#ভুল ৯ম পর্ব
#jannat_Nur
এই পাশ্চাত্যের মতো দেশে থেকেও সিরাত অনেকটা লাজুক টাইপের হয়েছে। এখানে ছেলেমেয়েদের মেলামেশা কোন ব্যাপারই না, বয়সন্ধিকালের পর থেকেই ছেলেমেয়েরা একে অপরের সাথে মেলামেশা করে। বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ড এ দেশে স্বাভাবিক ব্যাপার। তবু এ পর্যন্ত সিরাতের এখনো গার্লফ্রেন্ড নেই। স্কুলে পড়া অবস্থায় অনেক মেয়ে তাকে পছন্দ করেছে,
নিজ থেকে গার্লফ্রেন্ড হওয়ার অফার দিয়েছে! তার কাউকেই ভালো লাগেনি। সিরাতের নিজস্ব একটা পছন্দ আছে, ছোটবেলা থেকে তার ভাবনা মনের মতো কেউ একজন তার ভালোবাসার মানুষ হবে।
সেই মানুষটা ফর্সা না হোক, হোক শ্যাম বর্ণের তবুও যেন তার মুখের হাসিটা মায়াবী থাকে! চোখের চাহনি যেন তাকে পাগল করে দেয়, এক নজর তাকালে যেন নেশা ধরে যায় তার। গালে একটা ছোট তিল থাকবে যার দিকে তাকিয়ে হারিয়ে যাবে প্রিয়সীর ভালোবাসার গভীরে। সিরাতের কল্পনার মত কোন মেয়ে তার লাইফে আসেনি এখন পর্যন্ত। তাই কারো সাথে ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশা করা হয়নি সিরাতের। ফ্রেন্ড আছে অনেক, সেটা শুধুই ফ্রেন্ড এর বাহিরে কিছু না। ভার্সিটিতে যাবার পর দুজন খুব ভালো ফ্রেন্ড হয় তার! একজনের নাম শোয়াইব সে হল ইন্দোনেশিয়ান মুসলিম। আর একজন নিউইয়র্কের পলিন, পলিন মেয়েটা অনেক সহজ সরল। শোয়াইব আর পলিন সিরাতের খুব ভালো বন্ধু হয়েছে ভার্সিটিতে আসার পর থেকে।
সিরাত বাবার কাছে যখন যা চেয়েছে তাই পেয়েছে! আমিরুল ইসলাম ছেলের কোন আশা অপূর্ণ রাখতে চায়নি। তার মনে সবসময় হয়েছে ছেলেটা মা ছাড়া বড় হয়েছে! তাই সে চায়না কখনো ছেলের মনে কষ্ট দিতে। সিরাত তার বাবাকে তেমন ভালোবাসে না, বাবার কোন আদেশ নির্দেশ সে রাখেনা। সিরাতের কেন যেন মনে হয় তার পাপা তার প্রতি বেশি ভালোবাসার নাটক করে, তা সিরাতের পছন্দ না। সিরাত চেয়েছিল ফ্যাশন ডিজাইনের উপর লেখাপড়া করতে! আমিরুল ইসলামের ইচ্ছা ছিল ছেলে ইঞ্জিনিয়ার হোক কিন্তু সিরাত বাবার কথা রাখেনি সে তার স্বপ্ন পূরণ করতে ফ্যাশন ডিজাইনের উপর পড়াশোনা করতে ভর্তি হয়। আমিরুল ইসলাম তার ইচ্ছার কথা ছেলের কাছে প্রকাশ করলেও ছেলে ইঞ্জিনিয়ার হতে রাজি হয়নি! এতে আমিরুল ইসলাম খুব কষ্ট পায়। আমিরুল ইসলামের অনেক ইচ্ছা ছিল তার ছেলে ইঞ্জিনিয়ার হবে সেই স্বপ্নটা সিরাত ধুলিস্যাৎ করে দেওয়ায় খুব ভেঙে পড়ে আমিরুল ইসলাম! কিন্তু ছেলেকে কিছু বলার সাহস হয়ে উঠে না তার। আমিরুল ইসলাম সবসময় ভয়ে থাকে সিরাত যদি জানতে পারে সুফিয়াকে জোর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তাকে রেখে তখন কি বাবা হিসেবে তাকে মেনে নিবে, যদি ঘৃণা করে, তার মায়ের কাছে চলে যায় সিরাত এমনটাই ভাবে সবসময় আমি আমিরুল ইসলাম! তাই ছেলেকে কিছু বলার সাহস পায় না।
সিরাত যখন তৃতীয় বর্ষে, তখন জানতে পারে তার বন্ধু সোয়াইব একটা মেয়েকে প্রচন্ড ভালোবাসে! কিন্তু মেয়েটা তার সাথে ব্রেকআপ করে দিতে চাচ্ছে, এর জন্য শোয়াইব খুব ডিপ্রেশনে চলে যায়। বন্ধুর এরকম অবস্থা দেখে পলিন আর সিরাত জানতে চায় কি হয়েছে। শোয়াইব রিলেশনে ছিল এতদিন সিরাত আর পলিন জানতো না, কিন্তু এখন শোয়াইবের অবস্থা দেখে তাদের মনে সন্দেহ হয় কিছু একটা হয়েছে। জোর করে ধরে কি ঘটনা শোনার জন্য। শোয়াইব কেঁদে ফেলে সিরাতকে জড়িয়ে ধরে,
আমি একজনকে ভালোবাসি অনেক বেশি ভালোবাসি! কিন্তু সে আমাকে এখন ছেড়ে দিতে চাচ্ছে, তাকে ছাড়া আমার বাঁচাটা খুব কঠিন হয়ে যাবে।
সিরাত জানতে চাইলো কি অপরাধে তার প্রেমিকা তাকে ছেড়ে যেতে চাচ্ছে! তুই মেয়েটার এড্রেস দে নয়তো ফোন নাম্বার দে, তার সাথে আমি কথা বলব।
তুই কথা বলেও কিছু হবে না সে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাই করবে বলে দিয়েছে, এখানে কারো কথা রাখবে না।
আচ্ছা ঘটনা কি বল কেন তুই এত ভালোবাসা শর্তেও সে তোকে ছেড়ে দিতে চাচ্ছে।
আমি যাকে ভালোবাসি সে একজন খ্রিষ্টান মেয়ে, তার নাম রোদ। রোদের বাবা গির্জার পাদ্রী, তাই রোদ ধর্ম কর্মের প্রতি অনেক মনোযোগী। তার বাবার কাছ থেকে সে ধর্মের দীক্ষা নেয়। আমি মুসলিম আমাকে ভালোবাসার কারণ হলো তার নাকি ধারনা এদেশের খ্রিস্টান ছেলেরা নিজের ভার্জিনিটি রক্ষা করে চলে না। মুসলিম ছেলেদের আল্লাহর ভয় থাকে তাই বিবাহ পূর্ববর্তী শারীরিক সম্পর্কে জরায় কম। আমার চরিত্র ভালো এমনটা জেনে সে আমার সাথে রিলেশন করতে রাজি হয়, আর বলে বিয়ের আগে দৈহিক সম্পর্ক করবে না! সে চায় ভালোবাসাটা হোক পবিত্র এবং যা হবে বিয়ের পরে হবে। রোদের এমন কথা শুনে আমি অনেক খুশি হই কারণ এদেশে এমন মেয়ে আছে পাপের ভয়ে এগুলো থেকে বিরত থাকে। আমি আগে যাই করি সেটা আর রোদকে বলি না তার কথামতো আমিও ভালো হয়ে চলি। আমাদের রিলেশনটা এক বছরের, সে বলেছিল কাউকে না জানাতে। তার বাবা একজন গির্জার গণমান্য ব্যক্তি বিয়ের পরে সবাই জানবে এমনটাই চাইছিল রোদ। আমিও তাই মেনে নিয়েছি, তোদেরকেও বলিনি আমাদের সম্পর্কের ব্যাপারে।
রোদের আগে আমার আরো দুইজন গার্লফ্রেন্ড ছিল! রোদের সাথে সম্পর্কের পর আমি তাদের সাথে আর রিলেশন রাখিনি। আস্তে আস্তে কথা বলা কমিয়ে দিই এবং বলি আমি এখন আর কারো সাথে রিলেশন রাখবো না। যে দুইজনের সাথে আমার রিলেশন ছিল তাদের সাথে আমি ফিজিক্যাল সম্পর্কে জড়িয়েছিলাম। তাদের একজন এলিনা কিভাবে যেন জানতে পারে আমি রোদের সাথে রিলেশনে আছি! এবং তাকে প্রচন্ড ভালোবাসি। গত সপ্তাহে এলিনা আমার সামনাসামনি হয় এবং জানতে চায় তাকে কেন ছেড়ে দিয়ে আমি রোদের সাথে রিলেশন করলাম! সে আমাকে তার সবকিছু বিলিয়ে দেওয়া শর্তেও তাকে কেন ছেড়ে দিলাম। আমি তাকে বললাম, তার সাথে যা করেছি তার জন্য ক্ষমা করতে, রোদকে আমি প্রচন্ড ভালোবাসি বিয়ে করবো এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সে যেন আমাদের মাঝখানে না আসে, যা হয়েছে ভুলে যেতে। এলিনা আমার গালে থাপ্পর মারে এবং বলে তুই একজন প্রতারক, দুজন মেয়ের সাথে প্রতারণা করে নিরীহ একটা মেয়ের সাথে আবার রিলেশন করেছিস? যে মেয়েটার বাবা একজন সম্মানিত মানুষ আমি জানি সেই মেয়ের সর্বনাশ করে তাকে তুই ছেড়ে দিবি। কিন্তু তা আমি হতে দেবো না, তোর কিছু পিকচার আমার কাছে ছিল সেগুলো আমি মেয়েটাকে দেখাবো। আর তাকে বুঝিয়ে দেব সে তোর মত চরিত্রহীন লম্পটের খপ্পরে পড়েছে।
সেই কথামতো এলিনা রোদকে বলে তার সাথে আমার রিলেশন ছিল এবং আমি তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেছি। প্রথমে হয়তো রোদ বিশ্বাস করেনি কিন্তু এলিনার কাছে প্রমাণ ছিল সেগুলো সে দেখিয়েছে। এখন আমার সাথে সম্পর্ক রাখার জন্য কোনভাবেই রাজি নয় রোদ।
শোয়াইবের কথাগুলো শুনে সিরাতের ভালোলাগা শুরু হয়ে গেল রোদ মেয়েটার প্রতি। একটা খ্রিষ্টান মেয়েও এতটা ভালো থাকে। সে একটা ভালো ছেলেকে ভালোবাসতে চেয়েছিল কিন্তু সে ঠকে গেল শোয়াইবকে ভালোবেসে। মেয়েটাকে এক নজর দেখার জন্য সিরাতের বুকের ভেতর তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে, সে দেখতে চায় মেয়েটা কেমন। তাই সিরাত শোয়াইবকে বলল,
দোস্ত তুই তার এড্রেস দে না হয় ফোন নাম্বার দে, আমি যেভাবেই হোক তার সাথে কথা বলে এটার একটা সমাধান করতে চাইবো।
শোয়াইব রোদের নাম্বার দিলো সিরাতকে, নাম্বারটা পেয়ে সিরাত হাতে চাঁদ পাওয়ার মত খুশি হলো।ভার্সিটি থেকে বাসায় গিয়ে বিকেলে ব্যালকনিতে বসে কল দিলো রোদকে। কয়েকবার রিং হবার পর রোদ কল রিসিভ করে জানতে চাইলো কে আপনি?
রোদ আপনার সাথে আমার কিছু জরুরী কথা আছে! আপনি হয়তো আমাকে চিনেন না বাট আপনার সম্পর্কে আমি জানি, তাই আপনার সাথে কিছু কথা ছিল আমার। আপনি না করবেন না, যেকোন একটা রেস্টুরেন্টে আমার সাথে দেখা করেন! একদমে কথাগুলো বলল সিরাত।
অপর পাশ থেকে রোদ ভাবছে কে হতে পারে এই লোক! আর কেন তার সাথে দেখা করতে চায়। সে কি দেখা করবে, না করবেনা।
কি হলো আপনি চুপ করে আছেন কেন? বেশি না আপনি আমার সাথে ৩০ মিনিট সময় দেন! আপনার সাথে কিছু কথা বলব প্লিজ রোদ না করবেন না।
রোদ একটু ভেবে, তারপর বলল আচ্ছা আপনি আমাকে কিভাবে চেনেন সেটা আমার জানতে হবে! তারপর ভাববো দেখা করবো কি করবো না।
আমি শোয়াইবের বন্ধু, ভাববেন না তার পক্ষ নিয়ে আমি কিছু বলতে যাব! আমার কয়েকটা কথা জানার ছিল শুধু তার জন্য আপনার সাথে দেখা করতে চাই। আপনারা রিলেশনে ছিলেন সেটা আমি জানতাম না, এখন শোয়াইব আমাকে বলেছে! তার অপরাধ সে আপনাকে ঠকিয়েছে সেটা আমি জানি, তাই তো বলছি তার সাথে রিলেশন রাখার ব্যাপারে আমি কিছু বলতে যাব না! এটাও বলবো না আপনার মনের বিরুদ্ধে আপনি তাকে ভালোবাসেন, বাট আমার কিছু কথা ছিল তাই এত রিকুয়েষ্ট করছি।
রোদ বুঝতে পারলো ছেলেটা তার সাথে কথা বলার জন্য অনেক এক্সাইটেড হয়ে আছে। কিন্তু কি কারণে এতটা আগ্রহ প্রকাশ করছে সে বুঝতে পারছে না। তাই বলল আপনার সাথে আগামীকাল সকাল দশটায় স্টার হলিডে রেস্টুরেন্টে দেখা করব আপনি যথা সময়ে আসবেন।
সিরাতের আনন্দ কে দেখে, তার সাথে দেখা করতে রাজি হয়েছে এতে যেন তার বিশ্ব জয়ের আনন্দ হচ্ছে। কেন এরকম হচ্ছে সে বুঝতে পারছে না। আসলে শোয়াইবের কাছ থেকে মেয়েটার সম্বন্ধে ভালো ধারণা পেয়েই তার এত আনন্দ হচ্ছে। পরের দিন রোদের সাথে সিরাত দেখা করতে যাবে এটা সে শোয়াইবকে বলেনি। সিরাত চায় শোয়াইব বিষয়টা না জানুক! জানলে তার সাথে শোয়াইব যেতে চাইবে রোদের সাথে দেখা করতে, তখন রোদ শোয়াইবকে দেখে রাগারাগি করতে পারে।
অনেক এক্সাইটেড হয়ে রাতটা পার করলো সিরাত! কখন সকাল হবে আর কখন দেখা হবে রোদের সাথে। ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে অনেকগুলো ড্রেস গায়ে দিয়ে দিয়ে দেখছে সিরাত। কোনটাই তাকে বেশি সুন্দর দেখা যাচ্ছে সেটাই সে গায়ে দিবে, সাদা ক্যাজুয়াল শার্ট এবং কালো জিন্স পড়ে অনেক শখের বাইকটা নিয়ে পৌঁছে গেল রেস্টুরেন্টে। দশটা বাজার এখনো পাঁচ মিনিট বাকি, সিরাত একটা টেবিলে গিয়ে বসলো। বসার সাথে সাথে তার ফোনে কল আসলো রোদের নাম্বার থেকে,
মিস্টার সিরাত আপনি মনে হয় এসে গেছেন, রেস্টুরেন্টের কর্নারের দিকে আমি বসে আছি! বাম দিকে তাকান।
সিরাতকে দেখে রোদ চিনে গিয়েছে, কারণ সিরাত তার পিকচার কালকে হোয়াটসঅ্যাপে রোদকে পাঠিয়েছে যেন তাকে দেখে চিনতে পারে। সিরাত কর্নারের দিকে তাকিয়ে দেখে একজন মেয়ে তাকে হাত ইশারা করে ডাকছে, সে তড়িঘড়ি করে রোদের পাশে গিয়ে চেয়ার টেনে বসলো। রোদ হাত বাড়িয়ে দিলো হ্যান্ডশেক করার জন্য। সিরাত রোদের দিকে হাত বাড়িয়ে হ্যান্ডশেক করলো, তারপর পরিচিত হয়ে নিলো দুজনে।
রোজ জানতে চাইলো কি বলতে চাইছেন বলেন, আপনি আমার কাছে ৩০ মিনিট সময় চেয়েছিলেন অলরেডি পাঁচ মিনিট চলে গিয়েছে।
রোদের কথা শুনে সিরাত হেসে বলল, আপনি দেখি সব মনে রেখেছেন? ৩০ মিনিট টাইম চেয়েছি তার বেশি সময় দিলে কি কোন ক্ষতি হবে।
না ক্ষতি হবে না, বাট আপনি তো ৩০ মিনিট চেয়েছিলেন, তার বেশি তো চাননি।
চাইনি এখন চাইবো, আসলে কি জানেন আপনার সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যটা হল আপনাকে দেখার খুব ইচ্ছা হয়েছিল, যখন শোয়াইবের কাছ থেকে আপনার বিষয়ে জানতে পারি। আমেরিকার মতো দেশে এবং খ্রিস্টান ফ্যামিলিতে আপনার মত একজন ভালো মেয়ে আছে সেটা শোনার পর আপনাকে দেখার আগ্রহটা বেড়ে যায়! তাই অতি আগ্রহে আমি আপনাকে রিকোয়েস্ট করি আমার সাথে দেখা করার জন্য। আমি বলেছিলাম না শোয়াইবের হয়ে আমি আপনার কাছে কোন সাফাই গাইবো না, শুধু আপনাকে দেখার ইচ্ছেতে দেখা করতে চাইছি।
হ্যাঁ বুঝতে পারলাম কেন দেখা করতে চাইছিলেন। আসলে আমেরিকার বা মুসলিম কান্ট্রি বলে কোন কথা নয়। আবার খ্রিস্টান ফ্যামিলিতে যে ভালো মেয়ে নাই সেটা আপনার ভুল ধারণা, অনেকেই ভালো আছে দুনিয়াতে। যদি সবাই খারাপ হতো কবে এই দুনিয়াটা শেষ হয়ে যেত, ভালো-মন্দ মিলেই দুনিয়া। বাট আমার একটা ধারণা ছিল খ্রিস্টান ছেলেদের চেয়ে মুসলিম ছেলেরা অনেক ভালো! তারা নিজেদের ভার্জিনিটি সহজে নষ্ট করে না তারা সৃষ্টিকর্তাকে জবাবদিহিতার ভয় পায়। এমন ধারণা থেকে আমি আপনার বন্ধু শোয়াইবের সাথে রিলেশনে যাই। তাকে বলি আমাদের ভালোবাসাটা হবে পবিত্র, শারীরিক চাহিদা পূরণ হবে বিয়ের পর। আর বলেছিলাম যে আপনি কি চরিত্রবান ছেলে যা বলার সত্যি করে বলেন, কারণ আপনাকে ভালোবাসার পর যদি আমি জানতে পারি আপনার চরিত্র ভালো ছিল না সেটা কিন্তু আমি মেনে নিতে পারবো না, এবং তৎক্ষণনা ছেড়ে দেবো! তখন তো আমার খুব কষ্ট হবে। সে বলে তার লাইফে এমন কোন ঘটনা নেই কারো সাথে তার সম্পর্ক হয়নি, শারীরিক সম্পর্ক করেনি। তার কথাতে বিশ্বাস করি, আমি রিলেশনে যাই। বাট এখন যখন জানতে পারি সে আমার সাথে মিথ্যা বলেছিল এবং দুজন মেয়ের সাথে তার রিলেশন ছিল এবং শারীরিক সম্পর্ক ছিল এটা শোনার পর আমি কিভাবে তার সাথে থাকতে পারি।
আমি বুঝতে পারছি আপনার মনের কষ্টটা, আপনি যা চাননি সেটাই হয়েছে! তাই মেনে নিতে পারছেন না। এখন শোয়াইবও কিন্তু কষ্ট পাচ্ছে তাকে ভালোবাসতে না পারেন ফ্রেন্ড হিসেবে তার সাথে কথা বলুন।
তার সাথে আর কথা বলতে চাচ্ছি না আমি, কথা বলতে গেলে কষ্ট বাড়বে।
আচ্ছা ঠিক আছে আপনার কাছে যা ভালো মনে হয় তাই করুন, আপনাকে দেখার ইচ্ছা ছিল! ইচ্ছা পূরণ হলো, এখন তবে আসি। আপনার কাছে ৩০ মিনিট সময় চেয়েছিলাম সেটা ওভার হয়ে গিয়েছে।
রোদ ঘড়ির দিকে তাকিয়ে জোরে হেসে দিয়ে বলল হ্যাঁ হ্যাঁ সেটা তো অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। অলরেডি ৪৮ মিনিট তাহলে ওঠা যাক। এরপর থেকে মাঝেমধ্যে রোদের সাথে হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয় সিরাতের, আস্তে আস্তে তাদের কথার পরিমাণটা বাড়তে থাকে। সিরাতের মনে চায় রোদ তার প্রেমে পড়ুক! সিরাত অলরেডি রোদের প্রেমে পড়ে গেছে, কিন্তু সেটা রোদের কাছে প্রকাশ করেনি, রোদ যদি না করে দেয় এই ভয়ে।
চলবে….
https://m.facebook.com/groups/371586494563129/permalink/685141483207627/