তুই আমার অঙ্গারাম্লজান – পর্ব ২৫

0
209

#তুই_আমার_অঙ্গারাম্লজান
পর্ব_২৫
লেখনী: মাহরুশ মুতাদায়্যিনাত মুক্তা

৩০.
রাতের দেড়টা কি দুটো বাজে। গায়ে হলুদের কার্যক্রম সমাপ্তি করে যে যেখানে পারে ক্লান্ত দেহ এলিয়ে দিয়েছে। আমি ভূতের মতো পা টিপে টিপে উদ্দেশ্যহীনভাবে পুরো ঘর বিচরণ করছি।
আম্মু, মানসুরা খালা ও তার বোন অর্থাৎ ফাহাদের মা ডাইনিং টেবিলে বসে আছে। একটু পর আমার শাশুড়ি মা এসে মানসুরা খালার পাশে এসে বসলেন। আমি লক্ষ্য করেছি আমার শাশুড়ি মা মানসুরা খালার আশেপাশে এলেই উনার মুখভঙ্গি অন্যরকম হয়ে যায়। খুশি খুশি ভাব ফুটে ওঠে। অনেক ঘনিষ্ঠ বান্ধবীদের মধ্যে যেমন সম্পর্ক পরিলক্ষিত হয়, তাদের মধ্যে ঠিক তেমন।

আম্মু আমাকে ডাকলেন,
“এই ফাবলীহা, এদিকে আয়।”
আমি হেলেদুলে গেলাম।
“পাশে বস। ভাত খাইয়ে দেই।”
আমি ডানে বামে মাথা নাড়াই।
আম্মু চোখ পাকিয়ে বললো,
“বসতে বলেছি বস।”
আমি বসলাম। খিদে পেয়েছি, কিন্তু খেতে ইচ্ছে করছে না। অস্থির অস্থির অনুভূত হচ্ছে।
শাশুড়ি মায়ের সঙ্গে সাক্ষাত হওয়ার পর ভেবেছিলাম কিছু একটা ধামাকা হবে। আফসোস, কিছুই হলো না। সারাজীবন সেলাই মেশিন নিয়ে বসে থাকা শাবানার মতো মনে হচ্ছে এখন।
আম্মু রান্নাঘর থেকে ভাত নিয়ে এসে বসলো।
খাওয়াচ্ছে আর বকছে,
“এতো বড় মেয়ে। খাইয়ে না দিলে খাবে না। প্রতি বেলায় খাবারের অনিয়ম। নিজের শরীরটাকে দেখেছিস? চড়ুই পাখিরও তোর থেকে মাংস বেশি।”
ফাহাদের মা আমার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠলেন,
“সবসময় মায়ের হাতে খেলে চলবে? শ্বশুরবাড়ি গেলে তো নিজের হাতেই সব করতে হবে।”
আম্মু আমার মুখে খাবার দিতে গিয়ে আবার হাতটি নিয়ে গেলেন।
ফাহাদের মায়ের দিকে তাকিয়ে বললেন,
“আপনাকে তো আর খাইয়ে দিতে বলছি না আপা। যে আমার মেয়েকে খাইয়ে দিতে পারবে, সেই ঘরেই মেয়েকে পাঠাবো।”
ফাহাদের মায়ের মুখ থমথমে হওয়ার বদলে বিস্ময় রূপ ধারণ করলো।
আম্মু আবার আমার দিকে ফিরে খাইয়ে দিতে লাগলেন।
ফাহাদের মা হাসার চেষ্টা করে বললো,
“আপা কি আমার কথায় রাগ করেছেন? আমি তো এভাবেই বললাম। সবাইকেই তো নিজের কাজ করতে হয়, ছেলে বলুন আর মেয়ে। আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখলে ফাবলীহা তো আমাদের ঘরেই আসবে। তাকে কি আমরা আদর যত্নে রাখবো না?”
আমার বুক কেঁপে ওঠলো!
ফাহাদের মায়ের এমন প্রত্যক্ষ প্রকাশভঙ্গি ঠাহর করে আমি ধাক্কার মতো খেলাম। সঙ্গে সঙ্গে গায়ে জ্বালা ধরে গেলো।
আমার শাশুড়ি মা পাশ থেকে জিগ্যেস করলেন,
“আপনাদের ঘরে আসবে মানে?”
উনি হেসে জবাব দিলেন,
“হ্যাঁ, আপা। ফাবলীহাকে আমি ফাহাদের জন্য আনবো।”
উনার ভাবভঙ্গি দেখে বোধ হচ্ছে এখানে আমার কোনো উপস্থিতি নেই। নাকি আমাকে ছেলের বউ হিসেবে কল্পনা করে ভবিষ্যতে কতটুকু দাম দেবে তা প্রকাশ করছে?

আমার শাশুড়ি মা চিৎকার করে ওঠলেন,
“কি উল্টাপাল্টা কথা বলছেন আপনি! মাথামোটা মহিলা!”
আমরা সবাই বিস্ময় নিয়ে উনার দিকে তাকালাম।
প্রিয়ল চোখ ঘষতে ঘষতে এদিকেই আসছিল। সে তার জায়গাতেই স্থির হয়ে যায়। এরপর দ্রুত পদে এদিকে এগিয়ে এসে জিগ্যেস করে,
“কি হয়েছে?”
শাশুড়ি মা ফাহাদের মায়ের দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললেন,
“এই মহিলা নাকি ফাবলীহাকে তার ছেলের বউ হিসেবে নেবে। তা-ও আবার বুক ফুলিয়ে সবার সামনে বলছে।”
ফাহাদের মা চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলে,
“আপনার সমস্যা কি? বাইরের মানুষ হয়ে আমাদের কথায় নাক গলাচ্ছেন কেন?”
মানসুরা খালা তার বোনকে ধমকে ওঠলেন।
যাহ বাবা! শুরু হয়ে গেছে সিনেমার কাহিনী।
ফাহাদের মায়ের স্পর্ধা আপাতত ভুলে বসে বসে বিনোদন নেওয়া যাক। হাতে পপকর্ন, পাশে প্রিয়লের কাঁধ থাকলে আরও জমতো।
যারা যারা ঘুমাচ্ছিল, ঝিমুচ্ছিল সবাই চিৎকার চেঁচামেচি শুনে একত্রিত হয়ে যায়।
এরমধ্যে আমার মা জননী একটা উচ্চ শব্দ করলেন না।
মাথা নিচু করে ফিসফিসিয়ে আমাকে জিগ্যেস করলেন,
“তুই কি এই ছেলেকে পছন্দ করিস?”
আমি চমকে উঠে আম্মুর দিকে তাকালাম। পছন্দ তো করিনি, পছন্দ করতে হয়েছে। নাহলে আমার সুদর্শন স্বামী অন্য কোনো রমণীর কবলে পড়তো। তা আমি কিভাবে হতে দেই?

মোজাম্মেল চাচ্চু এসে মধ্যস্থতা করলেন।
“আপা, কি হয়েছে একটু খুলে বলুন। কখন থেকেই আপনি আমার স্ত্রীকে গালাগালি করে যাচ্ছেন।”
উনি চুপ করে রইলেন। আমি ভীত মুখে তাকিয়ে আছি। আশেপাশে অপরিচিত অনেকে আছে। তাদের সম্মুখে আমার আর প্রিয়লের বিয়ের কথা তুললে খোলাসা তো হবেই না, বরং ঘোলাটে হয়ে ঠেকবে।
উনি মুখ খুললেন,
“ফাবলীহাকে আমার ছেলে আবরেশামের বউ হিসেবে নিতে চাই।”
আব্বু তখন এগিয়ে এসে বললেন,
“কিন্তু আপা আমরা তো আগে থেকেই..”
আব্বুর কথা শেষ আগেই আম্মু চওড়া গলায় থামিয়ে দিলেন,
“দাঁড়াও!”
বাটিতে পানি ঢেলে হাত ধুতে ধুতে বললো,
“সবাই ভেতরের ঘরে চলুন। সেখানে কথাবার্তা হবে।”
আম্মুর বলিষ্ঠ গলার স্বর শ্রবণ করে আব্বুও প্রশ্ন করতে পারলো না। সুরসুর করে ভেতরের দিকে হাটা দিলো।
সবার শেষে আমি আর প্রিয়ল যাচ্ছি। প্রিয়ল আগে আগে এগিয়ে গেলে আমি তার হাত খামচে ধরি।
“প্রিয়ল!”
“বলো জান।”
“আম্মু যদি চটকিয়ে আমার দাঁত সব ফেলে দেয়, আপনি কি ফোকলা বউ নিয়ে সংসার করবেন?”
প্রিয়ল হেসে গলা নামিয়ে বললো,
“অবশ্যই করবো।”
“আমি মানি না। আমি আপনারগুলো ফেলে দেব। পরে ফোকলা-ফুকলি সুখের সংসার পাতবো।”

রুমে সবাই প্রবেশ করার পর মানসুরা খালা জিগ্যেস করলেন,
“আপু, এবার সব বলো তো। তুমি কি আবরেশামের জন্য ফাবলীহাকে পছন্দ করেছো?”
শাশুড়ি মা জবাবে বললেন,
“ব্যাপারটা এরকম নয়। মেয়ের অনুমতি না দিয়ে চট করে বউ বানানোর স্বপ্ন দেখে ঢাক ঢোল পিটাই না আমি।”
ফাহাদের মা ছ্যাৎ করে উঠে বললেন,
“আপনি কি বলতে চাইছেন?
আপনি বলতে চাইছেন মেয়ে এই বিয়েতে রাজি না? তার মা-বাবা রাজি না? তাদের না জানিয়েই আমি ঢাক পেটাচ্ছি?”
আম্মু জিগ্যেস বললেন,
“আপা, সবার কথা বাদ দিন। আপনি বলুন। ফাবলীহাকে আপনার পছন্দ হয়েছে?”
তখন তিনি বললেন,
“পছন্দ তো অবশ্যই আপা। ফাবলীহা ভীষণ মিষ্টি মেয়ে। কিন্তু আবরেশামের জন্য তাকে বউ করে নিতে চাওয়ার অন্য কারণ আছে।”
এরপর তিনি একে একে সব বলতে লাগলেন। বিয়ের দিনের শুরু থেকে শেষ, খুটিনাটি সকল বিষয়বস্তু।

“আপা, একটা যেহেতু সমন্ধ হয়েছেই, সেটা যেভাবেই হোক; ফাবলীহাকে আয়োজন করে বউ হিসেবে গ্রহণ করলে আমি মনে করি বিয়েটা অপাত্রে যাবে না।”
আব্বু বলে ওঠলেন,
“আমি এই সমন্ধ মানি না। আমার মেয়ে বউ হলে শুধু ফাহাদের হবে। ফাহাদকেই শুধু আমি মেয়ে জামাই হিসেবে মানি!”
মোজাম্মেল চাচ্চু গলা মিলিয়ে বললেন,
“আপনার ছেলে ওকে তালাক দেবে। শেষ! আর কোনো কথা নেই।”
প্রিয়ল তখন বললো,
“ফাহাদ যদি ফাবলীহাকে বিয়ে করতে রাজি হয়, তখন আমি তাকে তালাক দিয়ে দেব।”
ফাহাদ ছিঁচকে চোরটা কোণাতেই থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট পরে দাঁড়িয়ে ছিল। ফায়াজ ভাই তার মায়ের পেছনে দাঁড়িয়ে ছিল।
প্রিয়ল ফাহাদকে জিগ্যেস করলো,
“তুমি ফাবলীহাকে বিয়ে করবে? তুমি হ্যাঁ বললে আমি আর দ্বিতীয় কোনো কথা বলবো না।”
প্রিয়লের ঠান্ডা কণ্ঠ শুনে আমিও কেঁপে ওঠলাম। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে ফাহাদ হ্যাঁ বলবে। আর এটাই হবে তার কাল।
আর সেটাই হলো।
ফাহাদ ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললো,
“হ্যাঁ, আমি ফাবলীহাকে বিয়ে করবো।”

আমি গা দুলিয়ে হেসে ওঠলাম। সঙ্গে সঙ্গে চলে গেলাম আমার ডিফল্ট মুডে। মামা’স গার্ল, পাপা’স ডটার হয়ে থাকা অনেক হয়েছে।

“কিছু ছেলে আছে। প্রতিবন্ধী ছেলে। হাত-পায়ে সমস্যা থাকলে, নড়াচড়া না করতে পারলে প্রতিবন্ধী হয় না? তো সেসব ছেলেরা হয় শারীরিকভাবে নিষ্প্রাণ, নির্জীব। ফলে তাদের নষ্ট যন্ত্র নিয়ে জীবন কাটানোর জন্য প্রতিবন্ধীদের মেন্টাল বাবা-মা ফন্দি আঁটে। বন্ধুর মেয়ে, ভাবীর মেয়ে, এই বোন সেই বোনকে বাগিয়ে প্রতিবন্ধী ছেলেকে গলায় ঝুলিয়ে দিতে চায়। মান-সম্মানের ভয় আছে এমন আত্নীয় হলে বড় সুবিধা হয়।”
বলেই আমি মোজাম্মেল চাচ্চুর দিকে তাকালাম।
“আর সেসব ছেলেদের.. বাদ দিন। ডিরেক্ট বলি। আপনার ছোট ছেলে মাটিতে বসে ভাত খায়, মাটিতে বসে ঘুমায়। কেন? জান্নাতে লাফ মেরে চলে যাবে? ফুফুর সঙ্গেও চোখে চোখ রেখে কথা বলে না। অথচ ভার্সিটির সরু গলিতে তার লুকায়িত বাল সুন্দর সুন্দর মেয়েরা ফেলে যায়। সত্তর হাজার দামের খাটে সে শুয় না, কিন্তু অন্য জায়গায় ভিডিও দেখে শুয়ে আসে।”
“এই মেয়ে!”
ফাহাদের মায়ের দিকে ঘুরে আঙুল উঁচিয়ে বললাম,
“মেয়ে মেয়ে বলবেন তো!”
নিজেকে শান্ত করে বললাম,
“এই মহিলা? আমার নাম নাই? এখন জনে জনে আমার বদনাম করবা? করো। তোমার ছেলে একটা থার্ড ক্লাস চাইল্ড। একটা জোচ্চুর। আর তুমি হলে এর আদর্শ মাতা।”

“ফাবলীহা!”
ফায়াজ ভাইয়া এগিয়ে এসে বললেন,
“তোমার ফাহাদ পছন্দ না-ই থাকতে পারে। মত না থাকলে সেখানে বিয়ে আমিও সমর্থন করি না। কিন্তু তাই বলে তুমি এভাবে অপমান করতে পারো না। আর আমার মা তোমার বড়।”
আমি কিছুক্ষণ ফায়াজ ভাইয়ার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম।
এরপর হালকা হেসে বললাম,
“আপনার অঙ্গভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে আপনি আপনার ভাইকে চেনেন। বন্ধ দরজার ভেতরে মোবাইল দ্বারা কি কি সংঘটিত হয় তা-ও আপনার কাছে ধরা পড়েছে। এটা দয়া করে বলবেন না, আপনার মা জানে না। উনি অন্তত ধূর্ত মহিলা। ছেলেদের প্রতি উনার তীক্ষ্ণ লক্ষ্য!”
ফায়াজ ভাইয়া থতমত খেলেন। বিব্রত ভঙ্গিতে ফাহাদের দিকে এবং তার মা-বাবার দিকে তাকালেন।
ফাহাদ মাথা নিচু করে আছে।

“শুধু অপছন্দ হলে আমি এতো কষ্ট করে মুখের বুলি নষ্ট করি না ভাই। এতটুকু বিশ্বাস রাখতে পারেন।”
আমি ফাহাদের দিকে এগিয়ে জিগ্যেস করলাম,
“আমায় বিয়ে করবে ফাহাদ ভাইয়া? কথা দিচ্ছি, তুমি হ্যাঁ বললে আমি এই মুহূর্তে তোমাকে বিয়ে করবো!”
ফাহাদ মাথা ডানে বামে নাড়লো।

মোজাম্মেল চাচ্চু রেগে গিয়ে বললেন,
“তুমি এতো বেয়াদব জানলে কখনোই তোমাকে পুত্রবধূ করার কথা ভাবতাম না। কি করেছে আমার ছেলে? বলো দেখি!”
ফায়াজ ভাইয়া বলে ওঠলেন,
“আব্বা প্লিজ! চুপ করুন।”
“চুপ করবো মানে?”
“প্লিজ! আমি চুপ করতে বলছি মানে চুপ করবেন। বেশি প্রয়োজন হলে ফাহাদকে অন্য ঘরে নিয়ে গিয়ে জিগ্যেস করুন।”
চাচ্চু অত্যন্ত দ্বিধা নিয়ে দুই ছেলের দিকে পালা বদল করে তাকালেন। দ্বিধাদ্বন্দ্ব দেখা গেলো আমার মা-বাবাসহ সবার মুখে।
ফায়াজ ভাইয়া বিনীত স্বরে আমার মা-বাবাকে উদ্দেশ্যে করে বললেন,
“আমি আমার মা-বাবার পক্ষ থেকে ক্ষমা চাইছি আঙ্কেল-আন্টি। আপনারা প্লিজ কথাটা ছড়াবেন না। আমি অনুরোধ করছি। ফাহাদ খারাপ সঙ্গে মিশে ভুল পথে চলে গিয়েছে। ও ভালো হয়ে যাবে আঙ্কেল। প্লিজ, কথাটা ছড়াবেন না।”
বলেই ফায়াজ ভাইয়া চলে গেলো। তার পেছন পেছন তার মা-বাবা ও ফাহাদও গেলো।

আব্বু দ্বিধায় ভরা গলায় জিগ্যেস করলেন,
“ফায়াজ কিসের কথা বললো ফাবলীহা?”
আমি মুখ বাঁকিয়ে বললাম,
“আমি কি জানি। তোমার বন্ধু, জিগারকা টুকরা! তোমার সঙ্গে তো সবই শেয়ার করে। তার থেকে জেনে নিও।”
আব্বু তোতলিয়ে বললেন,
“তবুও আমি এই বিয়ে মানি না। এই ছেলে আমার পছন্দ নয়।”

“ছিঃ! ছিঃ, ছিঃ, ছিঃ!”
চেয়ে দেখলাম আমার শাশুড়ি বলছে।
“আপনার টেস্ট খুবই খারাপ ভাই। আমি না বলে পারছি না। কিন্তু বাধ্য হচ্ছি। যেখানে আমার ছেলেকে রিজেক্ট করছেন, সেখানে আপনাদের টেস্ট সত্যিই! অত্যন্ত দুঃখজনক টেস্ট।”
প্রিয়ল চাপা গলায় বললো,
“মা!”

“ইয়েস!”
আমি চেঁচিয়ে ওঠলাম,
“আমিও তাই বলি শাশুড়ি মা। টেস্ট অত্যন্ত খারাপ। মানে তারা মরা মুরগি কোনটা আর জেতা মুরগি কোনটা জানে না। কোনটা পঁচা ডিম, কোনটা ভালো ডিম তার পার্থক্যই জানে না।”

মানসুরা খালা হেসে আমাদের সঙ্গে যোগ দিলেন। এরপর আমরা দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করলাম টেস্ট কত প্রকার হয় এবং কার টেস্ট কিরকম হওয়া বাঞ্ছনীয়।

আব্বু আম্মুর দিকে তাকিয়ে কাষ্ঠহাসি দিয়ে বললেন,
“দুটো দেখি এক জাতের। যেমন বউ, তেমন শাশুড়ি। রাজি হয়েই যাই। কি বলো?”
আম্মু মুখ শক্ত করে জবাব দিলেন,
“আমাকে বলছো কেন? আমি তো রাজিই আগে থেকে। আশ্চর্য!”
বলেই আম্মু চলে গেলো।

আব্বু প্রিয়লের দিকে দুঃখভরা চাহনি নিয়ে তাকালেন।

(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here