ভুল -পর্ব ১৮

0
210

#ভুল ১৮তম পর্ব
#jannat_Nur

প্রায় একমাস হতে চলল সুফিয়া বেগম মানসিক হসপিটাল চিকিৎসাধীন রয়েছেন!
আগের থেকে অনেকটা উন্নতি হয়েছে তার মানসিক অবস্থার। এরমধ্যে রফিক মিয়া ঢাকায় গিয়েছিলেন অবন্তীকে নিয়ে আসতে। অবন্তী বলেছে যতদিন মামি ভালো না হয় ততদিন আমি এখানে থাকবো। বাবা মেয়ে একপ্রকার ঝগড়া হয়ে যায় কিন্তু তবু রফিক মিয়া অবন্তীকে নিয়ে আসতে পারেনি।
রফিক মিয়া মেয়েকে বলে এসেছে আজ থেকে তুই আমার মেয়ে না, যে মেয়ে বাবা-মার কথা শুনে না তেমন মেয়ের দরকার নেই। অবন্তী তার বাবাকে বলে দিয়েছে এটা আর নতুন কি আমি তোমাকে বাবা বলে মনে করি না।

ঢাকায় কয়েকটা ফ্যাশন হাউসের সিরাত ইন্টারভিউ দিয়েছে, তার ইচ্ছা তার মা ভালো হলে বাবার বাসায় ফিরে যাবে না। মাকে নিয়ে ঢাকাতেই থাকবে, তাই তাকে নিজে কিছু করতে হবে! সে কারণেই কয়েকটা ফ্যাশন হাউজে তার ইন্টারভিউ দেওয়া।
আমেরিকার নিউ জার্সি ইউনিভার্সিটি থেকে ফ্যাশন ডিজাইনের উপর গ্রেজুয়েশন করা এমন মানুষকে সব ফ্যাশন হাউসে ই চাইবে। দুইটা ফ্যাশন হাউজ থেকে তার চাকরি নিশ্চিত হয়েছে, এখন সিরাতের যেখানে ভালো লাগবে সুযোগ সুবিধা বেশি পাবে সেখানে চাকরিটা করবে। বিডি ফ্যাশন নামের আন্তর্জাতিক মানের ফ্যাশন হাউসে, ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে চাকরিতে যোগ দিয়ে সিরাত ঢাকার উত্তরায় ফ্ল্যাট ভাড়া নিলো। সিরাত এখন অপেক্ষা করছে তার মা সুস্থ হলেই মাকে নিয়ে এখানে চলে আসবে।

আমিরুল ইসলাম যখন শুনতে পারলেন তার ছেলে অন্যের ফ্যাশন হাউসে চাকরি করবে, এটা সে মানতে পারছেন না। সে নিজে অনেক টাকার মালিক গার্মেন্টস ব্যবসা আছে, তার অফিসে তার ছেলে এমডি হিসেবে থাকবে, আর তার একমাত্র ছেলে করবে অন্যের ফ্যাশন হাউজে চাকরি। এটা কিছুতেই আমিরুল ইসলাম মেনে নিতে পারছেন না, ঢাকায় এসে সিরাতের সাথে সামনাসামনি হলো।

আমি এটা কি শুনলাম তুমি নাকি বিডি ফ্যাশন হাউসে চাকরি নিয়েছো! তোমাকে কেন অন্যের ফ্যাশন হাউসে চাকরি করতে হবে, আমার গার্মেন্টস ব্যবসা কে দেখাশোনা করবে? তুমি আমার একমাত্র ছেলে হয়ে অন্যের অধীনে চাকরি করবে। তোমার অধীনে চাকরি করবে অনেক মানুষ, আর তুমি কিনা অন্যের ফ্যাশন হাউসে কাজ করবে। আমি চাই তোমার মা সুস্থ হলে বাসায় নিয়ে এসে তুমি আমার সাথে বিজনেস করবে।

স্যরি পাপা আমি তোমার কথা রাখতে পারব না! কথা না রাখার প্রথমত কারণ হলো আমার মাকে তোমাদের এখানে নিয়ে যাব না। আর দ্বিতীয়ত আমি আমার মাকে নিয়ে আলাদা থাকতে চাই, তোমার সাথে থাকবো না।

সিরাত দেখো এরকম করো না, আমি ভুল করেছি তুমি আমার ছেলে তোমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি! তোমার মা সুস্থ হোক তার কাছে ক্ষমা চাইবো, তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও, আমরা এখন একসঙ্গে থাকবো। আর তোমার মাকে যে জোর করে ডিভোর্স দিয়েছিলাম সেখানে তোমার মায়ের সম্মতি ছিল না, তাই আমাদের ডিভোর্সটা হয়নি! দুজনের মতামতের ভিত্তিতে ডিভোর্স হয়, তোমার মায়ের মতের মূল্য দেইনি আমি, তাহলে তোমার মাকে ডিভোর্স দেওয়া হয়নি।

পাপা সেটা হয় কি হয়নি আমার জানার কোন দরকার নেই, আমি তোমার সাথে থাকবো না। আমাকে নিয়ে ২১ বছর তুমি ছিলে, নাহয় আরো ২১ বছর আমি তোমাকে ছাড়া আমার মায়ের সঙ্গে থাকলাম। সেই একুশ বছরের আমার মা যে কষ্টটা পেয়েছিল সেই কষ্টটা তোমার বুঝতে হবে, আমি তোমাকে বোঝাতে চাই সন্তান হারানোর কষ্ট।

আমিরুল ইসলাম অনেক আকুতি মিনতি করেও সিরাতকে বুঝাতে ব্যর্থ হলেন! তার মনে হচ্ছে মরে যেতে পারলে ভালো হতো। আত্মহত্যা করা মহাপাপ যদি না হতো আমিরুল ইসলাম আত্মহত্যার পথ বেছে নিতেন। এত আদরের ছেলে তার সাথে এরূপ ব্যবহার করবে স্বপ্নেও ভাবেননি তিনি। এটা মনে হয় তার পাপের প্রায়শ্চিত্ত, কি আর করা শত কষ্ট হলেও এ প্রায়শ্চিত্ত তার করতেই হবে।

সিরাতের অফিসে যেতে হয় সকাল ৯ টা এবং ফিরে বিকেল সাড়ে চারটায়, তারপর এসে হসপিটালে যায়। অবন্তী এমনভাবে সুফিয়া বেগমের খেয়াল রাখে সিরাতের আর কোন ভাবনা নেই। সে জানে অবন্তী মনে প্রাণে তার মাকে সুস্থ করতে চেষ্টা করতেছে। নিজের মেয়ে মায়ের জন্য যতটুকু করে অবন্তী তার মায়ের জন্য ততটাই করছে। সিরাতের মনে হয় অবন্তী রফিক মিয়ার মেয়ে না, বাবা এত নিষ্ঠুর এবং নিচু মনের মানুষ আর মেয়েটা হয়েছে অন্যরকম। অবন্তী আছে বলেই সিরাত নিশ্চিন্তে চাকরি করতে পারছে! মেয়েটা তার মার জন্য অনেক করতেছে।
হয়তো এটাও কারণ হতে পারে তার বাবার জন্য আমার মায়ের এই অবস্থা, তাই অবন্তী আমার মাকে সুস্থ করতে আম্মুর সাথে আছে, সিরাত মাঝেমাঝে এমনটাই ভাবে।

আজ শুক্রবার জুমার নামাজ পড়ে সিরাত যখন মসজিদ থেকে বের হয়, মসজিদের সামনে অসুস্থ একটা লোক খুড়িয়ে খুড়িয়ে আসছিল! সিরাত তার পাশ দিয়ে যখন যাচ্ছিলো লোকটা তাকে দেখে বলল বাবা আমাকে কিছু সাহায্য করবে? আমি এখানে এসেছি সাহায্য পাবার আশায়। ঢাকা শহরের প্রায় সব মসজিদে ঘুরে ঘুরে সাহায্য তুলতেছি, আমি অসহায় মানুষ আমাকে যদি তুমি সাহায্য করো খুব উপকৃত হবো। আমার মনে হচ্ছে তুমি অনেক ভালো মানুষ আমাকে কিছু টাকা দিয়ে সাহায্য করবে। আমি জীবন মরণের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি যদি অপারেশন না করতে পারি আমার পায়ে পচন ধরে যাবে। ডাক্তার বলেছে তাড়াতাড়ি অপারেশন করতে, অপারেশন করতে দুই লাখ টাকা লাগে। খেতে পারি না দুই লাখ টাকা কোথায় পাবো। এক মাস ধরে ঘুরে ঘুরে বিশ হাজার টাকার মতো জমিয়েছি, আরো এক লাখ আশি হাজার! এই টাকা জমাইতে আমার এক দেড় বছরের লেগে যাবে, ততদিনে আমার পায়ে পচন হলে ক্যান্সার হয়ে আমি মারা যাব।

লোকটার কথা শুনে সিরার তাকে ধরে নিয়ে মসজিদের পাশে বেঞ্চে বসলো। সিরাত লোকটার কাছে বসে জানতে চাইলো আপনার পায়ে কি হয়েছে দেখি, কোথায় পচন ধরেছে।

লোকটা লুঙ্গি উঁচু করে হাটু বের করলেন, কাপড় দিয়ে বেঁধে রাখা হাটু দেখিয়ে বললেন দুই বছর আগে এখানে একটা ফোঁড়া উঠেছিল! প্রথমে এত গুরুত্ব দেইনি সেই ফোঁড়া থেকে আস্তে আস্তে ঘা হয়ে যায়। অনেক চিকিৎসা করিয়েছি ভালো হয়নি, তাই ঢাকায় এসেছি। ডাক্তার বলেছে তিন মাসের মধ্যে অপারেশন করতে, না হলে নাকি আমাকে বাঁচানো যাবে না। এক মাস তো চলে গেল আর এই দুই মাসের মধ্যে আমি এক লাখ আশি হাজার টাকা কোথায় পাবো।

কেন আপনার ছেলে মেয়ে নেই? তাদেরকে বলেন টাকার জোগাড় করতে।

আমার কপাল, ছেলে থেকেও না থাকার মত। দুইজন ছেলে আছে তারা বলে আমরা ঠিকমত খেতে পারিনা তোমাকে চিকিৎসার টাকা কোথা থেকে দিবো।

আপনার কি জমিজমা নেই সেগুলো বিক্রি করে চিকিৎসা করেন, জীবনের মূল্য দেন আগে।

জমি ছেলেদের নামে লিখে দিয়েছি, এখন তারা বিক্রি করতে দিবে না। বলে জমি বিক্রি করে দিলে আমরা থাকবো কোথায়, তোমার বয়স হয়েছে যতদিন হায়াত আছে বেঁচে থাকবে, মরন আসলে মরে যাবে।

বল বাবা কেউ কি এভাবে কষ্ট পেয়ে মরতে চায়। আমার এখানে প্রচুর ব্যথা করে খুব কষ্ট করে লাঠি ভর দিয়ে হেঁটে হেঁটে টাকা তুলছি। আমার স্ত্রী সেও আমাকে দেখতে পারেনা, সেও ছেলেদের পক্ষে। এই শেষ জীবনে এসে বুঝতে পারছি জীবনে যা পাপ করেছি এই পাপের শাস্তি আল্লাহ আমাকে দিচ্ছেন।

আরে না আপনি ভুল ভাবছেন আল্লাহ মানুষকে বিপদ আপদ রোগব্যাধি দিয়ে পরীক্ষা করেন! দেখে তার উপর মানুষ বিশ্বাস রাখে কিনা। ধৈর্য ধরেন ঠিক হয়ে যাবে।

না বাবা আমার মত পাপী হয়তো এই দুনিয়ায় কমই আছে, কি পাপ না করেছি আমি। সবকিছু আমার দ্বারা সম্ভব ছিল! টাকার জন্য আমি সব করেছি, আর এখন এই টাকার কারণেই চিকিৎসা করতে পারতাছি না। নিজের স্ত্রী সন্তান আমার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, চিকিৎসা করাতে ঢাকা আসার জন্য ছেলেদেরকে বলছিলাম, তারা আসেনি আমার স্ত্রী এসেছিল। আমাকে হসপিটালে রেখে আবার চলে গেছে, তাকে বলছিলাম আমাকে মানুষের দ্বারে দ্বারে নিয়ে যেতে সাহায্য চাইতে, সে বলল পারবেনা। আমাকে রেখে গ্রামে চলে গেল।

কি বলেন আপনার স্ত্রী আপনাকে রেখে চলে গেল! মানুষ এমনও হয়, এরকম একজন অসুস্থ মানুষকে রেখে কিভাবে তিনি গেলেন। আপনার গ্রাম কোথায়

আমার গ্রাম নবীনগর গাজীপুর।

কি বলেন আপনি নবীনগরের? আমার গ্রামের বাড়ি তো সেখানে।

তোমার গ্রামের বাড়ি নবীনগর, তোমার বাবার নাম কি?

নবীনগরের সিকদার বাড়ি চেনেন, শিকদার বাড়ির বড় ছেলে আমিরুল ইসলাম আমার বাবা।

অসুস্থ ফজল উদ্দীন সিরাতকে প্রশ্ন করলেন তুমি আমিরুলের ছেলে, আমিরুল ইসলাম সিকদার তোমার বাবা। তোমার বাবা-না আমেরিকা থাকে তিনি কি দেশে চলে আসছেন? তোমরা কয় ভাইবোন?

আমরা বাংলাদেশে আসছি এক বছর হবে, আমার কোন ভাইবোন নেই, আমি বাবার একমাত্র সন্তান।

কেন তোমার বাবা কি দ্বিতীয় বিয়ে করেননি? দ্বিতীয় পক্ষের কোন ছেলেমেয়ে নেই।

না তিনি আর দ্বিতীয় বিয়ে করেননি, কেন আপনি আমার বাবার পরিচিত নাকি।

ফজল উদ্দিন গভীর চিন্তায় ডুবে গেলেন, তিনি কি যেন ভাবছেন। সিরার তাকে জিজ্ঞেস করল কি হলো বলেন চাচা আপনি আমার বাবার পরিচিত।

তোমার মায়ের নাম সুফিয়া বেগম, তুমি সুফিয়া বেগমের ছেলে তাই না। মা ছাড়া বড় হয়েছো শুধু আমার কারণেই। আজকে আমার এই পরিণতি কেন জানো, সামান্য কিছু টাকার কারণে একটা নিরপরাধ মানুষের জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছি।

আপনি কি বলছেন, আপনি কিভাবে আমার মায়ের জীবন নষ্ট করলেন।

তোমার মা কি এখনো বেঁচে আছে, তাকে খুঁজে পেয়েছো?

আমি আমেরিকা থেকে আসার পর অনেক চেষ্টা করে মাকে খুঁজে পেয়েছি, এখন সে ঢাকা মানসিক হসপিটালের ভর্তি আছে।

শুনেছিলাম তোমার মা তোমার কারণে পাগল হয়ে রাস্তায় রাস্তায় তোমাকে খুঁজেছে। এই সব হয়েছে আমার কারণে।

আপনার কারণে কেন আমার মা অপরাধী হয়েছে সেটা যদি ক্লিয়ার করে বলতেন।

তাহলে শুনো, আমি তখন তোমার ছোট ফুপা রফিক মিয়া সাথে ব্যবসা করতাম। আমাদের মধ্যে অনেক মিল ছিল, এমন কোন কাজ করিনি আমরা যা বলা যাবে না! সব অন্যায় কাজ আমাদের দ্বারা হয়েছে। বলা গেলে আমাদের চরিত্র একদমই ভালো ছিল না। রফিক মিয়ার ইচ্ছা ছিল তোমার মায়ের সাথে সম্পর্ক করার, সে আমাকে অনেকবার বলেছে সুফিয়াকে পছন্দ করে। একদিনের জন্য হলেও তাকে সে পেতে চায়। কিন্তু তোমার মা তাকে সে সুযোগ দেয়নি, অনেক ভালো চরিত্রের ছিল তোমার মা। রফিক মিয়া সুযোগ না পেয়ে তোমার মায়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে। তার ধারণা ছিল তোমার বাবা যদি তোমার মাকে ডিভোর্স দেয়, সে তাকে বিয়ে করবে। একদিন নাকি তোমার মায়ের রুমে যেয়ে তাকে পালিয়ে যাবার জন্য প্রস্তাব দেয়। তোমার মা তাকে রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলে, রফিক বলে তার সাথে রাত কাটাতে। তখন তোমার মা রফিককে থাপ্পড় মারে। থাপ্পড় খাওয়ার পর আমার সাথে এসে বলে যেভাবেই হোক এই মহিলাকে আমি হাতের মুঠোয় নেব, তার অহংকার আমি চূর্ণ-বিচূর্ণ করে ছাড়বো। আমি তাকে বললাম সেটা কিভাবে করবি। সে বলল তোর একটু সহযোগিতা দরকার, তুই যদি আমাকে সাহায্য করিস সুফিয়াকে আমি হাতের মুঠোয় পাব! বন্ধু হয়ে তুই আমার জন্য এই কাজটা করতে পারবি না। আমি বললাম ঠিক আছে কি করতে হবে আমাকে বল, বন্ধু হয়ে বন্ধুর জন্য সব করতে পারি আর তোকে সাহায্য করতে পারবো না। রফিক মিয়া বলল রাতের অন্ধকারে আমাকে সুফিয়া বেগমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। রাত ঠিক দুইটা তখন সে উঠে সবাইকে ডেকে দেখাবে সুফিয়া বেগমের রুম থেকে পুরুষ মানুষ বের হয়ে যাচ্ছে। আমি তখন এক বাক্যে রাজি হয়ে গেলাম। বললাম এটা তো একটা সামান্য ব্যাপার, তোর জন্য এতটুকু করতেই পারি। কিন্তু এটা ভেবে দেখলাম না একটা নিষ্পাপ মহিলার সংসার ভেঙে যাবে, তার দুধের শিশু এতিম হবে। এতই পাপিষ্ঠ ছিলাম এই চিন্তা ধারা মাথায় আসেনি। তার প্ল্যান অনুযায়ী আমি তাই করলাম, আমি রাত ২ টার আগে তোমার মায়ের রুমের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। রফিক মিয়া তখন উঠে তোমার ফুপিকে ডাক দিছে এবং তোমাকে চাচাদের ডাক দিয়েছে। তারা সবাই দেখেছে আমি তাদের বাসা থেকে বের হয়ে পালিয়ে গিয়েছি, কিন্তু কেউ আমাকে চিনতে পারেনি। তারপরে শুনেছি তোমার বাবা বিদেশ থেকে এসে তোমাকে রেখে দিয়ে সুফিয়াকে ডিভোর্স দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছে। রফিক মিয়া তখন তোমার মায়ের কাছে গিয়ে আবারও সেই প্রস্তাব দিয়েছিল, তোমার মা তখন তোমার চিন্তায় পাগল প্রায় অবস্থায়। রফিক মিয়ার কথায় তাকে চড় থাপ্পড় মেরে সেখান থেকে চলে গিয়েছিল। রফিক মিয়া পারেনি তোমার মায়ের সাথে খারাপ কিছু করতে। কিছুদিন পর শুনি তোমার মা তোমার সুখে পাগল হয়ে ঢাকা চলে গিয়েছে। যে পাপ আমি করেছি তখন তা না বুঝলেও বয়স বাড়ার সাথে সাথে আস্তে আস্তে উপলব্ধি করতে থাকি জীবনের সর্বোচ্চ পাপ করেছি তোমার মায়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা নাটক করে। সেটার শাস্তি আল্লাহ আমাকে দিচ্ছে, কিন্তু আমি চাই তোমার মায়ের জীবনটা নষ্ট করার পিছনে যে ব্যক্তি মূল ষড়যন্ত্রকারী তারা শাস্তি হোক।একজন নির্দোষ ব্যক্তি এত বছর অপরাধ না করে শাস্তি পেয়েছে, আর সে অপরাধী হয়ে আরাম আয়েশে জীবনযাপন করছে তার শাস্তি হওয়া দরকার। তার ভালো মানুষের মুখোশটা সবার সামনে উন্মোচিত হবার প্রয়োজন।

আপনি এ কথাগুলো সবার সামনে বলতে পারবেন।

অবশ্যই বলতে পারবো অন্তত সত্য বলে মরতে পারলে কিছুটা পাপ মোচন হবে আমার।

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here