#পালিয়ে_বিয়ে
#Concept_2
#Part 1,2,3 (একসাথে)
#Written_By_Nilima_Zabin_Tanmona
-এই মেয়ে এত দেরি কেন করলে? বলেছিলাম না আমার আগে চলে আসতে? যেই আমি কোনো মিটিং এ এত সময় দেই না সেই আমি তোমার জন্য ৪৬ মিনিট ১৫ সেকেন্ড ধরে ওয়েট করছি। (রেগে গিয়ে অর্নীল)
-স্যরি। বাসায় সব মেনেজ করেই তো আসতে হলো তাই না? তাছাড়া আমার অর্নীল সব বুঝবে। (নিজের ভ্রু উঁচু করে মিম)
-ননসেন্স কোথাকারের! গাড়িতে বসো। আর তুমি সাথে করে কি এনেছো? (সানগ্লাসের ডাট দিয়ে মিমের ট্রলি ব্যাগ দেখিয়ে অর্নীল)
-আমার আম্মু আর আব্বুর কিছু ছবি আর আমার প্রিয় কিছু জিনিস। প্লিজ এজন্য বকবেন না।
-আচ্ছা চলো এখন। (গাড়ির ব্যাক সিটে মিমের ট্রলি ব্যাগটা রেখে দিল অর্নীল)
-আপনার ভয় করছেনা এভাবে #পালিয়ে_বিয়ে করতে?
-অর্নীল কোনোদিন কাউকে পরোয়া করেনি আর কোনোদিন করবেও না। (গাড়ি ড্রাইভ করতে করতে অর্নীল)
-আপনার সেল্ফ কনফিডেন্স দেখে আমি সব সময়ই অবাক হই। আর আপনার মত ইগোইস্টিক যে কিভাবে আমার প্রেমে পরলো কে জানে?
-Just shut up Mim! চুপচাপ বসে থাকো। বেশি কথা বল তুমি।
-আচ্ছা আমি চুপ। এই মুখে আঙুল দিলাম। (মুখে আঙুল দিয়ে মিম)
অর্নীল চৌধুরী টপ ইয়াং বিজনেস ম্যান দের একজন। আর মিম হচ্ছে অর্নীলের গার্লফ্রেন্ড। অর্নীল যে কিভাবে মিমের প্রেমে পরলো সেইটা অর্নীল ই জানেনা। মিম আর অর্নীল সম্পুর্ন বিপরীতধর্মী। সে যাই হোক অর্নীলের মা চায়না মিমকে অর্নীল বিয়ে করুক। কারন #অরুনিমা_খান কে অর্নীলের মা অনেক আগে থেকেই অর্নীলের জন্য ঠিক করে রেখেছিলেন। অন্যদিকে মিমের চাচা চাচি চায় না নিজেদের মেয়েদের রেখে মিমের এত বড়লোক পরিবারে বিয়ে হোক। কারণ মিমের মা বাবা নেই। ছোট বেলাতেই মিমের বাবা মা মারা গেছে। আর অর্নীল তো অর্নীল ই ও যা বলবে যে কোনো মূল্যে তা বাস্তবায়ন করেই দেখাবে। তার সামান্য ঝলক হচ্ছে মিমকে বিয়ে করা একদম কাউকে না জানিয়ে। কাজীকে অর্নীল ওর বাংলো তে যেতে বলেছে। ওইখানে অর্নীলের দুইটা বেস্ট ফ্রেন্ড সাক্ষী হিসেবে থাকবে যদিও অর্নীল এসব কিছুই করতে চায়নি কিন্তু মিমের কথা অনুযায়ী করতে হলো। বাংলোতে এসে অর্নীল মিমকে নিয়ে সোজা বেডরুমে গেল। আলমারি থেকে মিমকে বিয়ের শাড়ি দিল আর গহনা দিল পড়ার জন্য। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে মিম কোনোদিন শাড়ি পরেনি আর জানেও না শাড়ি কিভাবে পরতে হয়! এইটা অর্নীল জানত না যে মিম শাড়ি পরতে পারেনা। মিম কোনোদিন বলেনি। অর্নীল তো ভীষণ রেগে গেল এইটা শুনে। অর্নীল ওর বেস্ট ফ্রেন্ড রোহানকে (যে কি না কাজীর সাথে বসেছিলো) ফোন দিয়ে বলল ওর ওয়াইফকে আসতে বলতে ইমিডিয়েটলি। রোহান তিন্নিকে আসতে বলে। রোহান ওর গাড়ি পাঠিয়ে দেয় তিন্নির আসার জন্য।
অর্নীল মিমের উপর ভয়াবহ রকমের রেগে আছে। কিন্তু এখন কিছু বলছেনা। ২০ মিনিট পর তিন্নি আসলো আর মিমকে শাড়ি পরিয়ে সুন্দর ভাবে সাজিয়ে দিল। অর্নীল ওর ড্রেস চেঞ্জ করে মিমকে নিয়ে একসাথে বের হলো। অর্নীল মিমকে এক নজর দেখে মনে মনে মাশায়াল্লাহ বলল। কিন্তু মুখে কিছু বলল না।
-এইত বর কনে এসে গেছে এখন বিয়ে পরানো শুরু করেন কাজী সাহেব। (তন্ময় অর্নীলের আরেক ফ্রেন্ড)
কাজী বিয়ে পরালেন। অর্নীল আগে কবুল বলল এরপর মিম কবুল বলল। সবাই দোয়া করলো। যখন ওদের বিয়ে পরিয়ে কাজী চলে গেলেন তখন রোহান বলল
-অর্নীল জীবনে কোনোদিন কল্পনা করিনি তুই এইভাবে #পালিয়ে_বিয়ে করবি। তাহলে মানছিস প্রেম মানুষকে পাল্টে দেয়।
-অর্নীল চৌধুরী পাল্টাবেনা।
-সেইটা তো দেখালাম ঈ। রাত ৮ টা বেজে গেছে। আমরা তোর বাসর ঘর সাজাই গিয়ে। (হাসতে হাসতে তন্ময়)
-আমি ঠিক যেভাবে যেভাবে বলেছিলাম সেইভাবেই করবি। (অর্নীল)
-জো হুকুম। ভাবি আপনি চুপ কেন?
-তোরা তোদের কাজ কর। ওকে তো আমি দেখে নিব। (মিমের উপর থেকে রাগ এখনো কমেনি অর্নীলের)
রাত ১১ টার মধ্যে মিম আর অর্নীলের বাসর রেডি করে দিল তন্ময়,,তিন্নি আর রোহান মিলে। তিন্নি মিমকে এনে ঘরে বসিয়ে দিল আর অর্নীল ড্রইং রুমে ল্যাপটপ নিয়ে বসেছিল। ওরা যখন বের হয়ে গেলো তখন অর্নীল ল্যাপটপ অফ করে মেইন দরজা বন্ধ করে দিল। বেডরুমে এসে দরজা লক করলো। মিমের তো ভয়ে গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। অর্নীলকে মিম যতটা ভালবাসে ঠিক ততটাই ভয় পায়।
চলবে
#বিদ্রঃ আমার আগের #পালিয়ে_বিয়ে concept টার সাথে এই concept এর কোনো মিল নেই। আশা করি এইটা ও আপনাদের অনেক বেশি ভাল লাগবে।
#পালিয়ে_বিয়ে
#Concept_2
#Part_2
#Written_By_Nilima_Zabin_Tanmona
অর্নীল যখন বাসর ঘরে ঢুকলো তখন মিম চুপচাপ বসেছিল। মিমের গলা শুকিয়ে গেছে ভয়ে। অর্নীল ও অনেক রেগে আছে মিমের প্রতি।
-তুমি শাড়ি পরতে জানো না এই কথাটা কি তুমি আমাকে আগে একবারো বলেছো? (মিমের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে অর্নীল)
-না বলিনি আর এই ছোট ব্যাপারটা নিয়ে আপনি এমন ভাবে কেন রেগে আছেন? (ভয়ে ভয়ে মিম)
-এইটা ছোট ব্যাপার?? How funny year!!! তোমার শরীরে একটা মশা বসলেও সেইটা আমি টের পাই। আর এই ব্যাপারটা আমি জানিনা??? (চিল্লিয়ে অর্নীল)
-আ… আপনি শান্ত হন! আমার ভুল হয়ে গেছে। তাও প্লিজ আজকের দিনে এইভাবে চেঁচামেচি কইরেন না। (মিম প্রায় কেঁদে দিয়ে)
মিমের কথা শুনে অর্নীল চুপ হয়ে গেলো আর সোফায় গিয়ে বসলো।
-স্যরি তো!! এইভাবে বসে থাকবেন? (অর্নীলের পায়ের কাছে বসে মিম) একবার তো বলেন নাই আমায় কেমন লাগছে শাড়ি পরে?
-বলার কিছু নাই।
-কেন? খুব বাজে কি লাগছে? (অসহায়ের মত তাঁকিয়ে মিম)
-থাপ্পর চিনো? তুমি নিজেকে বাজে বলার কে? (মিমকে ধমক দিয়ে অর্নীল)
মিম অর্নীলের ধমক শুনে উঠে গেলো। মিম বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো। মিম বারান্দায় দাঁড়িয়ে কান্না করে দিল নিঃশব্দে। কিছুক্ষণ পর অর্নীল বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো মিমের পাশাপাশি। মিমের হাতের উপর হাত রাখলো অর্নীল। মিম তাড়াহুরা করে চোখ মুছতে গেলো কিন্তু অর্নীল সেইটা স্পষ্ট দেখতে পেয়েছে অন্ধকারেও! অর্নীল মিমকে সাথে সাথে নিজের দিকে ঘোরায়। মিম অর্নীলের দিকে তাঁকায়না কারণ ও ধরা খেয়ে গেছে অর্নীলের কাছে। অর্নীল মিমকে কোলে উঠিয়ে নিলো, মিমকে বিছানায় বসালো।
-তোমার চোখে পানি কেন? মিম তোমার চোখে পানি কেন? আমি বকেছি বলে? (মিমের হাঁটুর সামনে বসে)
-আরে না। ওদের ছেড়ে এসেছি তো তাই!
-হয়ত তুমি অর্নীল চৌধুরীকে বোকা ভাবছো? আমি কি তোমায় চিনিনা? বল তো? কেন আমাকে মিথ্যে বলো?
-আপনি নিচে কেন বসেছেন? উঠেন!
মিম এই কথা বলার পর অর্নীল মিমের হাতে চুমু দিলো। মিম অর্নীলকে জড়িয়ে ধরলো। অর্নীলের অফ হোয়াইট শেরওয়ানিতে মিমের লিপস্টিক এর দাগ লেগে গেছে। অর্নীল সেইটা দেখে হেসে দিল।
-মিম তোমার লিপস্টিক এর রং কেমনে লাগলো আমার ড্রেস এ?
-স্যরি! স্যরি! আমি দেখিনি। (টিস্যু দিয়ে মুছতে মুছতে)
-তোমায় বলেছি মুছতে? (মিমের হাত ধরে ধাক্কা দিয়ে খাটে ফেললো অর্নীল) তোমার যা কিছু সব আমার স্মৃতি আর তুমি যদি ভুল করে হলেও এসব মোছার চেষ্টা করেছো তাহলে…….. (মিমের ঘাড়ে কিস করলো অর্নীল। মিমের শরীর থেকে সব গহনা খুলে ফেলল অর্নীল)
পরেরদিন সকালবেলা…….
-মিম? মিম? (বিছানাতে থেকেই অর্নীল মিমকে ডাকছে)
-আসছি! হুম বলেন? (হাত মুছতে মুছতে মিম)
-রান্নাঘরে কেন ছিলে তুমি? (বিছানা থেকে উঠে অর্নীল)
-তো খাবেন কি রান্না না করলে?
-কেন? রহিমা চাচা না আছে!
-উনি একা কি করবেন? আমায় রান্না করতে সাহায্য করছিলেন তিনি।
-অফিসে যাব। আমার ব্লেজার গুলো থেকে দেখো কোনটা পরব?
-আপনি আমার চয়েজে ড্রেস পরবেন? (অবাক হয়ে মিম)
-বেশি কথা না বলে যা বলেছি কর। আর ফোনটা দাও তো?
-এই নিন।
-আমার সামনে আসো।
-কেন?
-আসতে বলছি আসো।
-আসলাম।
মিম অর্নীলের সামনে আসার পর অর্নীল মিমকে কোলে নিয়ে ছবি তুলল।
-আপনি ছবি দিয়ে কি করবেন?
-দেখি কি করা যায়। ল্যাপটপ দাও।
-নিন। (ল্যাপটপ টা এগিয়ে দিয়ে)
অর্নীল ছবিটা শেয়ার করে ল্যাপটপ এ নিয়ে নিল। অর্নীলের আম্মুকে অর্নীল মেইল করলো ছবিটা সাথে ওর দি কেও। অর্নীলের দি ছবিটা পেয়ে অর্নীলকে কল করলো। অর্নীল ফোনটা রিসিভ করলো।
-হুম দি বল।
-মিম তোর সাথে এইভাবে? (অবাক হয়ে অনু)
-হাজবেন্ড এর কাছে তো বউকে এইভাবেই থাকা উচিৎ তাইনা দি?
-মানে?
-আমি আর মিম বিয়ে করেছি গত কালকে রাতে। আর আমি আমার কেনা বাড়িতেই আছি মিমকে নিয়ে। আম্মুকে বলিস তার এক কানাকড়ি লাগবেনা মিমের দেখা শোনার জন্য।
-ভাই আম্মুর সাথে তোর যা খুশি হয়েছে কিন্তু আমায় কেন জানালি না তুই? আমি কি দোষ করেছি?
-তোর দোষ ত্রুটি খোঁজার ইচ্ছা আমার নাই। কোম্পানি তো আমার নামে তবুও চিন্তা করিস না পুরো সম্পত্তির two-third তুই পাবি।
-ভাই প্লিজ আমায় ভুল বুঝিস না। ওইদিন ভুলটা আমারই ছিল।
-দি ওইটা ভুল না রীতিমত একটা ব্লান্ডার। তোদের জানানোর দরকার তাই জানালাম যে অর্নীল যা ভাবে ঠিক সেইটাই করে। বিয়ে তো আমি করেইছি তাও মিমকেই।
-ভাই প্লিজ বাসায় চলে আয়। আম্মু তোর সাথে কথা বলার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছে।
-অর্নীল আর চৌধুরী প্যালেসে পা রাখবেনা। বাই।
এই কথা বলে অর্নীল ফোন কেটে দিল।
-আপনি একমাত্র আমার জন্য কেন আপনাদের সম্পর্ক গুলো নষ্ট করছেন? আমি কিন্তু এসব সহ্য করতে পারব না। একা একা কতদিন এইভাবে নিজে নিজে সংসার করব? আমিও তো চাই আমার একটা সুন্দর পরিবার হোক। (মিম)
-সেই পরিবার আমি তোমায় দিব। আমাদের যখন সন্তান হবে তখন আর তোমার একা একা লাগবেনা। আর আমি হলে তোমার চলবে না?
-সেইটা কি বলেছি নাকি?
-তো কি? (মিমের ঠোঁটে চুমু দিয়ে অর্নীল)
চলবে
#পালিয়ে_বিয়ে
#Concept_2
#Part_3
#Written_By_Nilima_Zabin_Tanmona
অর্নীল এইভাবে মিমকে নাস্তানাবুদ করে ছাড়বে মিম ভাবেনি। কি আর করার! অর্নীলের বুদ্ধির কাছে মিম সবসময় হেরেছে আর আজ ও হারল!! দুইজন একসাথে গোসল করে বেরিয়ে এলো। মিম তো রাগে নাক মুখ ফুলিয়ে রেখেছে। অর্নীল দেখে হাল্কা হেসে দিল৷
-জান ও জান? (চোখ মেরে অর্নীল)
-😡😡😡 (মিম)
-রেগে যায়না জান। তুমি তো আমার লক্ষ্মী বউ বল।
-যদি আমার ঠান্ডা লেগছে তাহলে আপনার একদিন কি আমার যতদিন লাগে!
-তোমার বেশি হলে এ পুরো জীবনটাই লাগবে তবুও না তুমি আমায় কিছু বলতে পারবেনা।
-সেখানেই তো ফেসে গেছি। খাটাস একটা!!
– তুমি কি আবারো আমায় খাটাস বললা জান? (শুনেও না শুনার ভান করে অর্নীল)
-এখন কি নদীতে চুবাবেন?😡😡
-আগে চল ঘুরে আসি। এরপর দেখি কি করা যায়!
-কোথায় যাবেন?
-গেলেই দেখতে পারবে। রেডি হও। শাড়ি ছাড়া কিছু পরবেনা। আর শাড়ি থেকে শুরু করে চুল বাঁধা পর্যন্ত সব আমিই করে দিব। ড্রেসিংটেবিল এর সামনে বস আমি আসছি।
-কোথায় যাচ্ছেন?
-পাশের ঘরে কাবার্ড থেকে একটা শাড়ি নিয়ে আসি।
-যান। সব নিজেই ঠিক করে দিবে! আমার কি কোনো পছন্দ নেই নাকি! আসলেই খাটাস! (মনে মনে বলল মিম) যদিও ওনার আজ পর্যন্ত কোনো পছন্দ একটুও খারাপ হয়নি। (হেসে দিয়ে মিম)
-দাঁড়াও এখন।
-কেন?
-শাড়ি পরাবো।
-শেষ আমি!!
-শেষ এখনো হওনি তবে এখন হবা। (মিমকে টান দিয়ে নিজের কাছে এনে)
-দেখেন ফাইজলামি করবেনা না৷ স্টাইলিশ মার্কা দাড়িগুলো সুন্দরভাবে কেটে দিব নয়ত। (অর্নীলের দিকে তাঁকিয়ে মিম)
-O my god! আমার জানের এত সাহস হয়ে গেছে!! ভাবতে পারছিনা তো!
-সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হয়ে যাচ্ছে। যাবেন কখন? হে ভাল কথা??? 🤔
-কি?
-আপনি তো জীবনে শুনেননি যে শাড়ি কয়হাত হয় তাহলে আমায় শাড়ি পরাবেন কিভাবে? 🤔🤔
-এই প্রথম পরাবো। ওই যে বেডের উপর তাঁকিয়ে দেখো ল্যাপটপ অন করা। নেট থেকেই শিখব।
-দেখি কেমন পরাবেন।
-মে বি তোমার থেকে ভাল করেই পরাতে পারব। অন্তত ওড়নার মত প্যাঁচাবো না৷ 😏😏
-হহু দেখা যাবে।
অর্নীল ব্লু কালার একটা শাড়ি এনে গুগল থেকে দেখে দেখে মিমকে শাড়ি পরানোর চেষ্টা করছে। প্রথম বার পারেনি কিন্তু সেকেন্ড বার সুন্দর করেই শাড়ি পরিয়ে দিল মিমকে। মিম হাসতে হাসতে বলল
-যদি এখানে মিডিয়া থাকত না আজ আপনার প্রেস্টিজের ১৩ টা বেজে যেত।
-তোমার আর আমার মাঝে একটা মশা আসতে দেইনা আর আমি মিডিয়াকে নিয়ে আসব তাও এই অবস্থায়? আর হ্যাঁ অর্নীল চৌধুরী শুধুমাত্র মিমের জন্য যা খুশি করতে পারে। মিমের খুশিই অর্নীলের খুশি। Do you get it?
-সেইটা অনেক আগেই বুঝে নিয়েছি।
-চল এখন জুয়েলারি পরাবো।
-রাতে জুয়েলারিও পরতে হবে? (অসহায়ের মত তাঁকিয়ে মিম)
-অফকোর্স। তবে জাস্ট ইয়ার রিং আর পেন্ডেন্ট।
-হিহিহি থ্যাংক ইউ।
অর্নীল মিমকে রেডি করে দিয়ে নিজে নীল শার্ট পরে বেরিয়ে গেল। মিম বলেছিল গাড়ি নিতে না কিন্তু অর্নীলের কথা শুনে মিম আর কিছু বলতে পারলো না। মিম যখন অর্নীলকে বলেছিল
-প্লিজ আজকে অন্তত রিক্সায় যাই।
-না। আমার গাড়িতেই যাব।
-আমার কথা তো শুনেন।
-তুমি শোনো আমার কথা এখন যদি তোমায় রিক্সায় নিয়ে যাই তাহলে রাস্তার সবাই তোমায় দেখবে। তখন আমার রিয়েকশন টা কি হবে নিশ্চই আন্দাজ করতে পারছো?
-হুম। চলুন।
অর্নীল গাড়ি চালাচ্ছে আর মিম ভাবছে এই পাগলটা এত ভাল কেন বাসে আমায়? একটা ছেলে কিভাবে পারে এতসব ছেড়ে আসতে শুধু ভালবাসার জন্য??
-আমি জানি তুমি কি ভাবছো? (মিমের দিকে তাঁকিয়ে অর্নীল)
-কি ভাবছি?
-ভাবছো যে আমি তোমায় এত ভালবাসি কেন? কি তাই তো?
-আজব তো? আপনি কি সাইকোলজিস্ট নাকি? (অবাক হয়ে মিম)
-সবার ক্ষেত্রে না জাস্ট তোমার জন্যই আমার সিক্স সেন্স এত তীব্র।
-আসলেই এত ভালবাসেন কেন আমায়?
-যেদিন আমি নিজে এর উত্তর পাব সেদিন তোমায় জানিয়ে দিব। নামো এসে গেছি।
-এইটা কোথায়?
-নেমে দেখো।
মিম গাড়ি থেকে নেমেই হা হয়ে গেল। এই প্রথম ওর রাতে ঘুরতে বের হওয়া। বিয়ের আগে অর্নীল মিমকে বলত যে বিয়ের পরে মিমকে নিয়ে রাত জাগা পাখি হবে অর্নীল।
-জায়গাটা পছন্দ হয়েছে? (মিমের কাঁধে হাত রেখে অর্নীল)
-ভীষণ। রাতে এত সুন্দর লাগে লেকের ধার??
-ইয়েস ডিয়ার। আমি বিয়ের আগে এখানে বসেই তোমার সাথে বেশিরভাগ সময় ফোনে কথা বলতাম। অদ্ভূত সুন্দর লাগে রাতে এখানে। তুমি চাইলে আমি তোমার খুশিতে আরো কিছু এড করতে পারি।
-কি সেইটা?
-তোমার ফেভারিট ফুচকা।
-Whatttttt? আপনি আমায় ফুচকা খেতে দিবেন? আজকে আমি ফুচকা খাব? (বেশি এক্সাইটেড হয়ে মিম)
-হুম জাস্ট আজকেই কিন্তু।
-ওক্কে ডান।
-এর বদলে আমি কি পাব?
-আপনি আবার জিজ্ঞেস করেন কেন? আপনি নিজে যা চান সেইটা তো জোর করেই নেন😏😏
-তোমার কথা শুনে কেন যেন শরীরের টেম্পারেচার বেড়ে গেল!
-এই আমি কিন্তু কিছু করিনি। স্যরি। (কানে ধরে মিম)
-What nonsense! কানে ধরছো কেন?
-আপনার সাথে ঘুরতে এসেও মজা নেই। সেই ঝগড়া আপনি করবেন ই। দেখেন আমি আপনাকে তেলাপোকার মত ভয় পাই। আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে ভয়ংকর প্রানী হচ্ছে তেলাপোকা। তাই কোনো অন্যায় করতে চাইনা।
-আমি তেলাপোকা?😡😡😡😡
-এই রে! নিজের মাথায় নিজেই বাঁশ মারলাম! (মনে মনে বলল মিম) ককককই না তো! (তোঁতলাতে তোঁতলাতে মিম)
-আজকে বাসায় গিয়ে নেই😡😡😡। আমি তেলাপোকা নাকি বি(মৌমাছি) সেইটাই বোঝাবো।
-আজকে আর আমার ফুচকা খাওয়া হইছে!! কাকে যে বিয়ে করেছিলাম।😭😭😭😭😭
-বল যত ইচ্ছা বলে যাও। মুখ তো বন্ধ হবে বাসায় গেলে। চল হাত ধর।
-না।
-ধরবানা?😡😡
-ধরছি তো 😭😭😭
-গুড গার্ল। (মিমের মাথায় চুমু দিয়ে)
অর্নীল মিমের কোলে মাথা দিয়ে লেকের পাশে শুয়ে ছিল। আর মিম লেকের পানিতে নিজের পা ভেজাচ্ছিল।
-পায়ে যদি কোনো কিছুর দাগ পাই তো বুঝবা৷(অর্নীল মিমকে বলল)
-কেন?
-বারবার না করেছিলাম পানিতে পা না দিতে।
-আপনি যে ময়লায় শুয়ে আছেন তার বেলা??
-তুমি শুধু পাগল ই না। সাথে অন্ধ ও।
-কেন?
-তোমার শাড়ির আচল আমার পিঠের নিচে সেইটা কি দেখো নাই?
-এই কারনেই তো বলি বারবার টান লাগে কেন? আপনি শুধু খাটাস না সাথে সেল…….. (মিম মুখ চেপে ধরলো কথা শেষ হওয়ার আগেই)
-হ্যা আমি সেলফিশ। আরো কত কিছু!! সেইগুলো বাসায় গিয়ে নোট করব। এখানে কিছু করা যাবেনা।
-আপনি কি আমার বর নাকি আমায় ভয় দেখানোর যন্ত্র??😑😑
-নিউ এড হল আমি ভয় দেখানোর মেশিন। আর কিছু বাকি আছে জান? (মিমের দিকে তাঁকিয়ে অর্নীল)
-আল্লাহ! আমার জন্য তুমি শান্তি কি রাখো নাই? আপনি জান বললেই আমার ভয় লাগে। কারণ জানটা রহস্যজনক।
-অলরেডি ১১ টা বেজে গেছে।
-আমার ফুচকাও চলে গেছে। 😭😭
-এত easy?
-মানে?
-সারারাত থাকতে বলেছি এখানে ফুচকাওয়ালা কে। আজকে দুপুরে advance ও করেছি। উঠো এখন। বাসায় ফিরতে হবে।
-চলেন। (মিম দ্রুত উঠে গেল)
মিমের পা ভেজা তাই তাড়াহুড়া করে দাঁড়াতে গিয়ে শাড়ির কোণায় পা লেগে পিছলিয়ে যায়। মাটিতে পরার আগেই অর্নীল ধরে ফেলে।
-এখনো চলতেই শিখলে না। এখন যদি পরে যেতে তাহলে কি হত? (ধমক দিয়ে অর্নীল) হাজারবার না করেছি পানিতে পা দিতেনা তারপরেও দিয়েছো৷
-আচ্ছা ঠিক আছে। (মন খারাপ করে মিম গাড়িতে গিয়ে বসলো)
-বেরিয়ে এসো। নেক্সট টাইম বলব না।
-মিম বাধ্য হয়ে গাড়ি থেকে বেরিয়ে এলো তবে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে।
-আমার দিকে তাঁকাও।
-কি? (অর্নীলের দিকে তাঁকিয়ে)
-হা কর।
-পারব না। খাব না আমি।
-আর একবার বল খাবেনা😡
-এই নিন হা করলাম।
এরপর অর্নীল নিজে মিমকে ফুচকা খাইয়ে দিল। অর্নীল ফুচকা খায়না। তাই মিম আর সাধেনি। 2 টা ফুচকা খাওয়ার পরেই মিমের মন ভাল হয়ে গেল। মিম অর্নীলের হাত থেকে প্লেট টা নিয়ে খেতে শুরু করলো। আর ঝালে লাফাচ্ছে। অর্নীল হাসছে কারণ মিমের ফুচকা খাওয়ার সময় ঝাল লাগলেই লাফাতে শুরু করে এইটা নতুন কিছুনা। অর্নীল গাড়ি থেকে মিমকে পানি এনে দিল। এরপর ২ টা আইসক্রিম কিনলো। আইসক্রিম দুইটা মিমের হাতে দিয়ে রাত পৌণে ১২ টার সময় সেখান থেকে বেরিয়ে গেল। অর্নীল ড্রাইভ করছে আর মিম ২ টা আইসক্রিম দুই হাতে নিয়ে খাচ্ছে। অর্নীল দেখছে আর শিহরিত হচ্ছে। মিমের লিপস্টিক নষ্ট হয়নি কিন্তু পুরো মুখ আর ঠোঁট আইস্ক্রিম দিয়ে সাদা করে ফেলেছে। অর্নীল কোনো কথা বলল না। বাসায় আসতে আসতেও মিমের আইস্ক্রিম শেষ হয়নি। বাসার গেটের সামনে আসার পর দারোয়ান গেট খুলে দিল। অর্নীল গাড়ি থামিয়ে মিমকে বলল
-নামবেন না পিচ্ছি? 😉
-আপনি মনে হয় অনেক বড়? 😏
-৫ বছর ৪ মাস ৭ দিনের বড় আমি।
-হইছে! সিট বেল্ট খুলুন আমার।
অর্নীল মিমের সিট বেল্ট খুলে দিল। এরপর মিমকে নিয়ে ঘরে এলো। এখনো মিমের আইস্ক্রিম শেষ হয়নি।
-এখনো খাওয়া হয়নি?
-দেখছেন তো হয়নি।
-আচ্ছা শেষটা আমি করছি।
অর্নীল মিমের ঠোঁটে চুমু দিল আর মিমের হাতের আইস্ক্রিম নিয়ে বাকিটুকু নিজে খেলো।
-আজকে আপনার কি হল? আমার খাওয়া আইস্ক্রিম টা কেন আপনি খেলেন? অর্নীল চৌধুরী কারো এঁটো খাবার খায় জানতাম না।
-কারো টা খায়না সেইটা ঠিক তবে নিজের জিনিস তো খায়।
-ওইটা আমার আইস্ক্রিম ছিল আপনার না😣😣
-তুমি তো আমার।
-মানে?
-ঘুমাবো। তারাতারি 2 মিনিটে চেঞ্জ কর।#পালিয়ে_বিয়ে
#Concept_2
#Part_4
#Written_By_Nilima_Zabin_Tanmona
অর্নীল গার্ডদের সাথে কথা বলে ঘরে ঢুকলো। ঘরে ঢুকে অর্নীল দেখলো মিম ড্রেস চেঞ্জ না করেই চকলেট নিয়ে খেতে বসেছে। অর্নীল তো রেগে আগুন।
-এই মেয়ে?? এসব কি? বলে গেছিলাম না শাড়ি চেঞ্জ করতে? 😡
-আপনি কি আমায় একটু খেতেও দিবেন না?
-খাওয়াচ্ছি!!
এই বলে অর্নীল সব চকলেট উপরে তুলে দিল। আলমারির উপর সব চকলেট গিয়ে পরেছে।
-আমি বলেছিলাম না আমি ঘুমাব। আমার কথা শুনো নি কেন? (রেগে গিয়ে অর্নীল)
-তো আপনি ঘুমান। আমি কি করব?
-Youuuu!! তুমি জানো না আমি তোমাকে ছাড়া ঘুমাইনা? (মিমের চোখের দিকে তাঁকিয়ে)
-আজকে আমাকে ছাড়াই ঘুমাবেন। আমি পাশের ঘরে গেলাম। আপনার অত্যাচার আর সহ্য করা যাচ্ছে না৷ (একটা বালিশ হাতে নিয়ে মিম)
-আজকে তোমাকে চেঞ্জ করতে হবেনা। (মিমের হাত ধরে টান মেরে খাটে ফেলে দিল অর্নীল আর বালিশ ফ্লোরে পরে রইলো)
অর্নীল দরজা লাগিয়ে দিয়ে মিমের কাছে গেল শার্ট খুলতে খুলতে।
-দেখেন এইভাবে সামনে আসবেন না। দূরে যান। (ভয় পেয়ে মিম)
-কে দূরে যাবে? (মিমের হাত ধরে)
-আপনি আজকে আমায় অনেক বকেছেন। আমি ঘুমাবো না আজকে আপনার সাথে।
-শুধু কি ঘুম? আরো কত কিছু হবে!!
-আমি চলে যাচ্ছি। আটকাবেন না। (অর্নীলের হাত ছাড়িয়ে উঠে গেল মিম)
অর্নীল মিমের শাড়ির আচল ধরে টান দিল। সেইফটিপিন খুলে শাড়ি ছিঁড়ে মিম অর্নীলের উপর এসে পরলো। মিমের চুল ও সব খুলে গেছে।
-আয়ায়ায়ায়ায়া!
-আমার উপরেই পরেছো। ব্যাথা পাওয়ার চান্স নেই।
-আপনি জাস্ট 😤😤
-কি জাস্ট? (মিমের চুলের ঘ্রাণ নিতে নিতে) কখনো আমাকে ছাড়া ঘুমানোর কথা কল্পনাও করো না। মনে রেখো তুমি আমার প্রয়োজন না অভ্যাস। অভ্যাস আর অক্সিজেন এই দুইটা ছাড়া মানুষ বাঁচেনা। তুমি যদি কোনোদিন রাগ করে আমার উপর কথা না ও বলো তবুও বিছানা ছেড়ে যেয়ো না।
-আপনার এই ইমোশন মার্কা কথাগুলো শুনলেই আমার সব রাগ গলে যায়😏 (অর্নীলের উপর শুয়ে মিম)
-এইটা ইমোশন না রে পিচ্ছি। এইটাই বাস্তব। (মিমের মাথায় চুমু দিয়ে) তোমায় তো একটা কথা বলতে ভুলে গেছি!
-কি??
-কালকে অরুনিমা ওর মিটিং এ আমাকে এটেন্ড করতে বলেছে।
-আপনি কি বলেছেন?
-প্রথমে না বলেছি পরে ও বলল আমার কোম্পানি থেকে আমি ছাড়া অন্য কেউ যেতে পারবেনা।
– হ্যা তো যান। পুরনো প্রেমিকার সাথে মিটিং আর স্পেশাল ক্লাস দুটোই করে আসেন। (অর্নীলের উপর থেকে মিম উঠে গেল আর নিচে গিয়ে দাঁড়ালো)
-থাপ্পর চিনো? ও আমার প্রেমিকা ছিল? অর্নীলের চৌধুরীর প্রথমে তুমি ছিলে আর শেষেও তুমিই থাকবে। (অর্নীল বিছানা থেকে উঠে মিমের পাশে গেল)
-ছাড়ুন।
-আরে মিম এইটা বিজনেস। এখন ও টপ ওয়ান বিজনেস ম্যান আর আমি সেকেন্ডে। ওর মিটিং এ আমায় এটেন্ড করতে হবে। অন্তত বিজনেস এর স্বার্থে। তুমি রাগ করছো কেন?
-ছাড়ুন আমি ঘুমাবো। (মিম চুপ করে গিয়ে খাটে শুয়ে পরলো)
-এখানে রাগ করার কোনো মানে হয় মিম? তুমি জানো না আমি কেমন?
-জানি বলেই রাগ করেছি। ওই বেয়াদব মেয়েটা তো এখনো আপনাকে পাওয়ার আশা রাখছে আর আপনি তারই অফিসে যাচ্ছেন? (অর্নীলের দিকে তাঁকিয়ে মিম)
-কালকে তোমায় নিয়ে যাব অফিসে৷ আর অরুনিমা আসছে আমার অফিসে। আমি যাচ্ছিনা। মিটিং টাইম তুমি আমার সাথেই থেকো। এখন happy? (মিমের গালে হাত দিয়ে)
-😏😏😏😏
-তোমায় খুশি করার জন্য আর তোমায় খুশি রাখার জন্য আমি নিজেকেও শেষ করে দিতে পারি। আর এসব আনকাউন্টেবল জিনিস।
-😏😏😏😏
-আবার ভেঙায়? এখন যদি আমি রেগে যাই তাহলে কি হবে ভাবতে পারছো?
-না না রাগতে হবেনা। টি শার্ট পরে আসুন৷ খালি গায়ে আপনাকে একদম মানায় না।
-আসছি।
এরপর দুইজন গল্প করতে ঘুমিয়ে গেল। সকাল ৬ টায় মিম ঘুম থেকে উঠলো। অর্নীলের জন্য ব্লেজার আর শার্ট রেডি করলো। নিজের জন্য কিছু বের করলো না কারণ ওই কাজটা অর্নীলের। মিমের চুলের ক্লিপটা পর্যন্ত অর্নীলের পছন্দে পরতে হয়!! মিম গোসল করে এসে অর্নীলকে ডেকে তুলল।
-আপনি কি উঠবেন না? সকাল ৭ টা বাজে।
-কিহহ? (লাফ দিয়ে উঠে অর্নীল)
-উঠলেন কেন? ঘুমান। (অর্নীলকে ধাক্কা দিয়ে আবার শুইয়ে দিল মিম)
-হে ওয়ান সেকেন্ড!! নাকফুল চেঞ্জ করেছো তুমি?? (মিমের নাকের দিকে তাঁকিয়ে অর্নীল)
-কই না তো! সেই সাহস কি আমার আছে?😑
-তাহলে এইটা এত শাইন করছে কেন?
-ডায়মন্ড তো তাই আর সূর্যের আলো সরাসরি মুখে পরছে।
-আজকে এইটা চেঞ্জ করে ওইদিন যেইটা এনে দিলাম সেইটা পরো।
-আচ্ছা। আর আপনি রেডি না হলে যে আমি রেডি হতে পারছিনা।
-আসছি এখনি।
অর্নীল ওয়াশরুমে যাওয়ার পর মিম শায়লাকে ডাকলো।
-শায়লা!
-ইয়েস ম্যাম।
-স্যারের জন্য কোল্ড কফি চিনি ছাড়া আর আমার জন্য এক গ্লাস জুস দিয়ে যাও।
-ওকে ম্যাম। এখনি নিয়ে আসছি।
-আর শোনো সুপর্না কে বলো যে ড্রইংরুমে সোফার উপর স্যারের ড্রেসগুলো রেখে এসেছি। তারাতারি যেন আয়রন করে দেয়।
-এক্ষুণি বলছি ম্যাম।
মিম চুল মুছতে মুছতে গুনগুন করে গান গাইছিল। এর মাঝেই অর্নীল টাওয়েল পরে ওয়াশরুম থেকে বের হলো। মিমকে গান গাইতে শুনে অর্নীল দাঁড়িয়ে গেল। কতক্ষন পর মিমের সামনে গিয়ে পেছন থেকে মিমকে জড়িয়ে ধরে টেবিল এর উপর থেকে চিরুনি নিল।
-এইটা আবার কেমন স্টাইল? (মিম)
-কিসের স্টাইল?
-চিরুনি নিবেন ঠিক আছে তাহলে আমার পেছন থেকে কেন?
-মন চাইলো। By the way আমার ড্রেস কোথায়?
-আয়রন করতে দিয়েছি। বসেন নিয়ে আসছি৷ টি টেবিলের উপর কফি রাখা আছে। খেয়ে নিন। এরপর রেডি হয়ে ব্রেকফাস্ট করবেন।
-তারাতারি এসো। এভাবে বেশিক্ষণ থাকা পসিবল না।
-আসছি।
মিম নিচে গিয়ে সুপর্নার কাছ থেকে ড্রেস নিয়ে আসলো।
-কালো টা পরবো? (নাক ছিটকিয়ে অর্নীল)
-হ্যা তা পরবেন কেন? আমি যে বলেছি পড়তে। রাখুন লাগবেনা পরা। 😏😏
-দিন দিন তুমি অবাধ্য হয়ে যাচ্ছো। কবে যেন তোমার কপালে শনি আসে।
-এক শনি থাকতে আর শনি লাগে?
-🙄🙄🙄🙄🙄🙄 শনিটা কি আমি?
-না আমি😡😡😡
-সকালে কি কিছু খেয়েছো?
-হ্যা। জুস খেয়েছি। এই আপনার লজ্জা করেনা আমার সামনে চেঞ্জ করতে?😡😡
-আমি কি তোমার মত মেয়ে নাকি আর তুমি কি আউটসাইডার নাকি? (শার্ট পরতে পরতে)
-টাই বাধতে পারিনা আমি। যদি বলেছেন বেঁধে দিতে তাহলে ফাসি দিয়ে দিব হুম।
-আসো৷
-কোথায়?
-আমায় desperate করতে না চাইল সামনে আসো।
-আসছি। কি? (অর্নীলের সামনে এসে মিম)
-ধরো৷। (মিমের হাতে টাই দিয়ে)
-আগেই তো বলেছি পারিনা।
-সেইটা আমি জানি। তাই তো শিখাবো।
এরপর অর্নীল মিমের হাত ধরে টাই পরলো। ছোট শিশুকে যেভাবে হাত ধরে অক্ষর শেখানো হয়। মিম অর্নীলের এতটা কাছে যে অর্নীলের নিঃশ্বাস মিমের গলার নিচে পরছে। টাই বাঁধা শেষে অর্নীল মিমকে রেডি করিয়ে দিল। শায়লাকে দিয়ে মিমের চুল বাঁধালো। এরপর দুইজন ব্রেকফাস্ট করতে বসলো।
-মোবাইল নিয়েছেন?
-হুম।
-পেপারস?
-নিয়েছি। গার্ড গাড়িতে রেখে আসছে। (মিমকে খাইয়ে দিয়ে)
– মানুষ হবেন কবে?
-অমানুষ ছিলাম কবে?
-নিজে কিছুই খাচ্ছেনা সব আমায় খাওয়াচ্ছে!!
এরই মাঝে অর্নীলের ফোন বাজলো। অর্নীল এক হাতে ফো্নটা রিসিভ করলো।
-হ্যা বলো।
-স্যার কোথায় আপনি? (অর্নীলের পিএ)
-বের হব।
-আচ্ছা স্যার আসুন।
-কনফারেন্স রুমে আমার চেয়ারের পাশে যেন আরেকটা চেয়ার থাকে।
-আচ্ছা স্যার কিন্তু
-আসলেই বুঝতে পারবে কিন্তু কি। রাখছি।
অর্নীল ফোন কেটে দিয়ে নিজে খেলো। একটু খেয়েই বেরিয়ে গেল মিমকে নিয়ে। ৯ টায় মিটিং। এখন বাজে ৮ঃ৩৪।
-আপনাকে কালো ড্রেসটা পরানো উচিৎ হয়নি।
-কেন? (ড্রাইভিং করতে করতে অর্নীল)
-ভেবেছিলাম এইটা পরলে একটু হলেও অসুন্দর লাগবে। বাট এইটাতে আরো হ্যান্ডসাম লাগছে😣😣
-এতে কি তোমার কষ্ট হচ্ছে?😉😉
-আপনাকে ওই বদ মেয়েটা দেখবে। ক্রাশ তো খাবেই।
-নতুন করে আর কি ক্রাশ খাবে। ৪ বছর ধরে তো খেয়েই আসছে।
-সানগ্লাস খুলেন। অন্ধ অন্ধ লাগছে।
-যা বলার সরাসরি বললেই তো হয়।
-কি বলব সরাসরি?
-আমায় ড্যাশিং লাগছে।
-বেশি বুঝে। (আস্তে করে বলল মিম)
-কিছু বললা? আমি জানি আমি ভাল। সেইটা তুমি আস্তে কেন বললা?
-হ্যা আপনি অনেক ভাল। আপনার মত ভাল দুইটা হয়না😡😡😡
-I know dear. এখন থামো ড্রাইভিং করতে দাও।
এরপর মিম ফোনে গেমস খেলতে শুরু করলো। কিছুক্ষণ পর অফিসে পৌঁছে গেল অর্নীল মিমকে নিয়ে।
অর্নীলের সাথে মিমকে দেখে সব স্টাফরা হা করে তাঁকিয়ে ছিল মিমের দিকে। অর্নীল সবার দিকে খুব ক্ষ্রীপ্ত দৃষ্টিতে তাঁকালো। সবাই মাথা নিচু করে ফেলল। অর্নীল মিমের হাত ধরে কনফারেন্স রুমে ঢুকলো। সেখানে অরুনিমা আর ওর PA ছিল। অর্নীলের সাথে মিমকে দেখে অরুনিমা বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেল। মিমের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাঁকালো অরুনিমা।
– এভাবে কেন তাঁকাচ্ছেন আমার ওয়াইফের দিকে? মিম আমার চেয়ারে বস। (অর্নীল মিমকে অর্নীলের চেয়ারে হাত ধরে বসালো)
-মিম অরুনিমার মুখ দেখছে আর হাসছে।
-আমাদের important meeting এইটা। আর তুমি তোমার বউকে নিয়ে এসেছো? 😡😡😡
-সেইটা আমার মেটার। আর Don’t say “তুমি”। I am just your business partner. So say Mr. Chowdhury. Do you get it? NOW sit down.
-তুমি কিন্তু আমাকে অপমান করছো অর্নীল😡
-যদি অপমান ভাবেন তো অপমান। কনফারেন্স শুরু করা যাক।
চলবে