তুই আমার অঙ্গারাম্লজান – পর্ব ৬

0
323

#তুই_আমার_অঙ্গারাম্লজান
পর্ব_৬
লেখনী: মাহরুশ মুতাদায়্যিনাত মুক্তা

৬.
কলেজ থেকে এসে কলিংবেল না চেপে দরজা ধাক্কালাম। দরজা খুললেন ফাহাদের মা। আজকে আম্মুর সাথে কলেজের যাওয়ার পূর্বেও দেখা হলো না, এখনও না। এই ভদ্রমহিলার চেহারা বারবার দেখতে হচ্ছে।
আমি উনাকে দেখে জোর করে মুখে হাসি ফোটালাম। উনি দেখতে ঠিক ফাহাদের মতোই ছোটোখাটো, কুঞ্চিত শরীরের একজন মানুষ। তিনিও হেসে বললেন,
“তুমি চলে আসছো? আসো।“
আমি মাথা নাড়িয়ে আর কিছু বলার চেষ্টা করার পূর্বেই আমার সঙ্গে দাঁড়ানো কাউয়া কা কা করে ওঠলো।
“আসসালামুআলাইকুম আটি। ভালো আছেন আন্টি? শরীর ভালো আন্টি? ফাবলীহা থেকে শুনলাম আপনার নাকি মাথা ব্যথা। এখন ঠিক আছেন আন্টি?“
আমি চাঁদনীর হাত চেপে ধরলাম। দাঁত বের করে বললাম,
“তোমার আন্টি আমারও আন্টি।“
ফাহাদের মায়ের দিকে তাকিয়ে বললাম,
“ও আসলে আমার বান্ধবী আন্টি। এ হলো চাঁদনী, আর ও হলো তুশিরা। চাঁদনীর কথা তো বোধহয় শুনেছেন।”
উনি ভ্যাবাচ্যাকা চেহারা নিয়ে হাসার চেষ্টা করলেন। বললেন,
“হ্যাঁ, হ্যাঁ। তোমার বান্ধবী তোমার সঙ্গে থাকছে। এই তো, ফাহাদ বললো।”
আমি ঘরে প্রবেশ করতে করতে জিগ্যেস করলাম,
“আম্মু নেই আন্টি?”
“না মা, তোমার আব্বু তোমার আম্মুকে নিয়ে একটু ডাক্তার কাছে গেছে। সঙ্গে তোমার চাচ্চুও গেছেন।”
“ওহ, আচ্ছা আন্টি।”
চাচ্চু অর্থাৎ ফাহাদের বাবা গেছেন শুনে ঘরে উঁকিঝুঁকি মারতে লাগলাম। উনার ছাওপোনাকেও কোমরে গুঁজে নিয়ে যায়নি তো। আদরের কনিষ্ঠ পুত্র বলে কথা।

চাঁদনী আর তুশিরাকে আমার রুমে ঢুকালাম। চাঁদনীর মাথায় থাপ্পড় মেরে বললাম,
“ছাগল কোথাকার! ওটা আমার মা? ওটা ফাক-আদের মা। আর আমার মা হলেই জিহ্বা বিশ সেন্টিমিটার বের করে আন্টি আন্টি করতে হবে? আবার, আমি কবে তোকে বললাম আমার মায়ের মাথা ব্যথা?”
চাঁদনী বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে বললো,
“সব গৃহিণী মায়েদেরই মাথা ব্যথা থাকে। চব্বিশ ঘণ্টা কাজ করার পরও যখন শুনে ‘কি করো সারাদিন শুয়ে বসে কাটানো ছাড়া’, তখন থেকে যে মাথার পিনিক শুরু হয় তার ঝাঁঝ সবাইকে দেখায়। তোকে আর তোর বাপকে দেখায় না? হাচা করে ক তো, তোর বাপ আগে বনের শিকারী ছিল, এখন চিড়িয়াখানার ঝাড়ুদার না?”
আমি ভেবে দেখলাম। তাই তো। ছোটোবেলা দেখতাম আব্বু অহেতুক কথা নিয়ে ঝগড়া করতো, চেঁচামেচি করতো। আম্মু তখন করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতো। সবসময় মুখায়বে অসহায়ত্ব বিরাজ করতো। এরপর হঠাৎ করেই কয়েক দিনের জন্য আমাকে নানীর বাড়ি বেড়াতে পাঠানো হয়। পাকিস্তানী মুরগির পিস খাওয়া শেষ করে সঙ্গে টিফিন বাটি করে নিয়ে এসে দেখি আম্মু অগ্নি দৃষ্টিতে তাকায় আর আব্বু করুণ দৃষ্টিতে। তখন আমার ছোট্ট মনে সন্দেহ উঁকি দিয়েছিল, আমার মাকে কোনো সুদর্শন জ্বীন, আর বাপকে কোনো সুন্দরী পরী বগল চাপা দিয়ে তুলে নিয়ে গেছে। এরা অন্যজন।
চাঁদনী হাত বাড়িয়ে আমার গাল চেপে ধরে বললো,
“আন্টির যে শইল ভালা না এটা তুই না আমারে কইলি। এখন আবার জিগাস কে কইছে!”
আমার মনে পড়লো, আজকে সকালে কলেজে যাওয়ার সময় বলেছি। আবার আব্বুও গতকাল সন্ধ্যায় চাঁদনী আসার পর বলেছিলো।
তুশিরা আড়মোড়া ভেঙে বললো,
“তোর ফাহাদ কি ঘরে নেই? তাকে দেখাবি না? আমার তো আবার বাসায় যেতে হবে। আম্মুকে বলে আসিনি।”
আমি মুখ বাঁকিয়ে জিগ্যেস করলাম,
“তো?”
“তো তোমার কপালের ফাড়াকে দেখিয়ে আমায় বিদায় দাও। সঙ্গে সুখী বিবাহিত জীবনের জন্য দোয়া দিয়ে যাই।”
তুশিরার কথা শুনে বিরক্তি নিয়ে তাকালাম।
ফাহাদের মা তখন ট্রে নিয়ে আমার রুমে প্রবেশ করলেন। আমার হাতে শরবতের গ্লাস ধরিয়ে দিয়ে বললেন,
“খাও মা। কতদূর থেকে জার্নি করে এসেছো। কলেজটার জন্য প্রতিটা দিন কত কষ্ট হয়, ইশ!”
গ্লাস হাতে আমি ভ্রু কুঁচকে তাকালাম। উনি একে একে তুশিরা, চাঁদনীকেও শরবত দিলেন।
কলেজের জন্য প্রতিদিন কষ্ট হয় বলতে উনি কি বুঝাতে চেয়েছেন? আমি এলিয়েন? আমার মাথা নষ্ট? আমিই এই ভুবনে কলেজে গমন করে একা বিদ্যাসাগরী হওয়ার পয়তারা করছি? না, আমাকে দেখে পীর বাবা মফিজুল্লার মতো মনে হয়? নিশ্চয়ই ইঙ্গিত করেছে পড়াশোনা সব বিসর্জন দিয়ে উনার ফিডার খাওয়া ও শিষ শিষ করে এখনও প্রস্রাব করানো ছেলেকে বিয়ে করে উনার রান্নাঘরের মালিকানা যেনো লাভ করি?
উনার ঘরের পুত্রবধূ হলে তো উপহার হিসেবে রান্নাঘরের মালিকই বানাবে। পেম্পার্স পরিয়ে অবশ্যই কোলে বসিয়ে রাখবে না– যেমনটা উনার ছেলেকে রাখে।
উনি রুম থেকে যেতেই চাঁদনী ওয়াক ওয়াক করে ওঠলো।
“ছ্যাহ, ছ্যাহ, ছ্যাহ। এসব কি শরবত। চিনি তো নাই, শত্রুতা করে যে কেউ লবণ দেয় তা-ও দেয় নাই।”
আমি আমার গ্লাসটা টেবিলে শব্দ করে রেখে খাটে গিয়ে বসলাম।
“ধুর! বিরক্তিকর!”
চাঁদনীর দিকে তাকিয়ে রাগে গজগজ করে বললাম,
“আমি এই ফাকাইদ্দারে বিয়ে করবো না।”
চাঁদনী চোখ টিপে বললো,
“করিস না। সেই মুশকিল আমি আহসান করবো। কিন্তু আগে তো আমার জানুটাকে দেখা।”
“দাঁড়া, ছাগলটা কই দেখে আসি।”

রুম থেকে বেরিয়ে ফাহাদের মায়ের কাছে গেলাম। গাল দুইপাশে বিস্তৃত করে হাসির ভঙ করে বললাম,
“ফাকাইদ্দা থুক্কু, ভাইয়াও কি চাচ্চুর সাথে গেছে আন্টি?”
হঠাৎ জোনাকি পোকার পাছার মতো উনার মুখ খুশিতে জ্বলজ্বল করে ওঠলো। বললেন,
“ফাহাদের কথা বলছো? সে তো বাসাতেই। ঘুমাচ্ছে। ডেকে দেবো?”
আমি খানিক ভেবে বললাম,
“হ্যাঁ, ডেকে দিন। এখন তো দুপুরের খাবারেরও সময় হয়েছে। একসাথে খাবো।”
উনি গদগদ করে বললেন,
“আচ্ছা, আচ্ছা। আমি ডেকে দিচ্ছি। তুমি ফ্রেশ হয়ে এসো।”
উনাকে একটা ভেটকি উপহার দিয়ে আমি আমার রুমে ফিরে এলাম।
চাঁদনীর উদ্দেশ্যে বললাম,
“আমার ফাকাদ ভাইয়া বাসাতেই উপস্থিত।”

ডাইনিং টেবিলে তিনজন মুখ বাড়িয়ে একজনের দিকে তাকিয়ে। একদৃষ্টিতে এতো গভীরভাবে তাকিয়ে থাকায় ফাহাদ ভরকে গেলো। আশেপাশে তার মা জননী নেই। তার মা জননীকে আমি বলেছি তার সুজি খাওয়া পুত্রকে আমি আজ ভাত বেড়ে খাওয়াবো। পাশে দাঁড়িয়ে লজ্জা ভঙ্গিতে নতুন বউ যেভাবে খাওযায়, সেভাবে। সেই সময় বয়স্ক কেউ উপস্থিত থাকলে যে আমি ভীষণভাবে লজ্জা পেয়ে লজ্জাবতী গাছের মতো নুইয়ে পড়বো সেটাও বুঝিয়েছি। তাই তিনি ফাহাদকে রুম থেকে আমার কাছে ফিক্কা মেরে নিজে দরজা বন্ধ করে কানে হেডফোন গুঁজে গজল শুনছেন। এখন আমার পালা– আমার দুই বান্ধবীকে ফাহাদের উপর ফিক্কা মেরে ফেলবো। এরপর বাঁচুক, মরুক ডাজেন্ট ম্যাটার।
চাঁদনী ফাহাদের দিকে চোখের চাহনি নিবদ্ধ রেখে পেন্ডুলামের মতো মাথা ডানে বামে ঘুরাচ্ছে। আর সেই কি বিচিত্র চাহনি! আমার নিজেরই লজ্জা পাচ্ছে।
এই যে, বেড়ানোর নাম করে আমার বাড়িতে এসে আমার সঙ্গেই টুনাটুনি খেলা খেলতে চাইছে, আমার সঙ্গে পিরিতের আলাপ পেড়ে জালে আবদ্ধ করে বিয়ের জন্য পাগল করতে চাইছে– যতদিন অবধি এই টিকটিকির লেজের আমাকে বিয়ে করার শখ না মেটে ততদিন একে তোড়জোড় আদম-টিজিং করা হবে।
ফাহাদ একের পর এক পানির গ্লাস শূন্য করছে। এই ছেলে পাগল নাকি? বুঝতে পারছে না প্রকৃতি আহ্বান করলেও তার ডাকে সাড়া দিতে আমরা তাকে দেব না? এরপরও গর্দভের মতো পানি গিলে যাচ্ছে।
চাঁদনী ঠোঁট বাঁকিয়ে চুমুর ভঙ্গি করে ফাহাদের দিকে খানিক এগিয়ে গেলো। ফাহাদ চট করে চেয়ার থেকে দাঁড়ালে তুশিরা চেঁচিয়ে ওঠলো,
“দোস্ত ছুরি! ছুরিটা দে তো। এক্ষণই দে। সঙ্গে কাচিটাও দে।”
ফাহাদ হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলো। টেবিলের মাঝখান থেকে ছুরি তুলে নিতেই ফাহাদ ফ্যাসফ্যাস গলায় জিগ্যেস করলো,
“ছুরি কেন!”
তুশিরা ফাহাদের দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বললো,
“মশা। মশার অত্যাচারে ঠিকঠাক খেতেই পারছি না। তাই আজকে ছুরি দিয়ে মশার চৌদ্দ গুষ্টিকে কুচিকুচি করে ফেলবো।”
বলেই তুশিরা ভয়ংকর ভঙ্গিতে হাত নাড়ালো।
আমি বললাম,
“আপনি বসুন না। খাবার না শেষ করে দাঁড়িয়ে গেলেন কেন?”
চাঁদনী ভেঙচি কেটে তুশিরার উদ্দেশ্যে বললো,
“ওটা মশা না মশকী।”
ফাহাদ বসলে তুশিরা আবার বলতে শুরু করলো,
“ওহ, দুঃখিত।”
ফাহাদের দিকে তাকিয়ে জিগ্যেস করলো,
“আমাদের যে মহিলা মশা কামড়ায় সেটা জানেন? অর্থাৎ মশকী। আর পুরুষ মশা শুধু প্রজননের কাজে ব্যবহৃত হয়। মশকী উম্মা করে কামড় দেবে, আর মশা বাবু গিফ্ট করে হুম্মা করে চোখ বন্ধ করে বলবে, ‘বিদায় পিতিবি।’”
চাঁদনী আবেদনময়ী হাসি হেসে বললো,
“ফাহাদ ব্রো, হবেন নাকি আপনি সেই মশা, আর আমি আপনার মশকী? হুম, হুম, হুম?”
ফাহাদ হতভম্ব দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালো। বোধহয় ভাবছে আমি কেন আমার সুভাষিণী বান্ধবীদের থামাচ্ছি না। তার মনে আশা সঞ্চালনের উদ্দেশ্যে চাঁদনীকে মৃদু ধমক দিয়ে বললাম,
“কি যে বলছিস এসব। উনি কি এরকম মানুষ?”
আমার কথায় ফাহাদ যেনো প্রাণ ফিরে পেলো।
আমি আবার বলতে লাগলাম,
“উনাকে দেখ। চিপা খাওয়ার আগেই চ্যাপ্টা হয়ে আছে। কেউ যেনো দেহটা ধরে রুটি মেকারের নিচে চাপা দিয়েছে। যার পক্ষে নিজেকে সামলানো সম্ভব না সে আবার মশকী, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম.. হা হা হা, আহহা হাহহা!”
বিচিত্র শব্দ উৎপন্ন করে আমরা তিনজনই হাসতে শুরু করলাম। ফাহাদ মাথা নিচু করে নিজের ঠোঁট কামড়ে ধরলো। ভাবলাম, আজকের জন্য যথেষ্ট আদম-টিজিং হয়েছে। বেচারার একটু কান্নাকাটি করার প্রয়োজন।
আমি কণ্ঠ নমনীয় করে জিগ্যেস করলাম,
“ফাহাদ ভাই, ওয়াশরুম যাবেন? গেলে যান।”
ফাহাদ তৎক্ষণাৎ উঠে দাঁড়ালো।
চাঁদনীও দাঁড়িয়ে বললো,
“একা যাবেন? স্লিপ খেয়ে যদি কোমডের ভিতর পরে যান। সুরসুর করে পাইপ দিয়ে আবার বুড়িগঙ্গায় গিয়ে পড়লে?”
তুশিরা তাকে সায় দিয়ে বললো,
“আমাদের বুড়িগঙ্গা তো আবার ডার্ক চকলেট। তার মায়ায় একবার কেউ পড়লে আর উঠে আসতে চায় না। যাবেন নাকি দেখভালের জন্য ওকে নিয়ে?”
ফাহাদ কান চেপে ধরে দৌঁড়ে পালালো। সে যেতেই আমরা তিনজন আবারও হেসে ওঠলাম। ফাহাদের মা তখন রুম থেকে বেড়িয়ে এলেন।
হাসি হাসি মুখে জিগ্যেস করলেন,
“কি ব্যাপারে হাসছো মা? ফাহাদ কোথায়? খাওয়া শেষ?”
আমি লাজুক হেসে বললাম,
“উনার প্যান্টের চেইন নাকি খুলে গেছে, তাই..”
উনি হেসে বললেন,
“ওহ, এই কথা। ছেলেটা যে কি। যাইহোক, তোমরা খেয়েছো ঠিকমতো?”
চাঁদনী মাথা নাড়িয়ে বললো,
“জি আন্টি খেয়েছি। রান্নাটা এতো টেস্টি হয়েছে। আন্টি মানে ফাবলীহার আম্মু যে এতো ভালো রান্না করতে পারে। কি বলবো!”
ফাহাদের মা বিগলিত হেসে বললেন,
“ফাবলীহার মা তো অবশ্যই ভালো রান্না করেন। আজকে কিন্তু তোমাদের এই আন্টি রান্না করেছি।”
চাঁদনী দুই গালে হাত রেখে বললো,
“সত্যি আন্টি আপনি রেঁধেছেন? ওয়াও!”
আমি চাঁদনীর বাহুতে চিমটি কাটলাম।
ফাহাদের মা যেতে চাঁদনী তার পেট চেপে ধরলো,
“এই লেগ্গাই আমার পেট খাবার খাইয়াই মোচড় মারছে। আমার তো মনে হয় ডাইরেক্ট হইয়া গেছে। ফাহাদের লগে যাওনের দরকার ছিল।”
সুর তুলে বললো,
“ফাহাদ জামাই তুমি কই।”
আমি তাকে মৃদুভাবে শাসিয়ে বললাম,
“আস্তে! বিয়ের আগেই শাশুড়ি দ্বারা বধূ-নির্যাতন হবি তো।”
তুশিরা উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বললো,
“দোস্ত এখন আমার যেতে হবে। লেইট হয়ে যাচ্ছে।”

দরজার কাছে দাঁড়িয়ে তুশিরা ফিসফিস করে বললো,
“ফাহাদ কিন্তু দেখতে ওতোটাও খারাপ নয়। তুই কিন্তু একবার ট্রাই মারতে পারিস ফাবলীহা।”
আমি চোখের আকৃতি কুঞ্চিত করে তার দিকে তাকালাম,
“তোর পছন্দ হয়েছে নাকি?”
“পছন্দ তো হয়েছেই।”
চাঁদনী কোমরে হাত রেখে চোখ পাকিয়ে জিগ্যেস করলো,
“এই ছেড়ি, তোর না বয়ফ্রেন্ড আছে?”
“তো?”
আমি আর চাঁদনী অবাক হয়ে ওর দিকে তাকালাম। একসঙ্গেই চিৎকার করে ওঠলাম,
“বারো!”
তুশিরা দুই হাতে দুইজনের মুখ চেপে ধরলেন।
ফাহাদের মা এগিয়ে এসে জিগ্যেস করলেন,
“কি হয়েছে মা? বারো কী?”
চাঁদনী তৎক্ষণাৎ জবাব দেওয়ার চেষ্টা করলো,
“বুড়া! বারো বুড়া। আমাদের কলেজে, আমম…”
“বারো ভূঁইয়াদের নাম শুনেছেন আন্টি?”
আমি শ্বাস আটকে রেখে জিগ্যেস করলাম।
আন্টি আমার প্রশ্নের জবাবে মাথা নাড়িয়ে বললেন,
“হ্যাঁ, শুনেছি।”
আমি বললাম,
“আমাদের কলেজে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে বারো ভূঁইয়া হিসেবে বারোজন ছাত্রী বুড়া সেজে অংশগ্রহণ করবে। এটাই বলছিলাম আরকি।”
উনি হেসে বললেন,
“ওহ, আমি আরও কি ভাবলাম।”
চাঁদনী সন্দিহান কণ্ঠে জিগ্যেস করলো,
“কি ভাবলেন আন্টি?”
“ওহ, কিছু না। তোমরা বাচ্চা মানুষ। বড় হতে হতে বুঝবে।”
আন্টির কথা শুনে আমার বগলের তলায় কাতুকাতু লাগছিল। বড় হলে নাকি বুঝবো? পাঁতিহাসের মতো লাফাতে লাফাতে হাসতে পারলে একটু কাতুকুতু কমতো।

(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here