ভালোবাসার অনুভূতি – পর্ব ৪১

0
763

#ভালোবাসার_অনুভূতি
#লেখিকা‌ঃ_আরভি_আহিয়াদ_তিহু
#পর্বঃ41

পাচ দিন পর,,,,

দুপুরবেলা মেঘ সাওয়ার নিয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে জামাকাপড় গুলো ব‍্যালকনিতে শুকাতে দিয়ে,রুমে এসে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে টাওয়েল দিয়ে চুল শুকাতে লাগলো।ঠিক তখনই মেঘের ফোনে টুং করে একটা নোটিফিকেশন আসলো।মেঘ একহাতে টাওয়েল টা নিয়ে চুল মুছতে মুছতে বেডের উপর থেকে ফোনটা হাতে নিয়ে মেসেজটা ওপেন করলো।মেসেজটা ওপেন করতেই মেঘ খুশীতে “ইয়াহুউউউ” বলে একটা চিৎকার দিলো।কারন মেসেজটা সাঈফা করেছে,,আর ওতে লেখা ছিলো,,,

‘আপি আজকে বড়রা সবাই আলিশা আপিদের বাড়িতে যাবে হিয়ান ভাইয়া আর আলিশা আপির বিয়ের ডেট ফিক্সড করতে।’

মেঘ ফোনটা বেডের উপরে ছুড়ে ফেলে দিয়ে,নিজেও বেডের উপর উঠে খুশীতে লাফাতে লাগলো।তখনই কেউ ওর রুমের দরজাটা ঠাস করে ধাক্কা দিয়ে খুলে ভিতরে প্রবেশ করলো।দরজা খোলার শব্দ পেয়ে মেঘ লাফানো থামিয়ে ভ্রু কুচকে দরজার দিকে তাকালো।দেখলো,,,মিহির রুমের মধ‍্যে ঢুকে দরজাটা লক করে দিয়ে,রাগে ফুসতে ফুসতে এসে বেডের উপরে ধপ করে বসে পড়লো।মেঘ মিহিরের দিকে তাকিয়ে দেখলো,মিহিরের গায়ে এখনো পাঞ্জাবী,পায়জামা আর টুপি পড়ে আছে।ও বুঝতে পারলো মিহির মসজিদ থেকে জুমা’র নামাজ পড়ে সোজা ওর রুমে এসেছে।কিন্তু হঠাৎ কেনো এতো রেগে আছে সেটা মেঘ কিছুতেই বুঝতে পারলো না।ও বেড থেকে এক লাফ দিয়ে নিচে নেমে এসে মিহিরকে উদ্দ‍্যেশ‍্য করে বললো

“কিরে তোর চোখ মুখ এমন টুকটুকে লাল হয়ে আছে কেনো?কেউ কি তোর চেহারায় মরিচের গুরোড় ফেইস প‍্যাক লাগিয়ে দিয়েছে নাকি?”

মিহির রাগি চোখে মেঘের দিকে তাকিয়ে দাতে দাত চেপে বললো

“রাগে আমার মাথা ফেটে যাচ্ছে।ইচ্ছে করছে সব কিছু ভেঙে গুড়িয়ে দেই।”

মেঘ দুহাত নিজের কোমরে রেখে বললো

“কিন্তু কেনো?ওহ আচ্ছা,,তোকে মনে হয় আজকে মসজিদ থেকে জিলাপি দেয়নি তাইনা?”

মেঘের কথা শুনে মিহিরের রাগ টা আরো দুগুন বেড়ে গেলো।ও মেঘের দিকে তাকিয়ে মৃদ‍্যু চিল্লিয়ে বললো

“ইউ শাটআপ!কি মনে করে কি ওরা নিজেদের,,ওদের যখন যাহ ইচ্ছে ওরা তাই করবে,,,”

মিহিরের কথার মাঝে মেঘ ওকে থামিয়ে দিয়ে ওর কথার রেশ ধরে নিজেও সুর টেনে বললো

“ঠিকই তো,,কি মনে করে ওরা নিজেদের?আমার ভাইকে সামান‍্য একটা জিলাপি খেতে দিলো না?ওরা জানে না,,আমার ভাই চাইলে জিলাপির পুরো একটা দোকান কিনে নিতে পারে!শুধু কিনতেই পারেনা,,আমার ভাই নিজেও খুব সুন্দর জিলাপি বানাতে পারে!এর প্রমান আমি নিজেই।কারন আমি আমার ভাইয়ের হাতের বানানো জিলাপি খেয়ে,টানা এক ঘন্টা বমি করেছি।ইনফ‍্যাক্ট এখনো ওই দিনের জিলাপির টেষ্ট টা মনে পড়লেই বমি চলে আসে।ওহ আল্লাহ টেষ্ট টা কি দারুন ছিলো।একদম মনে রাখার মতো।”

মিহির বেড থেকে একটা বালিশ নিয়ে মেঘের দিকে ছুড়ে মেরে বললো

“ষ্টপ ইট মেঘ!আমি কিন্তু এই মুহূর্তে ভিষন রেগে আছি।তুই যদি আর একটাও উল্টাপাল্টা কথা বলেছিস তাহলে তোকে আমি বালিশ চাপা দিয়ে মেরে ফেলবো।”

মিহিরের কথা শুনে মেঘ অবাক হওয়ার ভান করে বললো

“ওহ মাই আল্লাহ!সামান‍্য জিলাপি খেতে পারিসনি তাই নিজের বোনকেই মেরে ফেলবি?”

মেঘের কথা শুনে মিহিরের মনে হচ্ছে ওর গায়ে কেউ আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে।ও একটা খেয়ে ফেলা লুক নিয়ে মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে।রাগে ওর সারা শরীর জ্বলে যাচ্ছে।মেঘ আবারও একই ভঙ্গিতে বললো

“কালকে সকালের ব্রেকিং নিউজ!জুমা’র দিন মসজিদ থেকে এক তরুন কে জিলাপি না দেওয়ার জন‍্য,তরুনটি রেগে নিজের বোনকে বালিশ চেপে হত‍্যা করেছে।যুবকটির বাসার পাশের লোকজন বলাবলি করছে,,যুবকটি একজন টুরু জিলাপি খোর ছিলো।”

এতোক্ষন মেঘের কথা গুলো মিহির চুপচাপ সহ‍্য করলেও এইবার আর সহ‍্য করতে পারলো না।ও বসা থেকে দাড়িয়ে মেঘের হাত ধরে টেনে নিয়ে গিয়ে ওকে দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে দাড় করিয়ে ওর গালাটা চেপে ধরলো।তবে এমন ভাবে চেপে ধরেছে যাতে মেঘের একটুও ব‍্যাথ‍্যা না লাগে।মিহির মেঘের দিকে তাকিয়ে রাগে কটমট করতে করতে বললো

“মানা করার পরেও কখন থেকে জিলাপি জিলাপি করে আমার কান ঝালাপালা করে দিচ্ছিস তোকে তো আজকে মেরেই ফেলবো।”

মেঘ একটু কান্নার অভিনয় করে বললো

“হায় আল্লাহ এই দুঃখ মুই কারে দেখামু!মোর নিজের মায়ের পেটের ভাই মোরে সামান‍্য একঠা জিলাফির লইগা খুন করতে চাইতাছে।ওরে কেউ মোরে একটা কচু গাছ দিলানা কেন?এই দিন দেহার আগে মুই কচু গাছে ফাস দিয়া মইরা যাইতাম।”

মেঘের কথা বলার ষ্টাইল দেখে মিহির ফিক করে হেসে দিলো।ও মেঘের গলা থেকে হাত সরিয়ে দিয়ে হাসতে হাসতে গিয়ে বেডের উপর বসে পরলো।তারপর হাসতে হাসতে ধপ করে বেডের উপর শুয়ে পড়লো।মিহিরকে এভাবে হাসতে দেখে মেঘ মুচকি একটা হাসি দিলো।কারন ও এতোক্ষন মিহিরকে হাসানোর জন‍্যই এইসব আজগুবি কথা গুলো বলছিলো।ও জানে মিহিরের রেগে গেলে একদম মাথা ঠিক রাখতে পারে না।যখন তখন উল্টাপাল্টা কাজ করে ফেলে।

মেঘ ধীর পায়ে মিহিরের দিকে এগিয়ে গিয়ে ওর পাশে বসে পড়লো।তারপর কোমল স্বরে জ্বিঙ্গেস করলো

“রাগ কমেছে?এইবার বল হঠাৎ এতো রেগে গেলি কেনো?বাসা থেকে যখন বের হয়ে ছিলি তখন তো ঠিকই ছিলি।”

মেঘের কথাটা কানে আসতেই মিহিরের হাসি থেমে গেলো।ও মেঘের দিকে তাকিয়ে চোখে মুখে কাঠ‍িন‍্য ভাব এনে মেঘকে উদ্দ‍্যেশ‍্য করে জিঙ্গেস করলো

“আবিররা সবাই আমাদের বাড়িতে কি করছে?ওদের সাহস হয় কিভাবে আমাদের বাড়িতে আসার?এতো কিছুর পরেও ওরা কোন মুখে আমাদের বাড়িতে আসে?”

মেঘ মিহিরের দিকে তাকিয়ে শান্ত স্বরে বললো

“কুল ডাউন ব্রো!এতে এতো হাইপার হওয়ার কিছু নেই।আবির আর জেড়িন আমার সাথে এতো বড় একটা অন‍্যায় করার পরেও যখন বাবাই, মাম্মাম ওদের মাফ করে দিয়ে সেদিন বিয়েতে যেতে পেরেছিলো।তাহলে জেড়িন আমার গায়ে সামান‍্য একটা ফুলদানি মেরেছিলো,এই জন‍্য ওকে মাফ করা কি এমন ব‍্যাপ‍্যার!এটা তো একদিন হওয়ারই ছিলো।কোনো একদিন জেড়িন এসে বাবার সামনে ন‍্যাক‍্যা কান্না কাদতো আর বাবাই সব কিছু ভুলে ঠিক ওকে মাফ করে দিতো।”

মিহির শোয়া থেকে উঠে বসে বললো

“আমি ওদের সাথে এক মুহূর্তেও এখানে থাকতে পারবো না।ওদের আমার চোখের সামনে দেখলে আমি কিছুতেই নিজের রাগ টাকে কন্ট্রোল করতে পারি না।ইচ্ছে করে সব গুলোর মাথা কেটে ফুটবল খেলি।”

মেঘ মিহিরের একহাত নিজের দুইহাতের মধ‍্যে নিয়ে মৃদ‍্যু একটা হাসি দিয়ে বললো

“নিজের রাগটাকে কন্ট্রোল করতে শেখ।এই ভাবে হুটহাট রেগে গিয়ে উল্টাপাল্টা কাজ করা একদম ভালো কথা নয়।তুই যদি রেগে গিয়ে এই মুহুর্তে ওদের উল্টাপাল্টা কিছু বলিস তাহলে মাম্মাম বাবাই তোকেই বকা দিবে।আর ওরাও তোকে গুন্ডা,রাস্তার ছেলে এইসব বলে তোকে কথা শোনাবে।তাছাড়া ওরা যেহেতু আমাদের মেহমান তাই ওদের কিছু বলে অপমান করা মানে মাম্মাম বাবাইকেও অপমান করা।সবাই বলবে আমাদের মা-বাবা আমাদের শিক্ষা দিতে পারেনি।তার থেকে কয়েকটা দিনেরই তো ব‍্যাপ‍্যার একটু দাতে দাত চেপে সহ‍্য করে নে।”

মিহির অবাক চোখে মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে।ও ভাবতেও পারেনি মেঘ এই ব‍্যাপ‍্যারটা এতোটা হালকা ভাবে নিবে।ও অবাক কন্ঠে মেঘকে উদ্দ‍্যেশ‍্য করে জিঙ্গেস করলো

“আবির আর জেড়িন ওদের ফেমিলির লোকেরা ওদের সবাইকে দেখলে তোর কষ্ট হয়না?ওরা আমাদের সাথে কি কি করেছে সেই কথা গুলো মনে পড়েনা?”

মেঘ একটা মলিন হাসি দিয়ে বললো

“এখন আর এসব আমার কাছে ম‍্যাট‍্যার করে না।একটা সময় ছিলো যখন এসব ভেবে খুব কষ্ট পেতাম।কিন্তু এই শহরে এসে লাষ্ট চার বছরে সবার থেকে এতো এতো ভালোবাসা পেয়েছি যে ওদের দেওয়া কষ্ট গুলো এখন তুচ্ছ মনে হয়।যেখানে ওরা কোনো দিন আমাদের মানুষ বলেই মনে করেনি,, সেখানে এই মানুষ গুলো সব সময় মিহির আর মেঘকে সবার আগে প্রায়োরিটি দিয়েছে।আজ অবদি এনারা কেউ আমাদের একটা ধমক দিয়েও কথা বলেনি।কখনো এমন কোনো কথা বলেনি যাতে আমরা হার্ট হই।সব সময় আমাদের খুশী রাখার চেষ্টা করেছে।আর এতো মানুষের ভালোবাসার কাছে ওদের দেওয়া কষ্ট গুলো এখন আর মনে পড়ার প্রশ্নই ওঠে না।”

মেঘের কথা শুনে মিহির মেঘের চেহারার দিকে তাকিয়ে মুচকি একটা হাসি দিলো।ওর বোনটা সত‍্যিই অনেক বড় হয়ে গেছে।কথায় কেমন বড়দের মতো ম‍্যাচুরিটি এসেছে।মিহির মেঘের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে কিছু একটা ভেবে মেঘকে উদ্দ‍্যেশ‍্য করে বললো

“আচ্ছা বনু আবির আর জেড়িনকে এক সাথে দেখলে তোর কষ্ট হয়না?”

হঠাৎ মিহিরের এমন প্রশ্নে মেঘ ভরকে গেলো।ও অবাক চোখে মিহিরের দিকে তাকিয়ে বললো

“হোয়াট?হোয়াই?ওদের দুজন কে দেখলে আমার কোন দুঃখে কষ্ট হবেরে ভাই?”

মিহির একটু মজা করে বললো

“নাহ মানে,,যতোই হোক আবির তোর উডবি হাসবেন্ট ছিলো।জেড়িনের জায়গায় এখন তোর থাকার কথা ছিলো।তাই জিঙ্গেস করছিলাম আরকি এখন ওদের দেখে তোর জেলাস ফিল হয় না?”

মিহিরের কথা শুনে মেঘ বোকার মতো মিহিরের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে ওর হাতের উল্টোপিঠ মিহিরের কপালে ঠেকিয়ে চিন্তিত হওয়ার ভান করে বললো

“এই ভাইয়া তোর গায়ে আবার জ্বর টর আসেনি তো?নাকি মসজিদ থেকে আসার সময় তোকে পাগলা কুকুরে কামরে দিয়েছে তাই এসব ভুলভাল বকছিস।আবির আর জেড়িনকে একসাথে দেখে আমি কেনো জেলাস ফিল করবো?আমি কি আবিরকে ভালো বাসতাম নাকি?আরে ভালোবাসা তো দূরের কথা ও তো কোনোদিন আমার ক্রাশ,ব্রাশ, টুথপেষ্ট,শ‍্যাম্পু কিচ্ছু ছিলো না।ইনফ‍্যাক্ট আমি কোনোদিন ওর দিকে ভালো করে তাকাইও নি।কারন ব‍্যাট‍্যাকে আমার ছোট বেলা থেকেই কেমন লুচ ক‍্যারেক্টার টাইপের মনে হতো।”

মেঘের কথা শুনে মিহির ফিক করে হেসে দিলো।তারপর বসা থেকে দাড়িয়ে বললো

“যাষ্ট কিডিং!তুই এতোক্ষন আমার সাথে জিলাপি নিয়ে মজা করলি তাই আমিও একটু তোর সাথে মজা করলাম।এইবার নিচে চল নাহলে মা আবার বকা দিতে দিতে আমাদের কানের পোকা মেরে ফেলবে।”

মেঘও হেসে দিয়ে বললো

“তুই যা আমি নামাজ টা পড়ে আসছি।”

“একদম না!তুই আমার সাথে যাবি।আমি রুম থেকে ড্রেস চেইঞ্জ করে আসতেছি, তুই ততোক্ষনে নামাজ টা পড়ে নে।খবরদার আমার দেড়ি হলেও আমাকে ছাড়া একা একা একদম নিচে যাবি না।”

মিহিরের কথায় মেঘ মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো।মিহির মেঘের সম্মতি পেয়ে দরজা খুলে রুম থেকে বের হয়ে আবার বাইর থেকে দরজাটা টেনে দিয়ে চলে গেলো।
___________________________

মিহির আর মেঘ নিচে এসে দেখলো মেহমানরা সবাই লাঞ্চ করতে বসে গেছে।এখানে মেঘের ফুপিরা, চাচ্চুরা,কাজিনরা সবাই আছে।মিড়া রহমান আর কিছু সার্ভেন্ট মিলে সবাইকে খাবার সার্ভ করছে।আজম রাহমানও ওনাদের সাথেই বসেছে।মিহির দাতে দাত চেপে বিরবির করে বললো

“কথা নেই, বার্তা নেই, চৌদ্দ গুষ্টি শুদ্ধ সব এসে হাজির হয়েছে।”

কথাটা আর কেউ শুনতে না পেলেও মেঘ ঠিকই শুনতে পেয়েছে।ও মিহিরের হাতে আস্তে করে একটা চিমটি কেটে জোড় পূর্বক ঠোটের কোনে একটা হাসি ঝুলিয়ে দাতে দাত চেপে বললো

“বিহেইব ইউর সেলফ!এখানে বড়রা সবাই আছে।শুনে ফেললে কি ভাববে।”

মিহির একটা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললো

“তাতে আমার কি?এটা তাসনিধ সায়াজ মিহিরের বাসা।এই জন‍্য মিহির এখানে যাহ খুশী তাই বলবে।কে কি ভাবলো তাতে মিহিরের কিচ্ছু যায় আসে না।”

“হি হি হি এটা এখনো আজম রহমানের বাসা।তাই যাহ বলবি ভেবে চিন্তে বলিস।বেশি উল্টাপাল্টা বললে বাবাইয়ের তোকে বাসা থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতে এক মিনিটও লাগবে না।”

“শাটআপ!ইউ পুচকি মেয়ে।সব সময় বেশি কথা বলিস।”

“একি তোমরা দুজন ওখানে দাড়িয়ে ফিসফিস করে কি কথা বলছো?এখানে খেতে চলে আসো?”

আজম রহমানের কথা শুনে মিহির আর মেঘ সামনে তাকালো।দেখলো,,সবাই ওদের দুজনের দিকেই তাকিয়ে আছে।আজম রহমান ওদের চোখ দিয়ে ইশারা দিয়ে চেয়ারে বসতে বললেন।ওরাও দুজন গিয়ে চেয়ারে বসে পড়লো।মেঘ একে একে মেহমানদের সবাইকে সালাম দিলো।সবার সাথে কুশল বিনিময় করলো।কিন্তু মিহির কারো সাথে কোনো কথাই বললো না।কারো দিকে একটা বারের জন‍্য তাকালো অবদি না।ও হু কেয়ারস একটা ভাব নিয়ে বসে বসে ফোন টিপতে লাগলো আর খেতে লাগলো।মেহমানরাও কেউ সাহস করে মিহিরের সাথে কথা বললো না।কারন ওরা আগে থেকেই জানে মিহির ছোট বেলা থেকেই রগচটা স্বভাবের।তার উপর এই কয়েক বছরে মিহির আগের থেকে অনেক চেইঞ্জ হয়েছে।এখন ওকে দেখতে আগের থেকে আরো বেশি রাগি মনে হয়।

মিহিরকে ফোন টিপতে দেখে মেঘ ওর হাত থেকে ফোন টা টান দিয়ে নিয়ে বললো

“খাবার সময় ফোন টিপতে হয় না,,জানিস না?”

মিহির মুখ থেকে বিরক্তিকর একটা চ শব্দ উচ্চারণ করে বললো

“কাজ করছি তো মেঘ,,ফোনটা নিয়ে নিলি কেনো?”

“খাবার টা শেষ করেও কাজটা করা যাবে।আগে লাঞ্চ কম্পিলিট কর তারপরে কাজটা করিস।”

বলেই মেঘ ফোনটা ওর পাশে টেবিলের উপর রেখে দিলো।তখনই ফোনের রিং বেজে উঠলো।মেঘ ফোনের স্কিনের দিকে তাকিয়ে দেখলো “আহান ব্রো” লেখা টা জ্বলজ্বল করছে। মেঘ ফোনটা মিহিরের দিকে এগিয়ে দিলো।মিহির ফোনটা হাতে নিয়ে ব্রু কুচকে ফেললো।এই মুহুর্তে আহানের কল দেওয়ার কারন বুঝতে পারলোনা ও। মিহির ফোনটা রিসিভ করে কানে ধরতেই বসা থেকে দাড়িয়ে গেলো তারপর তড়িঘড়ি করে বললো

“সরি!সরি!সরি ব্রো,,আই অ‍্যাম রিয়েলি ভেরি সরি।আমার একদম মনে ছিলো না।বিলিভ মি আমার সত‍্যিই মনে ছিলো না।”

চলবে,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here