গোধূলি বেলায় তুমি এসেছিলে – পর্ব ৫

0
411

#গোধূলি_বেলায়_তুমি_এসেছিলে
#আনিশা_সাবিহা
পর্ব ৫

আবারও কোহিনূরের এমন শান্ত এবং লাটসাহেবের মতো কথাবার্তা শুনে বিষম খায় রাগিনী। জোরে জোরে কেশে ওঠে সে। সাথে সাথে পাশ থেকে একটা গ্লাস নিয়ে দ্রুত কাঁচের জগ থেকে পানি ঢেলে তার দিকে পানি এগিয়ে দেয় কোহিনূর। আর বলে ওঠে,
“আমার সামান্য কথায় বিষম খেলে কি করে চলবে? টেক ইট!”

পানিটা কাঁপা হাতে নিয়ে ঢকঢক করে পান করল রাগিনী। বড় বড় শ্বাস ফেলে এই ভিন্ন কোহিনূরের দিকে দৃষ্টি রাখল সে। এই কোহিনূরের দিকে তাকাতে তার কেমন যেন লাগে! সংকোচ বোধ হয়। লোকটির মুখে বর্তমানে হাসি অনবরত না ঝরলেও হাসির সামান্য ছিটেফোঁটা যেন সবসময়ের জন্য লেগে থাকে। চোখ সরিয়ে নিল রাগিনী। বেসিনের কাছে গিয়ে হাত ধুয়ে নিতে নিতে বলল,
“আমার হেল্প লাগবে না। আপনি বরং অপেক্ষা করুন। তাতেই আমার হেল্প হয়ে যাবে।”

“আর ইউ সিউর?”

“ইয়েস।”

কোহিনূর এবার ফলমূলের ঝুরি থেকে ফট করে ছুরি নিতেই ঘাবড়ে গেল রাগিনী। নেত্রপল্লবজোড়া বড় বড় করে বলল,
“হঠাৎ করে ছুরি হাতে নিলেন কেন? ও…ওটা রেখে দিন!”

রাগিনীর এমন আমতা আমতা কথা শুনে মুখের হাসিটা আবারও ফুটে ওঠে কোহিনূরের। ছুরিটা ঘুরিয়ে অন্যহাত দিয়ে ধা*রালো জায়গাতে বৃদ্ধা আঙ্গুল দিয়ে স্পর্শ করে বলে,
“তুমি কি ভয় পাচ্ছো মিস. রাগিনী?”

রাগিনী উত্তর দেয় না। কোহিনূরের মতিগতি সে বুঝতে পারছে না। কোহিনূর তার ক্ষতি করে দিতে পারে। সে ভাববে না। কারণ তার মানসিক অবস্থা ঠিক নেই। কিন্তু তাকে ভুল প্রমাণিত করে ছুরিটা আবার আগের জায়গায় রেখে দিয়ে রাগিনীর ভয় পাওয়াটা দেখে মজা নিয়ে বলে ওঠে,
“রিল্যাক্স! আমি তোমাকে বন্ধু বানিয়েছি। আর নিজের বন্ধুর কেউ ক্ষতি করে বুঝি? ছুরি ধার আছে কিনা পরীক্ষা করছিলান। তুমি তো দেখছি মৃ*ত্যু ভয় পেয়ে গেছো।”

রাগিনী এবার নিজেকে সামলে নেয়। শুঁকনো ঢক গিলে সেও না চাইতেও তাল মিলিয়ে ঠোঁট প্রসারিত করে হাসে। কোহিনূরের দৃষ্টি তার থেকে সরছেই না। তাই বলে মন খুলেও হাসা যেন সম্ভব হচ্ছে না। কোহিনূর তার দিকে দৃষ্টি রেখেই বলে,
“অবশ্য মৃ’ত্যু ভয়কে কেউ তো উপেক্ষা করতে পারে না। যারা প্রা’ণ নেয় তারাও একসময় মৃ’ত্যু ভয়ে কাঁপতে থাকে। আর তোমার মতো একটা সুইট গার্লের এমন ভয় পাওয়া স্বাভাবিক!”

রাগিনী এবার ভেবে নেয়, এই লোকটা যতক্ষণ থাকবে তার আত’ঙ্কের কারণ হয়ে থাকবে। তার থেকে কোনোমতে তাকে বের করে দিতে পারলে সে শান্তিতে শ্বাস ফেলতে পারবে। কিন্তু রাগিনীর ভাবনাতে পানি ফেলে দিয়ে কোহিনূর আশেপাশে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে,
“তোমার বাড়িতে পাস্তা আছে?”

“হোয়াট?”
হতভম্ব হয়ে পাল্টা প্রশ্ন করল রাগিনী। কোহিনূর আগের মতোই জবাব দিল,
“পাস্তা! আই ওয়ান্ট টু ইট পাস্তা। সো আমি জিজ্ঞেস করলাম পাস্তা আছে কিনা।”

রাগিনী তড়িঘড়ি করে একটা ড্রয়ার থেকে পাস্তা বের করে নিয়ে বলল,
“পাস্তা খাবেন আপনি? তাহলে গিয়ে ওয়েট করুন। একটু পর আমি রেডি করে নিয়ে আসছি।”

কোহিনূর মাথা নাড়িয়ে তার থেকে পাস্তার প্যাকেট নিয়ে বলল,
“ইয়াপ! ওখানকার একই খাবার খেতে খেতে আমি বোর! সো অন্যকিছু ট্রাই করতে মন চাইছে। আর রান্নাটা আমি করব। তোমাকে আর কষ্ট করতে হবে না। তুমি যা করছো তা করো। ভুলে যেও না আমি কিন্তু তোমার হাতের রান্না খেতে চেয়েছি।”

চোখজোড়া গোল গোল হয়ে আসে রাগিনীর। কোহিনূরের হাত থেকে প্যাকেট কেঁড়ে নিতে চাইলে কোহিনূর হাত উঁচু করে তা ধরে রাখে। ফলাফলস্বরূপ রাগিনী হুমড়ি খেয়ে আবারও মাথাটা ঠুকে যায় তার বুকে। চুলগুলো এলোমেলো হয়ে যায় তার খোঁপা খুলে। রাগিনী নাকে ব্যথা পায়। চিনচিন করে ওঠে। কাতর ভঙ্গিতে বলে ওঠে,
“এটা কোনো মানুষের দেহ? নাকি কোনো দেয়াল?”

কোহিনূর এবার উচ্চস্বরে হেঁসে ওঠে। তার হাসি দেখে ফ্যালফ্যাল করে তাকায় রাগিনী। আশ্চর্যজনকভাবে লোকটার হাসি চমৎকার লাগছে রাগিনীর। বাকরুদ্ধ হয়ে চেয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছে সে। হাসির শব্দও সুন্দরভাবে যখন তার কর্ণকুহরে পৌঁছাচ্ছে তখন বারংবার তা ঝংকারের মতো বেজে উঠছে। রাগিনীর ভাবনায় ছেদ পড়ে কোহিনূরের কথায়।
“রাগের রানীকে ভূতের মতো দেখাচ্ছে এই মূহুর্তে।”

তার কথার মানে না বুঝে ভ্রূ কুঁচকায় রাগিনী। কোহিনূর কিছুটা ঝুঁকে ফুঁ দিয়ে আশেপাশের ছোট ছোট চুলগুলো যেসব রাগিনীর মুখ আবৃত করে ছিল সেসব সরিয়ে অন্য হাতে চুলগুলো পেছনে দিয়ে বলে,
“নাউ ইটস ওকে!”

নড়াচড়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল রাগিনীর। দ্রুত দুহাত দিয়ে খোঁপা করে নিয়ে কিছুটা দূরত্বে দাঁড়ায় সে।

সোফায় বসে রান্নাঘরে থাকা কোহিনূরকে গভীর মনোযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করছে রাগিনী। কিছু বলার মতো শব্দ পাচ্ছে না সে। আসলেই বা কি বলা উচিত। হুটহাট করে এমন আচরণ পরিবর্তন করতে থাকলে কখন যেন রাগিনী কনফিউজড হয়ে জ্ঞানই হারাবে। হাতে খবরের কাগজ নিয়ে এসে ব্যস্ত ভঙ্গিতে বসে পড়েন রাশেদ সাহেব অন্য সোফায়। রাগিনীকে চুপচাপ সোফায় বসে থাকতে দেখে তিনি প্রশ্ন করেন,
“রাগিনী, খাবার কি রেডি? তাহলে দেরি করছো কেন যাও টেবিলে সাজিয়ে ফেলো।”

রাগিনী মাথা নাড়িয়ে মিনমিন করে জবাব দেয়,
“আর রেডি! কিচেনের দিকে দেখো বাবা।”

রাশেদ সাহেব কিচেনে তাকিয়ে নিজেও নির্বাক হয়ে যান। বেশ কিছুক্ষণ সময় লাগে তার বিস্ময় কাটাতে। তারপর নিজেকে সামলে বিস্ফো’রিত কন্ঠে জিজ্ঞেস করে,
“ও কিচেনে! কিন্তু…”

“পাস্তা খেতে মন চেয়েছে উনার। তাও নিজ হাতে রান্না করে। আমাকে রীতিমতো কিচেন থেকে ঠেলে বের করে দিয়ে মনের সুখে রান্না করে চলেছেন।”

রাশেদ সাহেব আর কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন। কোহিনূরের দিকে তাকিয়ে একমনে বলে উঠলেন,
“সে আসলে সৌখিন মানুষ। তার পরিবারের লোকজন হয়ত শিক্ষিত আর বেশ উন্নত ফ্যামিলির। তাই যখন সে আগের অবস্থায় ফেরে সেই স্বভাব গুলো ফিরে আসে।”

রাগিনী বাবার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনে। অন্যকিছু বলে না। রাশেদ সাহেব সেই বিষয় নিয়ে আর কোনো কথা বলেন না। প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে বেশ সাবধানে বলে উঠলেন,
“রাগিনী শোনো, বাহিরে সাবধানে চলাফেরা করবে। বাহিরের পরিবেশ বিপদজনক হয়ে উঠছে। কখন কি ঘটতে পারে কেউ বলতে পারে না।”

শেষ কথাগুলো বেশ চিন্তিত কন্ঠে বললেন রাশেদ সাহেব। রাগিনী কিছুটা ফিচেল গলায় বলল,
“কিছু ঘটেছে বাবা?”

“খবরের কাগজে নিউজ বেরিয়েছে। শহরে একটা ভয়া’নক টেরো’রিস্টের টিম এসেছে। তারা শহরে আত’ঙ্ক সৃষ্টি করতে এসেছে। আর তারা এতো কনফিডেন্টলি সব কাজ করছে যে পুলিশের সব টিম মিলেও তাদের ধরতে সক্ষম হচ্ছে না। অলরেডি তারা এডিশনাল এসপি অফিসারের বাড়িতে হা’মলা করে সেটার সূত্রপাত ঘটিয়েছে। আরো ক্ষতি করতে সময় লাগবে না।”

রাগিনী সেসব কথা শুনে চুপ করে থাকে। তারপর স্বাভাবিক সুরে বলে ওঠে,
“এটা নতুন কি বাবা! চট্টগ্রামে এমন অহরহ ঘটনা শুনে শুনে অভ্যস্থ হয়ে গিয়েছি। এখন আর ভয় লাগে না। আমার জানামতে সেই চট্টগ্রামের সব ধ্বংস করে তারাই আবার ঢাকায় এসেছে। যাতে এখানেও তারা ধ্বংসের মাধ্যমে রাজত্ব করতে পারে। এই পুরো টিম টাকে কেউ ধরতে পারছে না।”

রাশেদ সাহেব মেয়ের দিকে কৌতূহল নিয়ে তাকান। হকচকিয়ে বলে উঠলেন,
“তুমি কি করে জানলে? চট্টগ্রামের ওই টিমই তারা?”

বাবার এমন প্রশ্নে অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে রাগিনী। ধীরস্থিরভাবে উত্তর দিল,
“ইন্টারনেটে দেখলাম সেদিন। আমি যাই উনি রান্না করতে পারলেন কিনা দেখে আসি!”

বলেই এক মূহুর্ত আর বসলো না রাগিনী। উঠে জোর কদম হেঁটে কিচেনে গিয়ে ঢুকল। রাশেদ সাহেব ব্যস্ত হয়ে পড়লেন খবরের কাগজ পড়তে।

খাওয়াদাওয়া শেষ করে অবশেষে কোহিনূরকে হসপিটালের লোকজন এসে নিয়ে গেল। যাওয়ার সময় আবারও তার শিশুসুলভ আচরণ প্রকাশ পেয়েছিল। সে জেদ ধরেছিল রাগিনীর কাছে থাকার জন্য। রাগিনী পরে তার কাছে যাবে বলে আশ্বাস দিয়ে কোনোরকমে হসপিটালে পাঠিয়েছে। কোহিনূর অতঃপর শান্ত হয়ে হসপিটালের লোকগুলোর সাথে যেতে রাজি হয়।

হাতে ল্যাপটপ নিয়ে টেবিলের উপর দুটো পা তুলে রেখে সিসিটিভি ফুটেজ ব্যস্ত ভঙ্গিতে চেক করছে নির্জন। কপালে তিনটে দৃঢ় দাগ স্পষ্ট! কোনোরকম ক্লু না পেয়ে অতিষ্ট হচ্ছে সে। দাঁত কিড়মিড় করে ল্যাপটপটা বিরক্ত হয়ে থাবা দিয়ে বন্ধ করে টেবিলে রেখে দিয়ে সোজা হয়ে বসল। আর পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মেহরাজের উদ্দেশ্যে হাত ঘুরাতে ঘুরাতে বলল,
“ওই দুটো কনস্টেবলের জ্ঞান ফিরেছে?”

মেহরাজের উত্তর পেল না সে অপেক্ষা করে। বরং চাপা হাসির শব্দ শুনতে পেল। মাথা উঠিয়ে চোখ দুটো সরু করে মেহরাজের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করল,
“এতো হাসি কীসের?”

“স্যার একটা প্রশ্ন করি?”

নির্জন কথা ছাড়া হাত উঠিয়ে ইশারা করে তাকে বলতে বলে। তারপর মেহরাজ ফট করে বলে ওঠে,
“তা কেমন ইনজয় করছেন স্যার?”

মেহরাজের কথার মানে না বুঝে তার হালকা মোটা ভ্রু এবং গোলাপি ও ধূসর বর্ণের সংমিশ্রণের চিকন ঠোঁট বাঁকিয়ে তাকালো সে। তখন মেহরাজ গলা খাঁকারি দিল। আর নির্জনের দৃষ্টি দেখে সোজা তাকিয়ে বলল,
“সরি স্যার!”

এবার হাসে নির্জন। হাতে রিভ’লবার নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে মেহরাজের কাছে এসে তার কাঁধে হাত রেখে বলে,
“সরি বলছো কেন? সরি বলার কি আছে এতে?”

নির্জনের হাসির বিপরীতে মেহরাজও দাঁত কেলিয়ে আসে। সঙ্গে সঙ্গে রিভ’লবারের আগা দিয়ে তার পেটে জোরে গুঁতা দিতেই হাসি বন্ধ হয়ে যায় তার। পেট ধরে চোখমুখ খিঁচে হালকা আর্তনাদের সুরে বলে,
“স্যার…”

“আমি এভাবেই ইনজয় করছি।”
কথাটা বলেই রিভ’লবার রেখে দিয়ে সেখানে থাকা বড় আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ায় নির্জন। পরনে কালো কোট টা ফাঁক করে নিজের বুকে হাত মুঠ করে ধীরে কয়েকবার আঘাত করে বলে ওঠে,
“আচ্ছা মেহরাজ, আমার জিম করা কি বেশি হয়ে গেছে? মানে আমার দেহ কি স্টিলের মতো হয়ে গেছে?”

মেহরাজ হেঁটে এগিয়ে এসে নির্জনের কাছে দাঁড়ায়। নির্জনের কাঁধে হাত দিয়ে কোট ঠিক করে দিতে দিতে বলে,
“একদমই না। আপনার এতো সুন্দর ফিটনেস! হ্যান্ডসাম লুক! যে কোনো মেয়ে ফিদা হয়ে যাবে।”

নির্জন পরবর্তীতে বিরবির করে কিছু বলে ওঠে। তবে তা বুঝতে পারে না মেহরাজ। না বুঝতে পেরে কান এগিয়ে প্রশ্ন করে,
“কিছু বললেন স্যার?”

“নাথিং!”

ঘুরে গিয়ে চেয়ার বসে নির্জন। মাথার চুলগুলো উপরে উঠিয়ে দিয়ে আবারও ল্যাপটপ খোলে সে। তৎক্ষনাৎ মেহরাজ খানিকটা জোরে বলে ওঠে,
“স্যার একটা কথা বলতে ভুলে গিয়েছিলাম। আপনি যখন ছিলেন না তখন মিস. আহমেদ ফোন করেছিলেন ল্যান্ডলাইনে। আপনার সাথে কথা বলতে চাইছিলেন। আর বলেছেন…”

থামে মেহরাজ। মুখ কাঁচুমাচু করে উত্তর দেয়,
“বলেছেন আপনি কল ব্যাক না করলে উনি আমাকেই অবস্থা খারাপ করে দিবেন।”

চোখমুখ জড়িয়ে তাকায় নির্জন। জোর সুরে বলে ওঠে,
“ইউ আর অ্যা অফিসার ওফ সিক্রেট টিম মেহরাজ! একটা দুই আঙ্গুলের মেয়ের হু*মকির জবাব দিতে পারো নি?”

“উনাকে কি করে জবাব দেব স্যার? উনি তো…”

নির্জন মুখের উপর জানিয়ে দেয়,
“আমি তাকে কল ব্যাক করছি না। এবার ও আমার কাছে একই বাহানা নিয়ে এলে ওর খবর আছে।”

জায়গাটি লন্ডন। লন্ডন টাওয়ার থেকে বেশ খানিকটা দূরে অবস্থিত জনবহুল শহর। তবে শহরটি বেশ শান্ত। সেখানকার লোকজনের মাঝে নেই এতো কোলাহল! সকাল সকাল সকল পরিশ্রমী মানুষজন নিজ কর্মে মগ্ন! সুন্দর শহরে সকলে ব্যস্ত। সেখানেই একটা মাঝারি আকারের বাড়ির মাঝে নিজ ঘরের বেডে গড়াগড়ি খেয়ে চলেছে এক নারী। পরনে একটা শার্ট আর লম্বা প্যান্ট। অর্থাৎ নাইট ড্রেসটা এখনো ছেড়ে উঠতে পারেনি। মাথায় ব্যান্ড। চুলগুলো খুব একটা বড় নয় বেশ ছোট ছোট! ঘাড় থেকে খানিকটা দূরে পড়ে আছে। তার মাঝে আবার কোঁকড়ানো। নাম তার নয়নতাঁরা। ছোট বাচ্চাসুলভ চোখ দুটো বেশ মায়াবী। নাক খানিকটা বোঁচা হলেও গাল দুটো মোটা মোটা। হাতে ফোন নিয়ে ঠোঁট উল্টিয়ে ফোন ঘেঁটে চিল্লিয়ে বলে ওঠে,
“বিগ ব্রাদার আজকেও আমার কল ইগনর করেছে! আমি কল করছি কল ধরছেও না। নিজেকে কি ভাবে সে?”

বলে আবারও হম্বিতম্বি করে কল লাগায় নয়নতাঁরা। কল না ধরাতে বেডের আরেক প্রান্তে ফোন ছুঁড়ে মেরে বালিশে থুঁতনি রেখে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকে সে বিষণ্ণ মনে। খানিকক্ষণ পর তার বালিশের নিচ থেকে একটা ছোট্ট ছবি বের করে সেটা দেখে লজ্জা পেয়ে হাসি দিয়ে মুখ লুকিয়ে ফেলে সে। ছবিতে একটা পুরুষ রয়েছে। তার পরনে পুলিশের ইউনিফর্ম। সাইড থেকে লুকিয়ে তোলা ছবি। ছবিতে হাত বুলিয়ে নয়নতাঁরা বলে ওঠে,
“ডোন্ট ওয়ারি, রায়ান স্যার! আমি খুব তাড়াতাড়ি আপনার কাছে আসছি। আমি জানি আমার বিগ ব্রাদার পছন্দ করে না। তাতে কি? আমি তো করি! আই এম কামিং…!”

চলবে…

[বি.দ্র. ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। গল্পটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক। অনেকের প্রশ্ন হচ্ছে নায়ক কে! আমি আগেও বলেছি এটা একটা টুইস্ট। আমি যদি স্ট্রেইটলি বলে দিই কে নায়ক তাহলে কি করে টুইস্ট থাকবে? আপনারা যারা গল্পের সাথে আছেন তারা আস্তে আস্তে পড়লেই জানতে পারবেন।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here