তুমি শুধু আমার – পর্ব ৭

0
412

#তুমি শুধু আমার
#লেখিকাঃমোনালিসা
পর্বঃ৭

বৃষ্টি আর সহ্য করতে না পেরে মেঘের সামনে গিয়ে দাড়িয়ে বলে হিটলার এক নাম্বার ইচ্ছে করেই এমন করছে।এখন তো আমার ইচ্ছে করছে এই ল্যাপটপটা দিয়ে এই হিটলারের মাথা টা ফাটিয়ে দুভাগ করে দেই।একেই তো প্রচুর ক্ষিধে পেয়েছে তার উপরে শর্ত,,কোন সকালে খেয়েছি।

মেঘ;;কি হলো আমার সামনে এইভাবে দাড়িয়ে আছো কেনো,ঘুমিয়ে এতো ছিলে উঠে এসেছো কেনো। যাও গিয়ে ঘুমিয়ে পরো আর আমাকে ডিস্টাব না করে মন দিয়ে আমাকে আমার কাজ করতে দেও।

বৃষ্টি;;ইয়ে মানে,,,মানে,,,আচ্ছা শুনুন,,,,,,

মেঘ;;হুম বলো শুনছি কান আছে,,,,

বৃষ্টি;;না মানে বলছিলাম যে আমি আপনার শর্তে রাজি আছি,,,,

মেঘ;;বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে,,ভেবে বলছো তো?

বৃষ্টি;;হুম,,ভেবেই বলছি,আমি আপনাকে জড়িয়ে ধরবো কিন্তুু আপনাকে জড়িয়ে ধরার আগে আমার খাবার টা এনে দিতে হবে?

মেঘ;;ও হো তাই বুঝি,তাহলে দেরি করছো কেনো জড়িয়ে ধরো আর হ্যাঁ তোমার খাবার আমি এনে দেবো চিন্তা করো না।

মেঘ ল্যাপটপ টা রেখে বসা থেকে উঠে দাড়ায়,,,,বৃষ্টি এক পা এক পা করে সামনে এগিয়ে এসে মেঘের বুকে মাথা রাখে,,,,

মেঘ;;এই টা কি জড়িয়ে ধরা হলো, আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরতে বলেছি আমার বুকে মাথা রাখতে বলি নি,,,,

বৃষ্টি;;(মুখ ভেঙ্গচি কেটে,আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরতে বলেছি বুকে মাথা রাখতে বলি নি,,,ইচ্ছে তো করছে গুলি মেরে উপরে পাঠিয়ে দেই বেশরম কোথাকার)

মেঘ;;কি হলো জড়িয়ে ধরো?

বৃষ্টি মেঘের কথা শুনে, আস্তে আস্তে ওর হাত দিয়ে মেঘকে জড়িয়ে ধরে,,,,বৃষ্টির এমন কান্ড দেখে মেঘ মুচকি হাসি দেয় আর এই দিকে তো বৃষ্টির হার্টবিট বেরেই চলেছে আর ওদিকে মেঘের শরীরের মাতাল করা ঘ্রান বৃষ্টির নাকে আসে,যেই না মেঘ বৃষ্টিকে জড়িয়ে ধরতে যাবে সাথে সাথেই বৃষ্টি মেঘের কাছ থেকে সরে আসে।

বৃষ্টি;;আপনার কথামতো, আমি আপনাকে জড়িয়ে ধরেছি এইবার আমাকে খেতে দিন।

মেঘ;;ok fine,চলো আমার সাথে,,,,বৃষ্টি মেঘের পিছন পিছন যায় আর নিচে গিয়ে বৃষ্টির চোখ রসোগোল্লার মতো বড় হয়ে যায়,সামনেই দেখে টেবিল ভরতি অনেক খাবার,আর এতো গুলা খাবার সাজিয়ে দাড়িয়ে আছে সোনিয়া,,,,সোনিয়া এইভাবে বৃষ্টি কে দাড়িয়ে থাকতে দেখে বলে?

সোনিয়া;;ম্যাম আসুন খেয়ে নিন?

মেঘ;;কি হলো, এই ভাবে দাড়িয়ে আছো কেন?যাও গিয়ে বসে পরো,তুমি না বলেছিলে যে তোমার পেটে ইদুর দৌড়াচ্ছে,না কি আমাকে জড়িয়ে ধরাতে তোমার ক্ষিদে চলে গেছে।বৃষ্টির মেঘের দিকে তাকিয়ে কিছু না বলেই সোজা গিয়ে খাবার টেবিলে বসে।বৃষ্টি টেবিলের সামনে এতো এতো খাবার দেখে বুঝতেই পারছেন কি খাবে।

বৃষ্টি এতো খাবার দেখে যেনো বোবা হয়ে যায়।বৃষ্টিকে এমন চুপ থাকতে থেকে মেঘ সামনে গিয়ে বলে?

মেঘ;;এতো ভাবতে হবে না,আচ্ছা আমি তোমাকে খাবার সার্ভ করে দিচ্ছি।বৃষ্টি তুমি তো মাটন বিরিয়ানী খেতে খুব ভালোবাসো তাই না,তাহলে আগে বিরিয়ানী টা খাও।

বৃষ্টি,আপনি জানলেন কিভাবে যে আমার বিরিয়ানী পছন্দ।মেঘ বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে কিছু না বলে শুধু মুচকি হাসে।

মেঘ বৃষ্টির প্লেটে বিরিয়ানী সার্ভ করছে আর বৃষ্টি মেঘের দিকে পলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছে,,,,

মেঘ;;এইভাবে না তাকিয়ে থেকে খাবার টা খেয়ে নেও,,আমাকে দেখার অনেক সময় পাবে।

বৃষ্টি;;হুম,,,,,

বৃষ্টি আর মেঘ ডিনার শেষ করে নিজেদের রুমে চলে আসে।বৃষ্টি মেঘ কে কিছু না বলে সোজা গিয়ে বিছানায় শুয়ে পরে,,,,আর মেঘ সোফাতে বসে অফিসের কাজ করতে করতেই সোফাতেই ঘুমিয়ে পরে।

অনেক সকালে বৃষ্টি ঘুম ভেঙ্গে যায়, ঘুম থেকে উঠে দেখে মেঘ রুমে নেই, গেলো কোথায় হিটলার টা এই বলেই বৃষ্টি ফ্রেশ হয়ে সোজা নিচে চলে যায়,,,নিচে গিয়ে দেখে এলিনা খান কি যেনো একটা করছে।

বৃষ্টি,কি করছো দাদি,,আর তোমার হাতে এইটা কি?এলিনা,কি আর করবো বসে বসে পেপার দেখছি এই বলেই দুইজনেই হেসে দেয়।

✨✨✨
রাতুল;;welcome sir,welcome..বিডি তে আসার জন্য আপনাকে অনেক শুভেচ্ছা। আমাকে তো আসতেই হতো রাতুল,এই বলে গাড়িতে উঠে বসে শফিক শেখ।
(ভিলেন হাজির🥶)

—-চৌধুরী ইন্ডাস্ট্রি—–

রনি;;may i come in sir..

মেঘ;;yes come..

রনি, স্যার শফিক শেখ বিডিতে এসে পরেছে?
—–মেঘ,কিইইইই।
রনি,জি স্যার,আমি আসার পথেই শফিক শেখের গাড়িটা চোখে পরে,এই বলেই রনি কেবিন থেকে বের হয়ে যায়।মেঘ কি যেনো একটা ভেবে বাকাঁ হেসে আকাশ কে ফোন দেয়।

মেঘ;;হ্যালো আকাশ,,,

আকাশ;;হুম মেঘ বল?

মেঘ;;তোর সাথে আমার কথা আছে, এখনি তুই আমার অফিসে আয়।

আকাশ;;ok,আমি আসছি,,এই বলেই আকাশ ফোন টা কেটে দেয়।

আকাশ গাড়ি ড্রাইভ করছে আর মেঘের কথা গুলো ভাবছে।

আকাশ;;হঠ্যাৎ করে মেঘের আবার কি হলো, এইসব কথা ভাবতে ভাবতেই গাড়ির সামনে একটা মেয়ে চলে আসে,,, তা দেখা মাএই আকাশ গাড়ি ব্রেক করে,,,,আকাশ রেগে তারাতারি গাড়ি থেকে নেমে এসে দেখে একটা মেয়ে হাতে বিড়ালে বাচ্চা নিয়ে চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে দাড়িয়ে আছে,,,,মেয়ে টা গোলাপী একটা ড্রেস পরে আছে চুল গুলো বাতাসের কারনে উড়ছে আর গালের এক সাইডে একটা কালো তিল যেটা মেয়েটার সৌন্দর্য যেনো আরও বারিয়ে দিয়েছে বা কাধে একটা ব্যাগ ঝুলানো দেখেই বুঝাই যাচ্ছে যে কোনো কলেজে পড়ে।
মেয়েটা তার এক চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে কিছুই হয়নি,এইটা দেখেই জোরে একটা নিশ্বাস ছাড়ে,,,, সামনে আকাশ কে দেখা মাএই মেয়েটা রেগে গিয়ে বলে,,,,
—-ও হ্যালো মিষ্টার আপনার চোখ দুটো কি বউয়ের কাছে রেখে এসেছেন যদি আমার কিছু হয়ে যেতো।

আকাশ;;বিয়েই তো করিনি বউ আসলো কোথা থেকে?
আকাশের মুখে এমন কথা শুনে মেয়েটা ভিষন রেগে যায়।

আকাশ গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আনমনে বলে উঠে,,,,,

আকাশ;;বিউটিফুল,,,,

—-হোয়াট,ও হ্যালো মিষ্টার রাখুন আপনার বিউটিফুল,গাড়ি যখন চালাতে পারেন না তাহলে কেনো গাড়ি নিয়ে বের হয়েছেন যদি আমার কিছু হয়ে যেতো,,,,কি হলো আমার কথা আপনার কানে যাচ্ছেনা আর এই রকম ভাবে ডেবডেব করে তাকিয়ে আছেন কেনো কখনো কি কোনো মেয়ে মানুষ দেখন নি,,,,,

আকাশ;;হুম, অনেক মেয়ে দেখেছি কিন্তুু তোমার মতো এতো সুন্দর মেয়ে দেখিনি,,,

কি? আকাশ মেয়েটার কাছে এসে,,জি সত্যি কথা বললাম।মেয়েটা আর কোন কথা না বারিয়ে সেখান থেকে চলে যায়,,,আকাশ মেয়েটা কে চলে যাওয়া দেখে বলে,, হেই বিউটিফুল তোমার নাম টা তো বলে যাও,,,,তখনি মেয়েটা পিছনে ফিরে আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে আমার নাম কচু এই বলেই মেয়েটা চলে যায়।

আকাশ;;হোয়াট,কচু,,সিরিয়ালি এইটা বলেই হেসে দেয়।তোমার সাথে আবার দেখা হবে কচু এইটা বলেই আকাশ গাড়িতে উঠে পরে।

—-আকাশ অফিসে ঢুকেই সোজা মেঘের কেবিনে চলে যায়,,,,কিরে কি হয়েছে,

মেঘ,আগে তুই বল,তোর এতো দেরি হলো কেনো কোথায় ছিলি তুই,,,

আকাশ,আর বলিস না সেই এক লম্বা কাহিনী কোনো একসময় বলবো, আগে বল তুই কেনো ডেকেছিস,কি হয়েছে?

মেঘ;;শফিক বিডিতে এসে পরেছে,,,,

আকাশ;;হোয়াট, তুই জানলি কিভাবে আর কবেই বা আসলো?

মেঘ;; রনি এই মাএ খবর দিলো আর আজকেই এসেছে।

আকাশ,তো কি করবি,,কি করবো তা জানতে পারবি এইবলেই মেঘ বাকাঁ হাসি দেয়।আচ্ছা শোন তুই শফিকের উপর নজর রাখবি, কি করে কোথায় যায় সব খবর আমাকে দিবি।
ওকে, তুই চিন্তা করিস না আমি সব খবর তোকে সময় মতো দিয়ে দেবো,এইবলেই আকাশ কেবিন থেকে বের হয়ে যায়।

—-চৌধুরী ভিলা—-

“রাতে মেঘে বাসায় ফিরে এসে সোজা তার রুমে চলে যায়।রুমে ঢুকেই দেখে বৃষ্টি নেই,,চারপাশে তাকিয়ে দেখে বৃষ্টি বারান্দায় দাড়িয়ে আকাশের চাদঁ দেখছে।মেঘ আস্তে আস্তে বৃষ্টির কাছে গিয়ে কোমড় জড়িয়ে চুলে নাক মুখ ঢুবিয়ে দিয়ে চুলের ঘ্রান নিতে থাকে, বৃষ্টি মেঘের হাতের স্পর্শ পেয়ে কেপেঁ ওঠে।

বৃষ্টি;;প্লিজ মেঘ ছাড়ুন আমাকে,,,আমার অস্বস্তি লাগছে?

মেঘ;;না,,,ছাড়বো না,,ভালোবাসি তোমাকে,,,তুমি আমাকে ভালো নাই বাসতে পারো কিন্তুু আমি তোমাকে আমার সবটুকু দিয়ে ভালোবেসেছি আর সারা জিবন তোমাকে ভালোবেসে যাবো কারন,,,,, #তুমি শুধু আমার💖
এই বলেই মেঘ বৃষ্টি কে ছেড়ে দিয়ে হাতে টাওয়াল নিয়ে সোজা ওয়াশরুমে চলে যায় আর বৃষ্টি মেঘের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে মনে মনে বলে আমি যানি না মেঘে এইটাকে কি ভালোবাসা বলে না কি ভালো লাগা,,কেনো এতো খারাপ লাগে আমার সামনে কেউ আপনাকে জড়িয়ে ধরলে, সেই দিন যখন টিনা আপনাকে আমার সামনে জড়িয়ে ধরে ছিলো কেনো আমার কাছে এতোটা খারাপ লেগে ছিলো,কেনো টিনা আপনার এতো কাছে আসাতে আমি সহ্য করতে পারি নি, কেনো সাভাবিক ভাবে দাড়িয়ে থাকে পারি নি তাহলে কি আমি মেঘ কে ভালোবেসে ফেলেছি।না এটা সম্ভব না, আমি কখনই মেঘ কে ভালোবাসতে পারি না,,,,,,,,

#চলবে,,,,,,

(জানি না কি লিখেছি,,,কাচা হাতের লিখা ওরকম ভাবে গুছিয়ে লিখতে পেরেছি কি না জানি না,,আজকে পর্ব কেমন হয়েছে প্লিজ জানাবেন, কারন আপনাদের কমেন্ট দেখেই গল্পটা এগিয়ে নিয়ে যাবো)

লেখায় ভুল হলে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here