শুভ্রতায় নবনীতা – পর্ব ১৯

0
388

#শুভ্রতায়_নবনীতা
#নবনীতা_নীরু
#পর্ব ঃ১৯

আমি আমার রুমে গিয়ে নতুন শাড়িটা নিয়ে রুম থেকে বের হব ওমনি মা এসে বলল নিহান বাবাকে তোর রুমে বসতে দে,ওদিকে অনেক মানুষজন,ছেলের খারাপ লাগবে।আর নীরু বাহিরে তুশির গোসলের ওখানে।
— উনাকে রুমে বসতে বলো,আমিও গোসলে যাব।
— আমি যাই, গিয়ে এখানে আসতে বলি তুই বসতে দে।
কথাটা বলে মা চলে গেল।আমার তো উনাকে বসতে বলা বা কোন কথা বলা তো দূর, উনাকে দেখতেই ইচ্ছে করছে না।

দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি,উনি রুমে নক করে বললেন,
— আসব?
— জি

আসতে বলেই আমি বাহিরে চলে যেতে লাগলে উনি পিছন থেকে আমাকে ডাক দেন নবনীতা বলে।

— কিছু প্রয়োজন হলে ওখানে সবাই আছে,বলবেন।আমার অনেক কাজ,আমি আসছি।
— একটু কথা ছিল..
— বলুন?
— সেদিনের জন্য আমি স্যরি….
— রুমে গিয়ে বসুন।
— কিছু কথা বলার ছিল,একটু সময় দিতে পারবেন?
— আমার হাতে সময় নেই।
— প্লিজ নবনীতা…..
— আপনি কি আমার ব্যবহারে বুঝতে পারছেন না যে আমি আপনার সাথে কোনরকম কথা বলতে চাইছি না?
— কিন্তু আমার কথা তো আপনার শুনতেই হবে।
— আমি কি আপনার কথা শুনতে বাধ্য নাকি যে শুনতেই হবে?
— তাড়াতাড়ি এখানে এসে দাড়াবেন,আমার মাথা গরম হয়ে গেলে কিন্তু এই বিয়ে বাড়িতে একটা ঝামেলা বাধিয়ে ফেলব নবনীতা।।
— ভয় দেখাচ্ছেন আমাকে?
— যদি বলেন ভয় দেখাচ্ছি,তাহলে তাই।এদিকে এসে দাড়াবেন এখনি।
— শুধু পারেন এরকম খারাপ ব্যবহার করতে।কখনো ভাল ব্যবহার করতে শিখেন নি?জানেন না কিভাবে ভাল ব্যবহার করতে হয়?আমার বাড়িতে দাঁড়িয়ে আমার ওপরই চোটপাট শুরু করেছেন!!

— এত বাজে ব্যবহার আপনি আমার সাথে করছেন?কিভাবে নবনীতা?
— আপনি যেভাবে করেছিলেন সেদিন।মনে নেই কি কি করেছেন?কপালে তাকিয়ে দেখুন,দাগটা এখনও যায় নি কপাল থেকে।কেমন পুরুষ আপনি যে একটা মেয়ের সাথে বাজে ব্যবহার করেন আবার গায়ে হাত পর্যন্ত উঠান??আমার কি দোষ ছিল,কি করেছিলাম আমি?

নিহান স্যার তার ডান হাত আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললেন, এটা কি যথেষ্ট নয়?শাস্তি কি খুব কম হয়ে গেছে নবনীতা?
আমি তাকিয়ে দেখি উনার হাতে ব্যান্ডেজ করা।তখন আসার সময়ই খেয়াল করেছিলাম।
— হ্যাঁ আমি সেদিন আপনাকে অনেক কথা শুনিয়েছিলাম,কিন্তু ধাক্কাটা ভুলবশত দিয়ে ফেলেছিলাম।
— প্লিজ দেখুন আমি আগের কোন কথা আজকে তুলতে চাইছি না।সত্যি বলতে কোনরকম কথা বলতেই ইচ্ছে করছে না আমার আপনার সাথে,রুচিই নেই।
— এত খারাপ হয়ে গিয়েছি আমি?আমাদের ভাল ভাল মুহূর্তের কথা মনে করে সেদিনের জন্য ক্ষমা করা যায় না?
— আর কতবার বলব আমি আপনার সাথে কথা বলতে চাই না,আমার সামনেও আসবেন না প্লিজ,অসহ্য লাগছে আপনাকে।যে পুরুষ, নারীকে সম্মান করতে পারে না তার সাথে আমার কোন কথা থাকতে পারে না।

— আপনি সেদিন ফোন করে জানতে চেয়েছিলেন না যে আমি আপনাকে পছন্দ করি কি না,ভালোবাসি কি না?
— কখনই এসব জানতে আমি আপনাকে কল করি নাই কখনও, আমাদের মধ্যে তেমন কিছু নেই যে আমি আপনাকে এসকল কথা জিজ্ঞেস করব।
কথাগুলো বলেই চলে যেতে লাগলে পিছন থেকে একটা কথা শুনে দাঁড়িয়ে যাই।
— ভালোবাসি নবনীতা, হ্যাঁ অনেক ভালবাসি আমি আপনাকে।
— হুহ,ভালোবাসা! এত সস্তা নাকি ভালোবাসা? আর মুখে বললেই কি ভালোবাসা হয়ে যায় নাকি?

কথাটি বলে উনাকে রেখে আমি আমি চলে আসি বাহিরে।
ভালোবাসার মানুষটিকে যে নিজের করে নিতে পারে না,অন্যের হয়ে যাচ্ছে দেখে নিজে কিছু না করে সেই মানুষকেই মানসিক আঘাত করে সেই আর যাই হোক ভালোবেসে ভালো রাখতে পারে না।

আজকে যদি তিশুর জায়গায় আমি থাকতাম,তাহলে এই ভালবাসি কথাটা কাকে বলতেন উনি?পুরুষ মানুষকে পুরুষ মানুষের মতই কাজ করতে হয়।আমি তো নিজেই জানতে গিয়েছিলাম উনি আমাকে ভালোবাসেন কি না,আর উনি আমার সাথে কি খারাপ ব্যবহারটাই না করলেন!ভালোবাসার মানুষের সাথে এত খারাপ ব্যবহার করা যায়?সময়ের কাজ যেহেতু সময়ে করতে পারেন নি তাই উনি আর আমাকে পাবেন না।
কিন্তু উনার জন্য আমার এত কষ্ট হচ্ছে কেন!আমি তো এখন আর উনাকে ভালোবাসি না।আমার কাছে আত্মমর্যাদা আগে,উনি আমাকে লোভী প্রমাণ করেছেন সেদিন আমি নাকি উনার টাকা দেখে….ছি!
নাহ্ আমি উনাকে কিছুতেই ক্ষমা করতে পারব না।বিয়েটা হয়ে গেলে আমি অফিসে গিয়ে রিজাইন লেটার জমা দিয়ে আসব।উনার মুখ আমি আর দেখব না।

— কি রে নবু,এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি ভাবছিস?(কাকি)
— কিছু না কাকি,তাড়াতাড়ি গোসল দিয়ে তুশিকে তো আবার সাজাতে হবে,ও বাড়ি থেকে কখন বা সবাই চলে আসে।
— আচ্ছা যা তুই তাড়াতাড়ি গোসল দিয়ে নে।
— আচ্ছা কাকি।

আমি গিয়ে তাড়াতাড়ি গোসল দিয়ে নিলাম।এখন সমস্যা হচ্ছে আমার শাড়ি পড়া হয় না, আর ড্রেস না নিয়ে এসে শাড়ি নিয়েই চলে এসেছি।
কোনরকমে শাড়ি পড়ে নিজের রুমের দিকে গেলাম,দেখলাম কেউ নেই, তাড়াতাড়ি করে রুমে ধুকে ভাল করে শাড়ি পড়া শুরু করলাম।

রুমে বসেই রেডি হচ্ছিলাম এমন সময় দরজায় কেউ শব্দ করে ডাকছে। মার গলা বুঝতে পেরে দরজা খুলে দিলাম।
— বাহ সুন্দর লাগছে তো আমার মেয়েটাকে!
— শাড়িটা কি ঠিক করে পড়া হয়েছে?আমার তো শাড়ি পড়া হয় না।
— হ্যাঁ সব ঠিক আছে।এবার যা তিশুকে রেডি করে দে ও বাড়ি থেকে জিনিসপত্র পাঠিয়ে দিয়েছে।
রুমে গিয়ে দেখি তিশুর বান্ধবীরাও চলে এসেছে।রুমে আর আত্মীয় বলতে তেমন কেউ নেই সবগুলোই তিশুর বান্ধবী।
— আপুকে সারাদিন দেখাই গেল না।।
— তোমাদের আপুর অনেক কাজ ছিল গো।
— তা তো বুঝতে পারছি আপু।এখন তিশুকে সাজানো শুরু করবেন না?বিকেল হতে চলল,সবাই কখন বা চলে আসে।
— তোমরা বসে বসে কি করছো?
সাজানো শুরু করতে পারো নি!
— তিশু বলল আপনার কাছে সাজবে।
— আচ্ছা সৃজা তোমরা শাড়িটা পড়িয়ে নাও,আমি শাড়ি পড়াতে পারি না।
— ঠিক আছে আপু।
— নীরুও দেখি মণিকে পেয়ে আমাকেই ভুলে গেছে।(নীরু চুপ করে তিশুর পাশে বসে আছে।আমি কথাটি বলতেই উঠে আমার কাছে চলে এলো।)
— তুমি তো সারাদিন ব্যস্ত ছিলে,তাই মণি আমাকে তার কাছে রেখে দিয়েছে।

— ঠিক আছে,ভাল করেছো। খেয়েছো কিছু?
— হ্যাঁ খেয়েছি।
— এখন চলো বাহিরে যাই,তোমার মণি শাড়ি পড়বে,এখানে থাকা যাবে না।
— আচ্ছা চলো।

কিছুক্ষণ পর রুমে এসে তুশিকে সাজাতে সাজাতে তুশির বান্ধবীদের উদ্দেশ্যে বললাম তোমরা কেউ বলো তো আমাদের তিশু কবে আবিরের প্রেমে পড়লো?সে তো লজ্জায় আমাকে বলতেই চায় না।
— আপু আমি বলি?(সৃজা)
— হ্যাঁ বলো শুনি,বড় আপু হই বলে লজ্জা পেও না।
— না না আপু গল্প করতে ভালোই লাগে,আমি বলছি শোনো…
আজ থেকে চার বছর হবে হয়তো, বেশিও হতে পারে।আমরা তখন ক্লাস নাইনে ভর্তি হয়েছি।ভালোই চলছিল আমাদের পড়াশোনা।একদিন ক্লাস শেষ করে আমি আর তিশু বাড়ি ফিরছিলাম।রাস্তায় বৃষ্টি নেমে পড়ে,আমরা একটা দোকানের ছাউনির নিচে গিয়ে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি কমার অপেক্ষা করি।তখনই তুশি আমাকে ডেকে আবির ভাইয়াকে দেখায়।
— দোস্ত দেখ ছেলেটা কি সুন্দর করে বৃষ্টি দেখছে আর চা খাচ্ছে!
— তোর আবার ভালো লেগে গেল নাকি?
— তা তো একটু লেগেই গেল।
এরকম কিছু কথাবার্তার পর,বৃষ্টি কমলে ছেলেটা বের হয়ে চলে যায়।তুশি আমাকে সাথে নিয়ে ওকে ফলো করে।আমরা সেদিনই বাড়ি চিনে আসি আবির ভাইয়ার।
এরপর প্রতিদিন আমরা স্কুলে যাওয়া আসার সময় আবির ভাইয়াকে খুঁজতাম,মাঝে মাঝে দেখা হয়ে যেত।এভাবে অনেকদিন কেটে যায়।একদিন তুশি ঠিক করে সে আবির ভাইয়াকে চিঠি লিখবে।আর লিখেও ফেলে তাকে দেওয়ার জন্য।আমরা যেহেতু বের হলে মুখ ঢাকা থাকে তাই চেনার কথা না।
আমরা বাড়ি ফেরার সময় রাস্তায় অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকি কিন্তু আবির ভাইয়াকে দেখতে পাওয়া যায় না।তুশি তো ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকবে বলে প্রতিজ্ঞা করে,সন্ধ্যা হয়ে যায় তখন আমরা আবির ভাইয়াকে বাড়ি থেকে বের হতে দেখি।সাথে সাথে তুশি আমাকে নিয়ে আবির ভাইয়ার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
— জ্বী?কিছু বলবেন?(আবির)
— হ্যাঁ, তার জন্যই বিকেল থেকে অপেক্ষা করছি।(তিশু)
— কেন?কি এমন কথা!(আবির)
— (……..) আগের ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো একে একে সব বলে দেয় তুশি।আর তুশির কথা শুনে আবির ভাইয়া মিটিমিটি করে হাসে।
— আপনি অনেক ছোট, এসময় অনেকজনকেই ভাল লাগবে।সময়ের সাথে ভুলেও যাবেন।এটা আপনার ভালোবাসা না, শুধুমাত্র আবেগ এটা।
— না এটা আমার আবেগ না,আমি সত্যি আপনাকে ভালোবাসি।
— কতদিন থাকবে এই ভালোবাসা?
— সারাজীবন থাকবে।
— এই দেখুন আমার হাতে ব্যাগ,আমি শহরে যাচ্ছি,এতদিন ছুটি ছিল তাই বাড়িতে ছিলাম।প্রতিদিন দেখতে পেয়েছেন এজন্য আপনার মনে হচ্ছে আপনি আমাকে ভালবাসেন কিন্তু এটা তো সঠিক না।
— এটাই সঠিক,আমি আপনাকে ভালোবাসি।
— আচ্ছা ঠিক আছে মানলাম আপনি আমাকে ভালোবাসেন, আমার শহরে থাকতে হবে আরও দুই থেকে আড়াই বছর তারপর আবার বাহিরে পড়তে যাওয়ার ইচ্ছে আছে এতদিন একা থাকতে পারবেন?
–……………
— জানতাম আপনি পারবেন না,আপনি ছোট এসব মাথায় না রেখে পড়াশোনা করুন।যদি নসিবে থাকেন তাহলে আবার দেখা হবে।
— আমি আপনার জন্য অপেক্ষা করব আবির।
— আমার নাম ও জানেন বাহ।আচ্ছা ঠিক আছে আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে আমি আসছি।
— এটা আপনার জন্য(চিঠি দিয়ে)
— চিঠি!!আচ্ছা ঠিক আছে আমি রেখে দিলাম।
কথাগুলো বলেই আবির ভাইয়া চলে যায়,উনি হয়তো ভেবেছিলেন তুশি সত্যি আবেগে ওরকম করেছে, কিন্তু তুশি সত্যি সত্যি আবির ভাইয়াকে ভালোবাসে।তারপর আর আবির ভাইয়ার সাথে আমাদের দেখা হয় নি।একদিন শুধু রাস্তায় দেখে গাড়ি থামিয়ে নামতে নামতে হারিয়ে যায়।তুশির সাথে আমি নিজেও অনেক খুজেছি।তুশি তো মাঝেমধ্যে আবির ভাইয়ার কথা মনে করে কান্না করতো।আপনারা যেদিন ও বাড়িতে যান সেদিন থেকেই তুশির সন্দেহ হয় যে ও যাকে ভালোবাসে তার সাথেই হয়তো আপনার বিয়ে।আর সেদিন হাসপাতালে দেখে আমরা একেবারে শিওর হই।আর দেখুন শেষে ভালোবাসার টানেই আবির ভাইয়া তুশির হচ্ছে।

— বাহ এতকিছু ঘটে গেছে আর আমি জানি না।
— স্যরি আপু(তিশু)
— আচ্ছা আচ্ছা হয়েছে,এখন চুপ করে বস সাজানো শুরু করি,সময় তো খুব বেশি নেই।

আজকের সময় যেন খুব তাড়াতাড়ি চলে যাচ্ছে।
তিশুকে সাজানোর পর ওকে তাকিয়ে দেখেই যাচ্ছি।মেয়েটা কত বড় হয়ে গেছে।আমি অনার্স থার্ড ইয়ার আর সে ফার্স্ট ইয়ারে। আমরা প্রায় সম বয়সী,কিন্তু ওকে আমার এখনও ছোট ছোট লাগে।আজকে তার বিয়ে,এত তাড়াতাড়ি কত বড় হয়ে গেল।

সারাক্ষণ আমি তিশুর কাছে বসেছিলাম।তিশুও সবসময় আমার হাতটা শক্ত করে ধরেছিল।বরযাত্রী অনেকক্ষণ আগেই চলে এসেছে,সবাই বাহিরেই আছে,ও বাড়ির কোন মেয়ে হয়তো আসে নি,তাই এখনো কেউ রুমে এলো না।
কিছুক্ষণ পর তিশুকে নিয়ে যাওয়ার ডাক পড়লো।বিয়ের জন্য,হয়তো এক্ষুনি কবুল পড়ানো হবে।আর তারপর আমাদের তিশুর আরেকটি পরিচয় জন্ম নিবে।
বড়রা সবাই তিশুকে নিয়ে যেতে চাইছে,তিশু বারবার আমাকে বলছে
— আপু তুই আমাকে নিয়ে যাবি।
— বড়রা তো নিয়েই যাচ্ছে তিশু,ওদের সাথে যা।আমি তো আছি পিছনে
— তুই আমার সাথেই যাবি কোন পিছনে হবে না।
— আচ্ছা চল।
তিশুকে নিয়ে গেলাম সবাই মিলে।
বিয়ের ওখানে গিয়ে দেখি বাবা আর নিহান স্যারের বাবা কিছু একটা নিয়ে সিরিয়াস আলোচনা করছেন।কিন্তু নিহান স্যারকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না।
আমাকে দেখে বাবা আমার দিকে এগিয়ে এলেন।
— নবু মা তোর সাথে কিছু কথা আছে।
— হ্যাঁ বাবা।
— আমি একই আয়োজনে দুটো বিয়ে দিতে চাইছি।আমি নিশ্চিত এবার আমি ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছি।
— কি বলছো বাবা,দুটো বিয়ে মানে?
— হ্যাঁ দুটো বিয়ে হবে আজকে।

চলবে……..
নাইস,নেক্সট কমেন্ট না করে গল্প সম্পর্কে মন্তব্য করে জানাবেন প্লিজ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here