পালিয়ে বিয়ে – পর্ব ২১-২৩

0
201

#পালিয়ে_বিয়ে
#Concept_2
#Part_21
#Written_By_Nilima_Zabin_Tanmona

অর্নীল আর আবির ফাইজলামি করছে। আর অনু মিমকে নিয়ে সবার সাথে গল্প করছে। অর্নীল আবিরের সাথে গল্প করছে আর আঁড়চোখে মিমকে দেখছে। অর্নীল মনে মনে বলছে

-এই মেয়েটার প্রেমে আর কতবার পড়ব খোদা জানে!!

মিম অর্নীলের দিকে তাকাচ্ছেনা এতে অর্নীল একটু হতাশ হলো কিন্তু মুখে মুচকি হাসি ফুটেই রইলো! অর্নীলের আম্মু এনাউন্সমেন্ট করলো

-Ladies & Gentleman সবাইকে আসসালামু আলাইকুম,, আদাব এবং নমস্কার!! আপনারা সবাই জানেন আজ আমার একমাত্র ছেলে,, চৌধুরী গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রির মহাপরিচালক অর্নীল চৌধুরীর মেহেন্দি উৎসব। আমি অনেক কৃতজ্ঞ যে আপনারা এখানে আজ উপস্থিত হয়েছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা অনুষ্ঠান শুরু করছি। তার আগে বলতে চাই আসলে এইটা আমার ইচ্ছা যে অর্নীল মিমকে কোলে নিয়ে যাক স্টেইজে। পারবেনা আব্বু?? (অর্নীলের দিকে তাঁকিয়ে মিসেস চৌধুরী)
-অর্নীল মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিল।

এরপর অর্নীল সবার সামনে মিমকে কোলে তুলে নিল। সবাই খুব জোরে হাত তালি দিল। আবির অনুকে ধাক্কা দিয়ে বলছে

-চলো আমিও তোমায় নিয়ে যাচ্ছি 😁😁
-মাইর দিবো🙄🙄
-সুন্দর লাগছে কিন্তু। প্রেমে পরে গেছি আবারো😘😘😘
-ঢং কম করো। চলো😏😏

এরপর অনু আবিরকে নিয়ে স্টেইজে যায়। অর্নীল মিমকে স্টেইজে বসিয়ে উঠতে যাবে তখন মিমের ওড়নার সাথে অর্নীলের ব্লেজারের ব্রোজে টান লেগে অর্নীল মিমের কপালের সাথে বারি খায়। মিম সাথে সাথে বলে

-আউচ্চচ্চচ্চ!!😫😫
-এই মেয়ে ওড়না সামলাতে পারো না? (আস্তে করে বলল অর্নীল)
-ইশশ কি ব্যথাটা পেলাম। (কপালে হাত দিয়ে মিম)
-আসো চুমু দিয়ে দেই😉😉😉
-😠😠😠😠😠

এরপর অর্নীল স্টেইজের সামনে থেকে চলে এলো।

-স্যার?😁😁😁😁(হেসে হেসে শৈলি)
-কি? (অর্নীল)
-ধাক্কাটা শ্যুট করে নিয়েছি।🤣🤣
-Whatt? (শৈলির দিকে তাঁকিয়ে অর্নীল)
-প্লিজ স্যার রেগে যাবেন না।
-ক্যামেরা টা দাও (বাঁ হাত বাড়িয়ে অর্নীল)
-এই নিন স্যার।

অর্নীল ছবিটা দেখছে আর মুখে আঙুল দিয়ে হাসছে।

-What’s app করে দিও। (ক্যামেরাটা শৈলির হাতে দিয়ে অর্নীল)
-ওকে স্যার।

মিম হাতে মেহেন্দি লাগাচ্ছে আর চুলগুলো সরানোর চেষ্টা করছে। অর্নীল এগুলো দেখে হাসছে।

-হাসছো কেন? (আবির)
-ও কি করছে দেখো😂😂😂
-😂😂😂😂 বেচারী সরাতে পারছেনা। তুমি আছো কি করতে? যাও চুল সরিয়ে দিয়ে এসো😉😉
-নেভার। 😏😏😏

অর্নীল আগেই বলে দিয়েছে ও হাতে মেহেদী পরবেনা। মিম মেহেদি পরার পর অর্নীলের সাথে ফটো শ্যুট করলো। ফটো শ্যুট শেষে অর্নীল মিমকে জিজ্ঞেস করলো

-তুমি আমার সাথে আজ কথা বল নি কেন?
-আপনি বলেছিলেন? 😏
-What the!!! আমি বলব না বলে তুমি বলবানা?
-জ্বি না।

ওরা কথা বলতে বলতেই অর্নীলের আম্মু সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললেন

-আপনাদের হয়ত জানা নেই অর্নীল চৌধুরী শুধু বিজনেস নয় গানটাও ভালই জানে। ১৭ বছর ধরে গান শুনিনি অর্নীলের। আব্বু আজ কিন্তু গাইতেই হবে🤗🤗
-😱😱😱😱😱😱(মিম পুরোপুরি অবাক সাথে সব গেস্ট)
-আম্মু কতদিন গাইনা এখন কি করে গাইবো? (আম্মুর সাথে কথা বলছে অর্নীল)
-কোনো এক্সকিউজ নয় ভাই গাইতে হবে মানে হবেই। (অনু)
-অর্নীল তোমার পায়ের একটু ধুলো দাও ভাই! আর কি কি গুন আছে তোমার😯😯 (আবির)
-মজা নিচ্ছে সব😑😑😑😑(অর্নীল) আচ্ছা গাইছি। সবার সামনে এখন আমায় হাসির পাত্র বানাবে!😪😪
-ইশ কি ঢং (মনে মনে মিম)

“তোমাকে ছেড়ে আমি
কি নিয়ে থাকব?
ভালবেসে যাব ও গো
যতদিন বাঁচব…….. ” (পুরা গান আমি নিজেই পারিনা😁😁😁😁)

গান গাওয়া শেষে সবার রিয়েকশন দেখে অর্নীল ভীষণ হেজিটেট ফিল করছে। সবাই যখন চিল্লিয়ে once more once more করছিলো তখন অর্নীল একটু স্বস্তি পেলো। মিম তো জাস্ট হা হয়ে গেছে।

-শালাবাবু কিচ্ছু বলব না🙊🙊 (আবির)
-একটু বেশিই হয়ে যাচ্ছেনা🙄🙄(অর্নীল)
-এত্ত সুন্দর গান গাইতে পারো তুমি? 😱😱😱

অর্নীল আর আবির কথা বলতে বলতে একটা মেয়ে এসে অর্নীলকে বলে

-আই লাভ ইউ জান
-What? 😑
-সত্যি বলছি তুমি এত্ত রোমান্টিক আর এত্ত হ্যান্ডসাম কি বলব। আর ভয় নেই আমি মেরিড।
-আজকাল মেরিডদের থেকেও আমায় আই লাভ ইউ শুনতে হয়😑😑 ( অর্নীল)
-😂🤣😂🤣😂🤣 (আবির আর অনু)

অনুষ্ঠান শেষে অর্নীল আবিরকে ওর আম্মুর সাথে পরিচয় করিয়ে দিল

-আম্মু এইটা হচ্ছে আবির দা আর তোমার মেয়ের হবু স্বামী
-কিহ? (চশমা খুলে অর্নীলের আম্মু)
-ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমি পছন্দ করেছি দা কে আর তোমার আপত্তি করার কিছু নেই এখানে। দি অনেক সুখে থাকবে। খুব শীঘ্রই দি এর বিয়ে হবে।
-বাহ আমাকে না জানিয়েই ভাই বোন বিয়ে করে ফেলছিস। ভালই তো🤨🤨
-আম্মু তুমি ভুল বুঝছো। ভুল বুঝো না। আবির দার সবকিছুই আমি জানি। আবির দা এর কাছে দি অনেক খুশি থাকবে। আশা করি তুমি আর দ্বিমত করবেনা।
-তোদের সুখ ই আমার সুখ। ছেলে ভাল হলে আমার সমস্যা নেই।

এই কথা বলে অর্নীলের আম্মু চলে যায়। অর্নীল আবিরকে বিদায় দিয়ে রাত দেড়টায় ঘরে আসে। এসে দেখে মিম গহনা খুলছে আর হাতের মেহেদী শুকিয়ে গেছে। অর্নীল ওর ব্লেজারটা খুলে সোফার উপর রাখলো। টায়ার্ড হয়ে অর্নীল সোফায় গা এলিয়ে বসে পরলো। মিম ল্যাহেঙ্গার হুক খোলার ট্রাই করছে বারবার কিন্তু পারছেনা।

-একটু শুনবেন?
-বলো
-জামার হুকটা খুলে দিন। পারছিনা

অর্নীল জামার হুকটা খুলে দিয়ে টাওয়েল নিয়ে ওয়াশরুমে গেলো। মিম ড্রেস চেঞ্জ করে শুয়ে পরলো। টায়ার্ড থাকায় শোয়ার সাথে সাথেই ঘুমিয়ে গেল।

অর্নীল চুল মুছতে মুছতে ঘরে এলো। মিমকে ঘুমাতে দেখে মনে মনে বলল

-ফ্রেশ ও হয়নি আর ঘুমিয়ে গেছে!! ঘুম আসাচ্ছি😠😠😠

এরপর অর্নীল মিমকে কোলে নিল ঘুমন্ত অবস্থায়। মিম টের ও পেলো না। মিমকে নিয়ে রান্নাঘরে ডিপ ফ্রিজে রেখে দেয় অর্নীল। কিছুক্ষন পর মিম জেগে দেখে ও ফ্রিজের মধ্যে আর উপরে তাকিয়ে দেখে অর্নীল দুইহাত ভাঁজ করে দাঁড়িয়ে আছে। মিম লাফ দিয়ে বেরিয়ে যায়।

চলবে

Next part will be more romantic😍😘😍🙈🙈#পালিয়ে_বিয়ে
#Concept_2
#Part_22
#Written_By_Nilima_Zabin_Tanmona

মিম ফ্রিজ থেকে বেরিয়ে এসে চুলগুলো ঠিক করে অর্নীলকে জিজ্ঞেস করলো

-আপনি কি পেয়েছেন বলুন তো? যখন ইচ্ছে হবে পানি ভর্তি বাথ টাবে রেখে আসবেন আবার যখন ইচ্ছা হবে ফ্রিজে রেখে দেবেন? (ঝাড়ি দিয়ে মিম)
-যখন তখন ঘুমালে এখন থেকে এমনি হবে।
-আমি কি ঘুমাতেও পারবো না? রাত বাজে প্রায় দুইটা আর আপনি এমন করছেন আর বলছেন যখন তখন ঘুমাচ্ছি?
-বেশি কথা

এই কথা বলে মুখ বাঁকিয়ে অর্নীল উপরে চলে গেল। মিম আর উপরে না গিয়ে ড্রইংরুমের সোফার উপর শুয়ে পরলো।

-ঘরে গিয়ে আর লাভ কি? উনি তো আর খাটে ঘুমাবেন না আর আমাকেও লাগবেনা ওনার। আমি বরং এখানেই ঘুমায়।

এরপর মিম সোফায় ঘুমিয়ে গেলো। অর্নীল এসে দেখে মিম সোফায় ঘুমিয়ে গেছে। অর্নীল এক ভ্রু উচু করে এরপর সেখান থেকে গিয়ে খাটে ঘুমালো। কিন্তু ঘুম আর আসছেনা। অর্নীল অপেক্ষায় আছে সেই বিশেষ দিনের। কিন্তু মিমকে সেইটা বুঝতে দিচ্ছেনা। খাটের এপাশ ওপাশ করে অর্নীল রাতটা কাটিয়ে দিল। পরেরদিন সকালবেলা অর্নীল রেডি হয়ে মিমকে না জানিয়েই অফিসে চলে যায় আর বাসায় চলছে বিয়ের আয়োজন। ঘর ভর্তি গেস্ট কিন্তু মিম কিছুতেই আনন্দ খুঁজে পাচ্ছেনা। সারাক্ষণ ই মনমরা হয়ে বসে থাকে। অর্নীল সেইদিন অনেক রাত করে অফিস থেকে ফিরলো। রাত 12 টা বেজে গেছে অর্নীলের বাসায় আসতে আসতে। ঘড়ির হুক খুলতে খুলতে অর্নীল ঘরে ঢুকলো। বিছানায় চোখ যেতেই অর্নীল থেমে গেল। মিম কাঁদছে!!!!! মিমকে কাঁদতে দেখে অর্নীলের বুকটা ধুক করে উঠলো তবুও অর্নীল কিছু না বলেই আস্তে করে টি শার্ট নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেস্টরুমে চলে গেল ঘুমাতে। মিম আঁড়চোখে শুধু একবার অর্নীলকে দেখলো।

ওই রাতটাও কেউ ঘুমায়নি। দুইজনেই খাটের এপাশ আর ওপাশ করে সারাটারাত নির্ঘুম কাটিয়ে দিল। সকালবেলা অর্নীল ঘুম থেকে উঠে ফোন হাতে নিয়ে দেখে মিমের এসএমএস!!

-Ami ki khub beshi onnay kore felesi? Kn amk tile tile shesh kore dissen?? (আমি কি খুব বেশি অন্যায় করে ফেলেছি? কেন আমাকে তিলে তিলে শেষ করে দিচ্ছেন?)

অর্নীল এসএমএস টা সিন করে রেখে দিল কিন্তু কোনো রিপ্লাই করলো না। এরপর অর্নীল মনে মনে বলল

-শুধুমাত্র আজকের এই দিনটাই। এরপর আর তোমায় কষ্ট করতে হবেনা জান।

অর্নীল ঘুম থেকে উঠে নিচে গেলো। গিয়ে দেখলো পুরো বাড়ি ফুল দিয়ে সাজাচ্ছে আর স্টেইজটাও নতুন করে বানাচ্ছে। আজকে মিম আর অর্নীলের বিয়ে তবে সেইটা পুনরায় বিয়ে। মিমকে চারদিকে দেখতে না পেয়ে অর্নীল নিজেদের বেডরুমে যায় আর গিয়ে দেখে মিম ঘর গুছাচ্ছে। একটু উঁকি মেরেই অর্নীল নিচে যায় আর ব্রেকফাস্ট করে বাড়ির কাজকর্ম দেখছে। ব্রেকফাস্ট শেষে মিম গোসল করে বিয়ের শাড়িটা নিয়ে বসে যায় রেডি হতে। আর্টিস্ট রা খুব সুন্দর করে মিমকে রেডি করে দেয়। মিমকে যখন শাড়ি পরাবে তখন অর্নীল ওর শেরওয়ানি নিতে দরজা নক করে।

-একটু পরে আসুন প্লিজ (মেয়েরা)
-আমি অর্নীল (রেগে গিয়ে অর্নীল)
-জ জ জ্বি স্যার এক্ষুণি খুলছি। (ভয় পেয়ে একটা মেয়ে)

এরপর দরজা খুলে অর্নীল সোজা কাবার্ড এর দিকে গেল। মিম তখন শরীরে টাওয়েল জড়িয়ে ছিল। অর্নীল কাবার্ডে শেরওয়ানি খুঁজে না পেয়ে মিমকে জিজ্ঞেস করলো

-আমার শেরওয়ানি কোথায়? (মিমের দিকে না তাঁকিয়েই)
-দাঁড়ান আমি দিচ্ছি। (এগিয়ে গিয়ে মিম)

মেয়েরা সব ঘুরে দাঁড়ালো আর মিম এগিয়ে গিয়ে কাবার্ডে হাত দিল একটু নিচু হয়ে। নিচু হওয়ার সাথে সাথেই মিমের শরীর থেকে টাওয়েলটা পরে যায় আর মিম শুধু ব্লাউজ পড়া ছিল। টাওয়েল পরতে দেখে অর্নীল অন্যদিকে চোখ ঘুরিয়ে নিজের ভ্রু চুলকালো এক আঙুল দিয়ে। মিম সাথে সাথে টাওয়েলটা উঠিয়ে নিল আর অর্নীলকে শেরওয়ানিটা দিল। শেরওয়ানি নিয়ে অর্নীল বেরিয়ে যায় আর যাওয়ার আগে দরজা সুন্দর করে লাগিয়ে দিয়ে যায়। এরপর অর্নীল ফ্রেশ হয়ে রেডি হলো। আবির অর্নীল কে রেডি হতে হেল্প করলো৷ অর্নীলের মাথায় শুধু মিমের টাওয়েল পরে যাওয়ার দৃশ্যটাই ঘুরঘুর করছে।

দুপুরে সবাই লাঞ্চ করার পর মিমকে নিচে নামানো হলো। অর্নীল ই কোলে করে মিমকে নিচে নামিয়েছে। কোলে নেওয়ার সময় শুধু একবার মিমকে দেখেছে অর্নীল। আর এক সেকেন্ড তাকিয়ে থাকলে হয়ত অর্নীলের হার্টবিট চলত না তাই অর্নীল আর তাঁকায়নি। সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় মিম অর্নীলকে দেখছিল। অর্নীলের বুকে মিমের একটা হাত ছিল। অর্নীলের হার্টবিট খুব দ্রুত হচ্ছে আর মিম সেইটা ফিল করতে পারছে।

মিমকে চেয়ারে বসিয়ে অর্নীল কিছু না বলেই সেখান থেকে একটু দূরে দাঁড়ালো। কাজী আসার পর দুইজনের বিয়ে হলো আবারো। কবুল বলার সময় মিম ছলছল চোখে অর্নীলের দিকে তাঁকিয়ে ছিল। এরপর চোখ বন্ধ করে কবুল বলে দিল। এরপর গ্রুপ বানিয়ে সবাই মিলে গল্প করছিল মিম আর অর্নীলের সাথে।সন্ধ্যার দিকে অর্নীলের কাজিন আর ফ্রেন্ডরা বাদে সবাই চলে গেল। অর্নীলের কাজিনরা ওদের বাসর ঘর সাজাচ্ছে আর মিম অনুর রুমে বসে অর্নীলের ফ্রেন্ডদের ওয়াইফের সাথে গল্প করছে। আর অর্নীল ছাদে দাঁড়িয়ে ওর বন্ধুদের সাথে বিজনেস নিয়ে কথা বলছে।

রাত সাড়ে এগারোটার দিকে সব সাজানো শেষ হল। অর্নীলের আম্মু অর্নীলের পছন্দেই ওদের বাসর ঘর সাজিয়েছে। অর্নীলের এক কাজিন অর্নীলকে কল করে নিচে নামতে বলল। এরপর অর্নীল ওর ফ্রেন্ডদের নিয়ে নিচে নামলো।

-আব্বু মিম অনুর ঘরে আছে। ওকে কোলে নিয়ে তোমার ঘরে যাও।
-আবার কোলে নিব😑😑
-জ্বি আব্বু এইটা আমাদের পরিবারের নিয়ম। বাসরঘরে স্বামী তার স্ত্রীকে কোলে নিয়ে ঘরে ঢুকে।
-ওকে যাচ্ছি।

এরপর অর্নীল অনুর ঘরে গেলো। অর্নীল যাওয়ার পর সবাই বাইরে বেরিয়ে দাড়ালো। কোনো কথা বার্তা না বলেই মিমকে কোলে তুলে নিল আর নিজের ঘরে নিয়ে খাটে বসালো মিমকে।

অর্নীলের আম্মু ঘরে এসে ওদের দুইজনকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলেন। ওরা দুইজন আম্মুকে সালাম করলো।

-আজীবন তোরা এইভাবে থাকিস! এইভাবেই তোদের সুখে দেখতে চাই।
-দোয়া করো আম্মু। (অর্নীল)
-এইটা সবসময় করি। আচ্ছা আব্বু বাই। আমি গেলাম। তোমরা থাকো। (ওদের দুইজনকে চুমু দিয়ে)
-আসি ভাই (অনু)

ওরা দুইজন চলে যাওয়ার পর আবির অর্নীলকে বলল

-এহেম এহেম! শালাবাবু উইশ ইউ অল দ্যা বেস্ট।😁😁
-এইটা দ্বিতীয় বাসর🙄🙄
-😂😂😂😂 বাই। দরজা লাগিয়ে দাও। কালকে অফিসে দেখা হচ্ছে।
-কেন আজ থাকবেনা?
-না হসপিটালে ইমারজেন্সি আজকে একটা অপারেশন আছে না হলে থাকা যেত।
-সাবধানে যেয়ো।
-আল্লাহ হাফেজ।

এই কথা বলে আবির চলে গেলো। অর্নীল দরজাটা লক করে। ঘুরে দেখে মিম জানালার গ্রিল ধরে বাইরে তাঁকিয়ে আছে। অর্নীল ওর ড্রয়ার থেকে একটা পায়েল আর একটা ক্রাউন বের করলো। কিভাবে এখন অর্নীল মিমের সামনে যাবে সেইটাই ভাবছে। মিম তখন ঘুরে দাঁড়িয়ে অর্নীলকে বলে

-আপনি আজকে এখানে থাকেন আমিই আজ অন্যঘরে যাচ্ছি।

চোখ থেকে পানি মুছে মিম হাটতে শুরু করলো। পেছন থেকে অর্নীল চুরিসহ মিমের হাতটা ধরলো। মিম পেছনে তাকালো। অর্নীল হাত থেকে ক্রাউন আর পায়েলটা খাটে রেখে অন্যহাত দিয়ে হ্যাচকা একটানে মিমকে অর্নীলের বুকের সাথে মিশিয়ে ফেলে।
#পালিয়ে_বিয়ে
#Concept_2
#Part_23
#Written_By_Nilima_Zabin_Tanmona

অর্নীল মিমের হাত ধরার পর মিমকে একটানে নিজের সাথে মিশিয়ে ফেলে। মিম কিছুটা হতভম্ব হয়ে গেল। টান সামলাতে না পেরে শাড়ির একটা কুচি খুলে গেছে।

-কোথায় যাবে বলছিলে? (মিমের ঘাড়ে হাত দিয়ে অর্নীল)
-প্রতিদিন আপনি যেখানে যান। আজ এই ঘরে আমি কিছুতেই ঘুমাতে পারব না। আজকে আমি গেস্টরুমে গিয়ে শুই প্লিজ। (অর্নীলের শেরওয়ানিটা খামচে ধরে)
-আজ থেকে কেউ কোত্থাও গিয়ে ঘুমাবেনা। (মিমের মুখের সামনে মুখ রেখে অর্নীল)
-কি করছেন আপনি? আমাকে ছুঁইয়েন না আপনি। এতে আপনার হয়ত পাপ হবে। (অর্নীলকে হালকা ধাক্কা দিয়ে মিম)
-আমি জানি আমার বউ রাগ করবে। আর রাগ করাটা যুক্তিসংগত। তোমার রাগ এক্ষুনি ভেঙ্গে দিচ্ছি। একটা বছরের বেশি বউয়ের কাছ থেকে দূরে থাকা কোনো ছেলের পক্ষেই সম্ভব না আর আমার পক্ষে যে কিভাবে সেইটা পসিবল হয়েছে সেইটা তুমি নিজেই খুব ভাল করে জানো। বাসায় আনার পর তোমায় বলেছিলাম আবার বিয়ে না করা পর্যন্ত তোমায় ছুঁব না। সেই কথাটা রাখার জন্যই তোমার সাথে মিসবিহেভ গুলো করেছি। যদি তোমার সাথে এই ব্যবহারগুলা না করতাম তাহলে এই কয়েকটাদিন তোমার থেকে দূরে থাকা কোনোভাবেই পসিবল হতো না। নিজেকে কোনোভাবেই কন্ট্রোলে রাখতে পারতাম না। আর তোমাকে ঘুমের মধ্য থেকে জাগিয়ে দিতাম কারণ তুমি আমাদের বিছানায় একা আরাম করে ঘুমাইতা এসব আমার সহ্য হত না। তাই ওই কাজগুলো রেগে গিয়ে করেছি। (মিমকে ঘুরিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে)
-সিরিয়াসলি? 😯😯😯
-হুম। তুমি অনেক কষ্ট পেয়েছো আর সেই কষ্ট আজকে ভালবাসা দিয়ে শেষ করে দিব। একটা বছরের জমানো ভালবাসা!! কম কিছু নয়।
-আজকে তো আপনাকে আমার সামনেই আসতে দিব না। (অর্নীলকে সরিয়ে দিয়ে মিম একটু দূরে দাঁড়ালো)
-রিয়েলি? (শেরওয়ানির বোতাম খুলতে খুলতে অর্নীল মিমের দিকে আগাচ্ছে)
-এত সহজে আপনাকে আমি মাফ করব না। আর এগুবেন না।
-সামনে আসো। কিচ্ছু করব না।
-না আসব না।
-বললাম তো কিছু করব না। আর যদি এখন না আসো তাহলে কষ্ট তোমারই হবে। আমার কিচ্ছু হবেনা😉😉
-আমি আসব না। এখানেই দাঁড়িয়ে থাকব।
-ওকে তাহলে আমি আসছি।

এরপর অর্নীল মিমকে কোলে নিয়ে খাটে বসায়। মিম তো ইচ্ছেমত অর্নীলকে মারছে।

-হাত বেঁধে দিব কিন্তু এখন😠 (অর্নীল)
-দিন বেঁধে। শয়তান ছেলে একটা। টানা চারটা দিন আমাকে কি কষ্ট টাই না দিয়েছে!
-শয়তানের শয়তানি তো কোনোদিন দেখো নাই। একটু পর দেখতে পাবা।
-আবার কিছু করলে 👿👿
-পা বাড়াও।
-আমার পা দিয়ে আপনি কি করবেন? (শাড়ির ভেতর পা ঢুকিয়ে)
-মিম ফ্রাই বানাবো😠😠
-আচ্ছা এই নিন দিচ্ছি (ভয় পেয়ে পা এগিয়ে দিয়ে মিম।কারণ অর্নীলকে বিশ্বাস নেই। মিম ফ্রাই বানিয়ে ফেলতেই পারে)

অর্নীল মিমকে নুপুর পরিয়ে দিল। মিম তো হা 😱😱😱। অর্নীল মিমকে নুপুর পরিয়ে দিছে মিমের বিশ্বাস ই হচ্ছেনা কারণ অর্নীল এসব পছন্দ করেনা। এসব ওর কাছে কমন লাগে। এরপর অর্নীল মিমকে তাজটা পরিয়ে দিয়ে কপালে চুমু দিল।

-দাড়ি কাটেন না কতদিন হয়েছে? 😏😏
-মানে?
-খোচা লাগে তো।
-এতটুকু খোচা তো লাগবেই। আরো যে কত লাগবে।
-আজকে কোনো অসভ্যতামো করলে আপনাকে আমি মেরেই ফেলব চৌধুরী।
-কেন জান তুমি জানো না আজকে আমাদের বাসর রাত। আর এই রাতে তো অসভ্যতামোই করতে হয়। 😁😁😁(মিমের পায়ের উপর মাথা দিয়ে অর্নীল)
-না করতে হয়না। গত দুইদিন ধরে ঘুমাতে পারিনি আপনার জন্য। আজকে ঘুমাবো আর এইখানে (অর্নীলের বুকে হাত দিয়ে) ঘুমাবো।
-সেইটা তো অবশ্যই। আর আজকে তো ঘুমাতে পারবেনা তাই কালকে আমি অফিস যাওয়ার পর ঘুমিয়ো। (মিমের হাতে চুমু দিয়ে অর্নীল)
-দেখুন আমি কিন্তু রেগে যাচ্ছি। আপনি এখান থেকে উঠে বালিশে গিয়ে ঘুমান।
-এত্ত আনরোমান্টিক কবে থেকে হয়েছো? সমস্যা নেই আমি বানিয়ে দিচ্ছি রোমান্টিক।

অর্নীল উঠে দাঁড়িয়ে শেরওয়ানি খুলে সোফার উপর ছুঁড়ে মারলো। ঘরের লাইট বন্ধ করে বেড লাইট অন করে দিল। অর্নীলের ভয়ে মিম বিছানা থেকে উঠে খাটের বিপরীত পাশে গিয়ে দাঁড়ায় আর সেইটা দেখে অর্নীল হেসে দেয়।

-আমি কি সেখানে যেতে পারব না জান? (অর্নীল)
-না এইটা সংরক্ষিত এলাকা শুধুমাত্র মেয়েদের জন্য।
-ঘরটা তো তোমার আর আমার। তাহলে শুধুমাত্র মেয়েদের জন্য কিভাবে হলো? (মিমকে দেয়ালের সাথে মিশিয়ে অর্নীল)
-চৌধুরী আমার হার্টবিট কিন্তু বেড়ে যাচ্ছে। (আস্তে করে বলল মিম)
-আমার কাছে আছো যে!! (শাড়ির কুচিটা টান দিয়ে খুলল অর্নীল। মিম অর্নীলের হাতের উপর হাত রাখলো)
-কি করছেন? (নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে মিমের)
-যা করার। (মিমের হাত দেয়ালের সাথে মিশিয়ে ধরে মিমের ঘাড়ে কিস করতে শুরু করে অর্নীল)
-ছাড়ুন না!! প্লিজ
-আজকে কোনো ছাড়াছাড়ি নেই। অনেক ছেড়েছি। (মিমকে কোলে নিয়ে অর্নীল বিছানায় শোয়ায় মিমকে। মিমের শরীরের সব গহনা খুলে একেক করে শুধু নাকফুলটা বাদে)
-আমার কিন্তু কষ্ট হচ্ছে। (অর্নীলের হাত খামচে ধরে মিম)
-কিসের কষ্ট?
-জানিনা (অর্নীলকে জড়িয়ে ধরে)
-অর্নীল হেসে দিল আর অর্নীল ও মিমকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল।

পরেরদিন সকালবেলা …….

-চৌধুরী? চৌধুরী? উঠছেন না কেন? (ভেজা চুল মুছতে মুছতে মিম অর্নীলকে ডাকছে)
-ডিস্টার্ব কর না। ঘুমাবো (মুখ ঘুরিয়ে ঘুমায় অর্নীল)
-আজকে না আপনি অফিসে যান? সাড়ে সাতটা বাজে। (অর্নীল কে তাড়া দিয়ে মিম)
-এই অফিস না… (হঠাৎ মিমের দিকে তাঁকালো অর্নীল)
-কি দেখছেন? (শাড়ি ঠিক করে মিম)
-কিউট লাগছে তো। (মিমকে টান মেরে নিজের উপর ফেলে অর্নীল)
-😏😏😏😏
-এভাবে তো তোমায় কোনোদিন দেখাই হয়নি!! আগের থেকে একটু শুকিয়ে গেছো। (মিমের গালে কিস করে)
-আবার এই সকালেও শুরু করলেন? 😠😠
-সকাল আর রাত দুইটাই আমার। By the way, সকালবেলা তোমাকে ভেজা চুলে আসলেই অনেক সুন্দর লাগে। ইচ্ছে করছে আবার আদর করি।
-এইবার মেরেই ফেলবো। তারাতারি উঠেন আর গোসল করতে যান। আমি আপনার ড্রেস আয়রন করছি।
-কর। আসছি আমি।

অর্নীল উঠে গোসল করতে যায়। আর মিম অর্নীলের শার্ট প্যান্ট আয়রন করে।

চলবে
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here