গল্প:- সি অফ মারমেইড লেখনীতে:- যাবেদ খাঁন আবু বকর ষষ্ঠ পর্ব

0
125

গল্প:- সি অফ মারমেইড
লেখনীতে:- যাবেদ খাঁন আবু বকর
ষষ্ঠ পর্ব

ঊনিশ.
পুলিশ সুপার রবিনের মাথায় আসছে না কী হচ্ছে সব।

ব্রেকিং নিউজ।
গতকাল সন্ধ্যায় কক্সবাজারে হামলা হওয়া গাড়ির ভেতরে ছিল বাংলাদেশের টপ বিজনেসম্যান ” রিবন ইওহার্ডের”-এর ছোটো ভাই ” রন ইওহার্ড “। হোটেল কতৃপক্ষের সিসিটিভি ফুটেজ থেকে সংগ্রহীত ভিডিওতে দেখা যায়, রন ইওহার্ড দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ হোটেলে উপস্থিত হন। পার্কিং প্লেসে গাড়ি রেখে ভেতরে প্রবেশ করেন। এবং আগেই রুম বুক করে রাখার ফলে, সেখানে এসে ডকুমেন্টস সাবমিট করতেই হোটেল কতৃপক্ষ তাকে রুমের চাবি দিয়ে দেয়। রুমের ভেতরে সিসিটিভি না থাকার ফলে ভেতরের বিষয়গুলো দেখতে অসক্ষম। কিন্তু রুমের বাইরে বারান্দার সিসিটিভি ফুটেজ লক্ষ্য করলে দেখা যায়, বিকেল চারটার সময় তর্জনী আঙুলে গাড়ির চাবি ঘোরাতে ঘোরাতে রুমের ভেতর থেকে বের হন তিনি। এবং সোজা পার্কিং-এ গিয়ে গাড়িতে অবস্থান নেন। হোটেলের বাহিরের সিসিটিভি ফুটেজ থেকে দেখা যায়, হোটেলের পার্কিং প্লেস থেকে গাড়ি নিয়ে বের হয়ে সমুদ্র তীর দিয়ে গাড়ি চালাতে থাকেন। পরপর পাশের কয়েকট বিল্ডিংয়ের বাহিরের সিসিটিভি ফুটেজ থেকে দেখা যায়, তীর ধরেই গাড়ি চালাচ্ছিল। এরপর আর কোনো সিসিটিভি ফুটেজ না থাকায়, কোথায় গিয়েছিল তা দেখতে অসক্ষম।
প্রায় সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ অ্যাক্সিডেন্ট হওয়া স্থানের পাশের বিল্ডিংয়ের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, প্রায় ১৫০-এর অধিক গতিতে চলিত একটি ট্রাক এসে গাড়িটিকে ধাক্কা দেয়। গাড়িটি ধাক্কার ফলে প্রায় ১৭-১৮ মিটার দূরে সমুদ্রের পানির মধ্যে আছড়ে পড়ে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ট্রাক সেখানে থামিয়ে তার ভেতর থেকে মুখোশ পরিহিত দুজন লোক বের হয়ে চলে যায়।
ভোর সকালে পর্যটকদের মাঝে কয়েকজন হাঁটতে বের হলে গাড়ির কিছু ভাঙা অংশ এবং ট্রাক দেখে বিচলিত হন। ধীরে ধীরে সেখানে লোক জমা হয় বলে জানান স্থানীয় লোকদের মধ্যে একজন। এক পর্যায়ে থানায় ফোন করে অবগত করেন। পুলিশ সুপার রবিন ও ওসি ফরিদ হোসেন এবং আরও কয়েকজন কর্মকর্তা মিলে ইনভেস্টিগেট কার্যক্রম শুরু করেন। সকালে সিসিটিভি ফুটেজ থেকে সংগ্রহ করা গাড়ি নাম্বার নিউজ কতৃপক্ষ দেখালে, সিলেট থেকে প্রাইভেট জেটে করে কক্সবাজার বিমানবন্দর রানওয়েতে অবতরণ করেন বিজনেসম্যান ” রিবন ইওহার্ড “। হাই সিকিউরিটি গার্ড নিয়ে পরপর তিনটি গাড়িতে ছুটে চলে আসেন ঘটনাস্থলে। গাড়ি থেকে তিনি বের হতেই উপস্থিত সবাই অবাক চোখের তার দিকে তাকায়। এখানে তার উপস্থিতি দেখে তারা বুঝতে পারছে না কী হচ্ছে! গার্ডদের মাধ্যমে লোকেদের মাঝ দিয়ে যাবার রাস্তা তৈরি করে পুলিশ সুপার রবিনের সাথে হাত মেলান তিনি। এবং তিনি আরও বলেন, গাড়ি এক্সিডেন্ট হয়ে সমুদ্রে হারিয়ে যাওয়া ছেলেটি তার ছোটো ভাই। এবং যতদ্রুত সম্ভব তাকে উদ্ধার করতে তাগদা দেন তিনি। এছাড়া আরও বলেন, যা খরচ হবে সব তিনি দেবেন। প্রয়োজনে সাবমেরিন এনে সমুদ্র তট খুঁজে দেখার কথা বলেন। সাথে এ-ও জানান যত দ্রুত সম্ভব, হামলাকারীদের ঠিকানা বা অবস্থান খুঁজে বের করে শাস্তি দিতে। এতটুকু তথ্য আমাদের জানিয়েছেন, পুলিশ সুপার জনাব রবিন হাওলাদার।

আরমান আসিফ।
বাংলাদেশ নিউজ টেলিভিশন।
কক্সবাজার।

দেশের জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যমেও ঘটনাটি রীতিমত ভাইরাল। ফেসবুক,ইন্সটাগ্রাম, টুইটার ইত্যাদি ইন্টারনেট যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও এই ঘটনা ঝড় তুলে দিয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে খোঁজ করার চেষ্টা করছে গাড়ির। কিন্তু এখনও খোঁজ মিলছে না। সবাই কমবেশ বিশ্বাস করে নিয়েছে, রন ইওহার্ড আর জীবিত নেই। কেননা দীর্ঘ ১৬-১৭ ঘন্টা যাবত পানির তলদেশে বেঁচে থাকা কোনো মানুষের পক্ষেই সম্ভব নয়। যদিও বা বেঁচে থাকে, তবে তা মিরাকল ঘটনা। যা ঘটার সম্ভাবনা ০.০০৪% রয়েছে। ইতোমধ্যেই সাবমেরিন আনা হয়েছে খোঁজ কার্য চালাবার জন্য। এবার হয়তোবা মিলতে পারে গাড়ি এবং রনের খোঁজ।

বিশ.
পরপর সাতটি তিমি ধেয়ে আসছে মারমেইড শহরের দিকে। রাজসভায় বসে আছেন মৎস রাজা অরগাড। তার দুই পাশে বসে আছেন রানি নিয়ানো এবং রাজকুমারী ডায়ানা। এছাড়াও সভায় আছেন আরও কিছু রাজসভাসদ। সবাই মারমেইড শহরের একেক কাজের জন্য নিয়োজিত। হহন্তদন্ত হয়ে রাজসভায় প্রবেশ করল একজন মৎস্য সৈন্য। তার এরকম উপস্থিতি ভালো চোখে নিলেন না রাজসভায় উপস্থিত সবাই। সবাই তার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। মৎস্য সৈন্যটি রাজসভার প্রবেশদ্বার দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে কোনো দিকে না তাকিয়ে বা ধ্যান না দিয়ে সোজা উপস্থিত হয় রাজা অরগাডের সামনে। উৎসুক দৃষ্টি নিয়ে মৎস্য সৈন্যের দিকে তাকিয়ে আছেন রাজা অরগাড। একটু জিড়িয়ে নিয়ে সৈন্যটি বলতে আরম্ভ করল,
‘ মহারাজ, মারমেইড শহরের রাজপ্রাসাদের দিকে ধেয়ে আসছে সাতটি তিমি। যাদের আকার বৃহৎ বলা যায়। মাঝে একটি তিমি রয়েছে। আর তার চারপাশে বাকি তিমিরা। দেখতে অনেকটা তাকে গার্ড দেয়ার মতো বলা যায়। ‘

এরকম কথা শুনে তৎক্ষণাৎ চমকে উঠে উপস্থিত সবাই। তবে কি তিমিদের বসে নিয়ে অক্টাইস মারমেইড শহরে আক্রমণ শুরু করে দিয়েছে? কিন্তু এমনটা তো হবার কথা নয়।
রাজা অরগাড কোনোরূপ কথার জবাব না দিয়ে রাজসিংহাসন থেকে উঠে গেলেন। তার এরকম আচরণ উপস্থিত সবাইকে আরও চমকে দিল। রাজা অরগাড কোনোরূপ কথা না বাড়িয়ে রাজসভার প্রবেশদ্বার দিয়ে বেরিয়ে বারান্দায় চলে আসেন। তার পিছুপিছু ছুটে আসেন রানি নিয়ানো এবং রাজকুমারী ডায়ানা। এছাড়াও সেনাপতি রিবিয়ান তাদের পিছুপিছু বাইরে আসেন। বারান্দা দিয়ে হেঁটে সোজা রাজপ্রাসাদের বাইরে চলে আসেন রাজা অরগাড। তাদের চারজনের এরকম বাইর হয়ে যাওয়া দেখে উপস্থিত সবাই প্রবেশদ্বার দিয়ে বাইরে আসতে লাগলেন। রাজা অরগাড মাথায় রাজমুকুট পরিহিত অবস্থাতেই দ্রুত গতিতে শহরের কেন্দ্রবিন্দু তথা মাঠে অবস্থান করেন। তার পিছুপিছু সেখানে উপস্থিত হন সবাই। ইতোমধ্যেই মাঠের অর্ধেক পরিপূর্ণ হয়ে গেছে মৎস্য সৈন্য দিয়ে। সবার হাতেই রয়েছে পানি দিয়ে তৈরি বিশেষ বল্লম। যা হিরার চেয়েও বেশি ধার এবং প্রচণ্ড মজবুত। তিমিগুলো মারমেইড শহরে সুরক্ষা কবচের কাছে এসে হাঁক ছাড়েন। যা শুনতে বেশ ভয়ানকও বটে। হাতের ইশারায় সুরক্ষা কবচকে উন্মুক্ত করে দিতে বললেন রাজা অরগাড। বেশ কিছু স্থান নিয়ে সুরক্ষা কবচ খুলে দিতেই মাঝে থাকা তিমিটি দূর থেকে মারমেইড শহরের কেন্দ্রবিন্দু তথা মাঠের মধ্যখানে চিকচিক করতে থাকা আলো যুক্ত মুকুটের দিকে তাকায়। সামনে থাকা তিমি দুটোর উদ্দেশ্য করে বলল, ‘ জ্বলজ্বল করা আলোর দিকে আগাও। আর আমাকে আমাকে আসার জন্য জায়গা দাও। ‘ খানিকটা গা ঝাড়া দিয়ে কথাটি বললেন তিমিটি।

সামনে থাকা তিমি দুটো তার কথা শোনা মাত্রই তার বলা দিক অনুযায়ী চলতে লাগল। এছাড়াও দুজন দুদিকে একটু করে সরে গিয়ে মাঝে থাকা তিমিটির জন্য জায়গা করে দেয়। মাঝে থাকা তিমিটি ফাঁকা স্থান দখল করে তাদের থেকে এগিয়ে চলতে আরম্ভ করে। মারমেইড শহরের সুরক্ষা কবচ রাজা অরগাড খুলে দেওয়ার কথা বলতেই উপস্থিত সবাই নির্বাক হয়ে যায়। কিন্তু রাজার উপরে কথা বলার ক্ষমতা কারো নেই তাই সবাই চুপ থেকে যায়। মারমেইড শহরের সুরক্ষা কবচের ভেতরে দৃশ্যমান পানি না থাকলেও অদৃশ্যমান পানি রয়েছে। যা সকলকে চলতে সাহায্য করে। কিন্তু পানিগুলো একেবারেই ভিন্ন ধরণের। যা অনুভব করা সম্ভব; কিন্তু দেখা সম্ভব নয়। এটা অবশ্য পূর্বের মৎস্য রাজা রিওডামের জাদুর প্রভাব। যে ছিল সমস্ত সমুদ্রের রাজা। যার হুকুমে চলত সমুদ্রের সকল প্রাণী।

একুশ.
মারমেইড শহরের ভেতরে প্রবেশ করেন তিমি মাছগুলো। অবস্থান নেয় বাকি অর্ধেক ফাঁকা মাঠে। এগিয়ে থাকা তিমিটি মৎস্য রাজা অরগাডের সামনে মাঠে অবস্থান করেন। তার পিছুপিছু বাকি ছয়টি তিমি অবস্থান নেয় মাঠে। মাঠের অর্ধেক প্রান্তে রাজা অরগাড এবং তার সৈন্যদের দল। এবং মাঠের অপর অর্ধেক প্রান্তে সাতটি তিমি। সামনে থাকা তিমিটির উদ্দেশ্য করে প্রশ্ন করলেন রাজা অরগাড,
‘ তিমি রাজ, কোনো সমস্যা হয়েছে কি?’ স্তম্ভিত হয়ে প্রশ্ন করলেন তিনি।
সামনে থাকা তিমি রাজ বলতে আরম্ভ করলেন,
‘ অভিবাদন মহারাজ। কোনো সমস্যা নয়। তবে আপনার জন্য চমক রয়েছে।’ কথার মাঝে খানিকটা হাসিযুক্ত ভাব নিয়ে জবাব দিলেন।
‘ কী চমক তিমি রাজ? আমার জানা মতে কোনো চমক পাবার কথা ছিল না! ‘ উৎসুক হয়ে জানতে চাইলেন রাজা অরগাড। তবে কণ্ঠে খানিকটা ত্রাসের উপস্থিতি বিদ্যমান।

তিমি রাজ কিছু না বলেই মুখটি বড় আকৃতির হাঁ করলেন। ভেতর থেকে বেরিয়ে এলো একটি বড় জলবিম্ব। যার আস্তরণ বেশ ভারী বলা যায়। এছাড়াও ভেতর দিকটা ফাঁপা। এবং ভেতরে একজন মানুষ ঘুমন্ত অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। জলবিম্বের ভেতরে মানুষ দেখে উপস্থিত সকলে ভড়কে যায়। কিন্তু তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে জলবিম্বের দিকে তাকায় রাজা অরগাড। আচমকাই তিমি রাজের উদ্দেশ্য করে বললেন তিনি,
‘ তবে জ্যোতিষী জিয়াংয়ের কথা সত্য হলো। কিন্তু তুমি তাকে কোথায় পেলে?’ ব্যগ্র হয়ে প্রশ্ন করলেন রাজা অরগাড। এবার আর কণ্ঠে ভয় নয়। রয়েছে একরাশ আকুলতা।
‘ তাকে সহিসালামতে নিয়ে আসার জন্য আমাকে আদেশ করেছিলেন জ্যোতিষী জিয়াং। যদিও তাকে নিয়ে আসার কথা ছিল অন্যভাবে। কিন্তু একটি সমস্যার কারণে এভাবে আনতে হলো। তবে এ ক্ষেত্রেও বেশ সুবিধা হয়েছিল। যার হেতু কোনো সমস্যা ছাড়াই খুব সহজে ভবিষ্যৎ সামুদ্রিক রাজাকে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি। যদিও মাঝপথে কাটা হয়ে দাঁড়াতে চেয়েছিল অক্টাইসের সৈন্যরা। কিন্তু আমাদের একসাথে দেখে আগাবার দুঃসাহস দেখায়নি আর। ‘ স্বাভাবিকভাবে কথাটি বললেন তিমি রাজ। কথায় খানিকটা মিশে আছে আত্মতৃপ্তি।

কিছু সময় নীরবেই চলে গেল। আচমকাই রাজা অরগাডের উদ্দেশ্য করে বলতে আরম্ভ করলেন তিমি রাজ,
‘ তবে মহারাজ আসি। ভবিষ্যৎ সামুদ্রিক রাজাকে প্রস্তুত করে তুলুন। মনে হয় না অক্টাইস খুব বেশি দিন এভাবে থাকবে। খুব শীঘ্রই আক্রমণ করার চিন্তাভাবনা করেছেন তিনি। আশা রাখছি আমার কথাটা ফেলে দেবেন না। ‘
আর কিছু বললেন না রাজা অরগাড। তিমি রাজ কথা শোনার জন্য কোনো প্রকার অপেক্ষা না করে চলতে লাগলেন তার পথে। তার পিছুপিছু চলতে লাগল বাকি ছয়টি তিমি। সুরক্ষা কবচ পাড় করতেই পুনরায় আবদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে সুরক্ষা কবচ। ইতোমধ্যেই জলবিম্বটি চুপসে গিয়ে মাটিতে খুব সুন্দরভাবে শুয়ে আছে একটি যুবক। যাকে দেখতে হুবহু মানুষের মতো। উপস্থিত সবার মনে একটাই প্রশ্ন বিরাজ করছে। আর তা হলো ” কে এই মানব? এখানেই-বা কী করছে?” কিন্তু সকলের মনের কথা মনেই রয়ে গেল। কেউ প্রশ্ন করার সাহস পেলো না। এছাড়াও আরও একটি বিষয় সবাইকে বিচলিত করে তুলছে। ” মানবটি কি আসলেই জীবিত? নাকি মৃত?”

রহস্যের জটলা মাথায় আর নিতে না পেরে একপ্রকার রাগ নিয়ে রাজা অরগাডের সামনে এসে উপস্থিত হন রানি নিয়ানো এবং রাজকুমারী ডায়ানা। বিস্ময় মাখা কণ্ঠে প্রশ্ন করলেন রানি নিয়ানো,
‘ কে ও? এখানে কেন আনা হয়েছে?’
‘ সমুদ্রের সকল প্রাণীদের ভবিষ্যৎ রাজা ” রন ইওহার্ড “। ইতিহাসের সবচেয়ে বাহাদুর, চৌকস এবং শ্রেষ্ঠ রাজা হবে সে। যার কথা ইতিহাসে বহু আগেই লেখা হয়েছে। ‘ বুক ফুলিয়ে গর্বের সহিত কথাগুলো বললেন রাজা অরগাড। তার কথার মাঝে রয়েছে খানিকটা দর্পযুক্ত ভাব।

‘ ভবিষ্যৎ সামুদ্রিক রাজা? কিন্তু কী করে সম্ভব? এ তো এখনই মরে গেছে। এছাড়াও সে একজন মানব। তা কি ভুলে গেছেন মহারাজ? ‘ ঈষৎ রাগান্বিত কণ্ঠে কথাগুলো বলল সেনাপতি রিবিয়ান। যেন কোনোভাবেই ভবিষ্যৎ রাজাকে মেনে নিতে পারছেন না তিনি।
‘ আমি কিছুই ভুলে যাইনি রিবিয়ান। সব কিছুই মনে রাখছি। আর আমি যা বলছি সবটাই সত্য। এছাড়া কয়েকদিন পরই তার রাজ্যাভিষেক করা হবে। তোমাদের নতুন রাজা হবে রন ইওহার্ড। তাকে এখন থেকেই রাজা বলে মেনে নিতে হবে। এটাই আমার আদেশ। এবং রন ইওহার্ডকে রাজা হিসেবে প্রস্তুত করতে সকল প্রকার প্রশিক্ষণ দেবে তুমি এবং উপদেষ্টা নিওরিয়ান। আর তাকে মানব বলে হেসে উড়িয়ে দিও না। ইতিহাসের পাতায় তার নামটাই লেখা রয়েছে বহু আগে থেকেই। ভুলে যেও না একসময় সমগ্র সমুদ্রের রাজা ছিলেন রিওডাম। তিনি নিজেও মানবই ছিলেন। কিন্তু তার বীরত্ব সমগ্র সমুদ্রে রাজ করত। আর রন ইওহার্ড মারা যায়নি। এখনও জীবিত আছে। শ্বাস-প্রশ্বাস ঠিক আগের মতোই স্বাভাবিক। পানিতেও শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কোনোপ্রকার কষ্ট হবে না তার। সে মানুষ হলেও একজন মৎস্য রাজার থেকে তার ক্ষমতা অধিক। কথাগুলো যেন মাথায় থাকে। আপাতত রনের জন্য একটা কক্ষের ব্যবস্থা করো। এবং জ্ঞান ফেরা অবধি তার যত্নের ব্যবস্থা করো। জ্ঞান ফিরলে তাকে নিয়ে রাজসভায় উপস্থিত হবে। ‘

কথাগুলো বলে প্রত্যুত্তরে কোনো কথা বলার সময় না দিয়ে স্থান ত্যাগ করলেন তিনি। তার পিছুপিছু ছুটলেন রানি নিয়ানো এবং রাজকুমারী ডায়ানা। চললেন রাজ প্রাসাদের দিকে।

[– চলবে –]

• রন ইওহার্ডের উপর আক্রমণকারীদেরকে পাকড়াও করতে সক্ষম হবে পুলিশ?
• রিবন ইওহার্ডের ভাই রন ইওহার্ড! এটি শুনে লোকের বিষ্ময়ের কারণ কী?
• রন ইওহার্ড কি রাজা হতে পারবে? নাকি অন্য কেউ রাজা হবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here