তুমি শুধু আমার – পর্ব ৮

0
366

#তুমি শুধু আমার
#লেখিকাঃমোনালিসা
পর্বঃ৮

বৃষ্টি ঘুম থেকে উঠে দেখে মেঘ আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুল ঠিক করছে। বৃষ্টি অপলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছে মেঘের দিকে আর ভাবছে কি সুন্দর লাগছে মেঘ কে,, ছেলেদের এতো সুন্দর হতে নেই,বৃষ্টি কে আয়নায় নিজের দিকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলে?

মেঘ;;দুর থেকে দেখার কি আছে সামনে এসে দেখো তাহলেই তো হয়।মেঘের এমন কথা শুনে সাথে সাথে বৃষ্টি মেঘের দিক থেকে চোখ সরিয়ে নেয়।বৃষ্টির এমন কান্ড থেকে মেঘ মুচকি হাসে।

বৃষ্টি;;আ,,,আব,,,আমি কখন আপনার দিকে তাকালাম, আমি তো অন্য দিকে তাকিয়ে ছিলাম,এই বলেই বৃষ্টি তারাতারি করে ওয়াশরুমে চলে যায়,মেঘ কিছু বলতে যাবে এইসময় মেঘের ফোনে কল আসে,ফোন টা হাতে নিয়েই দেখে রনির কল,

রনি;;good morning sir..

মেঘ;; good morning….কি হয়েছে বলো,,এইদিকে কি খবর?

রনি;;এইদিকের খবর সব ঠিক আছে স্যার কিন্তুু?

মেঘ;;কিন্তুু কি? কি হয়েছে,,,,

রনি;;স্যার, শফিক শেখ আপনার সাথে দেখা করতে চায়।
রনির কাছ থেকে এই কথা শুনা মাএ মেঘ কল কেটে প্রচুর রেগে রুম থেকে বের হয়ে যায়,নিচে নেমে এসে এলিনার সাথে দেখা?

এলিনা খান;;দাদু ভাই এসো ব্রেকফাস্ট টা করে তারপর যাও।

মেঘ;;না দাদি, আমার জরুলি একটা কাজ আছে,আমি সেখানে খেয়ে নিবে, তোমরা সাবধানে দেখো, এই বলেই মেঘ বের হয়ে গাড়িতে বসে চলে যায়।

বৃষ্টি ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখে রুম পুরো ফাকাঁ।বৃষ্টি কিছু আর না ভেবে নিচে নেমে এসে দেখে এলিনা একা বসে আছে মেঘ কেও দেখা যাচ্ছে না,কি করছো দাদি একা কেনো বসে আছো,,,,

এলিনা খান;;তোর জন্যই অপেক্ষা করছি,মেঘ দাদু ভাই ব্রেকফাস্ট না করেই বের হয়ে গেছে, বললো যে কি একটা জরুলি কাজ পরে গেছে,,বৃষ্টি আর কিছু না বলে সকালের নাস্তা শেষ করে এলিনার সাথে সময় পার করে দেয়।
✨✨
মেঘ গাড়ি থেকে নেমে অফিসের ভিতরে ঢুকেই সোজা তার কেবিনে চলে যায়।রনি মেঘের জন্যই অপেক্ষা করছিলো,,,মেঘ কে দেখা মাএই রনি পিছন পিছন মেঘের কেবিনে ঢুকে।হঠ্যাৎ করেই কেউ বলে উঠে?

শফিক শেখ;;may i come in….

মেঘ কিছু বলার আগেই দেখে শফিক তার সামনে দাড়িয়ে আছে।শফিক কে দেখা মাএই মেঘ প্রচুর রেগে যায়,আর শফিক মেঘের সামনে এসে?

শফিক;;congratulations মেঘ,,,নতুন জীবন শুরু করার জন্য।
মেঘ;;এইখানে কি চাই?

শফিক;;চাই তো অনেক কিছু,যাইহোক,একটা ডিল করতে এসেছি?যদি রাজি থাকো তাহলে ডিল টা করতে পারি।

মেঘ;;কিসের ডিল?যা বলবে সরাসরি বলো আমার হাতে সময় নেই।

—–শফিক,জানি মেঘ, তোমার হাতে এখন সময় নেই, কারন ঘরে যদি সুন্দরী বউ থাকে তাহলে কার কাছে সময় থাকে,কি ভাগ্যে তোমার ঘরে সুন্দরী বউ আছে আর আ,,,, বাকি কথা বলার আগের মেঘ শফিকের কলার টেনে ধরে নাক বরাবর একটা ঘুশি মেরে দেয়।ঘুশি মারার সাথে সাথেই শফিকের নাক দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পরতে থাকে।মেঘ কে এখন অনেক হিংস্র দেখাচ্ছে,চেহারা পুরো লাল হয়ে গেছে কপালের রগ গুলো দেখা যাচ্ছে, মেঘের এমন হিংস্রতা দেখে রনিও প্রচুর ভয় পেয়ে যায়,,,শফিকের সামনে গিয়ে কলার ধরে বলে,যা বলার তুই বলেছিস আর একটা বাজে কথাও বলবি না

—-শফিক মেঘের দিকে হিংস্র ভাবে তাকিয়ে বলে, এইটা তুই ঠিক করলি না মেঘ,,তুই নিজের মৃত্যুকে নিজেই ডেকে আনলি,আমি তোকে দেখে নিবো,এই বলেই শফিক মেঘের হাত থেকে কলার টা ছাড়িয়ে কেবিন থেকে বের হয়ে যায়।

—-দাদির সাথে সময় কাটিয়ে বৃষ্টি নিজের রুমে চলে যায়,,নিজেকে কেমন যেনো একা একা লাগছে,, কতো দিন হলো মা বাবার সাথে দেখা হয় না,,এইটা ভেবেই বৃষ্টি মন খারাপ করে চুপ করে বসে থাকে।
মেঘ রুমে এসে দেখে বৃষ্টি চুপচাপ বসে আছে।মেঘ বৃষ্টির কাছে গিয়ে পাশে বসে তার হাত ধরে বলে,,,,কি হয়েছে বৃষ্টি, বাড়ির কথা মনে পরেছে বুঝি?বৃষ্টি অবাক হয়ে তাকিয়ে বলে,,,,

বৃষ্টি;;আপনি কিভাবে জানলেন যে আমার বাবা মার কথা মনে পরেছে,আপনি জাদু জানেন না কি?মেঘ মুচকি হেসে বলে জাদু জানি না তবে?

বৃষ্টি;;তবে কি,,,বলুন?

মেঘ;;ভালোবাসি,,খুব ভালোবাসি আমার জানপাখি কে তাই তো তোমার মন বুঝতে পারি।
—-বৃষ্টি, তাই না কি, এই ভাবে আমাকে কষ্ট দিয়ে আঘাত করে আপনি আমাকে ভালোবাসেন?
মেঘ,তোমাকে হারাতে পারবো না বলেই আমি এই কাজটা করতে আমি বাধ্য হয়েছি,যদি তোমার চোখে আমি দোষি হয়ে থাকি তাহলে আমি বলবো হ্যাঁ আমি দোষ করেছি শুধু তোমাকে পাওয়ার জন্য এই বলেই মেঘ বৃষ্টির হাত ছেড়ে দেয়।
আচ্ছা শোন,কাল রেডি থেকো আমরা বাহিরে বের হবো,,,,

বৃষ্টি;;কোথায় যাবো,,,আমি আপনার সাথে কোথাও যাবো না,,,,
মেঘ,ভেবে বলছো তো,,হুম ভেবেই বলছি,এই বলেই বৃষ্টি মেঘের সামনে থেকে সরে আছে,,,

মেঘ;;সব ঠিক করে দিবো বৃষ্টি,,তোমার মুখের হাসি আবার আমি ফিরিয়ে আনবো,,,,

সকাল বেলা,,,,,

বৃষ্টির মুখের উপর সকালের মিষ্টি রোদ পরাতেই পিটপিট করে চোখে খুলেই সামনে তাকাতেই ভয়ে চিৎকার করে উঠে,,,,
মেঘ,বৃষ্টির চিৎকার করা দেখে সাথে সাথেই মুখ চেপে ধরে,এইভাবে চিৎকার করার কি আছে আমি কি বাঘ না সিংহ কোনটা,,,, এই কথা বলেই মেঘ বৃষ্টির মুখ থেকে হাত সরিয়ে নেয়।
“বৃষ্টি,বাঘের চাইতে কম কিসের,,,

—-মেঘ,তারাতারি রেডি হয়ে নিচে নেমে আসো আমরা বের হবো এই বলেই মেঘ অন্যরুমে ফ্রেশ হতে চলে যায়,,,বৃষ্টি মেঘের কথামতো ফ্রেশ হতে চলে যায়।বৃষ্টি ফ্রেশ হয়ে এসে আয়নার সামনে দাড়িয়ে হাত বরতি চুড়ি চোখে কাজল আর ছোট্ট একটা ডায়মন্ডের নোস পিন এতেই যেনো অসাধারন লাগছে।
মেঘ রেডি হয়ে নিচে নেমে দাদির সাথে সোফায় বসে কথা বলছিলো হঠ্যাৎ করেই মেঘের চোখ পরে বৃষ্টির দিকে,,, বৃষ্টিকে দেখা মাএই মেঘ বা পাশে বুকে হাত রেখে অানমনে বলে উঠে(হাই আর কতো ভাবে আমাকে খুন করবে)বৃষ্টি মেঘ কে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলে।

এলিনা খান;;খুব সুন্দর লাগছে বৃষ্টিকে,,দাদু ভাই তোমরা কি কোথাও বের হবে?দাদির কথা শুনে মেঘের হুস ফিরে আসে।

মেঘ;;হুম দাদি, আমি আর বৃষ্টি একটু বের হবো,,চল বৃষ্টি দেরি হয়ে যাচ্ছে।দাদি তুমি সাবধানে থেকো।।

এলিনা খান;;তোমরা ও সাবধানে যেও দাদুভাই?

—-এলিনার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে মেঘ গাড়িতে বসে পরে আর বৃষ্টি পিছনের সিটে গিয়ে বসে পরে।মেঘ এইটা দেখা মাএ রেগে গিয়ে বলে,,,,আমি তোমার ড্রাইভার না কি যে তুমি পিছনে গিয়ে বসলে,সামনে এসে বসো।

বৃষ্টি,না আমি এইখানেই ঠিক আছি,,মেঘ বৃষ্টির মুখে এইকথা শুনা মাএই গাড়ি থেকে নেমে বৃষ্টিকে পিছনের সিট থেকে নামিয়ে সামনের সিটে বসিয়ে দেয়,,,
মেঘ প্রায় বেশ সময় পার করে গাড়ি এসে থামায় বৃষ্টিদের বাড়ির মেইন গেটের সামনে।
—-বৃষ্টি,কি হলো গাড়ি থামালেন কেনো,আমরা কি এসে পরেছি,,,
হুম,এসে পরেছি,,কিন্তুু আমরা কোথায় এসেছি,,,,,বৃষ্টি মেঘের হাতের ইশারায় তাকাতেই আর কোন কথা বলতে পারলো না চোখের সামনে নিজের বাড়ি দেখে অবাক হয়ে মেঘের দিকে তাকিয়ে থাকে,,,,

মেঘ,এইভাবে, তাকিয়ে আছো কেনো?

বৃষ্টি;;আপনি আমাকে কোথায় নিয়ে এসেছেন?

মেঘ,কেনো তোমার বাবা মার কাছে,এই ভাবে কি গাড়িতে বসে কথা বলবে না কি গাড়ি থেকে বের হয়ে নিজের বাবা মার কাছে যাবে,,,,মেঘের মুখে এই কথা শুনা মাএই বৃষ্টি গাড়ি থেকে নেমেই যেই না বাড়ি দিকে পা বারাবে ওমনি বৃষ্টি কি মনে করে যেনো পিছন দিকে ঘুরে মেঘের দিকে তাকায়,,,,

বৃষ্টি;;আপনি যাবেন না,,,,

মেঘ;;না,,,তুমি যাও আব্বু আম্মু সাথে সময় কাটাও,,আমার অফিসে কিছু কাজ আছে আর হ্যাঁ শোন অফিস থেকে ফিরার পথে আমি তোমাকে নিয়ে যাবো,,,এই বলেই মেঘ সেখান থেকে চলে যায়।

কহিনুর বেগম উপরে নিজের রুমের করিডরের সামনে বসে ছিলো,,, বৃষ্টিকে দেখা মাএই খুশিমনে দ্রুত নিচে নেমে আসে,,যেই না বৃষ্টি কলিংবেল বাজাবে ওমনি কহিনুর বেগম দরজা খুলে দাড়ায়।
বৃষ্টি তার মাকে দেখা মাএই জড়িয়ে ধরে কেদে দেয়।

কহিনুর বেগম;;কেমন আছিস বৃষ্টি মা, তুই ওইখানে ভালো আছিস তো, কে এসে,,,,বৃষ্টি কে দেখে মাএ রায়হান রহমান অবাক হয়ে যায়।
—-বৃষ্টি,কেমন আছো বাবা?এই কথা বলেই বৃষ্টি তার বাবা কে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়,,,,,,,

#চলবে,,,,,,,

(দুঃখিত দেরি করে গল্প দেয়ার জন্য।জানি না আজকের পর্ব কি লিখেছি আর কতটুকু আপনারদের ভালো লাগবে জানি না।লেখায় ভুল হলে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here