ভুল -পর্ব ১৭

0
218

#ভুল ১৭তম পর্ব
#jannat_Nur

সিরাত অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে কখন বাস এসে ময়মনসিংহ পৌঁছাবে। অপেক্ষার সময় পার হতে চায়না। সিরাত আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে যাচ্ছে এখানে সে যেন তার মাকে সে খুঁজে পায়। যতই ময়মনসিংহের কাছাকাছি আসছে ততই তার হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ বাস স্টেশনে নেমে সিএনজি নেয়া হলো ফুলপুর যাবার উদ্দেশ্যে, মানসিক নিরাময় কেন্দ্র ফুলপুরে অবস্থিত। সময় যেন পার হতে চাচ্ছে না। মনে হচ্ছে অনন্তকাল ধরে সে যাত্রা করছে! অবশেষে যাত্রা সমাপ্ত হলো। মানসিক নিরাময় কেন্দ্রের সামনে আসছে সিরাত, আমিরুল ইসলাম। আগে থেকেই নিজাম উদ্দিন এর সাথে কথা ছিল আজকে তারা আসবে, নিজাম উদ্দিন তাদেরকে নিরাময় কেন্দ্রের ভেতরে নিয়ে গেল।

আমাদের এখানে অনেক মানসিক রোগী ছিল আস্তে আস্তে সবাই ভালো হয়ে পরিবারের কাছে ফিরে গিয়েছে! আবার দুই এক জন মারা গিয়েছে, এখন আমাদের এখানে ২৫ জন রোগী আছে।

মারা গিয়েছে শুনে সিরার এবং আমিরুল ইসলাম দুজনেই মন খারাপ করে ফেলল।

আসুন এই যে মহিলা একে দেখুন, আপনার পোষ্টের বর্ণনা অনুযায়ী তার সাথে অনেকটা মিলেছে! তাই আমি আপনাকে নক দিয়েছি।

আমিরুল ইসলাম অবাক নয়নে তাকিয়ে আছে মহিলাটির দিকে, তার পরিচিত মনে হচ্ছে! তাহলে কি এই তার স্ত্রী সুফিয়া, এটা ভেবে সে অনেকটা কাছাকাছি গেল মহিলাটি। আমিরুল ইসলাম নিজাম উদ্দিনকে বললেন, হাতের কব্জির উপর কাটা দাগ ছিল সেটা একটু দেখান তো, আমাকে দেখে তিনি ভয় পাচ্ছে। নিজাম উদ্দিন অনেক বছর ধরে সবার দেখাশোনা করে তাই নিজামকে দেখে কোন মানসিক রোগীরা ভয় পায় না, ভাবে সে তাদের মতই একজন। কব্জির উপর কাটা দাগ দেখে এবং গালের তিলটা ভালোভাবে খেয়াল করে আমিরুল ইসলাম সিরাতকে বললেন এটাই তোমার মা। কি মানুষ কি হয়েছে, কিভাবে চিনবো বলো, ফর্সা গায়ের রং কালো হয়ে গিয়েছে! স্বাস্থ্যবান ছিল এখন শরীরে হাড্ডি ছাড়া আর কিছু নেই।

সিরাত তার মাকে ধরতে গেলে সুফিয়া বেগম অনেকটা দূরে সরে গিয়ে বললেন, কে তোমরা আমার কাছে কি চাও? আমার ছেলেকে এনে দিবে।

আম্মু আমি তোমার ছেলে, আমি তোমার সেই ছোট্ট সিরাত! এতটা বছরে অনেক বড় হয়ে গেছি। আম্মু তোমাকে আমি খুঁজে পেয়েছি আল্লাহর কাছে হাজার হাজার শুকরিয়া।

সিরাতের কথা শুনে সুফিয়া বেগম মুখের দিকে তাকিয়ে আছে! তারপর বলল না না তুমি আমার ছেলে না, আমার ছেলে অনেক ছোট। তার বাবা তাকে নিয়ে আমেরিকা চলে গেছে, আমি আমেরিকা যাবো! তোমরা আমাকে আমেরিকা নিয়ে যাবে। এই লোকগুলো আমাকে আমেরিকা যেতে দেয়না, আমি তাদেরকে বলছি আমার ছেলে আমেরিকা থাকে! এরা সবাই বলে আমাকে নিয়ে যাবে, কতদিন হয়ে গেল এখনো নিয়ে যাচ্ছেনা।

সিরাত বলল আমি তোমাকে নিয়ে যাব, তুমি আমেরিকা যাবে।

হ্যাঁ যাবো, সত্যি তুমি আমাকে নিয়ে যাবে? তুমি অনেক ভালো, তুমি অনেক ভালো! বলতে বলতে সুফিয়া বেগম কান্না করে দিলেন।

নিজাম উদ্দিন আমিরুল ইসলামকে বললেন, কিছু কাগজপত্রে সাইন করে আপনারা তাকে নিয়ে যেতে পারেন! আশা করি ভালো চিকিৎসা পেলে আপনার স্ত্রী ভালো হয়ে যাবে। আমাদের এখানে তেমন চিকিৎসা দিতে পারিনি, বুঝেন ই তো এই গ্রামের ভিতর সরকারি তেমন কোন অনুদান পাইনা। নিজ খরচায় যেটুকু করতে পারি, সেটুকুই করতে চেষ্টা করি।

সিরাত নিজাম উদ্দিনকে অনেক কৃতজ্ঞতা জানালো। বলল আপনি যদি আমার আম্মুকে এখানে নিয়ে না আসতেন হয়তো এত দিনে কোথায় না কোথায় পড়ে থাকতো। আপনি যা করছেন আপনার কাছে সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো। আর আমি চাইবো আপনার এই নিরাময় কেন্দ্রে আর্থিক সাহায্য করতে। আমি যতদিন বেঁচে আছি অসহায় মানসিক রোগীদের জন্য কিছু করে যেতে চাই। আপনি একটা প্রাইভেট কার ভাড়া করে দেন আম্মুকে নিয়ে ঢাকা যাব, সেখানে মানসিক হসপিটালে ভর্তি করাবো। দেখি ডাক্তাররা কি বলে, প্রয়োজনে ইন্ডিয়াতে নিয়ে যাব।

আপনার মত ছেলে যেন প্রতিটা মায়ের গর্ভে জন্ম নেয়! আপনি এত বছর আমেরিকা থেকে এসে মাকে কত চেষ্টা করে খুঁজে বের করলেন, আর অনেক ছেলে আছে মাকে নিজ ইচ্ছায় বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসে। আল্লাহ আপনার মাকে ভালো করুক, তিনি যেন আপনার সাথে জীবনের বাকিটা সময় সুখী হতে পারে এই দোয়া করি।

প্রাইভেট কারে করে সিরাত তার মাকে ঢাকায় স্বনামধন্য এক মানসিক হসপিটাল এলে ভর্তি করলো। সুফিয়া বেগমকে খুঁজে পেয়েছে এ খবর আমিরুল ইসলামের বাসায় সবাই জেনে ঢাকায় আসছে সুফিয়া বেগমকে দেখতে। শুধু আসেনি রফিক মিয়া, সে খুব ভয়ে আছে, সুফিয়ার বেগমের যদি স্মৃতিশক্তি ফিরে আসে এবং তার সাথে করা নোংরামির কথা গুলো সবার সামনে বলে কি হবে তার। সুফিয়া বেগমকে দেখে কেউ ঠিকমতো চিনতে পারছেন না, কেমন ছিল আর কেমন হয়েছে। পরিস্থিতির কারণে মানুষের সৌন্দর্য বদলে যায়, অনাদরে অবহেলায় থেকে মানুষের বয়সটা অনেক বেশি মনে হয়। ৫২ বছর বয়সী সুফিয়া বেগমকে দেখে মনে হচ্ছে ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধা।

পরিবারের সবাই দেখে চলে আসছে কিন্তু অবন্তী থেকে গেল হসপিটালে। রুমা আক্তার তাকে অনেক জোরাজুরি করলো বাসায় ফিরে আসার জন্য, সে তার মাকে বলল মামির কাছে একজন মেয়ে মানুষ থাকা দরকার। মামা এবং সিরাত ভাইয়া তারা সব কাজ করতে পারবে না, আমি মামির দেখাশোনা করবো।

রুমা আক্তার বারবার বললেন, তোর বাবা কিন্তু রাগ করবে। অবন্তী জানিয়ে দিলো তিনি রাগ করলে আমার কিছু আসে যায় না। আমি তাকে বাবা মনে করি না। রুমা আক্তার অবন্তীর কথা শুনে মেয়েকে আর কিছু না বলে সেখান থেকে চলে আসলেন! বুঝতে পারলেন মেয়ের সাথে বাড়াবাড়ি করে লাভ হবেনা, বরং সবার সামনে অপমানিত হতে হবে।
সবাই বাসায় আসলে রুমা আক্তার রফিক মিয়াকে বললেন, ভাবীকে দেখতে সবাই গেল তুমি কেন গেলে না? তোমাকে দেখছি কয়েকদিন ধরে চিন্তায় আছো, ব্যাপারটা কি আমাকে বলো।

আরে কি বলছো, আমি কেন চিন্তায় থাকবো, ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না, তাই নিয়ে মনটা খারাপ থাকে। অবন্তি কোথায় সে আসেনি।

না, তাকে আসতে বললাম বলল মামিকে দেখাশোনার জন্য আমি থেকে যাব! জোর করলাম তাও আসলো না।

মেয়েটার খুব বার বেড়ে গেছে, এমন তো ছিল না। সিরাত দেশে আসার পর থেকে মেয়েটা চেঞ্জ হয়ে গিয়েছে, আমাদের মুখে মুখে তর্ক করে। ছেলেটা আসলেই একটা শয়তান, আমার মেয়েকে আমাদের বিরুদ্ধে উস্কে দিয়েছে।

সিরাত কেন অবন্তীকে আমাদের বিরুদ্ধে উসকে দিবে! এতে তার কি লাভ।

লাভ লোকসান বুঝি না, সিরাত মনে করে আমাদের জন্য তার মা বাড়ি ছাড়া হয়েছে! সেটার প্রতিশোধ নিতে আমাদের মেয়েকে আমাদের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছে।

কথায় বলে না চোরের মনে পুলিশ পুলিশ, রফিক মিয়ার মনে এখন ভয় ঢুকে গেছে। আস্তে আস্তে তার চক্রান্তের কথা প্রকাশ পাবে এই ভয়ে সে সবসময় অস্থির থাকে।

সুফিয়া বেগমকে হসপিটালে ভর্তি করার পর তার সিটি স্ক্যান করা হয়েছে, আর অন্যান্য পরীক্ষাগুলো করা হয়েছে। ডাক্তার মুস্তাক আহমেদ সিরাতকে বললেন, আপনার মায়ের সমস্ত রিপোর্ট আমি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখলাম। তার বড় কোন প্রবলেম নেই, আশা করছি কিছুদিন চিকিৎসা করলে তিনি ভালো হয়ে যাবে, আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন তিনি চাইলে অতি দ্রুত আপনার মা আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাবে! আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব তাকে ভালো চিকিৎসা দিতে। এক মাস পর পর দিল্লি থেকে আমাদের এখানে মানসিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আসে, তার সাথে পরামর্শ করে আমরা চিকিৎসা দেব।

ডাক্তারের আশ্বাস শুনে সিরাতের মন অনেকটা শান্ত হলো, নিশ্চয়ই আল্লাহ তার মাকে সুস্থ করে দেবেন! সে এই বিশ্বাস রাখে, এবং মনে মনে নিয়ত করলেন তার নিয়মিত নামাজ পড়া দরকার। আমেরিকার মত দেশে থেকে ধর্মের প্রতি উদাসীন ছিল, এখন আর সেই ভুলটি করতে চাচ্ছে না। আল্লাহ তার মাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন, আল্লাহর সান্নিধ্যে তার অবশ্যই যেতে হবে। ডাক্তারের কথা শোনার পরে হসপিটালের কাছে মসজিদ আছে সেখানে গেলেন নামাজ পড়তে। আল্লাহর কাছে আর্জি করলেন আল্লাহ যেন তাড়াতাড়ি তার মাকে ভালো করে দেয়, এবং যে তার মায়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে তাকে যেন লোক চোখের সামনে নিয়ে আসে। নামাজ পড়ে এসে সিরাত আমিরুল ইসলামকে বলল,

তুমি এখন বাসায় যেতে পারো, আম্মু এখানে ভর্তি আছে তার চিকিৎসা ঠিকঠাক ভাবে চলবে! আমি আছি অবন্তী আছে তোমার আর থাকার দরকার নেই। তুমি তোমার ব্যবসা সামলাও যেয়ে।

আমার ব্যবসা করার মন মানসিকতা এখন নেই, আমি এখানে থাকতে চাই তোমাদের সাথে। বাসায় গেলে মন এখানে পড়ে থাকবে।

পাপা আমি চাচ্ছি না তুমি এখানে থাকো, আমি যখন আমার মাকে দেখি তখন মনে হয় এই অবস্থার পিছনে তুমি দায়ী। তাই তোমাকে আমি সহ্য করতে পারতেছিনা, তুমি আমার জন্মদাতা পিতা আমি চাইনা তোমার সাথে আমি খারাপ ব্যবহার করতে। তবু কেন জানি ইচ্ছা করে তোমার সাথে খুব বাজে বিহেভ করে ফেলি। নিজেকে খুব কন্ট্রোল করে রাখতেছি তাই চাচ্ছি তুমি আমার সামনে থেকো না, প্লিজ তুমি চলে যাও।

আমিরুল ইসলাম বুঝতে পারলেন, জোর করে কাজ হবেনা, সিরাত যখন বলেছে তাকে চলে যেতেই হবে।

ঠিক আছে আমি চলে যাচ্ছি, তুমি ভালোভাবে থেকো, আর কখন কি হয় আমি কল করলে আমাকে জানিও। বাবা তোমার মাকে কিন্তু আমি অনেক ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম, জানিনা আমার কি হয়েছিল আমি এত বড় ভুল সিদ্ধান্ত কেন নিয়েছিলাম। একটা কথা মনে রেখো তোমার মাকে যদি ভালো না বাসতাম এতদিনে তার জায়গায় অন্যজনকে দিয়ে দিতাম। আমার জীবনে অনেক মেয়ে আসতে চেয়েছে আমি কাউকে স্ত্রী হিসেবে তোমার মায়ের স্থান দিতে পারিনি। স্বীকার করি আমি ভুল করেছি এখন যদি আমি মরেও যাই তবু কিন্তু সেই ভুলের সংশোধন হবে না, যা হবার হয়েছে পারলে আমাকে মন থেকে ক্ষমা করে দাও।

সিরাত কোন উত্তর দিল না আমিরুল ইসলামের কথায়। তাই আমিরুল ইসলাম সুফিয়ার কেবিনে গেল। তাকে এক নজর দেখে অবন্তীকে বলল তোমার মামির খেয়াল রেখো, আমি চলে যাচ্ছি। সিরাত চাচ্ছে না আমি এখানে থাকি।

সিরাত ভাইয়া যখন যাচ্ছে না তাহলে আপনি চলে যান! আমরা দুজন তো আছি মামিকে দেখে রাখতে পারব, আপনার দরকার হলে আপনাকে জানাবো, তখন চলে আসবেন।

আমিরুল ইসলাম বাসায় ফিরে যাবার পর রফিক মিয়া তাকে বললেন, অবন্তী আসলো না কেন? কয়েকদিন পর তার ইয়ার চেঞ্জ পরীক্ষা, লেখাপড়া করতে হবে না।

অবন্তী কেন আসেনি সেটা তাকে জিজ্ঞেস করো, আমি তো জানিনা! তুমি তাকে ফোন করতে পারো না।

অবশ্যই ফোন করতে পারি, কিন্তু মেয়ে তো আমার কথা শুনছে না।

তোমার মেয়ে যদি তোমার কথা না শুনে আর কার কথা শুনবে। তার ইচ্ছা হচ্ছে সেখানে থাকার থাকুক।

আপনি এটা কি বলছেন, ইচ্ছা হলেই হবে লেখাপড়া বাদ দিয়ে।

তুমি তোমার মেয়েকে জিজ্ঞেস করো কেউ তাকে জোর করে সেখানে রাখেনি।

রফিক মিয়া কল করে খুব রাগারাগি করলেন অবন্তীর সাথে। অবন্তী রফিক মিয়াকে জানিয়ে দিলো আমি এখন আসছি না। ইয়ার চেঞ্জ পরীক্ষা দরকার হয় এই বছর আমি দেবো না, সামনে বছর দেবো।

রফিক মিয়া বুঝতে পারছেন না অবন্তী কেন এত বাড়াবাড়ি করছে। সে যে ঢাকায় যাবে সে সাহসও পাচ্ছে না, সুফিয়া বেগমের সামনে যেতে তার ভয় হচ্ছে।

সিরাত মার্কেটে গিয়ে অবন্তীর জন্য চার সেট থ্রি পিস কিনলো, আর নিত্য প্রয়োজনীয় যা কিছু লাগে সবকিছু কিনলো। এখানে থাকতে হবে অনেক দিন, অবন্তী এখানে থাকছে কোন জামা কাপড় আনেনি। সুফিয়া বেগমকে ঘুমের মেডিসিন দিয়ে রাখা হয় বেশিরভাগ সময়। যখন সজাগ থাকে সিরাতকে দেখে বলে আমাকে আমেরিকান নিয়ে যাও আমার ছেলের কাছে! তুমি না কথা দিয়েছিলে আমার ছেলের কাছে নিয়ে যাবে, তাহলে এখানে রাখছো কেন আমাকে। সিরাত তাকে বলে তুমি তো একটু অসুস্থ, সুস্থ হলে তোমাকে নিয়ে যাব! তখন তুমি তোমার ছেলেকে চিনতে পারবে।

সুফিয়া বেগম বলেন, আমার ছেলেকে আমি চিনতে পারবো তুমি এখনই নিয়ে যাও। অবন্তীর দিকে তাকিয়ে বলে তুমি বলে দাও এই ছেলেকে আমার সিরাতের কাছে নিয়ে যেতে।

মামি এইতো আপনার সিরাত, এখন অনেক বছরে আপনার ছোট সিরাত অনেক বড় হয়ে গিয়েছে। আপনি তার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখুন আপনার মতই দেখতে।

সুফিয়া বেগম সিরাতের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে তারপর বলেন, কিন্তু আমার সিরাত তো ছোট ছিল এই ছেলে অনেক বড়। আমার ছেলে অনেক বড় হলো কিভাবে, এটা আমার ছেলে নয়।

আম্মু আমি তোমার ছেলে, আমি তোমার সিরাত। সিরাতের কথা শুনে সুফিয়া বেগম কি যেন ভাবতে থাকে, ভাবতে ভাবতে বলে সেটা কিভাবে সম্ভব আমার ছেলে ছোট ছিল! ঠিকমতো কথা বলতে পারতো না। তুমি কত বড় এটা আমি বিশ্বাস করি না। তোমরা আমাকে মিথ্যা বলছো।

তখন অবন্তী আর সিরাত চুপ করে থাকে, সুফিয়া বেগম বিড়বিড় করে একা একাই কথা বলে যায়।

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here