্তি উঁহু উঁহু করে বলে উঠলো ।

:+ইসস এতো ঠান্ডা কেন তোমার শরীর ।(তৃপ্তি)

নিদ্র কিছু না বলে, চট করে তৃপ্তিকে কোলে তুলে নিলো । এরপর রুমের দিকে পা বারিয়ে বললো ।

:+শাওয়ার নিয়েছি । তাই শরীর এমন ঠান্ডা হয়ে আছে ।(নিদ্র)

নিদ্রর কথা শুনে, তৃপ্তি অবাক দৃষ্টিতে নিদ্রর দিকে তাকালো । নিদ্র তো কোনো সময় সকালে শাওয়ার নেয় না । তাহলে আজ হঠাৎ করে কি হলো যে এতো সকালে শাওয়ার নিলো । তৃপ্তির ভাবনার মাজেই নিদ্র তৃপ্তিকে এনে বেডে ফেললো । এরপর নিজেও বেডের উপর উঠেলো । আর তৃপ্তিকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে কম্বল গায়ে জরিয়ে নিলো । তৃপ্তি কেপে উঠলো নিদ্রর ঠান্ডা শরীর আর হাতের ছোঁয়া পেয়ে । পা দু’টো তো পেচিয়েই রেখেছে শোয়ার পড় থেকে । নিদ্রর বরফের মতো ঠান্ডা পা দু’টো, তৃপ্তির আগুনের মতো গরম পা দু’টোকে বরফ বানিয়ে দিচ্ছে । তৃপ্তি নিদ্রর দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকালো । নিদ্র মৃদু হেসে বললো ।

:+তুই না আগুন । মানুষ তো শীতের দিনে আগুনের কাছেই আসে গরম হতে । তাই আমিও তোর কাছে এলাম । তোর আগুন নিভাতে । কিন্তু না,, আমি তোর আগুন নিভাবো না । তোর আগুন নিভে গেলে? আমি গরম হবো কি করে । তাই তোর আগুন আরো একটু বাড়িয়ে দিতে কাঠ দেবো এবার ।(নিদ্র)

এই বলে নিদ্র তৃপ্তিকে এরো একটু নিজের সাথে মিসিয়ে নিলো । তৃপ্তি নিদ্রর কথা গুলো কিছু বুঝতে পারলো না । সে ফেলফেল করে নিদ্রর দিকে তাকিয়ে রইলো । হঠাৎ নিদ্র নিজের ঠোঁট জোরা দ্বারা তৃপ্তির ঠোঁট জোরা বন্ধ করে নিলো । তৃপ্তি কেপে উঠে চোখ খিচে বুঝে নিলো । নিদ্রর ঠান্ডা ওষ্ঠেদ্বর, তৃপ্তির তপ্ত উষ্ণ ওষ্ঠেদ্বরের ভিতর চলে গেল । তৃপ্তি নিদ্রর পিঠের টি-শার্ট খামছে ধরলো । আজ অনেক দিন পর আবার এই ছোয়া পেলো সে । কান দু’টো কেমন গরম হয়ে উঠলো তৃপ্তির । বুকের ভিতর ধুপপুক ধুপপুক ঢাক ডোলের মতো বাজাতে লাগলো । হঠাৎ তৃপ্তির কিছু একটা মনে হতে নিদ্রকে নিজে থেকে ধাক্কা মেরে সরানোর চেষ্টা করলো । কিন্তু নিদ্র শক্ত করে জরিয়ে ধরে আছে । কিছুখন পর নিদ্র তৃপ্তির ঠোঁট জোরা থেকে নিজের ঠোঁট জোরা আলাদা করলো । এরপর তৃপ্তির নাকের সাথে নিজের নাক ঘসে বললো ।

:+কফি’টা তো ঝোস হয়েছে । কে বানিয়েছে ।(নিদ্র)

কথা’টা শুনে তৃপ্তির লজ্জায় কান দু’টো আরো গরম হয়ে উঠলো । সে চোখ বোঝা অবস্থাই মাথা নিচু করে নিদ্রর বুকে দিকে নিয়ে রিনরিনিয়ে বললো ।

:+আমি বানিয়েছি ।(তৃপ্তি)

কথা’টা শুনে চট করে তৃপ্তিকে ছেরে দিয়ে শোয়া থেকে উঠে বসলো নিদ্র । এরপর বেড থেকে নেমে সোজা বারান্দায় চলে আসলো । কফির কাপ’টা ফ্লোরে কেমন চুপ করে বসে আছে । নিদ্র কাপ’টা হাতে নিয়ে এক’টা চুমুক দিলো । অতপর মুচকি হেসে রুমের ভিতরে আবার আসলো । তৃপ্তি চোখ গোল গোল করে নিদ্রর দিকে তাকিয়ে আছে । নিদ্র ডোন্ট কেয়ার ভাব দেখিয়ে বললো ।

:+কফি’টা সেই মঝা হয়েছে । কাল থেকে প্রতিদিন সকালে আমার জন্য এক কাপ কফি বানিয়ে আমার রুমে নিয়ে আসবি ।(নিদ্র)

বলতে বলতে তৃপ্তির বেডের পাসে এসে দারালো নিদ্র । তৃপ্তি ভাবনার মাঝ থেকে বেরিয়ে কিছু বলতে যাবে??? তার আগেই নিদ্র হাতের একটা আঙুল তৃপ্তির ঠোঁটে রাখলো । তৃপ্তি কথা বন্ধ হয়ে গেল । নিদ্র ঝুকে তৃপ্তির কপালে একটা চুমু খেয়ে বললো ।

:+আজ সারাদিন বাসায় আসতে পারবো না । টেককেয়ার ওকে ।(নিদ্র)

এই বলে নিদ্র কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে তৃপ্তির রুম থেকে বেরিয়ে গেল । তৃপ্তি ঠাই বসে রইলো । তার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে । এতোখন তার সাথে এগুলো কি হয়ে গেল ভাবছে সে । নিদ্র তার খাওয়া কফি খাচ্ছে । ভেবেই লজ্জা কিতো হাসি দিয়ে একটা বালিশ মুখের উপর এনে ধাপ করে শুয়ে পড়লো তৃপ্তি ।

———————————————-

বিকেল ৪টা বাজে……………
নিদ্র ক্লাবে আসলো । ক্লাবের ভিতরে প্রবেশ করে অবাক দৃষ্টিতে সামনের দিকে তাকিয়ে রইলো নিদ্র । কারন তার সামনে সাব্বির, রাশেদ, আর সুজন বসে আছে । নিদ্রকে দেখে সাব্বির, রাশেদ আর সুজন এসে মারতে লাগলো । রাশেদ রাগে গজগজ করতে করতে বললো ।

:+সালা,,, সেই সকাল ১১টা থেকে তোর জন্য ওয়েট করছি । আর এখন বিকেল ৪টা বাজে । আজ তো তোরে,,,,।(রাশেদ)

:+আমি কি যানতাম? যে তোরা আজ আসবি । অফিসে একটা কাজ ছিল । তাই অফিসে যেতে হয়েছে আজ । কাল রাতেও তো তোদের সাথে কথা বললামা । তখন তো তোরা কিছু বলিস-নি ।(নিদ্র)

সাব্বির, সুজন,রাশেদকে নিজের থেকে ছারিয়ে বললো নিদ্র । সুজন হা হা করে হেসে উঠে বললো ।

:+তোদের সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য তোদের কিছু বলি-নি । কিন্তু দেশে এসে তোকে অনেক গুলো কল করছি । তোর ফোন অফ কেন?? (সুজন)

সুজনের কথা শুনে নিদ্র একটা চেয়ার টেনে বসে বললো ।

:+তোরা দেশে আসলি কখন ।(নিদ্র)

:+সকাল ৯টায় এয়ারপোর্টে । তারপর এখানে আসতে আসতে প্রায় ১১টা বেজে গিয়েছিল ।(সাব্বির)

নিদ্রর কথা শুনে সাব্বির বললো । রাশেদ একটা চেয়ার টেনে বসে বললো ।

:+বাদ দে । এখন বল তোর ফোন অফ কেন ??(রাশেদ)

নিদ্র রাশেদের দিকে তাকিয়ে বললো ।

:+অফিসে গিয়ে ছিলাম । পাপার একটা কাজ পড়ে গেছিল । তাই আমাকে আজ অফিসে যেতে হয়েছে । ফোন’টা ভুলে বাসায় ফেলে আসছি ।(নিদ্র)

এই বলে নিদ্র চেয়ারে হেলান দিয়ে ক্লান্তির একটা নিশ্বাস ছারলো । সাব্বির আর সুজনও চেয়ার টেনে বসলো । নিদ্র সবার দিকে সন্দেহ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো ।

:+তা তোরা হঠাৎ করে দেশে কেন ??(নিদ্র)

নিদ্রর কথা শুনে, সাব্বির বললো ।

:+হঠাৎ কোথায় । তুই কি ভুলে গেছিস । যে আমরা সবাই মিলি “হেপি নিউ ইয়ার” এক সাথে করবো বলছি ।(সাব্বির)

সাব্বিরের কথা শুনে, নিদ্র দু’হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে বললো ।

:+আসলেই ভুলে গেছিলাম । আমার ভিষন খিদে পেয়েছে । দুপুরে খাওয়া হয়-নি । ভেবে ছিলাম বাসায় গিয়ে খাবো । কিন্তু এখন আর বাসায় যাবো না । রেস্টুরেন্ট থেকে কিছু খেয়ে নেবো । তোরা কিছু খাবি ।(নিদ্র)

:+আরে না আমরা একটু আগে খেয়ে আসছি । তুই গিয়ে খেয়ে আয় যা ।(রাশেদ)

এতোখন প্রজন্ত রাহুল আর জেক চুপ ছিল । এবার জেক আড়মোড়া ভেঙে, হাত উপরে তুলে বললো ।

:+আমারো খাওয়া হয়নি ভাই । আমিও খাবো চল ।(জেক)

জেকের কথা শুনে, রাশেদ,সুজন,সাব্বির আর রাহুল চোখ বড় বড় করে জেকের দিকে তাকালো । রাশেদ মুখ খুললো কিছু বলার জন্য । কিন্তু তার আগেই জেক, নিদ্রর হাত ধরে টেনে ক্লাব থেকে বের করে নিয়ে গেল । রাশেদ বিরবির করে বলে উঠলো ।

:+সালা পেটুক । একটু আগে আমাদের সাথে এতো খেলো । আর এখন বলছে ওর নাকি খাওয়া হয়’নি ।(রাশেদ)

:+ওই রাশেদ তুই কি বিরবির কর,,,,,,,,,,,।(রাহুল)

রাহুল আরো কিছু বলার আগে রাহুলের ফোনে কল আসলো । রাহুল ফোনের স্কিনে তাকিয়ে দেখলো “আন্টি” নাম ভেষে উঠছে । রাহুল তাড়াতাড়ি কল রিসিপ করে সালাম দিলো । আমেনা সালামের যবাব দিয়ে বললো ।

:+নিদ্র কি ক্লাবে গেছে ।(আমেনা)

রাহুল সামনের দিকে তাকিয়ে বললো ।

:+হ্যাঁ,,, তবে এখন খাওয়ার জন্য রেস্টুরেন্টে গেছে । কেন আন্টি ??(রাহুল)

:+ও ক্লাবে ফিরে আসলে, ওকে বাসায় আসতে বলবে । আচ্ছা তাহলে এখন রাখছি ।(আমেনা)

:+ঠিক আছে আন্টি ও ক্লাবে আসলে বলে দেবো ।(রাহুল)

রাহুলের কথা শুনে, আমেনা আর কিছু না বলে কল কেটে দিলো । প্রায় ঘন্টা খানিক পর নিদ্র ক্লাবে আসলো । সাথে জেক দাঁত কেলিয়ে ক্লাবে প্রবেশ করলো । রাশেদ সরাসরি বলে উঠলো ।

:+সালা,,,তোর এটা পেট না কুয়া । আমাদের সাথে একবার খেলি । এখন আবার ও সাথে ।(রাশেদ)

রাশেদের কথা শুনে, সুজন পাস থেকে বলে উঠলো ।

:+রাশেদ তুই আমার এক মাত্র বোন জামাইকে কিছু বলবি না । ওর পেট কুয়া হোক আর সমুদ্র হোক, এতে তোর কি ।(সুজন)

সুজনের কথা শুনে, সবাই হেসে উঠলো । রাহুল নিদ্রকে বললো ।

:+আন্টি কল করছে । তোকে বাসায় যেতে বলছে ।(রাহুল)

:+এখনি যেতে বলছে।(নিদ্র)

রাহুলের কথা শুনে, নিদ্র একটু অবাক হয়ে বললো । রাহুল ফোনের দিকে তাকিয়ে বললো ।

:+হ্যাঁ,,এখনি যেতে বলছে । কোনো কাজ আছে হয়তো ।(রাহুল)

নিদ্র সবার দিকে তাকিয়ে বললো ।

:+আচ্ছা তোরা থাক, আমি গেলাম ।(নিদ্র)

:+তাহলে কাল দেখা হচ্ছে । যানি এখন বাসায় গেলে এখানের আর আসবি না । তাই বলে দিলাম ।(সাব্বির)

সাব্বিরের কথা শুনে, নিদ্র মুচকি হেসে ক্লাব থেকে বেরিয়ে গেল ।

———————————————

সন্ধা ৬টা বাজে…………..
তৃপ্তি ঠোঁট কামড়ে হেসে গাড়ি ড্রাইভং করছে । আর নিদ্র বিরক্ত হয়ে পাসের সিটে বসে আছে । এই মেয়েকে এখন কসে একটা থাপ্পড় মারতে ইচ্ছে করছে নিদ্রর । এতো করে বললো তোর যাওয়ার দরকার নেই, আমি একা যাই । ওখানে যদি কোনো সমস্যা হয় । কিন্তু এই মেয়ে কথাই শুনলো না । জীবনে না-কি কোনো দিন এয়ারপোর্ট দেখেনি । তাই সে এখন এয়ারপোর্ট দেখবেই । বাসায় পা রাখতেই আমেনা নিদ্রকে বলেছিল তাড়াতাড়ি এয়ারপোর্টে যেতে । নিদ্র কেন প্রশ্ন করতেই, আমেনা বললো ।

:+এয়ারপোর্টে গেলেই দেখতে পারবি ।(আমেনা)

আমেনার কথা শুনে, নিদ্র আর কোনো প্রশ্ন করে-নি । তবে এদিকে তৃপ্তি যখন শুনলো নিদ্র একা এয়ারপোর্টে যাবে । তো সে আমেনার কাছে বায়না ধরে বসে সেও এয়ারপোর্টে যাবে । নিদ্র নিষেধ করা সত্বেও আমেনা কিছু একটা ভেবে সম্মতি দিয়ে দেয় । তৃপ্তিকে আর পায় কে । সে চট পট বোরখা, হিজাব, নিকাব পড়ে নেয় । নিচে এসে আমেনার হাতে গাড়ির চাবি দেখে মুচকি হাসে সে । এরপর আমেনা কিছু বুঝে উঠার আগে । আমেনার হাত থেকে গাড়ির চাবি নিয়ে, দৌড়ে বাসা থেকে বেরিয়ে গাড়ির ড্রাইভিং সিটে বসে পড়ে তৃপ্তি । নিদ্র এসে তৃপ্তিকে ড্রাইভিং সিটে দেখে রেগে যায় । কিন্তু কিছু বলতে পারেনি আমেনার জন্য ।

:+এমন মুখ করে বসে আছো কেন ? আমার ভয় করেনা বুঝি ।(তৃপ্তি)

গাড়ি ড্রাইভ করতে করতে শুকনো ঢোক গিলে বললো তৃপ্তি । নিদ্র চোখ গরম করে তৃপ্তির দিকে তাকিয়ে বললো ।

:+ভয় পেলে,,, কখনোই আমার কথার বিরোধে যেতি না ।(নিদ্র)

নিদ্রর কথা শুনে, তৃপ্তি মুখ বাকিয়ে মুচকি হেসে গাড়ি ড্রাইভ করতে লাগলো । প্রায় ঘন্টা দেরেক পর এয়ারপোর্টে এসে পৌছালো তারা । তৃপ্তি গাড়ি পার্ক করলো । নিদ্র গাড়ি থেকে নেমে দারালো । তৃপ্তিও গাড়ি থেকে নেমে নিদ্রর পাসে এসে দারালো । মুখ হা করে চার পাস দেখতে লাগলো তৃপ্তি । হঠাৎ নিদ্রর ডান দিক থেকে কেও আওয়াজ করে নিদ্রকে ডাক দিলো । নিদ্র আর তৃপ্তি সেদিকে তাকালো । তৃপ্তি দেখলো,, শার্ট, পেন্ট পড়া একটা মেয়ে নিদ্রর দিকে দৌড়ে আসছে । তৃপ্তি কিছু বুঝে উঠার আগেই, মেয়েটি নিদ্রকে হুমড়ি খেয়ে জরিয়ে ধরলো । নিদ্রও মেয়েটিকে জরিয়ে ধরে একটা চক্কর দিলো ।

:+আ’ম সারপ্রাইজ লিয়া । হাও । তুই আসবি আমাকে একটা কল করবি না ।(নিদ্র)

——————————————–

:+এই দ্বারা দ্বারা ।(রনি)

:+কি সমস্যা ।(আরিয়ান)

:+এই লিয়া কে ?? আর নিদ্রর আম্মুকে শাশুড়ী মা ডাকে মেয়ে’টা কে ??(রনি)

:+নিদ্রর আম্মুকে,, শাশুড়ী মা বলে ডাকে এই লিয়াই । আর লিয়া হলো নিদ্রর মামাতো বোন ।(আরিয়ান)

:+লও ঠেলা । সব কিছু ক্লিয়ার করে বল ।(রনি)

:+তাহলে চুপ থাক ।(আরিয়ান)

:+ওকে ।(রনি)

——————————————–

লিয়া হলো নিদ্রর মামাতো বোন । ও দুই বছর পর পর দেশে আসে । যত বারি লিয়া দেশে আসে,, তত বারি নিদ্রকে বলে আসে । কিন্তু এবার নিদ্রকে না যানিয়ে চলে আসছে লিয়া । লিয়াদের পুরো পরিবার লন্ডনে থাকে । লিয়া এখানে যেই উদ্দেশ্য আসছে, এটা ওর পরিবারের কেও যানে না । যাই হোক,,,। লিয়াকে এভাবে নিদ্র জরিয়ে ধরায় । তৃপ্তি রাগে ফুঁসে উঠছে । মুখে নিকাব থাকায় তা বুঝা যাচ্ছে না । হাতের চাবি’টা শক্ত করে মুঠি বদ্ধ করে নেয় তৃপ্তি । এদিকে নিদ্র কিছুখন পর লিয়াকে নিজে থেকে ছারিয়ে বললো ।

:+আমাকে একটা কল করলি না কেন ।(নিদ্র)

নিদ্রর কথা শুনে, লিয়া মুচকি হেসে হাঁফ ছেরে বললো ।

:+এমনি তোকে কল করিনি । তোকে সারপ্রাইজ দিবো বলে ।(লিয়া)

:+উঁহু,,, আজ দুই’টা সারপ্রাইজ পেলাম ।(নিদ্র)

লিয়ার কথা শুনে, নিদ্র জোরে একটা নিশ্বাস ছেরে বললো । লিয়া অবাক হয়ে বললো ।

:+যেমন?? (লিয়া)

নিদ্র গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে বললো ।

:+আজ সকালে সাব্বির, রাশেদ আর সুজন আসছে আমাকে না যানিয়ে । সেখানে একটা সারপ্রাইজ । আবার এখন তুই । হলো না দুই’টা ।(নিদ্র)

নিদ্রর কথা শুনে, লিয়া রহস্যর হাসি দিয়ে, ঠিক হয়ে দারিয়ে বললো ।

:+ওরা দেশে আসছে । তাহলে তো একটা ধামাকা করতে হয় ।(লিয়া)

নিদ্র চমকে উঠে বললো ।

:+এই না না না । বেচারা’রা অনেক কষ্টে রিলেশনে গেছে । এবার কষ্ট দিস না ওদের । আগের বারের ধকল সামলে উঠতে অনেক কষ্ট হয়েছে ওদের ।(নিদ্র)

নিদ্রর কথা শুনে, লিয়া ঠোঁট কামড়ে হাসি আটকে বলল ।

:+সেটা পড়ে দেখা যাবে । এখন বাসায় চল । প্রচুর খিদে পেয়েছে । ফুফির হাতের রান্না খাওয়ার জন্য জিভে পানি চলে আসছে । বাই দা ওয়ে ,,,। তোর সাথে এই মেয়ে’টা কে ??(লিয়া)

লিয়ার কথায় হুস আসে নিদ্রর । সে পিছনে ঘুরে তৃপ্তির দিকে তাকালো । চোখ দু’টো লাল হয়ে আছে মেয়েটার । নিদ্র কিছু বুঝতে পারলো না । তৃপ্তি মুখ’টা অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিলো । নিদ্র কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না । সে আমতা আমতা করে বললো ।

:+ও নাম তৃপ্তি । আমার চাচাতো বোন ।(নিদ্র)

:+ওহ আচ্ছা ।(লিয়া)

এই বলে লিয়া তৃপ্তির সামনে গিয়ে বললো ।

:+হায় আমি লিয়া ।(লিয়া)

লিয়ার কথা শুনে, গা জ্বলে গেল তৃপ্তির । তবুও সে নিজেকে দমিয়ে রেখে একটু হাসার চেষ্টা করে বললো ।

:+আমি তৃপ্তি । কেমন আছেন আপু ।(তৃপ্তি)

:+হুম ভালো । আচ্ছা চলো যেতে যেতে কথা হবে ।(লিয়া)

এই বলে লিয়া পিছনে ঘুরে নিদ্রর দিকে তাকালো । তৃপ্তি একবার পিছন থেকে লিয়াকে ভালো করে দেখে নিলো । মেয়ে’টা প্রায় ৫ ফুট ২ বা ৩ ইঞ্চি লম্বা হবে । গায়ের রঙ বিদেশি সাদা মুলাদের মতো । তৃপ্তি নিদ্রর সামনে গিয়ে দারালো । নিদ্র কিছু বুঝে উঠার আগেই, তৃপ্তি নিদ্রর হাতে গাড়ির চাবি দিয়ে, গাড়ির পিছনের দরজা খুলে সিটে বসলো । তারপর ধপ করে গাড়ির দরজা লাগিয়ে নিলো । তৃপ্তির বেবহারে নিদ্র বেশ বুঝতে পারছে মহারানী কোনো কারনে রাগ করেছে । নিদ্র পিছনের ডিকি খুলে দিলো । লিয়া তার লাগেজ গুলো পিছনে রাখলো । এরপর সামনের সিটে গিয়ে বসলো । নিদ্র গিয়ে ড্রাইভং সিটে বসলো । এরপর গাড়ি স্টার্ড দিয়ে বাসার দিকে রওনা দিলো । এদিকে তৃপ্তি রেগে আগুন হয়ে যাচ্ছে । নিদ্র লিয়ার সাথে হেসে কথা বলছে আর ড্রাইভ করছে । তৃপ্তির একদম সহ্য হচ্ছে না । রাগের কারনে চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো তৃপ্তির ।

———————————————

রাত প্রায় ১টা বাজে………..
সবাই অতল ঘুমে তলিয়ে আছে । কিন্তু তৃপ্তির চোখে ঘুম নেই । তার চোখের ঘুম হারাম হয়ে গেছে । চোখের পানি মুছে নিজ রুম থেকে বেরিয়ে আসলো তৃপ্তি । এরপর নিদ্রর রুমের সামনে এসে দারালো । এয়ারপোর্ট থেকে বাসায় এসে সবার সাথে দেখা করে, দোতলাই একটা রুমে চলে যায় লিয়া । রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসে,,খাওয়া দাওয়া করে, সেই আবার যে রুমে গেছে,, আর বের হয়-নি । ক্লান্ত শরীর হওয়ায় হয়তো ঘুমিয়ে গেছে । তৃপ্তি নিদ্রর রুমের দরজা ঠেলে ভিতরে প্রবেশ করলো । নিদ্র সাভাবিক ভাবে দরজা খোলা রেখেই ঘুমোয় । তৃপ্তি দরজা ভালো করে লাগিয়ে নিলো । তারপর নিদ্রর বেডের পাসে এসে দারালো । নিদ্র অঘর ঘুমে তলিয়ে আছে । তার কোনো হুস নেই । হুস থাকবে কি করে । সে তো আজ ঘুমের ঔষধ খেয়ে ঘুমিয়েছে । দু’দিন ধরে ঠিক মতো ঘুম হচ্ছে না তার । বেডের পাসে টেবিলের উপর ঘুমের ঔষধের পাতা দেখে তৃপ্তি মুচকি হাসলো । এরপর বেডের উপর উঠে, নিদ্রর গায়ের উপর থেকে কম্বল একটু টেনে সরিয়ে নিলো । অতপর নিদ্রর বুকের উপর মাথা রেখে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো তৃপ্তি । আর কম্বল’টা গায়ের উপর টেনে নিলো । রুমের মধ্যে ছোট একটা ঢিম লাইট জ্বলছে ।

:+অনেক ভালোবাসি তোমাকে । বিস্বাস করো,,,
তোমাকে না পেলে মরেই যাবো । তুমি যখন আপু’টাকে জরিয়ে ধরেছিলে । আমার শ্বাস প্রশ্বাস যেন বন্ধ হয়ে আসছিল । মনে হচ্ছিল এই বুঝি কেও আমার নিশ্বাস কেরে নিচ্ছে । এতো মেয়ে কেন তোমার পিছনে ঘুরে । তুমি একান্তই আমার হতে পারো না ।(তৃপ্তি)

রিনরিনিয়ে কথা গুলো বলে ডান হাতের তালু দিয়ে চোখের পানি মুছলো তৃপ্তি । এরপর নিদ্রর বুকে চিবুক ঠেকিয়ে, নিদ্রর মুখে দিকে তাকিয়ে বললো ।

:+আচ্ছা,,,আপু’টা তো আমার চেয়েও দেখতে অনেক সুন্দর । তুমি কি আমাকে ভুলে যাবে । তোমার এই শীতল ঠোঁট জোরার ছোঁয়া কি আমি আর পাবো না । আমার যে বুক’টা ফেটে যাচ্ছে । তুমি কি সত্যি আমার হবে না ।(তৃপ্তি)

ধির কন্ঠে কথা গুলো বলে দু’চোখের পানি ছেরে দিলো তৃপ্তি । এরপর আবার ডাল হাত দিয়ে চোখের পানি মুছে মুচকি হেসে রিনরিনিয়ে বললো ।

:+কাল থেকে তোমাকে আমার পাসে পাবো কি-না,,,, যানি না । তবে আজ,,, এই মূহুর্তে,,, তোমার ছোঁয়া আমি নিয়ে নিচ্ছি ।(তৃপ্তি)

এই বলে একটু উপরে দিকে এসে, নিদ্রর ঠোঁট জোরাতে নিজের ঠোঁট জোরা ডুবিয়ে দিলো তৃপ্তি । অঘর ঘুমে তলিয়ে থাকা নিদ্র একটু নড়ে চড়ে উঠলো । কিন্তু তৃপ্তি ছারলো না । সে সমানে চুমু খেয়ে যাচ্ছে । কিছুখন পর নিদ্রর ঠোঁট জোরা ছেরে দিয়ে হাঁফ ছারলো তৃপ্তি । এরপর নিদ্রর কপালে ভালোবাসার পরস একে দিয়ে, নিদ্রর বুকে মুখ গুজে, নিদ্রকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে শুয়ে পড়লো সে ।

#চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,

[।কপি করা নিশেদ।]

[।বি.দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ধন্যবাদ।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here